খেলাধুলা

উইন্ডিজের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়ার। চতুর্থ ম্যাচে আন্দ্রে রাসেল অতি সাবধানী না হলে সেটা হয়তো হয়েও যেত। আজ পঞ্চম টি-টোয়েন্টিও ১৬ রানে জিতে নিয়েছে উইন্ডিজ। ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ হার সাম্প্রতিক সময়ে দেখেনি অস্ট্রেলিয়া। সর্বশেষ ৮৯ বছর আগে ১৯৩২ সালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ডের কাছে তারা এই স্বাদ পেয়েছিল! এর মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হলো, ক্যারিবীয়রাই টি-টোয়েন্টির রাজা।

সেন্ট লুসিয়ার ড্যারেন স্যামি জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ধ্বংসাত্মক সূচনা এনে দেন ওপেনার এভিন লুইস। ৪০ রানে তাদের প্রথম উইকেটের পতন হয়। ফিরে যান ১৬ বলে ১২ রান করা আন্দ্রে ফ্লেচার। এরপর ‘দ্য ইউনিভার্স বস’ ক্রিস গেইল জ্বলে উঠেছিলেন। তবে ৭ বলে ২ চার ২ ছক্কায় ২১ রান করে তিনি প্যাভিলিয়নে ফিরেন। অধিনায়ক নিকোলাস পুরান করেন ১৮ বলে ৩১ রানের ইনিংস। আর ব্যাটিং তাণ্ডব চালিয়ে এভিন লুইস করেন ৩৪ বলে ৭৯। তার ইনিংসে ছিল ৪টি চার ও ৯টি ছক্কা। ক্যারিবীয়দের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৮ উইকেটে ১৯৯।

জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ৯ রানেই জস ফিলিপেকে (০) হারায় অস্ট্রেলিয়া। এরপর তারা আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ সর্বোচ্চ ২৩ বলে ৩৪ রান করেন। মিচেল মার্শ (৩০) ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যান ত্রিশের ঘর ছুঁতে পারেননি। ব্যাট হাতে মাত্র ১ রান করলেও বল হাতে ঝলসে ওঠেন আন্দ্রে রাসেল। ৪ ওভারে ৪৩ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। শেলডন কটরেলও ২৮ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৮৩ রানে আটকে যায় অজিদের ইনিংস। ১৬ রানের জয় পায় উইন্ডিজ। বিধ্বংসী ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হয়েছেন এভিন লুইস।

খেলাধুলা

ব্যাট হাতে লিটন দাস। বল হাতে সাকিব আল হাসান। আর দু’জনের হাত ধরে বাংলাদেশের বিশাল জয়।

হারারেতে সিরিজের ১ম ওয়ানডেতে স্বাগতিক জিম্বাবুয়েকে উড়িয়ে দিয়েছে টাইগাররা। জয় পেয়েছে ১৫৫ রানের বিশাল ব্যবধানে। শুরুতে ব্যাট করে লিটন দাসের সেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ওভারে ২৭৬ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে সাকিব আল হাসানের স্পিন ঘূর্ণিতে মাত্র ১২১ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা। ম্যাচে ৫ উইকেট শিকার করেছেন সাকিব। ফলে মাশরাফিকে টপকে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী এখন এই অলরাউন্ডার। এ জয়ে সিরিজে ১-০তে লিড নিলো টাইগাররা।

হারারেতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে কোন রান তোলার আগেই আউট হয়ে যান দলীয় অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ওয়ানডেতে ক্যারিয়ারের ১৯তম বারের মতো ‘গোল্ডেন ডাক’ মেরে আউট হন তিনি। বাংলাদেশের পক্ষে এখন সবচেয়ে শূন্য রানে আউট হওয়া ব্যাটসম্যানও তামিম।

ব্যাট হাতে আরো একবার ব্যর্থ সাকিব আল হাসান। দলীয় ৩২ রানে আউট হয়ে যান তিনি। তার সংগ্রহ ১৯ রান।

সমান ১৯ রান করে আউট হয়ে যান মিঠুন আলীও। মাত্র ৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন মোসাদ্দেক সৈকত। দলীয় ৭৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে সফররতরা।

সেখান থেকে হাল ধরেন লিটন দাস। সঙ্গ দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দু’জনে মিলে গড়েন ৯৩ রানের জুটি। ৩৩ রান করে আউট হয়ে যান অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ।

একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে ক্যারিয়ারের ৪র্থ সেঞ্চুরি তুলে নেন লিটন দাস। তবে সেঞ্চুরির পর বেশিক্ষণ টেকেননি তিনিও। ১০২ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন।

শেষদিকে ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন আফিফ হোসেন ধ্রুব ও মেহেদি মিরাজ। দুই তরুণের ৫৮ রানের জুটিতে টাইগারদের স্কোরবোর্ড সমৃদ্ধ হয়। তবে পরপর ২ বলে আউট হয়ে যান দু’জনই। ২৪ বলে ২৬ রান করেন মিরাজ। আর ৩৫ বলে ৪৫ রান করে আউট হন আফিফ।

পরের বলেই আউট হয়ে যান তাসকিনও। তবে রানআউট হওয়ায় হ্যাটট্রিক হলো না জিম্বাবুইয়ান পেসার জংউইর। শেষ ওভারে সাইফুদ্দিনের ব্যাটে চড়ে ২৭৬ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।

জবাব দিতে নেমে শুরুতেই বাংলাদেশের বোলারদের তোপের মুখে পড়ে জিম্বাবুয়ে। দলীয় ৪ রানে অভিষিক্ত ওপেনার মারুমানিকে হারায় তারা। সাইফউদ্দিন তুলে নেন ১ম উইকেট।

স্বাগতিকদের ২য় উইকেটটি তুলে নেন তাসকিন আহমেদ। আর ৩য় উইকেটটি নেন আরেক পেসার শরীফুল ইসলাম।

এরপর বাকি সবকটি উইকেটই তুলে নেন সাকিব আল হাসান। মাঝে জংউই হন রানআউট। আর পেশিতে টান পড়ায় ব্যাট করতে নামেননি মারুমা।

ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৩য়বারের মতো ৫ উইকেট তুলে নেন সাকিব। রান খরচ করেন ৩০। ওয়ানডেতে তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ফিগার ৫/২৯।

দলের বিপদে হাল ধরে সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন লিটন দাস।

খেলাধুলা

দুটি পরিসংখ্যান। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সবশেষ ১৬ ওয়ানডের সবকটিতে জয় বাংলাদেশের। বাংলাদেশের বিপক্ষে সবশেষ দুই ওয়ানডে সিরিজেই জয় জিম্বাবুয়ের। খটকা লাগছে তো? দুটি পরিসংখ্যানই কিন্তু সত্যি! পরিবর্তন শুধু স্বাগতিকে। প্রথম পরিসংখ্যানটি বাংলাদেশের মাঠের, পরেরটি জিম্বাবুয়েতে।

খেলাধুলা

‘ফুটবল ঘরে ফিরবে’ এই আশায় ওয়েম্বলিতে উপস্থিত হাজার হাজার ইংল্যান্ড সমর্থকের চিৎকার আর গর্জনে শুরু থেকেই ইতালিয়ানদের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। কিন্তু স্বাগতিক দর্শকদের শেষে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরতে হলো।

কারণ তুমুল উত্তেজনায় ঠাসা ফাইনালে স্বাগতিকদের টাইব্রেকারে হারিয়ে ৫৩ বছর পর ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা ঘরে তুলেছে মানচিনির ইতালি। অর্থাৎ ফুটবল ‘হোমে’ নয় ‘রোমে’ ফিরলো।

রোববার রাতে লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ৬০ হাজার দর্শকের সামনে ইউরোর ফাইনালে মুখোমুখি হয় ইউরোপিয়ান ফুটবলের দুই পরাশক্তি। রোমাঞ্চকর এই ফাইনালে নির্ধারিত ৯০ মিনিট ও যোগ করা সময়ের খেলা ১-১ গোলে সমতা বিরাজ করায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও সমতা থেকে যায়। ফলে খেলার ফলাফল নির্ধারিত হয় টাইব্রেকারে। যেখানে ৩-২ গোলে জিতে শিরোপা জিতে নেয় ইতালি।

পেনাল্টি শুটআউটে ইতালির নায়ক গোলরক্ষক দোনারুমা। ২টি শট ঠেকিয়ে দিয়েছেন তিনি।

পেনাল্টি শুট-আউটে প্রথমে গোল করেন ইতালির বেরারদি। এরপর গোল করেন ইংল্যান্ডের হ্যারি কেন। কিন্তু বেলোত্তির শট বাঁচিয়ে দেন ইংল্যান্ডের গোলরক্ষক পিকফোর্ড। এরপর গোল করে ইংল্যান্ডের হ্যারি ম্যাগুইর। ইতালির বোনুচ্চিও পান জালের দেখা। কিন্তু ইংল্যান্ডের রাশফোর্ডের শট পোস্টে প্রতিহত হয়। এরপর গোল করেন ইতালির বার্নারদেসচি। কিন্তু ইংল্যান্ডের সাঞ্চোর শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান দোনারুমা। অন্যদিকে ইতালির জর্জিনহোর শটও ঠেকিয়ে দেন পিকফোর্ড। এরপর সাকার শট ঠেকিয়ে ইতালির জয় নিশ্চিত করেন দোনারুমা।

ইতালি এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ইউরোর শিরোপা ঘরে তুললো।  এর আগে ১৯৬৮ সালে চ্যাম্পিয়ন হয় তারা।

অন্যদিকে ইংল্যান্ড এবারই প্রথম ইউরোপ সেরার লড়াইয়ের ফাইনালে উঠেছে। আর সেজন্য খেলা শুরুর আগেই ওয়েম্বলিকে ঘিরে ছড়িয়ে পড়ে তুমুল উত্তেজনা। টিকিট ছাড়াই মাঠে ঢুকে পড়েন অসংখ্য ইংলিশ সমর্থক। এমনকি স্টেডিয়ামের বাইরে ইংল্যান্ড সমর্থকদের তাণ্ডব চালাতে এবং বিয়ারের বোতল ছুঁড়ে আস্ফালন করতেও দেখা গেছে। ইংল্যান্ড সমর্থকদের উন্মত্ততায় লন্ডনের রাস্তা কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে যায়। ট্রাফিক সিগন্যালের উপর উঠেও তাণ্ডব চালায় অনেক মানুষ। এর আগে ডেনমার্ক ম্যাচের পরেও ইংল্যান্ড সমর্থকদের এমন উন্মত্ত ছবি দেখা গিয়েছিল। এমনকি ড্যানিশ সমর্থকদের মারধোর করার অভিযোগও উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।

ওয়েম্বলিতে ৬০ হাজার উত্তেজিত দর্শকের সামনে মাঠে নেমেই চমকে দেয় ইংল্যান্ড। ইংলিশ কোচ গ্যারেথ সাউথগ্যাটের ফর্মেশন চমক দেয় সবাইকে। খেলা শুরুর আগে এমন চমকে হতবাক হয়ে যায় প্রতিপক্ষ ইতালি। পুরো আসর জুড়ে ৪-২-৩-১ এবং ৪-৩-৩ ফর্মেশনে খেললেও, এদিন ৩-৪-২-১ ফর্মেশনে মাঠে নামে থ্রি লায়নরা। তবে প্রথাগত ফর্মেশন থেকে বের হননি মানচিনি।

ইতালি সেমিফাইনালের অপরিবর্তিত দল নিয়ে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফাইনালের লড়াইয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয়। এমনকি তারা বদলি ফুটবলারের তালিকাতেও কোনো বদল করেনি। ইংল্যান্ড তাদের প্রথম একাদশে একটি বদল করে। সাকার বদলে তারা শুরু থেকেই মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নেয় ট্রিপিয়ারকে।

ইংল্যান্ড শুধু ফর্মেশন নয়, শুরুতেই গোল করেও চমকে দেয়। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে কর্নার কিক পায় ইতালি। কর্নার থেকে ভেসে আসা বল ক্লিয়ারই করা নয় শুধু নিজেদের নিয়ন্ত্রণেও ধরে রাখে ইংল্যান্ড। উঠে যায় কাউন্টার অ্যাটাকে। ইতালির বক্সের ডান পাশ থেকে বাম পাশে লম্বা পাস দেন কিয়েরান ট্রিপিয়ার। দ্রুত গতিতে এগিয়ে আসা লুক শ ডান পায়ের দুর্দান্ত এক শট নেন তাতে। মুহূর্তেই বলটি জড়িয়ে গেল ইতালির জালে।

নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক গোলের দেখা ইউরোর ফাইনালে এসে পেলেন লুক শ। ইউরো কাপের ইতিহাসে একটি রেকর্ডও গড়লেন তিনি। ১ মিনিট ৫৭ সেকেন্ডে করা তার গোলটিই ইউরোর ফাইনাল ম্যাচে করা দ্রুততম গোল। ১৯৬৪ সালে পেরেদা ৬ মিনিটের মাথায় গোল করেছিলেন।

গোল হজম করার ৬ মিনিট পরেই সমতায় ফেরার সুযোগ পায় ইতালি। কিন্তু ইংল্যান্ডের পোস্ট লক্ষ্য করে শট নেওয়া ইনসাইনের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এরপর ১৭তম মিনিটে এমারসন অফসাইডের আওতায় পড়লে ভেস্তে যায় ইতালির আক্রমণ। ২৮তম মিনিটে ইতালির ইনসাইনের শট অল্পের জন্য লক্ষ্যে থাকেনি। ৩৫তম মিনিটে সিয়েসা সহজ সুযোগ নষ্ট করলে ব্যবধান কমাতে পারেনি ইতালি। যোগ করা সময়ে ভেরাত্তির আক্রমণ প্রতিহত করেন ইংলিশ গোলরক্ষক পিকফোর্ড। ফলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় ইংল্যান্ড।

দ্বিতীয়ার্ধেও জারি থাকে ইতালিয়ানদের আক্রমণের ধারা। ৫১ মিনিটের মাথায় ইনসাইনের আক্রমণ লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।  ৫৩তম মিনিটে ফের আক্রমণে ওঠে ইতালি। এবারও ইনসাইনের শট টার্গেটে ছিল না। দুই মিনিট পর ইংল্যান্ডের হ্যারি মাগুইর আক্রমণ শানান ইতালির বক্সে। কিন্তু তার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। ৫৭তম মিনিটে ইনসাইন শট নেন ইংল্যান্ডের পোস্ট লক্ষ্য করে। আক্রমণ প্রতিহত হয় পিকফোর্ডের দক্ষতায়।  ৬২তম মিনিটে ফের ইংল্যান্ডের পতন রোধ করেন পিকফোর্ড। একটু পর সিয়েসার আক্রমণও প্রতিহত করেন তিনি।

অবশেষে ৬৭তম মিনিটে প্রতিপক্ষের রক্ষণের জটলা থেকে গোল করেন বোনুচ্চি। ইনসিনিয়ের কর্নারে বল কাছের পোস্টে পড়লে ভেরাত্তি গোলমুখে হেড নেন। শুরুতে সেই হেড ঠেকিয়ে দেন পিকফোর্ড। কিন্তু তাকে পরাস্ত করে বল জালে জড়িয়ে দেন বোনুচ্চি। সেই সঙ্গে ইউরোর ফাইনালে সবথেকে বেশি বয়সে গোল করার রেকর্ডও গড়েন ইতালিয়ান ডিফেন্ডার ৩৪ বছর ৭১ দিন বয়সে ইউরোয় লড়াইয়ে গোল করার রেকর্ড গড়লেন তিনি। ১৯৭৬ সালে পশ্চিম জার্মানির হয়ে হলজেনবেইন ৩০ বছর বয়সে গোল করেছিলেন।

বোনুচ্চির গোলের পর আদতে দুই দলই তেমন ভালো কোনো আক্রমণ শানাতে না পারলে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের একদম শেষদিকে ইংল্যান্ডের ফিলিপসের আক্রমণ ব্যর্থ হয়। ১০৭ মিনিটের মাথায় বার্নারদেসচির আক্রমণ প্রতিহত করেন পিকফোর্ড। যোগ করা সময়ে ক্রিস্তান্তের শট লক্ষভ্রষ্ট হয়। ফলে এখানেও দুই অর্ধই থাকে গোলশূন্য। ফলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।

খেলাধুলা

দেশের বাইরে সর্বোচ্চ রানের ব্যবধানে হারারে টেস্টে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এ জয়ে প্রথমবার জিম্বাবুয়ের মাটিতে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় টেস্ট সিরিজ জয় এটি। এর আগে ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের দেওয়া ৪৭৭ রানের টার্গেটে জিম্বাবুয়ে গুটিয়ে যায় ২৫৬ রানে।

হারারেতে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে ৪৬৮ রান তোলে বাংলাদেশ। রিয়াদের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসের সাথে লিটন দাসের ৯৫, তাসকিন আহমেদের ৭৫ ও অধিনায়ক মুমিনুল হকের ৭০ রানের ইনিংসে ভর করে ৪৬৮ রান জড়ো করে বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে নামা জিম্বাবুয়ে মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাকিব আল হাসানের বোলিং তোপে অলআউট হয় ২৭৬ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ ১ উইকেটে ২৮৪ রান নিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে। দলের পক্ষে শতক হাঁকান সাদমান ইসলাম (১১৫*) ও নাজমুল হোসেন শান্ত (১১৭)। এতে জিম্বাবুয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪৭৭।

বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের রেকর্ড টেস্ট জয়জবাবে প্রথম ইনিংসে ২৭৬ রানে অলআউট হয় জিম্বাবুয়ে। ১৯২ রানের লিড নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ১ উইকেটে ২৮৪ রানে ইনিংস ঘোষণা করে সফকারিরা। এ জয় পেতে জিম্বাবুয়ের ইতিহাস গড়তে হতো। কিন্তু স্বাগতিকরা শেষ দিন ভালো লড়াই করলেও পরাজয় এড়াতে পারেনি।

যদিও দ্বিতীয় সেশনে ডোনাল্ড টিরিপানো ও ব্লেসিং মুজারাবানির গড়া প্রতিরোধ ধৈর্যের পরীক্ষা নিয়েছে বাংলাদেশের। প্রথম সেশনের পারফরম্যান্সে দুইশর নিচে জিম্বাবুয়েকে অলআউটের সম্ভাবনা জাগিয়েও টাইগারদের লড়তে হয়েছে দ্বিতীয় সেশনের ‘অতিরিক্ত সময়’ পর্যন্ত। টিরিপানো ১৪৪ বলে ৫২ রান করে ফেরেন সাজঘরে। ৫১ বলে ৩০ রান করে অপরাজিত থাকেন মুজারাবানি। ম্যাচ শেষ হওয়ার আগে তাসকিনের সাথে তার মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ দৃশ্যমান হয়েছে বারবার।

রানের হিসেবে ২২০ রানের এই জয় বাংলাদেশের জন্য দ্বিতীয় বৃহত্তম। রানের হিসেবে সবচেয়ে বড় জয় ছিল ২২৬ রানের, এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই। রিয়াদের কাব্যিক ইনিংস ছাড়াও বল হাতে জয়ে বড় অবদান রেখেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ ও সাকিব আল হাসান।
প্রথম ইনিংসে মিরাজ পেয়েছিলেন পাঁচ উইকেট, সাকিব চারটি। দ্বিতীয় ইনিংসে চারটি করে পেয়েছেন তাসকিন ও মিরাজ। এবাদত ও সাকিব পান একটি করে উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

টস : বাংলাদেশ

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : ৪৬৮/১০ (১২৬ ওভার)

রিয়াদ ১৫০*, লিটন ৯৫, তাসকিন ৭৫, মুমিনুল ৭০

মুজারাবানি ৯৪/৪, তিরিপানো ৫৮/২

জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস : ২৭৬/১০ (১১১.৫ ওভার)

কাইতানো ৮৭, টেলর ৮১, শুম্বা ৪১

মিরাজ ৮২/৫, সাকিব ৮২/৪

বাংলাদেশ ২য় ইনিংস : ২৮৪/১ ডিক্লেয়ার (৬৭.৪ ওভার)

শান্ত ১১৭*, সাদমান ১১৫*, সাইফ ৪৩;

এনগারাভা ১/৩৬

জিম্বাবুয়ে ২য় ইনিংস : ২৫৬/১০ (৯৪.৪ ওভার)

টেলর ৯২, টিরিপানো ৫২, মুজারাবানি ৩০*, মায়ার্স ২৬,

মিরাজ ৬৬/৪, তাসকিন ৮২/৪

ফল : বাংলাদেশ ২২০ রানে জয়ী।

খেলাধুলা

অবশেষে শিরোপার জন্য আর্জেন্টিনার দীর্ঘ ২৮ বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটলো। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলকে হারিয়ে কোপা আমেরিকার শিরোপা ঘরে তুলেছে আলবিসেলেস্তেরা।

সেই সঙ্গে কোপায় সবচেয়ে বেশি (১৫টি) শিরোপা জেতার রেকর্ডে উরুগুয়ের সঙ্গী হলো আর্জেন্টিনা।
রোববার রিও দি জেনেরিওর বিখ্যাত মারাকানা স্টেডিয়ামে কোপার চলতি আসরের ফাইনালে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আর্জেন্টিনা। জয়সূচক গোলটি করেছেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড আনহেল দি মারিয়া।

এর আগে সর্বশেষ ১৯৯৩ সালে কোপা তথা বড় কোনো টুর্নামেন্টের শিরোপা জেতার স্বাদ পেয়েছিল তারা।

ম্যাচের শুরু থেকেই দুই দলই বেশ আগ্রাসী মেজাজে খেলে। লাতিন ফুটবলের সৌন্দর্য ছাপিয়ে যায় খেলোয়াড়দের অতি আক্রমণাত্মক আচরণে। সবমিলিয়ে ম্যাচে ফাউল হয়েছে ৪১টি, যার মধ্যে ব্রাজিল করেছে ২২টি। রেফারি হলুদ কার্ড দেখিয়েছেন ৯টি, যার মধ্যে পাঁচটি দেখেছেন আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়রা।

ব্রাজিল সেমিফাইনালের অপরিবর্তিত প্রথম একাদশ নিয়েই ফাইনালে মাঠে নামে। এমনকি তাদের বদলি ফুটবলারের তালিকাও অপরিবর্তিত। তবে আর্জেন্টিনা প্রথম একাদশে একসঙ্গে পাঁচটি রদবদল করে। রিজার্ভ বেঞ্চে পাঠানো হয় জেল্লা, গঞ্জালেস, মলিনা, তাগলিয়াফিকো ও রদ্রিগেসকে। প্রথম একাদশে নামেন আকুনা, রোমেরো, মন্তিয়েল, পারেদেস ও দি মারিয়া।

ফাইনালের প্রথম একাদশে দি মারিয়াকে ফিরিয়ে তার ওপর আস্থা রেখেছিলেন আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি। আস্থার যথাযথ মর্যাদা রাখেন তিনি। ২২তম মিনিটে মাঝমাঠ থেকে রদ্রিগো দি’পলের বাড়ানো বল ধরে ব্রাজিল গোলরক্ষক এদারসনের মাথার উপর তা জালে জড়িয়ে দেন দি মারিয়া। তবে রেনান লোদির সামনে সুযোগ ছিল দি মারিয়া বল ধরার আগেই তা প্রতিহত করার। যদিও তিনি ব্যর্থ হন। সেই সুযোগে আর্জেন্টিনা ম্যাচে লিড নিয়ে নেয়। ২০০৪ সালে সিজার দেলগাদোর পর দি মারিয়া প্রথম আর্জেন্টাইন ফুটবলার, যিনি কোপার ফাইনালে গোল করলেন।

গোল হজমের পর ব্রাজিল তা শোধে মরিয়া হয়ে ওঠে। ২৬তম মিনিটে কাসেমিরোর শট মার্টিনেসের গ্লাভসে জমা পড়ে। তবে প্রথম ৩০ মিনিটের মধ্যে ব্রাজিলের সবচেয়ে বড় ভরসা নেইমারকে সেই অর্থে সক্রিয় দেখা যায়নি। নিজের ছায়া হয়ে ছিলেন পুরো আসরে দুর্দান্ত খেলা লিওনেল মেসিও। যদিও ৩২তম মিনিটে তার একটি শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এরপর ২৫ গজের বিপজ্জনক জায়গা থেকে ফ্রি-কিক পেলেও তা কাজে লাগাতে পারেনি ব্রাজিল।

৩৪ মিনিটে নেইমারের ফ্রি-কিক আর্জেন্টিনার রক্ষণের দেওয়ালে প্রতিহত হয়। ৪২তম মিনিটে এভারটনের আক্রমণ প্রতিহত হয় আর্জেন্টিনা গোলরক্ষক মার্টিনেজের দক্ষতায়। দুই মিনিট পর নেইমারের কর্ণার থেকে বল ধরে আক্রমণ শানান রিচার্লিসন। কিন্তু তা মাঠের বাইরে চলে যায়। ফলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যায় ব্রাজিল।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ফ্রেদের বদলে রবার্তো ফিরমিনোকে মাঠে নামান ব্রাজিলের কোচ তিতে। এর ৩ মিনিট পরেই রিচার্লিসন আক্রমণ শানান আর্জেন্টিনার বক্সে। কিন্তু আক্রমণ ব্যর্থ হয়। তবে ৫২তম মিনিটে আর্জেন্টিনার জালে বল জড়ান রিচার্লিসন। তবে অফসাইডের জন্য গোল বাতিল হয়। ৩ মিনিট পরে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের আরও একটি আক্রমণ প্রতিহত করেন আর্জেন্টিনা গোলরক্ষক।

৭৯তম মিনিটে একসঙ্গে তিনজন বদলি ফুটবলারকে মাঠে নামায় আর্জেন্টিনা। রোমেরো, দি মারিয়া ও লওতারো মার্টিনেসকে তুলে নিয়ে তারা মাঠে নামায় পেজেল্লা, পালাসিয়স ও গঞ্জালেসকে। ৭৬ মিনিটে রেনান লোদি ও পাকুয়েতাকে তুলে নিয়ে ব্রাজিল মাঠে নামায় এমারসন ও বারবোসাকে।

৮৫ মিনিটের মাথায় নেইমারের কর্ণার কিক থেকে হেডে আর্জেন্তিনার জালে বল জড়ানোর চেষ্টা করেন থিয়াগো সিলভা। তবে তাঁর হেডার ক্রসবারের উপর দিয়ে মাঠের বাইরে চলে যায়। ৮৯ মিনিটের মাথায় গোলের সহজ সুযোগ নষ্ট করেন মেসি। ৬ গজ দূরত্ব থেকে ব্রাজিলের গোলরক্ষককে পরাস্ত করলেই আর্জেন্টিনা লিড বাড়িয়ে নিতে পারত। তবে শেষ পর্যন্ত এ জন্য কোনো মূল্য দিতে হয়নি আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডকে। বরং অবশেষে জাতীয় দলের জার্সিতে নিজের প্রথম শিরোপা জেতার স্বাদ পেয়ে গেছেন আধুনিক ফুটবলের অন্যতম সেরা এই ফুটবলার।

খেলাধুলা

সিরিজের একমাত্র টেস্টের ৪র্থ দিনশেষে জয়ের সুবাস পাচ্ছে বাংলাদেশ। দিনশেষে জিম্বাবুয়ের চেয়ে এখনও ৩৩৭ রানে এগিয়ে আছে মুমিনুল বাহিনী। শেষদিনে বাংলাদেশের প্রয়োজন আর স্বাগতিকদের ৭টি উইকেট। অন্যদিকে, জিততে হলে জিম্বাবুয়েকে পাড়ি দিতে হবে কঠিন পথ।

দিনের শুরুতে ব্যাট করতে নামেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার সাইফ হাসান ও সাদমান ইসলাম। দু’জনে মিলে উদ্বোধনী জুটিতে গড়েন ৮৮ রানের জুটি।

এরপর আর কোন সাফল্যের দেখা পায়নি স্বাগতিক বোলাররা। সাদমান আর শান্ত মিলে তুলোধুনা করেন জিম্বাবুয়ের বোলারদেরকে। দু’জনেই তুলে নেন সেঞ্চুরি। ক্যারিয়ারের ১ম সেঞ্চুরি পাওয়া সাদমান অপরাজিত থাকেন ১১৫ রানে।

অন্যদিকে ঝড় তুলেন শান্ত। তার ব্যাট হয়ে ওঠে অশান্ত। একের পর এক বাউন্ডারি-ওভার বাউন্ডারিতে বিধ্বস্ত করেন জিম্বাবুয়ের বোলারদেরকে। তিনি অপরাজিত থাকেন ১১৭ রানে। এরমধ্যে হাঁকান ৫টি চার ও ৬টি বিশাল ছক্কা।

দু’জনের সেঞ্চুরিতে ১ উইকেটে ২৮৪ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে টাইগাররা। আগের ইনিংসের লিড মিলিয়ে স্বাগতিকদের সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ৪৭৭ রানের।

জবাব দিতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে স্বাগতিকরা। দলীয় ১৫ রানে সুম্বাকে ফেরান তাসকিন। এরপর ব্যাটে ঝড় তুলেন স্বাগতিকদের ক্যাপ্টেন ব্রেন্ডন টেইলর। ৭৩ বলে তার ৯২ রানের ক্যামিও ইনিংসটি থামান মেহেদি মিরাজ। একপ্রান্ত আগলে রাখা কাইতানোর উইকেটটা তুলে নেন সাকিব আল হাসান। ফলে বিপদে পড়ে যায় জিম্বাবুয়ে।

জিততে হলে শেষদিনে জিম্বাবুয়েকে করতে হবে আরো ৩৩৭ রান। বাংলাদেশের দরকার আর মাত্র ৭টি উইকেট।

খেলাধুলা

হারারেতে সিরিজের ১ম টেস্টের ১ম দিনশেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৮ উইকেট হারিয়ে ২৯৪ রান। ইনিংসের শুরুতে বিপদে পড়লেও, সামাল দিয়েছেন মুমিনুল হক, লিটন দাস ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে দিনের শেষভাগে পরপর ২ বলে আবারো ২ উইকেট হারিয়ে ১ম দিনের নিয়ন্ত্রণ হারায় টাইগাররা।

লিটন দাস আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ভালোই খেলছিলেন। দু’জন মিলে শুরুর বিপদ ভালোভাবেই সামাল দেন। তবে সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৫ রান দূরত্বে থাকতে খেই হারান লিটন দাস। তার পরের বলেই আউট হয়ে যান মেহেদি মিরাজও।

এর আগে হারারেতে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে স্বাগতিক পেসারদের বোলিং তোপে দিশেহারা হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ইনিংসের ১ম ওভারেই রানের খাতা খোলার আগে বিদায় নেন তরুণ ওপেনার সাইফ হাসান। মুজারাবানির বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি।

এরপর তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামেন আরেক তরুণ ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে তিনিও দিতে পারেন নি আস্থার প্রতিদান। আরেকবার ব্যাট হাতে ব্যর্থ তিনি। মুজারাবানির শিকার হন তিনিও। স্লিপে সহজ ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেয়ার আগে তার সংগ্রহ মাত্র ২ রান।

মাত্র ৮ রানে ২ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। সেখান থেকে দলকে উদ্ধার করার চেষ্টা চালান অধিনায়ক মুমিনুল হক ও সাদমান ইসলাম। দু’জনে মিলে গড়েন ৬০ রানের জুটি। তবে বিরতিতে যাওয়ার আগমুহুর্তে, দলীয় ৬৮ রানে এনগ্রাভার বলে কট বিহাইন্ড হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন সাদমান।

বিরতি থেকে ফিরে বেশিক্ষণ টিকতে পারেন নি মুশফিক। মুজারাবানির বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে উইকেট বিলিয়ে আসেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। তার সংগ্রহ ১১ রান।

মাত্র ৬ বলের ব্যবধানে উইকেট বিলিয়ে দেন সাকিব আল হাসানও। দীর্ঘদিন পর জাতীয় দলের হয়ে টেস্ট খেলতে নেমে ব্যাট হাতে ব্যর্থ তিনি। নাউচির বলে কট বিহাইন্ডের শিকার হয়ে মাত্র ৩ রান করে মাঠ ছাড়েন তিনি।

২ ‘ডাক’ আর ৩ ফিফটিতে দিন শেষ করলো বাংলাদেশ

দলের ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মধ্যে একপ্রান্ত আগলে দাঁড়িয়ে ছিলেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। তবে ৭০ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন তিনি। আউট হওয়ার আগে বেশ সাবলীলভাবেই ব্যাট চালাচ্ছিলেন মিমি। ৭০ রানের ইনিংসে হাঁকান ১৩টি বাউন্ডারি। তবে তার আউটটা বেশ দৃষ্টিকটুই ছিলো। অফ স্ট্যাম্পের বেশ বাইরের বল কাট করতে গিয়ে স্লিপে দাঁড়ানো মেয়ার্সের হাতে ধরা পড়েন তিনি।

২ ‘ডাক’ আর ৩ ফিফটিতে দিন শেষ করলো বাংলাদেশ

১৩২ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নেন লিটন দাস ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দুজনে মিলে গড়েন ১৩৮ রানের জুটি। ৯৫ রান করে সেঞ্চুরি বঞ্চিত হন লিটন দাস।

২ ‘ডাক’ আর ৩ ফিফটিতে দিন শেষ করলো বাংলাদেশ

লিটনের আউট হওয়ার পরের বলেই আউট হয়ে যান মেহেদি মিরাজ।

তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে ফিফটি তুলে নেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তার সঙ্গী ছিলেন তাসকিন আহমেদ। দিনশেষে রিয়াদের সংগ্রহ ৫৪ আর তাসকিন অপরাজিত আছেন ১৩ রানে।f

খেলাধুলা

করোনার কারণে ভারতের মাটিতে চলতি বছর টি-২০ বিশ্বকাপ আয়োজন সম্ভব হচ্ছে না। বিশ্বকাপের ভেন্যু নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)।

গতকাল মঙ্গলবার (২৯ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানিয়েছে, ভারত টুর্নামেন্টের আয়োজক হিসেবে থাকলেও বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে। আইসিসির চূড়ান্ত ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ১৭ অক্টোবর শুরু হবে টি-২০ বিশ্বকাপ। টুর্নামেন্ট শেষ হবে ১৪ নভেম্বর।

বিশ্বকাপের চার ভেন্যু হচ্ছে আরব আমিরাতের দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম, আবুধাবির শেখ আবু জায়েদ স্টেডিয়াম, শারজাহ স্টেডিয়াম, ওমান ক্রিকেট একাডেমি গ্রাউন্ড। এর মধ্যে ওমানে শুধু প্রথম রাউন্ডের একটি গ্রুপের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম রাউন্ডের আরেক গ্রুপের ম্যাচ হবে আমিরাতেই।

প্রথম রাউন্ডে আটটি দল দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে। দলগুলো হলো বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নামিবিয়া, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, স্কটল্যান্ড, ওমান ও পাপুয়া নিউগিনি। দুই গ্রুপের শীর্ষ চার দল উঠবে সুপার টুয়েলভ পর্বে। যেখানে আগেই রয়েছে সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করা আটটি দল।

খেলাধুলা

টানটান উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে সুইডেনকে ২-১ গোলে হারিয়ে চলমান ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ইউক্রেন। অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো এই খেলায় জিতে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইউরোর নকআউট পর্বে জয় পেলো তারা। আগামী শনিবার ইতালির রোমে নতুন ইতিহাস তৈরির লক্ষ্যে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে দেশটি।

এদিন শুরু থেকেই মাঠে আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে থাকে উভয় দল। মাত্র ৭ মিনিটের সময় প্রথম আক্রমণটা আসে সুইডেনের কাছ থেকে। বক্সের মধ্যে বল নিয়ে কুলুসেভস্কি জায়গা বের করে গোলের দিকে শট নিলে সেটি ফিরিয়ে দেন স্টেপানেঙ্কো।

কিছুক্ষণ পরই ম্যাচের ১১ মিনিটের সময় পাল্টা আক্রমণ করে ইউক্রেন। যদিও ইয়ারমোলেঙ্কোর সঙ্গে ওয়ান-টু পাসে ইয়ারেমচুকের শক্তিশালী শট দারুণভাবে ঠেকিয়ে দেন সুইডিশ গোলকিপার ওলসেন। তবে এই প্রচেষ্টা বেশিক্ষণ টিকেনি। ২৭ মিনিটের সময় ওলাক্সান্ডার জিনচেঙ্কোর গোলে ইউক্রেন এগিয়ে যায়। এরপর বিরতির ঠিক আগ মুহূর্তে এমিল ফর্সবার্গের গোলে সমতায় ফেরে সুইডেন।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে দুই দলের শটই গোলপোস্টে আঘাত করলেও কেউই স্কোর বড় করতে পারেনি। উভয় দলের খেলোয়াড়রা একাধিকবার সুযোগ নষ্ট করেন। শেষ পর্যন্ত অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় ম্যাচটি।

৯৮তম মিনিটে ড্যানিয়েলসন লাল কার্ড পেলে ১০ জনের দলে পরিণত হয় সুইডিশরা। সেটিরই যেন সুযোগ নিলো ইউক্রেন। একেবারে শেষ মুহূর্তে ম্যাচ যখন টাইব্রেকারের আভাস দিচ্ছিল ঠিক তখন দুর্দান্ত হেডে ইতিহাস রচিত করেন ডভবিক।