খেলাধুলা

তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ১০ রানে জিতেছে বাংলাদেশ নারী ‘এ’ দল।

পরপর দুই ম্যাচে সহজ জয়ের পর তৃতীয়টিতে কঠিন পরীক্ষায় পড়ল বাংলাদেশ নারী ‘এ’ দল। তবে ব্যাটারদের ব্যর্থতার দিন দায়িত্ব নিলেন বোলাররা। অল্প পুঁজি নিয়েও তাই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারল সফরকারীরা।

খেলাধুলা

শ্রীলংকায় বিজয়কেতন ওড়াচ্ছে বাংলাদেশের মেয়েরা। ‘এ’ দলের সফরে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে স্বাগতিক ‘এ’ দলকে ৭ উইকেটে হারিয়েছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এবার দ্বিতীয় ম্যাচে তাদের ১০৪ রানের বিশাল ব্যবধানে হার উপহার দিয়েছে বাংলাদেশ।

অক্টোবরে আরব আমিরাতে বসবে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সে টুর্নামেন্টের প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই জাতীয় দলের প্রায় সব ক্রিকেটারকে নিয়েই শ্রীলংকা সফরে খেলছে বাংলাদেশ। জাতীয় দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি ছাড়াও আছেন অভিজ্ঞ জাহানারা ও শামীমা সুলতানারাও।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) কলম্বোর পি সারা ওভালে টস হেরে শুরুতে ব্যাট করে বাংলাদেশ। ২০ ওভার ব্যাট করে পায় ১৬৪ রানের সংগ্রহ। জবাবে মাত্র ৬০ রানেই গুটিয়ে গেছে স্বাগতিক মেয়েরা।

টস হেরে ব্যাট করা বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫০ রান করেন সাথি রানি। দ্বিতীয় উইকেটে সুবহানা মুস্তারির সঙ্গে ৬৮ বলে ৮০ রানের জুটি গড়ে তোলেন তিনি। অন্যদিকে সুবহানা মুস্তারির ব্যাটে আসে ৩৯ বলে ৩৯ রান। এদিন নিগার সুলতানা জ্যোতি খেলেন ২৪ বলে ৩৪ রানের ইনিংস। লঙ্কানদের হয়ে সর্বোচ্চ দুটি উইকেট শিকার করেছেন মাল্কি মাদারা।

১৬৫ রানের বড় টার্গেট তাড়া করতে নেমে পায়ের তলায় মাটি খুঁজে পায়নি শ্রীলংকা। ব্যাট হাতে দুই অঙ্কের কোটা স্পর্শ করতে পেরেছেন কেবল দুই ওপেনার কৌশিনী (১১) ও নেথমি পূর্ণা (১৮)। বাকি ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ১৬.৪ ওভারেই গুটিয়ে যায় লংকানরা।

বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে ৪ রান খরচায় চার উইকেট শিকার করেন অধিনায়ক রাবেয়া খান। দুটি করে উইকেট যায় সুলতানা ও ফাহিমা খাতুনের ঝুলিতে।

খেলাধুলা

স্বাগতিক পাকিস্তানকে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ। নিশ্চিতভাবে এ সাফল্য নাজমুল হোসাইন শান্তদের ভারত সফরে অনুপ্রাণিত করবে। ভারতের বিপক্ষে ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে টেস্ট সিরিজ।

সেই লক্ষ্যে ভারতে রওনা দেওয়ার আগে শান্তদের জন্য এলো আরেকটি সুখবর। পাকিস্তানে বিরাট অর্জনের স্বীকৃতিতে বড় অঙ্কের বোনাস পাচ্ছেন টাইগাররা। যা সামনে আরও ভালো করতে উদ্বুদ্ধ করবে তাদের।

বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, এ বোনাস-পুরস্কারের পরিমাণ ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা। শনিবার বিকালে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে শান্ত-মুশফিকদের হাতে এ অর্থ তুলে দেবেন ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে টানা দুই টেস্টে ১০ ও ৬ উইকেটে জয় পায় বাংলাদেশ। এর পর দেশে ফিরে বিমানবন্দরে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হন টাইগাররা।

সিরিজ জেতার পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস অধিনায়ক নাজমুল হোসাইন শান্তকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। তখনই পুরো দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়েছিলেন তিনি।

যার ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করেন পাকিস্তান সিরিজজয়ী বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্যরা। ঐতিহাসিক সিরিজ জেতায় সেখানে পুরো দলকে প্রধান উপদেষ্টা সংবর্ধনা দিয়েছেন।

সাধারণভাবে বাংলাদেশ ক্রিকেটে একটি বিষয় প্রচলিত আছে যে, সংবর্ধনা মানেই পুরস্কার। প্রধান উপদেষ্টার সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ঘিরে এমন আলোচনাই হচ্ছিল। ক্রিকেটাররা হয়তো গাড়ি, বাড়ি, জমি কিংবা টাকা পয়সা পেতে যাচ্ছেন!

কিন্তু পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জেতার পর বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের সংবর্ধনা দেওয়া হলেও কোনো পুরস্কারের ঘোষণা আসেনি। এবার মিলছে সেই প্রাপ্তিও।

খেলাধুলা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করেছেন পাকিস্তান সিরিজ জয়ী বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল।

বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে যান নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। এ সময় যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নতুন সভাপতি ফারুক আহমেদ ছাড়াও পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম ও প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজনও ছিলেন।

পাকিস্তানের মাটিতে প্রথমবারের মতো টেস্ট সিরিজ জিতে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। জয়ের পরপরই জাতীয় দলকে সংবর্ধনার ঘোষণা দিয়েছিল প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।

সেই সিরিজ শেষে দেশে পৌঁছার পর ব্যস্ত সময় কাটছে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের। চলতি মাসেই ভারত সফর করতে হবে তাদের। সেই মিশনকে সামনে রেখে চলছে অনুশীলন।

গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ব্যস্ত সময় কাটছে ড. ইউনূসেরও। তবে শত ব্যস্ততার মধ্যে বৃহস্পতিবার জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন প্রধান উপদেষ্টা।

প্রসঙ্গত, আগস্ট-সেপ্টেম্বরে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ দুই টেস্ট খেলতে পাকিস্তান সফর করে বাংলাদেশ। এ সফরে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট ও টেস্ট সিরিজ জয়ের গৌরব অর্জন করেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। প্রথম টেস্টে ১০ উইকেটের বড় জয়ের পর দ্বিতীয় টেস্টেও ৬ উইকেটে জয় তুলে নেয় তারা।

সিরিজ জয়ের পর ড. ইউনূস জাতীয় দলকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছিলেন, ‘সরকার এবং আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন। তোমাদের নিয়ে পুরো জাতি গর্বিত।’

খেলাধুলা

বদলি গোলরক্ষক হিসেবে মাঠে নামার ছয় মিনিটের মাথায় হজম করেন গোল। যার ফলে পিছিয়ে থাকা ভারত ফেরে সমতায়।

কিন্তু ৯০ মিনিট শেষে অবিচ্ছিন্নই থাকে দুই দল, খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। যেখানে দুই পেনাল্টি ঠেকিয়ে নায়ক বনে যান গোলরক্ষক মোহাম্মদ আসিফ। বাংলাদেশও তাই ভারতকে টাইব্রেকারে ৪-৩ ব্যবধানে হারিয়ে পৌঁছে যায় সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে।

নেপালের আনফা কমপ্লেক্সে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা শেষ হয় ১-১ ব্যবধানে। শুরুতে অবশ্য এগিয়ে যায় বাংলাদেশই। ম্যাচের ৩৬ মিনিটে ডেডলক ভাঙেন আসাদুল মোল্লা। বাঁ প্রান্ত দিয়ে কোনাকুনি শটে ভারতের জালে বল ঢোকাতে চেয়েছিলেন রাব্বি হোসেন রাহুল। তা অবশ্য ঠেকিয়ে দেন ভারতের গোলরক্ষক প্রিয়াংশ দুবে। কিন্তু ফিরতি শটে ঠিকই জালের ঠিকানা খুঁজে নেন আসাদুল। তার গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।

দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝি সময়ে বল ঠেকাতে গিয়ে গগমসার গোয়ারির সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে বাংলাদেশ গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণের। মাঠে বেশ কিছুক্ষণ সেবা-শুশ্রূষা নেওয়ার পর হাসপাতালে পাঠানো হয় তাকে। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই বদলি গোলরক্ষক হিসেবে নামতে হয় আসিফকে। থিতু হওয়ার আগেই গোল হজম করে বসেন তিনি। ৭৫ মিনিটে নাওবা মেইতেই পাঙ্গামবামের কাটব্যাক থেকে ভারতকে সমতায় ফেরান অধিনায়ক রিকি মিতেই হাওবাম।

শেষেও অবশ্য নাটক কম ছিল না। যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে ভারতীয় গোলরক্ষকের পথ আটকানোয় লাল কার্ড দেখেন বাংলাদেশের কামাকাই মারমা। ৯০ মিনিট শেষে ব্যবধান ১-১ থাকলে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। আসিফও পেয়ে যান শাপমোচনের সুযোগ। প্রথম পেনাল্টিতেই ভারতের থাংলালসুন গাংতের নেওয়া শট ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন তিনি। পরের তিনটি শট অবশ্য আটকাতে ব্যর্থ হন এই গোলরক্ষক। তবে শেষ পেনাল্টি নিতে আসা আকাশ তিরকের শট বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে রুখে দেন তিনি। রুখে দেন ভারতের ফাইনালে যাওয়ার পথও।

বাংলাদেশ অবশ্য একটি শট কম নিয়েছে। তবে চারটি শটের প্রতিটিতেই গোল এনে দেন- পিয়াস আহমেদ নোভা, মইনুল ইসলাম মইন, শাকিল আহাদ তপু ও আশরাফুল হক আসিফ। ফাইনালে আগামী ২৮ আগস্ট স্বাগতিক নেপালের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।

খেলাধুলা

টেস্টে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে হারিয়েছে বাংলাদেশ। সেই জয়ও আবার এলো ১০ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে।

ঐতিহাসিক এ জয়ের পর আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ টেবিলে বড় লাফ দিয়েছে টাইগাররা। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়িনশিপের তালিকায় তিন ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ছয়ে।

গত বছরের ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় দিয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ মিশন শুরু করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু পরের তিন ম্যাচে নিউজিল্যান্ড (১টি) ও শ্রীলঙ্কার (২টি) বিপক্ষে হেরে নয় নম্বরে নেমে যায় তারা। রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট জয়ের পর সেখান থেকে তিন ধাক উপরে উঠেছে বাংলাদেশ।

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের এই চক্রে ৫ ম্যাচের মধ্যে ২টিতে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। তাতে তাদের পয়েন্ট এখন ২৪। সমান পয়েন্ট শ্রীলঙ্কারও, কিন্তু হেড টু হেডে টেবিলের ছয় নম্বরে টাইগাররা। আর শ্রীলঙ্কা আছে পাঁচে।

৯ ম্যাচে ৬ জয়ে টেবিলের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে ভারত। পরের তিনটি স্থানে আছে যথাক্রমে- অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড। তালিকার সাতে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আর আট ও নয়ে আছে যথাক্রমে পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

শেষ দিনে অসাধারণ বোলিংয়ে অবিস্মরণীয় জয় বাংলাদেশের

খেলাধুলা

রাওয়ালপিণ্ডি টেস্টের তৃতীয় দিনের মতো চতুর্থ দিনেও চলল বাংলাদেশের রাজত্ব। এদিন মুশফিকুর রহিমের ১৯১ রানের সঙ্গে লিটন-মিরাজের ফিফটিতে পাকিস্তানের রান টপকে ১১৭ রানের লিড পায় বাংলাদেশ। সে লিডের জবাব দিতে নেমে পাকিস্তান ১ উইকেটে তুলেছে ২৩। ৯৪ রানে পিছিয়ে থেকে শেষ দিন ব্যাট করতে নামবে তারা।

এর আগে মুশফিকের ব্যাটে বাংলাদেশের শুরুটা হয় দুরন্ত। লিটন আগের দিনের স্কোরের সঙ্গে ৪ রান যোগ করতেই ধরেন সাজঘরের পথ। ৫৬ রানে তাকে সাজঘরের পথ চেনান নাসিম শাহ।

এরপরই সপ্তম উইকেটে দুর্দান্ত এক জুটি গড়ে তোলেন মুশফিক এবং মেহেদী হাসান মিরাজ। মোহাম্মদ আলীর বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে মুশফিক ফেরার আগ পর্যন্ত এই জুটিতে যোগ হয় ১৯৬ রান। এর সিংহভাগ রান আসে অল্পের জন্য ডাবল সেঞ্চুরি মিস করা মুশফিকের ব্যাটে।

মিরাজও পিছিয়ে ছিলেন না। দলের নবম ব্যাটার হিসেবে যখন সাজঘরের দিকে হাঁটা ধরেন মিরাজ, তখন তার নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে ৭৭ রান।

মুশফিক-মিরাজ-লিটন এবং তৃতীয় দিনে সাদমান ইসলাম ও মুমিনুল হকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পাকিস্তানের ৪৪৮ রান টপকে বাংলাদেশ পৌঁছায় ৫৬৫ পর্যন্ত। লিড পায় ১১৭ রানের।

সে লিড টপকে যেতে নেমে শুরুতেই শরিফুল ইসলামের শিকার বনে যান পাকিস্তানি ওপেনার সাইম আইয়ুব (১)। দিনশেষে ক্রিজে ছিলেন অন্য ওপেনার আবদুল্লাহ শফিক (১২*) ও পাকিস্তান অধিনায়ক শান মাসুদ (৯)।

খেলাধুলা

টিগ উইলির ফিফটির পাশাপাশি ব্যাক্সটার হল্টের দারুণ ইনিংসে লড়াকু লক্ষ্য পায় পার্থ স্কর্চার্চ। বোলিংয়েও শুরুটা ভালো করে তারা।

তবে মাহফুজুর রহমানের তাণ্ডবে জয় বাংলাদেশ বাংলাদেশ এইচপি। একই সঙ্গে তারা কোয়ালিফাই করে সেমিফাইনালেও।
টপ এন্ড টি-টোয়েন্টি সিরিজে আজ ডারউইনে পার্থ স্কর্চার্চকে ৩ উইকেটে হারায় বাংলাদেশ এইচপি। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১২৯ রান সংগ্রহ করে স্কর্চার্চ। জবাব দিতে নেমে ৩ বল হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ এইচপি।

আগে ব্যাট করতে নামা স্কর্চার্চ শুরুতেই ওপেনার কোরি ওয়েসলিকে হারায়। তবে এই ধাক্কা সামলে ব্যাট চালাতে থাকেন উইলি ও হল্ট। দ্বাদশ ওভারে ২৬ বলে ৩৪ রান করা হল্টকে ফিরিয়ে ব্রেকথ্রু আনেন রিপন মণ্ডল। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে স্কর্চার্চ। যদিও অপর প্রান্তে লড়ে যাচ্ছিলেন উইলি। ৫৬ বলে দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৬ রান করে শেষ ওভারে তিনি শিকার হন আবু হায়দার রনির।

রান তাড়ায় নেমে শুরুটা দেখে খেলতে থাকেন জিসান আলম। তবে অপরপ্রান্তে উইকেটে হারাচ্ছিল বাংলাদেশ এইচপি। তানজিদ হাসান, পারভেজ হোসেন ইমন ও আরিফুল ইসলাম দ্রুত ফিরে যান। এরপর থিতু হন আকবর আলি। দশম ওভারে ২৬ রানে জিসান বিদায় নিরে আকবরকে সঙ্গ দেন শামিম হোসাইন।

পঞ্চদশ ওভারে আকবরকে বিদায় করে ব্রেকথ্রু আনেন রিচার্ডসন। যাওয়ার আগে আকবর খেলেন ৩৩ বলে ৩৫ রানের ইনিংস। এরপর দলকে জয়ের দিকে নিতে থাকেন শামিম ও মাহফুজুর। তবে শেষদিকে শামিম বিদায় নিলে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ এইচপি। যদিও আশা হারাতে দেননি মাহফুজুর। ১৩ বলে ২৬ রানের বিধ্বংসী ইনিংসে দলকে সেমিফাইনালে তোলেন তিনি। শামিম করেন ১৭ বলে ১৬ রান।

খেলাধুলা

দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে এখন পাকিস্তানে অবস্থান করছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। কিন্তু সেখানে অদ্ভুত এক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের। ইন্টারনেটের ধীরগতিতে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বেগ পেতে হচ্ছে সাকিব-শান্তদের।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ক্রিকেট পাকিস্তান জানিয়েছে, সরকারের কিছু নতুন বিধিনিষেধ আরোপের ফলে ইন্টারনেটের গতি কমেছে। দেশটির ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠনের দেওয়া তথ্যমতে, পাকিস্তানজুড়ে ইন্টারনেটের গতি ৩০ থেকে ৪০ ভাগ হ্রাস পেয়েছে।

ইন্টারনেটের গতি কমে যাওয়ায় সামাজিক মাধ্যমের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা কঠিন হয়ে গেছে। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো অভিযোগ করেনি বলে জানিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।

উল্লেখ্য, আগামী ২১ আগস্ট রাওয়ালপিণ্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টেস্ট হবে করাচিতে, ৩০ সেপ্টেম্বর মাঠে গড়াবে সেই ম্যাচ। দুই ম্যাচের এই সিরিজটি আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ।

খেলাধুলা

সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে তারকা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে রেখেই পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের দল ঘোষনা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জাতীয় দলের হয়ে সাকিবের খেলা অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে।

সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগের অধিকাংশ সংসদ সদস্য পলাতক আছেন। সরকার ক্ষমতাচ্যুত হবার সময় গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগে খেলতে কানাডায় ছিলেন আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য সাকিব।

এরপরই সাকিবের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিতয়তার মুখে পড়ে। কিন্তু পাকিস্তান সিরিজে খেলার জন্য সাকিবের সম্মতি নিতে তার সাথে কথা বলে বিসিবির নির্বাচক প্যানেল। এখন যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের সাথে থাকা সাকিব সরাসরি পাকিস্তানে দলের সাথে যুক্ত হবেন।

বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ৬৭ টেস্টের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সাকিব। যেহেতু জাতীয় দলের ক্রিকেট থেকে তামিম ইকবাল দূরে আছেন, তাই বিশেষ করে টেস্ট দলে সাকিবের অভিজ্ঞতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

দল নির্বাচক প্যানেলের চেয়ারম্যান গাজী আশরাফ হোসেন লিপু বলেন, ‘এই সংস্করণে সেরা খেলোয়াড় বাছাই করার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। এটি ভারসাম্যপূর্ণ দল। মুশফিকুর রহিম, মোমিনুল হক এবং সাকিব আল হাসানের মতো খেলোয়াড়রা মোট ২১৬টি ম্যাচ খেলেছেন এবং এমন অভিজ্ঞতার কোন বিকল্প নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে স্পিন বিভাগ সামলাচ্ছেন তাইজুল ইসলাম এবং মেহেদি হাসান মিরাজ। দু’জনে একত্রে ৩৫০টির বেশি উইকেট শিকার করেছেন। আমরা আশা করি নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাস এবং অন্যান্য ব্যাটাররা ভালো করবে। কারণ পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ ক্রিকেট খেলতে হলে দলীয় পারফরমেন্সের প্রয়োজন।’

প্রত্যাশা অনুযায়ী দলে কোন চমক নেই। কারণ টেস্টের বিবেচনায় থাকা খেলোয়াড়দের উপরই আস্থা রেখেছে নির্বাচক প্যানেল।

দলে ফিরেছেন টেস্ট ক্রিকেট থেকে বিরতি নেওয়া পেসার তাসকিন আহমেদ। গত মার্চে শ্রীলংকার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত টেস্ট সিরিজে খেলেননি তিনি। তবে প্রধান নির্বাচক জানিয়েছেন, শুধুমাত্র দ্বিতীয় টেস্টে খেলবেন তাসকিন।

আশরাফ বলেন, ‘তাসকিনসহ আমরা পাঁচজন পেসার বেছে নিয়েছি। তবে শুধুমাত্র দ্বিতীয় টেস্টে খেলবেন তাসকিন। গেল বছরের জুন থেকে টেস্টে বোলিং করছে না সে। এজন্য বড় ফরম্যাটে ছন্দ ফিরে পেতে তাকে পাকিস্তান ‘এ’ দলের বিপক্ষে দ্বিতীয় চার দিনের ম্যাচের জন্য বাংলাদেশ ‘এ’ দলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।’

তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়াও ওয়ানডে ম্যাচের জন্য ‘এ’ দলে কয়েকজন পেসার যোগ দিতে পারে এবং এজন্যই আমাদের ব্যাকআপের প্রয়োজন ছিল। আমাদের পেসাররা বৈচিত্র্যময় বোলিং, গতি এবং বল সুইং করতে পারে। বিশ্বমানের ব্যাটারদের বিপক্ষে তাদের পারফরমেন্স দেখার অপেক্ষায় আছি।’

এ পর্যন্ত পাকিস্তানের মুখোমুখি হওয়া ১৩ টেস্টের একটিতেও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ২০১৫ সালে ঘরের মাঠে ড্র হওয়া ম্যাচটি এখন পর্যন্ত টাইগারদের সেরা সাফল্য। পাকিস্তানের মাটিতে নিজেদের শেষ টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছিলো বাংলাদেশ।

আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সিরিজ খেলতে আগামীকাল পাকিস্তানের উদ্দ্যেশে রওনা দিবে বাংলাদেশ দল।

২১ আগস্ট থেকে রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম টেস্ট এবং ৩০ আগস্ট থেকে করাচিতে দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হবে। প্রথম টেস্ট খেলতে ১৭ আগস্ট রাওয়ালপিন্ডি রওনা হবার আগে ১৪ থেকে ১৬ আগস্ট পর্যন্ত লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে অনুশীলন করবে পুরো দল।

বাংলাদেশ দল : নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মাহমুদুল হাসান জয়, জাকির হাসান, সাদমান ইসলাম, মোমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, লিটন দাস, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান, নাহিদ রানা, শরিফুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ, তাসকিন আহমেদ ও সৈয়দ খালেদ আহমেদ।