আন্তর্জাতিক

বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় বুধবারও ঢাকা শীর্ষে। সকাল ৮টা ৫৮ মিনিটে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ১৭৬ নিয়ে রাজধানীর বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’।

ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা, ভারতের কলকাতা এবং পাকিস্তানের লাহোর যথাক্রমে ১৬৩, ১৫৮ এবং ১৫৪ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ স্থান দখল করেছে।

একিউআই স্কোর ৫০ থেকে ১০০ এর মধ্যে থাকলে তাকে  ‘মধ্যম’ বা ‘গ্রহণযোগ্য’ পর্যায় হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

অন্যদিকে, একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য ‘অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয় এবং ১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোরকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়।

এছাড়া, ২০১ থেকে ৩০০ একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১ থেকে ৪০০ একিউআই স্কোরকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।

বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের ৫টি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে। সেগুলো হলো- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।

দীর্ঘদিন ধরে বায়ু দূষণে ভুগছে ঢাকা। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।

২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকার বায়ু দূষণের তিনটি প্রধান উৎস হলো- ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।

ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএইচও) অনুসারে, বায়ু দূষণের ফলে স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের কারণে মৃত্যুহার বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষ মারা যায়।

আন্তর্জাতিক

অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার কারণে মুদ্রা সংকটের অনাহারে ভুগছে মিয়ানমার। দুই লাখ ৬১ হাজার ২২৮ বর্গমাইলের পাঁচ কোটি জনসংখ্যার দেশটিতে রিজার্ভ মাত্র ছয় বিলিয়ন ডলার। মিয়ানমারে চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত ৬.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ ছিল বলে জানা যায়।

সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতির দেখা সেন্ট্রাল ব্যাংক অব মিয়ানমারের (সিবিএম) নথি অনুসারে এ তথ্য পাওয়া যায়। ২০২১ সালে সু চি নেতৃত্বাধীন এনএলডি সরকারের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৭.৭ বিলিয়ন ডলার। দুবছর আগের এ হিসাব বর্তমান অর্থনৈতিক পরিসংখ্যানের পতনকে প্রকাশ করে। ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পতন ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) সুদের অর্থপ্রদানের কারণে রিজার্ভ হ্রাস পাচ্ছে।

এশিয়া, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের ১৪টি বিদেশি ব্যাংকে সিবিএমের বৈদেশিক রিজার্ভ রক্ষিত রয়েছে। এর মধ্যে সিঙ্গাপুরের ৯টি ব্যাংকে ৪.৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি রিজার্ভ মজুত ছিল। সিঙ্গাপুরের ব্যাংক হিসেবে তালিকাভুক্ত ৯টি প্রতিষ্ঠানে (ডিবিএস, ইউওবি, ওসিবিসি, এসএমবিসি, মে ব্যাংক, মিজুহো, সিআইএমবি, এমইউএফজি ও এসসিবি) মিয়ানমারের মোট বৈদেশিক রিজার্ভের ৬৭ শতাংশ আছে।

দ্বিতীয় বৃহত্তম অংশ (২০ শতাংশ) যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে (এফআরবি এনওয়াই) গৃহীত ছিল। সুজারল্যান্ডের ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল সেটেলমেন্টস (বিআইএস) ১২ শতাংশ ও হংকংয়ের ব্যাক অব চায়না (বিওসি), মে ব্যাংক (মালেশিয়া) এবং থাইল্যান্ডের এক্সিম ব্যাংকে ১ শতাংশ ছিল। এপ্রিল, মে ও জুনের আমদানি কাভার করার জন্য সিবিএম-এর কাছে বৈদেশিক রিজার্ভ ছিল। তবে বর্তমান রিজার্ভের অবস্থা জানা যায়নি। সম্প্রতি দেশটি মারাত্মক মুদ্রাস্ফীতির শিকার হচ্ছে। কমে যাচ্ছে মুদ্রার মান।

আন্তর্জাতিক

আঞ্চলিক ভারসাম্য রক্ষার কারণেই অর্থনৈতিক জোট ব্রিকসের সদস্য এবার হতে পারেনি বাংলাদেশ- এমনটাই জানালেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। তবে আগামীতে জোটের সদস্য পদ পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।

পররাষ্ট্র সচিব জানান, ব্রিকসে সদস্য না হওয়ায় আশাহতের তেমন কিছু দেখছি না। আমাদের আরও সময় আছে।

রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকের মুখোমুখি হয়ে ব্রিকসে বাংলাদেশের যুক্ত হতে না পারা নিয়ে এমন মন্তব্য করেন পররাষ্ট্র সচিব।

এবার ব্রিকসে বাংলাদেশের আমন্ত্রণ পাওয়া নিয়ে সরকারের নীতিনির্ধারকরা আশাবাদী ছিলেন। ব্রিকসে ইথিওপিয়ার মতো একটি দেশের আমন্ত্রণ পাওয়া নিয়ে সরকারে মূল্যায়ন জানতে চাওয়া হলে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, এখানে রাজনৈতিক এবং আঞ্চলিক অনেক ইস্যু আছে। এখানে ভারসাম্য করার একটা ব্যাপার আছে। লাতিন আমেরিকা থেকে একজন, নর্থ আফ্রিকা থেকে একজন আবার মধ্যপ্রাচ্য থেকেও নিয়েছে। সুতরাং তারাও জিওগ্রাফিক্যাল একটা ব্যালেন্স করার চেষ্টা করেছে।

তিনি বলেন, আমাদের পাশে আরও দেশ ছিল। যারা আগ্রহী ছিল। তারা পায়নি। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। রাজনৈতিক পর্যায়ে বলতে পারেন, আমরা ছয়জনের মধ্যে এবার ছিলাম না কিন্তু আমরা ব্রিকসের রিয়েল যে আউটরিচটা (নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক) আছে, ওটার মাধ্যমে আমাদের লাভবান হওয়ার সুযোগটা আছে। সেটাতে আমরা আছি।

পরবর্তী ধাপে বাংলাদেশ ব্রিকসে যুক্ত হতে পারার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এবার ব্রিকস সম্মেলনে সাউথ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট তার বক্তব্যে বলেছেন, এটা প্রথম ধাপ। পরবর্তীতে আরও ধাপ আসবে। আমরা আশা করছি যে, পরবর্তী ধাপে হবে। ইতোমধ্যে আমরা একটু সময় পেলাম।

তিনি বলেন, সবাই যেভাবে বলছিল- ব্রিকস জি-৭ বা পশ্চিমা অর্থনীতির বিকল্প প্ল্যাটফর্ম হবে, ব্যাপারটা কিন্তু এতটা সহজ না। এবার কিন্তু আমরা সে ধরনের কিছু দেখিনি। ব্রিকসের তো ১৫ বছর হয়ে গেল। সুতরাং টেনজিবল আউটকামের দিকে যদি আপনারা দেখনে, একমাত্র এনডিবি ছাড়া তেমন একটা চোখে পড়েনি। সুতরাং আমরা এনডিবির পার্ট আছি, এখানে আশাহতের তেমন কিছু দেখছি না। সুতরাং আমাদের আরও সময় আছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে। তিনি বাংলাদেশ সফরে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

এ প্রসঙ্গে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, এনডিবির প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ আলাপ হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। উনি বাংলাদেশে আসার কথা বলেছেন। আগামী মার্চ মাসে হয়তো আসবেন। আমাদের সঙ্গে অনেক প্রজেক্ট তিনি করবেন।

সেপ্টেম্বরে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর

এদিকে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের বাংলাদেশ সফরের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।

তিনি বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হয়েছে; কিন্তু আনুষ্ঠানিক আলোচনার প্রেক্ষাপটে নয়। তার আসার একটা সম্ভাবনা তো আছে। টাইমিং নিয়ে আমরা কাজ করছি।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, দুই দিনের সফরে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর ঢাকায় আসবেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ। সেক্ষেত্রে এটি হবে রাশিয়ার কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম বাংলাদেশ সফর। আগামী সেপ্টেম্বরে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জি-২০ সম্মেলন। সেখানে যোগ দেবেন ল্যাভরভ। ঢাকা হয়ে দিল্লিতে যাবেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশকে ব্রিকসে যোগদানে সমর্থন দেবে চীন। পাশাপাশি রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে পাশে থাকবে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ আশ্বাস দেন।

১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে চীনা প্রেসিডেন্ট এই আশ্বাস দেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন শির উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘আপনি ব্রিকসে যোগ দিতে চাইলে আমি আপনাকে (শেখ হাসিনা) সবসময় সমর্থন করব।’

চীনা প্রেসিডেন্ট আরও বলেছেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে চীন। আমরা এই অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা চাই না।’

মোমেন জানান, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তার সরকার রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমিতে প্রত্যাবাসন করতে চায়। কারণ, তারা এই অঞ্চলের শান্তির জন্য হুমকি হয়ে উঠছে। তাদের মধ্যে অনেকেই অবৈধ মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায় জড়িয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘উন্নয়নের জন্য শান্তি অপরিহার্য।’

চীনের প্রেসিডেন্ট রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশকে সবসময় সমর্থন দিয়ে যাবে এবং বাংলাদেশের জ্বালানি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়তা করতে তার দেশের আগ্রহের কথা জানান।

শি বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত করতে সহযোগিতারও আশ্বাস দেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনা অর্থায়নে পরিচালিত কিছু প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নে শি জিনপিংয়ের সহায়তা চেয়েছেন, যা এখন তহবিল সংকটের জন্য আটকে রয়েছে। চীনা প্রেসিডেন্ট বিষয়টি দেখার আশ্বাস দেন।

আলোচনাকালে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে প্রতি বছর প্রায় দুই হাজার কোটি মার্কিন ডলারের চীনা পণ্য আমদানি করেছে, যেখানে চীন মাত্র ৭০ কোটি মার্কিন ডলারের বাংলাদেশি পণ্য আমদানি করেছে।

চীনের প্রেসিডেন্ট আশ্বস্ত করেছেন চীন-বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ঘাটতি হ্রাস করার উদ্যোগ নেবেন।

তিনি জানান, চীনের বাজারে ৯৮ শতাংশ বাংলাদেশি পণ্যে শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে কিছু চীনা বিনিয়োগ এলে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য ব্যবধান কমবে।
তিনি দুই দেশের মধ্যে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) স্বাক্ষরের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, বাংলাদেশ চীনে তাজা ফল যেমন আম, কাঁঠাল, পেয়ারা, তাজা শাকসবজি এবং গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খাদ্য রপ্তানি করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

মোমেন বলেন, শি জিনপিং এসব বিষয় নিয়ে অবশ্যই বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আগামী অক্টোবরে পদ্মা রেল সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করতে চীনের প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

জবাবে চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি অবশ্যই আপনার দেশে আসব। তবে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সফরের সময় নির্ধারণ করা হবে।’

মোমেন জানান, শি জিনপিং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকেও চীন সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

জবাবে শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি চীন সফর করবেন, তবে সময় লাগতে পারে। কারণ, জাতীয় নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে। তিনি নির্বাচনি প্রচারে ব্যস্ত থাকবেন।

আন্তর্জাতিক

ব্রাজিল, ভারত, চীন, রাশিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে গঠিত বৈশ্বিক জোট ব্রিকসে নতুন ছয়টি দেশকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার জোটের শীর্ষ সম্মেলনে নতুন সদস্য দেশগুলোর নাম ঘোষণা করেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা।

নতুন পূর্ণ সদস্য দেশগুলো হলো- মিসর, ইথিওপিয়া, ইরান, আর্জেন্টিনা, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরব। আমন্ত্রণের ভিত্তিতে ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি দেশগুলো ব্রিকসে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করবে।

সম্প্রসারণ চুক্তি অনুযায়ী গ্রুপের বর্তমান সদস্য ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার অনুমোদনে কয়েক ডজন দেশ ব্রিকসের সদস্য হবে। মূলত এর মাধ্যমে পশ্চিমকে টেক্কা দিতে একটি কার্যকর প্রতিদ্বন্দ্বী তৈরি করতে চাইছে বেইজিং এবং মস্কো।

দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ব্রিকসের তিন দিনের শীর্ষ সম্মেলনে গ্রুপটিকে সম্প্রসারণের বিষয়টি আলোচ্যসূচির শীর্ষে আছে। ব্রিকসের সব সদস্য প্রকাশ্যেই সম্প্রসারণের বিষয়ে মত দিয়েছেন। তবে কয়টি দেশকে সদস্য করা হবে এবং বিষয়টি কত দ্রুত হবে, তা নিয়ে নেতাদের মধ্যে রয়ে গেছে বিভক্তি।

শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক দক্ষিণ আফ্রিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী নালেদি প্যান্ডর বুধবার বলেছেন, নতুন সদস্যদের বিবেচনা করার প্রক্রিয়া নিয়ে একমত হয়েছেন ব্রিকস নেতারা।

তিনি বলেন, ‘সম্প্রসারণের বিষয়ে আমরা একমত। ব্রিকসে আসতে আগ্রহী দেশগুলোর সদস্যপদ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনার জন্য আমরা একটি কাঠামো তৈরি করেছি। এটি খুব ইতিবাচক।’

প্যান্ডর বলেন, ‘বৃহস্পতিবার শীর্ষ সম্মেলন শেষ হওয়ার আগে ব্লকের নেতারা সম্প্রসারণের বিষয়ে বিস্তারিত ঘোষণা দেবেন।’

আন্তর্জাতিক

রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাবাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন বিমান বিধ্বস্ত হয়ে মারা গেছেন। বিধ্বস্তের ৩০ সেকেন্ড আগেও সব কিছু স্বাভাবিক ছিল বিমানটির। আকস্মিক বিমান বিধ্বস্ত হয়ে সব যাত্রী নিহত হয়েছেন। বিমানে ছিলেন ১০ জন, সবাই মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বিদ্রোহ করা ওয়াগনারপ্রধানের এমন করুণ পরিণতি এখন সর্বত্র আলোচনায়।

শুধু প্রিগোজিন নয়, এর আগে যারা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বিদ্রোহ করেছিলেন তাদেরও চরম পরিণতি ভোগ করতে হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো আর বেঁচে নেই।

ইয়েভজেনি প্রিগোজিন

৬২ বছর বয়সি প্রিগোজিন একসময় পুতিন ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন। ইউক্রেন যুদ্ধে তার সেনাদের বড় ধরনের অবদান রয়েছে। তার পর হঠাৎই গত জুনের শেষ দিকে রাশিয়ার শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। বাহিনী নিয়ে মস্কোর কাছাকাছিও পৌঁছে যান। ওই সময় ধারণা করা হয়েছিল প্রিগোজিনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছেন পুতিন। সমঝোতার মাধ্যমে তাকে নির্বাসিত করার ঘোষণা এলেও তাকে ‘ডেড ম্যান ইজ ওয়াকিং’ হিসেবে অভিহিত করেন অনেক বিশেষজ্ঞ।

পুতিনবিরোধীদের মধ্যে শুধু প্রগোজিন নয়, আরও কিছু রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীদের রহস্যময় মৃত্যু হয়েছে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে। কেউ কেউ বিষক্রিয়া থেকে ফিরেও এসেছেন। তার থেকে কয়েকটির খবর নিচে দেওয়া হলো—

আলেক্সি নাভালনি

রাশিয়ার অন্যতম বিরোধী নেতা আলেক্সি নাভালনিকে ২০২০ সালের আগস্টে সাইবেরিয়ায় বিষ প্রয়োগ করা হয়। পরে চিকিৎসার জন্য জার্মানি পর্যন্ত যেতে হয় তাকে। নাভালনির অসুস্থতার জন্য পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা সামরিক নার্ভ এজেন্ট নোভিচককে দায়ী করে আসছিলেন। তবে রাশিয়া নিজেদের সম্পৃক্ততা পুরোপুরি অস্বীকার করে।

নাভালনি ২০২১ সালে স্বেচ্ছায় রাশিয়ায় ফিরে যাওয়ার পর বিশ্বজুড়ে প্রশংসা পান। তবে মস্কো ফেরার সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার হন। এখন জালিয়াতি ও অন্যান্য অভিযোগে ১১-১২ বছরের সাজা ভোগ করছেন। তিনি বরাবরই অভিযোগগুলোকে ‘ভুয়া’ বলে আসছিলেন। নাভালনির রাজনৈতিক আন্দোলনকে বেআইনি ঘোষণা করে তাকে ‘চরমপন্থি’ ঘোষণা করেছে রাশিয়া।

সের্গেই স্ক্রিপাল

ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের কাছে রাশিয়ার গোপন তথ্য প্রকাশ করেছিলেন এ ডাবল এজেন্ট। ২০১৮ সালের মার্চে সের্গেই স্ক্রিপাল ও তার মেয়ে ইউলিয়াকে স্যালিসবারির একটি শপিং সেন্টারের বাইরের বেঞ্চে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়।

ব্রিটিশ কর্মকর্তারা জানান, ১৯৭০-৮০-এর দশকে সোভিয়েত সামরিক বাহিনী দ্বারা উদ্ভাবিত নার্ভ এজেন্টের একটি গ্রুপের বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন বাবা ও মেয়ে। তবে দুজনই বেঁচে যান। রাশিয়া বিষ প্রয়োগে তাদের দায়ভারের কথা অস্বীকার করেছে।

ভ্লাদিমির কারা-মুর্জা

রুশবিরোধী দলের কর্মী কারা-মুর্জা দাবি করেছিলেন, ২০১৫ ও ২০১৭ সালে তার ওপর বিষ প্রয়োগের চেষ্টা করা হয়েছিল। জার্মান পরীক্ষাগার মেডিকেল রিপোর্ট অনুসারে, তার শরীরে পারদ, তামা, ম্যাঙ্গানিজ ও জিঙ্কের উচ্চমাত্রার প্রয়োগ শনাক্ত হয়।

আলেকজান্ডার লিটভিনেনকো

সাবেক কেজিবি এজেন্ট ও পুতিনের সমালোচক আলেকজান্ডার লিটভিনেনকো। ব্রিটিশ কর্মকর্তারা জানান, ২০০৬ সালে লন্ডনের মিলেনিয়াম হোটেলে বিরল ও শক্তিশালী তেজস্ক্রিয় আইসোটোপযুক্ত গ্রিন টি পান করার পর মারা যান লিটভিনেনকো।

তবে ক্রেমলিন এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে। সিনিয়র ব্রিটিশ বিচারকের নেতৃত্বে পরিচালিত এক তদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়, কেজিবির সাবেক এক কর্মী ও আরেক রুশ নাগরিক হত্যায় অংশ নেয়। রাশিয়ার ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস (এফএসবি) অভিযান পরিচালনা করে।

আলেকজান্ডার পেরেপিলিচনি

২০১২ সালের নভেম্বরে ৪৪ বছর বয়সি এই রাশিয়ানকে লন্ডনের বাইরে তার বিলাসবহুল বাড়ির কাছে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। আলেকজান্ডার পেরেপিলিচনি ২০০৯ সালে রাশিয়ান অর্থপাচার প্রকল্পের সুইস তদন্তে সাহায্য করার পরে ব্রিটেনে আশ্রয় চেয়েছিলেন। তার পেটে জেলসেমিয়াম উদ্ভিদ থেকে তৈরি বিরল ও মারাত্মক বিষের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

ভিক্টর ইউশচেঙ্কো

২০০৪ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ইউক্রেনের বিরোধীদলীয় নেতা ভিক্টর ইউশচেঙ্কোকে বিষ প্রয়োগ করা হয়। পরে তিনি বলেন, ইউক্রেনের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কিয়েভের বাইরে ডিনার করার সময় বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হন। ওই সময় সন্দেহ যায় রাশিয়ার দিকে। ভিক্টরের শরীরে স্বাভাবিকের চেয়ে এক হাজার গুণ বেশি ডাইঅক্সিন পাওয়া গেছে। বিষক্রিয়ায় তার মুখমন্ডল ও শরীর বিকৃত হয়ে গিয়েছিল। পরে একাধিকবার ভিক্টরকে অপারেশন টেবিলে যেতে হয়।

আনা পলিটকভস্কায়া

সাংবাদিক আনা পলিটকভস্কায়া রাশিয়ারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবেদন করেছিলেন। ২০০৬ সালের ৭ অক্টোবরে মস্কোর ফ্ল্যাটের বাইরে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল।

আন্তর্জাতিক

মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবাগগামী যে ব্যক্তিগত বিমানটি রাশিয়ার তিভিয়ের অঞ্চলে বিধ্বস্ত হয়েছে, তাতে ভাড়াটে সেনাদল ওয়াগনার প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন ছিলেন বলে দেশটির বেসামরিক বিমান চলাচল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কুশিওনকেনা গ্রামের কাছে বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটির ১০ আরোহীর সবাই নিহত হয়েছেন।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিমানটির যাত্রীদের মধ্যে ওয়াগনার প্রধান প্রিগোজিন ও তার প্রধান সহচর দিমিত্রি ইউতকিন ছিলেন।

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর উত্তরে বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটির যাত্রীদের মধ্যে প্রিগোজিনের নাম থাকার কথা আগেই নিশ্চিত হয়েছিল।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মিত্রদের একজন ছিলেন প্রিগোজিন। ২০২২ সালে রাশিয়া প্রতিবেশী ইউক্রেইনে আক্রমণ শুরু করার পর প্রিগোজিনের বেসরকারি সামরিক কোম্পানি যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

কিন্তু চলতি বছরের জুনে রাশিয়ার সামরিক নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে প্রিগোজিন তার সেনাদের মস্কো যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন, এতে পুতিনের সঙ্গে তার সম্পর্ক খারাপ হয়। প্রিগোজিনের ওই বিদ্রোহ ২৪ ঘণ্টারও কম সময় ধরে চলেছিল।

প্রিগোজিনকে বহনকারী বিমান বিধ্বস্ত হওয়া সম্পর্কে এ পর্যন্ত যা জানা গেছে তা বিবিসির এক প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।

সেখানে উল্লেখ করা হয়, রাশিয়ার বেসামরিক বিমান চলাচল কর্মকর্তারা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, এমব্রায়ার লিগ্যাসি বিমানটি মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গ যাওয়ার পথে বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় মস্কোর উত্তরে তিভিয়ের অঞ্চলে বিধ্বস্ত হয়েছে।

কিন্তু ওয়াগান গ্রুপের টেলিগ্রাম চ্যানেল গ্রে জোনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ওই বিমানটিকে গুলি করে ভূপাতিত করেছে; যদিও তারা তাদের দাবির বিষয়ে কোনো প্রমাণ হাজির করেনি।

আরও পড়ৃুন প্রিগোজিনের মৃত্যু নিয়ে নতুন তথ্য দিল রুশ টিভি

ওই বিমানটিতে সাত যাত্রী ও তিন ক্রু ছিলেন। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, তারা সবাই নিহত হয়েছেন। সব মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

প্রিগোজিনের একটি কোম্পানির নামে নিবন্ধিত লিগ্যাসি বিমানটি উড্ডয়নের পর আকাশে আধ ঘণ্টারও কম সময় ছিল বলে জানা গেছে। বিমানটি ভূমিতে পড়ে বিধ্বস্ত হওয়ার সময় এটিতে আগুন ধরে যায়।

বিবিসির যাচাই করা ভিডিও ফুটেজে একটি বিমানকে রাশিয়ার কুশিওনকেনার আকাশ থেকে পড়তে দেখা গেছে।

প্রিগোজিনের মালিকানাধীন দ্বিতীয় আরেকটি বাণিজ্যিক জেট বিমান নিরাপদে মস্কোতে অবতরণ করেছে বলে গ্রে জোন জানিয়েছে।

আন্তর্জাতিক

ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন আবারও বলেছেন, নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এতে চীনের হস্তক্ষেপ করার কোনো কারণ নেই।

বুধবার সচিবালয়ে নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক শেষে একথা বলেন চীনা রাষ্ট্রদূত। এর আগে গত সপ্তাহেও একই কথা বলেছিলেন তিনি।

প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘চীন কখনোই কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না। যেকোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করে চীন। নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। চীন এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না।’

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বটা তারা আরও বেশি এগিয়ে নিতে চায়, আমরাও চাই। আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে তাদের ভূমিকা খুবই পরিষ্কার। আমরা চাই, বাংলাদেশের জনগণই নির্ধারণ করবে যে দেশ কারা পরিচালনা করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তাই চান।’

বৈঠকে প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে মোংলা বন্দরের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, এই বন্দরকে কেন্দ্র করে আমরা অনেক সম্ভাবনা দেখছি। বৈদ্যুতিক যান উৎপাদনে বিশ্বে আমরাই সবচেয়ে বড় উৎপাদনকারী। কাজেই আমরা কেন মোংলা বন্দরে বৈদ্যুতিক ও ব্যাটারি প্ল্যান্ট স্থাপন করব না? আইসিটি, সৌর বিদ্যুৎ ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণেও বাংলাদেশকে সহায়তা করতে পারবে চীন।’

আম, কাঁঠালসহ বাংলাদেশে বিপুল ফল উৎপাদিত হয়। এজন্য এখানে ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প স্থাপনে সহায়তার আগ্রহ দেখিয়েছে চীন।

কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ ছাড়াও শিল্প ও তৈরি পোশাকখাতে চীন বিনিয়োগ করতে চায় বলে জানান নৌপ্রতিমন্ত্রী। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তারা (চীন) যে ভূমিকা রাখছে, যেভাবে সহযোগিতা করছে, তা নিয়ে আমাদের কথা হয়েছে। মোংলা বন্দরের আধুনিকায়নে তারা একটি প্রকল্প দিয়েছেন। এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের শিল্পের ক্ষেত্রে তারা বিনিয়োগ করতে চায়। কৃষি শিল্প, তৈরি পোশাক খাতে তারা ভূমিকা রাখতে চায়।’

আন্তর্জাতিক

চাঁদের মাটিতে অবতরণ করল ভারতের মহাকাশযান চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার বিক্রম। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ভারত সফলভাবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে মহাকাশযান অবতরণ করে ইতিহাস গড়ল।

এর আগে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে বিশ্বের আর কোনো দেশ পৌঁছতে পারেনি। সেখানেই পৌঁছে ইতিহাস তৈরি করল ভারত।

ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, চন্দ্রযান-৩ এর চাঁদে চূড়ান্ত পর্যায়ের অবতরণ প্রক্রিয়ায় ১৯ মিনিট সময় লেগেছে। ভারতের স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যা ৬টা চার মিনিটে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর মাটি স্পর্শ করে ল্যান্ডার বিক্রম।

চাঁদের মাটিতে বিক্রম নামার পর ইসরো টুইট করেছে। টুইটে লেখা হয়েছে, ‘ভারত, আমি আমার গন্তব্যে পৌঁছে গিয়েছি।’

চাঁদে সফলভাবে মহাকাশযান অবতরণ করানো দেশের তালিকায় চতুর্থ হিসেবে নাম লেখাল ভারত। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীন এই মহান কৃতিত্বের অধিকারী ছিল।

এদিন ইসরোর ওয়েবসাইটসহ সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউবের পেজে ৫টা ২০ মিনিট থেকে চাঁদে নামার সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। কোটি কোটি ভারতীয়সহ বিশ্বের লাখো কোটি মানুষ উপভোগ করে এ মুহূর্তটি। এ সময় ভারতের স্কুলগুলোও খোলা রাখা হয়।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলন থেকেই চন্দ্রযান-৩ এর চাঁদে নামার দৃশ্যটি উপভোগ করেন।

অবতরণের পর টিম চন্দ্রযানকে শুভেচ্ছা জানান মোদি। তিনি বলেন, তারা এ মুহূর্তটির জন্য বছরের পর বছর ধরে পরিশ্রম করেছেন। ১৪০ কোটি দেশবাসীকে শুভেচ্ছা। ভারতের উদীয়মান ভাগ্যের আহ্বান এ মুহূর্তে। অমৃতকালের আহ্বান। মহাকাশে নতুন ভারতের উদয়। আমি এখন দক্ষিণ আফ্রিকায়। দেশবাসীর সঙ্গে আমার মনও সেখানেই ছিল।

আন্তর্জাতিক

মিয়ানমার সরকারের অত্যাচার-নির্যাতন সইতে না পেয়ে পালিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে চলে আসে লাখো রোহিঙ্গা। এ দেশের অভ্যন্তরে সরকার তাদের বসবাসের ব্যবস্থা করে দেয়।

সুযোগ পেয়ে নানা অপরাধ-অপচেষ্টা করে সীমান্তের ওপারের জনগণ। এবার বাংলাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে প্রবাসেও তারা অপরাধ শুরু করেছে।

জানা গেছে, প্রবাসে ভোটার তালিকায় যুক্ত হয়ে বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পেতে অপচেষ্টা করছে মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গারা। অবশ্য তাদের এ অব্যাহত অপরাধ রুখে দিতে তৎপর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ও আবুধাবিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে দূতাবাসের মাধ্যমে এনআইডি সরবরাহের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এতে দেশটিতে বসবাসরত রোহিঙ্গারাও এনআইডি নেওয়ার জন্য আবেদন করছেন। এসব আবেদন যাচাই-বাছাই করে পাঁচ শতাধিক আবেদন বাতিলও করেছে নির্বাচন কমিশন।

কর্মকর্তারা বলছেন, অনেকেই জন্ম সনদ সংগ্রহ করে বাংলাদেশি পাসপোর্ট বাগিয়ে নিয়ে আমিরাতে বসবাস করছে। মূলত তারাই এনআইডি পেতে আবেদন করছে।

জানা গেছে, আবুধাবিতে এ পর্যন্ত এনআইডি পেতে মোট পাঁচ হাজার ৯০ জন ব্যক্তি আবেদন করেছেন। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে চট্টগ্রামের, দুই হাজার ৩২১টি। এরপরে কুমিল্লা থেকে আবেদন পড়েছে এক হাজার ২৩৫টি। ঢাকায় আবেদন পড়েছে ৪৭৭টি। সবচেয়ে কম আবেদন পড়েছে রংপুর থেকে ৩৪টি।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত আবেদন অনুমোদন হয়েছে এক হাজার ২০৪টি। তদন্ত শেষ হয়ে আবেদন অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে ৩৯৪টি। এছাড়া ৫৭৯টি আবেদন বাতিল করা হয়েছে। আবেদনকারীদের উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের অধীনে তদন্তাধীন রয়েছে দুই হাজার ৯১৩টি আবেদন।

সবচেয়ে বেশি আবেদন বাতিল হয়েছে কুমিল্লায় ২৪৯টি, এরপরেই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আবেদন বাতিল হয়েছে চট্টগ্রামে ১১৮টি। ঢাকায় বাতিল হয়েছে ৭০টি আবেদন।

প্রবাস থেকে যেন রোহিঙ্গারা এনআইডি না পায়, সে ব্যবস্থা নিতে ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম অঞ্চলের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) নির্দেশনাও দিয়েছে ইসি। এক্ষেত্রে চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৩২ উপজেলার জন্য গঠিত বিশেষ কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার ক্ষেত্রে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে।

আরও জানা গেছে, এনআইডি পেয়ে মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) পর্যন্ত আঙ্গুলের ছাপ দিয়েছেন তিন হাজার ৭৯১জন। এদের মধ্যে এনআইডি পেয়েছেন ৩৩৬জন। পুনরায় আবেদন করেছেন ৯ জন। ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের সার্ভারের কেবল দেশের নাগরিকদের তথ্য রয়েছে এমন নয়। এই সার্ভারে মিয়ানমার থেকে আগত ১০ লাখ নাগরিকের আঙ্গুলের ছাপও রয়েছে। কাজেই এদের মধ্যে কেউ ভোটার হওয়ার চেষ্টা করলে ধরা পড়ে যাবে।

এছাড়া দূতাবাসে প্রশিক্ষিত লোকবলের মাধ্যমে এনআইডি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এক্ষেত্রে রোহিঙ্গা সন্দেহ হলেই অধিকতর তদন্ত করা হচ্ছে। তাই তাদের ভোটার তালিকায় যুক্ত হওয়ার সুযোগ নেই বললেই চলে।

গত ১১ জুলাই আমিরাতে টিম পাঠিয়ে এনআইডি কার্যক্রম শুরু করে নির্বাচন কমিশন। ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম জানিয়েছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যুক্তরাজ্য ও সৌদি আরবে এ কার্যক্রম শুরু করা হবে। পরবর্তীতে প্রবাসী বাংলাদেশি আধিক্যের বিবেচনায় আরও ৪০টি দেশে এনআইডি কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হবে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা পেয়ে কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০১৯ সালে এ উদ্যোগটি হাতে নেয়। ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের অনলাইনের ভোটার করে নেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করে ইসি। এর আগে ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর ইউএই প্রবাসীদের মাঝে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়। তার আগে একই বছর ৫ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি এবং স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার অংশ হিসেবে অনলাইনে আবেদন নেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। এরপর সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর ও মালদ্বীপে থাকা বাংলাদেশিদের জন্যও এ সুযোগ চালু করা হয়।

সে সময় অনলাইনে আবেদন নিয়ে সেই আবেদন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপজেলা থেকে যাচাই করে সতত্যা পেলে সংশ্লিষ্ট দেশে দূতাবাস থেকে এনআইডি সরবরাহের পরিকল্পনা ছিল। এরপর করোনা মহামারির কারণে থমকে যায় দূতাবাসের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা।

কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর সেই কার্যক্রমকে ফের উজ্জীবিত করে। এক্ষেত্রে আগের আবেদনগুলো পাশ কাটিয়ে নতুন করে কার্যক্রম শুরু করেন তারা।