খেলাধুলা

অবশেষে ২০২২ বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টিনা দলকে বাংলাদেশে আনার স্বপ্ন বাস্তবে রূপ পেতে যাচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী জুনেই ঢাকায় আসবেন মেসি-দি মারিয়ারা।

আজ মঙ্গলবার বাফুফে সুত্রে এমনটাই জানা গেছে। তবে আগামীকাল বাফুফের ডাকা সংবাদ সম্মেলনে আসতে পারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা।

বাফুফে সূত্র জানিয়েছে, জুনের ফিফা উইন্ডোতে ঢাকায় আসতে রাজি হয়েছে আর্জেন্টিনা। এখন দুই পক্ষের মধ্যে কিছু টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন নিয়ে আলোচনা চলছে।

জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেই হবে ম্যাচটি। তবে দেশের একমাত্র আন্তর্জাতিকমানের ফুটবল স্টেডিয়ামটির সংস্কারকাজ চলছে। এজন্য বাফুফের পক্ষ থেকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে জরুরি ভিত্তিতে কাজ শেষ করার জন্য চিঠিও দেওয়া হয়েছে।

ঢাকায় আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ কারা হবে তা নিয়েও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বাফুফে। কয়েকটি দেশের নাম প্রস্তাব করবে আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ)। সেখান থেকে বাছাই করে যেকোনো একটি দেশকে প্রতিপক্ষ হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হবে।

খেলাধুলা

নারী অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের প্রথম আসরে দুর্দান্ত শুরু করলো বাংলাদেশ। আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে তারা।

দক্ষিণ আফ্রিকার বেনোনিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ১৩০ রান করে অস্ট্রেলিয়া। সেই লক্ষ্য ১৩ বল হাতে রেখেই পাড়ি দেয় বাংলাদেশের মেয়েরা।

পুরুষদের মতো নারীদের ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার দাপটের সঙ্গে পরিচিত নন এমন লোক খুব কমই আছেন। ওয়ানডেতে ৭ বার ও টি-টোয়েন্টিতে ৫ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারা। কিন্তু অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি দলটির উঠতি ক্রিকেটার। ব্যাটিং-বোলিং কোনোটিতেই পাত্তা পায়নি বাংলাদেশের কাছে। প্রস্তুতি ম্যাচে শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারতকে হারানোর পর বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস ছিল তুঙ্গে। তা সঙ্গে করেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নেমেছিল দিশা বিশ্বাসের দল।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় অস্ট্রেলিয়া। ২২ রানের ভেতর তাদের উদ্বোধনী জুটিকে সাজঘরে পাঠান বাংলাদেশের অধিনায়ক দিশা। কিন্তু তৃতীয় উইকেট জুটিতে ক্লের মুর ও এলা হেওয়ার্ড মিলে ৭৬ রানের জুটি গড়লে সেই চাপ অনেকটাই সামাল দিয়ে উঠে। মুরকে ৫২ রানে ফিরিয়ে সেই জুটি ভাঙেন রাবেয়া আক্তার। ১৮ তম ওভারে হেওয়ার্ড ( ৩৫) ও লুসি হ্যামিল্টনের উইকেট শিকার করে ম্যাচের নাটাই আবারও বাংলাদেশের হাতে রাখেন মারুফা আক্তার। কিন্তু শেষ দিকে অ্যামি স্মিথের ১৬ রান ও রাই মেকেনার ১২ রানের ক্যামিও ইনিংসে ৫ উইকেটে ১৩০ রানের সংগ্রহ পায় অস্ট্রেলিয়া।

জবাব দিতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই মিষ্টি সাহার উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তবে দিলারা আক্তারকে সঙ্গে নিয়ে সেই ধাক্কা সামাল দেন আফলা প্রত্যাশা। ৬৬ রানের জুটি গড়েন দুজনে। ১১ তম ওভারের ভেতর প্রত্যাশা ও দিলারা ফিরে গেলে আবারও চাপে পড়ে লাল সবুজ জার্সিধারীরা। প্রত্যাশা ২২ বলে ২ চার ও ২ ছক্কায় ২৪ রান এবং ৪২ বলে ৭ চারে ৪০ রানে আউট হন দিলারা। তীরে এসে তরী ডুবার ইতিহাস বাংলাদেশ ক্রিকেটে অহরহ। রিকোয়ার্ড রানরেট খুব বেশি না হলেও তা হাতের নাগালে ছিল না। তাই হারের শঙ্কা তো ছিল।

কিন্তু সুমাইয়া আক্তারের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের কাছে তা নিমিষেই হাওয়ায় মিলে যায়। স্বর্ণাকে সঙ্গে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৬১ রানের জুটি গড়েন ডানহাতি এই ব্যাটার। ২৭ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় ৪১ রানের হার না মানা এক ইনিংস খেলেন তিনি। অপরপ্রান্তে ১৫ বলে ১ চারে ১৩ রানে অপরাজিত ছিলেন স্বর্ণা। তার ব্যাট থেকে এসেছে জয়সূচক রানটি। রাইস ম্যাকেনার অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করা বলটিকে কাট করে দৌড়ে দুই রান নেন স্বর্ণা আক্তার। সঙ্গে সঙ্গে জয়োল্লাসে মাতে যুবা টাইগ্রেসরা।

এই জয়ে শেষ আটে ওঠার পথটা এগিয়ে রাখল বাংলাদেশ। আগামী পরশু নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কা অনূর্ধ্ব-১৯ দলের মুখোমুখি হবে তারা। গ্রুপে তাদের অপর প্রতিপক্ষ যুক্তরাষ্ট্র অনূর্ধ্ব-১৯ দল।

খেলাধুলা

পরাজয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) নবম আসর শুরু হয় বরিশালের। সিলেটের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ১৯৪/৭ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়েও জয় পায়নি বরিশাল।

পরাজয়ে বিপিএল শুরু করে ব্যকফুটে চলে যাওয়া সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বাধীন দলটি এরপর টানা তিন ম্যাচে জয় পায়।

নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে রংপুর রাইডার্স, তৃতীয় ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স আর চতুর্থ ম্যাচে শনিবার বরিশাল হারায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে।

টানা তিন ম্যাচে জয় ছিনিয়ে নিয়ে চার খেলায় ৬ পয়েন্ট নিয়ে সাত দলের মধ্যে বরিশালের অবস্থান দ্বিতীয়। সমান ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে মাশরাফি বিন মুর্তজার নেতৃত্বাধীন সিলেট সিক্সার্স।

তবে বরিশালের বিপক্ষে হারের মধ্য দিয়ে হ্যাটট্রিক পরাজয় দেখল বিপিএলের গত আসরের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা।

শনিবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে বরিশালকে প্রথমে ব্যাটিংয়ে পাঠায় কুমিল্লা। আগে ব্যাট করে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭৭ রান করে বরিশাল। দলের হয়ে ৪৫ বলে ৮ চার আর ৪টি ছক্কার সাহায্যে দলীয় সর্বোচ্চ ৮১ রান করেন অধিনায়ক সাকিব। এছাড়া ২৭, ২১ ও ২০ রান করে করেন ইবরাহিম জাদরান, চাতুরঙ্গ ডি সিলভা ও এনামুল হক বিজয়।

টার্গেট তাড়া করতে নেমে বরিশালের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে পেরে ওঠেনি কুমিল্লা। দলের হয়ে ২৭ বলে সর্বোচ্চ ৪৩ রান করে অপরাজিত থাকেন পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান খুশদিল শাহ। ১৫ বলে ২৮ রান করেন অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। ১৯ বলে ২৭ রান করেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।

খেলাধুলা

২০১৪ সালে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশের যুবারা। এরপর ৮ বছর কেটে গেলেও লাল সবুজের প্রতিনিধিদের শিরোপার স্বাদ পাওয়া হয়নি। অবশেষে সেই কাঙ্ক্ষিত শিরোপা জিতে নিয়েছে কোচ মামুনুর রশীদের দল। স্বাগতিক ওমানকে পরাজিত করে এএইচএফ অনুর্ধ-২১ হকি কাপের শিরোপা জিতল হাসান-জীবনরা।

বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) মাসকটে শিরোপা নির্ধারণী ফাইনালে নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ গোলে সমতায় থাকায় ফল গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে শুরুতে পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত ৭-৬ ব্যবধানে জয়ে শিরোপা নিজেদের করে নেয় বাংলাদেশ।
এদিন ম্যাচ শুরুর প্রথম মিনিটেই এক গোলে পিছিয়ে পড়ে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। কিন্তু পিছিয়ে পড়লেও সমতায় ফিরতে চেষ্টার কমতি রাখেনি বাংলাদেশের যুবারা। কিন্তু তৃতীয় কোয়ার্টার পর্যন্ত আর কোনো গোল না হলে স্বাগতিকরা শিরোপা জয়ের পথেই এগিয়ে ছিল।

তবে শেষ কোয়ার্টারে ৫২তম মিনিটে হাসান মোহাম্মদ দুর্দান্ত এক গোল করলে ৮ বছর পর আবারও শিরোপা জয়ের আশা বেঁচে থাকে বাংলাদেশের। এরপর আর গোল না হলে শিরোপা নির্ধারণ গড়ায় টাইব্রেকারে।

সেখানেও প্রথম শটে গোল করতে হয় বাংলাদেশ। তবে শেষ পর্যন্ত ৭-৬ গোলের ব্যবধানে জিতে ওমানে যাওয়ার আগে শিরোপা উদ্ধারের প্রতিশ্রুতি পূরণ করল বাংলাদেশ যুব হকি দল।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে এই টুর্নামেন্টে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। সেবার ঘরের মাটিতে আয়োজিত টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ ৫ ম্যাচ খেলে কোনো গোল হজম না করার বিপরীতে ৩৫টি গোল করেছিল।

খেলাধুলা

রবিউল রঙ ছড়ালেন জহুর আহমেদে। খুলনা টাইগার্স অলআউট হলো অল্প রানে।

ব্যাটিংয়ে নেমে অবশ্য রঙ হারিয়ে বিবর্ণ হতে থাকলো রংপুরের সবকিছু। দেখা দিলো হারের শঙ্কাও। ঠাণ্ডা মাথায় এক পাশে দাঁড়িয়ে থাকলেন অভিজ্ঞ শোয়েব মালিক। শেষদিকে শামীম পাটোয়ারীও তুললেন ঝড়। রংপুর রাইডার্স পেল জয়ের দেখা।
শুক্রবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বিপিএলের ম্যাচে খুলনা টাইগার্সকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে রংপুর রাইডার্স। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ১৩০ রানে অলআউট হয়ে যায় খুলনা। জবাব দিতে নেমে ৩ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় রংপুর।

টস হেরে ব্যাট করতে নামার পর থেকেই খুলনাকে বড় রান সংগ্রহের সুযোগ দেয়নি রংপুর। দ্বিতীয় ওভারেই প্রথম উইকেট এনে দেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। ৪ বলে ১ রান করা তামিম ইকবালকে কট এন্ড বোল্ড করেন তিনি। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে শারজিল খানকেও সাজঘরের পথ দেখান এই আফগান পেসার। এর আগের ওভারে হাবিবুর রহমানকে বোল্ড করেন রাকিবুল হাসান। পাওয়ার প্লের ভেতরই ১৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে খুলনা।

আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান আজম খানকে সঙ্গে নিয়ে সেই চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন ইয়াসির আলী। চতুর্থ উইকেটে ৫৮ রানের জুটি গড়েন তারা। কিন্তু হাত খুলে খেলতে গিয়ে রবিউলের বলে নাঈম শেখকে ক্যাচ দেন ইয়াসির, আউট হন ২২ বলে ২৫ রানে। একই ওভারে সাব্বির রহমানকে ফিরিয়ে রংপুরকে দারুণভাবে ম্যাচে ফেরান রবিউল।

তার সঙ্গে তাল মেলান রাকিবুলও। ভয়ঙ্কর হওয়ার আগেই আজম খানকে তুলে নেন এই স্পিনার। ২৩ বলে ৪ চার ও ১ ছয়ে ৩৪ রানে আজম বিদায় নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই খুলনার মজবুত সংগ্রহের সম্ভাবনাটাও ফিকে হয়ে যায়। রবিউল এরপর তুলে নেন আমাদ ভাট ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের উইকেটও। দুটি করে উইকেট নেন ওমরজাই ও হাসান মাহমুদ। ফলে ২০তম ওভার শেষ হওয়ার দুই বল আগেই গুটিয়ে যায় খুলনা।

জবাব দিতে নামার পর শুরুটা ভালো হয়নি রংপুর রাইডার্সেরও। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে রনি তালুকদার প্রথম ব্যাটার হিসেবে যখন সাজঘরে ফেরত যান, তখন স্কোরকার্ডে কেবল ১ রান। একাদশে সুযোগ পাওয়া সায়েম আইয়ুবীও সফল হননি ব্যাট হাতে। ইনিংস উদ্বোধনে নেমে ২ চারে ৯ বলে ১০ রান করে আউট হন ওয়াহাব রিয়াজের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে।

তার বিদায়ের আগেই আউট হন ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পাওয়া মেহেদী হাসান। ১২ বলে ১৪ রান করেন তিনি। ৩১ রানে তিন উইকেট হারিয়ে ফেলে রংপুর। এরপর দলের হাল ধরেন অভিজ্ঞ শোয়েব মালিক। তবুও দলের ভয় যেন দূর হচ্ছিলো না ঠিকঠাক। ম্যাচ কঠিন হচ্ছিলো ক্রমেই।

শেষ ১৮ বলে দরকার ছিল ৩৫ রান। এমন সময়ই এগিয়ে আসেন শামীম পাটোয়ারী। আমাদ ভাটের করা ১৮তম ওভারের শেষ তিন বলে হাঁকান হ্যাটট্রিক বাউন্ডারি। এরপর ২ ছক্কা ও ৩ চারে ৩৬ বলে ৪৪ রান করে শোয়েব সাজঘরে ফিরলেও জিততে অসুবিধা হয়নি রংপুরের। ৩ চারে ১০ বলে ১৬ রান করে অপরাজিত থাকেন শামীম।

খেলাধুলা

ইফতিখার আহমেদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে জয় দিয়ে চট্টগ্রাম পর্ব শুরু করল সাকিব আল হাসানের দল।

তাজা ঘাসের ছোঁয়ায় সবুজাভ উইকেট। তবে সেই সবুজে বোলারদের প্রণোদনা নেই, বরং লুকিয়ে রইল ব্যাটসম্যানদে জন্য প্রেরণা। বাউন্স সমান, বল সুন্দরভাবে এলো ব্যাটে। তাতে রান উৎসবে মেতে উঠলেন ব্যাটসম্যানরা। টপ অর্ডারের কার্যকর ব্যাটিংয়ের পর ইফতিখার আহমেদের ঝড়ো ফিফটিতে বরিশাল তুলল এবারের আসরের সর্বোচ্চ রান। রান তাড়ায় শুরুর আর শেষে ঝড় তুললেও পেরে উঠল না চট্টগ্রাম।

বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম ম্যাচে হেরে গেল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। ২৬ রানের জয়ে ফরচুন বরিশাল পেল টানা দ্বিতীয় জয়।

জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে শুক্রবার ব্যাটসম্যানদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ২০২ রানের সংগ্রহ পায় বরিশাল। ঢাকা পর্বের শেষ ম্যাচে ২০১ রান করেছিল সিলেট স্ট্রাইকার্স। পরের ম্যাচেই তাদের টপকে গেল বরিশাল।

 রান তাড়ায় চট্টগ্রাম যেতে পারে ১৭৫ রান পর্যন্ত।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পাওয়ার প্লেতে ২ উইকেট হারিয়ে ৫৯ রান করে বরিশাল। আগের ম্যাচে চারে নেমে দুর্দান্ত ব্যাট করা মেহেদী হাসান মিরাজকে এ দিন নামানো হয় ওপেনিংয়ে। তার ঝড়েই শুরু হয় ম্যাচ।

আবু জায়েদ চৌধুরির প্রথম ওভারে পরপর তিন চার মারেন মেহেদী হাসান মিরাজ। মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরির পরের ওভারে প্রথম বাউন্ডারি মারেন আরেক ওপেনার এনামুল হক।

তৃতীয় ওভারেই আনা হয় স্পিন। বাঁহাতি তাইজুল ইসলামকে লং অন দিয়ে ছক্কায় ভাসান মিরাজ। তবে ইনিংস লম্বা করতে পারেননি ব্যাটসম্যান। তাইজুলের ওই ওভারের শেষ বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে বল আকাশে তুলে আউট হন মিরাজ। ৩ চার ও ১ ছয়ে ১২ বলে করেন ২৪ রান।

মৃত্যুঞ্জয়ের পরের ওভারে পরপর দুই বলে দৃষ্টিনন্দন কভার ড্রাইভে চার মারেন সাকিব। পরের বলে দারুণ এক কাটারে তাকে বোল্ড করে শোধ তোলেন মৃত্যুঞ্জয়।

আরেক ওপেনার এনামুলকে ফেরান লঙ্কান লেগ স্পিনার ভিজয়াকান্থ ভিয়াসকান্থ। লং অফে লাফিয়ে যে ক্যাচটি নিলেন জিয়াউর রহমান, এবারের আসরের সেরা ক্যাচগুলির একটি তা নিশ্চিতভাবেই।

৫ চারে ২১ বলে ৩০ রান করেন এনামুল। পরের বলে এলবিডব্লিউর জোরাল আবেদন থেকে বেঁচে যান মাহমুদউল্লাহ।

টপ অর্ডারের তিন উইকেট পড়ে গেলেও বরিশালের রানের গতি কমেনি। চতুর্থ উইকেটে ইব্রাহিম জাদরানের সঙ্গে ৫.১ ওভারে ৪৯ রানের জুটি গড়েন মাহমুদউল্লাহ।

ভিজয়াকান্থের দুই ওভারে দুটি ছক্কা মেরে বড় কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন দেশের অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। কিন্তু ২৫ রান করে জিয়াউরেরে বলে সুইপার কভারে ধরা পড়ে যান তাইজুলের হাতে।

আফগান ব্যাটসম্যান ইব্রাহিম টানা ফিফটির সম্ভাবনা জাগালেও আউট হয়ে যান ২ রান আগে। তার ৩৩ বলের ইনিংসে ছিল ৪ চারের সঙ্গে ৩টি ছয়।

ইনিংসের বাকি গল্প জুড়ে শুধুই ইফতিখার। প্রথম ১৩ বলে স্রেফ ১০ রান করা ব্যাটসম্যান পরের ১৩ বলে করেন ৪৭ রান। পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানের টর্নেডো ব্যাটিংয়ে শেষ ৩ ওভার থেকে ৫১ রান পায় চট্টগ্রাম।

আবু জায়েদের করা ১৯তম ওভারে পরপর তিন বলে তিন ছক্কা মারেন ইফতিখার। মৃত্যুঞ্জয়ের করা শেষ ওভারের পঞ্চম বলে বাউন্ডারিতে স্রেফ ২৫ বলে ফিফটি পূরণ করেন তিনি। শেষ বলে ছক্কা মেরে দলকে পার করান দুইশ।

রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা বেশ ভালো করেন চট্টগ্রামের ওপেনার উসমান খান। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরি থেকে পাওয়া আত্মবিশ্বাস স্পষ্ট ছিল পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানের ব্যাটিংয়ে। তার ঝড়ে ৪ ওভারে ৪০ রান তোলে চট্টগ্রাম।

পঞ্চম ওভারে কামরুল ইসলামের বলে ক্যাচ আউট হয়ে ফেরেন উসমান। ৩টি করে চার-ছয়ে ১৯ বলে তার রান ৩৬।

আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের সেই ধারার সঙ্গে তাল মেলাতে পারেননি চট্টগ্রামের টপ অর্ডারের অন্যরা। ম্যাক্স ও’ডাউড ২৯ বলে করেন ২৯ রান। উন্মুক্ত চাঁদ ১৯ রান করতে খেলেন ২১ বল। আফিফ হোসেন ২১ বলে ২৮ রান করলেও পরিস্থিতির দাবি ছিল আরও দ্রুত রান তোলা। রান-বলের সমীকরণে তাই ক্রমে জয় থেকে দূরে সরতে থাকে চট্টগ্রাম।

শেষ ৬ ওভারে তাদের প্রয়োজন পড়ে ১০৭ রানের। জিয়াউর রহমান এরপর পুরনো দিনে ফিরে গিয়ে ম্যাচে প্রাণ ফেরান কিছুটা। নিজের সেরা সময়ে যেসব বড় শট খেলতেন তিনি, সেসবের কিছু ঝলক দেখান অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার।

৩ চার ও ৪ ছয়ে ২৫ বলে তার ৪৭ রানের ইনিংস দর্শকদের বিনোদনের খোরাক জোগায় কিছুটা। তবে জয়ের সম্ভাবনা সেভাবে জাগাতে পারেনি, স্রেফ তাদের পরাজয়ের ব্যবধান কিছুটা কমায়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: 

ফরচুন বরিশাল: ২০ ওভারে ২০২/৭ (এনামুল ৩০, মিরাজ ২৪, সাকিব ৮, ইব্রাহিম ৪৮, মাহমুদউল্লাহ ২৫, ইফতিখার ৫৭*, করিম ৬, চতুরাঙ্গা ০, কামরুল ২*; আবু জায়েদ ৪-০-৪৯-৩, মৃত্যুঞ্জয় ৪-০-৫৩-১, তাইজুল ৪-০-৩৭-১, ভিজয়কান্থ ৪-০-২৯-১, জিয়াউর ৪-০-৩৩-১)

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ২০ ওভারে ১৭৬/৪ (উসমান ৩৬, ও’ডাউড ২৯, চাঁদ ১৬, আফিফ ২৮, জিয়াউর ৪৭*, শুভাগত ১০*; সাকিব ৪-০-২৭-১, চতুরাঙ্গা ৪-০-২৬-০, খালেদ ২-০-৩২-০, কামরুল ১-০-৮-১, সানজামুল ২-০-১৭-০, , মিরাজ  ৩-০-২০-০, করিম ৪-০-৪৫-১)

ফল: ফরচুন বরিশাল ২৬ রানে জয়ী

খেলাধুলা

অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের কার্যকর অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে খুলনা টাইগার্সকে হারিয়ে বিপিএল শুরু করল ঢাকা ডমিনেটর্স।

নাসির হোসেন ফিরলেন ফেরার মতো করেই! বিপিএলের গত আসরে কেউ দলে নেয়নি তাকে। এবার শুধু দলই পাননি, তার ওপর নেতৃত্বের ভারও সঁপে দেয় ঢাকা ডমিনেটর্স। নতুন দলের হয়ে নতুন মৌসুমের শুরুতেই নায়ক অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার। এমন চোখধাঁধানো কোনো পারফরম্যান্স অবশ্য করেননি। তবে ব্যাটে-বলে যা করলেন, দলের জয়ে সেটুকুই হয়ে থাকল গুরুত্বপূর্ণ।

বিপিএলের দ্বিতীয় দিনের প্রথম ম্যাচে খুলনা টাইগার্সকে ৬ উইকেটে হারিয়ে শুরু হলো ঢাকা ডমিনেটর্সের পথচলা।

বল হাতে গুরুত্বপূর্ণ দুটি উইকেটের পর ৩৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে জয়ের ঠিকানায় পৌঁছে দেন নাসির। ২০১৯ সালের পর বিপিএলে প্রথম খেলতে নেমেই তিনি ম্যাচ সেরা।

আগের দিনের মতোই দিনের প্রথম ম্যাচে কঠিন পরীক্ষায় পড়তে হয় ব্যাটসম্যানদের। কন্ডিশন ও উইকেট, সবই ছিল ব্যাটিংয়ের জন্য কঠিন। দুপুর বেলায়ও শের-ই-বাংলায় ছিল যেন সন্ধ্যার আবহ। কুয়াশার দাপটে চারপাশ ছিল ঘোলাটে। আলোকস্বল্পতায় ম্যাচ শুরু হয় আধঘণ্টা দেরিতে। উইকেট যথারীতি মন্থর, শট খেলা কঠিন। এসবের সঙ্গে যোগ হয় খুলনার ব্যাটসম্যানদের আত্মহত্যার মিছিল। সব মিলিয়ে তারা আটকে যায় মোটে ১১৪ রানে।

খুলনার কোনো ব্যাটসম্যান করতে পারেননি ২৫ রানও। কুঁচকির চোটের কারণে ভারতের বিপক্ষে সিরিজে খেলতে না পারা তামিম ইকবাল ফেরার ম্যাচে ১৫ বল খেলে করতে পারেন কেবল ৮ রান।

ঢাকার হয়ে অভিজ্ঞ পেসার আল আমিন হোসেন ৪ উইকেট নেন ২৮ রানে।

রান তাড়ায় খুব সাবলিল ছিল না ঢাকাও। তবে নাসির টিকে থাকায় বড় কোনো বিপাকে পড়তে হয়নি তাদের। জয়ের দেখা পায় তারা শেষ ওভারের প্রথম বলে।

উইকেটের মন্থরতা স্পষ্ট হয়ে যায় ম্যাচের প্রথম ওভার থেকেই। তাসকিন আহমেদের মতো গতিময় পেসারের বলও থমকে আসে ব্যাটে। আরেক প্রান্তে আক্রমণ শুরু করেন ঢাকা অধিনায়ক নাসির হোসেন।

ঢাকার জয়ে অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে উজ্জ্বল নাসির
প্রথম ৩ ওভারে খুলনা উইকেট না হারালেও রান করতে পারে স্রেফ ৭। এর মধ্যে এক দফায় জীবন পান তামিম। নিজের বলে ফলো থ্রুতে নিচু হয়ে তাসকিন ক্যাচ নিতে পারেননি অল্পের জন্য।

পরের ওভারেই নাসিরের ফ্লাইটেড একটি সোজা ডেলিভারি ক্রস ব্যাটে খেলে বোল্ড খুলনার পাকিস্তানি ওপেনার শারজিল খান (১১ বলে ৭)।

মুনিম শাহরিয়ার ক্রিজে গিয়ে প্রথম বলেই মারেন বাউন্ডারি। পরের ওভারে তিনিও আউট বাজে এক শটে। আল আমিনের হোসেনের অনেক বাইরের বলে ব্যাট চালান তিনি একদম জায়গায় দাঁড়িয়ে।

চারে নেমে আজম খান ওই ওভারেই দুটি বাউন্ডারি মেরে ইঙ্গিত দেন প্রতি আক্রমণের। কিন্তু আরেক প্রান্তে বিদায় নেন তামিম। খুলনা উইকেট হারায় টানা তিন ওভারে।

আরাফাত সানির ডেলিভারিটির যদিও প্রাপ্য ছিল চার বা ছক্কা। লেগ স্টাম্পের ওপর শর্ট ডেলিভারি। তামিম সেটিই আলগো করে তুলে দেন স্কয়ার লেগের হাতে। পিচ করে বল একটু থেমে আসতে পারে অবশ্য। তার পরও বাজে শট।

পাওয়ার প্লেতে খুলনার রান ৩ উইকেটে ৩২।

আজম খান ও ইয়াসির আলি চৌধুরি চেষ্টা করেন সাবধানী ব্যাটিংয়ে দলকে এগিয়ে নিতে। কিন্তু এই জুটিও থামে বাজে শটেই। আরাফাত সানির ঝুলিয়ে দেওয়া ডেলিভারিতে শারজিলের মতোই ক্রস ব্যাটে খেলে বোল্ড আজম (১২ বলে ১৮)।

ইয়াসির ও মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনের জুটিতে এরপর উইকেটের পতন ঠেকানো গেলেও রানের গতিও থমকে যায়। বাউন্ডারিবিহীন ৫ ওভারের পর সানির বলে স্লগ সুইপে ছক্কা মারেন সাইফ। ওই শটের আগ পর্যন্ত তার রান ছিল ১৮ বলে ৫।

পরের ওভারে নাসিরের বলে বাউন্ডারি মারেন সাইফ, মাথার ওপর দিয়ে ছক্কায় ওড়ান ইয়াসির। জুটি থেমেও যায় ওই ওভারেই। নাসিরকে মিড উইকেট দিয়ে স্লগ করা চেষ্টা করেন ইয়াসির, ব্যাটের কানায় লেগে ক্যাচ উঠে যায় শর্ট থার্ড ম্যানে। অধিনায়কের ২৫ বলে ২৪ রানই হয়ে থাকে দলের সর্বোচ্চ।

একটু পর সাইফ বিদায় নেন ২৮ বলে ১৯ রান করে। সাতে নেমে তেমন কিছু করতে পারেননি সাব্বির রহমান (১১ বলে ১১*)। শেষ ওভারে টানা দুই বলে চার ও ছক্কায় রান একটু বাড়ান ওয়াহাব রিয়াজ। ওই ওভারেই দুই উইকেট নিয়ে আল আমিন পূর্ণ করেন চার উইকেট।

রান তাড়ায় খুব তাড়াহুড়ো না করে একটু একটু করে এগোতে থাকে ঢাকা। তবে চতুর্থ ওভারে খুলনার ডাচ পেসার পল ফন মিকেরেনের বলে গাতে আঘাত পেয়ে মাঠ ছেড়ে যান ঢাকার পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানআহমেদ শেহজাদ।

আরেক ওপেনার দিলশান মুনাবিরা ও তিনে নামা সৌম্য সরকার এরপর দলকে এগিয়ে নেন। চতুর্থ ওভারে অবশ্য বড় নাটক হয়ে যায়। নাসুম আহমেদের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে রিভিউ নেন সৌম্য। এডিআরএস-এ তৃতীয় আম্পায়ার বহাল রাখেন মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত।

সৌম্য সেই সিদ্ধান্তে বেশ চটে যান। আম্পায়ারদের সঙ্গে বেশ উত্তেজিত হয়ে কথা বলতে দেখা যায় তাকে। তামিম ইকবাল গিয়ে চেষ্টা করেন তাকে মাঠের বাইরে নিয়ে যেতে। কিন্তু এরপর তৃতীয় আম্পায়ার ইংল্যান্ডের ডেভিড মিল্নস আবার রিপ্লে দেখে ঘোষণা করেন ‘নট আউট।’ এবার আম্পায়ারের সঙ্গে বেশ ক্ষিপ্ত অবস্থায় কথা বলতে দেখা যায় তামিমকে।

উইকেট না পড়লেও প্রথম ৭ ওভারে ঢাকার রান আসে ৩৩। ওয়াহাব রিয়াজ আক্রমণে আসার পর বাড়ে রান। পাকিস্তানি পেসার শুরু করেন ওয়াইড দিয়ে। পরের বলে ওয়াইডসহ বাই থেকে আসে ৫ রান। এরপর করেন ‘নো’ বল, সঙ্গে ১ রান আসে বাই থেকে। ‘ফ্রি’ হিট পেয়ে পরের বলে ছক্কা মারেন সৌম্য। সব মিলিয়ে ওয়াহাবের ১ বলেই রান আসে ১৪!

পরের বলেই অবশ্য জঘন্য এক শটে উইকেট বিলিয়ে দেন সৌম্য (১৩ বলে ১৬)। পরের ওভারে সাইফ উদ্দিন এলবিডব্লিউ করে দেন মুনাবিরাকে। গত অক্টোবরে সাবেক ক্রিকেটারদের টুর্নামেন্ট রোড সেফটি ওয়ার্ল্ড সিরিজে খেলা ব্যাটসম্যান ২২ রান করেন ২৮ বলে।

মোহাম্মদ মিঠুন এরপর উইকেটে অস্বস্তিময় কিছু সময় কাটিয়ে বিদায় নেন ১৪ বলে ৮ রান করে। ১২ ওভারর শেষে ঢাকার রান তখন ৩ উইকেটে ৬৬। তখনও সম্ভাবনা জিইয়ে আছে দুই দলেরই। তবে আফগান ব্যাটসম্যান উসমান ঘানিকে নিয়ে দলকে জয়ের কাছে নিয়ে যান নাসির।

ঘানি শেষ পর্যন্ত টিকতে পারেননি। তবে জয় তখন অনেকটাই নিশ্চিত। জয়ের কাছে গিয়ে একটি সুযোগ দেন নাসিরও। সেই ক্যাচ নিতে পারেননি খুলনা অধিনায়ক ইয়াসির। শেষ ওভারের প্রথম বলে নাসিরের বাউন্ডারিতেই ধরা দেয় জয়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

খুলনা টাইগার্স: ২০ ওভারে ১১৩৮/৮ (তামিম ৮, শারজিল ৭, মুনিম ৪, আজম ১৮, ইয়াসির ২৪, সাইফ উদ্দিন ১৯, সাব্বির ১১*, নাহিদুল ৭, ওয়াহাব ১০, ফন মিকেরেন ০*; তাসকিন ৪-০-১৪-০, নাসির ৪-০-২৯-২, আল আমিন ৪-০-২৮-৪, সানি ৪-০-২৪-২, মুক্তার ৪-০-১৫-০)।

ঢাকা ডমিনেটর্স: ১৯.১ ওভারে ১১৪/৪ (মুনাবিরা ২২, শেহজাদ ৪ আহত অবসর, সৌম্য ১৬, মিঠুন ৮, নাসির ৩৬*, উসমান ১৪, আরিফুল ৩*; নাসুম ৪-০-২৩-১, ফন মিকেরেন ৪-০-১৮-১, নাহিদুল ৩.১-০-২২-০, সাইফ ৪-০-২২-২, ওয়াহাব ৪-০-৩২-১)।

ফল: ঢাকা ডমিনেটর্স ৬ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দা ম্যাচ: নাসির হোসেন।

খেলাধুলা

জাকির হাসান, মুশফিকুর রহিম ও তাওহিদ হৃদয়ের ব্যাটিং তাণ্ডবে জয়ে শুরু সিলেট স্টাইকার্সের। ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ১৯৫ রানের বিশাল টার্গেট তাড়া করে ৬ উইকেটের জয় পায় সিলেট।

এই জয়ে বিপিএল নবম আসর শুরু মাশারাফি বিন মুর্তজার নেতৃত্বাধীন দলটির।

শনিবার মিরপুর শেরেবাংলাদিন মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করে বরিশাল। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়ে ৭.২ ওভারে স্কোর বোর্ডে ৬৭ রান জমা করেন দুই ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও চাতুরঙ্গা ডি সিলভা।

এরপর সাকিব আল হাসানের ৩২ বলের ৬৭ রানের ঝড়ো ইনিংসে ৬৭ রান করেন সাকিব। ২৫ বলে ৩৬ রান করেন ওপেনার চাতুরঙ্গা ডি সিলভা। ২১ বলে ২৯ রান করেন এনামুল হক বিজয়।

সাকিব-ডি সিলভা আর বিজয়ের কল্যাণে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৯৪ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে বরিশাল।

টার্গেট তাড়া করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই উইকেট হারান ওপেনার কলিন একরামন। ওয়ান ডাউনে ব্যাটিংয়ে নামা তাওহিদ হৃদয়ের সঙ্গে ১০১ রানের জুটি গড়েন ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত।

খেলাধুলা

ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম (ডিআরএস) ছাড়াই আজ থেকে শুরু হচ্ছে ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)।

আসরের শুরু থেকে ডিআরএস সিস্টেম না থাকায় প্রকাশ্যে বিপিএল ব্যবস্থাপনার সমালোচনা করেছে খেলোয়াড়-কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে বিপিএল কর্তৃপক্ষের কঠোর সমালোচনা করেছেন তারকা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তিনি জানান, বিপিএলের ক্ষতি হয়েছে এবং এসব সব সমস্যা সমাধানে ম্যানেজমেন্টের ইচ্ছার অভাব রয়েছে। শুরু থেকে ডিআরএস না থাকার জন্য বোর্ডের অনিচ্ছার কথা জানান কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কোচ সালাহউদ্দিন।

এসব সমস্যার মধ্যেই কাল দু’টি ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়াচ্ছে বিপিএল। দিনের প্রথম ম্যাচে সিলেট স্ট্রাইকার্সের মুখোমুখি হবে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। ম্যাচটি শুরু হবে দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে । দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে লড়বে রংপুর রাইডার্স ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। শনিবারসহ সাপ্তাহিক দিনে প্রথম ম্যাচ দুপুর ২টায় এবং সন্ধ্যার ম্যাচ ৭টায় শুরু হবে।

দু’টি ম্যাচই হবে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। প্রাথমিকভাবে এডিআরএস (অতিরিক্ত ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম) থাকছে। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল জানিয়েছে, নক-আউট পর্ব থেকেই ডিআরএস চালু করা হবে। গত বছরের বিপিএলে ডিআরএস না থাকার কারনে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলো। এ সব কারণে কর্তৃপক্ষ শুরু থেকেই ডিআরএস ব্যবহার করবে বলেই আশা করেছিল খেলোয়াড়-কর্মকর্তারা।

আজ বিসিবির প্রধান নির্বাহি নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের প্রডাকশন দল দুই/তিন মাস আগে এটি (ডিআরএস) সম্পর্কে জানিয়েছে। এরপর ডিআরএস আনার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি আমরা। এ বিষয়ে আমরা আইসিসির সাথেও যোগাযোগ করেছি। কিন্তু কিছু কারণে এটি আনা সম্ভব হয়নি। কারণ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একই সাথে এখন বেশ কয়েকটি ম্যাচ চলছে চলছে। কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগও চলছে। এ কারণেই আমরা ডিআরএস আনতে পারিনি।’

বিপিএলের পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকায় এসএ টি-টোয়েন্টি (১০ জানুয়ারি থেকে) এবং আবুধাবিতে (১৩ জানুয়ারি থেকে) আইএলটিও শুরু হবে।দুটি আসরই প্রথমবারের মতো মাঠে গড়াতে যাচ্ছে। প্রথম মৌসুম থেকেই সম্ভাব্য সকল সুবিধা নিশ্চিত করতে চাইছে আয়োজকরা এবং সেগুলোর মধ্যে ডিআরএস একটি। অথচ বিপিএল পুরানো মৌসুম হলেও এতে কোন নতুনত্ব নেই এবং ডিআরএসের মতো সামান্য সুবিধাও নেই।

বিপিএলের সীমাবদ্ধতা ও বিণিœ ত্রুটির কথা অবশ্য স্বীকার করেছেন নিজাম উদ্দিন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে অবশ্যই সীমাবদ্ধতা ছিল। যে কারণে আনতে পারেনি আমাদের প্রোডাকশন দল। এটি জানার পরে আমাদের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে যারা ডিআরএস সেবা দিয়ে থাকে, তাদের যথেষ্ট জনবল নেই।’

ডিআরএসের আয়োজনে বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ হয়। এক মাসের বিপিএলে কয়েক কোটি টাকারও বেশি খরচ হয়ে থাকে। বোর্ডের অর্থের অভাব বা ইচ্ছার অভাব রয়েছে এমন ধারণাকে উড়িয়ে দিয়েছেন প্রধান নির্বাহি।

তিনি বলেন, ‘এখানে অর্থের কোন ইস্যু নেই। আমরা যখন ডিআরএস সম্পর্কে জানতে পেরেছি, আমরা সবসময় চেষ্টা করেছি।

আমি ব্যক্তিগতভাবে আইসিসির বাণিজ্যিক প্রধানের সাথে কথা বলেছি। কারণ ডিআরএস কোম্পানির সাথে ভালো সম্পর্ক রয়েছে তার। আমি অন্যান্য বোর্ডের সাথেও যোগাযোগ করেছি কিন্তু এই মুহূর্তে তারা ব্যস্ত।’

খেলাধুলা

কোলন ক্যানসারের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই শেষে গত বৃহস্পতিবার মারা যান পেলে। তর্কসাপেক্ষে সর্বকালের সেরা ফুটবলারের মৃত্যুতে ফুটবলবিশ্বে শোকের ছায়া নেমে আসে।

‘কালো মানিক’ এর নিজের শহর সান্তোসে তাকে শেষ বিদায় জানাতে হাজির হয়েছেন লাখো ভক্ত-সমর্থক।

ঘরের ক্লাব সান্তোসের নিজস্ব স্টেডিয়াম ভিলা বেলমিরো থেকে শুরু হয়েছে তিনবারের বিশ্বকাপজয়ীর শেষযাত্রা। স্টেডিয়ামের মাঝখানে ২৪ ঘণ্টার জন্য সাদা ফুলে ঢাকা কফিনের ঢাকনা খুলে দেওয়া হয়েছে। তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে মানুষের ঢল নেমেছে। পেলের পরিবারের সদস্য, বন্ধু-বান্ধব, সাবেক সতীর্থ থেকে শুরু করে সেখানে হাজির হয়েছেন ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো, নেইমার জুনিয়রের বাবা নেইমার সিনিয়রসহ আরও অনেকে।

সান্তোসের স্টেডিয়ামের দরজা খুলতেই সেখানে লোকজনের ভিড় বাড়তে থাকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পুরো স্টেডিয়াম ভরে যায়। শবযান বহনকারীদের দলে ছিলেন পেলের ছেলে এদিনহো। এরপর পেলের নশ্বর দেহের ওপর আচ্ছাদনবস্ত্র পরিয়ে দেন বাকিরা। পিতার কপালে হাত রেখে শেষযাত্রা শুরুর আগে প্রার্থনা করেন এদিনহো। পেলের দেহে ক্রস পরিয়ে দেন তার স্ত্রী মার্সিয়া ওকি। পরে এদিনহোকে সান্ত্বনা দিতেও দেখা যায় তাকে। এরপর একে একে সেখানে হাজির হন আরও অনেকেই। এদিনহো এবং মার্সিয়াকে সান্ত্বনা দিতে দেখা যায় তাদের।