খেলাধুলা

টেস্ট ক্রিকেট থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার কথা অবশ্য আগেও বলেছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে এবার আনুষ্ঠানিকভাবে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন বাংলাদেশ দলের এই তারকা ক্রিকেটার।

দীর্ঘ ফরম্যাটের এই ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেও বাকি দুই ফরম্যাটে খেলা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

দীর্ঘ ১৬ মাস টেস্ট ক্রিকেটের বাইরে থাকার পর গত জুলাইয়ে হারারে টেস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দেড়’শ রানের অপরাজিত এক ইনিংস খেলেন তিনি। তারপরই অবশ্য নিজের অবসরের কথা সতীর্থদের জানিয়ে দেন টাইগারদের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। সেই ম্যাচসেরার পুরস্কারও পান মাহমুদউল্লাহ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলা ম্যাচটিই মাহমুদউল্লাহর ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট বলে গণ্য করা হবে।

মাহমুদউল্লাহর অবসরের কথা বাংলাদেশে ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছে পৌঁছালে তারা সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কথা জানান। তবে এতে সাড়া দেননি সাইলেন্ট কিলার। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে তার নেতৃত্বে দলের ভরাডুবির পর এবার আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের অবসরের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলেন তিনি।

দেশের হয়ে এ পর্যন্ত ৫০টি টেস্ট খেলে পাঁচটি শতক ও ১৬টি অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। ৩৩.৪৯ গড়ে করেছেন ২৯১৪ রান। টেস্টে বাংলাদেশের ষষ্ঠ সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক রিয়াদ। পার্ট টাইম বোলিংয়ে নামের পাশে আছে ৪৩টি উইকেটও। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে ৬টি টেস্টে দলকে নেতৃত্বও দিয়েছিলেন তিনি।

 

খেলাধুলা

শারমিন আক্তারের অসাধারণ সেঞ্চুরির পর বোলারদের দাপটে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রকে ২৭০ রানের বিশাল ব্যবধানে হারাল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ৩২২ রানের জবাবে ৩০.৩ ওভারে মাত্র ৫২ রানেই গুটিয়ে যায় জো বাইডেনের দেশ।

বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে সালমা খাতুন, ফাহিমা আক্তার ও রুমানা আহমেদ দুটি করে উইকেট নেন। জাহানারা আলম একটি উইকেট দখল করেন।

এর আগে শারমিন আক্তারের অপরাজিত দুর্দন্ত সেঞ্চুরির সুবাদে যুক্তরাষ্ট্র নারী দলের বিপক্ষে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩২২ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ নারী দল।

এদিন প্রথম বাংলাদেশি নারী ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েও রেকর্ড গড়া হয়নি শারমিন আক্তারের।

কেননা বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব হলেও যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ানডে মর্যাদা না থাকায় আক্ষেপ থাকবে এই ব্যাটারের। এই ম্যাচটি লিস্ট ‘এ’ হিসেবে ধরা হবে।

মেয়েদের ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ২০১৯ সালে লাহোরে পাকিস্তান মেয়েদের বিপক্ষে ২১১।

বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড যৌথভাবে সালমা খাতুন ও রুমানা আহমেদের। ২০১৩ সালে ভারতের বিপক্ষে আহমেদাবাদে অপরাজিত ৭৫ করেন সালমা। পরের ম্যাচে একই প্রতিপক্ষের সঙ্গে একই ভেন্যুতে রুমানাও করেন ৭৫। আর ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শারমিনের সর্বোচ্চ ৭৪।

এবারের ওয়ানডে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে উড়ছে বাংলাদেশ প্রমীলা ক্রিকেট দল। নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে হারানোর পর এবার যুক্তরাষ্ট্রেরি বিপক্ষে দুর্দান্ত ব্যাট করল বাংলাদেশের মেয়েরা।

মঙ্গলবার হারারেতে (২৩ নভেম্বর) টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় যুক্তরাষ্ট্রের অধিনায়ক সিন্ধু শ্রিহর্ষ। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু করেছেন বাংলাদেশি দুই ওপেনার মুর্শিদা খাতুন ও শারমিন আক্তার। দলীয় ৯৬ রানে ৪৭ রান করে মুর্শিদা খাতুনের বিদায়ের পর নিগার সুলতানাকে নিয়ে দলের হাল ধরেন শারমিন আক্তার।

দলীয় ১৪৪ রানে অধিনায়ক নিগার সুলতানা উইকেট হারালেও ব্যাট হাতে আলো ছড়াতে থাকেন শারমিন আক্তার। ৯ চারে ১২০ বল খরচায় শতক তুলে নেন এ ব্যাটার। শেষ পর্যন্ত এই ব্যাটার ১৪১ বলে ১১টি চারে ১৩০ রানে অপরাজিত থাকেন। ব্যাটে ঝড় তোলেন ফারজানা হক। তিনি ৬২ বলে ৬টি চারে ৬৭ রান করেন। এছাড়া অধিনায়ক নিগার সুলতানা ২৬ বলে ৩৩ রান করেন।

খেলাধুলা

রোববার নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে আফগানিস্তানের পরাজয়ের মাধ্যমে বিশ্বকাপের চার সেমিফাইনালিস্ট দলের চূড়ান্ত হয়ে যায়। তবু তখনো ঠিক হয়নি সেরা চারের সূচি। কারণ সবার আগে সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করা পাকিস্তানের শেষ ম্যাচ বাকি ছিল।

রোববার শারজাহ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের জয়ের পর জানা গেলো সেমিতে কোন দলের প্রতিপক্ষ হচ্ছে কারা। বুধবার অনুষ্ঠিত হবে আসরের প্রথম সেমিফাইনাল , পরদিন দ্বিতীয় ফাইনালিস্ট নির্ধারণের লড়াই।

সুপার টুয়েলভে গ্রুপ-১ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইংল্যান্ড, দ্বিতীয় হয়ে উঠেছে অস্ট্রেলিয়া। অন্যদিকে আসরে এখন পর্যন্ত অপরাজিত দল পাকিস্তান হয়েছে গ্রুপ-২’র চ্যাম্পিয়ন। এই গ্রুপের রানারআপ দল নিউজিল্যান্ড।

বুধবার প্রথম সেমিফাইনালে লড়বে গ্রুপ-১’র চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড ও গ্রুপ-২’র রানারআপ নিউজিল্যান্ড। পরে বৃহস্পতিবার ফাইনালে ওঠার মিশনে নামবে গ্রুপ-২’র চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান ও গ্রুপ-১’র রানারআপ দল অস্ট্রেলিয়া।

দুইটি ম্যাচই শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায়। প্রথম সেমিফাইনালের ভেন্যু দুবাই, পরেরটি হবে আবুধাবিতে। সেমিফাইনালে জেতা দুই দলকে নিয়ে শিরোপা নির্ধারণী ফাইনাল ম্যাচ হবে ১৪ নভেম্বর।

খেলাধুলা

আশার আঙিনা থেকে হতাশার দুয়ার যে এত কাছে, তা কী জানতেন মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকরা? অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৭৩ রানে অলআউট হয়ে ৮২ বল বাকি থাকতে আট উইকেটের হারে এবারের টি ২০ বিশ্বকাপ অন্ধকারময় এক পৃথিবী হয়ে রইল বাংলাদেশের জন্য। অবাক পৃথিবী বললেও ভুল হবে না।

বিবর্ণ ব্যাটিং, নখদন্তহীন বোলিং, ক্যাচ ফেলার দৃষ্টিকটু মহড়া এবং বোর্ডের সঙ্গে খেলোয়াড়দের পালটাপালটি বক্তব্য মরুর বুকে এক অসহনীয় বাতাবরণ তৈরি করেছিল। তার ওপর পরিকল্পনাহীন ক্রিকেট এবং মস্তিষ্কশূন্য টিম ম্যানেজমেন্ট লজ্জার চোরাবালিতে ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশকে।

স্বভাবতই এমন মাথা নোয়ানো পারফরম্যান্সের পর ক্রিকেটবিশ্বে মাহমুদউল্লাহদের নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্যের ঝড় বইছে। টি ২০ বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে পাঁচ ম্যাচের সবকটিতে হেরে লজ্জার একশেষ! টাইগারদের নিয়ে অতীতের বন্দনা রূপ নিয়েছে সমালোচনায়। ক্রিকেটবোদ্ধাদের কেউ কেউ তির্যক ভাষায় আক্রমণ করেছেন খেলোয়াড়দের নুয়ে পড়ার মানসিকতার। আবার কেউ কেউ সামর্থ্য নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সাবেক সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী একহাত নিয়েছেন বর্তমান বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসানকে।

শুক্রবার এক টুইটে সাবের চৌধুরী লিখেছেন, ‘মি. পাপনের (নাজমুল হাসান) অধীনে বাংলাদেশ এ নিয়ে চারটি বিশ্বকাপ খেলল। ক্রমে খারাপ থেকে আরও বেশি খারাপের দিকে গেছে গোটা ব্যাপার। সবচেয়ে বেশিদিন ধরে যিনি বিসিবির সভাপতি, তিনি সবচেয়ে বেশি অযোগ্য।’

এখানেই থেমে থাকেননি সাবেক বিসিবি সভাপতি। সাবের চৌধুরী আরও লিখেছেন, ‘বর্তমান বোর্ড সভাপতি আমাদের ক্রিকেটকে মাটিতে নামিয়ে এনেছেন। আর এটা করে তিনি সব সময় অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপান। লজ্জার বিষয় যে, আমাদের বিসিবির টাইগারদের কোনো লজ্জা নেই।’ এ ব্যাপারে নাজমুল হাসানের সঙ্গে বেশ কয়েকবার যোগযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

এদিকে সাবেক অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার মার্ক ওয়াহ কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছেন বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের।

স্টিভ ওয়াহর যমজ ভাই বলেছেন, ‘এমন ব্যাটিং আপনি তৃতীয় শ্রেণির ক্রিকেটেও দেখতে পাবেন না।’ অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি লেগ-স্পিনার শেন ওয়ার্নের মন্তব্য, ‘বাংলাদেশ একেবারেই ফর্মে নেই। ওদের গুঁড়িয়ে দিয়ে আমাদের ছেলেরা দারুণ করেছে। ছেলেদের মানসিকতা ভালো লেগেছে। পশুর মতো খেলেছে ওরা কোনো ভয়ডর ছাড়া। এটাই দরকার।’

ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার ও বিশ্লেষক হর্ষ ভোগলে দুঃখ পেয়েছেন টাইগার-ভক্তদের জন্য। ‘বাংলাদেশ ভীষণ হতাশ করল। প্রতিভাবান খেলোয়াড়রা প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি,’ তার টুইট।

খেলাধুলা

চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যদি বাংলাদেশের কোনো প্রাপ্তি থাকে, সেটি কেবল তাসকিন আহমেদ। প্রতিটি ম্যাচেই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেছেন। গতি, বৈচিত্র ও আগ্রাসনের সঙ্গে ছিল জয়ের তীব্র মানসিকতা। আর সেটিতেই মেতেছেন ক্রিকেট বিশ্বের কিংবদন্তিরা।

অবশ্য বর্তমানে তিন ফরম্যাটেই বাংলাদেশের সেরা বোলার তাসকিন। নিজেকে তিনি প্রমাণও করেছেন। বিশ্বকাপে এসে সেটির ঝলক দেখলো বিশ্ব।

তাইতো বাংলাদেশি পেসারের বন্দনায় মেতেছেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক নাসের হুসেইন। একই সঙ্গে আরও ভালো পারফরম্যান্স করার উপায়ও বাতলে দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি বাংলাদেশের মন্থর উইকেটের সমালোচনা করেছেন এই কিংবদন্তী।

তিনি বলেছেন, ‘তাসকিনের রয়েছে দারুণ রানআপ, অ্যাকশন ও আগ্রাসন। একজন আগ্রাসী পেসারের যেসব গুণাবলী থাকার দরকার তার সবই তাসকিনের মধ্যে আছে। কিন্তু বাংলাদেশের মন্থর উইকেটে তার সঠিক উন্নতি হয়নি। তাসকিন পেসার হয়েই জন্মেছেন। আরও ভালো করতে হলে দেশের বাইরে তার বেশি বেশি ম্যাচ খেলা প্রয়োজন।’

খেলাধুলা

শ্রীলঙ্কাকে ২৬ রানে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। দাপুটে এ জয়ে সবার আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে নাম লেখাল ক্যাপ্টেন ইয়ন মরগানের দল।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দাসুন শনাকা ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙার ব্যাটে জয়ের স্বপ্ন বুনেছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু শেষ দিকে ইংল্যান্ডের দাপুটে জয় হাতছাড়া হয়ে যায় তাদের। ১৯ ওভার শেষে ১৩৭ রানে গুটিয়ে যায় লঙ্কানরা।

৩৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন হাসারাঙা। সমান ২৬ রান করে এনে দেন দাসুন শনাকা ও ভানুকা রাজাপাকসে। চারিথ আসালাঙ্কা ২১ ও আভিশকা ফার্নান্ডো ১৩ রান এনে দেন।

ইংল্যান্ডের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন মঈন আলী, আদিল রশিদ ও ক্রিস জর্ডান। একটি করে উইকেট নেন লিয়াম লিভিংস্টোন ও ক্রিস ওকস।

তার আগে দুরন্ত বোলিংয়ে চেপে ধরে ছিল শ্রীলঙ্কা। তাতে ইংল্যান্ডের রানের চাকা যেন থমকে গিয়েছিল। রান যেন আসতে চাচ্ছিল না ব্যাট থেকে। শেষে জস বাটলারের সেঞ্চুরি আর ইয়ন মরগানের দাপুটে ব্যাটিংয়ে রানের দেখা পায় তারা। দুজনের ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৬৩ রানের পুঁজি গড়ে ইংল্যান্ড।

দলীয় ১৩ রানের মাথায় ফিরে যান ওপেনার জেসন রয়। বিপদ কাটিয়ে ওঠার আভাস দিয়ে ফের খাদের কিনারায় পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড। দলের স্কোর যখন ৩৪, তখন ইংলিশ শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন শ্রীলঙ্কা। এক রানের ব্যবধানে তুলে নেয় তারা ডেভিড মালান ও জনি বেয়ারস্টোর উইকেট।

শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জস বাটলার ও ইয়ন মরগানের ব্যাটিং তাণ্ডবে বিপদ কাটিয়ে ওঠে ৪ উইকেটের বিনিময়ে ১৬৩ রানের লড়াকু পুঁজি গড়ে ইংল্যান্ড।

৬৭ বলে ৬ বাউন্ডারি ও ৬ ছক্কায় ১০১* রানের হার না মানা অনন্য এক ক্রিকেটীয় ইনিংস খেলেন ম্যাচসেরা বাটলার। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম সেঞ্চুরি এটি। শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে টি-টোয়েন্টিতে ক্যারিয়ারের প্রথম শতক পান বাটলার। ৩৬ বলে এক বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায় ৪০ রান তুলে ফেলেন ক্যাপ্টেন মরগান।

রান যা আসার তা জস বাটলার এবং ইয়ন মরগানের ব্যাট থেকেই এসেছে। বাকিরা তো দুই অঙ্কও স্পর্শ করতে পারেননি।

টস জিতে বোলিং করে ওয়ানিন্দু হাসারাঙা ৪ ওভারে ২১ রান খরচ করে ৩ উইকেট শিকার করেন। বাকি একটি উইকেট যায় দুষ্মন্ত চামিরার পকেটে।

খেলাধুলা

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের জয়যাত্রা অব্যাহত রাখলো ফেবারিট ইংল্যান্ড। পরপর টানা তিনটি ম্যাচে পূর্ণাঙ্গ পয়েন্ট অর্জন করলো তারা। এবার তাদের শিকার হয়েছে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়া। ৮ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারলো অ্যারন ফিঞ্চের দল।

শনিবার (৩০ অক্টোবর) রাতে দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টস জিতে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় ইংল্যান্ড। প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১২৫ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় অজিরা। জবাবে ১২৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৫০ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখে সহজেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ইয়ন মরগানের দল।

দলটির পক্ষে সর্বাধিক ৭১ রানে অপরাজিত থাকেন জস বাটলার। মাত্র ৩২ বলে সাজানো তার ইনিংসটিতে ৫টি ছয় ও সমান সংখ্যক ৪ এর মার ছিল। এছাড়া জেসন রয় ২২ ও জনি ১৬ রানে অপরাজিত থাকেন। ফলে মাত্র ১১.৪ বলেই লক্ষ্যে পৌঁছে যেতে সক্ষম হয় ইংল্যান্ড।

এর আগে বোলিংয়েও দাপট দেখিয়েছে ইংলিশরা। যার কারণে পুরো ২০ ওভার খেলেও ১২৫ রানে অলআউট হয়ে যায় অজিরা। দলটির পক্ষে সর্বাধিক ৪৪ রান করেছেন অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। আর এ ইনিংস খেলতে তার ৪৯ বল মোকাবিলা করতে হয়েছে। এছাড়া ম্যাথু ওয়েড ১৮, অ্যাগার ২০ ও কামিন্স ১২ রান করেন।

ইংলিশ বোলারদের মধ্যে সর্বাধিক ৩টি উইকেট শিকার করেছেন ক্রিস জর্ডান। এছাড়া ক্রিস ওকস ও মিলস ২টি এবং আদিল রশিদ ও লিভিংক্সটোন একটি করে উইকেট নেন।

খেলাধুলা

শেষ বলে ৪ রানের প্রয়োজনে কোন রানই নিতে পারলেন না বাংলাদেশের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। আর তাতেই আশা ভরসা শেষ হয়ে গেল বাংলাদেশের। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সপ্তম আসরে সুপার টুয়েলভে গ্রুপ-১এর নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৩ রানে হারলো বাংলাদেশ। সুপার টুয়েলভে টানা তিন ম্যাচের হারে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলার আশা বলতে গেলে শেষ হয়ে গেল টাইগারদের। প্রথম দুই ম্যাচে শ্রীলংকা ও ইংল্যান্ডের কাছে হেরেছিলো বাংলাদেশ। অন্য দিকে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে এসে প্রথম জয়ের মুখ দেখলো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

ম্যাচে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৪২ রান করেছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাবে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৩৯ রান করে হ্যাট্টিক হার বরণ করে বাংলাদেশ।

একাদশে থেকে দু’টি পরিবর্তন এনে শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সুপার টুয়েলভে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচ খেলতে নামে বাংলাদেশ। নুরুল হাসান ও নাসুম আহমেদের পরিবর্তে একাদশে সুযোগ পান সৌম্য সরকার ও তাসকিন আহমেদ। টস জিতে প্রথমে বোলিং করতে নামে বাংলাদেশ।

তৃতীয় ওভারেই প্রথম সাফল্য পেতে পারতো বাংলাদেশ। মুস্তাফিজুর রহমানের বলে পয়েন্টে ঠেলে রান নিতে দৌঁড় দিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপেনার ক্রিস গেইল। কিন্তু অপরপ্রান্তে গেইলের ডাকে সাড়া দেননি আরেক ওপেনার এভিন লুইস। পয়েন্টে থাকা সাকিব আল হাসান বল থ্রো করেছিলেন, কিন্তু তার থ্রো স্টাম্প খুঁজে পায়নি। ফলে এ যাত্রায় বেঁচে যান গেইল।

তবে একই ওভারের শেষ বলে উইকেট শিকারের আনন্দে ভাসে বাংলাদেশ। ফিজের লেগ স্টাম্পের বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে আকাশে তুলে দেন ৯ বলে ৬ রান করা লুইস। স্কয়ার লেগে সেই ক্যাচটি নেন মুশফিকুর রহিম।

নিশ্চিত রান আউট থেকে বাঁচলেও চতুর্থ ওভারে বিদায় ঘন্টা বাজে গেইলের। দ্বিতীয়বারের মত আক্রমনে এসে গেইলকে বোল্ড করেন স্পিনার মাহেদি হাসান। ১০ বল খেলে ৪ রান করে আউট হন আত্মস্বীকৃত ইউনিভার্স বস।

বাংলাদেশী বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং পাওয়ার-প্লেতে সুবিধা করতে না পারা ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২ উইকেটে ২৯ রান সংগ্রহ করে।

এ অবস্থায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের চাপ আরও বাড়িয়ে দেন মাহেদি। সপ্তম ওভারের চতুর্থ বলে মাহেদির বলে লং-অফে সৌম্যকে হাতে ক্যাচ দেন ৭ বলে রা৯ রান করা শিমরোন হেটমায়ার। এতে ৩২ রানে ৩ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অবশ্য উইকেট সংখ্যাটা ৪ হতে পারতো। একই ওভারের তৃতীয় বলে রোস্টন চেজ ক্যাচ দিয়েছিলেন মাহেদিকে। তবে সেটি ধরতে পারেনি টাইগার স্পিনার।

দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে লড়াইয়ে ফেরানোর চেষ্টা করেন চেজ ও অধিনায়ক কাইরন পোলার্ড। বড় জুটির প্রয়োজনে সর্তকতার সাথে খেলছিলেন তারা। হেটমায়ারের আউটের পর ২৩ বলে কোন বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি পায়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মুস্তাফিজুরের করা ১১তম ওভারের শেষ বলে বাউন্ডারি মারেন অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা চেজ। এ সময় বল হাতে উইকেট নিতে না পারলেও, কৃপণ ছিলেন দলের সেরা খেলোয়াড় সাকিব। ২ ওভারে মাত্র ৭ রান দেন তিনি।

১৩তম ওভারে আক্রমনে আসেন বাংলাদেশের পেসার তাসকিন। ঐ ওভারের তৃতীয় বলে ১ রান নিতে গিয়ে অসুস্থতায় আহত অবসর নেন পোলার্ড। ১৬ বল খেলে ৮ রান করেন তিনি।

পোলার্ডের জায়গায় ব্যাটিংয়ে আসেন আন্দ্রে রাসেল। আগের বলে পোলার্ড ১ রান নেয়ায় নন-স্ট্রাইকেই থাকতে হয় রাসেলকে। দুভার্গ্য সেখানেই পেয়ে বসে রাসেলকে।

তাসকিনের ডেলিভারিতে বোলার ব্যাক-ড্রাইভ শট নিয়েছিলেন চেজ। সেই শটে বল পায়ে লাগিয়ে নন-স্ট্রাইকের উইকেট ভাঙ্গেন তাসকিন। তখন লাইনের বাইরে ছিলেন রাসেল। তাতে রান আউট হন রাসেল। তাই কোন বল না খেলেই খালি হাতে ফিরেন বিগ হিটার রাসেল। ৬২ রানে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন রাসেল।

পরের ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের চাপ আরও বাড়ানোর সুযোগ তৈরি করেছিলেন সাকিব। দ্বিতীয় ডেলিভারিতে স্লগ-সুইপ করেছিলেন চেজ। বল হাওয়ায় ভাসলেও মিড উইকেটে সেই ক্যাচ ফেলেন মাহেদি। তখন ২৮ রানে ছিলেন চেজ।

একই ওভারে আবারো উইকেট পাওয়ার সুযোগ হাতছাড়া হয় সাকিবের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের নিকোলাস পুরান উইকেটে ছেড়ে আসায় চতুর্থ ডেলিভারিটি ওয়াইড দিয়েছিলেন সাকিব। এতে স্টাম্পের সুযোগ তৈরি হয়েছিলো। কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি উইকেটরক্ষক লিটন দাস। ফরে ব্যক্তিগত ৩ রানে জীবন পান পুরান।

জীবন পেয়ে মারমুখী হয়ে উঠেন পুরান। সাকিবের করা ১৬তম ওভারের প্রথম দুই বলে ছক্কা মারেন তিনি। ১৮তম ওভারে মাহেদিকেও দু’টি ছক্কা হাঁকান পুরান।

এতে ১৮ ওভার শেষে ৪ উইকেটে ১১৯ রান পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাই শেষ দুই ওভারে পুরান ও চেজের কাছ থেকে চার-ছক্কার ঝড় দেখায় অপেক্ষায় ছিলো ক্যারিবীয়রা। যাতে বাংলাদেশের সামনে লড়াকু দেয়া যায়।

কিন্তু ১৯তম ওভারের প্রথম দুই বলে পুরান ও চেজের বিদায় নিশ্চিত করেন বাংলাদেশের বাঁ-হাতি পেসার শরিফুল ইসলাম। ডিপ কভারে নাইমকে ক্যাচ দেন পুরান। আর বোল্ড হন চেজ। ২২ বলে ১টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৪০ রান করেন পুরান। ৪৬ বলে ২টি চারে ৩৯ রান করেন চেজ। পঞ্চম উইকেটে ৫৭ রান যোগ করেন তারা।

ইনিংসের শেষ ওভারে বল হাতে নিয়েছিলেন মুস্তাফিজ। প্রথম বলে ডোয়াইন ব্রাভোকে শিকার করেন ফিজ। কিন্তু পরের দুই বলে ছক্কা আদায় করে নেন জেসন হোল্ডার। ব্রাভোর আউটে উইকেটে আসেন আহত অবসর নেয়া পোলার্ড। শেষ বলে ছক্কায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস শেষ করেন পোলার্ড। ফলে শেষ ওভার থেকে ১৯ রান তুলেন হোল্ডার ও পোলার্ড। এতে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৪২ রানের লড়াকু স্কোর পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

হোল্ডার ৫ বলে ২টি ছক্কায় অপরাজিত ১৫ এবং পোলার্ড ১টি ছক্কায় অপরাজিত ১৪ রান করেন। বাংলাদেশের মাহেদি-মুস্তাফিজুর-শরিফুল ২টি করে উইকেট নেন। উইকেটশুন্য ছিলেন তাসকিন ও সাকিব। ৪ ওভার করে বল করে তাসকিন ১৭ ও সাকিব ২৮ রান দেন।

জয়ের জন্য ১৪৩ রানের টার্গেটের জবাব দিতে ওপেনিংয়ে পরিবর্তন আনে বাংলাদেশ। লিটনের পরিবর্তে ওপেনার হিসেবে নাইমের সাথে ক্রিজে আসেন সাকিব। টি-টেয়েন্টি ক্যারিয়ারে বাংলাদেশের জার্সি গায়ে এই প্রথম ওপেনিংয়ে নামলেন সাকিব।

সাকিবের ব্যাট থেকেই বাংলাদেশের ইনিংসের প্রথম বাউন্ডারি আসে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হোল্ডারের বলে কভারের উপর দিয়ে বাউন্ডারি মেরে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নেন সাকিব। তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে চার মারেন নাইম। তাই নাইম-সাকিবের কাছ থেকে ভালো শুরুর ইঙ্গিত পেয়েছিলেন ক্রিকেটপ্রেমিরা।

কিন্তু পঞ্চম ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্পিনার আকিল হোসেইনের বলে মিড-অফে হোল্ডারকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন সাকিব। ১২ বলে ৯ রান করেন তিনি।

সাকিবের পর আরেক ওপেনার নাইমও দ্রুত বিদায় নেন। পরের ওভারে নাইমকে বোল্ড করেন হোল্ডার। ১৯ বলে ২টি চারে ১৭ রান করেন নাইম।

২৯ রানে ২ উইকেট হারানো বাংলাদেশ এ ম্যাচেও পাওয়ার-প্লের সুবিধা নিতে পারেনি। ৬ ওভার শেষে ২ উইকেটে ৩৪ রান তুলে তারা।

শুরুর ধাক্কাটা সামলে উঠতে বড় জুটি চেষ্টা করেন তিন নম্বরে নামা লিটন ও চার নম্বরে নামা সৌম্য। ২৯ বলের জুটিতে মাত্র ৩টি চার মারেন লিটন-সৌম্য। এতে ১০ দশমিক ৩ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান দাঁড়ায় ৬০ রান। ঐ ওভারের চতুর্থ বলে হোসেইনের বলে গেইলকে ক্যাচ দিয়ে থামেন সৌম্য। ২টি চারে ১৩ বলে ১৭ রান করেন তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে ৩০ বলে ৩১ রান যোগ করেন তারা।

এরপর নিজের উইকেট বিলিয়ে দেন মুশফিকুর রহিম। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার রবি রামপলকে স্কুপ শট খেলতে গিয়ে বোল্ড হন ৮ রানে থাকা মুশফিক। ১৪তম ওভারে উইকেটে আসেন মাহমুদুল্লাহ। আর ১৬ ওভার শেষে বাংলাদেশের জিততে দরকার পড়ে ৩৩ রান।

১৭তম ওভারে আসে ৩ রান। ১৮তম ওভারে লিটনের চারে বাংলাদেশ পায় ৮ রান। এমন অবস্থায় ২ ওভারে ২২ রানের দরকার পরে বাংলাদেশের। ছক্কা দিয়ে ব্রাভোর করা ১৯তম ওভারের শুরুটা দারুন করেছিলেন মাহমুদুল্লাহ। কিন্তু শেষ বলে বাউন্ডারি লাইনে হোল্ডারের দুর্দান্ত ক্যাচে আউট হন লিটন। ৪৩ বলে ৪টি চারে ৪৪ রান করেন লিটন। এতে শেষ ওভারে ১৩ রানের প্রয়োজন পড়ে বাংলাদেশের।

শেষ ওভারের প্রথম পাঁচ বলে কোন বাউন্ডারি বা ওভার বাউন্ডারি ছাড়া বাংলাদেশ নিতে পারে ৯ রান। তাই শেষ বলে ৪ রানের দরকারে, ব্যর্থ হন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। শেষ বল ডট হওয়াতে ম্যাচ হারে বাংলাদেশ। ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৩৯ রান তুলে ম্যাচ হারে বাংলাদেশ।

২৪ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় অপরাজিত ৩১ রান করেও দলকে জেতাতে পারেননি মাহমুদুল্লাহ। ২ রানে অপরাজিত থাকেন আফিফ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের রামপল-হোল্ডার-রাসেল-হোসেইন ও ব্রাভো ১টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হন পুরান।

আগামী ২ নভেম্বর গ্রুপ পর্বে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। আর ৪ নভেম্বর নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে শ্রীলংকার বিপক্ষে লড়বে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

স্কোর কার্ড : (টস- বাংলাদেশ)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংস :

গেইল বোল্ড ব মাহেদি ৪
লুইস ক মুশফিকুর ব মুস্তাফিজ ৬
চেজ বোল্ড ব শরিফুল ৩৯
হেটমায়ার ক সৌম্য ব মাহেদি ৯
পোলার্ড অপরাজিত ১৪
রাসেল রান আউট (তাসকিন) ০
পুরান ক নাইম ব শরিফুল ৪০
ব্রাভো ক সৌম্য ব মুস্তাফিজ ১
হোল্ডার অপরাজিত ১৫
অতিরিক্ত (বা-১, লে বা-৬, ও-৭) ১৪

মোট (৭ উইকেট, ২০ ওভার) ১৪২

উইকেট পতন : ১/১২ (লুইস), ২/১৮ (গেইল), ৩/৩২ (হেটমায়ার), ৪/৬২ (রাসেল), ৫/১১৯ (পুরান), ৬/১১৯ (চেজ), ৭/১২৩ (ব্রাভো)।

বাংলাদেশ বোলিং :

মাহেদি : ৪-০-২৭-২ (ও-২),
তাসকিন : ৩-০-১৭-০,
মুস্তাফিজ : ৪-০-৪৩-২ (ও-২),
শরিফুল : ৪-০-২০-২ (ও-১),
সাকিব : ৩-০-২৮-০ (ও-২)।

বাংলাদেশ ইনিংস :

নাইম বোল্ড ব হোল্ডার ১৭
সাকিব ক হোল্ডার ব রাসেল ৯
লিটন ক হোল্ডার ব ব্রাভো ৪৪
সৌম্য ক গেইল ব হোসেইন ১৭
মুশফিকুর বোল্ড ব রামপল ৮
মাহমুদুল্লাহ অপরাজিত ৩১
আফিফ অপরাজিত ২
অতিরিক্ত (বা-২, লে বা-১, ও-৮) ১১
মোট (৫ উইকেট, ২০ ওভার) ১৩৯
উইকেট পতন : ১/২১ (সাকিব), ২/২৯ (নাইম), ৩/৬০ (সৌম্য), ৪/৯০ (মুশফিক), ৪/৯০ (মুশফিক), ৫/১৩০ (লিটন)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলিং :

রামপল : ৪-০-২৫-১,
হোল্ডার : ৪-০-২২-১ (ও-২),
রাসেল : ৪-০-২৯-১,
হোসাইন : ৪-০-২৪-১,
ব্রাভো : ৪-০-৩৬-১ (ও-২)।

ফল : ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩ রানে জয়ী।

ম্যাচ সেরা : নিকোলাস পুরান (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)।

খেলাধুলা

এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ দল মনে হচ্ছে পাকিস্তানকে। ব্যাটিং-বোলিং ও ফিল্ডিং সব বিভাগেই তারা দুর্দান্ত। প্রথমে ভারত, এরপর নিউজিল্যান্ড, আর এবার আফগানিস্তানকে হারানো। এর মধ্য দিয়ে সেমিফাইনালে এক পা দিয়ে রাখলো বাবর আজমের নেতৃত্বাধীন পাক বাহিনী।

শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সুপার টুয়েলভের ম্যাচে মুখোমুখি হয় আফগানিস্তান ও পাকিস্তান। টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন আফগান অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটের বিনিময়ে ১৪৭ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় তারা। জবাবে এক ওভার এবং ৫ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় পাকিস্তান।

দলটির পক্ষে সর্বোচ্চ ৫১ রান করেছেন অধিনায়ক বাবর আজম। তিনিই মূলত জয়ের ভিত গড়ে দিয়ে যান। এছাড়া ফখর জামান ৩০, শোয়াইব মালিক ১৯ ও মোহাম্মদ হাফিজ করেন ১০ রান। শেষ দিকে প্রায় হারতে বসেছিল পাকিস্তান। ঠিক এমন সময়ে জ্বলে উঠে আসিফ আলির ব্যাট। ১৯তম ওভারে চারটি বিশাল ছক্কা হাকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন তিনি। মাত্র ৭ বলে ২৫ রান করেন এই ব্যাটার। যার ফলস্বরুপ ম্যাচ সেরার পুরস্কারও তার হাতে উঠেছে।

আফগানদের পক্ষে সর্বোচ্চ ২টি উইকেট শিকার করেছেন রশিদ খান। এছাড়া মুজিব উর রহমান, মোহাম্মদ নবি ও নাভিন উল হক নেন একটি করে উইকেট।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে মোহাম্মদ নবির অপরাজিত ৩৫ ও গুলবাদিনের অপরাজিত ৩৫ রানের ওপর ভর করে ১৪৭ রানের মোটামুটি স্কোর দাঁড় করাতে সক্ষম হয় আফগানিস্তান। এছাড়া নাজিবুল্লাহ ২২, কারিম জানাত ১৫ রান করেন।

পাক বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ২টি উইকেট নিয়েছেন ইমাদ ওয়াসিম। এছাড়া শাহিন আফ্রিদি, হারিস রউফ, হাসান আলি ও শাদাব খান নেন একটি করে উইকেট। এর মধ্য দিয়ে টানা তিন ম্যাচে পূর্ণাঙ্গ ৬ পয়েন্ট অর্জন করলো পাকিস্তান। গ্রুপ টেবিলেও তারা শীর্ষে অবস্থান করছে।

খেলাধুলা

নিশ্চিত জয়ের ম্যাচ হাতছাড়া করেছে বাংলাদেশ। রবিবার (২৪ অক্টোবর) শারজায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে নিজেদের প্রথম ম্যাচে টাইগারদের ৫ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। তবে এই পরাজয়েও প্রাপ্তি খুঁজে নিচ্ছেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

মূলত দলের ব্যাটিং ইউনিট নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন টাইগার দলপতি। বাংলাদেশের দাঁড় করানো স্কোর জয়ের মতই ছিল দাবি করে বলেছেন, ‘১৭১ রান জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল। লিটন দাস ও নাঈম শেখ ভালো শুরু এনে দেওয়ার পর মুশফিক দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছে। শ্রীলঙ্কার ইনিংসের দশম ওভার পর্যন্ত আমরা ম্যাচে ছিলাম। এর পরই সবকিছু মুহূর্তের মধ্যে বদলে যায়। আশা করি, আগামী ম্যাচে ভুলগুলো শুধরাতে পারবো।’

এক্ষেত্রে অধিনায়কের কথায় যে কেউই একমত হবে। কারণ, শারজার উইকেটে ১৭১ রান জয়ের জন্য যথেষ্ট স্কোর। টাইগারদের উইকেটও পড়েছে মাত্র ৪টি। তাই ব্যাটারদের কৃতিত্ব দিতেই হবে। কিন্তু, বাজে ফিল্ডিং ও লিটন দাসের ক্যাচ মিসই শেষ পর্যন্ত কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ম্যাচ শেষে রিয়াদ বলেন, ‘স্পিনাররা ভালো বল করেছে, তবে আমরা কিছু সুযোগ হাতছাড়া করেছি। টি-টোয়েন্টিতে এমনটা হতেই পারে। এই ম্যাচ আমাদের ব্যাটিং ইউনিটকে অনুপ্রেরণা যোগাবে বলে বিশ্বাস করি। পরের ম্যাচের জন্য মুখিয়ে আছি।’