আন্তর্জাতিক

সম্ভব্য যুদ্ধে যেসব ইউক্রেনীয়দের ‘হত্যা করা হবে কিংবা ক্যাম্পে পাঠানো হবে’ তার তালিকা রাশিয়া ইতোমধ্যে করে ফেলেছে বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘকে এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র একটি চিঠিও পাঠিয়েছে বলে বার্তা সংস্থা এএফপি সোমবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।

ওই চিঠির খবর এমন সময় সামনে এলো যখন ইউক্রেন সীমান্তের রুশ সেনা উপস্থিতি নিয়ে আসন্ন যুদ্ধের শঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্র ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’। ইউক্রেনে সম্ভাব্য ‘মানবাধিকার বিপর্যয়’ সম্পর্কেও বারবার সতর্ক করে আসছে ওয়াশিংটন।

ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, আসন্ন যুদ্ধে যেসব ইউক্রেনীয়দের হত্যা করা হবে বা ক্যাম্পে পাঠানো হবে রাশিয়ান বাহিনী তার তালিকা তৈরি করেছে এমন বিশ্বাসযোগ্য তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটকে সম্বোধন করা চিঠিতে বলা হয়েছে, আমাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য রয়েছে যে রাশিয়ান বাহিনী সম্ভবত শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকে ছত্রভঙ্গ করতে কিংবা বেসামরিক জনগণের শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধ মোকাবেলা করতে প্রাণঘাতী ব্যবস্থা নেবে।

এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনে চলমান সংকট নিরসনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় ‘নীতিগতভাবে’ সম্মত হয়েছেন বলে স্থানীয় সময় গভীর রাতে হোয়াইট হাউসের তরফ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বাইডেন-পুতিনের সাক্ষাতের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, ২৪ ফেব্রুয়ারি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের বৈঠক শেষেই দুই দেশের শীর্ষ ব্যক্তিদ্বয় সাক্ষাৎ করবেন।

এলিসি প্রাসাদ সোমবার এক বিবৃতিতে জানায়, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ রোববার ফোনে বাইডেন-পুতিন দুজনের সঙ্গেই কথা বলে ওই বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছেন।

ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইউরোপের নিরাপত্তা ও কৌশলগত স্থিতিশীলতার জন্য সংশ্লিষ্ট পক্ষ আলোচনায় বসবে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ এই আলোচনায় সব পক্ষের মধ্যে সমন্বয় করবেন।

তবে এই আলোচনায় পক্ষ আসলে কারা সেটা বিবৃতিতে স্পষ্ট করা হয়নি।

এর আগে রোববারই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টোনি ব্লিঙ্কেন জানিয়েছিলেন, চলমান সংকট নিরসনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যেকোনো সময়, যেকোনো শর্তে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন।

ব্লিঙ্কেন রোববার মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএনে একটি টকশোতে বলেছিলেন, যা দেখতে পাচ্ছি তাতে বিষয়টি ভীষণ গুরুতর বলেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। আমরা একটি যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছি। তবে ট্রাংক এবং বিমান না সরা পর্যন্ত আমরা কূটনৈতিক উপায়ে প্রেসিডেন্ট পুতিনকে এ ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করতে প্রতিটি সুযোগ ও প্রতিটি মুহূর্ত কাজে লাগাতে চাই।

ব্লিঙ্কেন এর আগে সিবিএসের ‘ফেস দ্য নেশন’কে বলেছিলেন, বাইডেন স্পষ্ট করে বলেছেন যে যুদ্ধ আটকাতে তিনি যেকোনো সময়, যেকোনো শর্তে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে প্রস্তুত।

সাবেক সোভিয়েতভুক্ত ইউক্রেন কয়েক বছর আগে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদ পেতে আগ্রহের কথা জানায়। এর পর থেকেই রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়।

যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর অভিযোগ, গত দুই মাস ধরে রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে ১ লাখেরও বেশি সেনা মোতায়েন রেখেছে। ইউক্রেনে হামলা করতেই এই সৈন্য সমাবেশ বলেও তাদের অভিযোগ।

মস্কো অবশ্য বারবার বলছে, ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই; ন্যাটোর তৎপরতা থেকে নিজেদের নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে তাদের এই প্রয়াস।

তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সদস্যরা মস্কোর এই বক্তব্যে আস্থা রাখতে পারছে না।

আন্তর্জাতিক

ইউক্রেন আগামী সপ্তাহে সর্বোচ্চ খারাপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারে। জার্মানির মিউনিখে নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশ নিয়ে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস এই হুঁশিয়ারি প্রদান করেন।

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিংশ শতাব্দির শুরুর পর ইউরোপ ভয়াবহ নিরাপত্তা পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। এ সময় তিনি বলেন, ভয়াবহ দৃশ্যপট মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুত হওয়া উচিত।

লিজ ট্রাস বলেন, রাশিয়া ঘড়ির কাঁটার পেছনে ফিরতে চায়। বাস্তবতা হলো— তারা ১৯৯০ এর পূর্বের সময়ে ফিরতে চায়।

প্রসঙ্গত, ১৯৯১ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে ১৫টি স্বাধীন রাষ্ট্র সৃষ্টি হয়। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ‘পূর্বের সময়ে ফিরতে চায়’ বলতে এই ঘটনাকে ইঙ্গিত দিয়েছেন।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শুধুমাত্র গত সপ্তাহে আমরা দ্বিগুন অপতথ্য ছড়াতে দেখেছি। একইসঙ্গে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত দোনবাস এলাকায় হামলার নাটকও লক্ষ্য করেছি। রাশিয়া কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় ইচ্ছুক নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আন্তর্জাতিক

ইউনিস ঝড়ের পর জরুরি কর্মীরা শনিবার উদ্ধার অভিযান চালিয়ে ব্রিটেনের কয়েক হাজার বাড়িতে বিদুৎ সংযোগ পুনরূদ্ধার করেছে। পরিবহন নেটওয়ার্ক ভেঙে পড়ায় পশ্চিম ইউরোপ জুড়ে যাতায়াতে এক মারাত্মক অবস্থা দেখা দিয়েছে।

জরুরি পরিষেবা বিভাগ জানিয়েছে ব্রিটেন, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, জার্মানি ও পোল্যান্ডে উপড়ে পড়া গাছপালা ও উড়ে আসা ধ্বংসাবশের নীচে চাপা পড়ে ও দমকা হাওয়ায় অন্তত ১৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। খবর এএফপি’র।

ইউনিস শুক্রবার আঘাত হানায় ইংল্যান্ডে প্রতি ঘন্টায় সর্বোচ্চ ১৯৬ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে যায়। এতে বেশিরভাগ পরিবহন নেটওয়ার্ক ভেঙ্গে পড়ায় ও বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়ায় ব্রিটেনের ট্রেন অপারেটররা পূর্বের সময়সূচী অনুসরণ করে ভ্রমণ না করার আহ্বান জানিয়েছে। ইউনিসের প্রভাবে নেদারল্যান্ডসের ট্রেন নেটওয়ার্কও অচল হয়ে পড়েছে। ফ্রান্সের রেলযোগাযোগও ব্যহত হয় এবং প্রায় ৭৫,০০০ পরিবার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

১৯৮৭ সালে ব্রিটেন ও উত্তর ফ্রান্সে “গ্রেট স্টর্ম” আঘাত হানার পর সবচেয়ে শক্তিশালী এই ঝড়ে যুক্তরাজ্যে দেশব্যাপী প্রায় ৪০০,০০০ ঘরবাড়ি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে, শুক্রবার প্রথমবারের মতো লন্ডনের আবহাওয়া “লাল” সতর্কতা জারি করে।

ব্রিটেনের আবহাওয়া পরিষেবা অফিস, শনিবার ইংল্যান্ড এবং সাউথ ওযলেসের দক্ষিণ উপকূলের বেশিরভাগ এলাকার জন্য কম গুরুতর “হলুদ” সতর্কতা জারি করেছে।

আন্তর্জাতিক

ভারতের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় আর নেই। মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ৯০ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

গত ২৬ জানুয়ারি রাতে শৌচাগারে পড়ে গিয়ে আঘাত পান সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। এরপর বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। একইসঙ্গে ছিল শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যাও। তার দুটি ফুসফুসেই সংক্রমণ দেখা দেয় বলে জানিয়েছে হাসপাতাল সূত্র।

ওই দিনই তাকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এর দুই দিন আগে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সম্মাননা পদ্মশ্রী সম্মান প্রত্যাখ্যান করেছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়।

তার কণ্ঠের জাদুতে মুগ্ধ হয়েছে কয়েক প্রজন্ম। ৫০ বছরেরও বেশি সময় নানা ভাষার সিনেমায় প্লেব্যাক করেছেন তিনি। সিনেমার গানের পাশাপাশি বাংলা আধুনিক গান ও ধ্রুপদী সঙ্গীতেও তিনি ছিলেন সমান পারদর্শী। হেমন্ত মুখার্জি-সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় গানের জুটি হিসেবে দারুণ জনপ্রিয় ছিল এক সময়।

১৯৭১ সালে ‘জয় জয়ন্তী’ ও ‘নিশিপদ্ম’ ছবিতে গান গেয়ে শ্রেষ্ঠ গায়িকা হিসেবে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। ২০১১ সালে ভারত সরকার তাকে ‘বঙ্গবিভূষণ’ উপাধিতে সম্মানিত করে। আর ২০২২ সালে পদ্মশ্রী সম্মান প্রত্যাখ্যান করেন তিনি।

১৯৩১ সালের ৪ অক্টোবর দক্ষিণ কলকাতার ঢাকুরিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন সন্ধ্যা। তার সঙ্গীত শিক্ষার মূল কাণ্ডারি ছিলেন তার দাদা রবীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। উস্তাদ বড়ে গুলাম আলি খাঁর শিষ্য ছিলেন সন্ধ্যা।

১৯৪৫ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে প্রথম গান রেকর্ড করেন তিনি। কলম্বিয়া থেকে তার প্রথম রেকর্ড করা গান গিরীন চক্রবর্তীর কথায় ও সুরে ‘তুমি ফিরায়ে দিয়াছ’ ও ‘তোমার আকাশে ঝিলমিল করে’।

১৯৪৮ সালে প্রথমবার রাইচাঁদ বড়ালের সঙ্গীত পরিচালনায় প্লেব্যাক করেন, ছবির নাম ‘অঞ্জনগড়’। ওই একই বছরে আরও তিনটি আধুনিক গান রেকর্ড করে সঙ্গীতজগতে নিজের জায়গা পাকা করে ফেলেন সন্ধ্যা।

১৯৫০ সালে মুম্বাই পাড়ি জমান বাংলা মৌলিক আধুনিক গানের সম্রাজ্ঞী সন্ধ্যা। ১৭টি হিন্দি ছবিতে প্লেব্যাক করেন তিনি। শচীন দেববর্মনের হাত ধরেই শুরু হয়েছিল তার মুম্বাই সফর। শচীন দেববর্মন নিয়ে গেলেও মুম্বাইয়ে প্রথম প্লেব্যাকের সুযোগ হল অনিল বিশ্বাসের সুরে ‘তারানা’ ছবিতে।

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদেশগুলো কয়েকদিন ধরে অব্যাহতভাবে সতর্কতা দিয়ে যাচ্ছে যে কোনো সময় ইউক্রেনে  আক্রমণ করবে রাশিয়ার সেনারা।

তারা দাবি করছে যুদ্ধ করার যেসব প্রস্তুতি প্রয়োজন তার সবই সম্পন্ন করেছে রাশিয়া। এখন শুধু প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সংকেতের অপেক্ষায় আছে তারা।

মঙ্গলবার ক্রিমলিনে জার্মান চ্যান্সেলরের সঙ্গে  বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলতে আসেন পুতিন। সেখানে যুদ্ধ করার বিষয়ে সরাসরি উত্তর দেন তিনি।

যুদ্ধ করার বিষয়ে পুতিন বলেন, আমরা কি যুদ্ধ চাই না কি চাই না? অবশ্যই না। আর শুধুমাত্র এ কারণেই আমরা আলোচনার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়েছি।

তিনি সংবাদ সম্মেলনে আরও জানিয়েছেন, ইউক্রেন সীমান্ত থেকে কিছু সৈন্য সরিয়ে নেওয়ার  সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে আলোচনার পথ বড় করার জন্য।

তবে পুতিন যুদ্ধ করতে চান না জানালেও আবার যুদ্ধ করার বিষয়ে আকার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে পুতিন দাবি করেছেন, পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাসে রাশিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ওপর গণহত্যা চালানো হচ্ছে। তিনি দ্রুত এটি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এ বিষয়টিই দাবি করা হচ্ছে,  ডনবাস বা লুহানস্ককে গণহত্যা হচ্ছে এরকম দাবি করে রাশিয়া ইউক্রেনের ওপর হামলা করবে।

আন্তর্জাতিক

ইয়েমেনের রাজধানী সানায় বিমান হামলা চালিয়েছে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট।

তারা দাবি করেছে, বিমান হামলার মাধ্যমে সানার একটি টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছে। এই টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে হুথি বিদ্রোহীরা ড্রোন হামলা পরিচালনা করত।

বৃহস্পতিবার সৌদি আরবের আবহা বিমানবন্দরে ড্রোন হামলা চালায় হুথিরা।

এরপর সৌদ জোটের পক্ষ থেকে বলা হয় তারা সানায় হুথিদের ড্রোন স্থাপনাগুলোতে বিমান হামলা চালাবেন।

আগে থেকেই বিষয়টি জানিয়ে দিয়ে ইয়েমেনের রাজধানী সানা থেকে বেসামরিক লোকদের সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয় সৌদি জোটের পক্ষ থেকে।

গণমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, উত্তর সানার একটি স্যাটেলাইট স্টেশন লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়। স্যাটেলাইট স্টেশনটি টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের কাছে অবস্থিত।

এ হামলায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেছে কি না এ বিষয়ে এখনো নিশ্চিত করে কিছু জানাতে পারেনি কোনো পক্ষ।

এদিকে ইয়েমেনে ২০১৪ সালে ইয়েমেনে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ। সে বছর ইয়েমেনের সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করার চেষ্টা করে ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা।

আর বিদ্রোহীদের দমন করার জন্য ২০১৫ সাল থেকে সৌদি জোট ইয়েমেনে অভিযান পরিচালনা করছে।

আন্তর্জাতিক

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ইউক্রেন ন্যাটো জোটে যোগদানের বিষয়টি প্রত্যাখান করলে তাদের উদ্বেগ কমবে। লন্ডনের ইউক্রেন রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন।

এর আগে সোমবার— ইউক্রেনে রাশিয়া যেকোনো দিন হামলা করতে পারে, এমন উদ্বেগের মধ্যে কিয়েভের লন্ডন রাষ্ট্রদূত ভাদিম প্রিস্টাইকো বলেন, যুদ্ধ প্রতিরোধের জন্য তার দেশ ন্যাটো জোটে যোগদানের  বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবে। তার এই কথার অর্থ, রাশিয়ার আক্রমণ বন্ধের জন্য ইউক্রেন আপাতত ন্যাটো জোটে যোগদান করবে না।

যদিও ইউক্রেনের এই কূটনীতিক সোমবার তার বক্তব্যের আলাদা ব্যাখা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেন বিভিন্ন বিষয়ে আপস-মীমাংসার জন্য প্রস্তুত। তবে এসবের সঙ্গে ন্যাটোতে যোগদানের কোনো সম্পর্ক নেই।

কিয়েভের লন্ডন রাষ্ট্রদূত ভাদিম প্রিস্টাইকোর বক্তব্যের পর ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওলেগ নিকোলেঙ্কো তার দেশের অবস্থান স্পষ্ট করেন। তিনি বলেন, ইউক্রেনের ন্যাটো জোটে যোগদানের সম্ভাব্য বিষয়টি দেশের সংবিধানে রক্ষিত আছে। সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোনো কিছু করা হবে না।

এদিকে ইউক্রেনের লন্ডন রাষ্ট্রদূত ভাদিম প্রিস্টাইকোর বক্তব্যের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ বলেন, কিয়েভের বৈদেশিক নীতির পরিবর্তন হয়ে থাকতে পারে।

ইউক্রেনের এমন উদ্যোগে ক্রেমলিন সন্তুষ্ট হবে কী-না— এমন প্রশ্নের জবাবে পেসকভ বলেন, নিঃসন্দেহে। এটা হলে রাশিয়ার উদ্বেগের যথাযথ জবাব মিলবে।

রাশিয়া বলছে, ইউক্রেনে ন্যাটোর ক্রমবর্ধমান অস্ত্র সরবরাহ এবং সামরিক প্রশিক্ষণ তাদের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কারণে ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় এক লাখ সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া।

যদিও রাশিয়া বলছে. ইউক্রেনে কোনো হামলার পরিকল্পনার নেই তাদের।

তবে পশ্চিমা কিছু দেশ সতর্ক করে বলেছে, সামরিক অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্র আরও এক ধাপ এগিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, রাশিয়া যেকোনো সময় হামলা চালাতে পারে।

আন্তর্জাতিক

‘যেকোনো মুহূর্তে ইউক্রেইনে যুদ্ধ শুরু হতে পারে’- পশ্চিমা দেশগুলোর এমন উদ্বেগের মধ্যেই ক্রিমিয়া উপদ্বীপের কাছে সমুদ্রে বড় ধরনের নৌ মহড়া করছে রাশিয়া।

রুশ সংবাদ সংস্থা রিয়া’র বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ‘রাশিয়ান ব্ল্যাক সি’ নৌবহরের ৩০টির বেশি জাহাজ ওই মহড়ায় অংশ নিতে রওনা হয়েছে।

সম্প্রতি ইউক্রেইন সীমান্তের কাছে এক লাখের বেশি সেনা জড়ো করেছে রাশিয়া। সঙ্গে আছে ট্যাঙ্ক এবং ভারি অস্ত্রশস্ত্র ও সমর সরঞ্জাম।

পশ্চিমা দেশগুলোর আশঙ্কা ইউক্রেইনে আগ্রাসন চালাতে সীমান্তে শক্তি বাড়াচ্ছে রাশিয়া। তারা ইউক্রেইন সীমান্তে রাশিয়ার কার্যক্রম গভীর মনযোগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে। সেইসঙ্গে ইউক্রেইনের যুদ্ধ সক্ষমতা বাড়াতে সামরিক সহায়তা পাঠাচ্ছে।

পশ্চিমা দেশগুলো যেকোনো সময় যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করলেও রুশ সরকার বারবার বলছে, ইউক্রেইনে আক্রমণের কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। বরং নেটোর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়মিত মহড়ায় অংশ নিতে তারা সীমান্তে সেনা জড়ো করেছে।

এ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা-আলোচনার মধ্যেই বেলারুশের সঙ্গে ১০ দিনের যৌথ সামরিক মহড়া শুরু করেছে রাশিয়া। এর প্রস্তুতি হিসেবে রুশ বাহিনী আজভ সাগর পুরোপুরি অবরোধ করে রেখেছে এবং কৃষ্ণসাগরে প্রবেশ প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ইউক্রেইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মইত্রো কুলেবা।

মহড়া চলাকালে ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলাগুলির প্রশিক্ষণ হবে জানিয়ে ওই উপকূলের সবাইকে প্রশিক্ষণ এলাকা থেকে দূরে থাকার জন্য সতর্ক করেছে রাশিয়া।

আর ইউক্রেইনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, “যে বিশাল এলাকাজুড়ে মহড়ার আয়োজন করা হয়েছে, তা নজিরবিহীন। এতে উভয় সাগরেই জাহাজ চলাচল অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

শনিবার রিয়া’র খবরে বলা হয়, ক্রিমিয়া উপদ্বীপের কাছে নৌ মহড়ায় অংশ নিতে রাশিয়ার ৩০টির বেশি জাহাজ সেভাসতোপোল এবং নোভোরোসিস্ক বন্দর থেকে রওয়ানা হয়েছে।

২০১৪ সালে ইউক্রেইন যুদ্ধের সময় ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে রাশিয়া।

আন্তর্জাতিক

দুর্ঘটনাবশত বহুতল ভবনের বারান্দা থেকে পড়ে গিয়ে শিশুদের মৃত্যুর খবর প্রায়ই শিরোনামে আসে। তবে দুর্ঘটনাবশত নয়, ইচ্ছে করেই ১০ তলা থেকে চাদরে বেঁধে ছেলেকে ঝুলিয়ে দিয়েছেন এক মা। হাড়হিম করা এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।

ভারতের ফরিদাবাদে এই লোমহর্ষক ঘটনা ঘটে।

ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গেছে, ছেলের কোমরে চাদর বেঁধে ১০ তলা থেকে নয়তলায় নামিয়ে দিচ্ছেন মা। ছেলেটিও দারুণ দক্ষতার সঙ্গে নয়তলায় বারান্দায় নেমে সেখান থেকে কিছু একটা কুড়িয়ে দিব্যি ঝুলে ঝুলে উপরে উঠে আসে।

কেন নিজের সন্তানের জীবন ঝুঁকিতে ফেলেছিলেন ওই নারী তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা না গেলেও পরে জানা যায় আসল ঘটনা। গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বারান্দা থেকে পড়ে যাওয়া একটি শাড়ি উদ্ধারের জন্য এই ভয়ংকর কাণ্ড করেছেন ওই নারী।

এদিকে একটি ভবন থেকে ধারণ করা ওই ঘটনার ভিডিও’র ব্যাপারে ওই নারী কিছুই জানতেন না।

অবশ্য পরে নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন ওই নারী। ভিডিওটি ভাইরাল হলে সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, এ কম ঝুঁকি নেওয়া তার  উচিত হয়নি। নিচের ফ্ল্যাটের দরজা বন্ধ থাকায় অভিনব এই উপায় নিতে ‘বাধ্য’ হয়েছিলেন বলেও জানান তিনি।

আন্তর্জাতিক

জাতিসংঘ শান্তি বিনির্মাণ কমিশন (পিবিসি)-এর সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা। জাতিসংঘের ইতিহাসে প্রথম নারী হিসেবে তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছেন।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে পিবিসি চেয়ার ও ভাইস চেয়ারদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

পিস বিল্ডিং কমিশন (পিবিসি) হচ্ছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ও নিরাপত্তা পরিষদের একটি আন্ত:রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা সংস্থা।

এই সংস্থা বিভিন্ন সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোতে শান্তি বিনির্মাণে কাজ করে থাকে। যেন সংঘাতের পুনরাবৃত্তি রোধ করে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।

সাধারণ পরিষদ, নিরাপত্তা পরিষদ এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ (ইকোসক) থেকে নির্বাচিত সদস্যসহ ৩১ সদস্যের সমন্বয়ে ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় পিবিসি। জাতিসংঘে শীর্ষ অর্থ প্রদানকারী ও শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশগুলো এই কমিশনের সদস্য।

নির্বাচনে সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেন, আজ খুবই আনন্দের বিষয় যে, দশ বছর পর বাংলাদেশ আবারো পিস বিল্ডিং কমিশনের চেয়ার পদে নির্বাচিত হয়েছে। এর আগে বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত থাকাকালীন এই পদের জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে এবারই প্রথম একজন নারী মর্যাদার এই পদটিতে নির্বাচিত হলেন, যা বাংলাদেশের জন্য বিশেষ গৌরবের।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি আরও বলেন, পিবিসির সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হওয়া শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেয়ারই পরিস্কার স্বীকৃতি। কারণ বিশ্বের অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কিছু অঞ্চলে শান্তিরক্ষা ও শান্তি বিনির্মাণে বাংলাদেশ দীর্ঘসময় ধরে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় উল্লেখযোগ্য এই অবদান রেখে চলেছে।

কোভিড মহামারীর এই সময়টায় যখন গোটা দুনিয়ায় শান্তি রক্ষা, শান্তি বিনির্মাণ ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড মারাত্মকভাবে ব্যহত হচ্ছে, ঠিক তেমনি একটি সময়ে পিবিসি পরিচালনার জন্য সদস্য দেশগুলো বাংলাদেশের প্রতি যে আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছে, তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। কোভিড-১৯ এর এই সময়টায় বৈশ্বিক সংহতি রক্ষায় বিশেষ মনোযোগ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

সংঘাতর্পূণ দেশ বা অঞ্চলে শান্তিবিনির্মাণ সক্ষমতাসমূহের উন্নয়নে শান্তিরক্ষীরা যে গুরুত্বর্পূণ ভূশিকা রেখে চলেছে তা স্মরণ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা যেসব দেশে নিয়োজিত সেই দেশগুলোর উন্নয়নের ক্ষেত্রেও ভূমিকা রেখে চলেছে। শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সবসময়ই তা গুরুত্বের সাথে মূল্যায়ণ করবে।

পিবিসি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বাংলাদেশ এর সদস্য। ২০১২ সালে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো এর সভাপথি নির্বাচিত হয়েছিল।