জাতীয়

রাজধানীর তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতা হেলাল উদ্দিন নাঈমের ওপর (২৬) হামলা করেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে প্ল্যাটফর্মটি।

নাঈম তিতুমীর কলেজ শাখার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইমারজেন্সি ও ক্রাইম সেলের সদস্য।

সোমবার দুপুরে এ হামলার ঘটনা ঘটে। পরে আহত অবস্থায় তাকে বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ১০১ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করান।

প্রতিবাদের বিজ্ঞপ্তিতে প্ল্যাটফর্মটি বলেছে, তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে হল খুলে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। এ আন্দোলন সম্পূর্ণ স্বতঃস্ফূর্ত, যৌক্তিক ও গণতান্ত্রিক। অথচ কলেজ প্রশাসন শিক্ষার্থীদের এ ন্যায্য দাবিকে বারবার উপেক্ষা করে আসছে। সর্বশেষ, তিতুমীর কলেজের প্রিন্সিপাল এ যৌক্তিক আন্দোলন দমন করতে ছাত্রদলকে লেলিয়ে দিয়ে যে অপরাধ করেছে, তা ক্ষমার অযোগ্য। আজ ‘তিতুমীর ঐক্য’র ব্যানারে শিক্ষার্থীরা যখন এ নগ্ন রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন, তখন সেই অবস্থানেই ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা অতর্কিত হামলা চালায়। এ হামলা চলাকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক ভিডিও ধারণ করতে গেলে ছাত্রদলের একটি সংঘবদ্ধ দল হেলাল উদ্দিন নাঈমকে ঘিরে ধরে বর্বরভাবে মারধর করে। তাকে ছাত্রলীগের কুখ্যাত কায়দায় জিম্মি করে জোরপূর্বক মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায় করার চেষ্টা করা হয়।

এতে আরও বলা হয়, এ ঘৃণ্য হামলার সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে হবে। আমরা হেলাল উদ্দিন নাঈমের উপর হামলার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি। একইসঙ্গে, কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিরুদ্ধে দলীয় ক্যাডার ব্যবহার করার অপরাধেরও তদন্ত ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।

জাতীয়

দেশে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে জুয়াখেলা বাড়ছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এরই মধ্যে জুয়ার সঙ্গে জড়িত হাজারেরও বেশি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট বন্ধের প্রক্রিয়া নেওয়া হয়েছে। সোমবার এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, দেশের কোনো নাগরিক জুয়া খেলার কোনো বিজ্ঞাপনে অংশ নিলে আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হিসাবে বিবেচিত হবে। কোনো নাগরিক, ব্যক্তি বা সেলিব্রেটি যদি মনে করেন, অনুমতি ছাড়া জুয়া খেলার ওয়েবসাইট বা পোর্টালে তার ছবি অথবা ভিডিও ব্যবহৃত হচ্ছে তাকে আইনের আশ্রয় নিতে হবে।

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ প্রণয়নের আগে যারা জুয়া খেলা বা জুয়া খেলার বিজ্ঞাপনের সঙ্গে স্বেচ্ছায় জড়িত ছিলেন তাদের অবিলম্বে এ কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। যারা আগে জুয়ার কারণে প্রতারণার শিকার ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের জন্য আইনের ৩০ ধারা অনুযায়ী অভিযুক্ত কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করা ও ক্ষতিপূরণ পাওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। সরকার দেশের জনগণকে সাইবার স্পেসে জুয়া খেলা ও জুয়া খেলাসংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার এবং এ অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি বা কোম্পানির ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে তথ্য দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে।

এ বিষয়ে সরকারের অভিযান অব্যাহত থাকবে ও সাইবার স্পেসে জুয়া খেলা, ফিন্যান্সিয়াল স্ক্যাম, জুয়ার লেনদেনের (ক্রিপ্টোকারেন্সিসহ) সঙ্গে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত বিভিন্ন সম্মানিত ব্যক্তি, সেলিব্রেটি, বিভিন্ন পেশাজীবী, অপারেটর, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সিস্টেম, এমএফএস এজেন্ট, ব্যাংক, বিমা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইন অনুসারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাশাপাশি অনলাইন জুয়ায় জড়িত বিভিন্ন পেশাজীবী, বিজ্ঞাপনদাতা কোম্পানি, মিডিয়া বায়ার, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার বিজ্ঞাপনদাতা এবং বিজ্ঞাপন গ্রহীতা সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত মোবাইল ব্যাংকিং, রেগুলার ব্যাংকিং, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যে কোনো এজেন্ট, ডিস্ট্রিবিউটর কিংবা কোনো ক্রিপ্টো ব্রোকার কিংবা হুন্ডির অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে জানাতে নিম্নোক্ত মেইলে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে- notify@ncsa. gov. bd।

জাতীয়

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জুনে দ্বিতীয় দফায় আলোচনা শুরু করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর মধ্য দিয়েই ‘জাতীয় সনদ’ তৈরি সম্ভব বলে আশা করছেন কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ।

সোমবার (২৬ মে) সংসদ ভবনের এলডি হলে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, কমিশনের দায়িত্ব হল রাজনৈতিক দলসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো এবং একটি ‘জাতীয় সনদ’ প্রণয়ন করা।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কোন কোন বিষয়ে সংস্কার প্রয়োজন, সেগুলোর ব্যাপারে এক ধরনের ঐকমত্যে এসে একটা জুলাই সনদ তৈরি করতে পারে, তাহলে সেসময় এই এটি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ার প্রশ্নটি আসবে। আমরা আশা করি রাজনৈতিক দলগুলো যেহেতু সংস্কার প্রস্তাবের ব্যাপারে অকুণ্ঠ চিত্তে সমর্থন জানিয়েছেন, বারবার জানাচ্ছেন, তাদের যে কমিটমেন্ট সেটা প্রকাশ করছে। আমরা মনে করি যে একটা পথ তারা নির্ধারণ করতে পারবে।’

সংস্কার সুপারিশ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ঐকমত্য কমিশনের সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করে আলী রীয়াজ বলেন, ‘এটা অন্তর্বর্তী সরকার সিদ্ধান্ত নেবেন। তারা কীভাবে অগ্রসর হবেন এবং আমি যেটা আগে বলেছি রাজনৈতিক দলগুলো আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে কীভাবে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া তৈরি হয়, সেটা হচ্ছে প্রশ্ন। মনে রাখা দরকার যে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াটা আসলে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরাই নির্ধারণ করবে।’

সংবাদ সম্মেলনে ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান, বিচারপতি এমদাদুল হক, মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয়

সচিবালয়ে অনিবার্য কারণবশত আগামীকাল মঙ্গলবার দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ থাকবে। সোমবার রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের মুহাম্মদ আবদুল্যাহ আল জাবেদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, অনিবার্য কারণবশত ২৭ মে (মঙ্গলবার) সচিবালয়ে সব ধরনের দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ থাকবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করা হয়েছে।

এদিকে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অনুমোদনের প্রতিবাদে টানা তৃতীয় দিনের মতো সচিবালয়ের ভেতরে ও বাইরে বিক্ষোভ করেছেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা।

গত দুই দিনের মতো সোমবার দুপুরেও আন্দোলনরত কর্মচারীরা সচিবালয়ের ভেতরে প্রধান ফটকের কাছে অবস্থান নেন। এ সময় তারা ফটক বন্ধ করে দেন।

সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চলমান আন্দোলনের মধ্যেই এ নির্দেশনা এলো।

জাতীয়

সন্ত্রাসী দিয়ে ভয়-ভীতি দেখিয়ে দরপত্র অংশগ্রহণে বাধা দেওয়ার অ‌ভি‌যোগ উঠেছে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি ২৮ নম্বর ওয়ার্ড পূর্ব আগারগাঁও ইউনিট সহ-সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান পান্নার বিরু‌দ্ধে।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) শেরে বাংলা নগরের পর্যটন করপোরেশন ভবনে এ ঘটনা ঘটে।

এ‌ বিষয়ে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান বরাবর লি‌খিত অ‌ভি‌যোগ দি‌য়ে‌ছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা।
ভুক্ত‌ভোগী‌দের অ‌ভি‌যোগ, কক্সবাজারের হোটেল শৈবালের আওতাধীন গলফ মাঠের ষোল একর বিরাশি শতাংশ উন্মুক্ত জমি পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এক বছরের জন্য লিজ দেওয়ার লক্ষ্যে আগ্রহী ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপত্র আহ্বান করে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন। এ দরপত্র আহ্বানের শেষ তা‌রিখ ছি‌ল ২২ মে সকাল সা‌ড়ে ৯টা থে‌কে দুপুর ২টা পর্যন্ত। দরপত্রে অংশগ্রহণ কর‌তে পর্যটন করপোরেশনে আসেন কক্সবাজারের স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটন ব্যবসায়ীরা। এ দরপত্রে ৩১টি শিডিউল বিক্রি করা হয়। তার মধ্যে তিনটি দরপত্র জমাদা‌নের সু‌যোগ দেওয়া হয়। বাকি ২৮ জনকে স্থানীয় সন্ত্রাসী দিয়ে ভয়-ভীতি দেখিয়ে কর‌পো‌রেশ‌নে প্রবেশ কর‌তে দেওয়া হয়‌নি। প‌রে এ বিষ‌য়ে পর্যটন করপোরেশন চেয়ারম্যানের কা‌ছে লি‌খিত অ‌ভি‌যোগ দেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মেসার্স আইল্যান্ড এন্টারপ্রাইজের মালিক আলমগীর হোসেন বাবু বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের টেন্ডারের শিডিউল ড্রপ করতে দেয়নি হাবিবুর রহমান পান্না। ৩১ জনের মধ্যে ২৮ জন শিডিউল ড্রপ করতে পারেনি। কক্সবাজার থেকে ঢাকার আগারগাঁওয়ে এসে টেন্ডার ড্রপ করতে পারিনি বিএনপির ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা পান্নার কারণে। তার লোকজন হুমকি দিয়েছেন, পান্নার সঙ্গে কথা বলা ছাড়া টেন্ডার জনা দেওয়া যাবে না।

তিনি আরও বলেন, এখন যদি টেন্ডার ড্রপ করতে না পারি, বলার কিছু নেই। আমরা চাচ্ছি পুনরায় টেন্ডার হোক। যেখানে সবাই টেন্ডার জমা দিতে পারবো। যে ভালো রেট দেবে, সে যেন পায়। পান্না যে রেট দিচ্ছেন তার থেকে অন্যরা আরও বেশি রেট দিতে পারতেন। এর ফলে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাতে যাচ্ছে। ধরেন গত বছর ডাক ছিল ৯৬ লাখ টাকা। পান্না এখন এক কোটি ২০ লাখে টেন্ডার ড্রপ করেছে। অন্য কেউতো আরও বেশি ২ কোটি টাকার টেন্ডার ড্রপ করতে পারতো। তিনি আমাদের বাধা দিয়ে টেন্ডার ড্রপ করতে দিল না।

আরেক ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী নাদিয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক হামিদুল ইসলাম ব‌লেন, সন্ত্রাসী পান্না আমাকে টেন্ডার জমা দিতে দেয়নি। পান্নার সঙ্গে যোগাযোগ করে তিনজন টেন্ডার জমা দিয়েছেন। আগারগাঁও এলাকার বিএনপির ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা পান্না। পান্না বলেন, ‘আপনারা কেউ টেন্ডার জমা দেবেন না। আমরা তিনটি টেন্ডার জমা করবো। টেন্ডার জমা দিতে গেলে অসুবিধা হবে। ’

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি ২৮ নম্বর ওয়ার্ড পূর্ব আগারগাঁও ইউনিট সহ-সভাপতি অভিযুক্ত মো. হাবিবুর রহমান পান্না বাংলানিউজকে বলেন, আমি একজন বিএনপি কর্মী। আমি ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব আগারগাঁও ইউনিট সহ-সভাপতি। আমি নিজেই টেন্ডার জমা দিতে পারিনি। তিনদিন হয়ে গেল টেন্ডারের বিষয়ে কিছুই জানতে পারছি না।

তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে পান্না বলেন, আমার নামে প্যাঁচ লাগানো বা ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছে কেউ। আমিও এই ব্যবসা দীর্ঘ ২০ বছর ধরে করি। এই কারণে আমি নিজেও শিডিউল কিনেছি। এখন আমি নিজেও জানি না শিডিউলের টাকা ফেরত পাবো কিনা।

বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান সায়েমা শাহীন সুলতানা বাংলানিউজকে বলেন, ভুক্তভোগী কোম্পানিগুলো অভিযোগ দিয়েছে, পেয়েছি। আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। টেন্ডারের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের টেন্ডার কমিটিকে অভিযোগটি দেওয়া হয়েছে। যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জাতীয়

দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে নানা সময়ে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব দেখা গেছে। যতই দিন যাচ্ছে, দ্বন্দ্ব যেন ক্রমশ বাড়ছেই।

এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, যত দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যাবে, ততই দেশের জন্য মঙ্গল।

গণঅভ্যুত্থানে সামনের সারিতে থাকা শিক্ষার্থীদের নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপি দলটি গঠনের পর থেকেই জামায়াতে ইসলামী বা ছাত্র শিবিরের সঙ্গে এক ধরনের রাজনৈতিক মিত্রতাও ছিল। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতেও দল দুটি এক মঞ্চে ছিল। পরে জামায়াত ইস্যু ঘিরে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের স্ট্যাটাস ঘিরে দল দুটির মধ্যে এক ধরনের টানাপোড়েনও তৈরি হয়।

তখন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন,  ‘উপদেষ্টা মাহফুজ আলম সংবিধানবিরোধী যে কাজটি করেছেন তাতে তিনি শপথের ভায়োলেশন করেছেন। কোনো রাগ বা বিরাগের বশবর্তী হয়ে কাউকে হুমকি দেওয়া বা কোনো বিষয়ে তার দায়িত্ব থাকাকালীন সময় এটা তার জন্য মানায় না। ’

জানা যায়, উপদেষ্টা পরিষদে থাকলেও দলের নেতাদের ওপর মাহফুজ আলমের প্রভাব রয়েছে। এ কারণে তার ওই ফেসবুক স্ট্যাটাসের পর দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবৃতিও দেওয়া হয়েছিল।

এদিকে, ইশরাক হোসেনের শপথ নেওয়ার আন্দোলন থেকে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। এদিকে বিএনপি তাদের দাবিতে বলছে, অন্তর্বর্তী সরকারের যে উপদেষ্টারা ‘সরাসরি বা পরোক্ষভাবে নতুন একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত’, তাদের অব্যাহতি দিতে হবে।

নির্বাচন ও সংস্কার ইস্যুতেও বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির বিরোধ রয়েছে। বিএনপি শুরু থেকেই দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কথা বলে আসছে। জামায়াতে ইসলামী চাইছে, সংস্কার শেষে ‘যৌক্তিক সময়ের’ মধ্যে নির্বাচন। আর এনসিপি আগে চাইছে ইসি পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন।

এনসিপি-জামায়াত বিরোধ

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর নেতৃত্বে আন্দোলন শুরু হয় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে। ওই রাতেই একে একে আন্দোলনে যুক্ত হয় ছাত্র শিবির, হেফাজতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলনসহ বেশ কিছু রাজনৈতিক ও ছাত্র সংগঠন।

পরে অবস্থান কর্মসূচির স্থান পরিবর্তন করে শাহবাগে নিয়ে যাওয়া হয়। শাহবাগে জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমসহ বেশ কয়েকজন নেতার নাম ধরে বিতর্কিত কিছু স্লোগান ও জাতীয় সংগীত গাওয়ার সময় বাধা দেওয়ার ঘটনাও ঘটে। পরে সেই বিষয়গুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে টানা আন্দোলনের মুখে শনিবার রাতেই জরুরি বৈঠকে বসে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। বৈঠকে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের কথা জানানো হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের পর তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম তার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি স্ট্যাটাস দেন।

সেখানে তিনি লেখেন, ৭১র প্রশ্ন মীমাংসা করতেই হবে। যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাইতে হবে। বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হলে পাকিস্তানপন্থা বাদ দিতে হবে। পাকিস্তান এ দেশে গণহত্যা চালিয়েছে। সহযোগীদের ইনিয়ে বিনিয়ে গণহত্যার পক্ষে বয়ান উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। জুলাইয়ের শক্তির মধ্যে ঢুকে স্যাবোটাজ করা বন্ধ করতে হবে। সাফ দিলে আসতে হবে।

পরে আরেকটি পোস্ট দিয়ে সেটি সরিয়ে ফেলেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তবে তার পোস্টের স্ক্রিনশট দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। একই মঞ্চে আন্দোলন করে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সফলতা আসার পর কেন হঠাৎ জামায়াত শিবিরকে ইঙ্গিত করে এই ধরনের পোস্ট দেন মাহফুজ আলম, সেটি নিয়েও প্রশ্ন জামায়াত ও শিবিরের শীর্ষ নেতাদেরও। জামায়াত ও শিবির বিষয়টি নিয়ে নিজেদের মধ্যে একাধিক বৈঠকও করেছে। সেখানে কেউ কেউ মাহফুজ আলমের পদত্যাগের দাবিও তোলেন।

এনসিপি-বিএনপি বিরোধ

৫-আগস্ট রাজনীতিতে পরবর্তী বিএনপি ছিল কিছুটা ধীর-স্থির ভূমিকায়। তবে দলের চেয়ারপারসনের চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পর বিএনপির সব স্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন করে উদ্দীপনা দেখা যায়। একপর্যায়ে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের শপথ নিয়ে বিলম্ব করায় মাঠে নামেন বিএনপি সমর্থকেরা। পরে আদালতের আদেশের মাধ্যমে সেই আন্দোলনে পূর্ণতা আসে। ফলে এখন রাজনীতির মাঠে এনসিপি-জামায়াতকে ছাপিয়ে অনেকটা সামনে চলে এসেছে বিএনপি।

এই প্রেক্ষাপটে বিএনপি কয়েকটি দাবি উত্থাপন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে—অন্তর্বর্তী সরকারের যে উপদেষ্টারা ‘সরাসরি বা পরোক্ষভাবে নতুন একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত’, তাদের অব্যাহতি, সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানকে অপসারণ এবং ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জাতীয় সংসদ গঠনের লক্ষ্যে অবিলম্বে একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি।

ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করছিলেন তার সমর্থকেরা। টানা নগর ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে পরে বুধবার থেকে মৎস্য ভবন, কাকরাইল ও যমুনার সামনের রাস্তায় অবস্থান করছিলেন তারা। হাইকোর্টে সেই রিট খারিজ করে দিলে বৃহস্পতিবার বিকেলে অবশ্য ৪৮ ঘণ্টার জন্য আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করেন ইশরাক।

ইসির সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে নির্বাচন কমিশনকে ‘বিএনপির দলীয় আখড়া’ বলে অভিহিত করেন এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, ‘এই যে ইসি গঠন করা হয়েছে এটা কোনো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এখন অ্যাকটিভ করে না। এটা বিএনপির একটি দলীয় কার্যালয় হিসেবে উপস্থিত হয়েছে। এটা বিএনপির মুখপাত্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ’

বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদের বিরুদ্ধে ‘ভারতের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী মুজিববাদী সংবিধান রাখতে চায়’ বলে অভিযোগ তোলেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনই হবে। আমরা যতদিন বেঁচে আছি এই ইসি পুনর্গঠন করেই ছাড়ব। ইসি পুনর্গঠন না হলে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন জাতীয় নাগরিক পার্টি করতে দেবে না।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের যে উপদেষ্টারা একটি নতুন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত বলে সবাই জানে ও বুঝে; উপদেষ্টা পরিষদে তাদের উপস্থিতি সরকারের নির্দলীয় নিরপেক্ষ পরিচিতিকে ক্রমাগত প্রশ্নবিদ্ধ করে চলেছে বলেই সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে তাদের অব্যাহতি দেওয়া প্রয়োজন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার বুধবারের বক্তব্য আবারও নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে তাকে অব্যাহতি দিতে হবে।

সম্প্রতি ‘আওয়ামী লীগের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বিএনপি চলে’—জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর এমন বক্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানান বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেতারা যদি একত্রে প্রস্রাব করেন, তাহলে এই প্রস্রাবের তোড়ে ভেসে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়বা। এমন কোনো কথা বলবা না যে কথার দায়িত্ব নিতে পারবা না। বিএনপির সম্পর্কে যে অভিযোগ করছ, সেই অভিযোগের জবাবে বিএনপি যদি শুধু থুথু ফেলে, সেই থুথুর মধ্যে তোমাকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। ’

হাসনাত আবদুল্লাহর উদ্দেশে দুদু বলেন, ‘কথা বলার আগে একটু চিন্তাভাবনা করে বলতে হয়। এভাবে কথা বললে তোমাদের সম্বন্ধে মানুষের ধারণা কোথায় যাচ্ছে, একটু চিন্তা করো। এমন কোনো কথা বলবা না যে কথার দায়িত্ব নিতে পারবা না। হিসাব করে চলা, বলা ও গণতন্ত্রের রীতিনীতি না মানলে ফ্যাসিস্ট হিসেবে চিহ্নিত হবা। এ রকম প্রতিহিংসামূলক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে রাজনীতি করা যাবে না। ’

জামায়াত-বিএনপি দূরত্ব

দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক মিত্র ও নির্বাচনের সঙ্গী বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যেও তৈরি হয়েছে দূরত্ব। বিভিন্ন সময়ে নেতাদের কথায় তা স্পষ্ট। লন্ডনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমানের সাক্ষাতের পর সম্পর্কে দূরত্ব কমবে বলে মনে করা হয়েছিল। তবে দলীয় আদর্শ আর কৌশলের রাজনীতি তাদের দূরত্ব আরও বাড়িয়েছে।

গত বছরের ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ। সেই থেকে রাজনীতির মাঠে নানা বিষয়ে এই দুই দলের মধ্যে স্পষ্ট মতবিরোধ দেখা দেয়। তৃণমূল থেকে শীর্ষ নেতাদের বক্তব্যেও তা স্পষ্ট হয়। দুই দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা, সরকারের সংস্কার প্রস্তাব, নির্বাচনের দিনক্ষণ, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক, প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে দলীয় লোকের বদলি, পদায়ন, নিয়োগ, দখল-চাঁদাবাজির মতো বিষয় নিয়ে বিরোধ রয়েছে।

সবশেষ একটি ঘটনার দিকে তাকানো যাক। পাবনার আটঘরিয়ায় একটি কলেজের পরিচালনা পর্ষদের অভিভাবক সদস্যপদ নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা–কর্মীদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়েছে। বিরোধের জের ধরে দুই পক্ষ একে অপরের ওপর হামলা, দলীয় কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ তুলেছে।

ভুল পদক্ষেপে অন্য কারো লাভ?

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরে একটি অংশ দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকার পক্ষে, তাই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। শুধু রাজনৈতিক দলগুলো নয়, গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারদের মধ্যেও বিভক্তি স্পষ্ট হয়ে পড়েছে। এই ঘোলাটে পরিস্থিতিতে তৃতীয় পক্ষ সুযোগ নিতে পারে।

তারা বলছেন, বিভক্তিতে পতিত আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনেরও আশঙ্কা রয়েছে। এমন বাস্তবতায় সরকার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিএনপি ও এনসিপি কোনো একটি পক্ষের ভুল পদক্ষেপ পরিস্থিতি শোচনীয় করে তুলতে পারে। এতে চূড়ান্ত বিচারে লাভবান হবে গণঅভ্যুত্থানের পরাজিত ও পতিত শক্তি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইশরাক হোসেনের মেয়র পদের ইস্যুকে জাতীয় ইস্যুতে পরিণত করে বিএনপি শক্তি প্রদর্শনের রাজনীতি দেখাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দলটি বরাবারই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ দাবি করে আসছে। এনসিপি-বিএনপির মধ্যে মূলত শক্তির পরীক্ষা চলছে। তাদের পারস্পরিক দ্বন্দ্ব গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলোর মধ্যে বিভেদ বাড়াবে। এতে অস্থিরতাও বাড়বে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ‘পদত্যাগ করতে চান’ চান বলেও খবর সামনে এসেছে। এমন পরিস্থিতিতে আগের সব ‘বিভাজনমূলক বক্তব্য ও শব্দচয়নের’ জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন। তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে একই আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। আরও কয়েকটি দল ঐক্যের কথা বলছে।

রাজনীতিবিদ-বিশ্লেষকরা কী বলছেন

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ইশরাক হোসেনের মেয়র পদে শপথ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার সম্পূর্ণ প্রতিহিংসামূলক কাজ করছে। ভারত ও আওয়ামী লীগের মতো এখনো প্রতিহিংসার রাজনীতি চলছে। জনগণের নির্বাচিত সরকার ছাড়া পরিস্থিতি স্থিতিশীল করা সম্ভব নয়। তাই যত দ্রুত সম্ভব অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত হবে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করে জাতিকে আশ্বস্ত করা।

রাষ্ট্রচিন্তক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী  বলেন, দেশের চলমান আইনশৃঙ্খলা ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতির জন্য যত দ্রুত সম্ভব জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া জরুরি। সে কারণে বিএনপিসহ জুলাই বিপ্লবের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা জরুরি। প্রয়োজনে নিজেদের ছাড় দেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। আশা করি, নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর হলে পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাবে।

জাতীয়

বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (বিপিএসসি) আসন্ন ৪৮তম বিশেষ বিসিএসে ৫০০ ডেন্টাল সার্জন নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন ডেন্টাল চিকিৎসকেরা।

রোববার রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে ‘বাংলাদেশ ডেন্টাল ঐক্য পরিষদের’ ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে এ দাবি জানান বিডিএস ডিগ্রিধারী বিসিএস প্রার্থীরা।

মানববন্ধনে ঐক্য পরিষদের নেতারা বলেন, ১৮ কোটি জনসংখ্যার দেশের বেশির ভাগ মানুষ প্রায়শ মুখ ও দাঁতের নানাবিধ রোগে ভুগে থাকেন। দেশে মুখ ও মুখ গহ্বরের ক্যানসারে আক্রান্তের হার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। বেসরকারিভাবে এ চিকিৎসা ব্যয়বহুল। প্রাথমিকভাবে ডেন্টাল সার্জন রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা দিলে তা প্রতিরোধ সম্ভব। উপজেলাগুলোতে চার থেকে পাঁচ লাখ মানুষের বিপরীতে ৩১, ৫০ ও ১০০ শয্যার হাসপাতালগুলোতে ডেন্টাল সার্জনের পদ একটি। ১০ ও ২০ শয্যার হাসপাতালগুলোতে ডেন্টাল সার্জনের পদ নেই।

সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ৩৯তম বিশেষ বিসিএসে ছয় হাজার এমবিবিএস চিকিৎসকের বিপরীতে ২৫০ বিডিএস চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়। ৪২তম বিশেষ বিসিএসে বিডিএস চিকিৎসক নিয়োগ হয়নি। ৪৮তম বিসিএসে দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগের কথা চলছে। এতে বিডিএস চিকিৎসকের কোনো পদ নেই।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, উচ্চশিক্ষিত বেকারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেকারত্বের মধ্যে পড়েছেন ডেন্টাল সার্জনেরা।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ থেকে বিডিএস সম্পন্ন করা জহিরুল ইসলাম, রাশেকীন সিদ্দিক ও ফাবিহা শারমিন, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ থেকে ইসমাইল হোসেন, ঢাকা ডেন্টাল কলেজের হাবিবুল্লাহ মারজান ও লায়েক আহমেদ, সাপোরো ডেন্টাল কলেজের জুই দেওয়ান প্রমুখ।

জাতীয়

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়ার দায়িত্ব আরও বাড়লো।

এখন থেকে তিনি স্থানীয় সরকার বিভাগের উন্নয়ন অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে মূল দায়িত্ব পালন করবেন।

নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে ডিএসসিসি প্রশাসক ও ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) দায়িত্ব সামলাবেন শাহজাহান মিয়া।

শাহজাহান মিয়াকে এসব দায়িত্ব দিয়ে রোববার (১৮ মে) স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে।

পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত শাহজাহান মিয়া এসব দায়িত্ব পালন করবেন বলে আদেশে বলা হয়েছে।

জাতীয়

রাজউকের বিতর্কিত তালিকাভুক্ত প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনিয়ম খুঁজে পায়নি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ কারণে সংশ্লিষ্ট প্লটের বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিসমাপ্ত করা হয়েছে।

সম্প্রতি দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ কথা বলা হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, গত বছর রাজধানী ও আশপাশের কয়েকটি এলাকায় রাজউকের বেশকিছু প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগ চাউর হয়। পরবর্তী সময়ে এসব অভিযোগ তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। তবে দীর্ঘসময় চলা অনুসন্ধান শেষে সুনির্দিষ্টভাবে ১৫টি প্লটের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। এ কারণে কমিশন কর্তৃক এ সংক্রান্ত অভিযোগ পরিসমাপ্তির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। ৮ এপ্রিল দুদকের এক চিঠিতে বলা হয়, ‘আলোচ্য প্লটগুলোর বিষয়ে রাজউক তার নিজস্ব বিধান অনুসরণ করে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে।’

জানা যায়, দুদক যেসব প্লটের বিষয়ে অভিযোগ অনুসন্ধান করে, সেগুলোর বেশির ভাগই রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান ও উত্তরায় অবস্থিত। এসব প্লটের মধ্যে অন্যতম গুলশান আবাসিক এলাকার সিডব্লিউএন (এ) ব্লকের ৪৯ নম্বর রোডের ২ নম্বর প্লট। শতকোটি টাকা মূল্যের জমিটি বিতর্কিত সম্পত্তি হিসাবে তালিকাভুক্ত করে রাজউক। এ নিয়ে গত বছর ২৪ নভেম্বর ‘কারসাজিতে বেদখল হাজার কোটি টাকার সম্পদ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে । তবে শেষ পর্যন্ত এ প্লটের বিষয়ে ‘ক্লিন’ সার্টিফিকেট দিয়েছে দুদক।

এ প্রসঙ্গে প্লটটির মালিকপক্ষের একজন জানান, রেজিস্ট্রি দলিল মূলে সম্পত্তির মালিকানা প্রতিষ্ঠিত। ২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর তার অনুকূলে গুলশান সাবরেজিস্ট্রি অফিস থেকে সাব কবলা দলিল সম্পাদিত হয়। পরে এ বিষয়ে রাজউকের যথাযথ অনুমোদনসহ নামজারি থেকে শুরু করে বৈধ মালিকানার সপক্ষে অন্য সব দাপ্তরিক কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে জমিটিতে মালিকপক্ষ ভোগদখলরত আছে।

জাতীয়

রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের দায়িত্বে আসছে অন্তর্বর্তী প্রশাসন। এতে প্রশাসকের দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন ঢাকা কলেজের সদ্য সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস।

আগামী দুই বছরের জন্য তাকে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। তাকে প্রশাসক করা হবে। ঢাকা কলেজই হবে অন্তর্বর্তী প্রশাসনের প্রধান দপ্তর।

রোববার (১৮ মে) রাতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) একজন সদস্য জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে, চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ায় চুক্তিভিত্তিতে অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াসকে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দিয়ে রোববার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। যোগদানের তারিখ থেকে পরবর্তী দুই বছর মেয়াদে তাকে এ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

সাত সরকারি কলেজ হলো- ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ। কলেজগুলোতে নিয়মিত শিক্ষার্থী প্রায় দুই লাখ। শিক্ষক এক হাজারেরও বেশি।

কলেজগুলো একসময় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ছিল। ২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর এ সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু অধিভুক্ত করার পর থেকে যথাসময়ে পরীক্ষা নেওয়া, ফল প্রকাশসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা।

সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত জানুয়ারিতে এ কলেজগুলোকে আবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা করার কথা জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরপর সাত কলেজের জন্য নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সেটির নাম হবে ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’।