আন্তর্জাতিক

পাকিস্তানের পেশাওয়ার বিমানবন্দরে সৌদি আরবের একটি বিমান অবতরণের সময় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এতে বিমানের ভেতর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়।

বৃহস্পতিবার পেশাওয়ারের বাচা খান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এ ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ালেও এ ঘটনায় ২১ জন ক্রু ও ২৭৬ যাত্রীর সবাই নিরাপদে রয়েছেন।

পাকিস্তানের সামা টিভির খবর অনুযায়ী, এসভি-৭৯২ বিমানটি সৌদি আরবের রিয়াদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রওনা হয়ে পাকিস্তানের পেশাওয়ারে পৌঁছায়। বিমানটি অবতরণের সময়ই এর ল্যান্ডিং গিয়ারে আগুন ধরে যায়। অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেন এবং বিমানের আগুন নেভাতে সক্ষম হন।

এ সময় ইমার্জেন্সি স্লাইড ব্যবহার করে ধীরে ধীরে যাত্রীদের বিমান থেকে নামানো হয়। সৌভাগ্যক্রমে যাত্রী বা ক্রু সদস্যদের মধ্যে কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। তবে আহত কয়েকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

পাকিস্তান সিভিল আভিয়েশন কর্তৃপক্ষের এক বিবৃতি মতে, বিমান ট্রাফিক কন্ট্রোলাররা বিমানের বাম ল্যান্ডিং গিয়ার থেকে ধোঁয়া ও আগুনের ঝলকানি দেখতে পান এবং পাইলটদের সতর্ক করেন। তারা বিমানবন্দরের ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ সার্ভিসকেও খবর দেন।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিমানবন্দরের ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ সার্ভিস দ্রুত পৌঁছায় এবং ল্যান্ডিং গিয়ারের আগুন দ্রুত নেভাতে সক্ষম। এর ২৭৬ জন যাত্রী এবং ২১ জন ক্রু সদস্যকে একটি স্ফিত স্লাইড দিয়ে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

সৌদি আরব ও বিমান কর্তৃপক্ষ উভয় তরফেই জানানো হয়েছে, বিমানে আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গেই বিমানটিকে থামিয়ে দেওয়া হয়েছে। আপাতত বিমানটিতে যান্ত্রিক কাজ করা হচ্ছে। যাবতীয় ত্রুটি সারিয়ে ফেলার বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ব্যাপক পরিদর্শন এবং পরবর্তী পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ মেরামত করা হচ্ছে।

এদিকে পেশোয়ার বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিমানবন্দরটি চালু রয়েছে এবং সব ফ্লাইটই নির্ধারিত সময় অনুযায়ী চলবে।

আন্তর্জাতিক

অবশেষে ফিলিস্তিনের সঙ্গে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি কার্যকর করেছে ব্রাজিল। ইসরাইলকে অগ্রাহ্য করে ফিলিস্তিনের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি কার্যকর করা ব্রাজিলের একটি দুঃসাহসিক পদক্ষেপ। এ চুক্তি ইসরাইলকে তিরস্কারের পাশাপাশি ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি দেশটির দৃঢ় সমর্থনের প্রকাশ।

তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড এ খবর জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে সোমবার ব্রাজিলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ চুক্তিটি অর্থনৈতিকভাবে সক্ষম ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের জন্য একটি বাস্তব অবদান। যাতে দেশটি প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তি ও সম্প্রীতিপূর্ণভাবে অবস্থান করতে পারে।

ব্রাসিলিয়ায় ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইব্রাহিম আল জেবেন ব্রাজিলের সিদ্ধান্তকে ‘সাহসী, সমর্থনমূলক এবং সময়োপযোগী’ বলে অভিহিত করেছেন।

তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে পাঠানো এক বার্তায় বলেছেন, এটি ফিলিস্তিনে শান্তি সমর্থনের কার্যকর উপায়।

রাষ্ট্রদূত বলেছেন, তিনি আশা করছেন মেরকোসুরের সঙ্গে ফিলিস্তিনের বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে। বর্তমানে বছরে তা মাত্র ৩২ মিলিয়ন ডলার রয়েছে।

ব্রাজিল ২০১০ সালে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। দেশটির রাজধানীতে একটি ফিলিস্তিনি দূতাবাস স্থাপনের অনুমতিও দিয়েছে। শুক্রবার লাতিন আমেরিকার মেরকোসুর বাণিজ্য ব্লক ও ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের মধ্যে ২০১১ সালে স্বাক্ষরিত চুক্তিটি অনুমোদন করেছে।

অন্য মেরকোসুর সদস্যরা একই পদক্ষেপ নেবে কিনা তা স্পষ্ট নয়। প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মাইলির নেতৃত্বে আর্জেন্টিনার ডানপন্থি সরকার এটি করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে না। উরুগুয়ে ও প্যারাগুয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের জন্য সাড়া দেয়নি।

৭ অক্টোবর থেকে অনেক দেশ ফিলিস্তিনকে একটি রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে; যার মধ্যে রয়েছে স্পেন, নরওয়ে, আয়ারল্যান্ড, বাহামাস, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, জ্যামাইকা, বার্বাডোস ও আর্মেনিয়া।

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাজ্যের নগর মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি আর্থিক পরিষেবা খাতের তত্ত্বাবধানে কাজ করবেন।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) ব্লুমবার্গ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। এতে এও বলা হয়েছে, টিউলিপের নিয়োগের ব্যাপারে সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ঘোষণা দেয়নি।

যুক্তরাজ্যে গত সপ্তাহের নির্বাচনে জয় পায় লেবার পার্টি। নির্বাচনে টানা চতুর্থবারের মতো বিজয়ী হয়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি লেবার পার্টির এমপি হিসেবে ছায়া মন্ত্রী হয়ে কাজ করছিলেন। এবার তাকে নগর মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে দল।

৪১ বছর বয়সী টিউলিপ ২০২১ সাল থেকে লন্ডনের সিটি অব ফিন্যান্সিয়াল ডিস্ট্রিক্টে কাজ করেছেন।

চলতি বছরের মে মাসে টিউলিপ ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে ‍ব্রিটেনের শ্রম বাজারকে প্রতিযোগিতামূলকতা ও এর প্রতিবন্ধকতা দূর করতে তিনি আরও বেশি কাজ করবেন।

নগরমন্ত্রী হিসেবে টিউলিম স্থলাভিষিক্ত হবেন বিম আফোলামিরের। বিম একজন সাবেক এইচএসবিসি ব্যাঙ্কার। তিনি এর আগের রক্ষণশীল সরকারের অধীনে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

টিউলি এবারের নির্বাচনে মোট ভোট পেয়েছেন ২৩ হাজার ৪৩২। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভের ডন উইলিয়ামস পেয়েছেন ৮ হাজার ৪৬২ ভোট। ২০১৯ সালের নির্বাচনের ভোটের চেয়ে টিউলিপের এবছরের ভোটের সংখ্যা দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে।

২০১৫ সালে প্রথম হ্যাম্পস্টেড-কিলবার্ন আসনের প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হন টিউলিপ। তখনই প্রথম হাউস অব কমন্সে তার প্রবেশ ঘটে। তারপর ২০১৭ এবং ২০১৯ সালের নির্বাচনেও একই আসন থেকে জয় পান তিনি। ওই বছর যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে প্রভাবশালী ১ হাজার রাজনীতিবিদের তালিকায় তার নামও উঠেছিল।

আন্তর্জাতিক

বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর ৭৫তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন শুরু হতে চলেছে। আজ ওয়াশিংটনে শুরু হবে এ সম্মেলন। তিন দিনের এ সম্মেলনে অংশ নেবেন ৩২ সদস্য দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা। এএফপি।

ন্যাটোকে একটি বৃহৎ ও শক্তিশালী জোট হিসাবে দেখানোই এবারের সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য। তবে এমন সময় জোটের নেতারা ওয়াশিংটনে জড়ো হচ্ছেন যখন ইউক্রেন যুদ্ধে একেবারে বিধ্বস্ত এবং আটলান্টিকের উভয় পাশে মধ্যপন্থি ও উগ্র ডানপন্থিদের মধ্যে চলছে নির্বাচনি ঝড়।

আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে সম্ভাব্য রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথম বিতর্কে বিপর্যয়কর ফলের পর নিজের রাজনৈতিক জীবন নিয়ে লড়ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ন্যাটো জোটের প্রতি ট্রাম্পের অঙ্গীকার নিয়ে মিত্রদের মধ্যে সন্দেহ রয়েছে। আপাতত বাইডেন নির্বাচনি প্রচার থেকে দৃষ্টি সরিয়ে সম্মেলনে যোগ দিতে আসা নেতাদের স্বাগত জানাবেন।

উদীয়মান চীনের প্রভাব ঠেকাতে এশিয়ায় ন্যাটোর ক্রমবর্ধমান ভূমিকার গুরুত্বের বিষয়টি মাথায় রেখে অস্ট্রেলিয়া, জাপান, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়ার নেতাদেরও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বাইডেন। তবে সম্মেলনে নজর থাকবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ওপর। তিনি জোটের পক্ষ থেকে দৃঢ় সমর্থনের অপেক্ষায় আছেন। যদিও এবারও ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগদানের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না। সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে সামষ্টিক প্রতিরক্ষাব্যবস্থার অংশ হিসাবে ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠা হয় ন্যাটো সামরিক জোটের।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন আক্রমণ করে রাশিয়া। এরপর কিয়েভের পক্ষে দাঁড়ায় ন্যাটোর মিত্ররা। এর মাধ্যমে ন্যাটো মূলত জোটটির প্রতিষ্ঠাকালীন লক্ষ্যেই ফিরে গেছে। রাশিয়ার ত্বরিত বিজয় ঠেকিয়ে দিয়ে পশ্চিমাদের মন জয় করে নিয়েছেন ইউক্রেনীয়রা। তবে রুশ সেনারা দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। পূর্বাঞ্চলে তারা অগ্রসর হচ্ছেন তারা।

ন্যাটো সম্মেলনের আগে একজন ইউরোপীয় কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন, সম্মুখযুদ্ধে ইউক্রেন একটি ভঙ্গুর অবস্থায় আটকে পড়ায় এক ধরনের অস্বস্তির মধ্যেই এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেছেন, প্রাথমিক পরিকল্পনার চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন বাস্তবতায় এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। কারণ, ইউরোপের নিরাপত্তার গুরুত্বপূর্ণ যুগসন্ধিক্ষণে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেছেন, রাশিয়া এখন পুরোপুরি একটি স্বস্তিকর অবস্থায় আছে। তারা মনে করছে, শেষ পর্যন্ত তারা সফল হবে।

আন্তর্জাতিক

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আমন্ত্রণে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে মস্কোয় গেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রায় পাঁচ বছর পর তিনি এ সফরে গেলেন। তাছাড়া, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এই প্রথম সেদেশে পা রাখলেন মোদি।

সোমবার রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে মোদির বৈঠক করার কথা রয়েছে। রুশ প্রেসিডেন্টের দাপ্তরিক বাসভবন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানিয়েছেন।

ইউক্রেন যুদ্ধের মুখে রাশিয়াকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একঘরে করে রাখতে পশ্চিমা বিশ্বের চেষ্টার মধ্যেও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এ সফর এমন ইঙ্গিতই দিচ্ছে যে, তিনি মস্কোর সঙ্গে নিজের কূটনৈতিক পথে অটল রয়েছেন।

রাশিয়ায় রওনা দেওয়ার প্রাক্কালে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছিলেন, প্রেসিডেন্ট পুতিনের আমন্ত্রণে ২২তম ভারত-রাশিয়া বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে তিনি রাশিয়া সফর করছেন।

গত ১০ বছরে কূটনৈতিক ক্ষেত্রে ভারত এবং রাশিয়ার মধ্যে বিশেষ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার বন্ধু পুতিনের সঙ্গে আমি বিভিন্ন আঞ্চলিক, আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা করব। তাছাড়াও সফরকালে আমি রাশিয়ার বসবাস করা ভারতীয়দের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাব।

ওদিকে ক্রেমলিন বলেছে, মোদির এই রাশিয়া সফরকে ভাল চোখে দেখছে না পশ্চিমারা। পশ্চিমা দেশগুলো মোদির রাশিয়া সফরকে কিভাবে দেখছে সে প্রশ্নের জবাবে এক সাক্ষাৎকারে ক্রেমলিনের মুখপাত্র বলেন, পশ্চিমা বিশ্ব ঈর্ষায় জ্বলছে। তারা নিবিড় ভাবে সফরের দিকে নজর রাখছে। তাদের এই নজরদারিই বৈঠককে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলছে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দ্বিপক্ষীয় বিষয়ে তো বটেই, সমসাময়িক নানা আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়েও দুই নেতার মধ্যে কথা হবে।

এনডিটিভি জানায়, মোদি সর্বশেষ রাশিয়া সফর করেছিলেন ২০১৯ সালে। এবার দু’দিনের সফর শেষে রাশিয়া থেকে অস্ট্রিয়ায় যাবেন তিনি। এর একদিন পর ফিরবেন ভারতে।

আন্তর্জাতিক

আইন মোতাবেক জেলে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা কারাবন্দি ইমরান খান। সেইসঙ্গে যথাযথ জেল সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি এবং প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

শনিবার ইমরান তার আইনজীবী আজহার সিদ্দিকীর লেখা একটি চিঠির মাধ্যমে এ আহ্বান জানান।

দেশটির জুডিশিয়াল অ্যাক্টিভিজম প্যানেলের প্রধান আজহার সিদ্দিকী জানিয়েছেন, চিঠিতে পিটিআই প্রধানকে আইন অনুযায়ী বাধ্যতামূলক সুযোগ-সুবিধাগুলো দেওয়া হচ্ছে না এবং তার শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে দেখা করতেও দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ জানানো হয়েছে।

চিঠিতে এই বলে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ইমরান খানের সঙ্গে লোকজনের দেখা করায় বাধা দেওয়া হচ্ছে কেন? সেইসঙ্গে কারাগারে তাকে মৌলিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। যদি এই শর্তগুলো পূরণ না করা হয়, তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি উচ্চ আদালতে নিয়ে যাবেন বলেও জানান এই আইনজীবী।

শুক্রবার আদালতে হাজিরা দেওয়ার সময় ইমরান খান দেশটির প্রধান বিচারপতি (সিজেপি) কাজী ফয়েজ ইসার প্রতি তার আস্থার অভাব প্রকাশ করেন। এ সময় ইমরান খান অনশনে যাওয়ার ইচ্ছার কথাও ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘আমি আমার আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করে অনশনের চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা করব।’

একই দিনে কারাবন্দি পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ঘোষণা করেন যে, তার দল শেহবাজ শরীফ সরকারের সর্বদলীয় সভায় অংশ নেবে।

রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগার থেকে সাংবাদিকদের ইমরান খান বলেন, ‘আমার দল সর্বদলীয় সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবে এবং সরকার কী বলে তা শুনবে’।

পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, সন্ত্রাস বিরোধী পদক্ষেপ দেশকে আরও অস্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাবে।

প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের সরকার নতুন যে সামরিক অভিযানের কথা বলছে, তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘আযম-ই-ইসতেহকাম’। উর্দুভাষায় এই শব্দের প্রচলিত অর্থ হচ্ছে স্থিতিশীলতা৷ আলোচিত এই সামরিক অভিযান কতদিন ধরে চলবে তা নিশ্চিত করেনি দেশটির কর্তৃপক্ষ।

সামরিক অভিযান শুরুর আগেই এর বিপক্ষে দাঁড়িয়েছেন জেলবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। গত সপ্তাহে ইমরান জানিয়েছেন যে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সামরিক অভিযানের বিপক্ষে তিনি৷ এরপরও এই অভিযান সম্পর্কে শেহবাজ শরীফ সরকারের সর্বদলীয় সভায় অংশ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন ইমরান। সূত্র: এক্সপ্রেস ট্রিবিউন

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়ের পর দায়িত্ব নেওয়া নতুন প্রধানমন্ত্রী লেবার পার্টির নেতা স্যার কিয়ার স্টারমার মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন। শুক্রবার বাকিংহাম প্রাসাদে রাজা তৃতীয় চার্লস আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেন। এর পরপরই তিনি ১০নং ডাউনিং স্ট্রিটে মন্ত্রিসভা গঠনের কাজ শুরু করেন। খবর বিবিসি, ডেইলি মেইল, আলজাজিরার।

১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট থেকে বলা হয়েছে, স্টারমার নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর, শুক্রবারই মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন। শুক্রবার দুপুর থেকে বিকাল নাগাদ ডাউনিং স্ট্রিটে একে একে ডাক পান লেবার পার্টির অপেক্ষাকৃত জ্যেষ্ঠ সংসদ-সদস্যরা। স্টারমার ২০ মন্ত্রী বেছে নিয়ে তাদের দায়িত্ব বণ্টন করে দিয়েছেন। এই মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ অর্থমন্ত্রী (চ্যান্সেলর অব একচেকার) পদসহ রেকর্ড ১১টি পদে নারীদের বেছে নিয়েছেন স্টারমার।

যুক্তরাজ্যের নতুন উপপ্রধানমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ পেয়েছেন ৪৪ বছর বয়সি অ্যাঞ্জেলা রেইনাহ। অন্যদিকে দেশের প্রথম নারী অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন র‌্যাচেল রিভস। যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে ৪৫ বছর বয়সি রিভসই প্রথম নারী অর্থমন্ত্রী হলেন। সাবেক শিশু দাবা চ্যাম্পিয়ন ও ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের অর্থনীতিবিদ রিভস দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধি করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন গর্ডন ব্রাউনের মন্ত্রিসভায় অর্থ বিভাগের মুখ্য সচিবের দায়িত্ব পালনকারী ইয়েভেত্তে কুপার। ৫১ বছর বয়সি প্রখ্যাত আইনজীবী ডেভিড ল্যামিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মাত্র ২৭ বছর বয়সে ব্রিটেনে সর্বকনিষ্ঠ আইনপ্রণেতা হিসেবে নির্বাচিত ল্যামি এর আগে টনি ব্লেয়ার এবং গর্ডন ব্রাউনের মন্ত্রিসভায়ও দায়িত্ব পালন করেছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী করা হয়েছে ওয়েস স্ট্রিটিংকে।

এদিকে শিক্ষামন্ত্রী হয়েছেন ব্রিজেট ফিলিপসন। তিনি স্টারমারের খুবই ঘনিষ্ঠ। জ্বালানিমন্ত্রী করা হয়েছে এড মিলিব্যান্ডকে। এছাড়া বিচারমন্ত্রী করা হয়েছে শাবানা মাহমুদকে। তুখোড় আইনজীবী শাবানা অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে রাজনীতিতে এসেছেন। সাবেক কনজারভেটিভ নেত্রী লিজ ট্রাসের পর তিনিই দ্বিতীয় নারী হিসাবে এই দায়িত্ব পেলেন।

জোনাথন রেনল্ড দায়িত্ব পেয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এবং লিজ কেন্ডাল শ্রম ও কারামন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পেয়েছেন। এছাড়া প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন জন হিলি। লুইস হেইঘ হয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী, স্টিভ রিড পরিবেশমন্ত্রী, পিটার কাইলি বিজ্ঞান, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি বিষয়কমন্ত্রী। অপরদিকে লিসা ন্যান্ডিকে সংস্কৃতি বিষয়কমন্ত্রী করা হয়েছে।

এছাড়া হাউজ অব কমন্স নেতা করা হয়েছে লুসি পাওয়েলকে। লর্ডসের নেতা হয়েছেন ব্যারোনেস স্মিথ। পার্লামেন্টে লেবার পার্টির চিফ হুইপ করা হয়েছে অ্যালান ক্যাম্বলকে।

অর্থমন্ত্রী রেইচেল রিজের সহকারী হিসাবে দায়িত্ব পেয়েছেন ড্যারেন জোনস। ল্যাঙ্কাস্টারের ডাচির চ্যান্সেলর হয়েছেন প্যাট ম্যাকফ্যাডেন। যুক্তরাজ্যের নতুন অ্যাটর্নি জেনারেল পদ দেওয়া হয়েছে রিচার্ড হারমারকে।

বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে যুক্তরাজ্যে সাধারণ নির্বাচনের ভোট শুরু হয়। এবারের নির্বাচনে পরাজিত হয়ে কনজারভেটিভ পার্টিকে টানা ১৪ বছর পর ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হয়েছে।

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বৃহস্পতিবার বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেইজিং সফর চীন-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ইতিহাসে আরেকটি মাইলফলক হবে।

তিনি বলেন, ‘এই সফর নিশ্চিতভাবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতায় প্রাণবন্ত প্রেরণা জোগাবে এবং চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে সহযোগিতার কৌশলগত অংশীদারিত্বের নতুন অর্জনে এই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে একটি নতুন উচ্চতায় উন্নীত করবে।’

চীনের রাষ্ট্রদূত আজ জাতীয় প্রেসক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিসিএবি) ফ্ল্যাগশিপ ইভেন্ট ডিক্যাব টক অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন।

আগামী ৮ থেকে ১১ জুলাই চীনে দ্বিপাক্ষিক সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক সর্বকালের সর্বোত্তম এবং পরস্পরের কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদার হিসেবে উন্নয়নের জন্য প্রচুর সুযোগ গ্রহণ করছে।

ইয়াও ওয়েন আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই চীন সফর সর্বস্তরের মানুষের কাছেই অত্যন্ত প্রত্যাশিত। এই সফরটি আগামী পাঁচ বছর বা তারও বেশি সময়ে চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ককে আরো জোরদার করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, এই সফরটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহারিক সহযোগিতার জন্য একটি নতুন রূপরেখা দেবে এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে আমাদের অবস্থানগুলোকে সমন্বয় করার জন্য দুই দেশের জন্যই সুযোগ এনে দেবে।

ইয়াও ওয়েন বলেন, এই সফরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী চীনের নেতাদের সঙ্গে দেখা করবেন। সফরকালে বেশ কয়েকটি সহযোগিতার নথি সই হবে এবং যৌথভাবে সহযোগিতার বড় অর্জনগুলো ঘোষণা করা হবে।

চীনা রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, এই সফরের মাধ্যমে উভয় পক্ষ একে অপরকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন এবং সর্বস্তরে যোগাযোগ আরও জোরদার করবে।

চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, বেইজিং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরকে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা আরও গভীর, উন্নয়ন কৌশলের সমন্বয়কে শক্তিশালী, ঐতিহ্যগত বন্ধুত্বকে সুসংহত এবং চীনের জাতীয় পুনর্জাগরণের স্বপ্ন ও বাংলাদেশের ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নে একসঙ্গে কাজ করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

ইয়াও ওয়েন আরো বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক শক্তিশালী ভিত, গতিশীলতা ও উন্নয়নের সম্ভাবনা নিয়ে গর্ব করে। এই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আমাদের দুই জনগণের কাছ থেকে ব্যাপক সমর্থন অর্জন করেছে এবং সম্পর্কটির উন্নয়নের গতিধারা শক্তিশালীভাবে অব্যহত থাকবে।’

তিনি বলেন, চীন অবকাঠামো, ডিজিটাল অর্থনীতি, পরিচ্ছন্ন জ্বালানি, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, সংস্কৃতি ও দু’দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ ও সম্পর্কের ক্ষেত্রে আরও বাস্তব ফলাফল অর্জনে বাংলাদেশের সাথে কাজ করতে আগ্রহী এবং এটা বাংলাদেশকে আধুনিকায়ন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করবে।

চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘কীভাবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও উন্নীত করা যায়, বিনিময়ের পরিধি প্রসারিত করা যায়, সহযোগিতার সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো যায় এবং আমাদের দুই দেশ ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ককে আরও ভালো, গভীর ও ঘনিষ্ঠ করে তোলা যায়- সেজন্য উভয় পক্ষের যৌথ প্রচেষ্টা প্রয়োজন।’

ইয়াও ওয়েন আরো বলেন, আসন্ন সফরের মাধ্যমে দুই পক্ষ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে সমন্বয় ও সহযোগিতাকে আরও বাড়াবে, যৌথভাবে উন্নয়নশীল দেশগুলোর বৈধ অধিকার ও স্বার্থ এবং আন্তর্জাতিক ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচার বজায় রাখবে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন ব্রিকসের অংশীদার দেশ হওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রস্তাবকে সমর্থন করে এবং আশা করে যে বাংলাদেশ দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্রিকসের সদস্য হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদী রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন বজায় রেখেছে এবং এর অর্থনৈতিক শক্তি দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় স্থানে উঠেছে, এইভাবে একটি ‘বে অফ বেঙ্গল মিরাকল’ তৈরি করেছে।

ইয়াও ওয়েন বলেন, চীন ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের মানবিক মনোভাবের প্রশংসা করে। চীন সক্রিয়ভাবে মিয়ানমার সংঘাতে জড়িত সকল পক্ষকে একটি যুদ্ধবিরতি এবং সংলাপে বসানোর জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছে- যা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের পথ প্রশস্ত করছে।

ইয়াও আরো বলেন, ‘চীন বাংলাদেশকে বহুপাক্ষিক ক্ষেত্রে সমর্থন, যৌথভাবে উন্নয়নশীল দেশগুলোর বৈধ অধিকার ও স্বার্থ রক্ষা এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার উন্নয়নে প্রস্তুত।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের অভিন্ন মূল্যবোধ, জাতীয় স্বপ্ন ও উন্নয়নের পথ রয়েছে।

চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন বাংলাদেশের সাথে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পাঁচটি নীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে, রাজনৈতিক পারস্পরিক বিশ্বাসকে সুসংহত করতে এবং চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ককে পারস্পরিক শ্রদ্ধার মডেল ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বিজয়ী সহযোগিতার মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে প্রস্তুত।

রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফরের মাধ্যমে দুই পক্ষ বাস্তবসম্মত সহযোগিতায় নতুন অগ্রগতি অর্জন করবে এবং এটা উভয় দেশের জনগণের জন্য আরও সুবিধা বয়ে আনবে।

চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, এটা প্রমাণিত হয়েছে যে- চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য অংশীদার এবং সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধু।
তিনি বলেন, আধুনিকায়নের দিকে বাংলাদেশের যাত্রা প্রসঙ্গে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) ভিশন-২০৪১ ও ‘সোনার বাংলার’ স্বপ্নের সাথে সাথে বাংলাদেশের জাতীয় অবস্থার সাথে অত্যন্ত সামঞ্জস্যপূর্ণ।

তিনি বলেন, ‘চীন বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার এবং বিদেশী বিনিয়োগের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎস।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ডিক্যাবের সভাপতি নুরুল ইসলাম হাসিব ও সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান অপু।

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাজ্যে জাতীয় নির্বাচনে এবার বিভিন্ন দলের মনোনয়নে প্রার্থী হয়েছেন বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। এর বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন অনেকেই। সব মিলিয়ে অন্তত ৩৪ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে থেকে লেবার পার্টি থেকে আছেন ৮ জন এবং কনজারভেটিভ থেকে ২ জন।

লেবার পার্টি থেকে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আটজন ব্রিটিশ নাগরিক হলেন রুশনারা আলী, রুপা হক, টিউলিপ সিদ্দিক, আফসানা বেগম, রুমী চৌধুরী উইথহাম, রুফিয়া আশরাফ, নুরুল হক আলী, নাজমুল হোসাইন। তাদের মধ্যে রুশনারা আলী, রুপা হক, টিউলিপ সিদ্দিক এবং আফসানা বেগম এমপি হিসাবে দায়িত্বরত আছেন।

ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির মনোনয়নে নির্বাচনি লড়াইয়ে আছেন লন্ডনের দক্ষিণে টটেনহাম আসনে আতিক রহমান এবং ইলফোর্ড সাউথ আসনে সৈয়দ সাইদুজ্জামান। ওয়ার্কার্স পার্টি অব ব্রিটেন থেকে ছয়জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক মনোনয়ন পেয়েছেন।

ইলফোর্ড সাউথে গোলাম টিপু, বেডফোর্ডে প্রিন্স সাদিক চৌধুরী, হেকনি সাউথে মোহাম্মদ সাহেদ হোসাইন, আলট্রিচহাম অ্যান্ড সেল ওয়েস্টে ফয়সাল কবির, ম্যানচেস্টার রসলমোতে মোহাম্মদ বিলাল এবং স্টার্টফোর্ড অ্যান্ড বো আসনে হালিমা খান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইলফোর্ড সাউথ আসনে রিফর্ম পার্টির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন রাজ ফরহাদ।

লিবারেল ডেমোক্র্যাটসের মনোনয়নে বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন রাবিনা খান। স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি থেকে নাজ আনিস মিয়া ডুনফারমলাইন অ্যান্ড ডলার আসনে লড়ছেন। গ্রিন পার্টির মনোনয়নে ইলফোর্ড সাউথে সাইদ সিদ্দিকী, ওল্ডহাম ওয়েস্ট অ্যান্ড রয়টনে সাইদ শামসুজ্জামান শামস এবং লেস্টার সাউথ আসনে শারমিন রাহমান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

সোশ্যালিস্ট পার্টির হয়ে ফোকস্টোন আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মমতাজ খানম। এছাড়াও নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ১১ ব্রিটিশ নাগরিক। হলবর্ন অ্যান্ড প্যানক্রাসে লড়ছেন ওয়েইছ ইসলাম। বেথনালগ্রিন অ্যান্ড স্টেপনি গ্রিনে আজমাল মাশরুর, সুমন আহমেদ ও সাম উদ্দিন। পপলার অ্যান্ড লাইম হাউসে এহতেশামুল হক। স্টার্টফোর্ড অ্যান্ড বোতে ওমর ফারুক ও নিজাম আলী। ইলফোর্ড সাউথে নূরজাহান বেগম।

নিউক্যাসল সেন্ট্রাল অ্যান্ড ওয়েস্টে হাবিব রহমান। বেক্সিল অ্যান্ড ব্যাটেলে আবুল কালাম আজাদ। ওল্ডহাম ওয়েস্ট, চেটারটন অ্যান্ড রয়স্টোনে রাজা মিয়া। যুক্তরাজ্যের আসন্ন নির্বাচনে ছোট-বড় প্রায় ৯৮টি রাজনৈতিক দল অংশ নিচ্ছে।

আন্তর্জাতিক

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বৃহস্পতিবার মধ্য এশিয়ার একটি আঞ্চলিক শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন যা পশ্চিমা বিরোধী অসংখ্য দেশকে একত্রিত করবে।

পুতিন এবং শি নিয়মিতভাবে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও) জোটের তত্ত্বাবধানে মিলিত হন। যার সর্বশেষ অধিবেশন কাজাখস্তানের রাজধানী আস্তানায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

এই ব্লকের সাথে একটি ‘সংলাপ অংশীদার’ হিসেবে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানও সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন। সংস্থার পূর্ণ সদস্য সাবেক সোভিয়েত মধ্য এশিয়ার দেশগুলো, ভারত, চীন, রাশিয়া এবং ইরান।

পুতিন মূল অধিবেশনের প্রাক্কালে বুধবার এরদোয়ান এবং শি’র সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন। চীনা নেতাকে পুতিন বলেছেন, সাংহাই জোট ‘একটি ন্যায্য বহুমুখী বিশ্ব ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান স্তম্ভ’ হিসাবে তার ভূমিকাকে শক্তিশালী করছে।

রাশিয়া ও চীন উভয় দেশ বিশ্ব মঞ্চে মার্কিন নেতৃত্বকে ‘আধিপত্য’ বলে অভিহিত করে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে।

মস্কোর প্রতি ক্রমবর্ধমান সমর্থনের জন্য পশ্চিমে সমালোচিত শি বুধবার পুতিনকে বলেছেন, তিনি তার ‘পুরনো বন্ধু’কে আবার দেখতে পেরে আনন্দিত।

এরদোয়ান বুধবার পুতিনের সাথে সাক্ষাত করেন। তাকে তুরস্কে আমন্ত্রণ জানান এবং ইউক্রেনে ‘উভয় পক্ষকে সন্তুষ্ট করতে পারে এমন ন্যায্যতার ভিত্তিতে শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান।

তুর্কি নেতা যুদ্ধরত দেশগুলোর মধ্যে মধ্যস্থতা করতে চেয়েছেন।

এসসিও সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন না ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

এসসিও ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এটি প্রাধান্য পেয়েছে। এর নয়টি পূর্ণ সদস্য দেশ হল চীন, ভারত, ইরান, রাশিয়া, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, উজবেকিস্তান, পাকিস্তান এবং তাজিকিস্তান।

এটি নিরাপত্তা এবং অর্থনীতির উপর ফোকাসসহ পশ্চিমের সাথে প্রতিযোগিতায় সহযোগিতার একটি প্লাটফর্ম হওয়ার উদ্দেশ্যে এই সংস্থা গঠিত হয়েছে।

পশ্চিমা-নিষেধাজ্ঞায় থাকা ইরান এ বছর পূর্ণ সদস্য হিসাবে সম্মেলনে যোগ দেয়। ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধে সমর্থন দেওয়া বেলারুশও বৃহস্পতিবার সংস্থার দশম পূর্ণ সদস্য হবে।

বেলারুশিয়ান প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো কাজাখ মিডিয়ার সাথে একটি সাক্ষাৎকারে ‘বিশ্বের কাছে প্রদর্শন করার জন্য যে বিকল্প আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম, ক্ষমতার বিভিন্ন কেন্দ্র’ রয়েছে তার জন্য জোটের প্রশংসা করেছেন।

জোটটি বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ এবং তার জিডিপির প্রায় ৩০ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব করার দাবি করে তবে এটি আঞ্চলিক বিরোধসহ অনেক অভ্যন্তরীণ মতবিরোধসহ একটি ভিন্ন ব্লক।

যদিও রাশিয়া এবং চীন পশ্চিমা আধিপত্যের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ, তারা মধ্য এশিয়ায় অর্থনৈতিক প্রতিদ্ব›দ্ধী, এটি তেল ও গ্যাস সমৃদ্ধ একটি অঞ্চল এবং এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন পথ।