খেলাধুলা

শ্রীলংকার বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে জয় পেল ভারত। বছরের শুরুতে পাওয়া এই জয়ে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা।

মঙ্গলবার মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড় স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ১৬২ রান করে স্বাগতিক ভারত।

টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৬৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় শ্রীলংকা। দলের কঠিন পরিস্থিতিতে হাল ধরেন অধিনায়ক দাসুন শানাকা। ষষ্ঠ উইকেটে হাসারাঙ্গাকে সঙ্গে নিয়ে ২৩ বলে ৪০ রানের জুটি গড়েন তিনি। ১০ বলে ২১ রানে ফেরেন হাসারাঙ্গা।

এরপর শানাকার ব্যাটে জয় দেখছিল শ্রীলংকা। জয়ের জন্য শেষ দিকে ২১ বলে শ্রীলংকার প্রয়োজন ছিল ৩৪ রান। সেই অবস্থায় বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন শানাকা। তার আগে ২৭ বলে তিন চার ও তিন ছক্কায় ৪৫ রান করেন শ্রীলংকান এই অধিনায়ক।

শানাকা আউট হওয়ার পর মহিশ থাকছেনা, কাসুন রাজিথারা যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি চামিকা করুনারত্নেকে। যে কারণে তীরে গিয়ে তরী ডুবে শ্রীলংকার। ২০ ওভারে ১৬০ রানে অলআউট হয় তারা। ১৬ বলে ২৩ রানে অপরাজিত থেকেও দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছাতে ব্যর্থ হন চামিকা করুনারত্নে। ২ রানের জয়ে বছর শুরু করে ভারত।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে সময়ের ব্যবধানে উইকেট হারায় ভারত। ৯৪ রানে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরেন অধিনায়ক পান্ডিয়া। তার বিদায়ে মনে হয়েছিল বেশিদূর যেতে পারবে না ভারত।

কিন্তু ষষ্ঠ উইকেটে দিপক হুডার সঙ্গে রীতিমতো ব্যাটিং তাণ্ডব চালান বাঁ-হাতি স্পিনার আকসার প্যাটেল। তারা ৩৫ বলে ৬৮ রানের জুটি গড়েন। ম্যাচে এটাই সর্বোচ্চ রানের পার্টনারশিপ।

দিপক হুডা ২৩ বলে এক চার আর ৪টি ছক্কার সাহায্যে দলীয় সর্বোচ্চ ৪১ রান করেন। ২০ বলে তিন চার আর এক ছক্কায় ৩১ রান করেন আকসার প্যাটেল। তাদের কল্যাণেই ১৬২/৫ রানের রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে ভারত।

খেলাধুলা

শনিবারের বিকাল হঠাৎ মনোরম হয়ে উঠল মিরপুরে। মাত্র ১৪৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৪৫ রানে চার উইকেট হারিয়ে ভীষণরকম চাপে পড়ে গেল ভারত। চার উইকেটের তিনটিই নেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

এরমধ্যে কোহলির ‘বিরাট’ উইকেটও রয়েছে। এজন্য মিরাজের ধন্যবাদ দেওয়া উচিত মুমিনুলকে। শর্ট লেগে নিচু ক্যাচ নিয়ে মুমিনুল মোক্ষম উইকেট নিতে সহায়তা করেছেন মিরাজকে। কোনো সন্দেহ নেই, দ্বিতীয় টেস্টের তৃতীয়দিন বিকালে ভারত যে ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে, তার নাম মিরাজ।

আজ ঢাকা টেস্টের চতুর্থদিনও যদি মিরাজ-রাজ অব্যাহত থাকে, সিরিজে সমতা আনতে বেগ পেতে হবে না বাংলাদেশকে। মিরপুরে অভাবনীয় জয়ের যে পটভূমি তৈরি হয়েছে, তার মূলে রয়েছেন মিরাজ।

ভারতের অপর উইকেট নেন সাকিব। তৃতীয় ওভারে দুই রানে ফেরান প্রতিপক্ষ অধিনায়ক লোকেশ রাহুলকে। আজ চতুর্থদিনে জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ছয় উইকেট। ভারতের দরকার আরও ১০০ রান।

শেষ রোমাঞ্চের অপেক্ষায় দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে। বড়দিনে মিরপুর অপেক্ষায় থাকবে বড় দলের বিপক্ষে বড় জয়ের। এর আগে বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস শেষ করে ২৩১ রানে। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ২২৭ এবং ভারত ৩১৪ রান করে।

তৃতীয়দিনের খেলা তখন তিন ওভার বাকি। তার আগেই মিরাজের ঘূর্ণির শিকার হলেন বিরাট কোহলি। বাঁধভাঙা উদযাপনে মাতোয়ারা মিরপুর স্টেডিয়াম। ড্রেসিংরুমের পথ ধরতে গিয়েও মাঝপথে থামলেন কোহলি। ডাকলেন সাকিবকে। হয়তো তাকে কেউ কটু কথা বলেছে। সেটি শুনতে পেয়েছেন ভারতের মহাতারকা।

মিরাজকে দেখিয়ে সাকিবের কাছে জিজ্ঞেস করলেন, কি বলেছে সে? সাকিব কিছু একটা বুঝিয়ে দিলেন। কোহলি রাগান্বিত হয়ে কিছু একটা বলতে বলতে ড্রেসিংরুমে ফেরেন। তার বিদায়ের পর শেষ তিন ওভার কাটিয়ে দিয়েছেন অক্ষর প্যাটেল ও জয়দেব উনাদকাট। এদিকে দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখলেন ভারতের ডান-হাতি পেসার মোহাম্মদ সিরাজ। লিটন দাসও জানালেন, এই ম্যাচ জেতা উচিত বাংলাদেশের।

দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের টপঅর্ডারে কেউই বাংলাদেশের স্পিনারদের সামলাতে পারেননি। লোয়ার অর্ডারের অক্ষরকে উপরে এনে যে বাজি ধরতে চেয়েছিল সরকারীরা, তাতে অনেকটা সফল হয়েছে তারা। ভারতের প্রথম ছয় ব্যাটারের মধ্যে একমাত্র প্যাটেলই দুই অঙ্কের ঘরে যেতে পেরেছেন। ৫৪ বলে ২৬ রানে অপরাজিত প্যাটেলের সঙ্গে উনাদকাটকে নাইটওয়াচম্যান হিসাবে পাঠানো হয়। আট বলে জয়দেব করেছেন ৩* রান।

প্রথম ওভারে দুর্দান্ত বোলিংয়ের পর নিজের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই উইকেট পান সাকিব। ভারত অধিনায়ক লোকেশ রাহুলকে (২) উইকেটের পেছনের ক্যাচ বানান তিনি। টানা সাত ওভার আক্রমণে থাকেন সাকিব ও তাইজুল। অষ্ঠম ওভারে মিরাজকে আনতেই স্বাগতিকরা পায় দ্বিতীয় সাফল্য। নুরুল হাসান সোহানের অসাধারণ স্টাম্পিংয়ে ফেরেন চেতেশ্বর পূজারা (৬)।

দুই বাঁ-হাতিকে বোলিংয়ে দেখে ভারত প্যাটেলকে চারে নামায়। ওপেনার শুবমান গিলকে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন মিরাজ। ৩৫ বলে তিনি করেন মাত্র সাত রান।

অথচ, দিনের শুরুটা বাংলাদেশের জন্য ছিল বিভীষিকাময়। আগেরদিন যে স্বপ্ন নিয়ে শুরু করেছিল স্বাগতিকরা, সেটা ধরে রাখতে পারেনি। সফরকারীদের বোলিং তোপে ছন্নছাড়া ব্যাটিংয়ে প্রথম সেশনে চার উইকেট হারালে লিড নেওয়াই কঠিন হয়ে পড়ে। চট্টগ্রামে অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরি করা জাকির হাসান পরের টেস্টে পেলেন ফিফটি। কিন্তু ফিফটির পরই জাকির বিদায় নিলে আবার চাপে পড়ে যায় স্বাগতিকরা।

লিটন ও নুরুল হাসান সোহান দুজনই আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে কিছু রান বাড়ান। নুরুল হাসান ২৯ বলে ৩১ রান করার পর স্টাম্পিংয়ের শিকার হন। টেস্ট ক্যারিয়ারে ১৫তম হাফ সেঞ্চুরির পর লিটন ফেরেন মোহাম্মদ সিরাজের দারুণ এক সুইংয়ে। ব্যাট-প্যাড ফাঁকি দিয়ে বল আঘাত করে স্টাম্পে। ৯৮ বলে সাত চারে ৭৩ রান করেন লিটন।

লিটনের বিদায়ের পর তাসকিনের আরও কিছু রানে বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হয়। তাসকিন অপরাজিত থাকেন ৩১ রানে। প্যাটেল তিনটি এবং সিরাজ ও অশ্বিন দুটি করে উইকেট নেন।

খেলাধুলা

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) নবম আসর শুরু হবে আগামী ৬ জানুয়ারি। টি-টোয়েন্টির এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের ফাইনাল হবে ১৬ ফেব্রুয়ারি। শনিবার বিপিএলের সূচি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

এবারও ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট এই তিন ভেন্যুতে বিপিএলের খেলাগুলো হবে। ৬ জানুয়ারি থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত ঢাকায় প্রথম পর্ব হবে। ১৩ থেকে ২০ জানুয়ারি হবে চট্টগ্রামে। আর ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি দুদিনের জন্য ঢাকায় ফিরে বিপিএল যাবে সিলেটে। ২৭ থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বিপিএলের সিলেট-পর্ব।

ঢাকায় তৃতীয় পবে ১২ ফেব্রুয়ারি এলিমিনেটর ম্যাচের পর হবে প্রথম কোয়ালিফায়ার, দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ১৪ ফেব্রুয়ারি। ফাইনালসহ প্লে-অফে সব কটি ম্যাচের জন্যই রাখা হয়েছে রিজার্ভ ডে।

শনি থেকে বৃহস্পতিবার দিনের ম্যাচগুলো শুরু হবে বেলা ২টায়, শুক্রবারের ম্যাচগুলো শুরু হবে বেলা আড়াইটায়। শুক্রবার দিনের দ্বিতীয় ম্যাচ শুরু হবে সন্ধ্যা সোয়া ৭টায়, সপ্তাহের বাকি ম্যাচগুলো শুরুর সময় সন্ধ্যা ৭টা।

এবারের আসর দিয়ে আবার সাত দলের টুর্নামেন্টে ফিরছে বিপিএল।

খেলাধুলা

বাংলাদেশের বিপক্ষে ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে এগিয়ে সফরকারী ভারত। ১০ উইকেট হাতে নিয়ে ৮০ রানে পিছিয়ে টাইগাররা।

প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ২২৭ রানের জবাবে সাকিব আল হাসান ও তাইজুল ইসলামের বোলিং নৈপুণ্যে ৩১৪ রানে অলআউট হয় ভারত। সাকিব এবং তাইজুল ৪টি করে উইকেট নেন। প্রথম ইনিংস থেকে ৮৭ রানের লিড পায় টিম ইন্ডিয়া। দ্বিতীয় ইনিংসে দ্বিতীয় দিন শেষে ৬ ওভারে বিনা উইকেটে ৭ রান করেছে বাংলাদেশ। ১০ উইকেট হাতে নিয়ে ৮০ রানে পিছিয়ে টাইগাররা।

মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম দিনই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। দিনের শেষ বেলায় ৮ ওভার ব্যাট করে বিনা উইকেটে ১৯ রান তুলতে পারে ভারত। অধিনায়ক লোকেশ রাহুল ৩ ও শুভমান গিল ১৪ রানে অপরাজিত ছিলেন।

দ্বিতীয় দিনের ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে রাহুলকে লেগ বিফোর আউট করেন তাইজুল। রিভিউ নিয়ে ১০ রান করা রাহুলকে থামান তাইজুল।

এক ওভার পর ভারত শিবিরে দ্বিতীয় আঘাত হানেন তাইজুল। আরেক ওপেনার গিলকেও লেগ বিফোর আউট করেন তিনি। ২০ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরেন গিল।

৩৮ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়ে ভারত। দলকে চাপমুক্ত করতে তৃতীয় উইকেট জুটিতে চেষ্টা করেন চেতেশ্বর পুজারা-বিরাট কোহলি; কিন্তু তাইজুলের শিকার হয়ে পুজারা বিদায় নিলে ভাঙ্গে কোহলির সঙ্গে ৯৩ বলে ৩৪ রানের জুটি। ২৪ রান করেন পূজারা।

এরপর উইকেটে সেট হওয়া কোহলিকে বেশি দূর যেতে দেননি পেসার তাসকিন আহমেদ। অফ-স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা মেরে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন কোহলি। ২৪ রান করেন কোহলিও। ৯৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে আবারও চাপে পড়ে ভারত।

এ অবস্থায় কাউন্টার অ্যাটাক করেন পন্থ ও শ্রেয়াস আইয়ার। বাংলাদেশের বোলারদের বিপক্ষে অনায়াসে রান তুলেছেন তারা। দ্বিতীয় সেশনে জোড়া হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ পান পন্থ ও আইয়ার। এতে লিডের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় সেশন শেষ করেন এই দুই ব্যাটার। তখন ভারতের রান ছিল ৪ উইকেটে ২২৬ রান। ৬ উইকেট হাতে নিয়ে মাত্র ১ রানে পিছিয়ে ছিল ভারত।

এই সেশনে পন্থ ও আইয়ারকে জীবন দেন বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। ব্যক্তিগত ১৯ ও ২১ রানে আইয়ারের সহজ ক্যাচ ফেলেন মিরাজ ও উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান। ৫৯ ও ১১ রানে লিটন ও মুশফিক ক্যাচ মিস করলে বেঁচে যান পন্থ।

বিরতির পর পন্থকে নার্ভাস-নাইন্টিতে থামান মিরাজ। অফ-স্টাম্পের বল ঠিকমতো খেলতে না পেরে নুরুলকে ক্যাচ দেন পন্থ। ১০৪ বল খেলে ৭টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৯৩ রান করেন তিনি । এ নিয়ে ষষ্ঠবার নার্ভাস-নাইন্টিতে ফিরলেন পন্থ। পঞ্চম উইকেটে আইয়ারের সাথে ১৮২ বলে ১৫৯ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন পন্থ; যা বাংলাদেশের বিপক্ষে পঞ্চম উইকেটে এটিই সর্বোচ্চ রানের জুটি।

পন্থ ফেরার পর উইকেটে আসেন অক্ষর প্যাটেল। তাকে ৪ রানে থামিয়ে দিয়ে ইনিংসে প্রথম উইকেটের দেখা পান অধিনায়ক সাকিব। পরের ওভারে সেট ব্যাটার আইয়ারকে লেগ বিফোর আউট করে বাংলাদেশের পথের কাঁটা সরান সাকিব। ১০টি চার ও ২টি ছক্কায় ১০৫ বলে ৮৭ রান করেন আইয়ার।

দলীয় ২৭১ রানের মধ্যে পন্থ-আইয়ারের বিদায়ের পর ভারতের গুটিয়ে যাওয়া সময়ের ব্যাপার ছিল। টেল-এন্ডাররা ছোট-ছোট ইনিংস খেলে ভারতের রান ৩শ পার করেন। অশ্বিনকে ১২ রানে সাকিব ও ১৪ রান করা উমেশকে আউট করেন তাইজুল। শেষ ব্যাটার সিরাজকে শিকার করে ভারতকে ৩১৪ রানে গুটিয়ে দেন সাকিব। সিরাজ করেন ৭ রান। ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন উনাদকত। বল হাতে বাংলাদেশের সাকিব ৭৯ রানে ও তাইজুল ৭৪ রানে ৪টি করে উইকেট নেন।

ভারত গুটিয়ে যাবার পর দিনের শেষ বেলায় ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। ৬ ওভার ব্যাট করে দিন শেষে অবিচ্ছিন্নই ছিলেন দুই ওপেনার শান্ত (৫) ও জাকির (২)।

খেলাধুলা

বাংলাদেশের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও লিটন কুমার দাস দুজনকেই তাদের ভিত্তিমূল্যে দলে নিয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। লিটনের ভিত্তিমূল্য ছিল ৫০ লাখ রুপি। আর সাকিবের ভিত্তিমূল্য ১ কোটি ৫০ লাখ।

আসন্ন আইপিএলে বাংলাদেশের তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে কলকাতার হয়ে খেলবেন লিটন। এর আগে কলকাতার হয়ে খেলেছেন সাকিব ও সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।

আইপিএলে প্রথম দফায় ডাক পান সাকিব ও লিটন। তবে দ্বিতীয় দফার ডাকে এই দুই ক্রিকেটার দল পেলেন।

আইপিএলে লিটনের খেলার অভিজ্ঞতা নেই। তবে আইপিএলে কলকাতার হয়ে পঞ্চাশ ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে সাকিবের।

খেলাধুলা

আফ্রিকা ও মুসলিম দেশেগুলোর মধ্যে প্রথম দল হিসেবে মরক্কো সেমিফাইনালে যাওয়ায় আনন্দের বন্যায় ভাসছে দেশটির মানুষ।

দেশে ফিরে বীরোচিত সংবর্ধনা পেলেন ‘অ্যাটলাস লায়নস’ হিসেবে পরিচিত আশরাফ হাকিমিরা।খবর আল-জাজিরার।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার মরক্কোর ফুটবলারদের বহনকারী উড়োজাহাজটি রাজধানী রাবাতে অবতরণ করে। পরে রাবাতের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আশরাফ হাকিমিদের বহনকারী ছাদখোলা বাস।

ওই সময় জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে, বাজি ফাটিয়ে, স্লোগানে কাতার বিশ্বকাপের চতুর্থ স্থান দখল করা দলের সদস্যদের স্বাগত জানান মরক্কোর হাজারো নাগরিক।

আন্ডারডগ হিসেবে কাতারে গিয়ে একের পর এক চমক দেখায় মরক্কো। সেমিফাইনালের পথে গ্রুপ পর্বে তারা ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ের দ্বিতীয় দল বেলজিয়ামকে হারায়।

শেষ ষোলোতে ২০১০ সালের চ্যাম্পিয়ন দল স্পেনকে পরাজিত করে আফ্রিকার দলটি। কোয়ার্টার ফাইনালে শক্তিশালী পর্তুগালকে হারিয়ে স্বপ্নযাত্রা অব্যাহত রাখেন অদম্য ফুটবলাররা। সেমিফাইনালে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের কাছে হেরে জয়রথ থামে দলটির।

বিশ্বকাপের এ পারফর‌ম্যান্সের পর দেশে ফিরে বিশেষ সংবর্ধনা পায় টিম মরক্কো।জাতীয় দলকে অভ্যর্থনা জানাতে সড়কে জনসমুদ্র দেখা যায়।

অ্যাটলাস সিংহদের স্বাগত জানাতে লোকজন গর্জন করতে থাকেন। বিরল মুহূর্তের সাক্ষী হতে সড়কে নেমে আসেন নারী, শিশু, বৃদ্ধরা।

খেলাধুলা

চোটের কারণে চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথমদিনের পর আর বোলিং করতে পারেননি সাকিব আল হাসান। তবে ব্যাট হাতে ৮৪ রানের দারুণ এক ইনিংসের সুবাদে বুধবার প্রকাশিত আইসিসি র‌্যাংকিংয়ে দুই বিভাগে এগিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

টেস্ট ব্যাটারদের র‌্যাংকিংয়ে চার ধাপ ও অলরাউন্ডারদের র‌্যাংকিংয়ে এক ধাপ এগিয়েছেন সাকিব। অলরাউন্ডারদের তালিকায় ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকসকে টপকে বাংলাদেশ অধিনায়ক এখন তিনে। এক ও দুইয়ে যথাক্রমে দুই ভারতীয় রবীন্দ্র জাদেজা ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন।

ব্যাটারদের তালিকায় চার ধাপ এগিয়ে সাকিব এখন ৩৭ নম্বরে। এছাড়া দুই ধাপ করে এগিয়েছেন মুশফিকুর রহিম (১৯) ও নাজুমল হোসেন শান্ত (৮৪)। আগের মতোই শীর্ষে আছেন অস্ট্রেলিয়ার মারনাস লাবুশেন।

আরেক অসি স্টিভেন স্মিথকে টপকে ক্যারিয়ারসেরা দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছেন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম। অস্ট্রেলিয়ার ট্রাবিস হেডও তিন ধাপ এগিয়ে ক্যারিয়ারসেরা চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছেন।

বোলারদের র‌্যাংকিংয়ে চার ধাপ এগিয়ে তিনে উঠেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার কাগিসো রাবাদা। শীর্ষে যথারীতি প্যাট কামিন্স।

খেলাধুলা

কাতার বিশ্বকাপটি মরক্কোর জন্য ছিল স্বপ্নের মতো। ফিফা বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে প্রথমবার কোয়ার্টার ফাইনালে সুযোগ পেয়ে বাজিমাত করে দেয় আশরাফ হাকিমিরা।

ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মতো তারকা খচিত পর্তুগালকে কোয়ার্টার ফাইনালে বিদায় করে দিয়ে সেমিফাইনালে উঠে যায় মরক্কো। তাদের সেই স্বপ্নের যাত্রা থামিয়ে দেয় ফরাসিরা।

বুধবার সেমিফাইনালে বিশ্বকাপের গত আসরের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের বিপক্ষে ২-০ গোলে হেরে ফাইনালের আগেই বিদায় নেয় মরক্কো। বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিলেও দুর্দান্ত ফুটবল খেলে ভক্ত-সমর্থকদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন আশরাফ হাকিমিরা।

মরক্কোকে হারিয়ে বিশ্বকাপের ২২তম আসরের ফাইনালে ফ্রান্স। রোববার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে ফাইনাল ম্যাচে আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হবে গত আসরের শিরোপাজয়ী দল ফ্রান্স।

বুধবার দিবাগত রাত ১টায় কাতারের আল বাইত স্টেডিয়ামে সেমিফাইনাল ম্যাচে মুখোমুখি হয় ফ্রান্স-মরক্কো। খেলার শুরুতেই এগিয়ে যায় ফ্রান্স।

সেমিফাইনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বাঁ পায়ের দারুণ শটে ম্যাচের ৫ মিনিটে দলকে (১-০) এগিয়ে নেন হার্নান্দেজ। তার গোলে বিশ্বকাপে প্রথমবারের মত প্রতিপক্ষ ফুটবলারের কাছ থেকে গোল হজম করল মরক্কো।

গোল খেয়ে পিছিয়ে পরলেলেও দারুণ খেলে যায় মরক্কো। ১১ মিনিটে ডি বক্সের বাইর থেকে উনাহির দূরপাল্লার শট বা পাশে ঝাপিয়ে পড়ে রুখে দেন ফ্রেঞ্চ গোলরক্ষক হুগো লরিস।

১৮ মিনিটে আবারো গোলের সুযোগ পায় মরক্কো। বৌফালের পাস থেকে ডি বক্সে বল পেলেও বা পায়ের দুর্বল শটে গোল করতে ব্যর্থ হন জিয়েচ৷

৩৬ মিনিটে দারুণ এক কাউন্টার এটাকে মরক্কোর রক্ষণভাগে ভয় ধরিয়ে দেয় এমবাপ্পে। তার গতির কাছে পরাস্ত হন মরক্কোর ডিফেন্ডার।

কিন্তু ফোফানার পাস থেকে দারুণভাবে একা বল পেয়ে গোলবারের বাইরে শট নেন জিরুড।

৪১ নিনিটে গ্রিজম্যানের কর্নার থেকে ভারানের ডান পায়ের শট আবারো লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে বাইরে চলে যায়। ম্যাচের ৪৭ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার দারুণ সুযোগ পায় মরক্কো। কিন্তু এল ইয়ামিকের ওভার হেড কিক গোলবারে লেগে প্রতিহত হয়, ফলে গোলবঞ্চিত হয় মরক্কো।

প্রথমার্ধে ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় ফ্রান্স।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে গোল পরিশোধে আরো আক্রমণাত্মক খেলে মরক্কো। ৫৫ নিনিটে ফ্রান্সের রক্ষণভাগে ভয় ধরিয়ে দেন মরক্কোর ফুটবলাররা। বৌফাল, এল নাসিরের দুই প্রচেষ্টা রুখে দেন ভারান ও থিও হার্নান্দেজ।

খেলার ৮০ মিনিটে দারুণ এক কাউন্টার এটাক থেকে এমবাপ্পের একক নৈপুণ্যে ডিবক্সের ভেতর শট নিলে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের পায়ে লেগে বল যায় কোলো মুয়ানির কাছে৷ এমন সুযোগ আর তিনি মিস করেননি৷ বদলি হিসেবে নামার ২ মিনিটের ভেতরেই ফ্রান্সের জার্সি গায়ে নিজের প্রথম গোলটি করেন তিনি।

দুই গোলে পিছিয়ে থেকে আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি মরক্কো। ৯২ মিনিটে ডিবক্সের বাইরে থেকে মরক্কোর উনাহির শট চলে যায় গোলবারের উপর দিয়ে।

শেষ দিকে আরো কয়েকবার ফ্রান্স আক্রমণভাগে বল নিয়ে ঢুকলেও ফিনিশিংটাই করতে পারেনি। ফলে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হল আফ্রিকান প্রতিনিধি মরক্কোকে।

খেলাধুলা

কাতার বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আজ মুখোমুখি হচ্ছে ফ্রান্স ও মরক্কো। সেমিফাইনালে মাঠে নামার আগে ফ্রান্সকে রীতিমতো ‘হুঙ্কার’ দিয়ে রাখলেন মরক্কোর কোচ ওয়ালিদ রেগরাগুই।

বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় মাঠে নামবে ফ্রান্স ও মরক্কো। শক্তির বিচারে ফরাসিরা এগিয়ে থাকলেও মাঠের লড়াইয়ে তাদের ছেড়ে কথা বলবে না আফ্রিকার দেশ মরক্কো।

ম্যাচপূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে মরক্কোর কোচ ওয়ালিদ রেগরাগুই বলেন, ‘ফ্রান্সকে মোকাবিলা করতে খেলোয়াড়দের সামর্থ্য নিয়ে আমি আত্মবিশ্বাসী। আমরা যদি হেরে যাই, আমি বলব না যে আমরা সফল হয়েছি। আমরা বিশ্বের সেরা চারটি দলে আছি। এখানে উড়ে আসিনি এবং ফাইনালে পৌঁছানোর সুযোগ আমাদেরও আছে।’

প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে উঠলেও এখানে থেমে থাকতে চান না মরক্কোর কোচ রেগরাগুই। বরং ফাইনালে ওঠায় এখন তার দলের মূল লক্ষ্য বলেও জানান তিনি।

এ প্রসঙ্গে রেগরাগুই বলেন, ‘আমরা সেমিফাইনালে পৌঁছাতে পেরে যদি খুশি হই এবং কেউ কেউ একেই যথেষ্ট মনে করে, তাদের সঙ্গে আমি একমত নই। কোনো দল সেমিফাইনালে ওঠার পর যদি ক্ষুধা না থাকে সামনে যাওয়ার, তবে আমি বলব তাদের সমস্যা আছে।’

শক্তির বিচারে ফ্রান্স এগিয়ে থাকলেও ম্যাচে যে দল ভালো খেলবে তারা জিতবে বলে মনে করেন মরক্কোর কোচ। ব্রাজিলের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘টুর্নামেন্টের সেরা দল ব্রাজিল ইতোমধ্যে বাদ পড়েছে। আমরা বড় স্বপ্ন দেখা দল এবং আমরা ক্ষুধার্ত। কিন্তু আমি জানি না যে ফাইনালের জন্য এটি যথেষ্ট হবে কিনা।’

খেলাধুলা

চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনে ৬ উইকেট শিকার করেও আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়ে টাইগাররা। প্রথম দিনে ক্যাচ পড়েছে তিনটি, স্টাম্পে বল লেগেও বেলস পরেনি।

বুধবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুভমান গিল, লোকেশ রাহুল, বিরাট কোহলি, ঋষভ পন্থ, চেতেশ্বর পুজারা ও আকসার প্যাটেলর উইকেট হারিয়ে ২৭৮/৬ রান সংগ্রহ করে সফরকারী ভারত।
প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে শুভমান গিলের সঙ্গে ওপেনিংয়ে ৪১ রানের জুটি গড়েন রোহিত শর্মার ইনজুরির কারণে অধিনায়কত্ব পাওয়া লোকেশ রাহুল। এরপর মাত্র ৭ রানের ব্যবধানে ভারত হারায় ৩ উইকেট।

চতুর্থ উইকেটে ঋষভ পন্থকে সঙ্গে নিয়ে ৭৩ বলে ৬৪ রানের জুটি গড়েন পুজারা। ওয়ানডের স্টাইলে খেলতে গিয়ে আউট হন পন্থ। তার আগে ৪৫ বলে ৪৬ রান করে ফেরেন এ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান।

এরপর পঞ্চম উইকেটে শ্রেয়াস আইয়ারকে সঙ্গে নিয়ে ১৪৯ রানের জুটি গড়েন পুজারা। ইনিংসের শুরু থেকে দারুণ ব্যাটিং করে সেঞ্চুরির পথেই ছিলেন তিনি। উইকেটের এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাটিং করে যাওয়া পুজারাকে বোল্ড করে ফেরান তাইজুল ইসলাম।

পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরার আগে ২০৩ বলে ১১টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৯০ রানে ফেরেন পুজারা। তাকে ১২ রানেই সাজঘরে ফেরানো যেতো। ইবাদতের বলে উইকেটে পেছনে ক্যাচ ছাড়েন নুরুল হাসান সোহান।

প্রথম দিনের একিবারে শেষ বলে মেহেদি হাসান মিরাজের বলে আউট হন ২৬ বলে ১৪ রান করা আকসার প্যাটেল। রিভিউ নিয়েও তিনে রক্ষা পাননি। অবশ্য তাকে আগেই ফেরানো যেত রিভিউ নিলে।

প্রথম দিনের খেলা শেষে ৮২ রানে অপরাজিত শ্রেয়াস আইয়ার। শ্রেয়াসকে আরও আগেই ফেরানো যেতো। ৩০ রানে তার ক্যাচ ছাড়েন সোহান, ৬৭ রানে সহজতম ক্যাচ ছেড়ে দেন ইবাদত। একটু পর ইবাদতের এক ডেলিভারি ছোবল দেয় তার স্টাম্পে। জ্বলে ওঠে জিং বেলস। কিন্তু স্টাম্প থেকে সরতে তো হবে! বিস্ময়করভাবে বেলস নড়লেও পড়েনি। এবার শ্রেয়াস রক্ষা পান ৭৮ রানে।

এমন নাটকীয় টেস্টের দিনে তাইজুল ইসলাম শিকার করেন ৩ উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত ১ম ইনিংস: ৯০ ওভারে ২৭৮/৬ (রাহুল ২২, গিল ২০, পুজারা ৯০, কোহলি ১, পন্ত ৪৬, শ্রেয়াস ৮২*, আকসার ১৪; তাইজুল ৩/৮৪, মিরাজ ২/৭১)।