খেলাধুলা

বাড়তি জনপ্রিয়তা দেখে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) দলের সংখ্যা বাড়ানো নিয়ে আলোচনা চলছিল গত আসরের আগে থেকেই।

সে সময় আইপিএল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, ২০২০ সালে টুর্নামেন্টটিতে একটি দল বাড়তে পারে। অর্থাৎ শিরোপার লড়াইয়ে নামতে পারে ৯ দল।

যদিও পরে ৮ দল নিয়েই সংযুক্ত আরব আমিরাতে আয়োজিত হয় ২০২০ সালের আইপিএল।

এবার জানা গেলে, ৯ দল নয়; ২০২২ সাল থেকে আইপিএলে খেলবে ১০ দল।

ইতিমধ্যে এ বিষয়ে চূড়ান্ত ঘোষণাও দিয়েছে ভারতের ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিসিআই)।

ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর, বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদে বিসিসিআইয়ের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্তির বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় আইপিএল প্রসঙ্গ তুলে বিসিসিআইয়ের কর্মকর্তারা জানান, ২০২২ সাল থেকে ১০ দল নিয়ে আয়োজন করা হবে আইপিএল।

উল্লেখ্য, ৯ দলের লিগ হলে আইপিলে ম্যাচের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৭৬। এতোদিনের আয়োজনে আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলোতে খেলোয়াড়রা যোগ দিতে সমস্যায় পড়ে যাবেন। তাই ১০ দল নিয়ে আয়োজনের আগে ভারত বোর্ডকে অবশ্যই আইসিসির ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রাম (এফটিপি) দেখে আইপিএলের সূচি নির্ধারণ করতে হবে। বিষয়টি বেশ কষ্টসাধ্য।

যদিও এর আগেও ৯ ও ১০ দল নিয়ে আইপিএল আয়োজন করা হয়েছিল। সেটি হয়েছিল ২০১১ আসরে। পরের দুই বছরে অংশ নেয় নয়টি দল। বাকি আসরগুলোয় অংশ নিয়েছে আট দল।

এখন কোন দুটি নতুন দল যুক্ত হতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টির অন্যতম ফ্রাঞ্চাইজিতে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছুই জানা যায়নি।

এর আগের গুঞ্জন ছিল – গুজরাট থেকে নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি দল খেলতে পারে ২০২১ সালের আসরে। সেই ফ্র্যাঞ্চাইজির হোমগ্রাউন্ড হতে পারে মোতেরা।

২০১৬ ও ২০১৭- এ দুই মৌসুমে চেন্নাই সুপার কিংস এবং রাজস্থান রয়্যালস নির্বাসিত থাকাকালীন গুজরাট লায়ন্স ও রাইজিং পুনে সুপার জায়ান্ট নামে দুটি দল আইপিএলে খেলেছিল।

এখন পর্যন্ত আইপিএলের সফল দল মুম্বাই ইন্ডিয়ানস। পাঁচবারের শিরোপাজয়ী তারা। তিনবার জিতেছে চেন্নাই সুপার কিংস ও দুইবার কলকাতা নাইট রাইডার্স। একবার করে শিরোপা ঘরে তুলেছে রাজস্থান রয়্যালস, ডেকান চার্জার্স, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।

খেলাধুলা

ফুটবল বিশ্বকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি দিয়াগো ম্যারাডোনা । গত ২০ নভেম্বর হার্ট অ্যাটাকে মারা যান তিনি।

তবে ম্যারাডোনার চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ আর মৃত্যু নিয়ে রহস্য চলছেই।
এবার তাকে নিয়ে বিস্ফোরক এক তথ্য দিলেন ৮৬’র বিশ্বকাপজয়ী এই তারকার একসময়ের ব্যক্তিগত চিকিৎসক আলফ্রেদো কাহে।

ইনট্রাটেবলস নামের একটি অনুষ্ঠানের আলাপচারিতায় কাহে বলেছেন, ‘তার মস্তিষ্কের ক্ষতি হয়েছিল, কিন্তু অ্যালঝেইমারের সমস্যা তেমনটা ছিল না। তাকে যে ওষুধ দেওয়া হচ্ছিল, তা ঠিক ছিল না। ডিয়াগো শান্তি চেয়েছিলেন, একটা শান্ত পরিবেশ দরকার ছিল। ওই ওষুধের কারণে তিনি তা পাচ্ছিলেন না। ’

মাদকাসক্তির কারণে ম্যারাডোনা যখন জীবন-মৃত্যুর দোলাচলে, যখন মরণাপন্ন এই ফুটবল গ্রেটকে চিকিৎসা দিতে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিলেন আর্জেন্টাইন চিকিৎসকরা, তখন কিউবা তার দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়। তৎকালীন কিউবান প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ত্রোর আমন্ত্রণে ২০০০ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত দেশটিতে পুনর্বাসনে ছিলেন ম্যারাডোনা।

কাহের মনে হয়েছিল, গত ৪ নভেম্বর সাবডুরাল হেমাটোমার অস্ত্রোপচারের পর ম্যারাডোনার উচিত ছিল কিউবায় ফিরে যাওয়া। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক লিওপোলদো লুকুয়েকেও লা হাবানায় নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেছিলেন সাবেক এই ফিজিশিয়ান।

কিউবায় একদিন ম্যারাডোনা আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন দাবি কাহের, ‘একদিন ডিয়াগো তার গাড়িতে ছিলেন এবং হঠাৎ করে বাসের সামনে গাড়ি নিয়ে নিজেকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন। তার বেঁচে যাওয়া ছিল মিরাকল। এটা ছিল তার দ্বিতীয় দফায় চিকিৎসার পরের ঘটনা। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি বাস দেখতে পাইনি, হঠাৎ করে কোথায় থেকে যেন সামনে এসে গেলো। ’

খেলাধুলা

বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের ফাইনালে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামকে ৫ রানে হারিয়েছে জেমকন খুলনা। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫৫ রান সংগ্রহ করে খুলনা। জবাবে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫০ রান তুলতে পারে চট্টগ্রাম। ফলে ৫ রানের জয় পায় খুলনা।

শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টায় মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে জেমকন খুলনাকে ব্যাটিংয়ে পাঠান চট্টগ্রামের অধিনায়ক মোহাম্মদ মিথুন। ম্যাচের প্রথম বলেই নাহিদুল ইসলামের বলে মোসাদ্দেকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান জহুরুল ইসলাম। দলীয় ২১ রানে ফিরে যান ইমরুল কায়েস। ব্যক্তিগত ২৫ রানে দলকে বিপদে ফেলে ফিরে যান জাকির হোসেন। ভাল কিছু করার আভাস দিলেও নিজের ইনিংসকে বড় করতে পারেনি আরিফুল হক। তিনি ২৩ বলে ২১ রান করেন।

এর পর দলকে একাই টেনে নিয়ে যান খুলনার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শুভাগত হোম, শামিম হোসাইন ও মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকলেও এক প্রান্ত আগলে রাখেন রিয়াদ। শেষ পর্যন্ত ৪৮ বলে ৭০ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। চট্টগ্রামের হয়ে নাহিদুল দুটি, শফিউল দুটি, মোসাদ্দেক ও মোস্তাফিজুর রহমান একটি করে উইকেট নেন।

জয়ের জন্য ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫০ রান তুলতে পারে চট্টগ্রাম। দলের হয়ে সৈকত আলী ৫৩, মোসাদ্দেক ১৯, লিটন দাস ২৩, সৌম্য সরকার ১২ ও সামসুর রহমান ২৩ রান করেন।

খেলাধুলা

ইংল্যান্ডের প্রত্যেক মাঠই কোনো না কোনো ইতিহাসের সাক্ষী। এর মধ্যে অন্যতম দ্য কেনিংটন ওভাল। এখানেই ঘরের মাটিতে প্রথম টেস্ট খেলেছিল ইংলিশরা। সারে কাউন্টি ক্লাবের অধীনে থাকা সেই মাঠের নামকরণ হলো এবার সাবেক বাংলাদেশি ক্রিকেটার শহিদুল ইসলাম রতনের নামে। একদিনের (১৫-১৬ ডিসেম্বর) জন্য মাঠটির নাম রাখা হয়েছে ‘দ্য কেআইএ শহিদুল ইসলাম রতন ওভাল’।

বাংলাদেশের টেস্ট পূর্ববর্তী যুগে ৮০-৯০ দশকে উইকেটরক্ষক ছিলেন রতন। এরপর সম্পৃক্ত ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গেও। বর্তমানে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমিয়েছেন তিনি। সেখানে কাজ করছেন ক্যাপিটাল কিডস ক্রিকেটের প্রধান নির্বাহী হিসেবে। এটি মূলত একটি চ্যারিটেবল প্রতিষ্ঠান, যারা ক্রিকেটের মাধ্যমে সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের জীবন পরিবর্তনে সহায়তা করে।

করোনা মহামারীতে লকডাউনের সময় বাচ্চাদের সক্রিয় রাখতে বিভিন্ন সেশন করেছিল ক্যাপিটাল কিডস ক্রিকেট। যার সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন রতন। ভার্চুয়াল মাধ্যমে বিপর্যস্ত ও রিফিউজি শিশুদের নিয়ে রেগুলার কুইজ ও পারিবারিক পরামর্শ দিয়ে পাশে থাকার আহবান জানান তিনি। এই কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ রতনকে সম্মানিত করে সারে কাউন্টি ক্লাব।

প্রতিক্রিয়ায় রতন বলেন, ওভালের মতো ঐতিহাসিক স্টেডিয়াম আমার নামে নামকরণ করা শুধু ইংল্যান্ড নয়, ‘পুরো ক্রিকেট বিশ্বের জন্য অনেক বড় সম্মানের। এজন্য আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই সারে কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবকে।’

খেলাধুলা

ব্যালন ডি’অরের স্বপ্নের সেরা একাদশে সর্বকালের সেরা দুই তারকা পেলে ও দিয়েগো ম্যারাডোনার সঙ্গে জায়গা করে নিয়েছেন বর্তমান সময়ে দুই ফুটবল মহাতারকা লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ৩-৪-৩ ফরম্যাশনের এই দল নিয়ে অবশ্য বিতর্ক তৈরি হতেই পারে। কেননা যেখানে আলফ্রেদো দি স্তেফানো, ইয়োহান ক্রুইফ, মিশেল প্লতিনি ও জিনেদিন জিদানের মতো অসংখ্য তারকারা সেই একাদশ থেকে বাদ পড়েছেন।

এই দলে গোলরক্ষক হিসেবে জায়াগা করে নিয়েছেন সোভিয়েত ইউনিয়নের সাবেক রাশিয়ান কিংবদন্তি লেভ ইয়াশিন। ৭৪টি ম্যাচ খেলা এই তারকা ১৯৫৪ থেকে ১৯৭০ পর্যন্ত জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন। একমাত্র গোলরক্ষক হিসেবে ব্যালন ডি’অর জিতেছিলেন।

তিন ডিফেন্ডার হিসেবে রক্ষণে রয়েছেন জার্মানির ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার, ব্রাজিলিয়ান ফুল-ব্যাক কাফু ও ইতালিয়ান কিংবদন্তি পাওলো মালদিনি।

বার্সেলোনা ও স্পেনের কিংবদন্তি জাভি হার্নান্দেজ সেরা ডিফেন্সভ মিডফিল্ডার হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। স্প্যানিশ এই তারকা একটি বিশ্বকাপ ও দুটি ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছেন। এছাড়া বার্সার হয়ে অসংখ্য ট্রফির সঙ্গে চারটি চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপাও জিতেছেন। রক্ষণাত্মক মিডফিল্ডে জাভির পাশে জায়গা করে নিয়েছেন জার্মানির লোথার মাথেয়াস।

এদের সামনে আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডে আছেন ফুটবল ইতিহাসের সর্বকালের সেরা দুই মহাতারকা পেলে ও ম্যারাডোনা। কিংবদন্তি পেলে ব্রাজিলের হয়ে ১৯৫৮, ১৯৬২ ও ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপ জিতেছেন। আর সদ্যই পরলোক গমন করা ম্যারাডোনা প্রায় একক নৈপুণ্যে ১৯৮৬ সালে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন।

আক্রমণভাগে মেসি ও রোনালদোর সঙ্গে আছেন ব্রাজিলের দ্য ফেনোমেনন রোনালদো নাজারিও। সেন্ট্রাল ফরোয়ার্ড হিসেবে জায়াগা পাওয়া রোনালদো জাতীয় দলের হয়ে ১৯৯৪ ও ২০০২ বিশ্বকাপ জিতেছিলেন।

মেসি আক্রমণভাগের ডানদিকে জায়গা করে নিয়েছেন। রেকর্ড ষষ্ঠ ব্যালন ডি’অর জয়ী, ৬টি গোল্ডেন বুট, চারটি চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা দ্বারা মেসি বার্সা ও লা লিগারই ইতিহাসে পরিবর্তন এনে দিয়েছেন।

বাঁদিকের আক্রমণের তারকাটি আর কেউ নন, আছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। মেসির সঙ্গে বরাবরই তুলনা করা পর্তুগিজ তারকা সবসময়ই নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। পাঁচটি ব্যালন ডি’অর, পাঁচটি চ্যাম্পিয়নস লিগ ও অসংখ্য শিরোপা জিতেছেন।

খেলাধুলা

ফুটবল ইতিহাসের সর্বকালের সেরাদের অন্যতম ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তী পেলে। আর বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা মেসি। অবশ্য অনেকেই মেসিকে সর্বকালের সেরাদের কাতারে রাখতে পছন্দ করেন। কারণটি অবশ্যই ভিত্তিহীন না। মেসির ঝুলিতেও আছে অগণিত রেকর্ড। এবার আরো এক রেকর্ড দরজায় কড়া নাড়ছে মেসির।

ফুটবল ইতিহাসে এক ক্লাবের হয়ে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডটি এখনো পেলের দখলে। মেসি সেই রেকর্ডটি পেলে থেকে ছিনিয়ে নেয়ার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছেন। লা লিগায় গতকাল (১৩ ডিসেম্বর) বার্সেলোনাকে আলো দেখালেন লিওনেল মেসি। এই আর্জেন্টাইনের করা একমাত্র গোলেই ঘরের মাঠ ন্যু ক্যাম্পে লেভান্তের বিপক্ষে জয় তুলে নেয় রোনাল্ড কোম্যানের শিষ্যরা। এই গোলের মাধ্যমে বার্সার জার্সিতে মেসির গোলসংখ্যা গিয়ে দাঁড়ালো ৬৪২ এ।

কিংবদন্তী পেলে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল ক্লাব সান্তোসের হয়ে গোল করেছেন ৬৪৩টি। অর্থাৎ আর এক গোল করলেই পেলেকে ছুঁয়ে ফেলবেন মেসি। যদি পরের খেলায় দুই গোল করেন তাহলে ফুটবল ইতিহাসে এক ক্লাবের হয়ে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডটি মেসির ঝুলিতে চলে যাবে।

খেলাধুলা

বেক্সিমকো ঢাকা ও ফরচুন বরিশালের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে গতকাল শনিবার (১২ ডিসেম্বর) শেষ হয়েছে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের গ্রুপ পর্বের খেলা। আগামীকাল সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) থেকে শুরু হবে সেরা চার দলকে নিয়ে প্লে-অফ রাউন্ড। সেখানে শিরোপার জন্য লড়বে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম, জেমকন খুলনা, বেক্সিমকো ঢাকা এবং ফরচুন বরিশাল।

পাঁচ দলের এই টুর্নামেন্ট থেকে একমাত্র দল হিসেবে বাদ পড়েছে মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী।

আগামীকাল সোমবারই অনুষ্ঠিত হবে প্লে-অফ রাউন্ডের দুইটি ম্যাচ। বেলা সাড়ে ১২টায় এলিমিনেটর ম্যাচে মুখোমুখি হবে বেক্সিমকো ঢাকা ও ফরচুন বরিশালের মধ্যে। ওই ম্যাচের পরাজিত দল বাদ পড়ে যাবে টুর্নামেন্ট থেকে। আর জয়ী দলকে অপেক্ষা করতে হবে ১৫ ডিসেম্বর হতে যাওয়া দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচের জন্য।

সোমবার দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচে মাঠে নামবে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানীয় দুই দল জেমকন খুলনা ও গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম। এই ম্যাচের জয়ী দল সরাসরি ফাইনালে চলে যাবে। হেরে যাওয়া দল অবশ্য বাদ পড়বে না। সুযোগ থাকবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার জিতে ফাইনালে উঠার।

দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে ১৫ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার)। সে ম্যাচে মুখোমুখি হবে প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচের পরাজিত দল ও এলিমিনেটর ম্যাচের জয়ী দল। এই ম্যাচে জেতা দল ফাইনাল খেলবে প্রথম কোয়ালিফায়ার জয়ী দলের সঙ্গে। ১৮ ডিসেম্বর (শুক্রবার) অনুষ্ঠিত হবে টুর্নামেন্টের ফাইনাল।

খেলাধুলা

বিসিবি প্রেসিডেন্ট কাপে দুর্দান্ত নেতৃত্ব দিয়েছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপেও তার ওপর ভরসা রেখেছে রাজশাহী কর্তৃপক্ষ। দিয়েছে অধিনায়কের দায়িত্ব।

কিন্তু শান্তর নেতৃত্বাধীন দল তেমন একটা ভালো করছে না। শেষ চারে খেলতে হলে আজ শনিবার (১২ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের বিপক্ষে জিততেই হবে তাদের। আবার বরিশালের ম্যাচের জয়-পরাজয়ের দিকেও তাকিয়ে থাকতে হবে শান্তবাহিনীকে। তবে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের নেতৃত্বে রীতিমতো মুগ্ধ জাতীয় দলের অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।

তিনি বলেন, শান্ত জাতীয় দলের ভবিষ্যত অধিনায়ক হওয়ার যোগ্যতা রাখেন।

শান্তর নেতৃত্ব নিয়ে গতকাল শুক্রবার (১১ ডিসেম্বর) সাইফউদ্দিন বলেন, ‘এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, শান্ত শুধু একজন দুর্দান্ত ক্রিকেটারই নন, লড়াকু অধিনায়কও। তার ফিল্ড সেটআপ, অধিনায়কত্ব সত্যি প্রশংসার যোগ্য। মাঠের ভেতরে-বাইরে দলকে উজ্জীবিত রাখতে ওর বুস্টআপ অসাধারণ। বিষয়টি আমি ২০১০ সাল থেকেই দেখে আসছি। তখন শান্ত ও মিরাজদের সঙ্গে অনূর্ধ্ব-১৫তে খেলতাম আমি। সে সময় হয়তো মিরাজ বেশি অধিনায়কত্ব করত। মিরাজ ইনজুরিতে পড়লে বা অসুস্থ হয়ে ম্যাচ মিস করলে শান্তই অধিনায়কের দায়িত্বে অন্যতম ভরসা ছিল। বলতে গেলে শান্তর নেতৃত্ব ছোটবেলা থেকে উপভোগ করেছি আমি। আর মাশাআল্লাহ শান্ত যেভাবে ব্যাটিং করছে, এটা ধারাবাহিক থাকে ৪-৫ বছর পর তার কাঁধেই জাতীয় দলের নেতৃত্ব যাবে।’

চলতি আসরে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় শীর্ষে আছেন শান্ত। ৭ ম্যাচে ১৫৯.৩৪ স্ট্রাইক রেটে তার রান ২৯০। সবশেষ ম্যাচে বরিশালের বিপক্ষে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন তিনি। ২টি হাফসেঞ্চুরিও করেছেন তিনি।

খেলাধুলা

বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে বাজে পারফরম্যান্সের কারণে বাদ পড়েছেন রাজশাহীর তারকা ক্রিকেটার মোহাম্মদ আশরাফুল। পাঁচ ম্যাচে ১১.৪ গড়ে (৫, ২৫*, ৬, ২০ ও ১) সবমিলিয়ে ৫৭ রান রান করায় দলের ষষ্ঠ ম্যাচে একাদশে জায়গা হারান জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক।

টি-টোয়েন্টি কাপে মোহাম্মদ আশরাফুলের চেয়েও বাজে অবস্থা খুলনার অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের। আট ম্যাচে সাকিব ফেরেন ১৫, ১২, ৩, ১১, ১৪, ৪, ১৫ ও ৮ রানে। সবমিলিয়ে ১০.২৫ গড়ে ৮২ রান করেন তিনি। সাকিবের চেয়ে গড় রান ভালো আশরাফুলের। অথচ দলে জায়গা পাচ্ছেন না তিনি।

টি-টোয়েন্টি ফ্রাঞ্চাইজি কাপে আশরাফুল বোলিং করার সুযোগ পাননি। সাকিব ৮ ম্যাচে ৩০ ওভারে ৫.৭৩ গড়ে ১৭২ রান খরচ করে শিকার করেন মাত্র ৫ উইকেট।

টুর্নামেন্টে আশরাফুলের মতোই ব্যর্থ সাকিব। দুজনেই জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক। আবার ফিক্সিংয়ের মতো ন্যক্কারজনক ঘটনায় উভয়েই নিষিদ্ধ হয়েছিলেন।

ক্রিকেট বিশ্লেষকদের অনেকেই বলছেন আশরাফুল যদি পারফরম্যান্স বিবেচনায় বাদ পড়েন তাহলে সাকিব কেন নয়। সাকিবের পারফরম্যান্স তো আশরাফুলের মতোই নিম্নমুখী।

খেলাধুলা

দলের প্রয়োজন চার, পারভেজ হোসেন ইমনের দরকার তখন চার। দুর্দান্ত কাভার ড্রাইভে বাউন্ডারিতে দুটিই হয়ে গেল একসঙ্গে। বাঁধনহারা উচ্ছ্বাসে মাতলেন পারভেজ। রান তাড়ার অসাধারণ এক উপাখ্যান রচিত হলো শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে। নাজমুল হোসেন শান্তর বিধ্বংসী সেঞ্চুরিতে যে রান পাহাড় গড়েছিল রাজশাহী, পারভেজের রেকর্ড গড়া দ্রুততম সেঞ্চুরিতে তা টপকে গেল বরিশাল।

রান খরার বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে মঙ্গলবার হঠাৎই এলো রানের জোয়ার। পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা দুই দলের লড়াইয়েই হয়ে গেল রান তাড়ার রেকর্ড। মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীর ২২০ রান টপকে ফরচুন বরিশাল জিতে গেল ৮ উইকেটে।

বাংলাদেশে টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি রান তাড়ার রেকর্ড এটিই। এই দুঃসাধ্য কাজটি বরিশাল করেছে ১১ বল বাকি রেখেই। গত জানুয়ারিতে বঙ্গবন্ধু বিপিএলে ঢাকা প্লাটুনের ২০৫ রান তাড়ায় খুলনা টাইগার্সের জয় ছিল বাংলাদেশে রান তাড়ার আগের রেকর্ড। খুলনাও জিতেছিল ৮ উইকেটে, ঠিক ১১ বল বাকি রেখেই।

রেকর্ড ছোঁয়া ১১ ছক্কায় রাজশাহীর হয়ে শান্ত খেলেন ৫৫ বলে ১০৯ রানের ইনিংস। জবাব হয়ে আসে পারভেজের ইনিংস। গত অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য এই ব্যাটসম্যান খেলেন ৪২ বলে ১০০ রানের অপরাজিত ইনিংস।

বেশ অনেকটা ব্যবধানে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের দ্রুততম সেঞ্চুরি এটিই। ২০১৯ বিপিএলে গড়া তামিম ইকবালের ৫০ বলে সেঞ্চুরির রেকর্ড এখন অতীত।

রানের রেকর্ডময় এই ম্যাচেও হ্যাটট্রিকের স্বাদ পেয়েছেন বরিশালের কামরুল ইসলাম রাব্বি। প্রথম ইনিংসের শেষ ওভারে হ্যাটট্রিকসহ উইকেট নেন তিনি চারটি।

বরাবরই মন্থর মিরপুরের উইকেট এ দিন দেখা গেল অনেক ব্যতিক্রম। উইকেটে ছিল ঘাসের ছোঁয়া, বল ব্যাটে এলো দারুণভাবে। দুই দলের ব্যাটসম্যানরা সেটি কাজে লাগালেন। সঙ্গে দুই দলেরই বোলিং ছিল বেশ বাজে।
রান উৎসবের শুরু রাজশাহীর আনিসুল ইসলাম ইমনের ব্যাটে। টস হেরে ব্যাটে নামা দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন এই ওপেনার। তিনি যখন বেধড়ক পেটাচ্ছেন, শান্ত তখনও দর্শক। ষষ্ঠ ওভারে ইমনের রান ২০ বলে ৪৫, শান্তর রান তখন ১২ বলে ৭।

কামরুলের ওই ওভারে টানা দুই বলে ছক্কা ও চার মেরে ছুটতে শুরু করেন শান্ত। এরপর আর থামাথামির নাম নেই।

ইমন-শান্তর উদ্বোধনী জুটিতে ১২.২ ওভারে আসে ১৩১ রান। অনায়াসেই যা টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ জুটি। ৩৯ বলে ৬৯ রান করা ইমনকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন সুমন খান।

তবে শান্তর ঝড় চলতেই থাকে। ৩২ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন তিনি, তিন অঙ্কে পা রাখেন ৫২ বলে। ৪ চার ও ১১ ছক্কায় ১০৯ করে আউট হন ইনিংসের শেষ ওভারে।

টি-টোয়েন্টিতে এক ইনিংসে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ডে এখন তামিমের সঙ্গী শান্ত। ২০১৯ বিপিএলের ফাইনালে ১৪৫ রানের ইনিংসের পথে ১১ ছক্কা মেরেছিলেন তামিম।

শান্ত-ইমনের ঝড়ের পর রাজশাহীর আর কারও তেমন কিছু করার প্রয়োজন পড়েনি। তিনে নেমে দুই ছক্কায় ১৮ করে ফেরেন রনি তালুকদার। কামরুল শেষ ওভারে ৪ উইকেট নিলেও রাজশাহী ওই ওভার থেকে তোলে ১০ রান।

তলানির দল বরিশালের জন্য এই রান হওয়ার কথা আকাশ ছোঁয়ার মতো। ব্যাটিংটাই তো এই আসরে ভোগাচ্ছিল তাদের। কিন্তু দিনটিই যে পাগলাটে! সাইফ হাসানের মতো ধীরস্থির ব্যাটসম্যানও তাই দুটি করে চার ও ছক্কায় ১৫ বলে করে ফেলেন ২৭ রান।

বরিশাল উড়ন্ত সূচনা করে সাইফের ব্যাটেই। এরপর তামিম ও পারভেজের জুটি দলকে এগিয়ে নেয় সময়ের দাবি মেনে। দ্বিতীয় উইকেটে ৫৪ বলে ১১৭ রানের জুটি গড়েন দুই বাঁহাতি।

৩৭ বলে ৫৩ রান করে তামিম আউট হন রান আউটে। ড্রেসিং রুমে ফেরার আগে তামিম কাছে ডেকে নেন পারভেজকে। অধিনায়ককে হারানোর পরও পারভেজের দাপুটে ব্যাটিং চলতেই থাকে। আফিফ হোসেনকে নিয়ে তিনি শেষ করেন কাজ।
এই টুর্নামেন্টের আগে মোটে চারটি টি-টোয়েন্টি খেলার অভিজ্ঞতা ছিল পারভেজের। প্রথম ফিফটির স্বাদ পান এই আসরেই দলের প্রথম ম্যাচে। চোখধাঁধানো সব শটের মহড়ায় ১৮ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান এবার চেনালেন নিজের জাত। বিশাল সব ছক্কা যেমন মেরেছেন, তেমনি খেলেছেন দারুণ সব ড্রাইভ। তার ব্যাটিংয়ে ছিল শক্তি, স্কিল আর বুদ্ধিমত্তার মিশেল।

২৫ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়েছিলেন তিনি। পরের পঞ্চাশে লাগে কেবল ১৭ বল। ৯ চার ও ৭ ছক্কার ইনিংস খেলে বেরিয়ে আসেন বীরের বেশে।

দারুণ এই জয়ে টিকে থাকল বরিশালের শীর্ষ চারে থাকার আশা। ৬ ম্যাচে তাদের জয় ২টি। রাজশাহীর ২ জয় ৭ ম্যাচে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী: ২০ ওভারে ২২০/৭ (শান্ত ১০৯, ইমন ৬৯, রনি ১৮, মেহেদি ০, সোহান ১২, সাইফ উদ্দিন ৪, ফরহাদ ০, ফজলে মাহমুদ ৬*, মুকিদুল ০; তাসকিন ৪-০-৪৯-০, মিরাজ ৩-০-৩৫-০, সুমন ৪-০-৪৩-২, আবু জায়েদ ২.১-০-১১-০, কামরুল ৪-০-৪৯-৪, আফিফ ২.৫-০-৩২-০)।

ফরচুন বরিশাল: ১৮.১ ওভারে ২২১/২ (সাইফ ২৭, তামিম ৫৩, পারভেজ ১০০*, আফিফ ২৬*; সাইফ উদ্দিন ৪-০-৪০-১, মেহেদি ৪-০-৪০-০, ইবাদত ৩-০-৩৯-০, মুকিদুল ২-০-২৬-০, ফরহাদ ৩-০-৪৭-০, সানি ১-০-১১-০, ইমন ১.১-০-১৫-০)।

ফল: ফরচুন বরিশাল ৮ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: পারভেজ হোসেন ইমন।