জাতীয়

জেলায় দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে তিস্তা নদীর পানি।

বুধবার সকাল ছয়টায় ডালিয়ায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও বিকেল ৪টায় বিপৎসীমা অতিক্রম করে ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো। সেখানে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে।
নদীর উৎপত্তিস্থল ভারতের উত্তর সিকিমে চুংথাং ড্যাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এমন ভয়াবহতার সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানান পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তারা।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, বুধবার বিকেল চারটায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার পাঁচ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো। এর আগে সকাল ছয়টা থেকে নয়টা পর্যন্ত বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। দুপুর ১২টায় কিছুটা বেড়ে বিপৎসীমার ৭৬ সেন্টিমিটার, দুপুর একটায় ৭২ সেন্টিমিটার, দুইটায় ২৫ সেন্টিমিটার, তিনটায় ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। সেখানে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। রাত পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সম্ভাবনার রয়েছে। ওই পয়েন্টে নদীর পানির বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার।
তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধিতে সতর্কতা জারি করে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন সংশ্লিষ্ঠরা। এতে করে জেলার ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই, পূর্ব ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশাচাপানী, গয়াবাড়ি, ঝুনাগাছ ছাপানী, খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নে ১৫ গ্রামের পাঁচ হাজার পরিবার বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছেন।

ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন, ‘আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে এবং মাইকিং করে তিস্তা পারের মানুষজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলছি। ইতিমধ্যে অনেকে তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেছেন। পরিস্থিতি মোকাবেলায় নৌকা মজুত রাখা হয়েছে।’

টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, ‘তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখনো ঘরবাড়িতে পানি না উঠলেও এলাকাবাসীকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাচ্ছেন।’

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আশফাউদ্দৌলা বলেন, ‘বুধবার বেলা ৩টায় তিস্তা ব্যরাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৭ সেণ্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও বেলা ৪টায় বিপৎসীমা অতিক্রম করে ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি বৃদ্ধি অব্যহত আছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যারাজের সব কটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে রেখে সতর্কাবস্থায় রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।’

ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি সকাল থেকে তিস্তা নদী এলাকায় অবস্থান করছি।

এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। বিভিন্ন মসজিদের মাইকে প্রচারণা চলছে। ইতিমধ্যে চর এলাকার মানুষজন তাদের গরু বাছুর নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে শুরু করেছেন। যাদের জমিতে আধাপাকা ধান আছে তারাও তাদের ধান কেটে নিচ্ছেন।’

জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ বলেন, ‘আমি তিস্তা পারে অবস্থান করছি। পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। সৃষ্ঠ পরিস্থিতি মোকাবেলায় ডিমলা উপজেলা পরিষদকে ৩০ মেট্রিক টন চাল ও ৫০০ প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর বাইরেও প্রয়োজনীয় ত্রাণ মজুদ আছে।’

জাতীয়

চার দিনের ব্যবধানে ফের স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানো হয়েছে। সব থেকে ভালো মানের এক ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম এক হাজার ১৬৭ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

এতে ভালো মানের এক ভরি স্বর্ণের দাম হয়েছে ৯৭ হাজার ৪৪ টাকা।

বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) থেকে নতুন এ দাম কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।

বুধবার (৪ অক্টোবর) বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠক করে এ দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। পরে কমিটির চেয়ারম্যান এম এ হান্নান আজাদের সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দাম কমানোর এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের দাম কমেছে। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ জুয়েলারি অ্যাসোসিয়েশন স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করেছে, যা বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) থেকে কার্যকর হবে।

এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর বৈঠক করে ১ অক্টোবর থেকে স্বর্ণের দাম কমানো হয়। সেসময় সব চেয়ে ভালো মানের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৭৪৯ টাকা কমিয়ে ৯৮ হাজার ২১১ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

তার আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর বৈঠক করে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে স্বর্ণের দাম কমানো হয়। সেসময় সব চেয়ে ভালো মানের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ২৮৪ টাকা কমিয়ে ৯৯ হাজার ৯৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

এদিকে স্বর্ণের অলঙ্কার কিনতে ক্রেতাদের বাজুস নির্ধারিত দামের চেয়েও বাড়তি অর্থ গুণতে হবে। কারণ বাজুস নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে স্বর্ণের অলঙ্কার বিক্রি করা হয়। সেই সঙ্গে ভরি প্রতি মজুরি ধরা হয় নূন্যতম ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে নতুন দাম অনুযায়ী এক ভরি স্বর্ণের অলঙ্কার কিনতে ক্রেতাদের ১ লাখ ৫ হাজার ৬০৫ টাকা গুণতে হবে।

স্বর্ণের নতুন মূল্য অনুযায়ী, সব চেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ১৬৭ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৭ হাজার ৪৪ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ১৬৬ টাকা কমিয়ে ৯২ হাজার ৬১২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩৩ টাকা কমিয়ে ৭৯ হাজার ৪৩২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম ৮১৬ টাকা কমিয়ে ৬৬ হাজার ১৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

স্বর্ণের দাম কমলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রূপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা ১ হাজার ৭১৫ টাকা, ২১ ক্যারেটের রুপা ১ হাজার ৬৩৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের রুপা ১ হাজার ৪০০ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপা ১ হাজার ৫০ টাকা ভরি বিক্রি হচ্ছে।

জাতীয়

৯৩ হাজার টাকার একটি চেক টেম্পারিং করে ৫ লাখ ৯৩ হাজার টাকা উত্তোলনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। রোববার স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি স্কুলের ব্যাংক হিসাব থেকে ব্যয় নির্বাহের জন্য ৯৩ হাজার টাকার একটি চেকে স্বাক্ষর দিয়ে ছাড় করেন। তবে প্রধান শিক্ষক ৯৩ হাজার টাকার আগে একটা ৫ বসিয়ে ৫ লাখ ৯৩ হাজার টাকা করেন।

ব্যাংকে টাকা তুলতে গিয়ে ধরা পড়েন প্রধান শিক্ষক। হাতেনাতে ধরা পড়ার পর সভাপতির চড়-থাপ্পড়ের শিকার হন প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম।

কেশরহাট উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. রস্তুম আলী প্রামাণিক অভিযোগে বলেন, ব্যাংকের কেশরহাট শাখায় স্কুলের একটি ব্যাংক হিসাব আছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত ওই ব্যাংক হিসাবে মোট ৯৪ হাজার টাকা জমা ছিল। তবে এরই মধ্যে সরকারি অনুদান বাবদ আরও ৫ লাখ টাকা জমা হয়। প্রধান শিক্ষক ৫ লাখ টাকা জমার বিষয়টি তাকে জানাননি।

এদিকে রোববার স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের যৌথ স্বাক্ষরে ৯৩ হাজার টাকার একটি চেক ইস্যু করা হয়। প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম কৌশলে ৯৩ হাজারের আগে একটা ৫ বসিয়ে সেটিকে ৫ লাখ ৯৩ হাজার টাকা করে নেন। এরপর রোববার দুপুরে প্রধান শিক্ষক চেকটি তার কর্মচারী দেবাশীষকে দিয়ে ব্যাংকে পাঠান টাকা উত্তোলনের জন্য। চেকটি যথারীতি খালাসের জন্য শেষধাপে ম্যানেজারের টেবিলে যায়। চেকটিতে টেম্পারিং দেখতে পেয়ে ব্যাংক ম্যানেজার স্কুলের সভাপতি রস্তুম আলী প্রামাণিককে ফোন করেন। ম্যানেজার সভাপতির কাছে জানতে চান তিনি কত টাকার চেক ইস্যু করেছেন। সভাপতি তাকে ৯৩ হাজার টাকার কথা জানান। ফলে ম্যানেজার চেকটি আটকে দেন।

ওই ব্যাংকের কেশরহাট শাখার ম্যানেজার মনিরুজ্জামান জানান, চেকটি দেখে প্রথমে তার সন্দেহ হয়। তবে প্রাতিষ্ঠানিক চেক হওয়ায় চেকটি সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের যৌথ স্বাক্ষরে ইস্যুকৃত। ঘটনা জানাজানির পর আমরা সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককে ব্যাংকে আসতে বলি। দুইজন ব্যাংকে এসে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। যেহেতু চেকটি টেম্পারিং করা ও সন্দেহজনক তাই চেকের বিপরীতে টাকা দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে চাইলে ব্যাংক আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারে। আবার সভাপতিও আইনি পদক্ষেপ নিতে পারেন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেশরহাট স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রস্তুম আলী প্রামাণিক বলেন, প্রধান শিক্ষক চেক টেম্পারিং করে টাকা মেরে দিতে চেয়েছিলেন। চেক ইস্যুর সময় রেজ্যুলেশনে ৯৩ হাজার টাকা তোলার কথা বলা হয়েছে; কিন্তু আগে একটা ৫ বসিয়ে দিয়ে ৫ লাখ ৯৩ হাজার টাকা তুলতে চেয়েছিলেন প্রধান শিক্ষক। আমি এই জালিয়াতির বিরুদ্ধে মামলা করব। প্রধান শিক্ষক তার কৃত অপকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন; কিন্তু আমি তাকে ক্ষমা করব না।

অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কেশরহাট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বলেন, ব্যাংক হিসাবে আগে ৯৩ হাজার টাকা জমা ছিল। পরে আরও ৫ লাখ টাকার একটা অনুদান জমা হয়েছে। আমি একসঙ্গে টাকাটা তুলতে চেয়েছিলাম। সভাপতি স্বাক্ষর করলেও এখন তিনি অস্বীকার করছেন। আমি চেক টেম্পারিং করিনি।

জাতীয়

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। সোমবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে এ কম্পন অনুভূত হয়।

ভূমিকম্পের বিষয়টি নিশ্চিত করে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়ারলেস সুপারভাইজার জহিরুল ইসলাম বলেন, কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী এই ভূমিকম্পটি মাঝারি মাত্রার।

তিনি আরও বলেন, রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ২ মাত্রার ভূকম্পনটির উৎপত্তিস্থল আসামে। ঢাকার ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র থেকে উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ২৩৬ কিলোমিটার।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৪। ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ভারতের আসামের গোয়ালপাড়া থেকে ২৪ কিলোমিটার দক্ষিণে। এর গভীরতা ১০ কিলোমিটার।

বিবিসি বাংলা বলছে, বাংলাদেশ ছাড়াও এই ভূমিকম্প নেপাল, ভারত, ভুটান ও চীনে অনুভূত হয়েছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।

এর আগে, ১৭ সেপ্টেম্বর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ২। উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ৫৯ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে টাঙ্গাইলে।

১১ সেপ্টেম্বর সিলেট অঞ্চলে ভূমিকম্প অনুভূত হয়, যেটির উৎপত্তিস্থল ছিল ভারত-মিয়ানমার সীমান্ত। ৯ সেপ্টেম্বর আরেকটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়, যেটির উৎপত্তিস্থল ছিল ভারতের আসামের কাছাড় এলাকা।

গেল আগস্টে দুটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর মধ্যে একটি অনুভূত হয় ২৯ আগস্ট। এর উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেট। এর আগে ১৪ আগস্ট ভূমিকম্প অনুভূত হয়।

জাতীয়

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন দেশের সার্বিক উন্নয়নে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে পাবনাবাসীসহ দেশের সব নাগরিককে একই ছায়াতলে এসে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

রাজধানীর একটি হোটেলে শুক্রবার পাবনা ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। পাবনা ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের সভাপতি রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন।

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘উন্নয়নের ক্ষেত্রে কোনো বিভাজন চলবে না, দেশের উন্নয়নে ও জনগণের কল্যাণে দল-মত নির্বিশেষে পাবনাবাসীসহ সবাইকে একই ছায়াতলে কাজ করতে হবে।’

গণমানুষের দাবি ও আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশ যেভাবে অগ্রগতির সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে এদেশ ২০৪১ সালে উন্নত দেশের পর্যায়ে পৌঁছতে পারবে।

পাবনার সার্বিক উন্নয়নের প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি বলেন, এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতার ছোঁয়া অবশ্যই পাবনাবাসীদের ওপর পড়বে এবং সেজন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, ফাউন্ডেশন পাবনার উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে সে বিশ্বাস প্রতিষ্ঠাকালীন থেকেই সবার ছিল। আর তাই তো অনেক অসাধ্য কাজকে সাধন করা সম্ভব হয়েছে সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায়।

পাবনাবাসীদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম। যুদ্ধে সরাসরি অংশ নিয়েছি, কর্মী হিসেবে কিন্তু কমান্ডার ছিলাম না। তবে দক্ষ সংগঠক ও কর্মী ছিলাম।’

তিনি বলেন, পাবনা তথা দেশের উন্নয়নে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।

জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকু এমপি, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম, পাবনা ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. বেবী ইসলাম, সহ-সভাপতি অধ্যাপক শিবজিত কুমার নাগ, সহ-সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম রেজা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপতিকে পাবনা ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন-এর পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের জীবন ও কর্মের ওপর নির্মিত একটি তথ্যচিত্র ‘একটি কিংবদন্তী’ প্রদর্শন করা হয়।

রাষ্ট্রপতি তথ্যচিত্রটি উপভোগ করেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে তিনি একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন এবং নৈশভোজে অংশ নেন।

জাতীয়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, হজরত মুহাম্মদের (সা.) সুমহান আদর্শ ও সুন্নাহ অনুসরণের মাধ্যেই মুসলমানদের অফুরন্ত কল্যাণ, সফলতা ও শান্তি নিহিত রয়েছে।

তিনি বলেন, আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ধর্মীয় ও পার্থিব জীবনে মহানবী হজরত মুহাম্মদের (সা.) সুমহান আদর্শ ও সুন্নাহ বিশ্ববাসীর জন্য সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ, উৎকৃষ্টতম অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় এবং এর মধ্যেই মুসলমানদের অফুরন্ত কল্যাণ, সফলতা ও শান্তি নিহিত রয়েছে।

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে বুধবার এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব, বিশ্বমানবতার মুক্তির দিশারী, মহানবী হজরত মুহাম্মদের (সা.) জন্ম ও ওফাতের পবিত্র স্মৃতি বিজড়িত ১২ রবিউল আউয়াল তথা ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) বিশ্ববাসী বিশেষত মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র ও মহিমান্বিত দিন। এ উপলক্ষ্যে আমি বাংলাদেশসহ বিশ্ব মুসলিম উম্মাহকে আন্তরিক মোবারকবাদ জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন হযরত মুহাম্মদকে (সা.) বিশ্বজগতের হেদায়েত ও নাজাতের জন্য ‘রাহমাতুল্লিল আলামিন’ তথা সারা জাহানের রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছেন। নবী করিম (সা.) সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘হে নবী, আমি আপনাকে সমগ্র বিশ্বজগতের জন্য কেবল রহমতরূপে প্রেরণ করেছি’ (সুরা আল-আম্বিয়া, আয়াত ১০৭)। মুহাম্মদ (সা.) এসেছিলেন তওহিদের মহান বাণী নিয়ে। সব ধরনের কুসংস্কার, অন্যায়, অবিচার, পাপাচার ও দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে মানবসত্তার চিরমুক্তি, শান্তি, প্রগতি ও সামগ্রিক কল্যাণের বার্তা নিয়ে এসেছিলেন তিনি।

বিশ্ববাসীকে তিনি মুক্তি ও শান্তির পথে আসার আহ্বান জানিয়ে অন্ধকার যুগের অবসান ঘটিয়েছিলেন এবং সত্যের আলো জ্বালিয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা, ন্যায় ও সমতাভিত্তিক সমাজ গঠন এবং মানব কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করে বিশ্বে শান্তির সুবাতাস বইয়ে দিয়েছিলেন। বিশ্বশান্তির অগ্রনায়ক রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, নাগরিকদের মধ্যে শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখাসহ নানা দিক বিবেচনা করে প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করেন মানব ইতিহাসের প্রথম প্রশাসনিক সংবিধান ‘মদিনা সনদ’।

বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় মহানবী (সা.)-এর অনবদ্য ভূমিকার আরেকটি অনন্য স্মারক হুদায়বিয়ার সন্ধি। বাহ্যিক পরাজয়মূলক হওয়া সত্ত্বেও কেবল শান্তি প্রতিষ্ঠার স্বার্থে তিনি এ সন্ধিতে স্বাক্ষর করেন। তার অমিত সাহস, ধৈর্য ও বিচক্ষণতা তখনকার মানুষকে যেমন বিমুগ্ধ করে, তেমনি অনাগত মানুষের জন্যও শান্তি প্রতিষ্ঠার আদর্শ ও অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।

তিনি বলেন, হুদায়বিয়ার চুক্তির মাধ্যমেই মুসলিম উম্মাহর জন্য আল্লাহর ঘর কাবা শরিফ জিয়ারত করার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। মহানবী (সা.)-এর শান্তিপূর্ণ ‘মক্কা বিজয়’ মানব ইতিহাসের আর এক চমকপ্রদ অধ্যায়। কার্যত তিনি বিনা যুদ্ধে, বিনা রক্তপাতে ও বিনা ধ্বংসে মক্কা জয় করেন। শত অত্যাচার-নির্যাতন ও যুদ্ধ করে আজীবন যে জাতি নবী করিম (সা.) কে সীমাহীন কষ্ট দিয়েছে, সেসব জাতি ও গোত্রকে মক্কা বিজয়ের দিন তিনি অতুলনীয় ক্ষমা প্রদর্শন করে এবং তাদের প্রতি উদার মনোভাব দেখিয়ে সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করেন। ক্ষমা ও মহত্ত্বের মাধ্যমে মানুষের মন জয় করে শান্তি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার এমন নজির বিশ্বে দুর্লভ।

মানব জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, প্রতিটি ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে তিনি বিশ্ব মানবতার জন্য অনিন্দ্য সুন্দর অনুসরণীয় শিক্ষা ও আদর্শ রেখে গেছেন, যা প্রতিটি যুগ ও শতাব্দীর মানুষের জন্য মুক্তির দিশারী হিসেবে পথ দেখাবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের দ্বন্দ্ব-সংঘাতময় বিশ্বে মহানবী (সা.)-এর অনুপম জীবনাদর্শ, তার সর্বজনীন শিক্ষা ও সুন্নাহর অনুসরণ এবং ইবাদতের মাধ্যমেই বিশ্বের শান্তি, ন্যায় এবং কল্যাণ নিশ্চিত হতে পারে বলে আমি মনে করি।

তিনি বলেন, ‘আমি পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহ্ তথা বিশ্ববাসীর শান্তি, মঙ্গল ও সমৃদ্ধি কামনা করছি। মহান আল্লাহ আমাদের সকলকে মহানবী (সা.)-এর সুমহান আদর্শ ও সুন্নাহ যথাযথভাবে অনুসরণের মাধ্যমে দেশ, জাতি ও মানবতার কল্যাণে কাজ করার তৌফিক দান করুন- আমিন।’

জাতীয়

চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে পর্যটন নগর কক্সবাজার পর্যন্ত নবনির্মিত রেলপথ দিয়ে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলতে যাচ্ছে আগামী ১৫ অক্টোবর। এ জন্য চট্টগ্রামের পটিয়া রেলস্টেশনে ট্রায়ালের জন্য রাখা হয়েছে ছয়টি বগির একটি ট্রেন।

শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের বিদায়ী পরিচালক মফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আগামী ২৮ অক্টোবর এ রেলপথ উদ্বোধন হতে পারে বলে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের পটিয়া রেলস্টেশনে ট্রায়াল ট্রেন এসে পৌঁছেছে গত ৬ আগস্ট। ছয়টি বগির এই ট্রেনের প্রতি বগিতে ৬০ জন করে যাত্রী বসতে পারবে।

প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, আগামী বছরের ২৪ জুন পর্যন্ত এই প্রকল্পের মেয়াদ থাকলেও তার আগে আগামী ডিসেম্বরের দিকে পুরোপুরি কাজ শেষ হবে। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চালানোর জন্য তার আগেই বুঝিয়ে দেওয়া যাবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, প্রকল্পের কাজ বুঝিয়ে দেওয়ার পর বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এই লাইনে ট্রেন চালু হবে। নতুন এই রেলপথ চালু হলে চট্টগ্রাম থেকে মাত্র আড়াই ঘণ্টায় পর্যটন নগর কক্সবাজারে পৌঁছানো যাবে।

প্রকল্পের সর্বমোট অগ্রগতি ৮৯ শতাংশ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেও কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে। ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০০ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণ করা হচ্ছে।

প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতির বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০১ কিলোমিটার লাইনের মধ্যে মোট প্রকল্পের কাজ ৮৯ শতাংশ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। বাকি সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া এলাকার দিকে প্রায় চার কিলোমিটার কাজ বাকি আছে। তা চলতি মাসেই শেষ হবে।

দোহাজারী-কক্সবাজার প্রকল্পের রেলপথের কাজ অধিকাংশ সম্পন্ন হলেও চলমান রয়েছে চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী অংশের মধ্যকার কর্ণফুলী সেতুর কাজ। এ সেতুতে ভারী ইঞ্জিন বহনের সক্ষমতা না থাকায় চলছে সংস্কার কাজ। ৩১ অক্টোবরের মধ্যে এ কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কাজ করছে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে।

জাতীয়

আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৭৭ বছরে পা দিচ্ছেন আজ। স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জ্যেষ্ঠ সন্তান শেখ হাসিনা ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের মধুমতী নদীবিধৌত টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। দেশের দীর্ঘ সময়ের প্রধানমন্ত্রী তিনি। টানা তিন মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার গৌরবও তার। ১৯৮১ সাল থেকে দেশের অন্যতম প্রাচীন দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আছেন। ৭৬ বছরের জীবনে অনেক সংকট, চড়াই-উতরাই পেরিয়েছেন। দেখেছেন সাফল্যের চূড়া। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন ও লম্বা সময় দেশ পরিচালনার অভিজ্ঞতা তার। তার শৈশব কেটেছে চিরায়ত গ্রামীণ পরিবেশে, দাদা-দাদির কোলেপিঠে। ’৫৪-এর নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা বাবা-মায়ের সঙ্গে ঢাকায় চলে আসেন। রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হিসেবে ছাত্রজীবন থেকে প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন তিনি। বর্তমানে শুধু জাতীয় নেতাই নন, তিনি আজ তৃতীয় বিশ্বের একজন বিচক্ষণ বিশ্বনেতা হিসেবে অবতীর্ণ হয়েছেন। সংগ্রামী জীবনে তাকে ১৯ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়। ১০ বার তাকে জেল-গৃহবন্দি থাকতে হয়েছে। মৃত্যুভয়কে পরোয়া না করে তিনি ক্লান্তিহীন পরিশ্রম করে যাচ্ছেন দেশমাতৃকার জন্য। তার নেতৃত্বে অসংখ্য কালোত্তীর্ণ সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বরের ভাষণের পদাঙ্ক অনুসরণ করে গত ২২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউএনজিএ অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশন এবং অন্যান্য উচ্চপর্যায়ের পার্শ্ব ও দ্বিপক্ষীয় অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে শনিবার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছান। এবারও তার জন্মদিন কাটছে ওয়াশিংটনে। তবে তার অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশে দিনটিতে উৎসবমুখর পরিবেশে নানা কর্মসূচি উদযাপন করবে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।

জাতীয়

বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে হস্তক্ষেপ করে বা সীমিত করে দেয়, এ রকম কোনো পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র নেবে না বলে প্রত্যাশা করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।

জাতীয় নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করলে আগামীতে বাংলাদেশের গণমাধ্যমকর্মীদেরও ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হতে পারে, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে শাহরিয়ার আলম বলেন, আমরা আগেও বলেছি, ভিসানীতি নিয়ে মানুষ যেন ভুল না বোঝে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, আরও স্পষ্ট করার প্রয়োজন আছে।বিশেষ করে, আমরা গণমাধ্যম সম্পৃক্ততার একটা কথা শুনেছি। যেটা মনে হয় না খুব একটা রাইট চয়েস। সেখানে নিশ্চয়ই আপনাদেরও (গণমাধ্যমকর্মীদের) একটা বক্তব্য আছে। সে দেশের (যুক্তরাষ্ট্র) রাষ্ট্রদূত কেন এটা বললেন, এটা নিশ্চয়ই সেই দেশ (যুক্তরাষ্ট্র) খতিয়ে দেখবে।

শাহরিয়ার আলম বলেন, আমরা আশা করব, গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে হস্তক্ষেপ করে বা সীমিত করে দেয়, এরকম কোনো পদক্ষেপ তারা (যুক্তরাষ্ট্র) নেবে না।

এ বছরের মে মাসের শেষে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। তখন জানানো হয়েছিল, বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের দেশটির ভিসা দেওয়া হবে না। ওই ঘোষণার প্রায় চার মাসের মাথায় ২২ সেপ্টেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে জানান, তার দেশ ভিসানীতির প্রয়োগ শুরু করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এবং ক্ষমতাসীন ও বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীরা রয়েছেন এর আওতায়।

এর মধ্যেই ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকায় একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, আগামীতে গণমাধ্যমও ভিসানীতিতে যুক্ত হবে।
শাহরিয়ার আলম বলেন, ভিসানীতি ঘোষণায় যা বলা হয়েছে, এখানে সাধারণ মানুষের তো চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। রাজনীতি যারা করেন, তারা অনেক ঝুঁকি নিয়ে রাজনীতি করেন, সুতরাং এটা তাদের জন্য কোনো বড় বিষয় নয়। বড় বিষয় তাদের জন্য যারা বিদেশে গিয়ে আবাস খোঁজেন এবং সুনির্দিষ্টভাবে ওই দেশে যদি কারও কোনো পরিকল্পনা থাকে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভিসা পলিসি তাদের ইন্টারনাল প্রসেস। আমরা এটাকে গ্রহণ করেছি। কিন্তু আমরা আবারও বলব, এটা যেন আরবিট্রেশন না হয়। আশা করি, আমরা জানতে পারব যখন সেই ইন্ডিভিজুয়ালদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। আমরা সেই বিষয়গুলো গবেষণা করে বোঝার চেষ্টা করব কাদের জন্য এ নীতিটি প্রয়োগ করা হয়েছে। এবং সেখানে যদি কোনো ব্যত্যয় দেখি, অবশ্যই আমরা মার্কিন দূতাবাস এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে জানাব।

শাহরিয়ার আলম আরও বলেন, গত পাঁচ বছরে কী পরিমাণ বাংলাদেশি মানুষ যুক্তরাষ্ট্র সফরে গেছেন, সেই ডেটাতে বলে কোভিড সময়ের যে নিষেধাজ্ঞা সেই সময় কমে এলেও অতীতের যে কোনো বছরের তুলনায় এ বছরের আগস্টের শেষ দিন পর্যন্ত বেশি বাংলাদেশি মানুষ যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছেন।

জাতীয়

রাজশাহীর কুইক রেন্টাল ‘নর্দার্ন পাওয়ার সলিউশন’ বিদ্যুৎকেন্দ্রকে (পাওয়ার প্ল্যান্ট) অলস বসিয়ে রেখেও ক্যাপাসিটি চার্জ হিসাবে ৬৬৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকা পরিশোধ করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। ১০ বছরে কেন্দ্রটির ৪৩৮ কোটি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন করার কথা থাকলেও উৎপাদন করেছে ১৩৩ কোটি ৮৯ লাখ ইউনিট। ১০ বছরের মধ্যে ৭ বছরই (২ হাজার ৬৪৯ দিন) উৎপাদন বন্ধ ছিল। নগরীর উপকণ্ঠ কাটাখালীতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় স্থাপিত নর্দার্ন পাওয়ারের মালিক রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সংসদ-সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক। ডিজেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদন ক্ষমতা ৫০ মেগাওয়াট। এটি নির্মাণে ৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১১-১২ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর প্রায় ১০ বছর নর্দার্ন পাওয়ার সলিউশন ১৩৩ কোটি ৮৯ লাখ ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। এ পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনে ২ হাজার ২১৬ কোটি টাকা খরচ হয়। এর মধ্যে প্রথম বছরে গড়ে প্রতি ইউনিটের উৎপাদন খরচ ১৫ দশমিক ৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এর পরের ৪ বছর প্রতি ইউনিটের খরচ কিছুটা বেশি হয়। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে নর্দার্ন পাওয়ারের বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ ছিল প্রতি ইউনিট ১০ দশমিক ৫০ টাকা। তবে সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রতি ইউনিট উৎপাদন খরচ বেড়ে ২৫ দশমিক ৪১ টাকা হয়। যা আগের ১০ বছরের চেয়ে অনেক বেশি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বেসরকারি পাওয়ার প্ল্যান্ট অলস বসিয়ে রাখলে চুক্তি অনুযায়ী ক্যাপাসিটি চার্জ দিয়ে থাকে সরকার। এ হিসাবে ২০২১-২২ অর্থবছরে অলস বসে থাকা ২৪৭ দিনের ক্যাপাসিটি চার্জ হিসাবে সরকার নর্দার্ন পাওয়ারকে ৮২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা পরিশোধ করেছে। ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে নর্দার্ন পাওয়ার লিমিটেড ২৪ কোটি ৪০ লাখ ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে যা ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এতে ৩০৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা খরচ হয়। প্রতি ইউনিট খরচ পড়ে ১২ টাকা ৬৪ পয়সা। সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী নর্দার্ন পাওয়ার বছরে ৩০৩ দিন চালু রাখার কথা। কিন্তু ২০২১-২২ অর্থবছরে চালু ছিল মাত্র ৫৫ দিন। এ ৫৫ দিনে উৎপাদন করে মাত্র ৬ কোটি ইউনিট বিদ্যুৎ। এ পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি খরচ বাবদ সরকারের কাছ থেকে পেয়েছে ৮৪ কোটি ১১ লাখ টাকা। আর বিদ্যুৎকেন্দ্রটির রক্ষণাবেক্ষণে পেয়েছে ১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নর্দার্ন পাওয়ারকে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে ২০১১-১২ অর্থবছরে ৮ কোটি ৭ লাখ টাকা, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ৭৩ কোটি ৬৩ লাখ, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৭২ কোটি ৬ লাখ, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৭২ কোটি ৯২ লাখ, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৭১ কোটি ৫৩ লাখ, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৭৯ কোটি ১৫ লাখ, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৬৯ কোটি ৫২ লাখ, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৬৯ কোটি ৪৮ লাখ, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৬৬ কোটি ৯৭ লাখ, ২০২০-২১ অর্থবছরে ১ কোটি ৬৮ লাখ এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে ৮২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। অপরদিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ২০১১-১২ অর্থবছরে ৭৮ দিন, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ২৭৫ দিন, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ২৪৬ দিন, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ২৩৬ দিন, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২৪০ দিন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ২১০ দিন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১৬২ দিন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২৩৬ দিন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩০৮ দিন, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩৪৮ দিন এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩১০ দিন বন্ধ ছিল। ১০ বছরে নর্দার্ন পাওয়ার ২ হাজার ৬৪৯ দিন অলস বসে ছিল। অলস বসে থাকলেও ক্যাপাসিটি চার্জ হিসাবে ৬৬৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকা পেয়েছে।

পিডিবির একজন কর্মকর্তা জানান, কুইক রেন্টালগুলো বসিয়ে রাখলেই বেশি ক্ষতি। উৎপাদন বেশি হলে ইউনিট উৎপাদন খরচ কম হয়। কিন্তু এসব পাওয়ার প্ল্যান্টকে পুরোপুরি উৎপাদনে ব্যবহার করা যায়নি। এ কারণে খরচও বেশি হচ্ছে। পিডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, কুইক রেন্টালের মূল সমস্যা হলো বসে থাকলেও ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া। ফলে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ গচ্চা যাচ্ছে। এ কারণে বিদ্যুৎ খাতের ক্ষতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না।

নর্দার্ন পাওয়ারের মালিক ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক বলেন, আমরা তো বসিয়ে রাখতে চাই না। জ্বালানি ঘাটতির কারণে অর্ধেক সময় প্ল্যান্টটি বন্ধ রাখতে হয়। সরকার জ্বালানি সরবরাহ করতে পারে না। আমরা কর্তৃপক্ষকে বারবার বলেছি -জ্বালানি সরবরাহ অটুট রাখতে। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। নর্দার্ন পাওয়ার লিমিটেডের ব্যবস্থাপক জামিল আক্তার খান বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের মূল জ্বালানি ফার্নেস অয়েল। পিডিবির ন্যাশনাল লোড ডেসপ্যাচ সেন্টারের নির্দেশনা পেলেই আমরা উৎপাদনে যাই। আমাদের উৎপাদিত বিদ্যুৎ ন্যাশনাল গ্রিডে যুক্ত হয়। অনেক সময় জ্বালানি না পেলে নির্দেশনা আসার পরও উৎপাদনে যেতে পারি না।