জাতীয়

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটসহ জাতীয় ও জেলা পর্যায়ের ১৪ মেডিকেল, ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতালের নাম পরিবর্তন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

রোববার (৩ নভেম্বর) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এম এ আকমল হোসেন আজাদের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে থেকে এ তথ্য জানা যায়।

এতে বলা হয়, ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নাম পরিবর্তন করে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি, ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাম ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, গোপালগঞ্জের শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের নাম গোপালগঞ্জ চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, টাঙ্গাইলের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজকে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ নামকরণ করা হয়েছে।

শেখ রাসেল ন্যাশনাল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের নাম পরিবর্তন করে ন্যাশনাল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট, ঢাকা, গোপালগঞ্জ শেখ লুৎফর রহমান ডেন্টাল কলেজ হাসপাতালের নাম গোপালগঞ্জ ডেন্টাল কলেজ হাসপাতাল, গোপালগঞ্জের শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, গোপালগঞ্জের শেখ সায়রা খাতুন ট্রমা সেন্টারের নাম গোপালগঞ্জ ট্রমা সেন্টার, সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের নাম সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল, জামালপুরের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে জামালপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নামে পরিবর্তন করা হয়েছে।

জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করা হবে বলেও এ প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

জাতীয়

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহতদের পরিবারকে পুনর্বাসন এবং আহতদের চিকিৎসায় সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

রোববার মোবাইল অপারেটর রবি এবং গ্রামীণফোন লিমিটেডের প্রতিনিধিদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত পৃথক বৈঠকে যুব সমাজের আগ্রহ ও প্রত্যাশাকে অগ্রাধিকার দিয়ে মোবাইল ফোনের কলরেট কমানো এবং ইন্টারনেটের মেয়াদবিহীন প্যাকেজ চালুর আহ্বান জানান তিনি।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অফিস কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার একটা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সময়টা সফলভাবে পার করতে পারলে দেশ ঘুরে দাঁড়াবে এবং সম্ভাবনার নতুন নতুন দরজা খুলে যাবে। আর যদি সেটা সম্ভব না হয় তাহলে দেশ পিছিয়ে যাবে। তিনি বলেন, যেহেতু আন্দোলন শুরু হয়েছিল কর্মসংস্থানকে কেন্দ্র করে, তাই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা বর্তমান সরকারের প্রধান লক্ষ্য। যুব সমাজের আগ্রহ ও প্রত্যাশাকে অগ্রাধিকার দিয়ে মোবাইল কলরেট কমানো এবং ইন্টারনেটের মেয়াদবিহীন প্যাকেজ চালুর আহ্বান জানান উপদেষ্টা।

বাংলাদেশে এখন কাজ করার উপযুক্ত সময় উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, যেহেতু অন্তর্বর্তী সরকার জনসমর্থিত তাই দেশ ও দেশের মানুষের উপকার হয় এমন যে কোনো কাজ করতে আমরা আগ্রহী। টেলিকমিউনিকেশন খাতে উন্নতির জন্য সরকার কর্মতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান বলেন, আগে টেলিযোগাযোগ খাতের কোনো অফিসে গিয়ে কথা বলার মতো পরিবেশ ছিল না, কিন্তু বর্তমানে পরিবেশ পরিবর্তন হয়েছে। এখন কথা বলা যাচ্ছে এবং ফিডব্যাকও পাওয়া যাচ্ছে। এটা টেলিকমিউনিকেশন খাতের জন্য খুবই ইতিবাচক।

রবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিব শেঠী বলেন, ১৫ বছরে টেলিকমিউনিকেশন খাতে কমিশন বেইজড বিভিন্ন লেয়ার তৈরি হয়েছে, এর ফলে মোবাইল অপারেটররা মুনাফাবঞ্চিত হচ্ছে। বৈঠকে রবি আজিয়াটা পিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার শাহেদুল আলম, গ্রামীণফোনের নতুন চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার (সিসিএও) তানভীর মোহাম্মদসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয়

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নতুন মেয়র হিসেবে শপথ নিয়েছেন ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি ২০২১ সালের মেয়র নির্বাচনে কারচুপির কারণে পরাজিত হয়েছেন বলে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছিলেন।

পরে তাকে মেয়র ঘোষণা করা হয়।

রোববার (৩ নভেম্বর) সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে তাকে শপথবাক্য পাঠ করান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ।

আইন অনুযায়ী নতুন মেয়রের মেয়াদ নির্ধারণ হবে বলে জানান উপদেষ্টা।

স্থানীয় সরকার বিভাগ সচিব মো. নজরুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথি উপদেষ্টা হাসান আরিফ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়রকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ডা. শাহাদাত হোসেন বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশের একটি প্রধান নগরীর মেয়র হয়েছেন। ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের শিক্ষাকে বুকে ধারণ করে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখবেন, এটাই তার কাছে প্রত্যাশা করি। আমরা গ্রীণ চট্টগ্রাম দেখতে চাই। জলাবদ্ধতামুক্ত চট্টগ্রাম দেখতে চাই। ক্লিন সিটি হিসেবে নগরবাসীরও একই প্রত্যাশা।

তিনি আরও বলেন, পেছনের সব ধ্যান-ধারণা, চিন্তাকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে ছাত্র-জনতা-শ্রমিকদের যে অর্জনের জন্য তাদের আত্মত্যাগ রয়েছে, সে প্রত্যাশা পূরণের জন্য বৈষম্যহীন শক্তিশালী বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয় মেয়র শাহাদাত হোসেনের কাছে দেখতে চাই। আমি মনে করি, এ প্রত্যাশা চট্টগ্রামের প্রতিটি নাগরিকের। আমাদের প্রত্যাশা বৈষম্যহীন বাংলাদেশের।

অনুষ্ঠানে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খন্দকার, বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম সহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।

ডা. শাহাদাত হোসেনের একান্ত সচিব মারুফুল হক চৌধুরী বলেন, শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে দলের শীর্ষ নেতা, মেয়রের আত্মীয়-স্বজনসহ ২৭ জন অতিথি উপস্থিত ছিলেন।

তিন বছর পর আইনি লড়াইয়ে বিজয়ী হয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শাহাদাত হোসেন শপথ নিলেন। ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ২৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছিলেন পরাজিত প্রার্থী শাহাদাত। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে চট্টগ্রামের মেয়র রেজাউল করিম কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় ১৯ আগস্ট ওই সিটি করপোরেশনে প্রশাসক নিয়োগ করে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা মামলায় গত ১ অক্টোবর শাহাদাত হোসেনকে জয়ী ঘোষণা করে রায় দেন আদালত। ৮ অক্টোবর চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক এই আহ্বায়ককে মেয়র ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন।

শপথ নিয়ে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম বাঁচলেই বাংলাদেশ বাঁচবে। যদি চট্টগ্রাম শহরের ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপ করা যায়- বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। এজন্য সবার সহযোগিতা কামনা করছি। গ্রীণ সিটি, ক্লিন সিটি, হেলদি সিটি- এসব আমার নির্বাচনী ইশতেহার। নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাব।

অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা জানান, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে কাউন্সিলর না থাকায় ১৭ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে, যারা নতুন মেয়রের সঙ্গে চট্টগ্রামের উন্নয়নে কাজ করবেন।

জাতীয়

সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন ও সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন, জনসংখ্যার অনুপাতিক হারে সংসদে প্রতিনিধিত্ব, পার্বত্য শান্তি চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়নসহ ৮ দফা দাবি জানিয়েছে ‘সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা’।

শনিবার বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ৪০টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা আয়োজিত গণসমাবেশে এ দাবি জানানো হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে যে গণঅভ্যুত্থান, তাকে ধারণ করতে গেলে আর কোনো শোষণ-বঞ্চনা মেনে নেবো না। আমরা অনেক বৈষমের শিকার হয়েছি। আমরা আর কোনো বৈষম্যের শিকার হতে চাই না। এসময় আট দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকার ঘোষণাও দেন তারা।

এছাড়া সমাবেশে সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা, চাঁদাবাজি, লুটতরাজ ও দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলা এবং আট দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, সকল রাজনৈতিক শক্তি এবং দেশবাসির প্রতি আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সঙ্গে যুক্ত সকল অপরাধীকে অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করে বিচারের দাবি জানান বক্তারা।

এছাড়া সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন তারা। গণসমাবেশ থেকে ঐক্যমোর্চার সমন্বয়ক বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাণা দাশগুপ্ত ও চিন্ময় ব্রহ্মচারীসহ সকল সংখ্যালঘু নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে করা সব মামলা অনতিবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। এসময় ইসকন নিষিদ্ধের দাবির প্রতিবাদও জানান তারা।

সমাবেশে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি নির্মল রোজারিও আট দফা দাবি এবং বৈষম্যহীন রাষ্ট্র ও সমাজ পুনর্গঠনে ছয় দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, সংখ্যালঘুদের বাদ দিয়ে বাংলাদেশের অস্তিত্ব চিন্তা করা যায় না। আমরা ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্র গড়ে তুলতে চাই। গণতন্ত্র, সমতা ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে চাই।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক, আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) সাধারণ সম্পাদক শ্রী চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী, শ্রী শ্রী ভোলানন্দগিরি আশ্রম ট্রাস্টের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ ছাত্র ঐক্য পরিষদের অন্যতম সমন্বয়ক দীপঙ্কর শীল, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী মহাসচিব পলাশ কান্তি দে, ঋষি পঞ্চায়েত ফোরামের সভাপতি রামানন্দ দাস, বাংলাদেশ সনাতন পার্টির সাধারণ সম্পাদক সুমন কুমার রায়, রবিদাস ফোরামের সভাপতি চাঁদ মোহন রবিদাস, জগন্নাথ হল এলামনাই অ্যাসোসিয়েশন এর সভাপতি তপন মজুমদার, সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের সুস্মিতা কর, মাইনোরিটি রাইটস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক উৎপল বিশ্বাস প্রমুখ।

ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক বলেন, হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, আধিবাসিসহ এ দেশের সবাই মিলেই আন্দোলন করেছে। সবাই মিলিতভাবেই ত্যাগ স্বীকার করেছে। কিন্তু আমরা বৈষম্য, বঞ্চনা, নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার। এ কারণেই এই আট দফা দেওয়া হয়েছে।

চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী বলেন, পৃথিবীর এমন কোনো দেশ নেই, যেখানে ইসকনের কর্মকাণ্ড নেই। আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ইসকন নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছেন। ইসকনকে নিষিদ্ধ করা হলে সারা বিশ্ব থেকে প্রতিবাদ আসবে।

অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, আমাদের জন্য ট্রাম্পের দরকার নাই। ট্রাম্প (ডোনাল্ড ট্রাম্প) সাহেব আপনি আপনার দেশের সমস্যা সমাধান করুন। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সমস্যার সমাধানের জন্য আপনার প্রয়োজন নেই। এদেশের সমস্যা আমরা নিজেরাই সমাধান করব।

জাতীয়

রোববার (৩ নভেম্বর) জেল হত্যা দিবস। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ স্থান কারাগারের অভ্যন্তরে বিনা বিচারে ও বর্বরোচিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যের সঙ্গে হত্যার কিছুদিন পরই ৩ নভেম্বর কেন্দ্রীয় কারাগারের ইতিহাসের বর্বর এ হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়। এ হত্যাকাণ্ডের শিকার হন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহযোদ্ধা জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, ক্যাপ্টেন মুনসুর আলী ও এ এইচ এম কামারুজ্জামান। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে তারা মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেন। ওইদিন তাদের জেলখানার অভ্যন্তরে গুলি করে ও বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে থেকে এ জাতীয় চার নেতা ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছিলেন। কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুরে এ সরকার গঠিত হয় ও শপথ গ্রহণ করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় গঠিত বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম। ওই সরকারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তাজউদ্দিন আহমেদ, অর্থমন্ত্রী ক্যাপ্টেন মুনসুর আলী, খাদ্য ও ত্রাণ মন্ত্রী এ এইচ এম কামারুজ্জামান। এ সরকারের নেতৃত্বে দীর্ঘ ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার মধ্য দিয়ে ১৬ ডিসেস্বর বিজয় অর্জিত হয়। শুধু মুক্তিযুদ্ধই নয়, স্বাধীনতার জন্য সব আন্দোলন-সংগ্রামেও এ চার নেতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

জাতীয়

একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি ও লেখক শাহরিয়ার কবিরের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর ফের গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

শনিবার দুপুরে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় এক ঘন্টা চিকিত্সা শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শনিবার শাহরিয়ার কবিরকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে একটি কারা এ্যাম্বুলেন্সে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে পঁেৌছার পর কড়া পাহারায় তাকে এ্যাম্বুলেন্স থেকে নামিয়ে হুইল চেয়ারে করে হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলমের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের হূদরোগ, মেডিসিন, অর্থোপেডিক বিভাগের বিশেষজ্ঞগণ তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। পরে তার কিছু টেস্ট করানো হয়।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর একটি দায়িত্বশীল সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের সমস্যার কারণে শাহরিয়ার কবিরকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর সিনিয়র জেল সুপার মো. আমিরুল ইসলাম হাসপাতালে পাঠানোর বিষয়টি স্বীকার কলেও কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। হাসপাতালের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শাহরিয়ার কবিরকে রুটিন চেক আপ করানোর জন্য হাসপাতালে আনা হয়। আমরা কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক সমন্বয়ে তার শারীরিক বিভিন্ন পরীক্ষা করি। কিছু টেস্টও করা হয়। তিনি বয়সজনিত বিভিন্ন রোগে ভূগছেন, তবে জটিল কোন সমস্যা নেই।

জাতীয়

ওজন কমিয়ে ধরে রাখতে হলে কয়েকটি বিষয় মেনে চলতে হয়।

কমানোর পর যদি ঠিকমতো জীবনযাপন করা না হয় তবে আবারও ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

একজন্য কথায় বলে, ওজন কমানোর মতো সেটা ধরে রাখাও কঠিন হয়।

এই বিষয়ে ইটদিসনটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ক্যালিফোর্নিয়া’র নিবন্ধিত পরামর্শক ডা. অ্যামি লি বলেন, “আপনার অভ্যাসই বলে দেবে কত তাড়াতাড়ি ওজন বাড়বে।”

তিনি আরও বলেন, “জীবনযাত্রার পদ্ধতি যেমন ওজন কমাতে সহায়ক তেমনি কাঙ্ক্ষিত ওজন ধরে রাখতেও সাহায্য করে।”

এমন সঙ্গী খোঁজা যিনি পেশাদার পরামর্শ দেবেন

শরীরচর্চা পছন্দ করেন বা খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করতে ভালোবাসেন এমন সঙ্গী জোটানো উপকারী। পাশাপাশি খাদ্য ও জীবনযাপন পরিবর্তনে যারা পেশাদার পরামর্শ দেয় তাদের কথা মানতে হবে।

কারণ ডা. লি বলেন, “অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ। আর সৎ সঙ্গে থাকলে ইতিবাচক উৎসাহ মিলবে। ফলে অন্যকে দেখে নিজে ঠিক থাকতে চেষ্টা করবেন।”

সকালের নাস্তায় উচ্চ মাত্রায় আঁশ ও প্রোটিন

নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক পুষ্টিবিদ অ্যামি গুডসন একই প্রতিবেদনে বলেন, “সকালের নাস্তায় প্রোটিন ও আঁশ ধর্মী খাবার খেলে পেটভরা অনুভূতি থাকে অনেকক্ষণ, ক্ষুধার হরমোন কমে, সারাদিন খাইখাই-ভাব থাকে না। ফলে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ধরে রাখা সম্ভব হয়। যা কিনা ওজন বাড়তে দেয় না।”

ভারসাম্যহীন খাবার খাওয়া যাবে না

স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাদ্যের সমন্বয় করে খেতে হবে।

গুডসন বলেন, “প্রোটিন পেশি গড়তে সাহায্য করে। আঁশ পেটভরা অনুভূতি দেয় অনেকক্ষণ, বেশি খাওয়া কমায়।”

দুয়ে মিলে বেশি খেয়ে ফেলার ঝুঁকি কমাতে পারে।

নিয়মিত ব্যায়াম করা

ওজন কমে গেলেও ব্যায়াম ছাড়া যাবে না। স্বাস্থ্যকর ওজন ধরে রাখতি নিয়মিত শরীরচর্চা চালিয়ে যেতে হবে।

গুডসন বলেন, “শারীরিক কর্মকাণ্ড বিশেষ করে ‘স্ট্রেন্থ ট্রেইনিং’ এবং ‘কার্ডিও’র মিশ্রণে ব্যায়াম চালিয়ে গেলে বিপাকী কার্যক্রমে সামঞ্জস্য থাকে এবং শক্তির খরচ ঠিকমতো হয়।”

পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ

খাবারের পরিমাণে দিকে নজর দেওয়া জরুরি। সেটা বাইরে কিংবা বাসায়- যেখানেই হোক।

গুডসনের ভাষায়, “খাবার খাওয়ার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা অভ্যাস গড়লে অতিরিক্ত খাওয়া কমানো যায়, বিশেষ করে ক্যালরিযুক্ত খাবার।”

লক্ষ্য হল যতক্ষণ না খিদা না লাগছে ততক্ষণ না খাওয়া। আর প্লেটের অর্ধেক নিতে হবে সবজি, বাকি অর্ধেকের একভাব থাকবে চর্বিহীন প্রোটিন আর একভাব থাকবে উচ্চ আঁশ সমৃদ্ধ কার্বোহাইড্রেইট। এভাবে খেলে খাওয়াতে তৃপ্তি আসবে। ফলে খিদার পরিমাণ কমবে।

নিয়মিত খাওয়া

খাওয়ার পরিমাণ কমালেও, নিয়মিত তিন/ চার বেলার খাবার খেতে হবে।

গুডসন বলেন, “প্রতিবেলার খাবার ঠিক সময়ে খেলে বিপাকীয় পদ্ধতিতে সমাঞ্জস্য থাকে, পরের বেলায় অতিরিক্ত খাওয়ার সম্ভাবনা কমে।”

সারাদিন ধরে প্রতি তিন চার ঘণ্টা পর খাওয়ার লক্ষ্য থাকা উচিত।

দীর্ঘমেয়াদে উদ্দেশ্য ভুলে যাওয়া যাবে না

ওজন কমানো কোনো মৌসুম ভিত্তিক কারবার নয়। সারা জীবন ধরে এই কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হয়।

তাই ওজন কমানো ও সেটা ধরে রাখতে ওপরের স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলো আজীবন চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন, এই বিশেষজ্ঞরা।

জাতীয়

পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে পৃথিবীর অন্যতম বিপজ্জনক পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট আমা দাবলাম জয় করলেন বাংলাদেশি পর্বতারোহী তানভীর আহমেদ শাওন।

নেপালের স্থানীয় সময় শনিবার (২ নভেম্ববর) সকাল ১১টায় পর্বতারোহী তানভীর স্পর্শ করেন ছয় হাজার ৮শ ১২ মিটার উচ্চতার আমা দাবলাম।

শনিবার (২ নভেম্বর) তানভীরের ক্লাব ভার্টিক্যাল ড্রিমার্স এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

হিমালয়ের অন্যতম কঠিন ওই চূড়া, এই ‘মায়ের গলার হার’ জয়ী পঞ্চম গর্বিত বাংলাদেশি তানভীর।

এর আগে ২০২২ সালে ভার্টিক্যাল ড্রিমার্সেই সেরা সেনানী ডা. বাবর আলী এই যাত্রা শুরু করেন। এরপর ২০২৩ সালে নিশাত মজুমদার এবং কাউসার রুপক ও এই মৌসুমেই তৌফিক আহমেদ তমাল ওই দুর্দান্ত কীর্তি গড়েন। ১৩ অক্টোবর নেপালের উদ্দেশে দেশ ছাড়েন তানভীর।

জাতীয়

জেল হত্যা দিবসকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনসহ তিন দফা দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে স্মারকলিপি দেবেন বলে জানিয়েছেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমদ সোহেল তাজ।

শুক্রবার (১ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ কথা জানান সোহেল তাজ। সোহেল তাজ তার ফেসবুকে লেখেন, আগামী ৩ নভেম্বর কলঙ্কময় জেল হত্যা দিবস। দেখতে দেখতে ৪৯ বছর পার হয়ে গেলো অথচ এখন পর্যন্ত জাতির চার বীর যাদের নেতৃত্বে সফলভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হলো, যাদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র পেলাম- আজ অবধি রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের কোনো স্বীকৃতি নেই। এটা মেনে নেওয়া যায় না!

আমার দাবি:

১. যেহেতু ১০ই এপ্রিল, ১৯৭১ স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠিত হয়, সেহেতু বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র (প্রজাতন্ত্র) হিসেবে জন্ম লাভ করে। তাই এ দিনটিকে ‘প্রজাতন্ত্র দিবস’ ঘোষণা করতে হবে।

২. ৩রা নভেম্বর জেলহত্যা দিবসকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে ঘোষণা করে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করতে হবে।

৩. জাতীয় চার নেতাসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের সব বেসামরিক ও সামরিক সংগঠক, পরিচালক, অমর শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম, অবদান ও জীবনীসহ মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস যথাযথ মর্যাদা ও গুরুত্বের সঙ্গে সর্বস্তরের পাঠ্যপুস্তকে ও সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

আমি মনে করি, আমার এ তিন দাবি ন্যায্য ও যৌক্তিক এবং এটা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সবার প্রাণের দাবি।

সেই লক্ষ্যে আমার পরবর্তী কর্মসূচি:

আগামী ৩ নভেম্বর ২০২৪, রোববার বিকেল সাড়ে ৩ টায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে আমি অবস্থান নেবো এবং পরবর্তীতে পদযাত্রা করে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেবো। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে থেকে বিকেল ৪টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার উদ্দেশ্যে হেটে যাত্রা শুরু করবো। এ সমাবেশে স্বাধীনতা/মুক্তিযুদ্ধের/বৈষম্যবিরোধী চেতনায় বিশ্বাসী সবাইকে অংশ নেওয়ার জোর আহ্বান জানাচ্ছি।

জাতীয়

মুসলিম দেশগুলো ঐক্যবদ্ধ না হলে ফিলিস্তিন মুক্ত করা সম্ভব নয়। আর মুসলমানদের ঐক্য সৃষ্টি না হওয়ার পেছনে কারণ হলো, দেশগুলোতে ইসলামপন্থী সরকার না থাকা।

যদি দেশগুলোতে ইসলামপন্থী সরকার থাকতো, তবে মুসলমানরা একতাবদ্ধ হওয়ার সুযোগ লাভ করতো।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) ফিলিস্তিন-লেবাননে ইসরায়েলের অব্যাহত বর্বর হামলার প্রতিবাদে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। আল-কুদস কমিটি বাংলাদেশের উদ্যোগে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) মিলনায়তনে ‘মহান নেতা ইসমাঈল হানিয়া, সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ ও ইয়াহিয়া ইবরাহীম হাসান আস সিনওয়ারসহ শীর্ষ নেতাদের শাহাদাত ও গাজা-ফিলিস্তিনকেন্দ্রিক প্রতিরোধ অক্ষের অর্জন’-শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান ও আল কুদস কমিটি বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ড. শাহ্ কাউসার মুস্তাফা আবুলউলায়ীর সভাপতিত্বে সভায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইরানের আল মুস্তফা (সা.) আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন শাহাবুদ্দীন মাশায়েখী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সিনিয়র প্রফেসর ড. কেএম সাইফুল ইসলাম খান, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব অধ্যাপক ড. আহমদ আব্দুল কাদের, সাংবাদিক অধ্যক্ষ মুহাম্মাদ শওকাত হোসেন, ইসলামী শিক্ষা উন্নয়ন পরিষদ বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যক্ষ ড. একেএম মাহবুবুর রহমান। আলোচনা সভায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক জামাল উদ্দিন বারী।

হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন শাহাবুদ্দীন মাশায়েখী বলেন, ৭০ বছরের অধিক সময় ধরে জায়নবাদী ইসরায়েল ফিলিস্তিনের জনসাধারণের ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছে এবং তাদের ভূখণ্ড জবরদখল করে যাচ্ছে। আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে পরাজয়ের পর প্রথমে মিশর ও জর্ডান এবং এরপর আরব বিশ্বের দেশগুলো ইসরায়েলমুখী হয়ে পড়ে। কিন্তু গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের আক্রমণের পর পরিস্থিতি সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তিত হয়ে যায়। যেখানে আরব বিশ্ব মাত্র কয়েক দিনে পরাজিত হয়েছিল সেখানে ফিলিস্তিনের যোদ্ধারা মাসের পর মাস তাদের প্রতিরোধ সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। ফিলিস্তিনের পাশে লেবাননের হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের হুথি, ইরাকের প্রতিরোধযোদ্ধারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করছে। আর ইরান সরাসরি ইসরায়েলের সামরিক স্থাপনাগুলোতে আক্রমণের মাধ্যমে ইসরায়েলকে কোণঠাসা করে ফেলেছে। এসব আক্রমণে ইসরায়েলের সামরিক শক্তি ও তাদের তথাকথিত শক্তিশালী এয়ার ডিফেন্সের দুর্বলতা স্পষ্টভাবে ধরা পড়ছে। প্রতিরোধযোদ্ধাদের মোকাবিলায় ইসরায়েলের অর্থনীতিতে চরম ধস নেমেছে। প্রবৃদ্ধির হার নিম্নগামী হয়ে পড়েছে। সামরিক ব্যয় মেটাতে তাদের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আতঙ্কে ইহুদিরা ইসরায়েল ত্যাগ করে অন্য দেশে চলে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, কিছু কিছু দেশ মৌখিকভাবে ফিলিস্তিনকে সমর্থন করার কথা বলে ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। ইসরায়েল ও তার দোসরদের নিজেদের ভূমি ব্যবহার করে ফিলিস্তিন ও প্রতিরোধ আন্দোলনের জন্য সংগ্রামরত দেশগুলোতে আক্রমণের সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে। এরকম কপটতা পরিহার করে যদি সত্যিকার অর্থে মুসলমানরা একতাবদ্ধ হয়ে জায়নবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে তাহলেই মুসলমানরা সফল হতে পারে।

ড. আহমদ আব্দুল কাদের বলেন, গত বছরের অক্টোবর মাসের আগে আরব বিশ্বের পরিস্থিতি এমন হয়ে পড়েছিল যে, কতিপয় আরব দেশ ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়ার চিন্তা করতে থাকে। কিন্তু অক্টোবর মাসের যুদ্ধ সব হিসাব নিকাশকে বদলে দেয়। আরব দেশগুলো নিজেদের পরিকল্পনা থেকে দূরে সরে আসতে বাধ্য হয়।

তিনি বলেন, মুসলিম দেশগুলো ঐক্যবদ্ধ না হলে ফিলিস্তিন মুক্ত করা সম্ভব নয়। আর মুসলমানদের ঐক্য সৃষ্টি না হওয়ার পেছনে কারণ হলো দেশগুলোতে ইসলামপন্থী সরকার না থাকা। যদি দেশগুলোতে ইসলামপন্থী সরকার থাকতো তবে মুসলমানরা একতাবদ্ধ হওয়ার সুযোগ লাভ করতো।

তিনি ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের উদাহরণ টেনে বলেন, ইরানে বিপ্লব হওয়ার কারণেই তাদের পক্ষে সম্ভব হয়েছে মজলুম ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানোর।

অধ্যাপক ড. শাহ্ কাউসার মুস্তাফা আবুলউলায়ী বলেন, মুসলিম বিশ্বে বর্তমানে যে সংকট বিরাজ করছে তা মোকাবেলায় মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই। মুসলিম দেশসমূহ ঐক্যবদ্ধ হওয়ার মাধ্যমেই কেবল দানবীয় ইহুদিবাদী আগ্রাসনকে প্রতিহত করা সম্ভব। ন্যাটোর ন্যায় মুসলিম দেশগুলোর একটি সামরিক জোট গঠন করা এখন সময়ের দাবি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো অর্থনৈতিক জোট গঠন করে মুসলিম দেশসমূহ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করতে পারে।

অধ্যক্ষ ড. একেএম মাহবুবুর রহমান বলেন, ইমাম খোমেইনী (রহ) মুসলমানদের দুর্বলতার অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন যে, মুসলমানরা তাদের শত্রু-মিত্র চিনতে পারে না। আর যারা চিনতে পারে তারা শাসনক্ষমতাকে আঁকড়ে থাকার লোভে ইসলামের শত্রুদেরকে সহযোগিতা করে। তাই আমাদের প্রয়োজন শত্রু-মিত্রকে চেনা। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে ফিলিস্তিন প্রসঙ্গ আসা দরকার যাতে তরুণ প্রজন্ম এ বিষয়ে জানতে পারে, সচেতন হতে পারে।

প্রফেসর ড. কেএম সাইফুল ইসলাম খান বলেন, মুসলমানরা নিজেদের কর্মের দ্বারাই নিজেদের পরিচয় হারিয়ে ফেলেছে। মহান আল্লাহ বলেন, তোমরাই বিজয়ী হবে যদি তোমরা মুমিন হও। অথচ আমাদের ইমান দুর্বল হয়ে গেছে। আমরা বস্তুগত বিষয় নিয়ে এত ব্যস্ত হয়ে পড়েছি যে, মূল বিষয় ছেড়ে অন্য বিষয়ে মত্ত হয়ে পড়েছি। ইয়েমেনের অর্থনীতি দুর্বল হওয়া সত্ত্বেও সেদেশের জনগণ ইমানের বলে বলীয়ান হয়ে ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়িয়েছে। অথচ আরব বিশ্ব নীরব। আল্লাহ আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন একতাবদ্ধ হওয়ার জন্য, কিন্তু আমরা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছি। এর পেছনে ইসরায়েলের ষড়যন্ত্রও সবার কাছে স্পষ্ট। আর আল্লাহ তাআলার আদেশের বিপরীতে গিয়ে সফল হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই।

সাংবাদিক জামাল উদ্দিন বারী বলেন, ইসরায়েলি আগ্রাসনে গত ১৩ মাসে মুসলমানদের পূণ্যভূমি ফিলিস্তিনের গাজা শহরকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয়েছে। নির্বিচার হত্যা করা হয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার ফিলিস্তিনিকে। এদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। ইসরায়েলি বোমায় লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে। গাজা উপত্যকার বিশ লাখের বেশি মানুষকে উদ্বাস্তু বানানোর পাশাপাশি চরম খাদ্য সংকট, দুর্ভিক্ষ ও মানবেতর জীবনে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। সেখানে ইরান ছাড়া আর কোনো আরব দেশকে সামরিক-অর্থনৈতিক সহায়তা নিয়ে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়াতে দেখা যাচ্ছে না। এ এক বিস্ময়কর বাস্তবতা। বিশ্বজনমত ফিলিস্তিনিদের পক্ষে থাকলেও আরব শাসকরা এখনো ইঙ্গ-মার্কিনিদের কৃত্রিম দোস্তি ত্যাগ করে আল আকসা ও আরব ফিলিস্তিনিদের রক্ষায় দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে পারেনি।

আলোচনাসভার শুরুতেই ফিলিস্তিনের ওপর এক প্রামাণ্যচিত্র দেখোনো হয়। সভা শেষে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের হয়ে তা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে গিয়ে শেষ হয়।