আন্তর্জাতিক

ইসরাইলের একটি নৌঘাঁটিসহ ৬টি স্থাপনায় ড্রোন হামলা চালিয়েছে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। শুক্রবার ‘নিখুঁতভাবে’ আঘাত হানতে সক্ষম এক ঝাঁক আত্মঘাতী ‘কামিকাজে’ ড্রোন দিয়ে ওই হামলা চালানো হয়।

এতে ইসরাইলের ওই নৌঘাঁটির একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বহু সেনা হতাহত হয়েছে বলে দাবি করেছে সংগঠনটি।

এদিন এক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ বলেছে, ড্রোনগুলো ইসরাইলের ‘রাস আন-নাকুরা’ ঘাঁটিতে অবস্থিত এমন কয়েকটি ভবনে নিখুঁতভাবে আঘাত হেনেছে। যেসব ভবন ইসরাইলি সেনা কর্মকর্তা ও সাধারণ সেনারা ব্যবহার করে থাকেন। হামলায় নৌঘাঁটিটির একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং নিশ্চিতভাবে বহু সেনা হতাহত হয়েছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার দক্ষিণ লেবাননের দেরকিভা শহরে হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী। যাতে একজন হিজবুল্লাহ যোদ্ধা নিহত হন। এর প্রতিবাদেই শুক্রবার হামলা চালায় হিজবুল্লাহ।

বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ জানায়, গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানাতে এবং দক্ষিণ লেবাননের দেরকিভা শহরে বৃহস্পতিবারের ইসরাইলি হামলার প্রতিশোধ নিতে ওই নৌঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে।

এদিকে হিজবুল্লাহর হামলার বিষয়ে ইসরাইলের পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। তবে শুক্রবার রাতে ইসরাইলের রিজার্ভ জেনারেল ইতজাক ব্রিক বলেছেন, হিজবুল্লাহর ওপর যেকোনো হামলা এই অঞ্চলে ব্যাপক যুদ্ধের জন্ম দেবে।

আরেক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, তাদের যোদ্ধারা ইসরাইলের শেবা কৃষিখামারের রুওয়াইসাত আল-কার্ন ও জিবদিন ঘাঁটি এবং কুফার শুবা পাহাড়ের রামথা ও আল-সামাকা ঘাঁটি লক্ষ্য করে রকেট নিক্ষেপ করেছে। এতে ইসরাইলের বহু ক্ষতি হয়েছে।

গাজার ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সমর্থনে ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর থেকে ইসরাইলের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে আসছে হিজবুল্লাহ। গত সপ্তাহে ইসরাইলি বাহিনী হিজবুল্লাহর সিনিয়র কমান্ডার তালেব সামি আব্দাল্লাহকে হত্যা করার পর ইসরাইলবিরোধী হামলা জোরদার করেছে লেবানন ভিত্তিক সংগঠনটি।

এর জেরে শীর্ষ পর্যায়ের ইহুদি সেনা কর্মকর্তারা সম্প্রতি লেবাননে ‘ব্যাপক-মাত্রায়’ হামলা চালানোর বিষয়টি অনুমোদন করেন। গত মঙ্গলবার ইসরাইলি বাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, তারা লেবাননে অভিযান চালানোর বিষয়টি অনুমোদন করেছে।

একই দিন হিজবুল্লাহ গোয়েন্দা ড্রোন পাঠিয়ে ইসরাইলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনার ভিডিও ধারণ করে তা প্রকাশ করে। এতে রীতিমতো ‘হকচকিত’ হয়ে যায় তেল আবিব।

এরপর বুধবার হিজবুল্লাহ নেতা সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, লেবাননে ব্যাপক মাত্রায় আগ্রাসন চালালে ইসরাইলের এক ইঞ্চি ভূমিও হিজবুল্লাহর রকেট হামলা থেকে বাঁচতে পারবে না। একই সঙ্গে তিনি ইসরাইলকে আগ্রাসন চালানোর কাজে সহযোগিতা করলে সাইপ্রাসেও হামলা চালানোর হুমকি দেন। সূত্র: ইরনা

আন্তর্জাতিক

দেশের দক্ষিণ সীমান্তের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে অগণিত মর্টার শেল বিস্ফোরণে কাঁপছে কক্সবাজারের টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা।

স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক। কয়েক দিন বিরতির পরে আবারও শুক্রবার রাত থেকে শনিবার বিকাল পর্যন্ত বিকট শব্দে চলেছে অগণিত ও অনিয়ন্ত্রিত মর্টার শেল বিস্ফোরণ।
প্রতিটি বিস্ফোরণে থরথর করে কম্পন অনুভূত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সেই সাথে রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের পশ্চিম-দক্ষিণের গ্রামগুলোর আকাশে দেখা যাচ্ছে ঘরবাড়ি পোড়ানোর কালো ধোঁয়া।

বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ও সরকার বাহিনীর সংঘর্ষের কারণে রাখাইনের বাসিন্দারা জীবন বাঁচাতে গ্রাম ছেড়ে দিগ্বিদিক ছুটছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে তারা যেন আগের মতো সীমানা পেরিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বিজিবি ও কোস্টগার্ড সীমান্তে এবং নদীতে টহল বাড়িয়ে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

তবে এ বিষয়ে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের দপ্তর থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

অনেকের ধারণা, আরাকান আর্মি তাদের দখল করা ঘাঁটিগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে এভাবে মর্টার শেল বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে।

সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের আগে বেশি বিস্ফোরণ হলেও ঈদের দিন দুপুর পর্যন্ত বন্ধ ছিল। আবার শুক্রবার রাত থেকে ওপারে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে।

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিস্ফোরণে টেকনাফ সদর, পৌরসভার জালিয়াপাড়া, মৌলভীপাড়া, সাবরাং পানির ছড়া, নাজিরপাড়া, ডেইলপাড়া, শাহপীর দ্বীপ, হ্নীলা, নাইট্যংপাড়া, দমদমিয়া, জাদিমুড়া, রংগীখালী, পুরাতন বাজারসহ বেশ কিছু এলাকার ঘরবাড়ি কাঁপছে।

সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার সিদ্দিক আহমেদ জানান, বিস্ফোরণ মিয়ানমারে হলেও বিকট শব্দে আতঙ্কিত হচ্ছেন এলাকাবাসী।

হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান, মিয়ানমারের সংঘাতে আমাদের এলাকাবাসী যেন আতঙ্কিত না হয় সেজন্য সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন ২ বিজিবির অধিনায়কের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তা ধরেননি।

আন্তর্জাতিক

যুদ্ধে ইউক্রেনকে অস্ত্র দেওয়া নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়াকে সতর্ক করে দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেছেন, ইউক্রেনকে অস্ত্র দেওয়া হবে ‘বড় ভুল’।

খবর বিবিসির।

‘আগ্রাসন’ হলে একে অপরকে সাহায্য করতে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার নতুন চুক্তির পর সিউল বলেছিল, তারা অস্ত্র দেওয়ার সম্ভাব্যতা বিবেচনা করছে। এরপরই পুতিনের এ হুঁশিয়ারি এলো।

বৃহস্পতিবার পুতিন সাংবাদিকদের বলেন, যদি সিউল কিয়েভকে অস্ত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তবে মস্কো এমন সিদ্ধান্ত নেবে, যা দক্ষিণ কোরিয়ার বর্তমান নেতৃত্বকে খুশি করবে না।

পিয়ংইয়ংয়ে জমকালো এক সফরের পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভিয়েতনাম গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। পিয়ংইয়ং সফরে পুতিন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে যৌথ একটি প্রতিরক্ষা চুক্তিতে সই করেন।

পুতিনের হুঁশিয়ারি, যুক্তরাষ্ট্র এবং মিত্র দেশগুলো যদি ইউক্রেনকে অস্ত্র দেওয়া অব্যাহত রাখে, তবে মস্কো পিয়ংইয়ংকে অস্ত্র দেবে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, যারা অস্ত্র সরবরাহ করে, তাদের বিশ্বাস, তারা আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করছে না। আমরাও পিয়ংইয়ংসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে অস্ত্র সরবরাহের অধিকার রাখি।

জাতীয় নিরাপত্তা বিবেচনায় সিউল রাশিয়া-উত্তর কোরিয়ার চুক্তির নিন্দা জানিয়েছে। সিউলের জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক চ্যাং হো-জিন বলেছেন, ‘তার দেশ ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি পুনর্বিবেচনার পরিকল্পনা করেছে। ’

পুতিনের হুঁশিয়ারির পর দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্সিয়াল অফিস শুক্রবার বলেছে, তারা ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহে ‘বিভিন্ন বিকল্প’ বিবেচনা করবে এবং তাদের অবস্থান ‘নির্ভর করবে, রাশিয়া বিষয়টি কীভাবে নেয়, তার ওপর। ’

দক্ষিণ কোরিয়া চুক্তির প্রতিবাদ জানাতে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত জর্জি জিনোভিয়েভকে তলব করেছে এবং বলেছে, তারা চায়, মস্কো পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা ‘অবিলম্বে বন্ধ’ করুক।

আন্তর্জাতিক

জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের নতুন এক তদন্ত প্রতিবেদনে ইসরায়েলকে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ঘটানো এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার পর্ষদের অধিবেশনে গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় সংঘটিত নানা ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

তদন্তে বলা হয়েছে, গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ দায়ী।

অধিবেশনে পর্ষদের চেয়ারপারসন নাভি পিল্লাই জানান, জোর করে গাজার প্রায় পুরো জনগোষ্ঠীকে ছোট আবদ্ধ এলাকায় ঠেলে দিয়েছে ইসরায়েল।

ওই প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়েছে, ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে চালানো হামলায় হামাসসহ ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠনগুলোও যুদ্ধাপরাধ করেছে।

নাভি পিলের নেতৃত্বাধীন তদন্ত প্যানেল আরও বলছে, জনবহুল এলাকায় ইসরায়েলের ভারী অস্ত্র ব্যবহার যুদ্ধাপরাধ ঘটিয়েছে। গাজায় লোকজনকে অনাহারে রাখা, নির্বিচারে আটক এবং হাজার হাজার শিশুকে হত্যা এবং তাদের পঙ্গুত্বের মতো কারণে ইসরায়েলকে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় ৩৭ হাজার ৩৯৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন সাড়ে ৮৫ হাজারের বেশি।

আন্তর্জাতিক

গত ৯ জুন ৫০ বছরের মেয়াদ শেষে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পেট্রোডলার বা ‘শুধুমাত্র ডলারে তেল বিক্রি’র চুক্তি নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি আরব। ফলে সৌদি আরবের কোম্পানি গুলো এখন তেলসহ অন্যান্য পণ্য মার্কিন ডলারের বদলে অন্যান্য মুদ্রাতেও বিক্রি করতে পারবে।

ওইসব মুদ্রার মধ্যে রয়েছে চীনা ইউয়ান (রেনমিনিবি), ইউরো, ইয়েন, ইউয়ান ইত্যাদি।

এই চুক্তিটি অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং সৌদি আরবের সামরিক প্রয়োজনে ১৯৭৪ সালের ৮ জুন স্বাক্ষরিত হয়। এ চুক্তি বিশ্বজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রভাব বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। খবর ইন্ডিয়া টুডে

উল্লেখ্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে প্রায় সব দেশই গোল্ড স্ট্যান্ডার্ডকে তাদের মুদ্রামান নির্ধারণের জন্য ব্যবহার করত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইউরোপীয় উপনিবেশ গুলো ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়। বিশ্বযুদ্ধ শেষে ইউরোপকে পুনর্গঠনের সময় ব্রেটন উডস চুক্তি ও আইএমএফ-এর কল্যাণে ডলারভিত্তিক আন্তঃরাষ্ট্রীয় বাণিজ্য স্থাপিত হয়। কারণ এই সময় পৃথিবীর মোট সোনার দুই-তৃতীয়াংশ রিজার্ভ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। ১৯৭২ সালে যুক্তরাষ্ট্র গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড তুলে দিলে পৃথিবী মার্কিন ডলারের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।

১৯৭৩ সালে সৌদি আরব একমাত্র ডলারেই তেল বিক্রি করার সিধান্ত নেয়, যা ১৯৭৫ সালের মধ্যে অন্যান্য ওপেক দেশও মেনে নেয়। ফলে বৈশ্বিক তেল আমদানি রপ্তানি হয়ে পড়ে পেট্রোডলারনির্ভর।

আন্তর্জাতিক

ওয়েনাড ছেড়ে মা সোনিয়া গান্ধীর ছেড়ে দেওয়া আসন রায়বরেলী ধরে রাখছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ওয়েনাডে দাঁড়াচ্ছেন তার বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। সোমবার কংগ্রেসের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রাহুল বলেন, আমার কাছে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন ছিল। কারণ ওয়েনাডের মানুষ আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। রায়বরেলী ও ওয়েনাডের মানুষের সঙ্গে আমার আত্মিক সম্পর্ক। আমি ওয়েনাড ছাড়ছি। প্রিয়াঙ্কা লড়বেন ওয়েনাড থেকে।

কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের বাড়িতে আয়োজিত ওই বৈঠকে সোনিয়া গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা, এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কেসি বেণুগোপাল উপস্থিত ছিলেন।

রায়বরেলীতে এবার রেকর্ড ভোটে জয়ী হয়েছেন রাহুল। এ আসনে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সংসদ সদস্য ছিলেন সোনিয়া। তারও আগে রায়বরেলী থেকে কংগ্রেসের সংসদ সদস্য ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী।

তবে কংগ্রেসের এ পুরনো ঘাঁটিতে রাহুল এ বছর পেয়েছেন মা সোনিয়ার থেকেও বেশি ভোট। বিজেপির প্রার্থীকে হারিয়েছেন প্রায় চার লাখ ভোটে। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশের আমেঠি থেকে হেরে গেলেও কেরালার ওয়েনাড জিতিয়েছিল রাহুলকে। এবার রায়বরেলীতে জেতার পরে সেই ওয়েনাড ছেড়ে দিলেন রাহুল।

২০১৪ সালে ৪৪ ও ২০১৯-এ ৫২টি আসনে জেতা কংগ্রেস এবার লোকসভা নির্বাচনে ৯৯টি আসন জিতে ‘প্রধান বিরোধী দল’-এর মর্যাদা পুনরুদ্ধার করেছে দলটি। ফলে এক দশক পরে লোকসভায় ফিরতে চলেছে ‘বিরোধী দলনেতা’ পদ।

কেরালার ওয়েনাড ও উত্তরপ্রদেশের রায়বরেলী দু’টি আসন থেকেই সাড়ে তিন লাখের বেশি ব্যবধানে জয়ী রাহুলই এ ক্ষেত্রে দলের ‘পছন্দ’ বলে গত ৮ জুন কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু রাহুল বা তার দলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বার্তা মেলেনি।

আন্তর্জাতিক

হাজীগণ রোববার সৌদি আরবের পবিত্র মক্কা নগরীর কাছে মিনায় ‘শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের’ মধ্যদিয়ে হজের অন্যতম প্রধান আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেন। এদিকে সারা বিশ্বের মুসলমানরা ঈদুল আজহার ছুটি উদযাপন করছেন। খবর এএফপি’র।

এ বছর হজ পালন করতে আসা ১৮ লাখ মুসলমান ভোরবেলা থেকেই ইসলামের পবিত্রতম শহর মক্কা আল-মুকাররামার বাইরে অবস্থিত মিনা উপত্যকায় নিমির্ত শয়তানের প্রতীকী তিনটি কংক্রিটের দেয়ালের প্রতিটিতে সাতটি করে পাথর নিক্ষেপ শুরু করেন।

ইসলামের ধর্মীয় এ রীতিটি হযরত ইব্রাহিমের (আঃ) তিনটি স্থানে শয়তানকে পাথর ছুঁড়ে মারার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। বলা হয়, সেখানে শয়তান তাকে তার পুত্রকে কুরবানি দেওয়ার জন্য আল্লাহ’র আদেশ পালন থেকে বিরত করার চেষ্টা করেছিল।

পাথর মারার রীতিটি পালন করতে গিয়ে একাধিক পদদলিত হওয়ার ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। এক্ষেত্রে ২০১৫ সালে সেখানে সবচেয়ে ভয়াবহ পদদলনের ঘটনায় ২,৩০০ হাজী প্রাণ হারিয়েছিলেন।

এমন মর্মান্তিক ঘটনার পর সেখানে হাজীদের চরম ভিড় এড়াতে স্থানটি নতুন করে ঢেলে সাজানো হয়েছে।

শনিবার রাতে হাজীরা পাথর সংগ্রহ করেন এবং মিনা এবং আরাফাতের মাঝখানে অবস্থিত মুজদালিফাহ সমভূমিতে আকাশের নিচে রাতযাপন করেন। সেখানে তারা ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় খোলা জায়গায় বসে প্রার্থনা করেন।

যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ৬০ বছর বয়সী গাম্বিয়ার নাগরিক রোহি ডাইসেকা বলেন, ‘সেখানের তাপমাত্রা খুব, খুব গরম ছিল।’ এমন গরম পরিস্থিতিতে ‘আমি আমার মাথায় অনেক পানি দিলাম। আলহামদুলিল্লাহ সব ঠিক হয়ে গেল।’

আন্তর্জাতিক

ইসরাইলি বাহিনীর ব্যাপক কড়াকড়ির মধ্যেও জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ৪০ হাজারের বেশি মুসল্লি অংশ নেন। জেরুজালেম ইসলামিক ওয়াক্ফ রোববার এ তথ্য জানিয়েছে।

তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলু এ খবর দিয়েছে।

মুসলমানদের দ্বিতীয় উৎসব কুরবানির ঈদ পালিত হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। অথচ এই দিনেও ফিলিস্তিনি মুসলমানদের মনে আনন্দের পরিবর্তে আতঙ্ক বিরাজ করছে। প্রতিনিয়ত হামলা হচ্ছে গাজা উপত্যকায়। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদুল আজহাতেও কড়াকড়ি অবস্থানে ছিল ইসরাইলি সেনারা। এমনকি ঈদের দিন কুরবানি করতেও বাধা দিয়েছে দখলদার বাহিনী।

আনাদোলুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইলি বাহিনীর কড়াকড়ির পরও আল-আকসায় নামাজ আদায়ে আসা-যাওয়ার পথে অনেকে ইসরাইলি বাহিনীর হাতে নিগ্রহের শিকার হয়েছেন।

গত বছরের অক্টোবরে গাজায় আগ্রাসন শুরু করে ইসরাইল। যা এখনো অব্যাহত আছে। ভয়াবহ নৃশংসতার মধ্যেই ঈদুল ফিতরের পর ঈদুল আজহা উদযাপন করছে ফিলিস্তিনের অসহায় মানুষ।

আন্তর্জাতিক

ইসরাইলি হামলায় লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধাদল হিজবুল্লাহর সিনিয়র ফিল্ড কমান্ডার নিহত হওয়ার জবাবে দেশটিতে দ্বিতীয় দিনের মতো হামলা অব্যাহত রয়েছে। লেবানন থেকে উত্তর ইসরাইলে ১৫০টি রকেট ছোড়ার পর অধিকৃত গোলান মালভূমি ও আপার গ্যালিলের বিভিন্ন এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার ইসরাইলের দৈনিক মারিভের বরাতে এসব তথ্য জানিয়েছে আল-জাজিরা।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার উত্তর ইসরাইলের শহরজুড়ে বিমান হামলার সাইরেন বাজানো হয়েছে। বিকালের দিকে লেবানন থেকে প্রায় ৪০টি রকেট ছোড়া হয়। লেবানন সীমান্ত থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে সাফেদসহ ইসরাইলি শহরের উপরে অসংখ্য রকেট প্রতিহতের ফুটেজ সম্প্রচার করেছে ইসরাইলি রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম কান।

ইসরাইলের জাতীয় অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা বলেছে, ক্ষেপণাস্ত্রের শার্পনেলের আঘাতে দুজন আহত হয়েছেন। এছাড়া খোলা জায়গায় রকেট আঘাত হানলে বেশ কয়েকটি এলাকায় দাবানল ছড়িয়ে পড়ে।

গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই লেবানন সীমান্তে ইসরাইলি সেনা ও হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা নিয়মিত পাল্টাপাল্টি হামলা করে আসছে। তবে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডার তালিব সামি আবদুল্লাহ নিহত হলে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়ে।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার গভীর রাতে দক্ষিণ লেবাননের জাওয়ায় ইসরাইলি বাহিনী একটি আবাসিক ভবনে আঘাত হানলে তালিব সামি আবদুল্লাহ মারা যান। আট মাসের বেশি সময় ধরে চলা পাল্টাপাল্টি হামলায় তিনিই এখন পর্যন্ত নিহত হিজবুল্লাহর সবচেয়ে বড় কর্মকর্তা। এছাড়া এ ঘটনায় হিজবুল্লাহর আরও তিন সদস্যের মৃত্যু হয়েছে।

১৯৬৯ সালে লেবাননের আদর্শিত অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন তালিব সামি আবদুল্লাহ। তবে তিনি হাজি তালিব নামেও বেশ পরিচিত। বুধবার বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলীতে তার জানাজা হয়।

হাজি তালিবের জানাজায় অংশ নিয়ে হিজবুল্লাহর কার্যনির্বাহী পরিষদের প্রধান সাইয়েদ হাশেম সাফি আল-দিন বলেন, তালেব সামি আবদুল্লাহর শাহাদাতের জবাবে আমাদের প্রতিক্রিয়া হলো আমরা আমাদের অভিযান আরও জোরদার করব। যদি ইসরাইলি সেনাবাহিনী উত্তর ইসরাইলে ইতোমধ্যে যা আঘাত হেনেছে তাতেই কান্নাকাটি ও হাহাকার শুরু করে। তবে তাদের আরও কান্না ও হাহাকার করার জন্য প্রস্তুত হওয়া উচিত।

আন্তর্জাতিক

পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে আজ। হজ পালন করতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ইতোমধ্যে সৌদি আরবের মিনায় পৌঁছে গেছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে রাতভর কেউ হেঁটে, কেউ বাহনে চড়ে সেখানে জড়ো হয়েছেন। ‘লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে আজ মুখরিত হবে তাঁবুর শহরখ্যাত মিনার প্রান্তর। সারা বিশ্বের প্রায় ২০ লাখ মানুষ এবার হজে অংশ নিচ্ছেন। এ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে হজে গেছেন ৮২ হাজার ৭৭২ জন। ৯ জিলহজ (১৫ জুন) আরাফাতের ময়দানে হজের মূলপর্ব অনুষ্ঠিত হবে।

মক্কার মসজিদুল হারাম থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে মিনা। হজের অংশ হিসাবে আজ ৮ জিলহজ মিনায় সারা দিন থাকবেন হাজিরা। ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করবেন। সন্ধ্যার পর মুজদালিফার উদ্দেশে রওয়ানা করবেন। সেখানে রাত যাপন ও পাথর সংগ্রহ করবেন। ১০ জিলহজ ফজরের নামাজ আদায় করে মুজদালিফা থেকে আবার মিনায় ফিরে আসবেন। এরপর বড় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ, কুরবানি ও মাথা মুণ্ডন বা চুল ছেঁটে স্বাভাবিক পোশাকে মক্কায় কাবা শরিফ তাওয়াফ করবেন। তাওয়াফ, সাঈ শেষে মিনায় ফিরে গিয়ে ১১ ও ১২ জিলহজ অবস্থান এবং প্রতিদিন তিনটি শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করবেন। শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের সময় যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে, সেজন্য সৌদি হজ কর্তৃপক্ষ প্রতিবারের মতো বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

গতবারের মতো এবারও প্রচণ্ড গরমের ভোগান্তি সঙ্গী হচ্ছে হজযাত্রীদের। হজের সময় তাপমাত্রা ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসেও পৌঁছাতে পারে বলে হজযাত্রীদের সতর্ক করেছে মক্কার আবহাওয়া দপ্তর। বলা হয়েছে, এ বছর হজযাত্রীরা কয়েকটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারেন। এর মধ্যে তাপমাত্রার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি অন্যতম। সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুহাম্মদ আল-আব্দুল্লাহিল বলেছেন, উচ্চ তাপমাত্রা হজযাত্রীদের স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। এ কারণে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

চলতি বছর মক্কায় প্রবেশের তাসরিহ বা নুসুক কার্ড ছাড়া কাউকে পাওয়া গেলে ১০ হাজার সৌদি রিয়াল অর্থদণ্ড ও কারাদণ্ডের বিধান করা হয়েছে। ডিজিটাল এ নুসুক কার্ডে সংশ্লিষ্ট হজযাত্রীর প্রয়োজনীয় সব তথ্য থাকে। হজের জন্য মিনা, আরাফাত, মুজদালিফা, মসজিদুল হারামে প্রবেশ করতে চাইলে এ কার্ড অবশ্যই দেখাতে হবে।

সৌদি আরবে এবার হজ পালন করতে গিয়ে স্বাভাবিক কারণে এখন পর্যন্ত ১৫ বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৪ জন পুরুষ ও ১ জন নারী। মক্কায় মারা গেছেন ১১ জন এবং মদিনায় ৪ জন।