জাতীয়

সংসদ-সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে রয়েছে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুর এমপি হওয়ার স্বপ্ন। এমপি আনারের ঝিনাইদহ-৪ আসনে মিন্টুর নির্বাচন করার খায়েস ছিল দীর্ঘদিনের। সর্বশেষ দুটি সংসদ নির্বাচনেই মিন্টু এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের টিকিট পাওয়ার জোর লবিং চালান। কিন্তু পেরে ওঠেননি তিনি। সর্বশেষ ২০২২ সালে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনের সময়ও সাধারণ সম্পাদক পদের বাধা হয়ে দাঁড়ান এমপি আনার। ফলে ঠান্ডা মাথায় আনারকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন মিন্টু। আনার হত্যা মিশন শেষ করতে দুই কোটি টাকার বাজেটও করেন তিনি। খুনি ভাড়া থেকে শুরু করে সার্বিক কাজের দায়িত্ব দেন মিন্টুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কাজী কামাল আহম্মেদ ওরফে গ্যাস বাবুকে। এ গ্যাস বাবুই আনার হত্যার মাস্টারমাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহীন ও মূল কিলার চরমপন্থি নেতা শিমুল ভূঁইয়া ওরফে আমানুল্যার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করেন। গ্যাস বাবু এমপি আনারকে হত্যার আগে ৬ মে শিমুলকে দুই কোটি টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। সে অনুযায়ী হত্যা মিশন শেষে ১৬ মে আনারের ছবি গ্যাস বাবু ও মিন্টুর ফোনে পাঠায় শিমুল। ছবি পাঠানোর পর শিমুলকে ফোনও করেন মিন্টু। শাহীনের সঙ্গেও হত্যাকাণ্ড নিশ্চিত হতে কথা বলেন তিনি।

পূর্বপরিকল্পিত রাজনৈতিক এ হত্যাকাণ্ডকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতেই খুনিরা শাহীনের সঙ্গে আনারের স্বর্ণ চোরাচালানের দ্বন্দ্বের বিষয়টি সামনে আনেন। গ্রেফতারের প্রথম পর্যায়ে খুনিরা ডিবি পুলিশকেও এ বিষয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। ডিবির তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র বলছে, মূল কিলার শিমুলের জবানবন্দি এবং খুনিদের ব্যবহৃত বিভিন্ন ডিজিটাল ডিভাইসে আছে হত্যাকাণ্ডে আদ্যোপান্ত। আর এ হত্যার পরিকল্পনা থেকে বাস্তবায়ন পর্যন্ত সব পর্যায়েই আওয়ামী লীগ নেতা মিন্টুর সংশ্লিষ্টতা পাচ্ছে ডিবি পুলিশ। মঙ্গলবার মিন্টুকে আটকের পর দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি ডিবি পুলিশের কাছে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। তবে তার বিরুদ্ধে থাকা ডিজিটাল এভিডেন্সের বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারছেন না। ডিবির জেরার মুখে অনেক প্রশ্নের অসংলগ্ন জবাবও দিচ্ছেন মিন্টু।

এদিকে গ্রেফতারের পর মিন্টুকে ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন এ আদেশ দেন।

মিন্টুর গ্রেফতারের বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে নিজ কার্যালয়ে অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, তদন্তে কারও সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোনো সংশ্লিষ্টতা না পেলে আমরা কাউকে ডাকি না। শিমুল ভূঁইয়ার ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে এবং মিন্টুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী বাবুর জবানবন্দিতে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে ব্যাপক আকারে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। সে কারণে তাকে আমরা সোপর্দ করে ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। প্রয়োজনে শিমুলকে আবার রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

হারুন অর রশীদ আরও বলেন, আনারের লাশ গুম করে ১৫ মে শিমুল দেশে আসেন। পরে শিমুল ঢাকা এলে তার সঙ্গে মিন্টুর প্রতিনিধি যোগাযোগই বা কেন করলেন? ১৬ মে থেকে মিন্টু জানেন এমপি আনার খুন হয়েছেন অথচ আমরা জানি ২২ মে। এমপি আনারকে হত্যার পর তোলা ছবি যদি মিন্টু ১৬ মে দেখে থাকেন তাহলে তিনি কেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলেননি। টাকা-পয়সা লেনদেনের বিষয়টিও গ্রেফতারদের ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে এসেছে। সব কিছুই আমরা বিচার-বিশ্লেষণ করব।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ডিজিটাল ডিভাইস এবং ডিজিটাল এভিডেন্স বিশ্লেষণ করে আনার হত্যার সঙ্গে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা পায় ডিবি। শিমুল আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেছেন, হত্যাকাণ্ডের এক সপ্তাহ আগে ৬ মে তারা আরেকজন নেতার সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করেছেন। সেখানে অর্থের লেনদেনের কথা বলেছেন ওই নেতা, যার পরিমাণ দুই কোটি। এর মধ্যে খুনিরা দেশে ফেরার পরে দেবে ২০ লাখ আর ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা দেবে ২৬ থেকে ২৯ মে এর মধ্যে।

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারদের দেওয়া তথ্য ও ডিভাইস পর্যালোচনা করে ডিবি জানতে পেরেছে আক্তারুজ্জামান শাহীনের পক্ষে লিয়াজোঁ অফিসার হিসাবে কাজ করেছেন শিমুল ভূঁইয়া। একইভাবে মিন্টুর পক্ষে লিয়াজোঁ অফিসার হিসাবে কাজ করেছেন বাবু। জিজ্ঞাসাবাদে বাবু স্বীকার করেছেন, মূল কিলারের সঙ্গে তিনি একাধিকবার মিটিং করেছেন। তার সঙ্গে একাধিকবার টেলিফোনে কথাও হয়েছে। একপর্যায়ে বাবু মৃত এমপি আনারের ছবিও মিন্টুকে দিয়েছেন।

জিজ্ঞাসাবাদে বাবু জানিয়েছেন, তার তিনটি মোবাইল ফোনই আক্তারুজ্জামান শাহীন নিয়ে গেছেন। কী কারণে ফোন নিয়ে গেছে সে বিষয়ে বাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

এদিকে আনারকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ মামলায় মিন্টুর রিমান্ড শুনানিতে তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) মাহফুজুর রহমান বলেন, আনারকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের পুরো বিষয়টি জানতেন মিন্টু। এরপর বিচারক মিন্টুকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনি কিছু বলবেন? জবাবে মিন্টু বলেন, আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। এমপি মনোনয়ন চাওয়াই আমার অপরাধ।

মিন্টুর রিমান্ড আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এমপি আনার হত্যায় সরাসরি জড়িত গ্রেফতার শিমুল আদালতে যে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন, সেখানে আসামি সাইদুল করিম মিন্টুর সংশ্লিষ্টতা আছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্তে মিন্টুর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। বর্তমানে পুলিশ রিমান্ডে থাকা আসামি কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবু এমপি আনার অপহরণে মিন্টুর সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। মূল পরিকল্পনাকারী শাহিন আসামি মিন্টুর সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলেন। শিমুল তার জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন, চলতি বছরের ৫ ও ৬ মে এমপি আনারকে প্রলুব্ধ করে অপহরণ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহিন আসামি সাইদুল করিম মিন্টুর সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলেন এবং এমপি আনার হত্যা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সাপেক্ষে আর্থিক লেনদেনের কথা বলেন। হত্যার প্রমাণস্বরূপ ছবি আদান-প্রদান করা হয়।

এমপি আনার ১২ মে ভারতে যান। পরদিন ১৩ মে কলকাতার নিউটাউন এলাকার সঞ্জীবা গার্ডেনের একটি ফ্ল্যাটে খুন হন তিনি। তার শরীরের হাড় থেকে মাংস আলাদা করে টুকরো টুকরো করে ফেলা হয় সঞ্জীবা গার্ডেনের ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাংকে। আর হাড় ফেলা হয় খালে। তবে ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে ২২ মে। ওইদিন রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন (২৪) অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা করেন। দুই দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত হিসাবে এ পর্যন্ত ১২ জনের নাম বেরিয়ে এসেছে। গ্রেফতার হয়েছেন সাত জন। তারা হলেন-বাংলাদেশে গ্রেফতার শিমুল ভূঁইয়া, তানভীর, সেলেস্তি, বাবু ও মিন্টু। এদের মধ্যে বাবু ও মিন্টু ছাড়া অন্যরা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়া ভারতে গ্রেফতার আছে সিয়াম ও কসাই জাহিদ। আর তিনজনের নাম এসেছে, যারা হত্যাকাণ্ডের সরাসরি জড়িত নয়। তবে আর্থিক লেনদেনের তারা ব্যবহৃত হতে পারে বলে ডিবির সন্দেহ। হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহীন যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে গেছেন। এছাড়া পলাতক আছেন মোস্তাফিজ ও ফয়সাল।

কালীগঞ্জে আনার হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন : আনার হত্যাকাণ্ডে সাইদুল করিম মিন্টুকে মূল পরিকল্পনাকারী বলে দাবি করেছেন মেয়র আশরাফুল আলম। তিনি বলেন, এ হত্যায় কালীগঞ্জের অনেকে অর্থের জোগানদাতা রয়েছে। সুষ্ঠু তদন্ত করলে তাদের নামও বেরিয়ে আসবে। বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার ৭ নম্বর রায়গ্রাম ইউনিয়নে আয়োজিত এমপি আনার হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধনে এসব কথা বলেন তিনি। ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কের দুলাল মুন্দিয়া নামক স্থানে মানববন্ধনের আয়োজন করে রায়গ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ।

মানববন্ধনে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর সিদ্দিকী ঠান্ডু, কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শিবলী নোমানী বক্তব্য দেন।

মিন্টুকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে মানববন্ধন : সাইদুল করিম মিন্টুকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকালে জেলা দোকান মালিক সমিতির আয়োজনে শহরের পোস্ট অফিস মোড়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য দেন জেলা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম মন্টু, সহসাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান, মুন্সি মার্কেটের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি, চেম্বার অব কমার্সের নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, এমপি আনার হত্যার প্রায় এক মাস পর মিন্টুকে ষড়যন্ত্র করে গ্রেফতার করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে মিন্টুকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য গোয়েন্দা পুলিশের প্রতি দাবি জানান তারা।

জাতীয়

নানা রঙ ও আকৃতির পশুতে ভরে উঠেছে রাজধানীর কুরবানি পশুর হাটগুলো। গরু, মহিষ, ভেড়া, দুম্বা ও ছাগলে হাটগুলো কানায় কানায় ভরে উঠেছে। বিক্রি শুরু হয়েছে। ক্রেতারা বলছেন তুলনামূলক দাম বেশি, আর বিক্রেতারা বলছেন ক্রেতারা দাম কম বলছেন। এ অবস্থার মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাজধানীর স্থায়ী ও অস্থায়ী হাটগুলোতে বিক্রি জমে উঠেছে।

বৃহস্পতিবার সরেজমিন শনিরআখড়া, শ্যামপুর, গাবতলী, ভাটারা, হাজারীবাগ, বসিলা, সারুলিয়া ও আমুলিয়া কুরবানি পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, সব হাট কুরবানির পশুতে ভরে উঠেছে। কোনো হাটে বিক্রি জমে উঠেছে, আবার কোনো হাটে ক্রেতা কম। বৃহস্পতিবার সরকারি অফিস শেষ হয়েছে। বেশির ভাগ বেসরকারি অফিসও ছুটি হয়েছে। সে কারণে আজ শুক্রবার পশুর হাটগুলোর বিক্রি পুরোদমে জমে উঠবে বলে আশা করছেন বিক্রেতারা।
মিরপুর প্রতিনিধি গাবতলী হাট ঘুরে জানান, সর্ববৃহৎ পশুর হাট গাবতলীতে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসছে কুরবানির পশু। কানায় কানায় হাট ভরে উঠলেও সে তুলনায় ক্রেতার উপস্থিতি কম দেখা গেছে।

বিক্রেতারা জানান, যেসব ক্রেতারা হাটে আসছেন দামাদামি বেশি করছেন। দাম শুনেই আরেক জায়গায় চলে যাচ্ছেন। কেউ দাম বলছেন, তবে কেনার আগ্রহ কম। দামাদামি বেশি হচ্ছে। তবে তারা আশা করছেন আজ শুক্রবার থেকে তাদের বিক্রি জমে উঠবে। বিক্রি জমলে দামেও কিছুটা ছাড় দেবেন তারা। চুয়াডাঙ্গা থেকে আসা বিল্লাল হোসেন জানান, দুদিন আগে হাটে ১২টি গরু এনেছেন। এর মধ্যে আটটি গরু মাঝারি ও বাকি চারটি ছোট আকারের। হাটে অনেক গরু থাকলেও ক্রেতা নেই। দাম শুনেই লোকজন চলে যাচ্ছেন। রাজশাহী থেকে আগত খামারি মো. রাব্বানী বলেন, হাটে বড় সাইজের ছয়টি গরু এনেছেন। ছোট ও মাঝারি সাইজের গরু বিক্রি হলেও বড় গরুর ক্রেতা কম।

মিরপুর ১০ নম্বর থেকে গাবতলী হাটে আসা গৃহিণী মরিয়ম বেগম বলেন, গতবারের মতো এবারও ছোট সাইজের গরু কেনার পরিকল্পনা নিয়ে হাটে এসেছি। বাজেট অনুযায়ী গরু পাওয়ায় তিনি একটি গরু কিনেছেন।

ভাটারা প্রতিনিধি নতুন বাজার এলাকার অস্থায়ী পশুর হাট ঘুরে জানান, ভাটারার নতুন বাজারে অস্থায়ী পশুর হাটে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এসেছে কুরবানির পশু। বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে হাট শুরু হলেও গত রোববার থেকে হাটে পশু উঠতে শুরু করেছে। কুরবানি পশুতে ভরে উঠেছে পুরো হাট। তবে বিক্রি শুরু হলেও এখনো জমেনি। শুক্র, শনি ও রোববারে জমজমাট বিক্রি হবে বলে মনে করছেন বিক্রেতারা। হাট ঘুরে দেখা যায়, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গা থেকে কুরবানির পশু এনেছেন কৃষক, খামারি ও ব্যবসায়ীরা। এর মধ্যে অধিকাংশই দেশীয় গরু। তবে হাটে কোনো ছাগল দেখা যায়নি।

হাটের ইজারাদার মো. মিলন হোসেন বলেন, গরু বেপারিদের জন্য পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও বিদ্যুৎ সংযোগের সুব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক গরু বেচাকেনা হয়ে গেছে। শুক্রবার থেকে হাট আরও জমবে। শনি ও রোববার হাটে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় হবে। আমরা সেভাবে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।

দিয়াবাড়ি হাট সরেজমিন ঘুরে উত্তরা পশ্চিম (ঢাকা) প্রতিনিধি জানান, উত্তরার দিয়াবাড়ি হাটটি মূলত সড়কের ওপর বসানো হয়েছে। সেখানে সড়কজুড়ে পশু রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ওই হাটে ক্রেতার উপস্থিতি বাড়লেও পশু বিক্রি কম হয়েছে। তবে সড়কের ওপর হাট বসানোর কারণে স্থানীয়রা ভারি বৃষ্টিতে দুর্ভোগের আশঙ্কা করছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে উত্তরা ১৬ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত দিয়াবাড়ি পশুর হাটে দেখা যায়, মেট্রোরেলের ২ নম্বর স্টেশন থেকে পশ্চিমে ১৮ নম্বর সেক্টরে যাতায়াতের একমাত্র সড়কটির ওপর সারি সারি বেঁধে রাখা হয়েছে কুরবানি পশু।

দিয়াবাড়ি হাটে আসা উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা আনিসুর রহমান জানান, গরুগুলো সড়কের ওপর রাখায় ক্রেতারা সড়কে সুষ্ঠুভাবে দাঁড়াতে পারছেন না। পেছন থেকেই গাড়ির হর্ন বাজছে। একটি আতঙ্ক নিয়ে এখানে গরু দেখতে হচ্ছে। দিয়াবাড়ি গরু হাটের ইজারাদার মো. কফিল জানান, দিয়াবাড়ি ১৬ নম্বর সেক্টর বউ বাজার পর্যন্ত সড়কের জায়গা ছাড়া বাকি খালি জায়গায় হাটের সীমানা। তবে সড়কের ওপর গরু রাখার বিষয়টি কতটুকু বৈধ? প্রশ্ন করা হলে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

মোহাম্মদপুর প্রতিনিধি বসিলা ও হাজারীবাগ হাট ঘুরে জানান, আনুষ্ঠানিক হাট শুরুর প্রথম দিন বসিলার হাটে বিক্রি জমজমাট ছিল। কিন্তু হাজারীবাগ হাটে ক্রেতার উপস্থিতি কম দেখা গেছে। মোহাম্মদপুরের বসিলা ৪০ ফিট এলাকায় বিশাল জায়গা নিয়ে পশুর হাট বসেছে। হাটে ডিজিটাল লেনদেনের জন্য বিকাশ, নগদের পাশাপাশি এটিএম বুথ বসানো হয়েছে। কোনো গরু অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক চিকিৎসার জন্য পশুর ডাক্তারের বুথ রয়েছে। ব্যবসায়ীদের গরু বিক্রির টাকা নিরাপদে লেনদেন করতে ব্যাংকিং সুবিধা রয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছোট, বড় ও মাঝারি আকারের গরু নিয়ে বিক্রেতারা হাটে এসেছেন।

বিক্রেতারা বলেন, আমরা কেউ কুষ্টিয়া, যশোর, জামালপুর, কুড়িগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গরু বিক্রি করতে এ হাটে এসেছি। প্রতি বছর আমরা গরু নিয়ে এ হাটে এসে ভালো সাড়া পাই। ইতোমধ্যে কেউ কেউ একটি-দুটি গরু বিক্রি করেছি। আশা করছি, এভাবে বাজার থাকলে আমরা ঈদের দু-একদিন আগেই গরু বিক্রি শেষ করে চলে যেতে পারব।

হাজারীবাগ পশুর হাটে বৃহস্পতিবার গিয়ে দেখা যায়, গরু রাখার জন্য বিভিন্ন জায়গায় বাঁশের খুঁটি বসানো হয়েছে। তবে অনেক খুঁটি ফাঁকা আছে। গরু বিক্রেতারা বলছেন, দু-একদিনের মধ্যে বাজার জমে উঠলে গরু বিক্রি বাড়বে। প্রথম দিন তাই বাজারে তেমন ক্রেতা দেখা যায়নি।

শনিরআখড়া ও শ্যামপুর পশু হাট ঘুরে যাত্রাবাড়ী প্রতিনিধি জানান, কুরবানির পশুতে ভরে উঠেছে শনিরআখড়া ও শ্যামপুর পশুর হাট। তবে বিক্রি জমেনি। বিক্রেতা ও ইজারাদারের প্রত্যাশা শুক্র, শনি ও রোববার জমজমাট বিক্রি হবে। সারুলিয়ার স্থায়ী হাট ও আমুলিয়া মডেল টাউনের অস্থায়ী পশুর হাট ঘুরে ডেমরা প্রতিনিধি জানান, এ দুটি হাটে ছোট গরু বেশি উঠেছে। গরুতে হাট ভরে উঠলেও বিক্রি জমেনি। স্বল্প পরিসরে কিছু বিক্রি হচ্ছে।

জাতীয়

আবারো ভারতে সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হা‌সিনা। পূর্বনির্ধারিত দ্বিপক্ষীয় সফরের অংশ হিসেবে আগামী ২১ জুন দি‌ল্লিতে যাচ্ছেন বাংলাদেশ সরকারপ্রধান।সর্বশেষ গত ৮ জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দেশটিতে গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের এ বিষয়টি বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছে নির্ভরযোগ্য কূট‌নৈ‌তিক সূত্র।

সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ সফর পূর্বনির্ধারিত ছিল। তারই অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী আগামী ২১ জুন দুই দিনের সফরে দি‌ল্লি যা‌চ্ছেন। এই সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এর আগে গত ৯ জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ৮ জুন দেশটিতে সফরে যান শেখ হাসিনা। বিশ্বের অন্যান্য অতিথিদের সঙ্গে আমন্ত্রিত হয়ে সেখানে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শপথ অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে ১০ জুন দেশের ফেরেন বাংলাদেশ সরকারপ্রধান।

জাতীয়

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজিম আনারকে অপহরণের মাধ্যমে হত্যার ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছেন ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু। নির্বাচনে মনোনয়ন চাওয়ার কারণে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন বলে দাবি তার।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সাইদুল করিম মিন্টুকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সিনিয়র সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান। তার পক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিলসহ জামিন আবেদন করেন।

এরপর দুপুরে রিমান্ড আবেদনের বিষয়ে শুনানি হয়। শুনানির এক পর্যায়ে বিচারক আসামি সাইদুল করিম মিন্টুর কাছে তার কিছু বলার আছে কিনা জানতে চান। জবাবে তিনি বলেন, আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন চাওয়াটাই আমার অপরাধ।

এরপর শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন তার ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন।

গত ১১ জুন বিকেল ৪টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে মিন্টুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

এর আগে গত ৬ জুন রাতে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবুকে ঝিনাইদহ শহরের আদর্শপাড়া এলাকা থেকে আটক করে ঢাকায় নিয়ে আসে ডিবির একটি দল। এরপর গত ৯ জুন তার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

এ মামলায় গত ৩ জুন আসামি শিলাস্তি রহমান, ৪ জুন তানভীর ভূঁইয়া এবং ৫ জুন সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

গত ২২ মে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় খুন করার উদ্দেশ্যে অপহরণের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন এমপি আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।

জাতীয়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আগামীতে আরো দৃঢ় করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ আজ সকালে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘দুই নেতা আশা প্রকাশ করেছেন, বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও গভীর হবে।’

রোববার সন্ধ্যায় মোদী সরকারের মন্ত্রিসভার শপথ অনুষ্ঠানের পর দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে একান্ত বৈঠকে এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয়।
ড. মাহমুদ বলেন, অত্যন্ত উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে রাষ্ট্রপতি ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভারতীয় সমকক্ষকে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, পরে দুই প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতি ভবনে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু আয়োজিত ভোজসভায় যোগ দেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, ভারতের সিনিয়র মন্ত্রীগণ, বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল, আমন্ত্রিত সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানরা নৈশভোজে অংশ নেন। সেখানে তারা সংক্ষিপ্ত মতবিনিময় করেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রী জানান, সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তাদের মধ্যে কুশল বিনিময় হয়।

নরেন্দ্র মোদি গত ১০ বছর গত ধরে তার রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন এবং শেখ হাসিনাও ইতোমধ্যে ১৫ বছর ধরে তাঁর সরকার রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন এবং একে অপরের কাছ থেকে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বহুমুখী সম্পর্ক রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে অনেক বিষয় জড়িত। যেহেতু উভয় সরকার দেশ পরিচালনায় অব্যাহত রয়েছেন, সেহেতু একসঙ্গে কাজ করার কিছু সুবিধা আছে।’

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, উভয় দেশের জনগণ বিভিন্ন দিক থেকে উপকৃত হচ্ছে যার মধ্যে দু’দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থেকে যোগাযোগ রয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন,‘আমাদের বহুমাত্রিক সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরো সম্প্রসারিত এবং আরো গভীর হবে।’

ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. মুস্তাফিজুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয়

নির্বাচন নিয়ে দেশে এখনো রাজনৈতিক সংকট বিরাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক সংকট দেশের নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলতে পারে। তাই নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু মৌলিক সমঝোতা প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, দেশের সার্বিক নির্বাচন ব্যবস্থার আরও সংস্কার প্রয়োজন। এতে ব্যক্তির গুরুত্ব কমে যাবে, নির্বাচনব্যবস্থা আরও সুসংহত হবে।

সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ‘রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি)’ আয়োজিত ‘আরএফইডি টক’ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি এসব কথা বলেন।

আরএফইডি সভাপতি একরামুল হক সায়েমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির। অনুষ্ঠানে সিইসি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, সদ্য সমাপ্ত ৪৬৯টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গড়ে ৩৬.৪৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। বড় একটি রাজনৈতিক দল (বিএনপি) অংশগ্রহণ না করায় নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়নি এবং ভোটার উপস্থিতি কম ছিল।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের দুই ভাইয়ের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নেওয়ার ঘটনার তদন্ত চলছে।

সিইসি বলেন, এনআইডি জালিয়াতির অপরাধ ঘটছে। কোনো না কোনো ফাঁকফোকর দিয়ে অপরাধীরা এটি করছে। আমাদেরকে জালিয়াতির তথ্য দিলে আমরা ব্যবস্থা নেব। সাবেক সেনাপ্রধানের ভাই এবং বঙ্গবন্ধুর খুনির সন্তানদের এনআইডি জালিয়াতির তথ্য পাওয়ার পর আমরা তদন্ত করছি। পুরো সিস্টেমের এক শতাংশ হয়তো এই জালিয়াতিতে যুক্ত। তাদের আমরা আইনের আওতায় আনব।

দেশের রাজনৈতিক সংকট প্রসঙ্গে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, জাতীয় নির্বাচনের পাঁচ মাস পার হয়ে গেলেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিরোধের জমাট বরফ এখনো গলেনি। সার্বিক পরিবেশ এখনো পুরোপুরি অনুক‚লে হয়ে ওঠেনি। তবুও আমি আশাবাদী সংকট নিরসন হবে। দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকবে।

নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংকট নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকেই সংলাপের মধ্য দিয়ে এর সমাধান করতে হবে। পরাজয় মেনে নিয়ে বিজয়ী দলকে অভিনন্দন জানানোর মাধ্যমে একটি সুস্থ নির্বাচনি সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। আর যারা নির্বাচিত হবেন তারা সেবার মনোভাব নিয়ে জনগণের কাছে গেলে সংস্কৃতিতে বড় ধরনের একটি পরিবর্তন হবে।

জাতীয় সংসদ ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার বিষয়ে সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আইন ও বিধিবিধান প্রয়োগ করে। যারা প্রার্থী তাদের দক্ষতা ও জনসম্পৃক্ততার ওপর নির্ভর করে ভোটার উপস্থিতি কেমন হবে। একটি বড় রাজনৈতিক দলের ভোটে না থাকায় অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন হয়নি। তবে এখানে আমাদের করার কিছুই ছিল না।

জাতীয়

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর এবং উন্নয়ন সমন্বয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. আতিউর রহমান বলেছেন প্রস্তাবিত বাজেটটি প্রাথমিকভাবে দেখে একে বাস্তবতার প্রতি অনেকটাই সংবেদনশীলই মনে হচ্ছে। একই সঙ্গে এই বাজেটটিতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আরেকটু কল্যাণমুখী হওয়ার সুযোগ যে ছিল সেটিও মানতে হবে। তিনি আরও বলেন, ২০১৯-২০-এ বাংলাদেশের প্রস্তাবিত বাজেট ছিল ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা, যা ২০২৩-২৪-এ এসে বেড়ে দাঁড়িয়েছিলো ৭ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকার বেশি।

অর্থাৎ এ সময়কালে গড়ে বছরে বাজেটের আকার বেড়েছে ৭.৬ শতাংশ হারে। আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরেও প্রস্তাবিত বাজেটের আকার চলতি বছরের চেয়ে বেড়ছে। তবে আগের হারে বাড়েনি। মাত্র ৪.৬ শতাংশ বেড়ে ৭ লাখ ৯৭ হাজার টাকা হয়েছে। ফলে বাস্তবতার প্রতি সংবেদনশীল বাজেট-প্রণেতারা সঙ্কোচনের পথেই এগুতে চাইছেন- তা দৃশ্যমান।

মুদ্রানীতির সাথে সমন্বয় করে রাজস্বনীতিকে সংযত রাখার অংশ হিসেবে বাজেট ঘাটতি ৪.৫ শতাংশ রাখার আকাঙ্ক্ষাটিও বাস্তবতার নিরিখে মোটামুটি গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেন তিনি। তবে ৬.৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রাকে তিনি উচ্চাভিলাষী মনে করেন। তাঁর মতে- ‘মূল্যস্ফীতির হার সাড়ে তিন শতাংশের মতো কমিয়ে সাড়ে ছয় শতাংশে নামিয়ে আনা মোটেও সহজ হবে না।’ এ লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য বাজেট ঘাটতি আরও কমিয়ে ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণের পরিমান কমানোর কোনো বিকল্প নেই।

শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের মতো সামাজিক খাতে বরাদ্দ, কৃষির জন্য বরাদ্দ এবং বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে সহায়ক খাতে কর্মসূচিতে বা প্রকল্পে বরাদ্দে এই কাটছাটের প্রভাব যতোটা সম্ভব কম ফেলা যায় ততোই কল্যাণকর বলে মনে করেন ড. আতিউর রহমান।
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বরাদ্দ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রায় এক দশক ধরেই আমাদের মোট জাতীয় বাজেটের ১৫-১৭ শতাংশ যাচ্ছে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাবদ। বরাদ্দের এই ধারাবাহিকতার প্রভাবেই দারিদ্র্য ও অতিদারিদ্র্য হার নাটকীয় মাত্রায় কমিয়ে আনা গেছে। এবারও বাজেটের ১৭ শতাংশের বেশি বরাদ্দ রাখা হয়েছে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাবদ। তবে লাগামহীন মূল্যস্ফীতির হাত থেকে নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে এখানেও বরাদ্দের ক্ষেত্রে কিছুটা প্রবৃদ্ধি আশা করেছিলাম। মূল্যস্ফীতি যেহেতু ১০ শতাংশের আশেপাশে তাই সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির জন্য বরাদ্দ অন্তত ১০ শতাংশ বাড়ালে কার্যক্রমটির উপকারভোগিরা মূল্যস্ফীতি মোকাবিলার জন্য যথেষ্ট জোর পেতেন বলে মনে করি।’

মোট রাজস্ব আয় ৫ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকার যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে সেটিকে সময়োচিত মনে করলেও এই লক্ষ্য বাস্তবায়ন খুবই চ্যালেঞ্জিং হবে বলে মনে করেন এই প্রাজ্ঞ অর্থনীতিবিদ। সব মিলিয়ে প্রাথমিক বিচারে এবারের বাজেটটিকে অনেকটাই বাস্তবমুখী ও সময়োচিত হিসেবেই দেখতে হবে। তবে যেহেতু অনেকখানি কাটছাট করতে হয়েছে, তাই এই সঙ্কুচিত বাজেট বাস্তবায়নে আগের যে কোন সময়ের তুলনায় অনেক বেশি দক্ষতা ও নিষ্ঠার পরিচয় দিতে হবে।

জাতীয়

প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের মানুষের মাথাপিছু বরাদ্দ বেড়েছে ২ হাজার ১৭৪ টাকা। একইভাবে আয় বেড়েছে ২ হাজার ৬৭৪ টাকা। তবে মাথাপিছু ঘাটতি কমেছে ৫৯৯ টাকা। আর প্রতিজনে বরাদ্দ ৪৬ হাজার ৯৩৭ টাকা। তবে বাজেটে মোট যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১৪ দশমিক ২ শতাংশ।

এবার জিডিপির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ লাখ ৬ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা। প্রতিযোগী দেশগুলোতে বাজেট জিডিপির ২৫ শতাংশের উপরে। ফলে আকার অনেক বড় করে দেখানো হলেও জনসংখ্যার বিবেচনায় বাজেটের আকার একেবারেই বড় নয়। অন্যদিকে বিভিন্ন পক্ষ থেকে সম্প্রসারণমূলক কর্মসূচির যে সুপারিশ এসেছে, তারও খুব বেশি প্রতিফলন নেই বাজেটে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুসারে ২০২৩ সালে দেশে জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ। আর প্রস্তাবিত বাজেটে মোট বরাদ্দ ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। এ হিসাবে মাথাপিছু বরাদ্দ ৪৬ হাজার ৯৩৭ টাকা। চলতি অর্থবছরে যা ছিল ৪৪ হাজার ৮৬৩ টাকা। এ হিসাবে আলোচ্য সময়ে বরাদ্দ বেড়েছে ২ হাজার ৭৪ টাকা। চলতি বছরে যা বেড়েছিল ২ হাজার ৯৩০ টাকা। এছাড়াও প্রস্তাবিত বাজেটে মোট আয় ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। এ হিসাবে মাথাপিছু আয় ৩২ হাজার ১২০ টাকা। চলতি বছরে যা ছিল ২৯ হাজার ৪৪৬ টাকা। এ হিসাবে আয় বেড়েছে ২ হাজার ৬৭৪ টাকা। আগে যা ছিল ২ হাজার ৬৬৯ টাকা। এছাড়াও ঘাটতির পরিমাণ ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। আর মাথাপিছু ঘাটতি ১৪ হাজার ৮১৭ টাকা।

চলতি বছরে যা ১৫ হাজার ৪১৭ টাকা। এ হিসাবে মাথাপিছু ঘাটতি কমেছে ৫৯৯ টাকা। অন্যদিকে এবার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। আর মাথাপিছু বরাদ্দ ১৫ হাজার ৬১৬ টাকা। আগের বছর যা ছিল ১৫ হাজার ৪৮৮ টাকা। আগের বছর যা ছিল ১৫ হাজার ২১৭ টাকা। আলোচ্য সময়ে মাথাপিছু এডিপি বেড়েছে ১১৮ টাকা। চলতি বছরে বেড়েছিল ২৭১ টাকা।

জাতীয়

আজ ৭ জুন ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস। ১৯৬৬ সালের এই দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ৬ দফা দাবির পক্ষে দেশব্যাপী তীব্র গণআন্দোলনের সূচনা হয়।

এই দিনে আওয়ামী লীগের ডাকা হরতালে টঙ্গি, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে তৎকালীন পুলিশ ও ইপিআর-এর গুলিতে মনু মিয়া, শফিক ও শামসুল হকসহ ১১ জন বাঙালি শহীদ হন। এরপর থেকেই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আপোসহীন সংগ্রামের ধারায় ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের দিকে এগিয়ে যায় পরাধীন বাঙালি জাতি।

প্রতিবছরের মত এবারও যথাযোগ্য মর্যাদায় বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হবে। ঐতিহাসিক এই দিনটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আগামীকাল সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু ভবন, কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও দেশব্যাপী আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল ৮ টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হবে। এছাড়াও বিকাল সাড়ে তিনটায় তেজগাঁওস্থ ঢাকাজেলা আওয়ামী লীগের কার্যলয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করবেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তাসখন্দ চুক্তিকে কেন্দ্র করে লাহোরে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের সাবজেক্ট কমিটিতে ৬-দফা উত্থাপন করেন এবং পরের দিন সম্মেলনের আলোচ্য সূচিতে যাতে এটি স্থান পায় সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু, এই সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর দাবির প্রতি আয়োজক পক্ষ গুরুত্ব প্রদান করেনি। তারা এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে। প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু সম্মেলনে যোগ না দিয়ে লাহোরে অবস্থানকালেই ৬-দফা উত্থাপন করেন। এই নিয়ে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের বিভিন্ন খবরের কাগজে বঙ্গবন্ধুকে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা বলে চিহ্নিত করা হয়। পরে ঢাকায় ফিরে বঙ্গবন্ধু ১৩ মার্চ ৬-দফা এবং এই ব্যাপারে দলের অন্যান্য বিস্তারিত কর্মসূচি আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদে অনুমোদন করিয়ে নেন।

৬-দফার মূল বক্তব্য ছিল প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র বিষয় ছাড়া সকল ক্ষমতা প্রাদেশিক সরকারের হাতে থাকবে। পূর্ববাংলা ও পশ্চিম পাকিস্তানে দু’টি পৃথক ও সহজ বিনিময়যোগ্য মুদ্রা থাকবে। সরকারের কর, শুল্ক ধার্য ও আদায় করার দায়িত্ব প্রাদেশিক সরকারের হাতে থাকাসহ দুই অঞ্চলের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার আলাদা হিসাব থাকবে এবং পূর্ববাংলার প্রতিরক্ষা ঝুঁকি কমানোর জন্য এখানে আধা-সামরিক বাহিনী গঠন ও নৌবাহিনীর সদর দফতর স্থাপন করতে হবে।

বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ৬-দফা দাবির মুখে পাকিস্তানের তৎকালীন সামরিক শাসক আইয়ুব খান বিচলিত হয়ে পড়েন। তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, ৬-দফা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে অস্ত্রের ভাষায় উত্তর দেয়া হবে।

এদিকে, ৬-দফা কর্মসূচি জনগণের মাঝে পৌঁছে দেয়ার জন্য বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমানসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সমগ্র পূর্ববাংলা সফর করেন এবং ৬ দফাকে বাঙালির বাঁচার দাবি হিসেবে অভিহিত করেন। ফলে,শাসকগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ অন্যান্য নেতাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে। যশোর, ময়মনসিংহ ও সিলেটসহ অন্যান্য কয়েকটি স্থানে ৬ দফার পক্ষে প্রচারকালে বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হন।

ছয় দফা দাবি আদায় প্রসঙ্গে ‘কারাগারের রোজনামচা’ গ্রন্থে বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, ‘আওয়ামী লীগ কর্মীরা যথেষ্ট নির্যাতন ভোগ করেছে। ছয় দফা দাবি যখন তারা দেশের কাছে পেশ করেছে তখনই প্রস্তুত হয়ে গিয়েছে যে তাদের দুঃখ কষ্ট ভোগ করতে হবে। এটা ক্ষমতা দখলের সংগ্রাম নয়, জনগণকে শোষণের হাত থেকে বাঁচাবার জন্য সংগ্রাম।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমার বিশ্বাস আছে আওয়ামী লীগের ও ছাত্রলীগের নিঃস্বার্থ কর্মীরা তাদের সাথে আছে। কিছু সংখ্যক শ্রমিক নেতা, যারা সত্যই শ্রমিকদের জন্য আন্দোলন করে-তারাও নিশ্চয়ই সক্রিয় সমর্থন দেবে। এত গ্রেপ্তার করেও এদের দমাইয়া দিতে পারে নাই।’

পরবর্তী সময়ে ঐতিহাসিক ৬ দফাভিত্তিক নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনই ধাপে ধাপে বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামে পরিণত হয়। এই দাবির সপক্ষে বাঙালি জাতির সর্বাত্মক রায় ঘোষিত হয় ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক সাধারণ নির্বাচনের মধ্যদিয়ে। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বাঙালিরা বিজয়ী হয়।

অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুর দলকে জনগণ বিজয়ী করলেও স্বৈরাচারী পাকিস্তানের শাসকরা বিজয়ী দলকে সরকার গঠন করতে না দিলে আবারো বঙ্গবন্ধু জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলন শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের।

জাতীয়

আসন্ন ঈদুল আজহার পরে সকাল ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত সরকারি অফিসের কার্যক্রম চলবে। বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর মাধ্যমে আবারও পূর্বের সময় সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সময়সূচিতে ফিরছে সরকারি অফিসগুলো।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘আগামী ১৯ জুন (পবিত্র ঈদুল আজহার পরবর্তী প্রথম কর্মদিবস) থেকে দেশের সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের অফিস সময়সূচি পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সরকার নির্ধারণ করল।’

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, দুপুর ১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত জোহরের নামাজ ও মধ্যাহ্নভোজের বিরতি। শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি।

প্রজ্ঞাপনে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট এবং ব্যাংক, বিমা ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সময়সূচি স্ব স্ব কর্তৃপক্ষকে নির্ধারণের জন্য বলা হয়েছে।

উল্লেখ, গত সোমবার (৩ জুন) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদ কমিটির বৈঠকে অফিসের নতুন সময় নির্ধারণ করা হয়। তার পরই আজ প্রজ্ঞাপন জারি করল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

এর আগে জ্বালানি সাশ্রয় করতে ২০২২ সালের ৩১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে অফিস সূচি পরিবর্তন করে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত করা হয়।