আন্তর্জাতিক

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চলমান মামলাগুলো স্থগিত চেয়ে ১০০ জনের বেশি নোবেল বিজয়ীসহ ১৬০ জনের বেশি বিশ্বনেতার চিঠিকে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার ওপর অযাচিত হস্তক্ষেপ হিসেবে আখ্যা দিয়ে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশের ৫০ জন সম্পাদক।

শনিবার (০২ সেপ্টেম্বর) ৫০ সম্পাদকের এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৮ আগস্ট কয়েকজন নোবেল বিজয়ী, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী এবং সুশীল সমাজের সম্মানিত সদস্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া একটি খোলা চিঠিতে বাংলাদেশের শ্রম আইনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান মামলা স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

এটি একটি সার্বভৌম দেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার ওপর অযাচিত হস্তক্ষেপ, আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

বিবৃতিতে সম্পাদকরা বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৪(৪) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণরূপে স্বাধীন। এ ধরনের চিঠি প্রদানের মাধ্যমে তারা অনৈতিক, বেআইনি ও অসাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপ করেছেন বলে আমরা মনে করি। এ ধরনের বিবৃতি বা খোলা চিঠি। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং বাংলাদেশের আইনে শ্রমিকদের প্রদত্ত অধিকার সংক্রান্ত বিধানাবলীর সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

তারা আরও বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত এবং নোবেল বিজয়ীগণের এ ধরনের বিবৃতি এবং চিঠি অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অনৈতিক। একজন অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে না এবং বিচার করা যাবে না এমন দাবি ন্যায়বিচার এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পরিপন্থী। আমরা মনে করি তারা মামলা সম্পর্কে পুরোপুরি না জেনে এমন দাবি করেছেন। তাই আমরা তাঁদেরকে অথবা তাঁদের প্রতিনিধি এসে মামলায় ড. ইউনূসকে আদৌ হয়রানি করা হচ্ছে কিনা, তা তাঁরা পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁদের এই আহ্বান জানিয়েছেন আমরা তা সমর্থন করি। একই চিঠিতে বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে যে ধরনের মন্তব্য করা হয়েছে, তা স্বাধীন-সার্বভৌম একটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশের জনগণ যে কোনো মহলের এ ধরনের অবমাননাকর, অযাচিত ও বেআইনি হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই মেনে নেবে না। আমরা সংশ্লিষ্ট সবাইকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা এবং শ্রমিকদের অধিকারের বিষয়ে সম্মান প্রদর্শনের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।

বিবৃতি দাতা সম্পাদকরা হলেন—

১। ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সম্পাদক, ডেইলি অবজারভার
২। গোলাম রহমান, সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
৩। তাসমিমা হোসেন, সম্পাদক, ইত্তেফাক
৪। আবুল কালাম আজাদ, প্রধান সম্পাদক, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা
৫। ইমদাদুল হক মিলন, প্রধান সম্পাদক, কালের কণ্ঠ
৬। আলমগীর হোসেন, সম্পাদক, সমকাল
৭। সাইফুল আলম, সম্পাদক, যুগান্তর
৮। নঈম নিজাম, সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন
৯। ফরিদ হোসেন, সম্পাদক, ইউএনবি
১০। শ্যামল দত্ত, সম্পাদক, ভোরের কাগজ
১১। নাঈমুল ইসলাম খান, ইমিরিটাস এডিটর
১২। আলতামাশ কবির, সম্পাদক, সংবাদ
১৩। আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া, সম্পাদক, পিপলস টাইম
১৪। রেজাউল করিম লোটাস, সম্পাদক, ডেইলি সান
১৫। শাহজাহান সরদার, সম্পাদক, বাংলাদেশ জার্নাল
১৬. নাসিমা খান মন্টি, সম্পাদক, আমাদের নতুন সময়
১৭। রফিকুল ইসলাম রতন, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, বাংলাদেশ বুলেটিন
১৮। ফারুক আহমেদ তালুকদার, সম্পাদক, আজকালের খবর
১৯। সন্তোষ শর্মা, সম্পাদক, কালবেলা
২০। শরীফ শাহাবুদ্দিন, সম্পাদক, বাংলাদেশ পোস্ট
২১। শামীমা এ খান, সম্পাদক, জনকণ্ঠ
২২। কমলেশ রায়, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, সময়ের আলো
২৩। মুস্তাফিজ শফি, সম্পাদক, প্রতিদিনের বাংলাদেশ
২৪। মোস্তফা মামুন, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, দেশ রূপান্তর
২৫। বেলায়েত হোসেন, সম্পাদক, ভোরের ডাক
২৬। চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, দৈনিক বাংলা
২৭। শামীম সিদ্দিকি, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, আলোকিত বাংলাদেশ
২৮। আব্দুল মজিদ, সম্পাদক, সংবাদ সারাবেলা
২৯। রিমন মাহফুজ, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, সংবাদ প্রতিদিন
৩০। মফিজুর রহমান খান বাবু, সম্পাদক, বাংলাদেশের আলো
৩১। আরিফুর রহমান দোলন, সম্পাদক, ঢাকা টাইমস
৩২। নুর হাকিম, সম্পাদক, সকালের সময়
৩৩। মো: জসিম, সম্পাদক, আমার বার্তা
৩৪। আখলাকুল আম্বিয়া, সম্পাদক, স্বাধীন বাংলা
৩৫। এস এম নূরে আলম সিদ্দিকী, সম্পাদক, আজকের দর্পণ
৩৬। ফরিদ বাঙ্গালী, সম্পাদক, লাখো কণ্ঠ
৩৭। ড. আসাদুজ্জামান, সম্পাদক, বাংলাদেশ সমাচার
৩৮। কিশোর আদিত্য, সম্পাদক, প্রথম কথা
৩৯। দীপক আচার্য্য, সম্পাদক, দ্যা সাউথ এশিয়ান টাইমস
৪০। আবু সাঈদ, সম্পাদক, আজকের সংবাদ
৪১। আতিকুর রহমান চৌধুরী, সম্পাদক, দর্পণ প্রতিদিন
৪২। রফিকুল ইসলাম, সম্পাদক, আলোর বার্তা
৪৩। মো: সেলিম, সম্পাদক, ডেইলি ইভিনিং নিউজ
৪৪। মোস্তফা হোসেন চৌধুরী, সম্পাদক, অগ্রসর
৪৫। নাজমুল হক সরকার, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, বর্তমান
৪৬। শাহাদাত হোসেন শাহীন, সম্পাদক, গণমুক্তি
৪৭। মো. সাইদুল ইসলাম, সম্পাদক, প্রতিদিনের সংবাদ
৪৮। নাজমুল আলম তৌফিক, সম্পাদক, ডেইলি সিটিজেন টাইমস
৪৯। হেমায়েত হোসেন, সম্পাদক, কান্ট্রি টুডে
৫০। শেখ জামাল, সম্পাদক, মুখপাত্র

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান মামলাগুলোর কার্যক্রম স্থগিত এবং বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলা চিঠি লেখেন ১০০ জনের বেশি নোবেল বিজয়ীসহ ১৬০ জনের বেশি বিশ্বনেতা। চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন।

আন্তর্জাতিক

সুইডেনের স্টকহোমে অনুষ্ঠিতব্য এ বছরের নোবেল পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে রাশিয়া, বেলারুশ ও ইরানের রাষ্ট্রদূতকে আমন্ত্রণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে আয়োজক নোবেল ফাউন্ডেশন। ওই তিন দেশের রাষ্ট্রদূতকে আমন্ত্রণ জানানোয় ক্ষোভ সঞ্চার হলে এই সিদ্ধান্ত নেয় ফাউন্ডেশন।

এর আগে ২০২২ সালে নোবেল ফাউন্ডেশন নোবেল পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান ও ভোজ সভায় রাশিয়া ও বেলারুশের রাষ্ট্রদূতকে আমন্ত্রণ না জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানায় ফাউন্ডেশন।

যদিও গত বৃহস্পতিবার ফাউন্ডেশন জানিয়েছিল, তারা তাদের পুরোনো রীতি অর্থাৎ সুইডেনে প্রতিনিধিত্বকারী সব দেশকে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্তে ফিরে যাবে। তবে এই সিদ্ধান্ত ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দেয়।

শনিবার ফাউন্ডেশন জানায়, নতুন এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে প্রতিষ্ঠানের মূল্যবোধ রক্ষায় নোবেল পুরস্কার যে বার্তা বহন করে তা তুলে ধরতে।

এক বিবৃতিতে ফাউন্ডেশন জানায়, ‘আমরা গত বছরের ব্যতিক্রমকে সাধারণ চর্চা হিসেবে আবারও গ্রহণ করতে যাচ্ছি। আর এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে রাশিয়া, বেলারুশ ও ইরানকে স্টকহোমে অনুষ্ঠিতব্য নোবেল পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি না।’

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন নিজে আদেশ দিয়ে পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ করে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুক্রবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগ আয়োজিত ছাত্রসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ তুলেন।

ড. ইউনূসের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতু করতে গিয়ে আমাদের ওপর বদনাম দিয়েছিল, একটা ব্যাংকের এমডি পদের জন্য সেটাও সরকারি বেতনধারী। সরকারি আইনে আছে ৬০ বছর পর্যন্ত এমডি থাকতে পারবে। এর বেশি হলে থাকতে পারবে না। তারপরও বেআইনিভাবে ১০ বছর চালিয়ে আবারও সেখানে থাকতে হবে, সেই লোভে বারবার আমাদের ওপর চাপ।’

‘একটি বড় দেশও বারবার চাপ দিত’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এমডি পদে না রাখলে নাকি পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ করে দেবে। আমাদের বিরুদ্ধে, সরকারের বিরুদ্ধে, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে সেই ভদ্রলোক মামলাও করেছিল। কিন্তু আদালত তো তার বয়স কমাতে পারে না। সে মামলায় হেরে যায়। তারপর তার বিদেশি বন্ধু দ্বারা…এটা কিন্তু ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের বোর্ডে হয়নি। হিলারি ক্লিনটন নিজে অর্ডার দিয়ে তখন ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের যিনি প্রেসিডেন্ট ছিলেন তাকে দিয়ে পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ করে দেয়।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তখন বলেছিলাম নিজের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করব, কারও কাছে হাত পেতে না। আমরা সেটা করেছি। সেটা করে বিশ্বকে দেখিয়েছি। এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ জাতির পিতা ভাষণ দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, এই বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না। আমরা কিন্তু সেই জাতি। আমাদের দাবায়ে রাখতে পারে নাই।’

ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় এতে সংগঠনটির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য নেতারা অংশ নেন।

আন্তর্জাতিক

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিচার প্রক্রিয়া স্থগিতের দাবির প্রতিবাদে দেশের ১৭১ বিশিষ্ট নাগরিক, বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবী বিবৃতি দিয়েছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিভিন্ন দেশের কয়েকজন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের সদস্যের লেখা খোলা চিঠি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। ওই খোলা চিঠির বক্তব্য বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব এবং স্বাধীন বিচার বিভাগের ওপর স্পষ্ট হুমকি হিসাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। চিঠিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে আদালতে দায়েরকৃত চলমান মামলাগুলোর বিচার প্রক্রিয়া বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে। দেশের বিবেকবান নাগরিক হিসাবে আমরা বাংলাদেশের বিচার প্রক্রিয়ার ওপর এ ধরনের অযাচিত হস্তক্ষেপের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, উল্লি­খিত খোলা চিঠির প্রেক্ষিতে বেশ কিছু আইনি ও নৈতিক প্রশ্ন সামনে চলে আসে। বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৪(৪) অনুযায়ী বিচারকরা তাদের বিচারিক কাজে সম্পূর্ণভাবে স্বাধীন। সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীসহ রাষ্ট্র পরিচালনায় যুক্ত কারোরই বিচার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করার কোনো এখতিয়ার নেই।

দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা বলেন, উল্লি­খিত চিঠির বক্তব্য বাংলাদেশের সংবিধান ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) স্বীকৃত শ্রমিকদের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি। এই চিঠিতে ‘নিরপেক্ষ’ বিচারকের মাধ্যমে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগে বিচারের যে আহ্বান জানানো হয়েছে, তা বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকে হেয়প্রতিপন্ন করার শামিল বলে আমরা মনে করি।

আরও বলা হয়, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী সব নাগরিকই আইনের দৃষ্টিতে সমান। লাখো প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত এই সংবিধানে সবারই আইনি সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার রয়েছে।

উল্লে­খ্য, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিচারকার্য বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুসারে ও স্বাধীনভাবে সম্পন্ন হচ্ছে। সেই প্রেক্ষাপটে ‘বিচারিক হেনস্তা’র অভিযোগ অমূলক ও অনভিপ্রেত। পাশাপাশি ড. ইউনূস বাংলাদেশের স্বাধীন নাগরিক হিসাবে সব সময়ই দেশে ও বিদেশে ব্যক্তিগত এবং প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে সব কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছেন। প্রেরিত খোলা চিঠিতে স্বাক্ষরকারী ব্যক্তিদের নিজ নিজ দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। আমরা প্রত্যাশা করি, বিবৃতিদাতারা তাদের নিজ নিজ দেশের মতো বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকেও নিজস্ব আইন অনুযায়ী চলার সুযোগ দেবেন এবং সম্মান করবেন।

বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন- অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, নগর পরিকল্পনাবিদ ও সাবেক চেয়ারম্যান, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন; অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান, ইমেরিটাস অধ্যাপক ও সাবেক গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক; শিল্পী হাশেম খান, ইমেরিটাস অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; অধ্যাপক বুলবন ওসমান, অধ্যাপক মাহফুজা খানম, সাবেক সভাপতি, এশিয়াটিক সোসাইটি ও সভাপতি, বিশ্ব শিক্ষক পরিষদ; অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, ইতিহাসবিদ, বঙ্গবন্ধু চেয়ার, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস; শাহাবুদ্দিন আহমেদ, শিল্পী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা; ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দীন, সভাপতি, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন; অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত, সভাপতি, অর্থনীতি সমিতি; হাসান ইমাম, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব; রামেন্দু মজুমদার, নাট্যব্যক্তিত্ব; কবি নির্মলেন্দু গুণ; অধ্যাপক ড. বজলুল হক খন্দকার, প্রেসিডেন্ট, এশিয়াটিক সোসাইটি; নাসিরুদ্দিন ইউসুফ, সাবেক সভাপতি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট; অধ্যাপক আব্দুল বায়েস, অর্থনীতিবিদ ও সাবেক উপাচার্য; মমতাজউদ্দীন আহমেদ, সাবেক বিচারপতি; অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন; অধ্যাপক মুনতাসির মামুন, ইতিহাসবিদ; বীর মুক্তিযোদ্ধা সাজ্জাদ আলী জহির; অধ্যাপক ড. একেএম মনোয়ার উদ্দিন আহমদ, অর্থনীতিবিদ; মামুনুর রশীদ, নাট্যব্যক্তিত্ব; অ্যারমা দত্ত, মানবাধিকারকর্মী; রোকেয়া কবীর, নারীনেত্রী; আবেদ খান, সাংবাদিক; নূহ আলম লেনিন, কবি ও লেখক; হারুন হাবীব, সাংবাদিক; প্রকৌশলী অধ্যাপক ড. শামীম বসুনিয়া; কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন; অভিনেত্রী লাকী ইনাম; কার্টুনিস্ট শিশির ভট্টাচার্য; মানজারে হাসিন মুরাদ, চলচ্চিত্রকার; লায়লা হাসান, নৃত্যশিল্পী; মোহাম্মদ হামিদ, নাট্যজন; মফিদুল হক, ট্রাস্টি, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর; শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, শহীদ জায়া; মনজুরুল আহসান বুলবুল, সাংবাদিক; নাঈমুল ইসলাম খান, সাংবাদিক; মমতাজ উদ্দীন ফকির, সভাপতি, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি; মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদ; মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার; মেজর জেনারেল (অব.) নাসির উদ্দিন; অজয় দাশগুপ্ত, সাংবাদিক।

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের সিনিয়র কংগ্রেসম্যান এবং পার্লামেন্টারি সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স ফোরামের (পিএসআইএফ) চেয়ারম্যান রবার্ট পিটেনজার বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাসবাদ দমনে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ অংশীদার এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশটিতে শক্তিশালী অর্থনৈতিক অগ্রগতি বজায় রয়েছে। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সমৃদ্ধি প্রশংসনীয়।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংসদ সদস্যদের নিয়ে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা অঙ্গনের শীর্ষ ফোরাম পিএসআইএফ সম্মেলনে যোগ দিতে লন্ডন পৌঁছে বুধবার ফোরামের চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি।

লন্ডনের ম্যারিয়ট হোটেলের দি লাইব্রেরি হলে এ বৈঠকে পিটেনজার কথাগুলো বলেন। যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দা মুনা তাসনিম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় পিটেনজার বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক অগ্রগতি তারা লক্ষ্য করছেন।

তিনি আরও বলেন, বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ দমনকে যুক্তরাষ্ট্র অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ অংশীদার।

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এ সময় দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি এবং জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ দমনে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং এ সহযোগিতা অব্যাহতভাবে আরও দৃঢ় হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

মন্ত্রী ৩১ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর লন্ডনের সেন্ট্রাল হল ওয়েস্টমিনিস্টারে পিএসআইএফ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন।

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশে আসছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ১১ সেপ্টেম্বর তিনি ঢাকা সফর করবেন বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র।

সূত্রটি জানায়, ভারতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জি ২০ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার পর তিনি ঢাকা সফর করবেন।

তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন জানিয়েছেন, ফরাসি প্রেসিডেন্টের সফরের বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয়।

বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানান, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফরের বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হয়নি। অনেকেই জি-২০ সম্মেলনে আসছেন। সেই সুযোগে তারা আমাদের দেশে আসার একটি উদ্যোগ নিয়েছেন। আমরা বিষয়টিকে স্বাগত জানাচ্ছি। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকে প্রধানমন্ত্রী দাওয়াত দিয়েছিলেন।

ম্যাক্রোঁ বাংলাদেশে এলে এটি হবে তিন দশক পর ফ্রান্সের কোনো প্রেসিডেন্টের প্রথম ঢাকা সফর। সবশেষ ১৯৯০ সালে ফ্রান্সের তখনকার প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া মিতেরাঁ বাংলাদেশে এসেছিলেন।

এর আগে ২০২১ সালের নভেম্বরে ফ্রান্স সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময় তিনি ইমানুয়েল মাক্রোঁকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।

আন্তর্জাতিক

কৃষ্ণসাগরে রুশ ও রাশিয়ার সীমান্তবর্তী শহর স্কফে ইউক্রেনীয় হামলায় উভয়পক্ষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনীয় সেনা বহনকারী চারটি নৌকা ডুবে গেছে। স্কফের একটি বিমানবন্দরে ইউক্রেনীয় হামলায় বেশ কয়েকটি বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

স্থানীয় সময় বুধবার ভোরে রুশ সেনারা কৃষ্ণসাগরে হামলা চালিয়ে ইউক্রেনের সেনা বহনকারী চারটি নৌকা ধ্বংস করেছে। অনুমান করা হচ্ছে, নৌকাগুলোতে অন্তত ৫০ জন সেনা ছিল।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় নিজস্ব টেলিগ্রাম চ্যানেলে বলেছে, ‘রাশিয়ার একটি বিমান ইউক্রেনীয় সেনা বহনকারী চার উচ্চগতির নৌকা ধ্বংস করেছে। নৌকা চারটিতে ৫০ জন সেনা ছিল। মঙ্গলবার মধ্যরাতের কাছাকাছি সময়ে সেগুলোকে ধ্বংস করা হয়।’

আরও পড়ুন: বাবার কবরের পাশে শায়িত হলেন প্রিগোজিন

এদিকে রাশিয়ার সীমান্তবর্তী শহর স্কফের একটি বিমানবন্দরে ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় চারটি বড় পরিবহণ বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ড্রোন হামলার পর পরই বিমানবন্দরটি থেকে ব্যাপক আগুন জ্বলতে দেখা যায় এবং গোলাগুলির আওয়াজ শোনা যায়। বিমান চারটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ছাড়া হামলায় ক্ষতির পরিমাণ এখনো জানা যায়নি।

রুশ রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরিবহণ বিমানগুলো ছিল আই১-৭৬ সিরিজের ভারি পরিবহণ বিমান। বিমানগুলো দীর্ঘদিন ধরে রুশ সেনাবাহিনীকে সেবা দিয়ে আসছে। উল্লেখ্য, স্কফ শহরটি ইউক্রেনের সীমান্ত থেকে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার ভেতরে অবস্থিত এবং লাটভিয়া ও এস্তোনিয়ার সীমান্তের কাছে অবস্থিত।

এদিকে স্কফের আঞ্চলিক গভর্নর মিখাইল ভেদারনিকভ তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন, যেখানে ব্যাপক আগুন জ্বলতে দেখা যায় এবং ব্যাপক বিস্ফোরণেরও আওয়াজ শোনা যায়। ভেদারনিকভ তার অ্যাকাউন্টে লিখেছেন— ‘স্কফ বিমানবন্দরে হওয়া হামলা প্রতিরক্ষা বাহিনী ঠেকিয়ে দিয়েছে।’

আন্তর্জাতিক

বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় বুধবারও ঢাকা শীর্ষে। সকাল ৮টা ৫৮ মিনিটে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ১৭৬ নিয়ে রাজধানীর বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’।

ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা, ভারতের কলকাতা এবং পাকিস্তানের লাহোর যথাক্রমে ১৬৩, ১৫৮ এবং ১৫৪ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ স্থান দখল করেছে।

একিউআই স্কোর ৫০ থেকে ১০০ এর মধ্যে থাকলে তাকে  ‘মধ্যম’ বা ‘গ্রহণযোগ্য’ পর্যায় হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

অন্যদিকে, একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য ‘অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয় এবং ১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোরকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়।

এছাড়া, ২০১ থেকে ৩০০ একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১ থেকে ৪০০ একিউআই স্কোরকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।

বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের ৫টি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে। সেগুলো হলো- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।

দীর্ঘদিন ধরে বায়ু দূষণে ভুগছে ঢাকা। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।

২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকার বায়ু দূষণের তিনটি প্রধান উৎস হলো- ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।

ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএইচও) অনুসারে, বায়ু দূষণের ফলে স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের কারণে মৃত্যুহার বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষ মারা যায়।

আন্তর্জাতিক

অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার কারণে মুদ্রা সংকটের অনাহারে ভুগছে মিয়ানমার। দুই লাখ ৬১ হাজার ২২৮ বর্গমাইলের পাঁচ কোটি জনসংখ্যার দেশটিতে রিজার্ভ মাত্র ছয় বিলিয়ন ডলার। মিয়ানমারে চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত ৬.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ ছিল বলে জানা যায়।

সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতির দেখা সেন্ট্রাল ব্যাংক অব মিয়ানমারের (সিবিএম) নথি অনুসারে এ তথ্য পাওয়া যায়। ২০২১ সালে সু চি নেতৃত্বাধীন এনএলডি সরকারের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৭.৭ বিলিয়ন ডলার। দুবছর আগের এ হিসাব বর্তমান অর্থনৈতিক পরিসংখ্যানের পতনকে প্রকাশ করে। ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পতন ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) সুদের অর্থপ্রদানের কারণে রিজার্ভ হ্রাস পাচ্ছে।

এশিয়া, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের ১৪টি বিদেশি ব্যাংকে সিবিএমের বৈদেশিক রিজার্ভ রক্ষিত রয়েছে। এর মধ্যে সিঙ্গাপুরের ৯টি ব্যাংকে ৪.৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি রিজার্ভ মজুত ছিল। সিঙ্গাপুরের ব্যাংক হিসেবে তালিকাভুক্ত ৯টি প্রতিষ্ঠানে (ডিবিএস, ইউওবি, ওসিবিসি, এসএমবিসি, মে ব্যাংক, মিজুহো, সিআইএমবি, এমইউএফজি ও এসসিবি) মিয়ানমারের মোট বৈদেশিক রিজার্ভের ৬৭ শতাংশ আছে।

দ্বিতীয় বৃহত্তম অংশ (২০ শতাংশ) যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে (এফআরবি এনওয়াই) গৃহীত ছিল। সুজারল্যান্ডের ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল সেটেলমেন্টস (বিআইএস) ১২ শতাংশ ও হংকংয়ের ব্যাক অব চায়না (বিওসি), মে ব্যাংক (মালেশিয়া) এবং থাইল্যান্ডের এক্সিম ব্যাংকে ১ শতাংশ ছিল। এপ্রিল, মে ও জুনের আমদানি কাভার করার জন্য সিবিএম-এর কাছে বৈদেশিক রিজার্ভ ছিল। তবে বর্তমান রিজার্ভের অবস্থা জানা যায়নি। সম্প্রতি দেশটি মারাত্মক মুদ্রাস্ফীতির শিকার হচ্ছে। কমে যাচ্ছে মুদ্রার মান।

আন্তর্জাতিক

আঞ্চলিক ভারসাম্য রক্ষার কারণেই অর্থনৈতিক জোট ব্রিকসের সদস্য এবার হতে পারেনি বাংলাদেশ- এমনটাই জানালেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। তবে আগামীতে জোটের সদস্য পদ পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।

পররাষ্ট্র সচিব জানান, ব্রিকসে সদস্য না হওয়ায় আশাহতের তেমন কিছু দেখছি না। আমাদের আরও সময় আছে।

রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকের মুখোমুখি হয়ে ব্রিকসে বাংলাদেশের যুক্ত হতে না পারা নিয়ে এমন মন্তব্য করেন পররাষ্ট্র সচিব।

এবার ব্রিকসে বাংলাদেশের আমন্ত্রণ পাওয়া নিয়ে সরকারের নীতিনির্ধারকরা আশাবাদী ছিলেন। ব্রিকসে ইথিওপিয়ার মতো একটি দেশের আমন্ত্রণ পাওয়া নিয়ে সরকারে মূল্যায়ন জানতে চাওয়া হলে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, এখানে রাজনৈতিক এবং আঞ্চলিক অনেক ইস্যু আছে। এখানে ভারসাম্য করার একটা ব্যাপার আছে। লাতিন আমেরিকা থেকে একজন, নর্থ আফ্রিকা থেকে একজন আবার মধ্যপ্রাচ্য থেকেও নিয়েছে। সুতরাং তারাও জিওগ্রাফিক্যাল একটা ব্যালেন্স করার চেষ্টা করেছে।

তিনি বলেন, আমাদের পাশে আরও দেশ ছিল। যারা আগ্রহী ছিল। তারা পায়নি। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। রাজনৈতিক পর্যায়ে বলতে পারেন, আমরা ছয়জনের মধ্যে এবার ছিলাম না কিন্তু আমরা ব্রিকসের রিয়েল যে আউটরিচটা (নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক) আছে, ওটার মাধ্যমে আমাদের লাভবান হওয়ার সুযোগটা আছে। সেটাতে আমরা আছি।

পরবর্তী ধাপে বাংলাদেশ ব্রিকসে যুক্ত হতে পারার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এবার ব্রিকস সম্মেলনে সাউথ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট তার বক্তব্যে বলেছেন, এটা প্রথম ধাপ। পরবর্তীতে আরও ধাপ আসবে। আমরা আশা করছি যে, পরবর্তী ধাপে হবে। ইতোমধ্যে আমরা একটু সময় পেলাম।

তিনি বলেন, সবাই যেভাবে বলছিল- ব্রিকস জি-৭ বা পশ্চিমা অর্থনীতির বিকল্প প্ল্যাটফর্ম হবে, ব্যাপারটা কিন্তু এতটা সহজ না। এবার কিন্তু আমরা সে ধরনের কিছু দেখিনি। ব্রিকসের তো ১৫ বছর হয়ে গেল। সুতরাং টেনজিবল আউটকামের দিকে যদি আপনারা দেখনে, একমাত্র এনডিবি ছাড়া তেমন একটা চোখে পড়েনি। সুতরাং আমরা এনডিবির পার্ট আছি, এখানে আশাহতের তেমন কিছু দেখছি না। সুতরাং আমাদের আরও সময় আছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে। তিনি বাংলাদেশ সফরে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

এ প্রসঙ্গে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, এনডিবির প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ আলাপ হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। উনি বাংলাদেশে আসার কথা বলেছেন। আগামী মার্চ মাসে হয়তো আসবেন। আমাদের সঙ্গে অনেক প্রজেক্ট তিনি করবেন।

সেপ্টেম্বরে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর

এদিকে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের বাংলাদেশ সফরের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।

তিনি বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হয়েছে; কিন্তু আনুষ্ঠানিক আলোচনার প্রেক্ষাপটে নয়। তার আসার একটা সম্ভাবনা তো আছে। টাইমিং নিয়ে আমরা কাজ করছি।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, দুই দিনের সফরে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর ঢাকায় আসবেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ। সেক্ষেত্রে এটি হবে রাশিয়ার কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম বাংলাদেশ সফর। আগামী সেপ্টেম্বরে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জি-২০ সম্মেলন। সেখানে যোগ দেবেন ল্যাভরভ। ঢাকা হয়ে দিল্লিতে যাবেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী।