খেলাধুলা

করোনার টিকা না নেওয়ার কারণে সফরে গিয়েও অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলা হয়নি নোভাক জোকোভিচের। আইনি লড়াই করেও হেরে গিয়ে না খেলেই দেশে ফিরতে হয় সার্বিয়ান এই তারকাকে।

এই টেনিস তারকা স্পষ্ট জানিয়েছেন- প্রয়োজনে খেলা ছাড়বেন তবু করোনার ভ্যাকসিন নেবেন না।

তিনি বলেন, আমার শরীর নিয়ে আমি কী সিদ্ধান্ত নেব, সেটা আমার একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। কোন টুর্নামেন্ট, কিংবা যে কোন ট্রফি জয়ের থেকেও আমার শরীর আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যতটা ফিট থাকা সম্ভব, ততটাই চেষ্টা করছি। তবে টিকা নেব না। তাতে এর দাম দিতে হলে তাও রাজি।

জোকোভিচ আরও জানান, আমি কখনই টিকার বিরোধী নই। তবে আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত হলো টিকা নেব না। পুরো বিশ্ব টিকার মধ্য দিয়ে লড়াই চালাচ্ছে। আশা করি, তাতে শীঘ্রই সাফল্যও আসবে।

প্রসঙ্গত, অস্ট্রেলিয়ান ওপেন থেকে জোকোভিচ বিতাড়িত হওয়ার পরই শোনা গিয়েছিল- করোনার টিকা না নিলে ফ্রেঞ্চ ওপেনেও অংশ নেওয়া যাবে না। ফ্রান্সের সরকারও জোকোভিচের জন্য অস্ট্রেলিয়ার সরকারের মতোই কড়া পদক্ষেপ নিতে পারে।

খেলাধুলা

বিশ্বের বিভিন্ন ফুটবল লিগে খেলার মাঝেই মুসলিম ফুটবলারদের ইফতার করার দৃশ্য বেশ পরিচিত। সম্প্রতি তুরস্কের লিগে খেলোয়াড়দের রোজা ভাঙার সুযোগ করে দিতে খেলা থামিয়ে দেওয়ার ঘটনা বেশ আলোচিত হয়েছিল।

তবে জার্মানির ক্লাব ফুটবলে প্রথমবারের মতো দেখা গেল এমন দৃশ্য।

গত ৬ এপ্রিল জার্মানির শীর্ষ ফুটবল লিগ বুন্দেসলিগায় ৬ এপ্রিল মাইনৎস ও আউগসবুর্গের মধ্যে ম্যাচের ৬৪তম মিনিটের সময় কিছুক্ষণের জন্য খেলা বন্ধ রাখেন রেফারি মাটিয়াস ইওলেনবেক। ওই সময়ের মধ্যে পানি পান করে রোজা ভাঙেন মাইনৎসের মুসলিম ফুটবলার মুসা নিয়াকাতে৷

জার্মানির সংবাদমাধ্যম ‘বিল্ড’-এর বরাতে এমনটাই জানিয়েছে ‘ডয়েচে ভেলে’।

জানা গেছে, ২৬ বছর বয়সী সেন্টার-ব্যাক মুসা ফ্রান্সের নাগরিক। ম্যাচ শেষে ইফতারের সময় খেলা বন্ধ রাখার ব্যাপারে তিনি বলেন, ৬২তম মিনিটে যে ইফতারের সময় হবে তা তিনি জানতেন। তাই দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরুর আগেই রেফারিকে ৬২ থেকে ৭০তম মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় তাকে ইফতার সেরে নেওয়ার সুযোগ দিতে অনুরোধ করেছিলেন তিনি। রেফারি তার অনুরোধ গ্রহণ করে তাকে রোজা ভাঙার সুযোগ করে দেন।

বুন্দেসলিগায় ইফতারের জন্য খেলা বন্ধ রাখার দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে গত ১০ এপ্রিল। সেদিন লাইপজিগ ও হফেনহাইমের খেলার সময় লাইপজিগের মোহামেদ সিমাকানকেও একই সুযোগ দেয়া হয়৷

গত বছর ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে লেস্টার সিটি ও ক্রিস্টাল প্যালেসের ম্যাচে লেস্টারের ডিফেন্ডার ওয়েসলে ফোফানা ও ক্রিস্টাল প্যালেসের মিডফিল্ডার শেকু কুইয়াতেকে খেলা বন্ধ রেখে রোজা ভাঙার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।

খেলাধুলা

টেস্ট ফরম্যাটে বড় দলগুলোর বিপক্ষে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স তেমন ভালো নয়। তাছাড়া দলগুলোর বিপক্ষেও খুব কমই খেলা হয় টাইগারদের।

তারই ফলশ্রুতিতে দীর্ঘ ২৪ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট সিরিজ খেলতে যাবেন মুমিনুল-তামিমরা। আজ রোববার (১৭ এপ্রিল) বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস।

সাদা পোশাকে সর্বশেষ ২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তাদের মাটিতে খেলেছিল বাংলাদেশ। সেবার দুই টেস্টেই ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে টাইগাররা। ফের অস্ট্রেলিয়া সফরে যাবে তারা। তবে সেটির জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও ৫ বছর!

অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ২০২৭ সালে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ আয়োজন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আইসিসির সর্বশেষ সভায় এই ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ড। এর আগের বছর, অর্থাৎ ২০২৬ সালে বাংলাদেশ সফরে আসবে অস্ট্রেলিয়া।

সাংবাদিকদের আজ জালাল ইউনুস বলেন, ‘ইংল্যান্ডের সঙ্গে এখনো কথা হচ্ছে। নিশ্চিত হয়নি। আমরা চেষ্টা করছি ইংল্যান্ডে গিয়ে একটা সিরিজ খেলতে। আমরা আশা করছি ওদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাব। অস্ট্রেলিয়ায় ২০২৭ সালে দুটো টেস্ট খেলতে যাবে বাংলাদেশ। এখনো নিশ্চিত হয়নি। ২০২৬ সালে ওরা আসবে। অস্ট্রেলিয়া আছে, ইংল্যান্ড আছে, সাউথ আফ্রিকা আছে, তাদের সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তো আছেই। কিছু কিছু সিরিজ মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছে, পরে আপনারা জানতে পারবেন। ’

জালাল ইউনুস জানালেন, এফটিপিতে বাংলাদেশ ৪০ টেস্ট, ৭০টি ওয়ানডে আর ৭৬টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ পেতে যাচ্ছে। তার ভাষায়, ‘আলাপ আলোচনা করে যেগুলো চূড়ান্ত করেছি এর মধ্যে ৪০+ টেস্ট , ৭০+ ওডিআই, ৭৬+ আছে টি-টোয়েন্টি। হতে পারে এখান থেকে কিছু বদল হতে পারে। এইগুলো আইসিসি ইভেন্টের বাইরে। এরপর আইসিসির ইভেন্ট তো আছেই। এছাড়া ত্রিদেশীয় সিরিজও খেলতে পারি। ’

খেলাধুলা

দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ লজ্জাজনকভাবে হারের কারনে নেতৃত্ব নিয়ে সমালোচনার মুখে বাংলাদেশের অধিনায়ক মোমিনুলের হক। কিন্তু এমন সমালোচনায় চিন্তিত নন মোমিনুল।

টেস্ট অধিনায়ক মোমিনুলের অধীনে ১৫টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। জিতেছে মাত্র তিনটি ম্যাচ। এরমধ্যে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দু’টি এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটি। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথম জয়টি ছিলো ঐতিহাসিক। কিন্তু বাংলাদেশের টেস্ট পারফরমেন্সের চিত্র অনুসারে নিউজিল্যান্ডে বিপক্ষে জয়টি ছিল দ্বৈবাত।

মোমিনুলের অধীনে বাংলাদেশ এমন কিছু টেস্ট হেরেছে যেগুলোতে জয়ের দিক দিয়ে ফেভারিট ছিলো টাাইগাররা। গত বছর ঘরের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দু’টি টেস্ট হেরেছে বাংলাদেশ। কিন্তু ঐ দু’টি টেস্ট জয়ের দারুন সুযোগ ছিলো তাদেও টাইগারদের।

সদ্য শেষ হওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজেও এমন ঘটনা ঘটেছে। শীর্ষস্থানীয় সাতজন সেরা খেলোয়াড়কে ছাড়াই বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে নেমেছিলো প্রোটিয়ারা। প্রথমবারের মত দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পর আত্মবিশ্বাসে টগবগ করছিলো বাংলাদেশ। তাই টেস্ট সিরিজও জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ^াসী ছিলো তারা।

কিন্তু টেস্ট সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিনারদের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করে বাংলাদেশ। দুই প্রোটিয়া স্পিনার কেশব মহারাজ এবং সাইমন হার্মার, দু’জনে একত্রে ৪০টির মধ্যে ২৯টি উইকেট নিয়েছিলেন।

অধিনায়ক হিসেবে সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিতে পারেননি মোমিনুল। দুই টেস্টে মাত্র ১৩ রান করেন তিনি।

দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দেশে ফেরা প্রথম বহরের সদস্য হিসেবে আজ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পা রাখেন মোমিনুল। সেখানে তিনি বলেন, ‘ফলাফল এনে দিতে না পারলে বিশ্বেও যে কোন অধিনায়ককে চাপে ফেলবে, সমস্যায় ফেলবে।

রুটের দিকে তাকান (জো রুট, ইংল্যান্ডের অধিনায়ক), সে ইতিমধ্যে সাতটির মধ্যে ছয়টি সেঞ্চুরি করেছে। কিন্তু দল জিততে না পারায়, প্রচন্ড চাপের মধ্যে আছেন তিনি।’

বৃহস্পতিবার যথাক্রমে সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটে এবং বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বহরের খেলোয়াড়রা দেশে ফিরবেন।

মোমিনুল বলেন, ‘অধিনায়কত্ব এমন একটি জিনিস, যদি আপনি পারফর্ম করতে না পারেন তবে চাপ আপনাকে আঁকড়ে ধরবে।

আর ঐ ধরনের চাপ নেয়ার মত মানসিকতা থাকতে হবে। তাই এটা নিয়ে আমি চিন্তি নই। একটি দেশের প্রতিনিধিত্ব করছি আমি। তাই আমাকে চাপ নিতে হবে।’

২০১৯ সালে অধিনায়কত্ব নেয়ার পর ১৫ টেস্টে ৩৪ দশমিক ৬৫ গড়ে ৯০১ রান করেছেন মোমিনুল। অধিনায়ক হবার আগে তার ব্যাটিং গড় ছিল ৪১ দশমকি ৪৭। মোমিনুলের গড় পরে যাওয়ায়, বুঝা যাচ্ছে, অধিনায়কত্বের চাপ ব্যাটিংয়েও প্রভাব ফেলছে।

ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদেও ধারনা ছিল নিজের পারফরমেন্স দিয়ে দলকে উজ্জীবিত করতে পারবেন মোমিনুল। কিন্তু দিন-দিন উদ্বেগজনক হয়ে পড়ছে বাংলাদেশের পারফরমেন্স।

তবে মোমিনুল জানান, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের পর টেস্ট দলকে নিয়ে প্রত্যাশা অনেকখানি বেড়ে গেছে।

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি না, এই পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। প্রত্যাশা বেশি ছিল। আপনারা ভেবেছিলেন, নিউজিল্যান্ডে জয়ের পর আমরা এক নম্বর দল হয়ে গেছি। কিন্তু এটা একটা ভুল চিন্তা। ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ একটি ভারসাম্যপূর্ণ দল কিন্তু টেস্টে বাংলাদেশ কখনওই ভারসাম্যপূর্ণ দল ছিলো না। তাই আপনি যা বলেছেন, তা ঠিক নয়ৃ, এই পরিস্থিতি উদ্বেগজনক নয়।

তবে আমরা যেখানে ছিলাম, সেখানেই আছি।’

মোমিনুল আরও জানান, টেস্ট ক্রিকেটে উন্নতির শেষ নেই।

তিনি বলেন, ‘আমরা ওয়ানডে সিরিজ জিতেছি, যা একটি ইতিবাচক দিক। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটের কথা বললে, উন্নতির শেষ নেই। টেস্ট ওয়ানডে ক্রিকেটের মতো নয়। এটা পাঁচ দিনের ক্রিকেট এবং আপনাকে পাঁচ দিন, সব বিভাগেই ভালো করতে হবে। আপনাকে সেশন জিততে হবে।’

মোমিনুল আরও মনে করেন, ‘ফল যাই হোক না কেন, শেখার এবং উন্নতি করার অনেক জায়গা আছে। আমাদের জানতে হবে, কিভাবে প্রতিটি সেশনে প্রতিপক্ষের উপর আধিপত্য বিস্তার করা যায়। কিভাবে বাজে পরিস্থিতি থেকে ফিরে আসা যায়, কিভাবে নতুন বল এবং পুরনো বলে বোলিং করতে হয়। আমরা প্রতিটি সিরিজ থেকে শিখছি এবং আমাদের সেই ভুলগুলো সংশোধন করতে হবে। আমাদেও জানতে হবে, কিভাবে ভালোভাবে আমাদের পরিকল্পনা কার্যকর করতে হবে।’

খেলাধুলা

ডারবান টেস্টের মতোই পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টে সম্ভাব্য লজ্জার অপেক্ষায় বাংলাদেশ দল। ডারবানে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৭৪ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৫৩ রানেই অলআউটের লজ্জায় পড়ে যায় মুমিনুল হক সৌরভরা।

সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টেও সেই একই পরিনতির দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশ দল। রোববার তৃতীয় দিনের শেষ বিকালে মাত্র ৯.১ ওভার খেলতেই টপঅর্ডার ৩ উইকেট হারায় সফরকারীরা।

ইনিংসের প্রথম ওভারেই ফেরেন তরুণ ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। প্রথম ইনিংসে ২ বলে শূন্য রান করা এই তরুণ দ্বিতীয় ইনিংসে পেয়েছেন গোল্ডেন ডাক।

জয় আউট হওয়ার পর ব্যাটিংয়ে নেমে তৃতীয় ওভারেই ফেরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ১০ বল খেলে মাত্র ৭ রান করার সুযোগ পান তিনি।

এরপর মুমিনুল হক সৌরভের সঙ্গে জুটি গড়ে দিনের খেলা শেষ করতে পারেননি অন্য ওপেনার তামিম। তৃতীয় দিনের শেষ বিকালে সম্ভাব্য ১৫ ওভার ব্যাটিং করতে নেমে ৯.১ ওভার খেলতেই বাংলাদেশ হারায় ৩ উইকেট। তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে স্লিপে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন দেশসেরা এই ওপেনার।

ডারবানে হেরে পোর্ট এলিজাবেথে সিরিজ বাঁচাতে ৪১২ রানের টার্গেটে খেলছে বাংলাদেশ।

টাইগারদের ২১৭ রানে অলআউট করে ফলোঅনের লজ্জা দেওয়ার সুযোগ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার।

কিন্তু ফলোঅনে না ফেলে জয়ের লক্ষ্যে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে পড়ে প্রোটিয়া ক্রিকেটাররা। ২৩৬ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেটে ১৭৬ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে স্বাগতিকরা।

সিরিজের প্রথম টেস্ট ডারবানে ২৭৪ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫৩ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। পোর্ট এলিজাবেথে ৪১২ রানের টার্গেট পেল মুমিনুলরা।

পোর্ট এলিজাবেথে টস জিতে প্রথম ইনিংসে ৪৫৩ রানের বিশাল সংগ্রহ গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা।

জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ইনিংসে ২১৭ রানেই অলআউট বাংলাদেশ।

দ্বিতীয় ইনিংসে ৪১২ রানের টার্গেট পায় মুমিনুলরা।

খেলাধুলা

স্কোরবোর্ডে ৮২ রান থাকা পর্যন্ত বাংলাদেশের ইনিংস ভালোই চলছিল। এর পরই হঠাৎ ছন্দপতন ঘটে। দারুণ খেলতে থাকা তামিম ইকবাল ৪৭ রান করে বিদায় নেন। এরপর ৪০ রানের মধ্যেই একে একে নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক ও লিটন দাস বিদায় নেন। তখনই ফলোঅনের শঙ্কা জাগে।

তবে আশার কথা হলো দিনের বাকিটা সময় আর কোনো উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ। পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টের দ্বিতীয় দিন (৯ এপ্রিল) শেষে টাইগারদের সংগ্রহ ৫ উইকেট হারিয়ে ১৩৯ রান। অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম ৩০ ও ইয়াসির আলি রাব্বি ৮ রানে অপরাজিত আছেন। তারা আগামীকাল তৃতীয় দিন আবারও ব্যাটিংয়ে নামবেন।

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংস থেকে এখনো ৩১৪ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। স্বীকৃত ব্যাটার বলতে আছেন কেবল মেহেদী হাসান মিরাজ। তারা স্কোর কোথায় নিয়ে যেতে পারেন এখন সেটাই দেখার বিষয়। তবে একটা প্রশ্ন এখনই ঘুরপাক খাচ্ছে, এই টেস্টে বাংলাদেশের পরাজয় কী নিশ্চিত হয়ে গেলো ?

আজ সারাদিনে মোট ৮৭ ওভার ২ বল খেলা হয়েছে। এতে রান উঠেছে ৩১৪ এবং উইকেট পড়েছে ১০টি।

খেলাধুলা

সকালের সেশনটা নিঃসন্দেহে দক্ষিণ আফ্রিকার। ছন্নছাড়া বোলিংয়ে ওই সেশনে হতাশাই জুটেছে টাইগার বোলারদের ভাগ্যে।

মাঝের সেশন থেকে আবার ঘুরে দাঁড়ানোর শুরু। আর শেষ সেশনটা তো উল্টো ছড়ি ঘুরিয়েছেন বাংলাদেশ দলের বোলাররা। বিশেষ করে তাইজুল ইসলাম। শেষ দুই সেশনে তিনটি বড় উইকেট শিকার করেছেন তিনি। আর শেষ বিকেলে পথের কাঁটা হয়ে থাকা টেম্বা বাভুমাকে ফিরিয়ে টাইগার শিবিরে স্বস্তি এনে দেন খালেদ আহমেদ।
সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনে আজ শুক্রবার পোর্ট এলিজাবেথে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। দিন শেষে তারা ৫ উইকেট হারিয়ে ২৭৮ রান সংগ্রহ করেছে।

এই ম্যাচের শুরুর দিনেই বাংলাদেশের বোলারদের জন্য বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে আম্পায়ারদের ভুল সিদ্ধান্ত দেওয়ার প্রবণতা। প্রথম টেস্টের মতো এই ম্যাচেও যেন ভুল সিদ্ধান্ত দেওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন দুই আম্পায়ার মারিস এরাসমাস ও আলাহুডেন পালেকার। প্রথম দিনেই দুইবার রিভিউ নিয়ে উইকেট আদায় করেছে বাংলাদেশকে। দুইবারই বোলার তাইজুল ইসলাম। তবে সঠিক সময়ে রিভিও নেওয়ায় টাইগার দলপতি মুমিনুল ইসলাম প্রশংসার দাবিদার। আগের ম্যাচে তার রিভিও নেওয়া নিয়ে সমালোচলার পর আজকে তার সিদ্ধান্ত বেশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।

দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ দলে এসেছে দুই পরিবর্তন। ওপেনার সাদমান ইসলামের পরিবর্তে দলে ফিরেছেন তামিম ইকবাল। চোটে পড়া তাসকিন আহমেদের জায়গায় আসেন স্পিনার তাইজুল। অপরদিকে অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে খেলতে নামে স্বাগতিকরা।

ব্যাট করতে নেমে ভালো শুরু করেন দ. আফ্রিকার দুই ওপেনার এলগার ও সারেল এরউই। ৭২ বলে ৫২ রানের জুটি গড়েন তারা। দ্বাদশ ওভারের শেষ বলে জুটি ভাঙেন বাংলাদেশের পেসার খালেদ আহমেদ। উইকেটের পেছনে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ২৪ রানে সাজঘরে ফেরেন সারেল। এরপর এলগারকে সঙ্গ দেন কিগান পিটারসেন। একপ্রান্তে থিতু হয়ে ব্যাট করে ৬৬ বলে ৬ বাউন্ডারিতে অর্ধশতক তুলে নেন এলগার। তার ব্যাটে ভর করেই প্রথম সেশনে ১০৭ রানের সংগ্রহ পায় দ. আফ্রিকা। দ্বিতীয় সেশনেও দারুণ ব্যাট করছিলেন এলগার। ছুটছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। তবে উড়তে থাকা এলগারকে মাটিতে নামান তাইজুল।

দীর্ঘদিন পর দলে ফেরা তাইজুলের কুইকারে পিছিয়ে মারতে চেয়েছিলেন এলগার। কিন্তু তার ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটকিপার লিটন দাসের গ্লাভসে জমা হয়। ফলে শেষ হয় এলগারের ৮৯ বলে ৭০ রানের ইনিংস। সেই সঙ্গে ভাঙে কিগান পিটারসেনের সঙ্গে তার ৮১ রানের জুটি। এলগার থামলেও পিটারসেন ছুটতে থাকেন আপন গতিতে। এবাদতের এক ওভারে টানা ৩ চার হাঁকিয়ে তুলে নেন ফিফটিও। এর কিছুক্ষণ পর নামে বৃষ্টি। খেলাও বন্ধ থাকে।

খেলা শুরু হলে বাংলাদেশি বোলারদের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ান পিটরসেন। এলগারের মতো অতো আগ্রাসী না হলেও সুযোগ পেলেই বাউন্ডারি হাঁকাচ্ছিলেন তিনি। বৃষ্টির আগে তুলে নিয়েছিলন ফিফটিও। তবে তার রান ৭০-এর ঘরে পৌঁছানোর আগেই আঘাত হানেন তাইজুল। তার গুড লেন্থের বলে এগিয়ে এসে খেলেছিলেন পিটারসেন। তবে বল ব্যাট স্পর্শ না করে প্যাডে লাগে। লেগ বিফোরের আবেদন করলেও আম্পায়ার সাড়া দেননি। তবে রিভিও নিলে ফলাফল বাংলাদেশের পক্ষে আসে। ১২৪ বলে ৬৪ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেন পিটারসেন।

পিটারসেনের বিদায়ের পরও স্বস্তি মেলেনি বাংলাদেশি বোলারদের। কারণ টেম্বা বাভুমা। পিটারসেনের সঙ্গে ৫১ রানের জুটি গড়া এই ব্যাটার সঙ্গীর বিদায়ের পর নিজের কাঁধে দায়িত্ব তুলে নেন। রায়ান রিকেলটনকে নিয়ে দুর্দান্ত এক জুটি গড়ার পাশাপাশি তিনি টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ফিফটি তুলে নেন। আগের ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ৯৩ রান করা এই ডানহাতি ব্যাটার ১১৩ বলে ফিফটি করার পর আরও সংযমী ব্যাটিং করেন। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন রিকেলটন। তাদের জুটিতে আসে ৮৩ রান।

রিকেলটনকেও শেষ পর্যন্ত বিদায় করেন তাইজুল। দিনের শেষ ভাগে তাইজুলের বল রিকেলটনের গ্লাভস স্পর্শ করে লেগ স্লিপে থাকা ফিল্ডার ইয়াসিরের মুঠোয় জমা হলে ক্যাচ আউটের আবেদন করে বাংলাদেশ দল। কিন্তু আম্পায়ার এরাসমাস সরাসরি তা নাকচ করে দেন। তবে তাইজুল ছিলেন আত্মবিশ্বাসী। অধিনায়ক মুমিনুলও রিভিও নেন। রিপ্লেতে দেখা যায় বল রিকেলটনের গ্লাভসের উপরিভাগে লাগে। ফলে সিদ্ধান্ত বদলে আউট দেন আম্পায়ার। ৮২ বলে ৪২ রান করে বিদায় নেন রিকেলটন।

শেষ বিকেলে প্রোটিয়া শিবিরে বড় আঘাত হানেন খালেদ আহমেদ। টাইগার পেসারের বাউন্স ব্যাকফুটে খেলতে চেয়েছিলেন বাভুমা। কিন্তু বল তার ব্যাট ছুঁয়ে জমা হয় স্লিপে থাকা নাজমুল হোসেন শান্তর তালুতে। দারুণ এই ক্যাচে বিদায় হয় ১৬২ বলে ৭ চারে ৬৭ রানের ইনিংস খেলা বাভুমার। অর্থাৎ দিনের প্রথম ও শেষ, দুটি উইকেটই খালেদের। মাঝের ৩টি তাইজুলের। দিন শেষে ১০ রানে কাইল ভেরেইনে ও শূন্য রানে অপরাজিত আছেন উইয়ান মুলডার।

খেলাধুলা

পোর্ট এলিজাবেথ নাম পরিবর্তনের পর এখন হয়ে গেছে ‘গেবেখা।’ তবে এই শহর বা টেস্ট ভেন্যুর চরিত্র তো আর বদলায়নি। সমুদ্রপাড়ের শহরে তীব্র বাতাস বয়ে যায় ১৩৩ বছর পুরনো ক্রিকেট মাঠেও। সফরকারী দলগুলিকে সামলাতে হয় সেই চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশের জন্য তো দেশ থেকে উড়ে যাওয়া বিতর্কের হাওয়া আছেই! সব মিলিয়ে টালমাটাল হওয়ার উপকরণ যথেষ্টই। তবে মুমিনুল হকের দাবি, তার দল দারুণ চনমনে। ভেতরে-বাইরের সব চ্যালেঞ্জ সামলেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাতে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ অধিনায়ক।

ম্যাচ জিতে সিরিজ ড্র করার লক্ষ্য বাংলাদেশের। ম্যাচ ড্র করতে পারলেই সিরিজ জয় দক্ষিণ আফ্রিকার। দুই দলের সেই লড়াই শুরু শুক্রবার, বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায়।

প্রথম টেস্টে প্রায় চার দিন পর্যন্ত মোটামুটি লড়াইয়ে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ দিনে দলের ব্যাটিং ধসে পড়ে ভয়াবহভাবে। স্রেফ ৫৩ রানে গুটিয়ে ম্যাচ হারতে হয় ২২০ রানে।

অমন ধসের পর দলের মনোবলে চিড় ধরা অস্বাভাবিক নয়। অবস্থা আরও নাজুক হয়ে ওঠে টেস্টের পর থেকে ছড়াতে থাকা বিতর্কের নানা উড়ো খবরে। টস জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত, সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর সম্পর্কের টানাপোড়েন, এসব নিয়ে গত কয়েকদিনে দেশের কিছু সংবাদমাধ্যমে নানা খবর হয়েছে। সেই বিতর্কের ঢেউ দলকেও স্পর্শ করেছে কিছুটা। কিছু কিছু খবরে কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে অধিনায়ক মুমিনুলকেও।

টেস্ট শুরুর আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক অবশ্য দাবি করলেন, দলের ভেতরে সুবাতাসই বইছে।

“পাঁচ দিনের খেলায় আমরা চার দিন খুব ভালো ক্রিকেট খেলেছি। একটা দিন প্রথম সেশনটা আমরা খুব বাজে খেলেছি। আমার কাছে মনে হয় এরকম হয়, মাঝে মধ্যেই হয়। আমার কাছে মনে হয় ইতিবাচক অনেক কিছু ছিল। তাসকিন ভালো বোলিং করেছে, খালেদ ভালো বোলিং করেছে। জয় খুব ভালো ইনিংস খেলেছে, লিটনও খুব ভালো ব্যাটিং করেছে।”
“মোটামুটি সবাই রানে আছে, আঁটসাঁট ছিল। দল হিসেবে শুধু আমরা শেষ ইনিংসটি খুব বাজে ব্যাটিং করে ফেলেছি। এখানে আমার কাছে মনে হয়, সবাই খুব ভালো মেজাজে আছে, সবাই ফুরফুরে আছে, খুব আত্মবিশ্বাসী আছে পরের টেস্ট নিয়ে।”

টেস্ট শুরুর আগে একটা স্বস্তির খবর পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম টেস্টে শেষ মুহূর্তে পেটের পীড়া নিয়ে ছিটকে পড়া অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবাল এখন পুরোপুরি সুস্থ বলেই জানান অধিনায়ক। সব ঠিকঠাক থাকলে প্রায় এক বছর পর টেস্ট খেলবেন দেশের সফলতম ওপেনার। সেক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবেই জায়গা হারাবেন সাদমান ইসলাম।

একাদশে আরেকটি পরির্বতনও নিশ্চিত। চোট নিয়ে দেশে ফিরেছেন ফাস্ট বোলার তাসকিন আহমেদ। তার সঙ্গে ফিরে এসেছেন চোটাক্রান্ত আরেক পেসার শরিফুল ইসলাম। দ্বিতীয় টেস্টে তাসকিনের জায়গায় কোনো পেসার খেলবেন নাকি স্পিনার, সেটি ম্যাচের দিন উইকেট দেখে ঠিক করা হবে বলে জানালেন মুমিনুল।

একাদশে শেষ পর্যন্ত যারই জায়গা হোক, তিনি ও গোটা বোলিং আক্রমণকে নতুন একটা পরীক্ষায়ও পড়তে হবে পোর্ট এলিজাবেথে। বাংলাদেশের বোলিং কোচ ও এই মাঠের অনেক লড়াইয়ের যোদ্ধা অ্যালান ডোনাল্ড এখানে আসার পরই বলে দিয়েছেন, এখানকার তীব্র বাতাসের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে দলকে। বিশেষ করে বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে। সেই বাতাস আবার দিক বদলাতে থাকে ক্রমাগত। স্থানীয় ক্রিকেটাররা সেটিতে অভ্যস্ত, কিন্তু বাংলাদেশের জন্য নিশ্চিতভাবেই হবে বড় পরীক্ষা।

মুমিনুল অবশ্য যথারীতি ইতিবাচকতার সুর তুলেই বললেন, বাতাসের ঝাপটা গায়ে মাখতে তারা প্রস্তুত।

“একেক জায়গায় একেক রকম পরিস্থিতিতে পড়তেই পারেন। এটা ক্রিকেটে নয় শুধু, সবক্ষেত্রেই হয়। এটার সঙ্গে মানিয়ে নিয়েই খেলতে হবে। একেক সময় একেক কন্ডিশন থাকবে, ইংল্যান্ডে একরকম থাকে, নিউ জিল্যান্ডে একরকম, সাউথ আফ্রিকায় ভিন্ন। আসলে মানিয়ে নিয়ে খেলাটা হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমার কাছে মনে হয়, সবাই মানিয়ে নিয়ে খেলবে। আমরা ওভাবেই মানসিক প্রস্তুতি নিয়েছি।”
ম্যাচের আগের দিন উইকেট দেখে একটু শুষ্ক মনে হয়েছে মুমিনুলের কাছে। সেক্ষেত্রে স্পিনারদের ভূমিকা যেমন থাকতে পারে, দক্ষতা থাকলে রিভার্স সুইংও রাখতে পারে বড় ভূমিকা। অধিনায়ক নিজেই সেখানে যোগ করলেন, বাতসের কারণে এয়ার সুইংও করতে পারে বল।

সব মিলিয়ে বাতাবরণে বার্তা কঠিন সময়ের। তবে মুমিনুলের বার্তা একটিই। মাঠে নেমে নিজেদের উজাড় করে দেওয়া।

“অবশ্যই আমি জেতার জন্য খেলব। প্রতি সেশন শতভাগ দিয়ে খেলব। আমরা যদি খুব বেশি অন্য বিষয়ে কান দেই, বাইরে কী হচ্ছে না হবে বা আগের ম্যাচে কি হয়েছে, সেসব চিন্তা না করে ১৫ সেশন, অন্তত ১২-১৩ সেশন যেন নিয়ন্ত্রণ করে খেলতে পারি, সেই চিন্তা-ভাবনা নিয়ে এগোনো উচিত আমাদের।”

খেলাধুলা

আর্জেন্টিনার ফুটবল ঈশ্বর দিয়েগো ম্যারাডোনার হাত দিয়ে গোল করার সেই মুহূর্তটি বিশ্ব ফুটবলে বেশ আলাদাভাবে দাগ কেটে আছে । সেবার ১৯৮৬ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জোড়া গোলের সেই ম্যাচে তার সেই গোলটি ফুটবল বিশ্বে হ্যান্ড অব গড নামেও পরিচিত।

সেই ম্যাচে আর্জেন্টিনার যে জার্সি পরে ম্যারাডোনা মাঠ মাতিয়েছিলেন সেটা নিলামে উঠেছে।
এই নিলামের ব্যবস্থা করেছে সাউথবাই। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, প্রায় চার মিলিয়ন পাউন্ডের বেশি অর্থ পাওয়া যাবে। অনলাইনে নিলাম চলবে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত।

এদিকে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেই ম্যাচের পর ইংলিশ মিডফিল্ডার স্টেভ হজের সঙ্গে এই জার্সি বদল করেন ম্যারাডোনা। এর পর থেকে ঐতিহাসিক জার্সিটি স্টেভের কাছেই সংরক্ষিত ছিল। যা পরে ম্যানচেস্টারে ইংল্যান্ড জাতীয় ফুটবল দলের জাদুকরে সংগ্রহ করে রাখা হয়।

খেলাধুলা

ডারবান টেস্টে বড় ব্যবধানে হারার পর মুমিনুল হক অভিযোগ করলেন, মাঠে তাদেরকে বাজেভাবে গালাগাল করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটাররা। মাঠের আম্পায়াররা সেদিকে ঠিকভাবে নজর দেননি বলেও দাবি বাংলাদেশ অধিনায়কের।

টেস্টের শেষ দিকে বাংলাদেশের ব্যাটিং মুখ থুবড়ে পড়ে প্রবলভাবে। ৭ উইকেট নিয়ে দিন শুরু করলেও তারা টিকতে পারে স্রেফ ৫৫ মিনিট। কেশভ মহারাজ ও সাইমন হার্মার দুই প্রান্ত থেকে বোলিং করে শেষ করে দেন বাংলাদেশের ইনিংস। ৫৩ রানে গুটিয়ে বাংলাদেশ ম্যাচ হারে ২২০ রানে।

ব্যাটিংয়ে বাজে প্রদর্শনীর পর সংবাদ সম্মেলনে মুমিনুল বললেন, মাঠে বাজে পরিস্থিতির স্বীকার হতে হয়েছিল তাদের।

“স্লেজিং তো হয় মাঠে। স্লেজিং হবে, এটা স্বাভাবিক। স্লেজিং যদি মাঝেমাঝে অ্যাবিউসের কাছে চলে যায়, তখন এটা খুব খারাপ। আমার কাছে মনে হয়, ওরা অ্যাবিউস করছিল, খুব বাজেভাবে। যেটা আম্পায়ারও জিনিসগুলো আমার কাছে মনে হয়… ওইভাবে ওদের নোটিশ করেনি।”

কোন মাত্রায় ‘অ্যাবিউস’ করা হয়েছে, তা অবশ্য খোলাসা করলেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক, “এগুলো শেয়ার করা যাবে না। আম্পায়াররা হয়তো ওভাবে খেয়াল করেননি।”

মুমিনুল অবশ্য বললেন, তারা মাঠে নিজে থেকে আম্পায়ারদের জানাননি। ম্যাচ রেফারির কাছেও কোনো অভিযোগ এখনও করেননি।

মুমিনুলের তোলা অ্যাবিউসের অভিযোগ নিয়েই শুধু নয়, এই টেস্টের দুই দক্ষিণ আফ্রিকান আম্পায়ারের আম্পায়ারিং নিয়ে আলোচনা চলছিল আগে থেকেই। বিশেষ করে চতুর্থ দিনে আম্পায়ারদের প্রায় সবকটি ‘ক্লোজ কল’ দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বাংলাদেশের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান টুইট করে আইসিসিকে বলেন নিরপেক্ষ আম্পায়ার আবার ফেরত আনতে। পরে দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে আম্পায়ারিং নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ।

এবার মুমিনুলের কণ্ঠেও সেই একই সুর। বাংলাদেশ অধিনায়ক সরাসরিই বললেন, আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত স্বাগতিকদের পক্ষে গেছে।

“আম্পায়ারিং আমাদের হাতে নেই। তবে আমার মনে হয়, আইসিসির এখন এগুলো নিয়ে চিন্তাভাবনা করা উচিত। নিরপেক্ষ আম্পায়ার আবার নিয়ে আসা উচিত, কোভিডের আগে যে পরিস্থিতি ছিল। এখন তো কোভিড মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে। আইসিসির এগুলো খেয়াল রাখা উচিত।”

“শুধু এই সিরিজেই নয়, অন্য সিরিজেও কিন্তু এরকম হয়েছে যে আম্পায়াররা ওই দলের পক্ষে (স্বাগতিক) সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকে। এগুলো আমরা এই সিরিজেও দেখেছি, আগের সিরিজেও দেখেছি।”