আন্তর্জাতিক

করোনার টিকা তৈরির জন্য হাঙ্গেরি ও যুক্তরাষ্ট্রের দুই বিজ্ঞানী যৌথভাবে এবারের চিকিৎসা বিজ্ঞানের নোবেল জিতে নিয়েছেন। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তারা। বিজয়ী হিসেবে কাতালিন ক্যারিকো ও ড্রিউ ওয়েইসম্যানের নাম সোমবার বিকালে ঘোষণা করে নোবেল কমিটি।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যে প্রযুক্তির জন্য তারা পুরস্কার পেলেন, সেটি মহামারির আগে পরীক্ষাধীন ছিল। ওই প্রযুক্তির তৈরি টিকা বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষকে দেওয়া হয়েছে।

এখন ক্যানসারসহ অন্যান্য রোগের চিকিৎসায় ওই এমআরএনএ প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য গবেষণা হচ্ছে।

নোবেল পুরস্কার কমিটি বলেছে, আধুনিককালে মানব স্বাস্থ্য যখন মারাত্মক হুমকির মুখে ছিল, তখন এই দুই নোবেলজয়ী টিকা তৈরির ক্ষেত্রে নজিরবিহীন অবদান রেখেছেন।

১৯৯০ এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া ইউনিভার্সিটিতে একসঙ্গে কাজ করতেন কাতালিন ক্যারিকো ও ড্রিউ ওয়েইসম্যান।

১৯৫৫ সালে হাঙ্গেরিতে জন্মগ্রহণ করেন কাতালিন। ২০২১ সাল থেকে তিনি সিজড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। পেনসিলভানিয়ার সঙ্গেও যুক্ত আছেন।

আর ওয়েইসম্যান ১৯৫৯ সালে আমেরিকার ম্যাসচুয়েটসে জন্ম নেন। তিনি আমেরিকার পেন ইনস্টিটিউট ফর আরএনএ ইনোভেশন কাজ করেন।

আন্তর্জাতিক

পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে একটি মসজিদের কাছে আত্মঘাতী বোমা হামলায় অন্তত ৫২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫০ জন।

শুক্রবার বেলুচিস্তান প্রদেশের মাস্তুং জেলায় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি উপলক্ষে মিছিলের জন্য লোকজন জড়ো হলে সেখানে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে পাকিস্তানের পত্রিকা ডন এ খবর দিয়েছে।

এখন পর্যন্ত কোনো সংগঠন এ ঘটনার দায় স্বীকার করেনি।

জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ডিএইচও) আব্দুর রাজ্জাক শাহি হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সিটি স্টেশন হাউস অফিসার (এসএইচও) মোহাম্মদ জাভেদ লেহরি জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে একজন পুলিশ কর্মকর্তাও রয়েছেন।

তবে শহীদ নওয়াব গৌস বখশ রাইসানি মেমোরিয়াল হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী ডা. সাঈদ মিরওয়ানি এর আগে ডনকে জানিয়েছিলেন, ৩৪ জন মারা গেছেন এবং ১৩০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।

পরে শাহি স্পষ্ট করেছেন যে দুটি হাসপাতাল থেকে দ্বিগুণ এন্ট্রির কারণে এই সংখ্যা বেশি ছিল।

সিইও ডা. মিরওয়ানি নিশ্চিত করেছেন যে এখনও পর্যন্ত ২৮টি মৃতদেহ হাসপাতালে আনা হয়েছে এবং ২২ জনকে মাস্তুং জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, হাসপাতালে কয়েক ডজন চিকিৎসাধীন রয়েছে এবং আহত ২০ জনেরও বেশি লোককে চিকিৎসার জন্য কোয়েটায় রেফার করা হয়েছে। হাসপাতালের সিইও বলেন, মৃতদেহ ও আহতদের সরানোর প্রক্রিয়া এখনও চলছে।

আলফালাহ রোডের মদিনা মসজিদের কাছে ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) শোভাযাত্রার জন্য লোকজন জড়ো হওয়ার সময় বিস্ফোরণটি ঘটে।

পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মুনির আহমেদ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, মুহাম্মদ (সা.)- এর জন্মদিন উপলক্ষে একটি শোভাযাত্রার জন্য জড়ো হওয়া একটি মসজিদের কাছে বোমা হামলাকারী আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটায়।

নিষিদ্ধ ঘোষিত তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান এই হামলার কথা অস্বীকার করেছে।

বিস্ফোরণের পর প্রকাশিত অযাচাইকৃত ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, বেশ কয়েকটি রক্তাক্ত লাশ এবং ছিন্নভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সূত্র: ডন

আন্তর্জাতিক

গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ক্ষুন্ন করলে বাংলাদেশের যে কোনো নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতির আওতায় আসতে পারেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।

গত বৃহস্পতিবার মাকিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এ সময় মিলারকে প্রশ্ন করা হয়, বাংলাদেশের একটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস দূতাবাসের কর্মী ও নিজের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তার এ উদ্বেগকে সিরিয়াসলি নেওয়া হচ্ছে কিনা?

জাবাবে মিলার বলেন, আমি মার্কিন দূতাবাস বা সেখানে কর্মরত কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়ে নির্দিষ্ট বিবরণ নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি না। তবে অবশ্যই তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী, প্রতিটি দেশকে অবশ্যই সব কূটনৈতিক মিশন প্রাঙ্গণের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে ও কর্মীদের ওপর যেকোনো আক্রমণ প্রতিরোধে কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিতে হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয়। আশা করি, সরকার আমাদেরসহ সব বিদেশি মিশন ও কর্মীদের নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।

গণমাধ্যমসহ কোনো ব্যক্তিদের ওপর ভিসানীতি আরোপ করা হবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে মিলার বলেন, আমি এখন কোনো নির্দিষ্ট পদক্ষেপ ঘোষণা করতে যাচ্ছি না।

তবে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার কাজে দায়ী কিংবা জড়িত থাকার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সরকার ও রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর ভিসানীতি কার্যকর করার পদক্ষেপ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, গত ২৪ মে ভিসানীতি ঘোষণার সময় আমরা এটা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছি। আমরা ভিসানীতির কথা বলেছি তবে কারও নাম উল্লেখ করিনি। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া দুর্বল ও বাধাগ্রস্ত করার কাজে দায়ী কিংবা জড়িত যে কোনো বাংলাদেশির ক্ষেত্রে এই ভিসানীতি কার্যকর হতে পারে। অন্য যে কোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে যদি আমরা মনে করি তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা প্রয়োজন, সেক্ষেত্রে আমরা এ নীতি প্রয়োগ করব।

আন্তর্জাতিক

সম্পত্তির দাম বাড়ানো মামলায় বড় ধাক্কা খেলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিউইয়র্কে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যেতে পারে ট্রাম্পের। ব্যাংকে এবং বিমায় নিজের সম্পত্তির দাম বাড়িয়ে দেখিয়েছেন ট্রাম্প।

মূলত ব্যাংক ঋণ সুবিধা পাওয়ার জন্য এই কাজ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার ৩৫ পাতার মন্তব্যে নিউইয়র্ক আদালতের বিচারক আর্থার এনগোরোন জানিয়েছেন, ট্রাম্পের কাগজপত্রে জালিয়াতি আছে।

তিনি বলেছেন, ‘নিজের ব্যবসার জন্য ট্রাম্প যে কাগজপত্র তৈরি করেছেন, তাতে স্পষ্ট গণ্ডগোল আছে।’ এখানেই শেষ নয়। তার বক্তব্য, ভাড়ার জন্য রেগুলেটেড অ্যাপার্টমেন্ট এবং আনরেগুলেটেড অ্যাপার্টমেন্টের মূল্য এক। সংরক্ষিত জমি এবং অসংরক্ষিত জমির মূল্য এক।

বিচারকের ভাষায়, ‘এ কেবল আরব্য রজনীতেই সম্ভব, বাস্তব জগতে নয়।’ নিউইয়র্কের আদালতে এ বিষয়ে মামলা দায়ের হয়েছিল। আদালত জানিয়েছেন, মামলাটি শোনা হবে। অর্থাৎ মামলাটি নিয়েছেন আদালত। এই মামলায় দোষী প্রমাণিত হলে নিউইয়র্কে ব্যবসা করার অধিকার হারাতে পারেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

২০২২ সালে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়েছিল। আগামী সপ্তাহে মামলার পরবর্তী শুনানি। নিউইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিটিয়া জেমস ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন। তাতে বলা হয়েছিল, ব্যাংকে এবং বিমা সংস্থাকে ট্রাম্প নিজের সম্পত্তির যে হিসাব দিয়েছেন, তাতে তার মূল্য অন্তত ২.২৩ বিলিয়ন ডলার বেশি দেখানো হয়েছে। লোন পেতে সুবিধা হবে বলেই এভাবে নিজের সম্পত্তির মূল্য বাড়িয়ে দেখিয়েছেন ট্রাম্প, যা বেআইনি।

আগামী সপ্তাহে দোষী প্রমাণিত হলে ট্রাম্পের বেশ কিছু ব্যবসার লাইসেন্স বাতিল হতে পারে। নিউইয়র্ক থেকে তাকে ব্যবসা গোটাতে হতে পারে। তবে এই মামলার জন্য আগামী নির্বাচনে কোনো প্রভাব পড়বে না বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

আন্তর্জাতিক

ভারতে আনুষ্ঠিত জি২০ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার সময় নেশায় বুঁদ ছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এমনকি তার বিমানভর্তি ছিল কোকেন। সম্প্রতি এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন এক ভারতীয় কূটনীতিক। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।

সুদানের ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত দীপক ভোরা এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ট্রুডো যখন এই মাসে জি২০’র জন্য ভারতে এসেছিলেন, তখন তার বিমানটি দৃশ্যত ‘কোকেনে পূর্ণ’ ছিল। ট্রুডো জি২০ নৈশভোজ মিস করেছেন কারণ তিনি নেশায় বুঁদ ছিলেন এবং দুই দিনের জন্য তার রুম থেকে বের হননি। একারণে তিনি জি২০ প্রোগ্রামেও যোগ দিতে পারেননি।

তিনি আরও বলেন, আমার স্ত্রী ট্রুডোকে দিল্লি বিমানবন্দরে দেখেছে। সে আমাকে জানায়, ট্রুডোকে তখন মানসিকভাবে চাপে রয়েছেন বলে মনে হয়েছে। আমরা এর কারণ জানি না। কেউ কেউ বলছেন ড্রাগ নেওয়ার কারণে তার কোনও হুঁশ ছিল না।

তবে ভারতীয় ওই কূটনীতিকের দাবি অস্বীকার করেছেন ট্রুডো। তার দপ্তরের তরফে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়েছে, সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ ছড়ানো হচ্ছে। কীভাবে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তিকর রিপোর্ট প্রকাশ করা যায়, এটা তার উদাহরণ।

খালিস্তানপন্থী শিখ নেতা হরদীপ সিং হত্যাকে ঘিরে ভারত-কানাডার সম্পর্ক তলানিতে থাকার এই উত্তেজনাপূর্ণ সময়টায় ট্রুডো সম্পর্কে এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। গত ১৮ই জুন কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশে দুই অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির গুলিতে নিহত হন হরদীপ সিং।

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ঈশা ইউসেফ ঈশা আল-দুহাইলান জানিয়েছেন, আগামী বছর বাংলাদেশ সফর করবেন সৌদি যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান আল সৌদ।

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় সৌদি দূতাবাসে ৯৩তম সৌদি জাতীয় দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান।

ঈশা ইউসেফ ঈশা আল-দুহাইলান বলেন, দূতাবাস আগামী বছর ক্রাউন প্রিন্সকে স্বাগত জানাতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে -ইনশাআল্লাহ। বাংলাদেশ ‘আমাদের হৃদয়ে একটি বিশেষ স্থান’ রেখেছে। এ দেশের স্থিতিশীল সরকার ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে সম্পর্কটি আরও বেড়েছে।

সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশে সৌদি কোম্পানির উপস্থিতি ইতো মধ্যেই উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে।

বাংলাদেশে বিনিয়োগ পরিবেশ সুবিধা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসাও করেন তিনি।

এর আগে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান হজ উপলক্ষে মক্কায় এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিনকে বলেছিলেন, সৌদি আরব বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিতে সর্বদা আগ্রহী।

সৌদি দূতাবাসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

আন্তর্জাতিক

খালিস্তান আন্দোলনের নেতা হরদীপ সিং নিজ্জারের হত্যাকাণ্ড নিয়ে কানাডার অভিযোগের জবাবে ভারতের অসন্তুষ্টির স্পষ্ট বার্তা দিলেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। মঙ্গলবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে ভাষণে এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি। জয়শঙ্কর বলেন, রাজনৈতিক স্বার্থে কখনো সন্ত্রাসবাদ, সহিংসতা ও উগ্রপন্থাকে সমর্থন করা উচিত নয়।

জয়শঙ্কর তার ভাষণে কোনো দেশের নাম নেননি। তবু বুঝতে অসুবিধা হওয়ার নয়, কানাডার অভিযোগের জবাবে ভারত আনুষ্ঠানিক যে জবাব দিয়েছিল, হরদীপ সিং হত্যায় ভারতের হাত থাকার অভিযোগ নিতান্তই রাজনৈতিক স্বার্থের কারণে, সেটাই জাতিসংঘের আসরেও বলেছেন তিনি। ভাষণে জয়শঙ্কর বলেন, টিকার (কোভিড-১৯) ক্ষেত্রে বর্ণবাদের মতো অবিচারের পুনরাবৃত্তি হতে দেওয়া যায় না। জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালনকে এড়িয়ে যেতে দেওয়া যায় না। বাজার দখলের শক্তি খাটিয়ে দুর্বলদের অভুক্ত রাখা অনুচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক স্বার্থকেও কখনো সন্ত্রাসবাদ, সহিংসতা ও উগ্রপন্থা মোকাবিলার বিষয়গুলো নির্ধারণ করতে দেওয়া যায় না।

জয়শঙ্কর আরো বলেন, আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা এবং কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী ব্যবহার করা যায় না। মুখে যা বলা হচ্ছে, তার সঙ্গে বাস্তবের অমিল দেখা দিলে তা দেখানোর মতো সৎসাহস থাকা দরকার।

গত জুনের মাঝামাঝিতে কানাডায় দেশটির নাগরিক হরদীপ সিং নিজ্জারকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ হত্যাকাণ্ড ঘিরে সম্প্রতি ভারত-কানাডা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অবনতিই শুধু ঘটেনি, বিশ্বাসের ঘাটতিও দেখা দিয়েছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সে দেশের সংসদে এক বিবৃতিতে ওই হত্যায় ভারতের হাত থাকার বিষয়ে ঘোরতর সন্দেহ প্রকাশ করেন। পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে ওই বিষয়ে তথ্য পাওয়ার কথাও তিনি স্বীকার করেছেন। সেই সঙ্গে তিনি আশা প্রকাশ করেন, প্রকৃত সত্য উদ্‌ঘাটনে ভারত সহযোগিতা করবে।

ট্রুডোর অভিযোগ নাকচ করে একে ‘উদ্ভট ও রাজনৈতিক স্বার্থে পক্ষপাতদুষ্ট’ বলেছে ভারত সরকার। নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে বলা হয়, কানাডার কাছে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ থাকলে তা দেওয়া হোক। বিষয়টি নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে। এ পরিস্থিতিতে ট্রুডোর উপস্থিতিতে জাতিসংঘের বার্ষিক আসরে জয়শঙ্কর কী বার্তা দেন, সেদিকে অনেকের নজর ছিল।

ভারত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যপদের দাবিদার। এ পরিস্থিতিতে ভারতের বিরুদ্ধে ট্রুডোর অভিযোগ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। জয়শঙ্কর তার ভাষণে কারও নাম উল্লেখ না করে সেই অভিযোগের জবাব দেওয়ার পাশাপাশি বর্তমান বিশ্বে ভারতের অবস্থানের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, যখন আমরা এক বিশ্ব, এক পরিবার, এক ভবিষ্যতের কথা বলি, তখন তার লক্ষ্য থাকে গোটা পৃথিবী, সামান্য কয়েকজনের স্বার্থ নয়। প্রকৃত সংহতি ছাড়া বিশ্বাসের আধার তৈরি হয় না। এটাই দক্ষিণ গোলার্ধের অনুভূতি।

বিশ্ব বর্তমানে ভারতকে সমস্যার সমাধানকারী দেশ হিসেবে গণ্য করছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

আন্তর্জাতিক

বেনিনে একটি জ্বালানি ডিপো বিস্ফোরিত হয়ে অন্তত ৩৫ জন নিহত হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শী ও কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।

বিস্ফোরণের ফলে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী তৈরি হতে দেখা যায়।

শনিবার এই দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ওই ডিপোতে পাচার করা জ্বালানি রাখা হত। এর অবস্থান নাইজেরিয়া সীমান্তের কাছে সেমে পোদজি শহরে। গাড়ি, মোটরসাইকেল, তিন চাকার ট্যাক্সি এখান থেকে জ্বালানি মজুত করতে আসত।

প্রসিকিউটর আবদোবাকি আদম-বোঙ্গল এই বিবৃতিতে জানান, আগুনে দোকানটি পুড়ে যায়। প্রাথমিক মূল্যায়নে দেখা যায়, এক শিশুসহ অন্তত ৩৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সম্ভবত গ্যাসোলিনের ব্যাগ খালি করার সময় আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল।

এই বিস্ফোরণের ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে বিবৃতিতে জানান প্রসিকিউটর।

এই বিস্ফোরণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। আল জাজিরার যাচাই করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী এবং আগুনের শিখা উপরের দিকে ছড়িয়ে পড়ছে। আশপাশে লোকজন নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে এই দৃশ্য দেখছে।

বেনিনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলাসানে সেইদু বলেন, এই আগুনের কারণ পাচার করা জ্বালানি। অগ্নিকাণ্ডে যারা মারা গেছেন, তাদের দেহ বাজেভাবে পুড়ে গেছে।

তেল উৎপাদক নাইজেরিয়ার সঙ্গে লাগোয়া বেনিন সীমান্তে জ্বালানি চোরাচালান অনেকটা সাধারণ বিষয়। অবৈধ শোধনাগার, জ্বালানি ডাম্প এবং পাইপলাইনগুলো সীমান্ত শহরগুলোতে ছড়িয়ে রয়েছে, যা কখনও কখনও আগুনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

আন্তর্জাতিক
(ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসের কাছে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর প্রতিবাদ করছেন বিক্ষোভকারীরা। ছবিটি ২০২০ সালের ২ জুনের- এপি)বিশ্বের সবচেয়ে সংঘাতপ্রবণ ৫০টি দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। যেখানে একমাত্র পশ্চিমা দেশ হিসাবে আছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বজুড়ে গত এক বছরে রাজনৈতিক সহিংসতার মাত্রা নির্ধারণ করেছে এমন গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে।

সম্প্রতি গবেষণাপত্রটি প্রকাশ করে আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন অ্যান্ড ইভেন্ট ডেটা প্রজেক্ট (এসিএলইডি)। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় মার্কিন সংবাদ মাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা।

এসিএলইডি হলো যুক্তরাষ্ট্রের একটি উপাত্ত সংগ্রহ, বিশ্লেষণ ও তালিকা প্রণয়ন বিষয়ক অলাভজনক সংস্থা। যুক্তরাষ্ট্রের এই তালিকায় আসার অন্যতম কারণ হিসাবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটিতে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক সহিংসতা এবং উগ্র ডানপন্থি গোষ্ঠীগুলোর বিস্তার লাভকে উল্লে­খ করা হয়েছে। তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ২২তম আর যুক্তরাষ্ট্রকে রাখা হয়েছে সবার নিচে। যুক্তরাষ্ট্রকে রাখা হয়েছে অশান্ত পর্যায়ের দেশের কাতারে।

এসিএলইডি ২০২২ সালের জুলাই থেকে এ বছরের জুলাই পর্যন্ত বিশ্বের ২৪০টির বেশি দেশ এবং অঞ্চল থেকে উপাত্ত সংগ্রহ করে। এ সময়ের মধ্যে সংস্থাটি বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক সহিংসতার ১ লাখ ৩৯ হাজারের বেশি ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। এ সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় ২৭ শতাংশ বেশি।

বেশিরভাগ দেশই কমপক্ষে একটি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনার মুখোমুখি হয়েছে। তবে এই ৫০টি দেশকে উচ্চ মাত্রার সংঘাতের কারণে ‘চরম’, ‘উচ্চ’ ও ‘অশান্ত’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সশস্ত্র গোষ্ঠী রয়েছে মিয়ানমারে। দেশটি ‘চরম’ পর্যায়ভুক্ত হয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছে। এরপরই রয়েছে সিরিয়া ও মেক্সিকো। লিবিয়া, ঘানা, চাদসহ আফ্রিকা ও এশিয়ার ১৯টি দেশও আছে এ তালিকায়।

এসিএলইডির যোগাযোগ বিভাগের প্রধান স্যাম জোনস বলেন, এই তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান প্রমাণ করে, রাজনৈতিক সহিংসতা শুধু দরিদ্র বা অগণতান্ত্রিক দেশেগুলোতেই সীমাবদ্ধ নয়।

আন্তর্জাতিক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভ‚মি মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করা।

বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক, নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল উজরা জেয়া জাতিসংঘের ৭৮তম অধিবেশনের ফাঁকে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করলে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

বৈঠকে তারা বাংলাদেশের আগামী সাধারণ নির্বাচন নিয়েও আলোচনা করেন। উজরা জেয়া বলেন, তারা বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অহিংস নির্বাচন চান। বৈঠকে বিভিন্ন বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক সমস্যা নিয়েও আলোচনা হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

বৈঠকে উজরা জেয়া প্রধানমন্ত্রীকে জানান, তারা রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের জন্য ১১৬ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জেয়া রোহিঙ্গাদের উন্নত জীবিকা নিশ্চিত করতে তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর জোর দেন।

যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো শুরু করার আগে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু করা উচিত, অন্যথায় এই অঞ্চল নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে পড়বে। কারণ রোহিঙ্গারা ইতোমধ্যে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে। যার মধ্যে রয়েছে হত্যা, আগ্নেয়াস্ত্র চোরাচালান এবং মাদক ব্যবসা। রোহিঙ্গারা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে, কারণ তাদের প্রত্যাবাসন দীর্ঘায়িত হচ্ছে এবং তারা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে। তারা এখানে কোনো ভবিষ্যৎ অনুভব করছে না।

শেখ হাসিনা গাম্বিয়ার আন্তর্জাতিক আদালতে (আইসিজে) দায়ের করা মামলায় আন্তর্জাতিক সমর্থনও চেয়েছেন।

সাতটি দেশ- ফ্রান্স, কানাডা, নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্য, ডেনমার্ক ও মালদ্বীপ মামলার প্রতি সম্মতি দিয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার ব্রিফিংয়ে আরও বলেন, তারাও (বাংলাদেশ) অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চান। জনগণের সমর্থন ছাড়া কোনো সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারে না। মোমেন বলেন, সহিংসতামুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোর আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, আমরা জনগণের ভোটে বিশ্বাস করি। জনগণের ভোট ছাড়া কেউ ক্ষমতায় আসতে পারে না। ভোট কারচুপির মাধ্যমে কেউ ক্ষমতায় এলে তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, দেশের সংবিধান অনুযায়ী জাতীয় নির্বাচন হবে। আগামী সাধারণ নির্বাচনের কয়েক মাস আগে অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনি পর্যবেক্ষক পাঠানোর প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, নির্বাচনে আমরা বিদেশি পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানাই। তিনি বলেন, বিদেশিরা কিছু ভালোভাবে বর্ণনা করলে ভালো হবে, অন্যথায় ভুল হবে। আমরা বিদেশিদের কাছ থেকে সার্টিফিকেট নিয়ে দেশ চালাতে চাই না।

গণহত্যা প্রতিরোধে জাতিসংঘের বিশেষ দূত অ্যালিস ওয়াইরিমু এনদেরিতুও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যাকে ‘গণহত্যা’ হিসাবে স্বীকৃতি দিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান। এছাড়া তিনি মিয়ানমারে গণহত্যার বিচার অব্যাহত রাখতে জাতিসংঘের সহযোগিতা চেয়েছেন।