আন্তর্জাতিক

সাহিত্যে এ বছর নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তানজানিয়ার ঔপন্যাসিক আবদুলরাজাক গুরনাহ, যার দরদি ভাষার দ্ব্যর্থহীন লেখায় ফুটে উঠেছে ঔপনিবেশিকতার দুর্দশা আর শরণার্থী জীবনের বেদনার আখ্যান।

বৃহস্পতিবার সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী ১১৮তম লেখক হিসেবে আবদুলরাজাক গুরনাহর নাম ঘোষণা করে রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি।

৭৩ বছর বয়সী গুরনাহর মোট দশটি উপন্যাস এ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে, যার একটি হল প্যারাডাইস অ্যান্ড ডিজারশন।

১৯৯৪ সালে প্রকাশিত এ উপন্যাসের কাহিনী বিকশিত হয়েছে ২০ শতকের গোড়ার দিকে তানজানিয়ায় বেড়ে ওঠা এক বালকের গল্পকে কেন্দ্র করে।

মূলত প্যারাডাইস অ্যান্ড ডিজারশন বুকার জেতার পরই ঔপন্যাসিক আবদুলরাজাক গুরনাহর নাম আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ছড়াতে শুরু করে।

নোবেল জয়ের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছেন, এত বড় একটি পুরস্কার, অসাধারণ সব লেখকদের পাশে তার নাম, এ তার বিশ্বাসই হতে চাইছিল না।

“আমি এতটাই বিস্মিত যে বিশ্বাস করার আগে নিজে কানে ওই ঘোষণা শোনা পর্যন্ত আমি সত্যি সত্যি অপেক্ষা করেছি।”

রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি বলেছে, সত্যের প্রতি আবদুলরাজাক গুরনাহর যে নিষ্ঠা, ঘটনার অতিসরলীকরণে তার যে ঘোর আপত্তি, পাঠককে তা নাড়া দেয়।

“তার উপন্যাস গতানুগতিক ধারাবর্ণনার রীতি থেকে বেরিয়ে এসে আমাদের দৃষ্টির সামনে মেলে ধরে সাংস্কৃতি বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ এক পূর্ব আফ্রিকাকে, যার সঙ্গে পৃথিবীর অনেক অঞ্চলের কোনো মিল নেই।

“তার চরিত্ররা নিজেদের আবিস্কার করে সংস্কৃতি থেকে সংস্কৃতি, মহাদেশ থেকে মহাদেশের মাঝে কোনো এক শূন্য রেখায়; যে জীবন তাদের ছিল, আর যে জীবন তাদের সামনে ভাঁজ খুলতে শুরু করেছে, তার মাঝে এক অবলম্বনহীন অস্তিত্বে তারা নিজেদের খুঁজে পায়; এই অনিশ্চয়তার কোনো নিদান হয় না।”

আবদুলরাজাক গুরনাহর জন্ম ১৯৪৮ সালে, তানজানিয়ার জানজিবারে, যে দেশ পর্তুগিজ, ওমান ও ব্রিটিশ শাসনে ছিল সাড়ে সাড়শ বছর। তার গল্পের অনেক চরিত্রের মত তিনি নিজেও একজন শরণার্থী হয়ে ১৯৬০ এর দশকে ইংল্যান্ডে পা রাখেন।
তার পরের জীবনের বড় একটা সময় তার কেটেছে কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে। সম্প্রতি অবসরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সেখানে তিনি ইংরেজি আর পোস্ট কলোনিয়াল সাহিত্য পড়িয়েছেন।

১৯৮৬ সালে ওলে সোয়েনকার পর গুরনাহই প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকান, যিনি সাহিত্যে নোবেল পেলেন।

এই লেখকের আশা, তার এই পুরস্কারপ্রাপ্তির মধ্য দিয়ে হয়ত শরণার্থী সঙ্কট আর ঔপনিবেশিকতাবাদের দুষ্ট ক্ষত হয়ত আলোচনায় আসবে।

“এমন কিছু বিষয় থাকে, যার মধ্যে দিয়ে আমাদের প্রতিদিন যেতে হয়। বিশ্বের অনেক জায়গায় বহু মানুষ মারা যাচ্ছে, অনেকে আঘাত পাচ্ছে, এ ধরনের বিষয়গুলো আমাদের সবচেয়ে বেশি মানবিকভাবে দেখা দরকার।”

আবদুলরাজাক গুরনাহ বলেন, যখন তিনি ইংল্যান্ডে আসেন, ‘আশ্রয়প্রার্থী’ বা এরকম শব্দগুলোর মানে তখন আজকের মত ছিল না। সেসব দিনে বহু মানুষ নিজের দেশ ছেড়ে পালাচ্ছিল, এক সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে তাদের যেতে হচ্ছিল।

“কিন্তু ১৯৬০ এর সেই সব দিনের চেয়ে আজকের পৃথিবীতে সহিংসতা অনেক বেশি। ফলে যেসব দেশে জীবন নিরাপদ বলে মনে করা হয়, তাদের ওপর চাপও অনেক বেশি। অবধারিতভাবে অনেক বেশি মানুষ এখন সেসব দেশে যাচ্ছে আশ্রয়ের আশায়।”

২০১৬ সালে এক সাক্ষাৎকারে গুরনাহর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তিনি নিজেকে একজন উত্তর ঔপনিবেশিক লেখক বলবেন, না বিশ্ব সাহিত্যের লেখক?

তার উত্তর ছিল: “এরকম কোনো অভিধাই আমি নিতে চাই না। অমুক লেখক বা অমুক ঘরানার লেখক- এরকম বর্ণনা আমি নিজেকে নিয়ে করতে চাই না।

“আসলে নিজের নামের বাইরে আমার পরিচয় দিতে আলাদা করে বলার মত কিছু আছে কি না, সে বিষয়েও আমি নিশ্চিত নই।”

সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের শেষ ইচ্ছা অনুসারে গবেষণা, উদ্ভাবন ও মানবতার কল্যাণে অবদানের জন্য প্রতি বছর চিকিৎসা, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, সাহিত্য, শান্তি ও অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়। গতবছর সাহিত্যে এ পুরস্কার পেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কবি লুইস গ্লিক।

বরাবরের মতই চিকিৎসা বিভাগের পুরস্কার ঘোষণার মধ্য দিয়ে সোমবার চলতি বছরের নোবেল মৌসুম শুরু হয়। পরের দুই দিনে ঘোষণা করা হয় পদার্থবিদ্যা আর রসায়নের নোবেল।

শুক্রবার শান্তি এবং আগামী ১১ অক্টোবর অর্থনীতিতে এবারের নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে।

এমনিতে প্রতিবছর স্টকহোমে অনুষ্ঠান করে নোবেল পুরস্কার তুলে দেওয়া হয় বিজয়ীদের হাতে। সেখানে তারা বক্তৃতাও দেন।

তবে করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে গত বছরের মত এবারও পুরস্কার বিতরণের রাজকীয় সেই আয়োজন থাকছে না।

তারপরও নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের অনুপস্থিতিতেই এ বছর স্বল্প পরিসরে স্থানীয়ভাবে নোবেল পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান আয়োজনের আশা প্রকাশ করেছে ফাউন্ডেশন।

সে অনুষ্ঠান টেলিভিশন এবং নোবেল প্রাইজের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে বলেও নোবেল ফাউন্ডেশন জানিয়েছে।

আন্তর্জাতিক

রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও আঞ্চলিক দেশসমূহকে তাদের প্রচেষ্টাগুলো অব্যাহত রাখতে হবে। মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে প্রত্যাবর্তনের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি এবং রোহিঙ্গাদের ওপর সৃষ্ট নৃশংসতম অপরাধের দায়বদ্ধতা নিরূপণ করা এক্ষেত্রে অত্যন্ত জরুরি। স্থানীয় সময় সোমবার (৪ অক্টোবর) জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটির সাধারণ বিতর্কে বক্তব্য প্রদানকালে এ কথা বলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।

প্রত্যাবাসন বিলম্বিত হওয়ার কারণে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্পসমূহে হতাশার সৃষ্টি হচ্ছে এবং তা ক্রমশ বেড়েই চলছে মর্মে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে- এমনকি ভ্যাকসিনের উপযোগী সব রোহিঙ্গার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রদান করছে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি এ সমস্যার সমাধান নিহিত রয়েছে নিজভূমি মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ, টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের ওপর।

সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে বাংলাদেশের অগ্রাধিকার বিষয়সমূহ তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। রোহিঙ্গা সংকট ছাড়াও তৃতীয় কমিটিতে বাংলাদেশ যেসব বিষয়গুলো বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করবে তা হলো- ভ্যাকসিন সমতা নিশ্চিতকরণ, নারীর ক্ষমতায়ন এবং নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা রোধ, শিক্ষাসহ শিশুদের সব অধিকারের সুরক্ষা, অভিবাসী কর্মীদের কল্যাণ ও অধিকারের সুরক্ষা এবং জাতীয় ও বৈশ্বিক পর্যায়ে মানবাধিকার সমুন্নত ও সুরক্ষিত রাখা।

নাজুক পরিস্থিতিতে নিপতিত মানুষের ওপর কোভিড-১৯ যে অসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে তা তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। তিনি এ সংকট কাটিয়ে উঠতে সামগ্রিক ও টেকসই পুনরুদ্ধারের ওপর জোর দেন এবং এক্ষত্রে বৃহত্তর একতা, সহযোগিতা ও সমন্বয়ের আহ্বান জানান।

এর আগে তিনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের প্রথম কমিটি ও পঞ্চম কমিটির সাধারণ বিতর্কে বক্তব্য প্রদান করেন।

আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ‘অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল’ এর এক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, গত ৩০ আগস্ট আফগানিস্তানের সংখ্যালঘু হাজারা সম্প্রদায়ের ১৩ সদস্যকে হত্যা করেছিল তালেবান। তার মধ্যে ছিল এক ১৭ বছরের কিশোরীও। এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, গত ৩০ আগস্ট আফগানিস্তানের খিদির জেলায় প্রবেশ করে অন্তত ৩০০ তালেবান যোদ্ধা। তারপরই শুরু হয় অবাধ হত্যাযজ্ঞ। জানা যায়, নিহত ১৩ জনের মধ্যে আফগান সেনার ১১ জন প্রাক্তন সদস্য। তাদের মধ্যে ৯ জনকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় কাছের নদীতীরে। তারপর একে একে খুন করে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়।

মৃতদের মধ্যে ছিল এক ১৭ বছরের কিশোরী। মাসুমা নামের ওই কিশোরী তালেবান-আফগান সেনার মধ্যে গুলি বিনিময়ের শিকার হয়। তারই মতো হাজারা সম্প্রদায়ের আরেক সাধারণ নাগরিক মারা যান গুলিতে।

এর আগে ১৯ আগস্ট ৯ জন হাজারা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিকে খুন করেছিল তালিবান। কেবল তালেবানই নয়, তাদের অন্যতম ‘শত্রু’ ইসলামিক স্টেট (খোরাসান) এর হাতেও হাজারা সম্প্রদায়ের বহু সদস্যের গত কয়েক মাসে মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশের ৪০ ভাগ মানুষের জন্য দ্রুত ভ্যাকসিন পাঠাতে সম্মত হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

শুক্রবার বিকেলে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ট্রেডোস আধানম গাব্রিয়েসুস এর সাথে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেকের অনুষ্ঠিত দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে এই সম্মতি প্রকাশ করা হয়।

স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালকের মধ্যে একটি দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক শেষে এক বিবৃতিতে এসব কথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

বিবৃতিতে জানানো হয়, বৈঠকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক আলোচনার প্রথম পর্যায়ে ডিসেম্বরের মধ্যেই বাংলাদেশে কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটিজের আওতায় দেশের ২০ ভাগ মানুষের জন্য ভ্যাকসিন পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন। দেশের জনসংখ্যা অনুযায়ী  আমরা ৪০ ভাগ মানুষের জন্য ভ্যাক্সিন পাঠানোর অনুরোধ জানালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক পর্যায়ক্রমে দ্রুতই ৪০ ভাগ মানুষের জন্য ভ্যাকসিন পাঠাতে সম্মত হন।

বিবৃতিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ডিসেম্বরের মধ্যেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মাধ্যমে কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটিজের আওতায় দেশের ২০ ভাগ মানুষের জন্য ভ্যাক্সিন পাওয়া সম্ভব হবে এবং খুব অল্প সময়েই দেশের ৪০ ভাগ মানুষের জন্য কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটিজের আওতায় ভ্যক্সিন পাওয়া যাবে। এর পাশাপাশি অন্যান্য মাধ্যম থেকেও আমাদের ভ্যাক্সিন ক্রয়ের কাজটিও চলমান থাকবে।

জাহিদ মালেক জানান, দ্বি-পাক্ষিক গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠকে বাংলাদেশেই ভ্যাক্সিন উৎপাদনের জন্য কারিগরি সহায়তারও আশ্বাস দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক। পাশাপাশি, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ভ্যাক্সিন টেস্টিং ক্যাপাসিটি অব দা ন্যাশনাল কন্ট্রোল ল্যাবরেটরির এক্রিডিটেশন প্রদানের কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান করবেন বলেও জানিয়েছেন মহাপরিচালক।

দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে গত দেড় বছরে কোভিড মোকাবিলায় বাংলাদেশ কি কি উদ্যোগ নিয়েছে তা তুলে ধরলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক কোভিড মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভ্যাকসিন প্রদানে বাংলাদেশের সফলতার কথা উল্লেখ করেন এবং দু’টি বড় মাপের সফল ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইন করার বিষয়টি তুলে ধরেন। এর মধ্যে গত ২৮ সেপ্টেম্বর দেশব্যাপী ৮০ লক্ষেরও বেশি মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে এবং এই কাজে সরকারি, বেসরকারি মিলে প্রায় ৮০ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এর প্রেক্ষিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ভ্যাক্সিন প্রদানে বাংলাদেশ নজির সৃষ্টি করেছে বলে জানান ও বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভুয়সী প্রশংসা করেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালকের নিকট কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটিজের আওতায় ফাইজার ও মডার্ণার ভ্যাক্সিন আরো বেশি সংখ্যক পরিমানে পাবার অনুরোধ জানালে মহাপরিচালক বিষয়টিতে গুরুত্ব দেবেন বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন।

আন্তর্জাতিক

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের শামসেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুর আসনের নির্বাচন ও ভবানীপুর আসনের উপনির্বাচনের ফল ঘোষণা হবে আজ রবিবার (৩ অক্টোবর)। তবে পশ্চিমবঙ্গসহ সারা ভারতের নজর থাকছে ভবানীপুর আসনে। এই আসনে লড়ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এই নির্বাচনকে তার মুখ্যমন্ত্রিত্ব ধরে রাখার লড়াই হিসেবে দেখা হচ্ছে।

রাজনৈতিক মহলের বিভিন্ন অংশের ধারণা অনায়াসেই এই নির্বাচনে জিতছেন মমতা ব্যানার্জি। আর এটা হলে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে থাকছেন তিনিই। তবে আশা ছাড়ছে না বিরোধী দল বিজেপিও। দলটির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার তার দলের এজেন্টদের ভোট গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত বুথ ছাড়তে নিষেধ করেছেন।

শুক্রবার দলের এক সভায় তিনি বলেন, ৫০ হাজার ভোটে পিছিয়ে থাকলেও শেষ পর্যন্ত বুথে থাকতে হবে। যদিও আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, ভবানীপুরে গত বিধানসভা নির্বাচনে বড় ব্যবধানে জিতেছে তৃণমূল। তার ওপর উপনির্বাচনে আবার প্রার্থী মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি নিজেই। ভোট পরার হারও সন্তোষজনক নয়। তাই জেতার আশা নয়, বরং কত ভোটের ব্যবধানে পরাজয় হচ্ছে সে অঙ্কই কষছে বিজেপি। আজ রবিবার ভবানীপুরের সঙ্গে নির্বাচনের ফল ঘোষণা হতে চলা শামসেরগঞ্জ কিংবা জঙ্গিপুর নিয়েও বিজেপি আশাবাদী নয়। কারণ মুর্শিদাবাদে না আছে সংগঠন, না ছিল হাওয়া। তাই ফল যে ৩-০ হতে চলেছে তার জন্য অন্তত মানসিকভাবে প্রস্তুত রয়েছে বিজেপি।

আর মমতার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল প্রচারণায় নিজেকে লড়াকু হিসেবে তুলে ধরলেও ফল ঘোষণার আগের দিন একেবারেই চুপ। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, আমি ফল নিয়ে ভাবছি না। যা হওয়ার হয়ে গেছে। এখন অন্য কাজে ব্যস্ত রয়েছি। প্রিয়াঙ্কা অন্য কাজে ব্যস্ত থাকলেও বিজেপি শিবিরের একাংশ হিসাব কষছেন পরাজয়ের ব্যবধান নিয়ে। রাজ্য নেতাদের প্রায় সকলেই মনে করছেন বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় উপনির্বাচনে জয়ের ব্যবধান বাড়বে তৃণমূলের। মমতা জিততে পারেন ৩০ থেকে ৪০ হাজার ভোটের ব্যবধানে।

বিজেপির এক শীর্ষ নেতার কথায়, ভবানীপুর এলাকায় একটা বড় অংশের মুসলিম ভোটার রয়েছেন। তাদের ভোট ইভিএম বন্দি হলেও হিন্দু ভোটকে সেভাবে একত্রিত করা যায়নি। ফলে তৃণমূলের জয়ের ব্যবধান বাড়তে পারে। শোভনদেব জিতেছিলেন ২৮ হাজার ৭১৯ ভোটে। এবার মমতা তা টপকে যেতে পারেন। তৃণমূলও আশাবাদী যে মমতা বড় ব্যবধানে জিতবেন।

এদিকে ভবানীপুরে উপনির্বাচনের ভোট গণনা কেন্দ্রের বাইরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। শনিবার কমিশনের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভবানীপুর আসনে ভোট গণনার সময় যাতে কোনো রকমের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনে আগে থেকে পদক্ষেপ নিচ্ছে কলকাতা পুলিশও। গত ৩০ সেপ্টেম্বর ভবানীপুরে বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া ভোট শান্তিপূর্ণ ছিল। বিজেপির পক্ষ থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ করা হয়। যদিও সেসব অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

আন্তর্জাতিক

সৌদি আরব সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ তাদের কোয়ারেন্টিন নীতিমালায় পরিবর্তন এনেছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে এখন থেকে সৌদি আরবে প্রবেশের ক্ষেত্রে এক ডোজ টিকা নেওয়া থাকলেও ৫ দিন নিজ খরচে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। এর আগে এক ডোজ টিকা নিয়ে সৌদি আরবে প্রবেশ করা গেলেও নতুন এই শর্তে সেই সুযোগ আর থাকছে না।

মঙ্গলবার রিয়াদে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। একই শর্ত সৌদি আরব থেকে এক ডোজ নিয়ে দেশে ফিরে আসা ব্যক্তির উপরও আরোপ হবে বলে জানায় তারা।

নতুন শর্তে বলা হয়েছে, সৌদি আরব হতে এক ডোজ টিকা নিয়ে যে সমস্ত নন সৌদিরা ছুটিতে গিয়েছিলেন তাদেরকে ইমিউন দেখালেও ফেরার সময় কোয়ারেন্টাইন প্যাকেজ গ্রহণ করতে হবে। নির্দেশনায় ইমিউন প্যাসেঞ্জারদের সংজ্ঞায় সৌদিতে আগতদের (অ্যাস্ট্রাজেনেকা, মডার্না, ফাইজারের) দুই ডোজ টিকা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।

কোয়ারেন্টিন প্যাকেজ গ্রহণ ছাড়া সৌদিতে শুধু এক ডোজ টিকা গ্রহণকারীদের প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। সৌদি সিভিল এভিয়েশন ইমিউনের সংজ্ঞায় বলেছে, সেদেশে অনুমোদিত টিকার একাধিক ডোজ গ্রহণকারী ইমিউন হিসেবে বিবেচিত হবেন।

দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা জানান, সৌদি সিভিল এভিয়েশন এয়ারলাইন্সগুলোকে এই নির্দেশনা পাঠিয়ে দিয়েছে। যার ফলে এক ডোজ নেওয়া কেউই কোয়ারেন্টিন প্যাকেজ ছাড়া টিকেট কাটতে পারবেন না। এক ডোজ টিকা নিয়ে যারা এখান থেকে দেশে গেছেন ছুটিতে, তারা এই কারণে দুর্ভোগে পড়তে পারেন।

তবে সৌদিতে এক ডোজ নিয়ে কেউ যদি বাংলাদেশ হতে অপর ডোজ গ্রহণ করে সেক্ষেত্রে কি হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোন নির্দেশনা দেয়নি।

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘শেখ হাসিনা: দ্য স্টোরি অব এ ব্লোসমিং বাংলাদেশ’ শিরোনামের একটি বই কলকাতায় উন্মোচন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে বই উন্মোচন করেন পশ্চিবঙ্গ সরকারের গ্রামন্নোয়ন মন্ত্রী শ্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়।

ইংরেজী ভাষার এ বইটিতে কলম ধরেছেন পশ্চিমবঙ্গের বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, গণমাধ্যমকর্মী, অর্থনীতিবিদ এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা। ১৫টি প্রবন্ধের সংগ্রহ দ্বারা বঙ্গবন্ধুর কন্যার জীবন ও কাজ এবং বাংলাদেশ অগ্রগতির বিষয়ে গভীরভাবে তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি তার নেতৃত্বে বর্তমান বাংলাদেশের উন্নতি ও সমৃদ্ধির বিষষগুলো তুলে ধরা হয়েছে। ১৫৪ পৃষ্ঠার বইটি সম্পাদনা করেছেন কলকাস্থিত বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের প্রেস শাখার প্রথম সচিব ড. মো. মোফাকখারুল ইকবাল। বইটি প্রকাশনা করেছে ঢাকার ‘জার্নিম্যান বুকস’।

অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের মাননীয় মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনের শুভেচ্ছা বার্তা জানিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশের সমৃদ্ধিতে শেখ হাসিনার অবদান এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক তার কারণেই এত দৃঢ়তা পেয়েছে। তিনি বঙ্গবন্ধুর যোগ্য উত্তরসূরী। চিরকাল তিনি বাঙালি জাতির সেবায় নিবেদিত। তার দীর্ঘ, সুস্থ জীবন কামনা করি।

ভারতের জাতীয় সম্প্রচারকারী দূর-দর্শনের সাংবাদিক স্নেহাসিস সুর তার বাংলাদেশ সফরকে স্মরণ করেছিলেন। যেখানে তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করার সুযোগ পেয়েছিলেন। স্নেহাসিস সুর বলেছেন, শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশের নেতা নন, গোটা দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের একজন রাষ্ট্রনায়ক। তিনি একজন মহান পিতার সম্ভ্রান্ত কন্যা। যিনি ধর্মনিরপেক্ষতা, বহুত্ববাদ এবং গণতন্ত্রের আদর্শকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা প্রেসক্লাবের সভাপতি স্নেহাসিস সুর, ড. মো মোফাকখারুল ইকবাল, ড. দেবজ্যোতি চন্দ সহ বিশিষ্টজনরা। এ খণ্ডে অবদানকারীদের মধ্যে আছেন ড. চিন্ময় গুহ, ড. পবিত্র সরকার, তরুন গাঙ্গুলী, মানশ ঘোষ, দেবদীপ পুরোহিত, ড. রতন খাসনাবিস, চন্দন সেন, সরদার আমজাদ আলী, অচিন রায়, পার্থ চৌধুরী, ড. দেবজ্যোতি চন্দ, দীপঙ্কর দাশগুপ্ত, প্রবীর প্রামাণিক, প্রতিম রঞ্জন বোস এবং অমল সরকার।

আন্তর্জাতিক

দুই বছর পর ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন ফিলিস্তিনের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও নাগরিক সমাজের নেত্রী খালিদা জারার। স্থানীয় সময় রবিবার বিকেলে সালেম সীমান্তফাঁড়ি দিয়ে তাকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

৫৮ বছর বয়সী খালিদা জারার বামপন্থী নেত্রী। বর্তমানে নিষ্ক্রিয় ফিলিস্তিনি আইন পরিষদের (পিএলসি) এমপি তিনি।

জানা যায় খালিদা জারারের দুই মেয়ে রয়েছে। স্বাস্থ্যগত জটিলতার কারণে রামাল্লায় গত জুলাইয়ে তাদের একজনের মৃত্যু হয়। মেয়ের জানাজায় মায়ের অংশ নেওয়ার জন্য ওই সময় খালিদা জারাকে মুক্তি দিতে ইসরায়েলকে আহ্বান জানিয়ে গণদাবি তোলা হয়েছিলো। কিন্তু এরপরও তারা ফিলিস্তিনি এমপি খালিদাকে মুক্তি দেয়নি।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর প্রথম রামাল্লায় মেয়ে সুহার কবর জিয়ারত করার কথা রয়েছে খালিদার। সেখান থেকে বের হয়ে রামাল্লায় তার কারামুক্তি উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বলে জানা গেছে।

২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর নিজ বাসভবনে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন জারার। এর আট মাস পর অবশ্য তিনি মুক্তি পান। কিন্তু কোনো বিচার কিংবা অভিযোগ ছাড়াই প্রশাসনিক বন্দি নীতির আওতায় ২০ মাসের জন্য আবারো বন্দি হন। চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত প্রশাসনিক বন্দি হিসেবে তিনি কারাভোগ করেছেন।

আন্তর্জাতিক

ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ ও ওড়িশার মাঝামাঝি এলাকা দিয়ে উপকূল অতিক্রম করে স্থলভাগে তাণ্ডব চালাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় গুলাব।

আন্তর্জাতিক

শেষ হয়েছে ইউরোপের সবচেয়ে বড় অর্থনীতি জার্মানির জাতীয় নির্বাচনে ভোট গ্রহণ। সাম্প্রতিক ইতিহাসে এমন নির্বাচন দেখেনি দেশটির। এর মূল কারণ বিজয়ী হয়ে কে সরকার গঠন করছে তা নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না। তবে সবশেষ প্রকাশিত সাময়িক ফলে দেখা যাচ্ছে সামাজিক গণতন্ত্রী দল এসপিডি বিদায়ী চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সিডিইউ/সিএসইউ দলের চেয়ে এক শতাংশ ভোটে এগিয়ে আছে।

প্রকাশিত ফলে দেখা যায়, এসপিডি পেয়েছে ২৫ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট। সিডিইউ/সিএসইউ পেয়েছে ২৪ দশমিক ৫ শতাংশ। গ্রিন পার্টি পেয়েছে ১৩ দশিমিক ৮ শতাংশ, মুক্ত গণতন্ত্রী এফডিপি ১১ দশমিক ৭ শতাংশ, অভিবাসনবিরোধী এএফডি ১০ শতাংশ, বাম দল ৫ শতাংশ ও অন্যান্য কিছু দল ৮ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট পেয়েছে।

এর আগে বুথ ফেরত জরিপে বলা হয়, সিডিইউ/সিএসইউ ও এসপিডি সমান সংখ্যক জনসমর্থন পেতে যাচ্ছে। সিডিইউ/সিএসইউ ২৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে। নির্বাচনে তাদের বড় প্রতিদ্বন্দ্বী মধ্য-বাম সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট (এসপিডি) দলটিও পাচ্ছে ২৫ শতাংশ ভোট। এর ফলে এই দুই দলের যে কোনও একটি সরকার গঠন করতে পারে।

সাময়িক ফল প্রকাশের পর এসপিডির চ্যান্সেলর প্রার্থী ওলাফ শলৎস বলেছেন, ভোটাররা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে তারা তারে ‘পরবর্তী চ্যান্সেলর’ হিসেবে চান।