আন্তর্জাতিক

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে ‘অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচিত দেশগুলো ছাড়া বিশেষ শর্তে আন্তর্জাতিক রুটে বাণিজ্যিক ফ্লাইট চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার থেকেই এসব ফ্লাইট চলাচল শুরু হবে বলে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) দেওয়া প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

অতি ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর সঙ্গে সাময়িক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এবং ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো থেকে আসা যাত্রীদের ১৪ দিনের ‘প্রতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন’ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে উল্লেখ করে ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বর্তমানে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার বিবেচনায় ৩৮টি দেশে গমনাগমনের ওপর বিশেষ শর্ত আরোপ করে ফ্লাইট চলাচল পুনরায় চালু করা হয়েছে। তবে, ভারতের সঙ্গে এয়ার বাবল চুক্তির আওতায় চলাচলকারী ফ্লাইটগুলো স্থগিত রাখা হয়েছে।

সেখানে আরও বলা হয়েছে, তালিকা বহির্ভূত দেশগুলো থেকে আসা যাত্রীদেরকে পিসিআর নেগেটিভ সনদ আনা সাপেক্ষে ১৪ দিন ‘হোম কোয়ারেন্টিন’ কঠোরভাবে পালনের জন্য বলা হয়েছে। তবে, ব্যতিক্রম হিসেবে কাতার, বাহরাইন ও কুয়েত—মধ্যপ্রাচ্যের এই তিনটি দেশ ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় থাকা সত্ত্বেও সেখান থেকে আসা যাত্রীরা বর্তমানে চলমান তিন দিনের প্রতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করবেন। পরবর্তীতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে বাকি ১১ দিন হোম কোয়ারেন্টিন অথবা আইসোলেশন থাকার জন্যে বিবেচিত হবেন।

এই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আটকে পড়া অভিবাসী যাত্রীরা নিজ নিজ গন্তব্য বা কর্মস্থলে যাওয়ার সুযোগ পাবেন বলে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) দেওয়া প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি জানানো হয়।

আন্তর্জাতিক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ভারতের সঙ্গে ক্রমশ সম্পর্কের ভিত মজবুত হচ্ছে জো বাইডেনের। বর্তমান করোনা পরিস্থিতি থেকে শুরু করে ক্ষমতায় আসার মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই একাধিক ইস্যুতে ভারতের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।

সম্প্রতি মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে বক্তৃতা দিতে গিয়েও সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে চলার বার্তাও দেন বাইডেন।

এবার ভারতের হাতে অত্যাধুনিক মানের ৬টি পি-এইট এল প্যাট্রোল এয়ারক্রাফট তুলে দেওয়ার কথা ঘোষণা দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।

শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) এই বিষয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা কর্পোরেশন এজেন্সির তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়, ভারতের সুরক্ষা, শান্তি এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত নজরদারির জন্য তাদের হাতে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান খুব দ্রুত তুলে দেওয়া হবে।

এই যুদ্ধ বিমানগুলি ভারতের হাতে চলে এলে দেশটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার হবে। এছাড়াও এই প্রস্তাবের অন্যতম আরও একটি উদ্দেশ্য হলো ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি বজায় রাখা।

এর আগে গত ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে ভারতীয় নৌ-বাহিনী মোট আটটি পি-এইটএল এয়ারক্রাফট কিনেছিল। যদিও ২০১৩ সালে ভারতীয় বিমান বাহিনীর হাতে প্রথম এই এয়ারক্রাফট আসে।

এই বিষয়ে মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরও জানা গেছে, এই ৬টি যুদ্ধবিমান ভারতের হাতে গেলে ভারতের সামরিক শক্তি আরও বাড়বে। শুধু তাই নয়, এই নজরদারি বিমান দিয়ে আগামী ত্রিশ বছর ভারতীয় সেনাও এগুলোর সবই ব্যবহার করতে পারবে।

অন্যদিকে, করোনা মোকাবিলায় ভারতের পাশে রয়েছে আমেরিকা। গত বুধবার রাতেই হোয়াইট হাউসের তরফে ১০০ কোটিরও বেশি মূল্যের করোনার ত্রাণ সামগ্রী ভারতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।

প্রসঙ্গত, করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেন। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের সঙ্গে লড়তে ভারতকে ভ্রাতৃত্বের বার্তা দেন তিনি।

মঙ্গলবার ফের এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, যা প্রয়োজন তার সবই পাঠাবে আমেরিকা। রেমডেসিভির ও অন্যান্য ওষুধ যেগুলো এই ভাইরাসের সঙ্গে লড়তে পারে সেগুলোও পাঠানো হবে। আমরা সেসব মেকানিক্যাল জিনিসও পাঠাচ্ছি যেগুলো ভ্যাকসিন তৈরির জন্য প্রয়োজনীয়।

আন্তর্জাতিক

পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতা ধরে রাখতে সফল হতে যাচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী ও বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপ্যাধায়। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির বুথ ফেরত জরিপে বলা হয়েছে রাজ্য বিধানসভার ২৯৪ আসনের মধ্যে ১৫৬টিতে জিতবে তৃণমূল। বিজেপি এবার না জিতলেও ১২১ আসন পেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে যাবে বলেও জানিয়েছে গণমাধ্যমটি।

বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এসব খবর দিয়েছে এনডিটিভি। বলা হয়েছে, ছয়টি এক্সিট পোলের সমন্বয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অর্ধেকের বেশি আসনে জিতবেন যা টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় বসার জন্য যথেষ্ট। পি মার্কসের বুথফেরত জরিপের ফলে দেখা গেছে, তৃণমূল পেতে পারে ১৫২ থেকে ১৭২ আসন। বিজেপি পেতে পারে ১১২ থেকে ১৩২ আসন। জোটে পেতে পারে ১০ থেকে ২০ আসন। সিএনএন নিউজ ১৮-এর প্রকাশিত জরিপে দেখা গেছে, রাজ্যে ক্ষমতায় আসতে চলেছে তৃণমূল, দলটি পেতে পারে ১৬২ আসন। বিজেপি পেতে পারে ১১৫ আসন।

আন্তর্জাতিক

জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর বাংলাদেশ অন্যতম। বাংলাদেশের বায়ুমণ্ডলে মিথেন গ্যাসের রহস্যময় ধোঁয়া শনাক্ত করেছে একাধিক আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা। মিথেন গ্যাসের অন্যতম প্রধান হটস্পট হয়ে উঠেছে রাজধানীর মাতুয়াইল স্যানিটারি ল্যান্ডফিল।

সেখান থেকে প্রতি ঘণ্টায় চার হাজার কেজি মিথেন নির্গত হচ্ছে বলে বিশ্বখ্যাত ব্লুমবার্গ নিউজে গত ২৫ এপ্রিল একটা খবর প্রকাশিত হয় জিএইচজিস্যাট ইনক-এর বরাত দিয়ে।ব্লুমবার্গ নিউজে উল্লেখ করা হয়, স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার কোনো এক অংশ থেকে পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধিতে সবচেয়ে ক্ষতিকর ভূমিকা রাখা গ্রিনহাউজ গ্যাসগুলোর একটা, মিথেন গ্যাসের একটা বিশাল নিঃসরণ চিহ্নিত করা হয়েছে। অর্থাৎ ঢাকার কোনো এক অংশ থেকে প্রচুর পরিমাণে মিথেন গ্যাস উৎপন্ন হচ্ছে যা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে বাংলাদেশকে এই মুহূর্তে মিথেন গ্যাসের অন্যতম প্রধান কন্ট্রিবিউটর বানিয়ে দিয়েছে।

মিথেন একটি গ্রিনহাউস গ্যাস, বর্ণহীন, গন্ধহীন এই গ্যাসটি কার্বন ডাই অক্সাইডের তুলনায় প্রায় ৮৪ গুণ বেশি মাত্রায় বায়ুমণ্ডলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে। আর এই ভয়াবহ গ্যাস নিঃসরণের হটস্পট হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। বিজ্ঞানী ও সরকারি কর্মকর্তারা তাপমাত্রা বৃদ্ধিকারী গ্যাসগুলোর নিঃসরণরোধে দ্রুত এবং সবচেয়ে সাশ্রয়ী উপায়ের সন্ধান করছেন।

মাতুয়াইল ল্যান্ডফিল থেকেই দেশের আকাশে মিথেন গ্যাস!

মন্ট্রিল-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান জিএইচজিস্যাটের প্রেসিডেন্ট স্টিফেন জার্মেইন জানিয়েছেন, গত ১৭ এপ্রিল তাদের হুগো স্যাটেলাইটে দেখা গেছে বাংলাদেশের মাতুয়াইল স্যানিটারি ল্যান্ডফিল থেকে বিপুল পরিমাণ মিথেন নিঃসরণ হচ্ছে। তাদের ধারণা, এর পরিমাণ হতে পারে ঘণ্টায় প্রায় চার হাজার কেজি। বলা হচ্ছে, প্রতি ঘণ্টায় ১ লাখ ৯০ হাজার গাড়ি যে পরিমাণ বায়ুদূষণ ঘটায়, তার সমান দূষণ ছড়াচ্ছে মাতুয়াইলের বিশাল এই ময়লার ভাগাড় থেকে।

মাতুয়াইল স্যানিটারি ল্যান্ডফিলে প্রতিদিন প্রায় আড়াই হাজার টন বর্জ্য ফেলা হয়

এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিউল্লাহ সিদ্দিক ভুঁইয়া ব্লুমবার্গকে জানান, ১৮১ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত মাতুয়াইল স্যানিটারি ল্যান্ডফিলে প্রতিদিন প্রায় আড়াই হাজার টন বর্জ্য ফেলা হয়। তরল বর্জ্য ও গ্রিনহাউস গ্যাস ব্যবস্থাপনায় এটি জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) অর্থ সাহায্য পেয়েছে। তবে সেখানে ঠিক কী পরিমাণ মিথেন গ্যাস তৈরি হচ্ছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই।

চলতি বছর বিশ্বের মধ্যে মিথেন নিঃসরণের অন্যতম হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে বাংলাদেশ। প্যারিস-ভিত্তিক বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান কায়রস এসএস চলতি মাসের শুরুর দিকে জানিয়েছিল, বিশ্বের শীর্ষ ১২টি মিথেন নিঃসরণের হার শনাক্ত হয়েছে বাংলাদেশের আকাশে।

মিথেন গ্রিনহাউজ গ্যাসগুলোর মধ্যে অন্যতম প্রধান ডেডলিয়েস্ট গ্যাস, যা কি-না গত দুই দশকে কার্বন ডাই অক্সাইড (যেটাকে উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী করা হয়) এর চেয়েও ৮৪ গুণ বেশি ক্ষতি করেছে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের। এই ঘ্রাণহীন বর্ণহীন গ্যাস সূর্যের যে তাপ পৃথিবীতে আসছে, সেটাকে পৃথিবীতেই ধরে রাখতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে, যা পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে বহুগুণে এবং খুব দ্রুত। ফলে বাড়তি তাপমাত্রা সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়িয়ে দিচ্ছে, আমাদের মতো সমুদ্রতীরবর্তী দেশের জন্য যা অনিবার্য অভিশাপ। ক্লাইমেট চেঞ্জের ফলে গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর মাধ্যমে এভাবেই আমাদের সমুদ্রে তলিয়ে যাওয়ার ভয়াবহ ঝুঁকিতে আছে।

আন্তর্জাতিক

গত সোমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন টেলিফোনে কথা বলেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে বলে জানিয়েছেন মোদি।

এক টুইটে ভারতীয় সরকার জানায়, করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি মোকাবেলায় আলোচনা করেছেন দুই নেতা। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভাইরাসটির টিকার কাঁচামাল ও ওষুধ সরবরাহের বিষয়টি তুলে ধরেন মোদি।

সেই ফোনালাপের পর টুইটারে মোদি লিখেছেন, ‘আমেরিকার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। দুদেশের কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ভারতের দিকে আমেরিকা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি’।

এর আগে ভারতের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), জার্মানি, ফ্রান্সসহ বিশ্বের একাধিক দেশ।

আন্তর্জাতিক

সংক্ষিপ্ত সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও স্টেট কাউন্সিলর ওয়েই ফেঙ্গহি। আজ মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) সকাল ১০টা ৪৫ মি‌নি‌টে তিনি ঢাকায় পৌঁছেছেন বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফেঙ্গিকে স্বাগত জানান।

একাধিক কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, সংক্ষিপ্ত সফর শেষে বিকালেই আবার শ্রীলঙ্কার উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যাবেন তিনি। ঢাকা সফরে এসে ওয়েই ফেঙ্গহি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন এবং সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনের অংশ হিসেবে চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ঢাকা সফরে আসছেন বলে কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে। এর আগে, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনের অংশ হিসেবে দক্ষিণ এশিয়ার একাধিক দেশের সমন্বয়ে সমুদ্রে যৌথ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঐ সময় ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ মুকুন্দ নারাভানে বাংলাদেশ সফর করেন।

সূত্র জানায়, চলমান করোনা মোকাবিলায় ভ্যাকসিন ইস্যু, প্রতিরক্ষা খাত ও এই অঞ্চলের ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সফরটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এরই মধ্যে বাংলাদেশ চীনের কাছে ভ্যাকসিন বিষয়ে সহযোগিতা চেয়েছে। আবার দক্ষিণ এশিয়ার ছয় দেশ নিয়ে চীনের উদ্যোগে ভ্যাকসিন সহযোগিতা জোটে বাংলাদেশ থাকবে বলে সম্মতি দিয়েছে। তাই এই সফরে ভ্যাকসিন বিষয়ে কোনো বার্তা থাকতে পারে।

আন্তর্জাতিক

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আমরা বিভিন্ন দেশ থেকে করোনার ভ্যাকসিন আনার চেষ্টা করছি। আমরা শুরুতে ভারত থেকে টিকা এনেছিলাম। কিন্তু ভারতে টিকার স্বল্পতায় তারা এখন টিকা দিতে পারছে না। ফলে রাশিয়া থেকে টিকা আনার চেষ্টা চলছে। তবে দুই সপ্তাহের আগে দেশে টিকা আনা সম্ভব না।

মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) বিকালে করোনা টিকা নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার ছয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ভার্চুয়াল বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, করোনা পরবর্তী দারিদ্র বিমোচনে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনার কথা বলেছে চীন। জরুরি ভিত্তিতে চীনের উদ্যোগে নতুন প্ল্যাটফর্ম ‘ইমার্জেন্সি ভ্যাকসিন স্টোরেজ ফ্যাসিলিটি ফর কোভিড ফর সাউথ এশিয়া’তে যোগ দিচ্ছে বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, যখন কোনো দেশের টিকা প্রয়োজন হবে তখন তারা এই সুবিধা থেকে সাহায্য নিবেন। তাছাড়া তারা তিনটি সুবিধা দিবে। একটি হচ্ছে- পোস্ট কোভিড প্রোভারট্রি অভিযোগ। দ্বিতীয়ত, করোনার কারণে দেশে দেশে যে দারিদ্রতা বাড়ছে তারা সেটা জানতে চাই। আর সমাধান করতে চাই কিভাবে দারিদ্র না বাড়ে।তৃতীয়ত, করোনার কারণে সরাসরি বিক্রয় করতে না পারার কারণে তারা ই-কমার্স চালু করতে চাই।

আন্তর্জাতিক

ভারতে আশঙ্কাজনক হারে সক্রিয় করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ছড়াচ্ছে। ডাবল ও ট্রিবল মিউট্যান্ট ভাইরাসের কথা শোনা যাচ্ছে। এই ভ্যারিয়েন্ট বাংলাদেশে চলে আসার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। যদি ঢুকেই পড়ে তবে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ওটাকে সামাল দিতে প্রস্তুত নয় বলে শঙ্কা তাদের।

ভারতে ব্যাপকভাবে করোনা ছড়িয়ে পড়ায় দেশটির সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ও বৈশ্বিক তথ্য-উপাত্ত মূল্যায়ন করে একদল বিশ্লেষক বলেছেন, করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বা ধরন বাংলাদেশে প্রবেশ করলে পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা আছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে এখনও এই ভ্যারিয়েন্ট রিপোর্ট হয়নি। যেহেতু ভারত একেবারেই কাছের দেশ, তাই দেশে এই ভ্যারিয়েন্ট আসতে বেশি দেরি লাগবে না। আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ যতই বন্ধ থাকুক-তাতে সেখানকার ভাইরাস আসবে না, এই নিশ্চয়তা নেই।

বাংলাদেশে এখনও এই ভ্যারিয়েন্ট রিপোর্টেড হয়েছে বলে জানা যায়নি। কিন্তু যদি চলে আসে তবে সেটা বাংলাদেশের জন্য কী পরিমাণ ঝুঁকির কারণ হবে জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ ‍মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং কোভিড ১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ভারত থেকে যদি চলেই আসে, তবে তা আমাদের জন্য অনেক ঝুঁকির হবে, আর এটা যে আসবেই তা সহজে ধরে নেওয়া যায়। ভারত থেকে আসা যাত্রীদের সর্বোচ্চ কোয়ারেন্টিনের জন্য টেকনিক্যাল কমিটি সুপারিশ করেছে। কিন্তু আমরা সেটাও করতে ব্যর্থ হয়েছি।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)-এর উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ভারতের এই ভাইরাস আমাদের দেশে ছড়ানোর সমূহ আশঙ্কা আছে। ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ একদম বন্ধ করা সম্ভব নয় বিভিন্ন কারণে। আর এ কারণে এই ভ্যারিয়েন্ট আসতে পারে।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. রিদওয়ানুর রহমান বলেন, বন্দরগুলোতে অ্যান্টিজেন টেস্ট চালু করা উচিত। এতে ২০ মিনিটের মধ্যে ফল জানা যাবে। কোয়ারেন্টিনও সেরা উপায়। কিন্তু যদি সেটা সম্ভব না হয়, তবে পরীক্ষা করিয়ে দেশে ঢোকাতে হবে। এতে অন্তত ৯০ শতাংশ শনাক্ত করা যাবে।

আন্তর্জাতিক

সুদানের দক্ষিণ দারফুরের আল জেনিনা শহরে এক গোত্রগত সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ১৮ জন। এতে আহত হয়েছেন অন্তত আরও ৫৪ জন। সোমবার (৫ এপ্রিল) এ খবর জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। এ বছরের শুরুর দিকেও এ শহরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সংঘর্ষ হয়েছে মাসালিট এবং আরব গোত্রের মধ্যে। গত শনিবার প্রথম এর সূচনা হয়। তা রবিবারেও চলে এবং সোমবারে তা পুরো শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বলা হয়েছে, দারফুরের ডক্টরস কমিটি এক বিবৃতিতে এসব জানিয়েছে।

আরও বলা হয়, শহরের কিছু নাগরিক এবং জাতিসংঘের একটি অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বুলেটিনে দেখা গেছে, সংঘর্ষে ভারি অস্ত্র এবং রকেট-প্রপেল্ড গ্রেনেড ব্যবহার করা হচ্ছে। কিছু ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, শহরজুড়ে ধোঁয়া উড়ছে।

গত জানুয়ারিতেও এমন এক সংঘর্ষে আল জেনিনাতেই ১২৯ জন মারা গেছেন। গত বছরের অক্টোবরে কয়েকটি বিদ্রোহী দলের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে সুদানের সরকার। এরপর এ বছরের শুরুতে দেশটি থেকেব জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের প্রত্যাহার করা শুরু হয়।

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ সফর করেন বিশ্বের বেশ কয়েকজন সরকার প্রধান। ১০ দিনের অনুষ্ঠানের শেষ দিন আসেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বাংলাদেশে এতো সুন্দর আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানালেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দেওয়া এক পত্রে নরেন্দ্র মোদি বলেন, সফরকালে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার আলোচনা ও মতবিনিময়ে তিনি আনন্দিত। অত্যন্ত আকর্ষণীয়ভাবে গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে অভিনন্দন জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

গত ২৬ মার্চ সকালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীর আয়োজনে অংশ নিতে দুদিনের সফরে ঢাকায় আসেন নরেন্দ্র মোদি। হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মোদিকে অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ঢাকা পৌঁছানোর পর সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে স্বাধীনতার বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী। পরে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে দেওয়া ভাষণে নরেন্দ্র মোদি বলেন, বাংলাদেশ ইতিহাসে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকবে। এমন কোনো শক্তি নাই বাংলাদেশকে দাবিয়ে রাখতে পারে।

এরপর ২৭ মার্চ সকালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যান তিনি। সেদিন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুর গ্রামের যশোরেশ্বরী কালীমন্দিরে পূজা-প্রার্থনা করেন নরেন্দ্র মোদি।

পরে বিকেল সাড়ে ৫টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। বৈঠকে দুই প্রধানমন্ত্রী নিজ নিজ দেশের প্রতিনিধিদলের সদস্যদের নিয়ে আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসেন। পরে যৌথভাবে দুই সরকারপ্রধান ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন ঢাকা-নিউ জলপাইগুড়ি যাত্রীবাহী রেল চলাচলসহ বেশ কয়েকটি প্রকল্পের।

সফর শেষে ২৭ মার্চ রাতেই একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকা ত্যাগ করেন নরেন্দ্র মোদি।