জাতীয়

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরো ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃত্যু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৩৫৯ জন।

একই সময়ে নতুন করে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে আরো ১ হাজার ৩৬৭ জন। এতে শনাক্ত বেড়ে ৫ লাখ ৪ হাজার ৮৬৮ জন হয়েছে।

বুধবার বিকালে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরো ২ হাজার ৪১৬ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়েছেন।

এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৪ লাখ ৪৪ হাজার ৩৪৫ জন হয়েছে।

জাতীয়

করোনাকালীন বিশেষ আর্থিক অনুদান হিসেবে জাতীয় প্রেসক্লাবকে ৫০ লাখ টাকা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিনের কাছে করোনাকালীন বিশেষ আর্থিক অনুদানের ৫০ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম, উপ-প্রেস সচিব কে এম শাখাওয়াত মুন, উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার, সহকারী প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কায়েস এবং সহকারী প্রেস সচিব মু. আশরাফ সিদ্দিকী বিটু উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয়

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মৃত্যু হয়েছে ৩২ জনের। এ নিয়ে মোট মৃতে সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৩১২ জনে।

এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে আরও ১ হাজার ৪৭০ জন। এর মধ্য দিয়ে আক্রান্ত শনাক্ত পৌঁছেছে মোট ৫ লাখ ২ হাজার ১৮৩ জনে।

অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬০টি ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ করা হয় ১৫ হাজার ৪০৯টি। অ্যান্টিজেন পরীক্ষাসহ নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৫ হাজার ৬৬৯টি। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৯.৩৮ শতাংশ এবং এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৬.২৪ শতাংশ। মোট মৃত্যুর হার ১.৪৬ শতাংশ।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ২ হাজার ১৬৭ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৩৯ হাজার ৬৯৪ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৭ দশমকি ৫৬ শতাংশ।

গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ১৮ মার্চ প্রথম একজনের মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

জাতীয়

বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক কবি ও প্রাবন্ধিক মনজুরে মওলার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রবিবার এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, মনজুরে মওলা তাঁর সাহিত্য কর্ম ও সৃষ্টিশীলতার জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

জাতীয়

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে সাত হাজার ২৪২ জনের।

নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন এক হাজার ২৬৭ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চার লাখ ৯৯ হাজার ৫৬০ জনে।

শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গ বিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৯৭৮ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন চার লাখ ৩৫ হাজার ৬০১ জন। সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৬০টি ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব ১১৩টি, জিন-এক্সপার্ট ১৮টি, র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন ২৯টি। এসব ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১২ হাজার পাঁচটি। আগের নমুনাসহ মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১২ হাজার ৩০০টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৩০ লাখ ৫২ হাজার ৩৬৪টি।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার হার ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৩১ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৭ দশমিক ২০ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৫ শতাংশ।

বিজ্ঞপ্তিতে নাসিমা সুলতানা জানান, ২৪ ঘণ্টায় মৃত ২৫ জনের মধ্যে ১৭ জন পুরুষ ও নারী আট জন। এদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা বিভাগে ১৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে চার জন। খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগে দুইজন করে চার জন। এছাড়া রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে এক জন করে দুই জন। এদের মধ্যে হাসপাতালেই মারা গেছেন ২৫ জন।

মৃতদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে ১৫ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে পাঁচ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে দুই জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে তিন জন রয়েছেন।

তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে এসেছেন ১৪২ জন ও আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৯৯ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে এসেছেন ৯৪ হাজার ৮১১ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র নিয়েছেন ৮২ হাজার ৪৫৬ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ৩৫৫ জন

জাতীয়

শতভাগ বিদ্যুতায়নের দ্বারপ্রান্তে দেশ। বিদ্যুেসবার মধ্যে এসেছে জাতীয় গ্রিডের আওতায় থাকা সব গ্রাম ও পরিবার। শুধু বাকি রয়েছে গ্রিড এলাকার বাইরে থাকা ৩ লাখ ৭ হাজার ২৪৬ পরিবার। এ পরিবারগুলোতে বৈদ্যুতিক আলো জ্বললে সব নাগরিককে বিদ্যুেসবার আওতায় আনার মাইলফলক অর্জিত হবে। আগামী মার্চের মধ্যে এ পরিবারগুলোতেও বিদ্যুত্ পৌঁছে যাবে। স্বাধীনতার ৫০ বছর এবং মুজিববর্ষ পূর্তিতে দেশের সব নাগরিক পাবেন বিদ্যুত্। আলোয় উদ্ভাসিত হবে সারা বাংলাদেশ।

সব মানুষের ঘরে বিদ্যুত্—এমন অনুপ্রেরণা ও সংকল্প নিয়ে এখন কাজ করছেন বিদ্যুত্কর্মীরা। বিদ্যুত্ সংযোগ পরিস্থিতিও বদলে গেছে। আগে বিদ্যুত্ সংযোগের আবেদন করে দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকতে হতো গ্রাহকদের। আর এখন মাইকিং করে খোঁজা হচ্ছে সম্ভাব্য গ্রাহককে। বিদ্যুিবহীন থাকা বা সংযোগ না পাওয়া পরিবারগুলোকে যত দ্রুত সম্ভব স্থানীয় বিদ্যুত্ অফিসে আবেদন করতে বলা হয়েছে। সংযোগ না পাওয়া পরিবারের খোঁজ পাওয়া গেলে দ্রুততর সময়ে তাদের বিদ্যুেসবার আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। শতভাগ বিদ্যুতায়ন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোনো পর্যবেক্ষণ বা পরামর্শ থাকলে তা যথাশিগগির জানানোর জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করে সব সংসদ সদস্যকে চিঠি দিয়েছেন বিদ্যুত্, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী।

বিদ্যুত্ বিভাগ এবং বিতরণ কোম্পানিগুলো সূত্র জানায়, গত নভেম্বর পর্যন্ত দেশের ৯৮ শতাংশ গ্রাম-পরিবার বিদ্যুত্ সংযোগ পেয়েছে। ৯৮ হাজার ৩১৯টি গ্রামের মধ্যে ৯৫ হাজার ২৪০টি গ্রাম শতভাগ বিদ্যুতায়িত করেছে সংশ্লিষ্ট সংস্থা-কোম্পানিগুলো। এখন বাকি রয়েছে ৩ হাজার ৭৯টি গ্রাম। এ সবগুলো গ্রামই পার্বত্য, দ্বীপ এবং চরাঞ্চলের। এগুলোতে গ্রিড বিদ্যুত্ সরাসরি পৌঁছানো যায়নি। তাই বিকল্প উপায়ে বিদ্যুত্ পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বিদ্যুত্ বিভাগের নীতি-বিশ্লেষণী সংস্থা পাওয়ার সেলের তথ্যমতে, বিতরণ সংস্থাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গ্রাম বাকি রয়েছে বিদ্যুত্ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি)। এ সংস্থার আওতাধীন ২ হাজার ৫২ গ্রামে বিদ্যুত্ পৌঁছেনি। শতভাগ বিদ্যুতায়নের পথে সবচেয়ে বেশি মাইলফলক অর্জনকারী সংস্থা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের আওতায় ১ হাজার ১৪টি গ্রাম বাকি রয়েছে। রাজশাহী অঞ্চলে বিদ্যুত্ সরবরাহে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোম্পানি ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির আওতায় ৯টি গ্রাম এবং উত্তর অঞ্চলের কোম্পানি নেসকোর আওতায় ১৭টি গ্রামে বিদ্যুতায়ন হয়নি। ঢাকায় বিদ্যুত্ বিতরণে দায়িত্বরত দুই সংস্থা—ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) এবং ঢাকা ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) আওতাধীন এলাকায় সব পরিবার বিদ্যুত্ সংযোগ পেয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর এবং মুজিব শতবর্ষকে সামনে রেখে শতভাগ বিদ্যুতায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল সরকার। সে লক্ষ্য নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে।

চলতি ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সংসদ সদস্যদের দেওয়া চিঠিতে বিদ্যুত্ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্ল্যান-২০১৫ অনুযায়ী ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত্ উত্পাদনের লক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি খাতের যৌথ চেষ্টায় বিদ্যুত্ উপাদন সক্ষমতা (ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ) ২৩ হাজার ৫৪৮ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। এরই মধ্যে শতভাগ বিদ্যুতায়ন সম্পন্ন সাত জেলা এবং ২৮৮টি উপজেলা প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেছেন। মুজিববর্ষের মধ্যে অবশিষ্ট উপজেলাগুলোতে শতভাগ বিদ্যুতায়নের কাজ সম্পন্ন করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বিদ্যুতের গ্রাহক সংখ্যা বর্তমানে ৩ কোটি ৮৭ লাখ এবং দেশের প্রায় ৯৮ শতাংশ জনগোষ্ঠী বিদ্যুত্ সুবিধার আওতায় এসেছে। অবশিষ্ট ২ শতাংশ জনগোষ্ঠীর অধিকাংশের অবস্থান প্রত্যন্ত অফগ্রিড এলাকাসমূহে। এ সব এলাকায় সাবমেরিন ক্যাবল এবং সোলার মিনিগ্রিডের মাধ্যমে বিদ্যুত্ পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন বলেন, শতভাগ বিদ্যুতায়নের পথে অনেক বাধা ছিল। এখনো আছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও নির্দেশনায় সেসব বাধা পেরিয়ে এখন সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে আমরা। বিদ্যুত্ উত্পাদন থেকে বিতরণ পর্যন্ত নিয়োজিত সবাই একটি দল হয়ে কাজ করার ফলাফল হলো—নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে এ অর্জন।

মাথাপিছু বিদ্যুত্ উত্পাদন বেড়েছে

২০০৯ সালের প্রথমভাগে দেশের ৫৭ শতাংশ মানুষ বিদ্যুত্ সুবিধার বাইরে ছিল। তখন উত্পাদন সক্ষমতা ছিল ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট। গত এক যুগে মাথাপিছু বিদ্যুত্ উত্পাদন ক্ষমতা ২২০ থেকে ৫১২ কিলোওয়াট ঘণ্টায় উন্নীত হয়েছে। বিদ্যুত্ বিভ্রাট কমেছে আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। কৃষিসেচে এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। ২০০৯ সালে দেশে সেচ সংযোগ ছিল ২ লাখ ৩৪ হাজার। এখন সেটি ৩ লাখ ৬২ হাজার। শুধু জনপদ আলোকিত বা কৃষিতে উন্নতি নয়, অর্থনীতিতেও বড় পরিবর্তন এসেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, গত এক যুগে দেশের অর্থনীতিতে যে অর্জন, তাতে বিদ্যুত্ পরিস্থিতির উন্নতির বড় ভূমিকা রয়েছে। শিল্প উত্পাদনে গতি সৃষ্টির পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতিও নতুন প্রাণ পেয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বিদ্যুত্ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘সব মানুষের কাছে বিদ্যুেসবা পৌঁছে দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। সামান্য সুযোগ-সুবিধা পেলেই সাধারণ মানুষের ভাগ্যের বড় পরিবর্তন হয়ে যায়। গ্রিডভুক্ত শতভাগ এলাকায় বিদ্যুতায়ন হয়েছে। বিদ্যুতায়িত গ্রাম-শহর-উপজেলার সমাজ ও অর্থনীতিতে ইতিমধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন শুরু হয়েছে। এটি আমাদের উন্নত বাংলাদেশের পথে হাঁটতে আরো সাহসী করে তোলে।’

দ্বীপে বিদ্যুত্ সাবমেরিনে, পার্বত্য ও দুর্গম এলাকায় সৌর

সাগরের তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলাকে জাতীয় গ্রিডের আওতায় আনা হয়েছে। কক্সবাজারের প্রায় ২১৫ বর্গকিলোমিটারের কুতুবদিয়া দ্বীপকেও পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুতায়নের কাজ চলমান রয়েছে। নোয়াখালীর হাতিয়া ও নিঝুম দ্বীপের জন্যও একই ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। আইপিপিপির মাধ্যমে হাতিয়া দ্বীপে ৮ থেকে ১০ মেগাওয়াট তরল জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুেকন্দ্র নির্মাণ করছে পিডিবি।

আরইবির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মঈন উদ্দিন জানান, তার সংস্থায় আওতায় ৪৬২টি উপজেলার মধ্যে ৪৬১টিতে শতভাগ বিদ্যুতায়ন সম্পন্ন হয়েছে। অফগ্রিডে থাকা পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় নবায়নযোগ্য জ্বালানির মাধ্যমে শতভাগ বিদ্যুতায়নের কাজ চলছে।

পার্বত্য তিন জেলায় ৫৬ হাজার গ্রাহকের কাছে বিদ্যুত্ পৌঁছানোর কাজ চলমান রয়েছে। এর বাইরে দুর্গম পাহাড়ে থাকা আরো ৪০ হাজার পরিবারের কাছে গ্রিড লাইনের বিদ্যুত্ নেওয়া সম্ভব নয়। সেখানে সোলার হোম সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুত্সংযোগ দেওয়ার প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। রংপুর ও রাজশাহীতে গ্রিডের বাইরে থাকা দুর্গম চরে বিনা মূল্যে সোলার হোম সিস্টেম স্থাপন করছে নেসকো। এতে ১৩টি চরে বসবাসরত ১২ হাজার ৬৯০টি পরিবার সৌরবিদ্যুত্ পাবে।

 

জাতীয়

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার সকাল ৬টা ৩৬ মিনিটে প্রথমে রাষ্ট্রপতির পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। পরে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

এ সময় বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গার্ড অব অনার প্রদান করে সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল। নির্বিঘ্নে দিবসটি পালন করার জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকায় তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে মোতায়েন করা হয়েছে কয়েক শ সামরিক ও বেসামরিক নিরাপত্তাকর্মী। মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে স্পর্শকাতর স্থানগুলোতে সুইপিং করা হয়েছে।

আজ ১৬ই ডিসেম্বর। মহান বিজয় দিবস। বিজয়ের ৪৯ বছর পেরিয়ে এবার ৫০তম বিজয় দিবস। করোনা মহামারির কারণে এবারের বিজয় দিবস এসেছে ভিন্ন এক প্রেক্ষাপটে।

বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে গৌরব ও অহংকারের দিন। লাখ লাখ বীর মুক্তিযোদ্ধার রক্তস্রোত, স্বামী-সন্তানহারা নারীর অশ্রুধারা, দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা আর বীরাঙ্গনাদের সীমাহীন ত্যাগের বিনিময়ে ৯ মাসের যুদ্ধ শেষে অর্জিত হয়েছিল মহান এই বিজয়। ৪৯ বছর আগে এই দিনে বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় বাঙালি জাতিকে এনে দিয়েছিল আত্মপরিচয়ের ঠিকানা। আজ কৃতজ্ঞ জাতি সশ্রদ্ধ বেদনায় স্মরণ করছে দেশের বীর সন্তানদের।

জাতীয়

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় নতুন করে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৭ হাজার ১৫৬ জন।

একই সময়ে নতুন করে রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৬৩২ জন। মোট শনাক্ত ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৮৪১ জনে দাঁড়িয়েছে।

বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৬২২ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ৪ লাখ ২৯ হাজার ৩৫১ জন সুস্থ হয়েছেন।

এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮ হাজার ৩২টি নমুনা সংগ্রহ এবং ১৭ হাজার ২৫ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৩০ লাখ ২২ হাজার ৫৩৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।

জাতীয়

আমাদের দুর্ভাগ্য মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে আমরা প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম যখন গৌরব ছড়িয়ে দেব, তখন রাজনৈতিক লাভালাভের জন্য আমাদেরই কোনো কোনো পক্ষ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বারবার কুয়াশার চাদরে ঢাকতে চেয়েছে। কিন্তু সূর্যকে তো আটকে রাখা যায় না। তাই সত্য সামনে চলে আসেই। এ কারণেই নতুন প্রজন্মকে বারবার ফিরিয়ে আনতে হয় ইতিহাসের কাছে।

বিজয় দিবসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে নতুন প্রজন্মের কাছে ইতিহাস থেকে কয়েকটি তথ্য উপস্থাপন করতে চাই। যে প্রশ্ন ওরা প্রায়ই আমাকে করে থাকে। ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে পাকিস্তানের দুর্বল দশা স্পষ্ট হতে থাকে। যৌথবাহিনী বাংলাদেশের অনেকটা অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ে। কার্যত পাকিস্তানি বিমান ও নৌবাহিনী অকেজো হয়ে গিয়েছিল। এমন অবস্থায় নানা ধরনের গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল তখন।

প্রকৃত অবস্থা জানার জন্য পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ড. মালিক জেনারেল নিয়াজীকে গভর্নর হাউসে ডেকে পাঠান। এ সময়ের সেনাবাহিনীর প্রেস কর্মকর্তা মেজর সিদ্দিক সালিক একজন প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনাতে (Witness to Surrender) পাকিস্তানি বাহিনীর সংকটের চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, নিয়াজী গভর্নরের সামনে নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারেননি।

পাকবাহিনীর দুর্দশার কথা বলতে গিয়ে তিনি ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠেন। তাকে সান্ত্বনা দিয়ে গভর্নর জানান, তিনি প্রেসিডেন্টের কাছে বার্তা পাঠাবেন যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে। পাকিস্তানি সামরিক অফিসাররাও অসহিষ্ণু হয়ে উঠেছিলেন। নিজেদের জীবন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করতে থাকেন।

পাকবাহিনীর আত্মসমর্পণের প্রেক্ষাপট রচিত হয় ৯ ডিসেম্বর থেকেই। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকা শত্রুমুক্ত হচ্ছিল। অনেক শহরে হানাদার বাহিনী যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে থাকে। পাকবাহিনীর সৈন্যরা আত্মরক্ষার্থে পালিয়ে আসছিল ঢাকার দিকে। এমন একটি পরিস্থিতিতে ৯ ডিসেম্বর পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ড. এএম মালিক ইয়াহিয়া খানের কাছে একটি বার্তা পাঠান। অতিদ্রুত যুদ্ধ বন্ধের ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন। ইয়াহিয়া খান তখন অনেকটাই নিরুপায়।

তিনি গভর্নর মালিক ও সেনাপ্রধান নিয়াজী উভয়কেই তাদের বিবেচনা মতো সিদ্ধান্ত নেয়ার নির্দেশ দেন। এ পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব মার্ক হেনরি পাঁচ দফার একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন যুদ্ধ বন্ধের জন্য। তবে এ প্রস্তাব যে খুব কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পেরেছে তেমনটি মনে হয়নি। এদিকে গভর্নর মালিক পরবর্তী নির্দেশনার জন্য রাওয়ালপিন্ডির দিকে তাকিয়ে ছিলেন।

অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য ১৪ ডিসেম্বর দুপুর ১২টায় গভর্নর হাউসে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের একটি সভা ডাকা হয়। এ সংবাদ সকাল সাড়ে ৯টায় ভারতীয় বাহিনীর সিগন্যাল ইন্টেলিজেন্সের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লে. কর্নেল পিসি ভাল্লা পেয়ে যান। তিনি দ্রুত টেলিফোনে এয়ার ভাইস মার্শাল দেবাসেরকে জানান।

তারা সিদ্ধান্ত নেন এ সময় গভর্নর হাউসে বিমান আক্রমণ করলে আত্মসমর্পণের বিষয়টি ত্বরান্বিত হবে। সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী, সভায় কর্মকর্তারা যোগ দেয়ার আগেই ভারতীয় বিমান থেকে গভর্নর হাউসে বেশ কয়েকটি বোমা নিক্ষিপ্ত হয়। গভর্নর মালিক ভীত হয়ে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আশ্রয় নেন। ১৩ অথবা ১৪ ডিসেম্বর রাতে নিয়াজী পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল হামিদকে অনুরোধ করেন যাতে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান যুদ্ধ বন্ধের পদক্ষেপ নেন। ১৪ ডিসেম্বর ইয়াহিয়া খান নিয়াজীর কাছে বার্তা পাঠান।

নিয়াজী এবং রাও ফরমান আলী ছুটে যান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কনসাল জেনারেল হার্বার্ট স্পিভেকের কাছে। তারা অনুরোধ করেন ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাতে যুদ্ধ বন্ধের ব্যবস্থা করা হয়। স্পিভেক জানান, এ ধরনের আলোচনার যথাযোগ্য পদমর্যাদার তিনি নন।

১৯৭১-এ ভারতীয় বাহিনীর পূর্বাঞ্চলের প্রধান লে. জেনারেল জ্যাক জ্যাকব তার গ্রন্থে (Surrender at Dacca: Birth of a Nation) বলেছেন, ১৪ ডিসেম্বর বিকাল ৫টার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের কলকাতার কনসুলার অফিসের একজন কূটনীতিক তাকে স্পিভেকের সঙ্গে নিয়াজীর সাক্ষাৎ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন। তিনি জানান, এ সময় যুদ্ধ বন্ধ বা আত্মসমর্পণ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা হয়। জ্যাকব তখন কলকাতায় নিয়োজিত যুক্তরাষ্ট্রের কনসাল জেনারেল হার্বার্ট গর্ডনকে টেলিফোন করেন।

কিন্তু তিনি এ ব্যাপারে তার অজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তবুও জ্যাকব বিষয়টি পুনরায় খোঁজ নিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু কনসাল জেনারেল নতুন কোনো তথ্য দেননি। এরপর জ্যাকব সেনাবাহিনী প্রধান মানেকশকে টেলিফোন করে অনুরোধ জানান তিনি যাতে দিল্লিতে নিয়োজিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাম্বাসেডরের কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করেন। অ্যাম্বাসেডর জানান, এ ব্যাপারে তার কাছে কোনো তথ্য নেই।

এ সংক্রান্ত একটি বার্তা মানেকশ ১৫ ডিসেম্বর পান। তিনি পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করলে তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। পাকিস্তানের ইস্টার্ন কমান্ড ভারতের ইস্টার্ন কমান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। নিয়াজী আত্মসমর্পণের আহ্বানে সাড়া দেন। এখানে এ তথ্যটিও গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করা যায়, ১৫ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো সক্রিয় হয়ে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ভারতের কাছে যুদ্ধবিরতির পক্ষে দেশ দুটির অভিমত প্রকাশ করে।

১৫ ডিসেম্বর বিকাল ৫টা থেকে পরদিন অর্থাৎ ১৬ ডিসেম্বর প্রথমে সকাল ৯টা, পরে তা বাড়িয়ে বিকাল ৩টা পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এসময় পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান যুদ্ধবিরতিতে (যা বস্তুতপক্ষে আত্মসমর্পণ হিসেবে গৃহীত হবে) সম্মতি দান করেন।

তবে পাকিস্তান পক্ষ ‘আত্মসমর্পণ’ (Surrender) শব্দটি ব্যবহার না করার জন্য চেষ্টা করেছিল। স্পিভেকের মাধ্যমে আত্মসমর্পণের দলিলটি নিয়াজী পান এবং এতে তার সম্মতি প্রকাশ করেন। জ্যাকব লিখেছেন, জেনারেল মানেকশ ১৬ ডিসেম্বর সকাল সোয়া ৯টায় তাকে আদেশ দেন দ্রুত ঢাকায় চলে যেতে এবং সন্ধ্যার মধ্যে আত্মসমর্পণের কাজ সম্পন্ন করতে।

জ্যাকব ঢাকা পৌঁছে নিয়াজীর সদর দফতরে যান। এখানে তিনি মুক্তিবাহিনীর যোদ্ধাদের না আসার পরামর্শ দেন। তার মতে, এ সময় মুক্তিযোদ্ধারা খুবই উত্তেজিত ছিল। ফলে যে কোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তার সঙ্গে শুধু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের কয়েকজন সংবাদকর্মী যাওয়ার অনুমতি পেয়েছিলেন। এ সময় মুক্তিযোদ্ধারা চিৎকার করে বলছিলেন, আমরা ভেতরে যেতে চাই, আমরা নিয়াজী ও তার সহযোগীদের ওপর প্রতিশোধ নেব।

ঘৃণাভরা নানা শব্দে তারা স্লোগান দিচ্ছিলেন। জ্যাকব মুক্তিযোদ্ধাদের বোঝালেন কিছুক্ষণের মধ্যে আত্মসমর্পণ সম্পন্ন হবে। তারা বরং চারদিকের পরিবেশ শান্ত রাখার ব্যবস্থা করেন। এখন যুদ্ধবিরতি চলছে। আর সবারই জেনেভা কনভেনশনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো উচিত। মুক্তিযোদ্ধারা বিষয়টি বুঝতে পেরে সেখান থেকে চলে যান। জ্যাকব দুপুর ১টায় নিয়াজীর দফতরে পৌঁছেছিলেন।

নিয়াজী অভ্যর্থনা জানান ভারতীয় জেনারেলকে। এসময় নিয়াজী ছাড়াও আলোচনায় অংশ নেন রাও ফরমান আলী, মেজর জেনারেল জমশেদ, নৌবাহিনীর প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল শরীফ, এয়ার কমডোর ইমাম এবং ব্রিগেডিয়ার বাকার সিদ্দিক। এর আগে ভারতীয় বাহিনীর মেজর জেনারেল জিসি নাগরার মেসেজ আসে। যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়ে তিনি ঢাকার দিকে অগ্রসর হচ্ছিলেন। বার্তায় তিনি নিয়াজীকে জানান, তিনি তার বাহিনী নিয়ে মিরপুর ব্রিজের কাছে চলে এসেছেন।

তিনি যাতে তার প্রতিনিধি পাঠান। জ্যাকব নিয়াজীকে জানান, টঙ্গীসহ কয়েকটি স্থানে এখনও বিচ্ছিন্নভাবে যুদ্ধ চলছে। এটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির লংঘন। নিয়াজী তখন একটি নির্দেশনামা পাঠিয়ে দিলেন। জ্যাকব নাগরাকে কয়েকটি কাজ বুঝিয়ে দিলেন। প্রথমত, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য তিনি যাতে প্রয়োজনীয় সৈন্য নিয়ে অগ্রসর হন; দ্বিতীয়ত, আত্মসমর্পণের প্রস্তুতি যাতে সম্পন্ন করেন।

জ্যাকব মনে করলেন ঢাকার অধিবাসী বাঙালিরা অত্যাচারিত হয়েছে, তাই জনসম্মুখে এ আত্মসমর্পণের অনুষ্ঠান করলে সবার কষ্ট অনেকটা প্রশমিত হবে। যাবতীয় প্রস্তুতি নিতে কয়েক ঘণ্টা লেগে গেল। কাছাকাছি কোথাও মাঝে মাঝেই গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছিল। এ সময় ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে জাতিসংঘ এবং রেডক্রসের কর্মকর্তা ছাড়াও পূর্ব পাকিস্তান সরকার ও বিদেশি কর্মকর্তারা আশ্রয় নিয়েছিলেন। তাদের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়।

সভাকক্ষে আত্মসমর্পণের শর্ত পড়ে শোনানো হয়। ঘরটি মৃতপুরীর মতো নিস্তব্ধ হয়ে যায়। নিয়াজীর গাল বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছিল। অন্যরা নিশ্চল হয়ে যায়। পাকিস্তানি অফিসাররা কিছু শব্দ পরিবর্তনের কথা বলেন। ভারতীয় ও বাংলাদেশি সৈন্যদের কাছে আত্মসমর্পণ করার পরিবর্তে তারা যুদ্ধ বন্ধের মধ্যে থাকতে চেয়েছিল; কিন্তু তাদের এ আবেদন রক্ষা করা যায়নি। নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের মধ্যেই তাদের সম্মতি জানাতে হয়। ঠিক হল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আত্মসমর্পণের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে।

এদিন সকালের দিকে যৌথবাহিনীর পক্ষ থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের কাছে বার্তা আসে, আজই আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তান সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করবে। এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকার ও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে যাতে প্রতিনিধি পাঠানো হয়। তাজউদ্দীন আহমদের অফিসের কাছেই প্রধান সেনাপতি

জাতীয়

করোনা ভাইরাসে দেশে এক দিনে আরো ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা গত তিন মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ১২৯ জন।

এছাড়া একই সময়ে নতুন করে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৮৭৭ জন। এ নিয়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৪ লাখ ৯৪ হাজার ২০৯ জন হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকালে করোনা মহামারি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪০টি ল্যাবরেটরিতে ১৯ হাজার ৩২টি নমুনা সংগ্রহ ও ১৯ হাজার ৫৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়াল ৩০ লাখ ৫ হাজার ৫১২টি।

এছাড়া দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন দুই হাজার ৮৮৪ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৪ লাখ ২৬ হাজার ৭২৯ জন।