জাতীয়

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের নিয়মিত সাধারণ সভা আজ প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জাতির পিতার ছোট কন্যা শেখ রেহানা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

সভায় ট্রাস্টি বোর্ডের ব্যবস্থাপনা কমিটি আগের সভার কার্যবিবরণী অনুমোদন দেয়।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি উপ-কমিটির প্রতিবেদনসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়।

জাতীয়

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী মোতায়েনের ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

বৃহস্পতিবার তৃণমূল বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে তিনি এমন ইঙ্গিত দেন। দলটির নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর ওপর সবার একটা আস্থা আছে। আপনারা সেনা মোতায়েনের কথা বলেছেন- এর আগে সংলাপে প্রায় সবকটি দল একই কথা বলেছে। আমরা লক্ষ করেছি- সেনাবাহিনীর উপস্থিতি একান্তভাবে কাম্য। তারা (সেনাসদস্যরা) দায়িত্ব পালন করলে সেটার ইতিবাচক দিক থাকবে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে তৃণমূল বিএনপির প্রতিনিধিদলের বৈঠক হয়। বৈঠকে দলটির চেয়ারপারসন শমসের মুবিন চৌধুরীর নেতৃত্বে ১৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। আগামী নির্বাচনে প্রয়োজনে সেনা মোতায়েনসহ ১২ দফা দাবি দলটির পক্ষ থেকে তোলা হয়েছে।

বৈঠকে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ভোটের সময় একটা সরকার থাকবে। অনেকে দুশ্চিন্তায় থাকেন- সরকার নিরপেক্ষ থাকবে কিনা। সাংবিধানিকভাবেই সরকার নিরপেক্ষ থাকতে এবং নির্বাচনে সহায়তা করতে বাধ্য। তাই নির্বাচন কতটা শান্তিপূর্ণ হবে তা সরকারের ওপর নির্ভর করবে। সরকারের যে সহায়তা, তার ওপর আমাদের নির্ভর করতে হবে। সরকার বলতে আমরা বুঝি- জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন। ভোটে লার্জলি (বড় পরিসরে) ডিপেন্ড (নির্ভর) করতে হবে জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর।

রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে সিইসি বলেন, আপনাদের (রাজনৈতিক দল) বলব- এটা একটা খেলা। যদি আপনারা ঠিকমতো না খেলেন (‘ইটস এ গেম। ইফ ইউ ডু নট প্লে ওয়েল), তাহলে জেতার প্রত্যাশা করবেন না। আপনাদের সবাইকে বলছি- যারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, তাদের অবশ্যই ভোটকেন্দ্রে এজেন্ট দিতে হবে। আপনাদের পক্ষ থেকে সহায়তা লাগবে। কারণ রাজনীতিবিদদের অভিজ্ঞতা বেশি। কী করে রাজনীতির মাঠে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হয়, কীভাবে প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে আচরণ করতে হয়, সেই অভিজ্ঞতা আছে।

তিনি আরও বলেন, আপনারা যদি ঠিকভাবে এজেন্ট নিয়োগ দিতে পারেন, এজেন্ট যদি সাহসী ও অনুগত হয়, যদি তিনি শক্ত হয়ে দাঁড়ান, তাহলে আরেকজনের পক্ষে আপনার বিপক্ষে অনাচার ও কারচুপি করা কঠিন। তিনি বলেন, আমি কিন্তু ওখানে (ভোটকেন্দ্রে) পাহারা দিতে পারব না। ৪২ হাজার কেন্দ্রে তিন লাখ বুথে পাহারা দেওয়া সম্ভব নয়। এটা ফেরেশতারা পারে। আমরাও পারব না।

বৈঠকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব বলেন, এ কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর এক হাজার ৩০০-এর বেশি নির্বাচন করেছে। নির্বাচনি অরাজকতায় একজনও মারা যায়নি। দু-একটি ছোট ঘটনা ঘটেছে। তিনি আরও বলেন, ইসিতে যারাই আসেন দেশি হোক বিদেশি তাদের জিজ্ঞাসা করি- আমরা আর কী কী করলে এর থেকে ভালো নির্বাচন করতে পারতাম- কিন্তু তারা বলতে পারেন না। এটাই আমাকে শান্তি দেয়। তিনি বলেন, আমরা শতভাগ ইমান, বিবেক ও আইনের সঙ্গে থেকে কাজ করব।

বৈঠক শেষে ইসি সচিব জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যে দলগুলো অংশ নেবে- তাদের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রস্তুত করা স্বচ্ছ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশন বদ্ধপরিকর। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরিতে প্রধান বাধা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন- এসব নিয়ন্ত্রণে ইসির ভূমিকা জানতে চাইলে তিনি বলেন- প্রথম হলো আইন ও সংবিধানের আলোকে কমিশনকে যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে কমিশন সেই ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে প্রয়োগ করবে। ক্ষমতা বাস্তবায়নে সচেষ্ট থাকবে।

এদিকে বৈঠকের বিষয়ে তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন শমসের মুবিন চৌধুরী বলেন, দেশের জনগণ যাতে নির্বাচনমুখী হয়, নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখতে পারে, ফলাফল মেনে নিতে পারে- সেই ধরনের নির্বাচন প্রত্যাশিত।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন প্রতিহত করার ক্ষমতা সংবিধান কাউকে দেয়নি। যে কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারে, সেই অধিকার আছে। কিন্তু কেউ কাউকে বাধা দিতে পারে না। সে অধিকার জনগণ কাউকে দেয়নি। যারা প্রতিহত করবে তারা কিন্তু সংবিধান লংঘন করবে, আইন লংঘন করবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা কারও ছত্রছায়ায় আমরা নির্বাচন করছি না। ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি আমাদের থাকবে। সেভাবে আমরা কাজ শুরু করেছি। সময় বলে দেবে ভবিষ্যতে কী হবে।

জাতীয়

ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের নিপীড়ন বন্ধে বিশ্বনেতাদের এক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে লেদার ফুটওয়্যার অ্যান্ড লেদার গুডস ইন্টারন্যাশনাল সোর্সিং শো (ব্লিস)-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এক যুদ্ধ থামতে না থামতেই ইসরায়েল আবার ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা শুরু করেছে। ইতোমধ্যে ফিলিস্তিনের অনেক জায়গা দখল করেছে ইসরায়েল। আর এখন তো ফিলিস্তিন একটি অবরুদ্ধ উপত্যকায় পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, এ যুদ্ধ আর অস্ত্রের খেলায় সাধারণ মানুষ বেশি কষ্ট ভোগ করছে। এ কষ্ট যেন সাধারণ মানুষ না পায়, সেটি আমরা চাই। আমরা শান্তি চাই।

এ প্রসঙ্গে ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ বাংলাদেশের এই পররাষ্ট্রনীতির কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, অ্যাডভান্সড ম্যানুফ্যাকচারিং গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান জোনাথন ববেট এবং গোল্ডেন চ্যাং গ্রুপের বিনিয়োগকারী ও প্রতিষ্ঠাতা জেমস হো।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এলএফএমইএবি) সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এলএফএমইএবি) যৌথভাবে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনসন সিটি বসুন্ধরায় ১২ থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত আন্তর্জাতিক এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। ব্লিস এর শেষ তিনটি সংস্করণ ২০১৭, ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

জাতীয়

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে দখলদার ইসরাইলের দিকে একের পর এক রকেট হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস।

এছাড়া সীমান্ত পেরিয়ে দেশটির ভেতরেও প্রবেশ করেছে হামাস যোদ্ধারা। এ হামলায় এ পর্যন্ত ৩৫০ ইসরাইলি নিহত হয়েছে।

দেশটির জাতীয় গণমাধ্যমের বরাতে আলজাজিরা জানিয়েছে, সহিংসতায় ইসরাইলে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৫০ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া প্রায় দুই হাজার মানুষ আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৯ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বিবিসি জানিয়েছে, দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ তথ্য জানানো হলেও ইসরাইলের পক্ষ থেকে এ সংখ্যা সরাসরি নিশ্চিত করা হয়নি।

শনিবার গাজা উপত্যকা থেকে ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চল লক্ষ্য করে পাঁচ হাজার রকেট ছুড়েছে হামাস। রকেট হামলার পর ইসরাইলের পাল্টা বিমান হামলা চালায়।

এছাড়া কয়েক ডজন বেসামরিক নাগরিক এবং ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর (আইডিএফ) সৈন্যদের আটক করে গাজায় নিয়ে গেছে হামাস।

বিবিবি বলছে, গতকাল হামাসের হামলাটিও ছিল আকস্মিক ও অপ্রত্যাশিত। দিনটিও ছিল ইহুদিদের ছুটির দিন। ওই হামলার পর ইসরাইলও গাজায় বিমান হামলা চালিয়েছে। স্থল অভিযানেরও পরিকল্পনা করছে তারা।

হামাসের হামলা আকস্মিক ও অপ্রত্যাশিত হলেও তা ছিল সুপরিকল্পিত। শনিবার রকেট হামলা চালানোর পাশাপাশি স্থলপথ, সমুদ্রপথ ও আকাশপথ ব্যবহার করে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে ঢুকে পড়েন। তারা কয়েক ঘণ্টা ধরে ইসরাইলি শহর ও সেনাচৌকি অবরুদ্ধ করে রাখেন। তাদের অভিযানে বেশ কিছুসংখ্যক ইসরাইলি নিহত হন।

কিছুসংখ্যক সামরিক-বেসামরিক ইসরায়েলি নাগরিককে তারা জিম্মি করে গাজায় নিয়ে গেছেন। তবে এ সংখ্যা ঠিক কত, তা সুনির্দিষ্ট করে জানা যায়নি।

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন এই গোষ্ঠীটি গর্ব করে বলেছে, আটক ইসরাইলিদের সংখ্যা ইসরাইল যা জানে তার চেয়েও অনেক বেশি।

জাতীয়

ঢাকা মহানগরে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পরিবার কার্ডধারীদের মধ্যে ৩৫ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। একজন ভোক্তা সর্বোচ্চ দুই কেজি করে পেঁয়াজ কিনতে পারবেন।

আগামী সোমবার (০৯ অক্টোবর) থেকে এ কার্যক্রম শুরু হবে।

রোববার (০৮ অক্টোবর) টিসিবির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিগত কয়েক বছরের আলোকে ও পেঁয়াজের খারাপ মৌসুমের বিবেচনায় সোমবার থেকে পর্যায়ক্রমে ঢাকা মহানগরের কার্ডধারীদের কাছে পেঁয়াজ বিক্রি করা হবে। এ কার্যক্রম টিসিবির আমদানি করা পেঁয়াজ দেশে আসা সাপেক্ষে সরবরাহ করা হবে। একজন ভোক্তা সর্বোচ্চ দুই কেজি করে পেঁয়াজ কিনতে পারবেন।

দেশে বাজারে পেঁয়াজের দাম বেশ কিছু দিন ধরেই চড়া। দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে দেশি পেঁয়াজ ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ১শ টাকা। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়।

টিসিবির পরিবার কার্ডধারীদের মধ্যে সাধারণত চিনি, সয়াবিন তেল ও মসুর ডাল বিক্রি করা হয়। কোনো কোনো মাসে চালও বিক্রি করা হয়েছে। এ ব্যবস্থায় খোলাবাজারের তুলনায় কম দামে কার্ডধারীরা নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্য কিনতে পারেন।

জাতীয়

গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের (সাবেক এনআরবি গ্লোবাল) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারের (পিকে) ২২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

এই মামলায় বাকি ১৩ জনকে পৃথক দুই ধারায় সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে করা মামলায় রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।

পিকে হালদারের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ৫২ মামলার মধ্যে এটি প্রথম মামলার রায়। বাকি ৫১ মামলা এখনো তদন্তাধীন।

এর আগে গত ৪ অক্টোবর রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন ধার্য করেছিলেন। ওইদিন যুক্তিউপস্থাপনের সময় কারাগারে থাকা চার আসামি পি কের বান্ধবী অবন্তিকা বড়াল, শংখ বেপারী, সুকুমার মৃধা ও অনিন্দিতা মৃধাকে আদালতে হাজির করা হয়।

দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, পিকে হালদার নামে-বেনামে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ৬ হাজার ৭৯০ শতাংশ জমি কিনেছেন। এ সম্পদের বাজারমূল্য দেখানো হয়েছে ৩৯১ কোটি ৭৫ লাখ ৮১ হাজার ১২ টাকা। বর্তমানে এর বাজারমূল্য ৯৩৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে নিজের নামে জমি কিনেছেন ৪ হাজার ১৭৪ শতাংশ। এর দাম দলিলে দেখানো হয়েছে ৬৭ কোটি ৯৪ লাখ ২০ হাজার ৯৩০ টাকা। অথচ এ সম্পদের বর্তমান মূল্য ২২৮ কোটি টাকা।

এছাড়া রাজধানীর ধানমন্ডিতে পি কে হালদারের নামে দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে। অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, পি কে হালদার তার নিকটাত্মীয় পূর্ণিমা রানী হালদারের নামে উত্তরায় একটি ভবন করেছেন। যার দাম ১২ কোটি টাকা। পূর্ণিমার ভাই উত্তম কুমার মিস্ত্রির নামে তেজগাঁও, তেজতুরী বাজার ও গ্রিন রোডে ১০৯ শতাংশ জমি কেনেন। যার বাজারমূল্য ২০০ কোটি টাকা। নিজের কাগুজে কোম্পানি ক্লিউইস্টোন ফুডসের নামে কক্সবাজারে ২ একর জমির ওপর নির্মাণ করেন ৮তলা হোটেল (র‌্যাডিসন নামে পরিচিত)। যার আর্থিক মূল্য এখন ২৪০ কোটি টাকা।

এছাড়া পিকে হালদারের খালাতো ভাই অমিতাভ অধিকারী ও অনঙ্গ মোহন রায়ের নামে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ৪০৪ শতাংশ জমি কিনেছেন তিনি, এর বর্তমান দাম ১৬৭ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও কানাডিয়ান ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের তথ্যের বরাত দিয়ে দুদক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পিকে হালদার ২০১২ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ভাই প্রীতিশ হালদারের কাছে ১ কোটি ১৭ লাখ ১১ হাজার ১৬৪ কানাডীয় ডলার পাচার করেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৮০ কোটি টাকারও বেশি।

২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি পিকে হালদারের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগে মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী। মামলার এজাহারে বলা হয়, পিকে হালদার অবৈধ বিভিন্ন ব্যবসা ও কার্যক্রমের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ২৭৪ কোটি ৯১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৫৫ টাকার অবৈধ সম্পদ নিজ দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া ওই অর্থ আড়াল করতে বিদেশে পাচার করে মানি লন্ডারিং আইনেও অপরাধ করেন তিনি।

মামলাটি তদন্ত শেষে ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক সালাহউদ্দিন। ২০২২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।

প্রধান আসামি পিকে হালদার। অর্থপাচারের অভিযোগে গত বছরের ১৪ মে ভারতের অশোকনগরে পিকে হালদার গ্রেফতার হন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন—পিকে হালদারের আইনজীবী সুকুমার মৃধা, মেয়ে অনিন্দিতা মৃধা, সহযোগী অবন্তিকা বড়াল ও চাচাতো ভাই শঙ্খ বেপারি, পিকে হালদারের মা লীলাবতী হালদার ও ভাই প্রীতিশ কুমার হালদার, সহযোগী পূর্ণিমা রানী হালদার, অমিতাভ অধিকারী, রাজীব সোম, সুব্রত দাস, অনঙ্গ মোহন রায়, উত্তম কুমার মিস্ত্রি এবং স্বপন কুমার মিস্ত্রি।

তাদের মধ্যে সুকুমার, অনিন্দিতা, অবন্তিকা ও শঙ্খকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। তারা আজ আদালতে ছিলেন।

এদের মধ্যে সুকুমার, শঙ্খ ও অনিন্দিতা এর আগে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন।

আদালত এ মামলায় অভিযোগকারীসহ রাষ্ট্রপক্ষের ১০৮ সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন।

জাতীয়

আবারও ফাঁস হয়েছে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভান্ডারে থাকা নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য। শুক্রবার খবরে প্রকাশ, এ ঘটনায় দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ। এর আগে চলতি বছরের জুলাই মাসে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি নাগরিকের তথ্য ফাঁস হয়। ওই ঘটনায় জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন রেজিস্ট্রার কার্যালয়কে দায়ী করা হয়। এছাড়া সন্দেহভাজন হিসাবে ভূমি মন্ত্রণালয়কেও তথ্য সেবা দেওয়া বন্ধ রাখে ইসি। পরে জনদুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের শর্তে পুনরায় সেবাটি চালু করে দেওয়া হয়। এবার টেলিগ্রামের একটি চ্যানেলে তথ্য প্রকাশের পর আবারও ভূমি মন্ত্রণালয়ের তথ্য যাচাইয়ের সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে চলতি বছরের জুন মাসের শেষ দিকে তথ্য ফাঁসের বিষয়টি দক্ষিণ আফ্রিকাভিত্তিক সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান বিটক্র্যাক সাইবার সিকিউরিটির গবেষক ভিক্টর মার্কোপোলোসের নজরে আসে। মার্কিন অনলাইন পোর্টাল টেকক্রাঞ্চ এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশও করে; কিন্তু নির্বাচন কমিশনসহ দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে এ নিয়ে তেমন কোনো চাঞ্চল্য দেখা যায়নি।

যেখানে তথ্যভান্ডারে বহু নাগরিকের নাম, ফোন নম্বর, ই-মেইল, ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্রের কোডসহ ৩২ ধরনের ব্যক্তিগত গোপন তথ্য প্রকাশ হয়ে পড়ে, সেখানে ফাঁসের বিষয়টিকে কারিগরি ত্রুটি বলেই দায়িত্বপ্রাপ্তরা দায় মিটিয়ে ফেলেন। ফলে প্রশ্ন উঠতেই পারে, আগামী নির্বাচন সামনে রেখে শর্ষের ভেতরেই কি তবে ভুত ঢুকেছে? কর্তৃপক্ষের অগোচরে ভুয়া নাগরিকদের তথ্য সংযোজনই কি এর উদ্দেশ্য? তথ্য ফাঁসের আগের দফায় নির্বাচন কমিশন, বাংলাদেশ সরকারের কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম (বিজিডি ই-গভ সার্ট), সিআইডিসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা যৌথভাবে তদন্তে নেমেছিল। সেই তদন্তে কে বা কারা এর নেপথ্যে ছিল, সে সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি।

নানা তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের পর দেশের ১৮ কিংবা তার বেশি বয়সি নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হয়। এর মাধ্যমেই গাড়ি চালানোর লাইসেন্স, পাসপোর্ট, জমি বেচাকেনা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলাসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সুবিধা ও সেবা পেতে হয়। এ কারণে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের ১৭১টি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন চুক্তির মাধ্যমে ওই ভান্ডার থেকে বিভিন্ন ধরনের তথ্য ব্যবহার করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ফাঁস হওয়া এসব তথ্যের অপব্যবহার হলে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়বে। মূলত তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষসমৃদ্ধ ব্যক্তি-স্বাতন্ত্র্যের এ যুগে নাগরিকের এসব তথ্য বিশ্বব্যাপী অত্যন্ত গোপনীয় হিসাবে বিবেচিত হয়।

স্পর্শকাতর এ বিষয়টির সুরক্ষায় সব দেশই বাড়তি সতর্কতা মেনে চলে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, অতীতে একাধিকবার বলা হলেও আমাদের দেশে নাগরিকের তথ্য সুরক্ষার বিষয়টি তেমন গুরুত্ব পায়নি। সরকারের নিজস্ব সার্ভার তো বটেই, যেসব প্রতিষ্ঠান এই তথ্যভান্ডার থেকে তথ্য সংগ্রহ ও ব্যবহার করে, তাদের সাইবার সিকিউরিটি শক্তিশালী কিনা তা খতিয়ে দেখা সরকারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নাগরিকের গোপনীয়তা রক্ষার দায়িত্ব সরকারের। এখন যত দ্রুত সম্ভব তথ্যভান্ডারের সুরক্ষা নিশ্চিতের পাশাপাশি এর পেছনে কারা জড়িত এবং কী উদ্দেশ্যে বারবার তথ্য ফাঁস হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তা খুঁজে বের করবে, এটাই প্রত্যাশা।

জাতীয়

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি বলেছেন, এখন এক দফা সেটি হচ্ছে বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া, জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা। নির্বাচন নিয়ে যে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে তাকে মোকাবিলা করা। নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আচরণ সীমা ছাড়িয়ে গেছে।

রুখো আমেরিকা, রুখো বিএনপি-জামায়াত’ স্লোগানে বরিশালের উজিরপুর মহিলা কলেজ মাঠে উপজেলা ওয়ার্কার্স পার্টি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মেনন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কখনো স্যাংশন কখনো ভিসানীতি, কখনো নতুন নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়ে নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে চায়। আসলে তাদের উদ্দেশ্য নির্বাচন বানচাল করে অসাংবিধানিক সরকার কায়েম করা। তাদের এই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে না।

ওয়ার্কার্স পার্টি উপজেলা কমিটির সভাপতি ফায়জুল হক বালী ফারাহীনের সভাপতিতে এবং কমিটির সদস্য মো. রফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য ও বরিশাল জেলা কমিটির সভাপতি নজরুল হক নিলু, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ মো. টিপু সুলতান ও জেলা কমিটির সদস্য জহুরুল ইসলাম টুটুল প্রমুখ।

জাতীয়

দেশের অন্যতম বিমানবন্দর হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের সফট ওপেনিং (আংশিক) উদ্বোধন হচ্ছে আজ। বেসামরিক বিমান চলাচলক কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।

জানা গেছে, সফট ওপেনিংয়ের পর বিমান বাংলাদেশের একটি ফ্লাইট তৃতীয় টার্মিনাল ব্যবহার করে ঢাকা ত্যাগ করবে। সেই ফ্লাইটের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং করবে রাষ্ট্রায়ত্ত এয়ারলাইন্স বাংলাদেশ বিমান। এই গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের প্রস্তুতি হিসাবে বিমানবন্দরে চলছে মহড়া।

এ টার্মিনালের একাংশে ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে দুটি ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। টার্মিনাল-৩ এর পার্কিং বে-তে প্রথমবারের মতো ফ্লাইটে যাত্রী তুলেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট।

সোমবার বিমানের ঢাকা থেকে কাঠমান্ডু রুটের ফ্লাইটটি (বিজি-৩৭১) প্রথমবারের মতো তৃতীয় টার্মিনালের হাই-স্পিডি ট্যাক্সিওয়ে দিয়ে পার্কিং বে-তে প্রবেশ করে। পার্কিং বে-তে অবস্থানের পর তৃতীয় টার্মিনালের বোর্ডিং ব্রিজ দিয়ে ফ্লাইটে ওঠেন কাঠমান্ডুর যাত্রীরা। ফ্লাইটটি বিমানের বোয়িং-৭৩৭ মডেলের ‘ময়ূরপঙ্খি’ নামের একটি এয়ারক্রাফট নিয়ে পরিচালিত হয়।

বৃহস্পতিবার একইভাবে টার্মিনাল-৩ ব্যবহার করেছে বিমানের ঢাকা-কাঠমান্ডু রুটের আরেকটি ফ্লাইট।

এ বিষয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শফিউল আজিম বলেন, হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল-৩ এর সফট ওপেনিংয়ের জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সম্পূর্ণ প্রস্তুত। টার্মিনাল-৩ এর গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের জন্য নতুন ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া, দায়িত্ব পালনকারী জনবলের জন্য আন্তর্জাতিকমানের নতুন ইউনিফর্ম প্রস্তুত করা হয়েছে।

থার্ড টার্মিনালের সফট ওপেনিং প্রসঙ্গে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মুফিদুর রহমান বলেন, নির্ধারিত সময়ের আগেই আমরা প্রকল্প উদ্বোধন করতে যাচ্ছি। যখন প্রকল্প শুরু হলো, তখন মহামারি শুরু হয়ে গেল। মহামারি চলাকালে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন থেকে আমরা সরে যাইনি। এ সময় নির্মাণকাজে জড়িত সব প্রতিষ্ঠানের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা জানান।

বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা বলতে পারি তৃতীয় টার্মিনালটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশকে একটি এভিয়েশন হাব হিসাবে গড়ে তোলার স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রথম মাইলফলক।’ নতুন স্থাপনা থেকে প্রধামন্ত্রী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটের পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে নতুন দৃশ্যমান টার্মিনালের আংশিক উদ্বোধন করবেন।

সিএএবি চেয়ারম্যান বলেন, নতুন টার্মিনালের ৯০ শতাংশ কাজ সফট লঞ্চিংয়ের জন্য সম্পন্ন হয়েছে এবং শনিবার থেকে এয়ারলাইন্সগুলো টার্মিনালের নতুন পার্কিং বে ব্যবহার করতে পারবে। সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন এবং ক্যালিবারেশন তৃতীয় টার্মিনালটি আগামী বছরের শেষে যাত্রীদের ব্যবহারের জন্য সম্পূর্ণ চালু হবে।

তিনি বলেন, ‘নতুন টার্মিনালটি বিশ্বমানের সুযোগ-সুবিধা এবং যাত্রী পরিষেবা দিয়ে দেশের ভাবমূর্তি পালটে দেবে। পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক আলোসহ থার্ড টার্মিনালের ফ্লোর এবং সিলিংয়ে নজরকাড়া প্যাটার্নের বৈশিষ্ট্যগুলো খুবই পরিশীলিত।

তৃতীয় টার্মিনালটি একটি মাল্টিমোডাল পরিবহণ ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে যাতে যাত্রীরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবেশ এবং প্রস্থান করতে সক্ষম হয়। নতুন টার্মিনালটি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ভূগর্ভস্থ রেলপথ (এমআরটি-৫, কমলাপুর থেকে বিমানবন্দর অংশ) এবং একটি ভূগর্ভস্থ টানেলের মাধ্যমে বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনের সঙ্গে সংযুক্ত হবে। এছাড়া আশকোনা হজ ক্যাম্প থেকে আন্ডারগ্রাউন্ড টানেলের মাধ্যমে হজযাত্রীরা তৃতীয় টার্মিনালে যেতে পারবেন। তৃতীয় টার্মিনালটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের অধীনে একটি জাপানি কোম্পানি দ্বারা পরিচালিত ও রক্ষণাবেক্ষণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, তৃতীয় টার্মিনালের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রমের আগে বিভিন্ন বিদেশি এয়ারলাইন্স ঢাকা বিমানবন্দর থেকে তাদের কার্যক্রম শুরু করতে চায়, যা দেশের এভিয়েশন সেক্টরকে এগিয়ে নিয়ে যেতে একটি বড় ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

জাতীয়

রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রত্যেকটি পণ্যের সরবরাহ পর্যাপ্ত। থরে থরে সাজিয়ে বিক্রি করছে বিক্রেতা। তবুও বৃষ্টির অজুহাতে বাড়ানো হয়েছে দাম। পরিস্থিতি এমন- কেজিপ্রতি ৬০ টাকার নিচে মিলছে না কোন সবজি। কিছু সবজির দাম ১০০ টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে।

পাশাপাশি সাত দিনের ব্যবধানে কেজিতে ২০ টাকা বাড়িয়ে ব্রয়লার মুরগি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সঙ্গে নতুন করে কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেড়ে পেঁয়াজের দামও সেঞ্চুরির পথে হাঁটছে। আলু বিক্রি হচ্ছে ফের ৫০ টাকায়। আর মাছের দামও বাড়ানো হয়েছে হু হু করে। ফলে শুক্রবার ছুটির দিন বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে এসে ক্রেতার নাভিশ্বাস উঠছে।

খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজধানীর বাজারে প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, যা সাত দিন আগেও ৪৫-৫০ টাকা ছিল। প্রতি কেজি শালগম বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা, যা আগে ৬৫-৭০ টাকা ছিল। প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৮০ টাকা। যা আগে ৬৫-৭০ টাকা ছিল। এছাড়া কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে গাজর ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি শিম ২০০, বেগুন ৯০-১০০, টমেটো ১২০, শসা ৭০, করলা ১০০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৬০-১০০ টাকা, প্রতি কেজি কাকরোল ৮০, পটোল ৭০, লতি ৮০ ও প্রতি কেজি ঢেঁড়স ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর নয়াবাজারের সবজি বিক্রেতা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, বর্তমানে ঢাকায় সবজির সরবরাহ একেবারে কম। আড়ত থেকে অনেকে পণ্য আনতে পারেনি। তার মতে, কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টির কারণে এ সমস্যা তৈরি হয়েছে। তাই বেড়েছে দাম। ফলে বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। সঙ্গে পরিবহণ খরচ ও লাইনম্যানের চাঁদা, সব মিলে বেশি দামেই ক্রেতার কাছে সবজি বিক্রি করতে হচ্ছে।

জানতে চাইলে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, বিক্রেতারা সব সময় পণ্যের দাম বাড়াতে সুযোগ খোঁজে। অতি মুনাফা করতে মরিয়া সব শ্রেণির ব্যবসায়ী। এবার বৃষ্টির অজুহাত দিয়ে পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। এই অসাধুতা দেখতে সরকারের একাধিক সংস্থা আছে। এসব দেখা তাদেরই দায়িত্ব। কিন্তু ঠিক মতো দেখা হচ্ছে না। ফলে বিক্রেতাদের যে কোনো অজুহাতে ক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই সময় এসেছে, সংশ্লিষ্টদের এখনই বাজার ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম ঢেলে সাজাতে হবে। তা না হলে দেশের ভোক্তারা ঠকেই যাবে।

এদিকে কয়েক মাস ধরে অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ডিম, আলু ও পেঁয়াজের মূল্য নিয়ে কারসাজি করছে। সম্প্রতি সেই চক্র অতি মুনাফা করতে প্রতি পিস ডিমের দাম সর্বোচ্চ ১৫-১৬ টাকায় নিয়ে ঠেকায়। আলুর কেজি ৫০ ও পেঁয়াজ সর্বোচ্চ ১০০ টাকায় বিক্রি করে। ফলে মূল্য নিয়ন্ত্রণে ১৪ সেপ্টেম্বর প্রতি পিস ডিমের দাম ১২ টাকা, প্রতি কেজি আলু ৩৫-৩৬ এবং পেঁয়াজের দাম ৬৪-৬৫ টাকা নির্ধারণ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু বাজারে সরকার নির্ধারিত দাম মানা হচ্ছে না। পরিস্থিতি সামাল দিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দুই দফায় ১০ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে। তারপরও মূল্য সহনীয় করতে পারছে না জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ফলে ক্রেতার পণ্য তিনটি বাড়তি দামেই কিনতে হচ্ছে।

রাজধানীর খুচরা বাজারের বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ টাকা। যা গত সাত দিন আগে ৮০ টাকা ছিল। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা। যা আগে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া প্রতি হালি (৪ পিস) ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। এতে পিস হিসাবে মূল্য হয় ১২ টাকা ৫০ পয়সা। আর এক পিস কিনলে বাজার কিংবা এলাকার মুদির দোকানে ১৩ টাকা করে রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা। যা সাত দিন আগেও ১৮০ টাকা ছিল।

রাজধানীর মালিবাগ কাঁচাবাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা জালাল মোল্লা বলেন, কোনো উপলক্ষ্য পেলেই বিক্রেতারা পণ্যের দাম বাড়ায়। উৎসব এলে পণ্যের দামে নাজেহাল হতে হয়। এছাড়া কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। আর এই বৃষ্টির অজুহাতে বিক্রেতারা সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে গত মাসে পেঁয়াজ, আলু ও ডিমের দাম নির্ধারণ করলেও এখন পর্যন্ত নির্ধারিত দামে কিনতে পারিনি। এর মধ্যে গত সাত দিনে এই পণ্যের দাম আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে। যারা এই বিষয়ে দেখবে, তারা নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছে। আর বাড়তি দামে পণ্য কিনে আমাদের মতো সাধারণ ক্রেতার ঘুম হারাম হচ্ছে।

এদিকে প্রতি কেজি পাঙাশ ১৮০-২০০ টাকায় পাওয়া গেলেও শুক্রবার প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ২২০-২৫০। কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ২৫০-২৬০ টাকা। এছাড়া বড় আকারের তেলাপিয়ার কেজি ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চাষের কই ও পাবদা বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা, ৬০০-৭০০ গ্রাম ওজনের চাষের রুই-কাতলার দাম হাঁকানো হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজি। এক কেজির বেশি ওজনের হলে ৪০০ টাকা চাওয়া হচ্ছে। এছাড়া ছোট আকারের ইলিশের কেজি ৬০০-৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত বছর একই সময়ে ৪০০ টাকা ছিল। ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০০-১২০০ টাকা। আর এক কেজি সাইজের ইলিশের কেজি ১৫০০-১৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।