জাতীয়

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া ৬০ প্রার্থীর সঙ্গে তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন শমসের মোবিন চৌধুরী ও মহাসচিব অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দার বেইমানি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক আলোচনায় ৬০ প্রার্থীর পক্ষে এ অভিযোগ জানানো হয়।

তারা বলেছেন, প্রার্থীদের নির্বাচনী মাঠে নামিয়ে দলের চেয়ারম্যান ও মহাসচিব এখন যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন।

এসময় তৃণমূল বিএনপি থেকে যশোর-৫ আসনের প্রার্থী মোস্তফা গণি বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে একাত্মতা ঘোষণা করে যে নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রত্যয় ব্যক্ত করতে যাচ্ছি। সেখানে প্রচণ্ড বাধা সৃষ্টি করেছেন শমসের মবিন ও তৈমুর আলম খন্দকার। তারা আমাদের সঙ্গে নজিরবিহীন অসমন্বয় করে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। আমাদের অভিভাবক হিসেবে প্রধানমন্ত্রী আপনি এর বিচার করুন। আমরা দলের কোনো বিচ্ছিন্ন অংশ নই।

তিনি বলেন, আপনারা যদি আজকে শমসের ও তৈমুর আলমকে জিজ্ঞেস করেন তারা বলবেন, দলে বিচ্ছিন্ন অংশ ষড়যন্ত্র করছে। আমি মেজর গণি বলতে চাই, আমরা দলের কোনো বিচ্ছিন্ন অংশ নই। ‌দলের যারা অবহেলিত সংসদ সদস্য প্রার্থী তাদের পক্ষ থেকে কথা বলতে দাঁড়িয়েছি। তৈমুর-শমসের ও অন্তরা হুদা আমাদের নির্বাচনের মাঠে দাঁড় করিয়ে যে তামাশা করছেন, জাতির কাছে তার হিসাব দেন।

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি আমাদের সমস্যা সমাধান না করেন তাহলে আমরা কঠোর হতে বাধ্য হবো এবং আমরণ অনশনে যেতে বাধ্য হবো।

জাতীয়

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, অনেক দেশ আমাদের নিয়ে টানাটানি করে, কিন্তু আমরা কারো লেজুড় হতে চাই না। আমরা গরিব হতে পারি, কিন্তু সম্মান বজায় রাখি।

সে জন্য আমাদের ইজ্জত-সম্মান অনেক বেড়েছে।

বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সিলেট নগরে নিজ বাসভবন হাফিজ কমপ্লেক্সে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। ইইউ প্রতিনিধিদলে ছিলেন রেবেকা কক্স ও শার্লোট সুয়েবেস।

সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য প্রার্থী এ কে আব্দুল মোমেন আরও বলেন, ইইউ পর্যবেক্ষক দলকে বললাম আগামী দিনে কী চাই। আমরা বলেছি, একটা ব্যালেন্সড ফরেন পলিসি চাই। অবাধ, সুষ্ঠু ও  নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য যা যা দরকার, সব করেছি। এজন্য চাই দুনিয়ার সব লোক এসে দেখুক শিখুক। প্রধানমন্ত্রী দেশে অনেক সুন্দর নির্বাচন করছেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ইশতেহার ইস্যুতে বলেছেন, আমরা কী কী চাই। শান্তি চাই, বাকস্বাধীনতা চাই, স্থিতিশীলতা চাই, জনগণের কর্মসংস্থান চাই, ইউনিভার্সাল হেলথ সেক্টর চাই, একটি সোনার বাংলাদেশ তথা স্মার্ট সিটিজেন বাংলাদেশ চাই। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমার স্বপ্ন একটাই, আমার বাবার স্বপ্ন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র দেশ, যেখানে তিন মিলিয়ন (৩০ লাখ) মানুষ জীবন দিয়েছেন গণতন্ত্রের জন্য, স্বাধীনতার জন্য, মানবাধিকার ও মানুষের ন্যায়বিচারের জন্য। আমরা নির্বাচনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই যে -আমরা হচ্ছি পৃথিবীর মধ্যে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। আমরা মানবাধিকার ও মানুষের ন্যায়বিচারের অগ্রনায়ক। এ জন্য অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে চাই।

তিনি বলেন, আগে বিএনপির সময়ের আজিজ মার্কা নির্বাচনে এক কোটি তেইশ লাখ ভোট ভুয়া ছিল। আমরা বায়োমেট্রিক করেছি, এবার কোনো ভোট ভুয়া হবে না। বলা হয়েছে, রাতের অন্ধকারে ভোট দেওয়া হয়েছে। আমরা এবার ট্রান্সপারেন্ট ব্যালট বাক্স রেখেছি, সবার সামনে থাকবে, দেখবে কয়টা ব্যালট পড়বে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, আমরা একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন করেছি। কমিশন নির্বাচনের সব দায়িত্বে থাকবে; সরকারি অফিসার, পুলিশ সবাইকে কাজে লাগাতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী গত ১৫ বছরে সর্ব শ্রেণির জন্য মঙ্গল করেছেন। এখন হরতাল নেই, অবরোধ নেই, যারা ব্যবসায়ী, তারা সুন্দর ব্যবসা করছেন। যারা অভিভাবক, তারা খুশি, সেশনজট নেই, বোমাবাজি নেই, তার সন্তান ফিরে আসবে কি না, সেই আতঙ্ক নেই। আর যারা গরিব লোক, তাদের শেখ হাসিনার সরকার অনেক ধরনের অনুদান দেয়। আমরা খাদ্য ঘাটতির দেশ ছিলাম, এখন খাদ্য ঘাটতি নেই।

মোমেন বলেন, তারা (ইইউ পর্যবেক্ষকদল) প্রশ্ন করেছিলেন, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী আছেন কি না। বললাম আরও চারজন আছেন। আমরা কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীকে ছোট করে দেখি না। আমরা আমাদের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। তারা তাদের মতো করে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বললাম, আমাদের শহর সম্প্রীতির শহর। আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি, তাদের সঙ্গেও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক। তাদের সঙ্গে ঝগড়া ও মারামারি নেই। আমরা সমাজের লোক হিসেবে স্যাক্রিফাইস করি।

তিনি বলেন, আমি তাদের বলেছি, সিলেটে মেয়র ছিলেন বিএনপির। আমরা তার সঙ্গে কোনো বাজে ব্যবহার করিনি। আমাদের সরকার তাকে সব সময় সাহায্য করেছে। শেখ হাসিনা চান দেশের মঙ্গল। সুতরাং বিএনপি করল, না আওয়ামী লীগ করল, তা তিনি দেখেননি। কারণ তিনি দেশের উন্নয়ন চান। নির্বাচন নিয়ে তাদের কোনো পর্যবেক্ষণ ছিল না। তবে আমি বলেছি, আমাদের লোক এবং অন্য দলের একজন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন।

বিএনপির অভিযোগ সম্পর্কে মোমেন বলেন, আমরা কোনো নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করিনি। যারা সন্ত্রাসের সঙ্গে  জড়িত, সিসি ক্যামেরায় ছবি উঠেছে, কেবল ক্রিমিনাল যারা, তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজনৈতিক কারণে একজনকেও গ্রেপ্তার করা হয়নি। আমরা সন্ত্রাসীদের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতির কথা বলেছি। বিএনপির অনেক নেতা আছেন, যারা গাড়ি জ্বালান, হুকুম দেন জ্বালানোর, চিহ্নিত যারা, তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে ইইউ পর্যবেক্ষকরা নিজস্ব পর্যবেক্ষণের কোনো বিষয়ে কথা বলেননি।

জাতীয়

কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে নরসিংদী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি)তে দ্বিতীয়বারের মতো চাকরি মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দিনব্যাপী চাকরি মেলায় তিনশতাধিক বেকার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে।

শিবপুর উপজেলার শাষপুরে অবস্থিত নরসিংদী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের আয়োজনে এবং স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের (সেইপ) সহযোগিতায় বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) টিটিসি প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী এ মেলা হয়। মেলায় ১২টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়।

চাকরি মেলা উপলক্ষ্যে টিটিসির কনফারেন্স রুমে এদিন সকালে এক আলোচনা সভা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন শিবপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ মো. সজিব।

সভায় সভাপতিত্ব করেন নরসিংদী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী নাবিলা নুঝাত।

প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের জব প্লেসমেন্ট কর্মকর্তা রুবেল রানার সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক নরসিংদী শাখার ব্যবস্থাপক মো. কবিরুল ইসলাম ও নরসিংদী চেস্বার অব কমার্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট আনিছুর রহমান ভূইয়া।

আলোচনা সভা শেষে মেলা উদ্বোধন করে মেলায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্টল পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও শাহ মো. সজিব। মেলায় অংশগ্রহণ করায় তাদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন তিনি।

চাকরিপ্রত্যাশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একসঙ্গে এতগুলো প্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যে আবেদন করে চাকরি পাওয়ার সুযোগ সচরাচর হয় না। এমন সুযোগ পেয়ে আবেদনকারীরা অনেক বেশি খুশি হয়েছেন বলে জানান তারা।

জব প্লেসমেন্ট কর্মকর্তা রুবেল রানা জানান, মেলায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন স্টলে প্রায় ১২ শতাধিক আবেদন জমা হয়েছে। এগুলো যাচাই-বাছাই করে প্রায় তিন শতাধিক বেকার যুবক-যুবতীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

মেলায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা এরই মধ্যে দুইবারের আয়োজনে ছয়শতাধিক বেকার তরুণ তরুণীকে চাকরি প্রদান করতে পেরেছেন শুধুমাত্র এ মেলার মাধ্যমে। এরই ধারাবাহিকতায় তারা আরও বড় পরিসরে কাজ করতে চান।

নরসিংদী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী নাবিলা নুঝাত বলেন, বেকার তরুণ তরুণীদের ক্যারিয়ার গঠনে সহায়তা করার লক্ষ্যে চাকরিপ্রত্যাশী ও চাকরিদাতাদের এ মিলনমেলার আয়োজন করা হয়েছে। টিটিসির শিক্ষার্থীরা ছাড়াও সব চাকরিপ্রত্যাশী এতে অংশ নিতে পারছেন।

জাতীয়

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার ঘিরে উৎসবমুখর ঢাকার আসনগুলো। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন প্রার্থীরা, দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। মানুষের কাছে চাইছেন দোয়া ও যার যার প্রতীকে ভোট। শনিবার দেখা গেছে, দলীয় প্রার্থীর পাশাপাশি পিছিয়ে নেই স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও। প্রতিযোগিতামূলকভাবে একই নিয়মে প্রচার, মিছিল, উঠান বৈঠক, পথসভা ও গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন তারা। নিরলসভাবে এসব কর্মসূচি পালন করে আসছেন প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই।

বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে বাধা- নানক : মোহাম্মদপুর জাপান গার্ডেন সিটিতে এক নির্বাচনী সভায় আপনাদের জন্য আমি দশ বছর নিরলস ভাবে কাজ করেছি এখন আপনাদের দেওয়ার পালা,  নির্বাচন উৎসবে মাতোয়ারা যখন দেশের মানুষ তখন বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করতে চায়, দেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করতে চায় বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান বজলু।

শেরেবাংলা নগরে নির্বাচনের গণসংযোগকালে এ মন্তব্য করেন তিনি। ঢাকা-১৩ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর কবীর নানক শেরেবাংলা নগরের আগারগাঁও, তালতলা ও শ্যামলীতে প্রচারপত্র বিলি ও মানুষের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে নৌকা মার্কায় ভোট চান।

মিথ্যা আশ্বাসে ভোট দেবেন না- বাবলা : ঢাকা-৪ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করেন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী সানজিদা খানম ৫৯, ৫১ ও ৫২ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে কর্মিসভা ও গণসংযোগ করেন। এ সময় সানজিদা খানম বলেন, ভোট এলেই কিছু প্রার্থী আপনারা দেখেন। আবার ভোট চলে গেলে ৫ বছরেও তাদের দেখা মেলে না। তাদের মিথ্যা বুলিতে আপনারা পড়বেন না। স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক একান্ত সহকারী সচিব ড. মো. আওলাদ হোসেন ট্রাক প্রতীকে ভোট চেয়ে ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন।

দ্বন্দ্ব ভুলে কামরুল-শাহীন এক মঞ্চে : দীর্ঘদিনের ভেদাভেদ ভুলে ঢাকা-২ আসনের সংসদ-সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ও কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ এক মঞ্চে মিলিত হয়ে নিজেদের দ্বন্দ্ব মিটিয়ে ফেলেছেন। কেরানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে নৌকার সমর্থনে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় দুই নেতা এক মঞ্চে উপবিষ্ট হয়ে নৌকার পক্ষে কাজ করার ঘোঘণা দেন।

নৌকার প্রচারে অভিনেতা ডিপজল : ঢাকা-১৪ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাইনুল হোসেন খান নিখিলের পক্ষে গণসংযোগ ও প্রচারে নেমেছেন ঢাকাই সিনেমার খলনায়ক অভিনেতা ও ডিএনসিসির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মনোয়র হোসেন ডিপজল। গাবতলী পর্বতা সিনেমা হলের সামনে ডিপজল নেতাকর্মীদের নিয়ে গাবতলী, দারুসসালাম ও দিয়াবাড়ি এলাকা প্রদক্ষিণ করেন। মিরপুরের রূপনগরে ডিএনসিসির ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তোফাজ্জল হোসেন টেনুর উদ্যোগে কামাল আহমেদ মজুমদার স্কুল অ্যান্ড কলেজে জনসভায় যোগ দেন নিখিল। মিরপুর ১ নম্বর মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির আয়োজনে মতবিনিময় সভা করেন নৌকার এ প্রার্থী। এ আসনে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মো. আলমাস উদ্দিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীক নিয়ে সাবিনা আক্তার তুহিন, কেটলি প্রতীক নিয়ে মো. লুৎফর রহমান জোর প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।

বিজয়ের লক্ষ্যে মাঠে স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও : ঢাকা-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রয়াত চারবারের সংসদ-সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লার ছেলে মশিউর রহমান মোল্লা সজলের নির্বাচনি প্রচারণায় মুখরিত এলাকা। পরিবহণ মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের উদ্যোগে ধলপুর, যাত্রাবাড়ী ও সায়দাবাদে ট্রাক প্রতীকের পক্ষে সমাবেশ ও মিছিল করা হয়। ডিএসসিসির ৫০নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন সজল। আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ মুন্না নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে গণসংযোগ করেছেন ডিএসসিসির ৬২ ও ৬০নং ওয়ার্ডে। তিনি ওয়ার্ডটিতে ১০টি নির্বচনি ক্যাম্প উদ্বোধন করেন। ঈগল প্রতীকে সতন্ত্র প্রার্থী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. কামরুল হাসান রিপন ব্যাপক প্রচার চালিয়েছেন। ডিএসসিসির ৬৩নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন রিপন।

কামাল আহমেদ মজুমদারকে পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রীত্ব দেওয়ার দাবি : ঢাকা-১৫ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারকে আবারও নির্বাচিত করে পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রিত্ব দেওয়ার দাবি করেছেন নেতাকর্মীরা। মিরপুর ১৩ নম্বর কাফরুলে বৃহত্তর নোয়াখালী সমিতির মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কাফরুল থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্যানেল মেয়র জামাল মোস্তফা। জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে শামসুল হক ডিএনসিসির ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করেন।

লালবাগে সাইফুদ্দিনের গণসংযোগ : লালবাগে গণসংযোগ করেছেন ঢাকা-৭ আসনের জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী হাজী সাইফুদ্দিন মিলন। চকবাজারে গণসংযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ সোলাইমান সেলিম।

ইলিয়াস মোল্লা মতবিনিমিয় : ঢাকা-১৬ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ-সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা মিরপুর ১২ নম্বর ইস্টার্ন হাইজিং এলাকায় বাড়ি মালিক সমিতি ও স্থানীয়দের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা করেন। এ সময় তিনি পল্ল­বী ক্লাবের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। এ ছাড়া ২ নম্বর ওয়ার্ড কমিউনিটি সেন্টারে এমএ লতিফ স্কুলের অভিভাবকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন ইলিয়াস। ঈগল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও রূপনগর থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন রবিন মিরপুর ৭ নম্বরের বিভিন্ন এলাকায় প্রচার চালিয়েছেন। এনপিপি সমর্থিত প্রার্থী তারিকুল ইসলাম সুমন আম প্রতীক নিয়ে গণসংযোগে করেন মিরপুর ৬ নম্বরে।

রাস্তাঘাট উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি : ঢাকা-১৮ আসনে দক্ষিণখানের দেওয়ানবাড়ি এলাকায় গণসংযোগ করেন ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হোসেন। এ সময় তিনি বলেন, আমি নির্বাচিত হতে পারলে এ এলাকার রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসা-এতিমখানাগুলোর উন্নয়নে কাজ করব। তুরাগ থানার বাউনিয়া বটতলা এলাকায় কেটলি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী খসরু চৌধুরী বলেন, আমি স্মার্ট ঢাকা-১৮ আসন গড়তে চাই। তেরমুখ এলাকায় গণসংযোগ করেন হাতঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী দয়াল কুমার। উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টর ও তুরাগে লিফলেট বিতরণ করেন বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের ছড়ি প্রতীকের প্রার্থী ফাহমিদ হক সুকন্যা।

ফেরদৌসের প্রচারে মুখরিত এলাকা : ঢাকা-১০ আসন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদের নির্বাচনি প্রচারে মুখর এলাকা। ডিএসসিসির ১৬নং ওয়ার্ডের প্রতিটি এলাকা ও অলিগলিতে ছুটে গেছেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস।

বাহাউদ্দীন নাছিমের পক্ষে প্রচার অব্যাহত : ঢাকা-৮ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিমের পক্ষে প্রচার অব্যাহত রয়েছে। তার পক্ষে প্রচার, গণসংযোগ, লিফলেট বিতরণ, মিছিল ও পথসভা-সমাবেশ হয়েছে।

জাতীয়

ছোট বোনের নবজাতক সন্তানকে দেখতে রাজধানীর বাসাবো থেকে দেড় বছর বয়সি মেয়ে আয়শাকে নিয়ে কুমিল্লার মুরাদনগরে বাবার বাড়ি যান জান্নাত আরা। তীব্র শীতে বোনের নবজাতক সন্তানকে একটু উষ্ণতা দিতে ৩০ নভেম্বর সকালে চুলার আগুনে সেঁক দিচ্ছিলেন তিনি।

মায়ের পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল আয়শা। হঠাৎ ভারসাম্য হারিয়ে চুলার ওপর পড়ে যায় সে। আগুনে তার বাম হাতের কবজি পর্যন্ত পুড়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে মেয়েকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করলেও প্রয়োজনীয় চিকিৎসাব্যবস্থা ছিল না।

পরদিন তাকে আনা হয় ঢাকায়। এরপর থেকে সে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন।

জান্নাত আরা বলেন, প্রায় এক মাস হতে চলছে, কিন্তু মেয়ের পোড়া হাতের তেমন উন্নতি হচ্ছে না। অল্প বয়স। ও হাসপাতালে থাকতে চায় না। কবে হাত ভালো হবে জানি না।

প্রকৃতিতে শীত মৌসুম শুরুর পর বিভিন্নভাবে অগ্নিদুর্ঘটনা ও পোড়া রোগী বাড়ছে। যাদের ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। একটু উষ্ণতার জন্য শীত তাড়াতে আগুনের অসতর্কতামূলক ব্যবহারে এসব দুর্ঘটনা ঘটছে।

রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট এবং ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা জানান, অধিকাংশ পোড়া রোগীর শারীরিক সমস্যা জীবনভর বয়ে বেড়াতে হয়। চিকিৎসা ব্যবস্থাপনাও ভিন্ন। দগ্ধের ধরন ও মাত্রাভেদে টানা দুই বছরও চিকিৎসা নেওয়ার প্রয়োজন হয়। টিমওয়ার্কভিত্তিক চিকিৎসা লাগে। তবে এখনো উপজেলা ও জেলা হাসপাতালে পোড়া রোগীদের সঠিক চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠেনি। এতে দূর-দূরান্ত থেকে আসা দগ্ধ ব্যক্তিদের ৫০ ভাগই গোল্ডেন আওয়ারের মধ্যে (দুর্ঘটনার প্রথম ২৪ ঘণ্টা) হাসপাতালে ভর্তি হতে ব্যর্থ হয়। এতে শারীরিক ও আর্থিক ক্ষতি বেড়ে যায়। এ কারণে গরম পানি, গ্যাসের চুলা ব্যবহার ও আগুন পোহাতে সতর্কতার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

জানা গেছে, দেশে প্রতি বছর বিভিন্নভাবে প্রায় আট লাখ মানুষ অগ্নিদুর্ঘটনার শিকার হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের একাধিক চিকিৎসক জানান, অগ্নিদুর্ঘটনাগুলো নানা রকম হয়ে থাকে। প্রথমত দেশের মানুষ স্ক্যাল্ড বার্ন তথা গরম পানি, গরম তেল বা গরম কোনো তরল পদার্থ দ্বারা দগ্ধ হয় বেশি। দ্বিতীয়ত, ইলেকট্রিক বার্ন অর্থাৎ বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট। তৃতীয়ত, ফ্লেম বার্ন তথা সরাসরি আগুনের সংস্পর্শে দগ্ধ হওয়া। যেমন-মোমবাতি, কোরোসিন বাতি, চুলা বা পরিধেয় বস্ত্রে আগুন লাগা। চতুর্থত, কেমিক্যাল বার্ন তথা দাহ্য পদার্থ জাতীয় রাসায়নিকে পুড়ে যাওয়া।

ঢামেক বার্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. বিধান সরকার বলেন, এই ইউনিটে ৩০০ শয্যা রয়েছে। বর্তমানে গড়ে ৩০০ এর উপরে রোগী ভর্তি থাকছে। শীতের আগে এই হার ছিল ২০০ থেকে ২৫০ জন। এখন বার্ন ইউনিটের (বিভাগ) ওয়ার্ড ছাড়াও বারান্দার বিছানায় রোগী আছে। প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ৬০ জন রোগী আসছে। এখানে যারা আসে তাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. তরিকুল ইসলাম বলেন, বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে প্রতিদিন ৫০ জনের বেশি এবং বহির্বিভাগে ২৫০ থেকে ৩০০ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। আন্তঃবিভাগে অন্তত ৫০০ রোগী ভর্তি থাকছে। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের প্রায় ৭০ শতাংশই শিশু ও নারী। যাদের বেশর ভাগই ঢাকার আশপাশের বাসিন্দা।

তিনি বলেন, আমাদের কাছে অনেক দগ্ধ রোগী আসছে যারা দরজা জানালা বন্ধ রেখেই গ্যাসের চুলা জ্বালাতে গিয়ে অগ্নিদুর্ঘটনার শিকার হন। অনেকে পানি ও খাবার গরম করতে গিয়ে শরীরে ফেলছে। বাসার গ্যাস সরবরাহ লাইনে লিকেজ বা সিলিন্ডার বিস্ফোরণেও দগ্ধ হয়ে আসছে। অনেকের গায়ের পোশাকে আগুন লেগেও দগ্ধ হচ্ছেন।

জানা যায়, শীত শুরুর পর অক্টোবরে বার্ন ইনস্টিটিউটের বহির্বিভাগে পাঁচ হাজার একজন এবং জরুরি বিভাগে ৯৮২ জন চিকিৎসা নিয়েছে। নভেম্বরে বহির্বিভাগে চার হাজার ৪৮১ জন এবং জরুরি বিভাগে ৮১০ জন চিকিৎসা নিয়েছে। গত বছরের এই সময়ে রোগীর চাপ আরও বেশি ছিল। এবার হরতাল-অবরোধের কারণে হাসপাতালে পৌঁছানো রোগীর সংখ্যা কম বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

বার্ন ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক ও জাতীয় কো-অর্ডিনেটর ডা. সামন্তলাল সেন বলেন, অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। সারা জীবন এ কথা বলতে বলতে ক্লান্ত। তিনি বলেন, আগুন, বিদ্যুৎ, গ্যাসের ব্যবহারে সর্বোচ্চ সচেতনতা অবলম্বন উচিত। গরম পানি পাতিল বা ডেকচির পরিবর্তে বালতিতে বহন করা উচিত। সচেতনতা বাড়াতে সরকার, গণমাধ্যম, চিকিৎসক এবং গ্যাস ও বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোকে কাজ করতে হবে।

জাতীয়

অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে ভোটকেন্দ্র কারচুপি, অনিয়ম ও পেশিশক্তিমুক্ত রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।

শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে যশোর শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক অডিটোরিয়ামে খুলনা বিভাগের ১০ জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।

তিনি বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে বলেছি যেকোনো মূল্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন যাতে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ হয়। কোনো রকমের বিশৃঙ্খলা যাতে না হয়, পরিবেশ যাতে অনুকূল থাকে, ভোটার সাধারণ উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বাধীনভাবে যেন ভোট কেন্দ্রে এসে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে। সব কর্মকর্তাকে এ বার্তা কঠোরভাবে দেওয়া হয়েছে।

সিইসি বলেন, আমরা কেউ ভোট কেন্দ্রের ভেতর থাকবো না। ভেতরে থাকবে প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসাররা। ভোট কেন্দ্রের ভেতরে যাতে কোনো অনিময়, কারচুপি, দখলদারত্ব, কোনো রকমের পেশিশক্তির প্রয়োগ না হয়, সে বিষয়ে তাদের ব্যাপকভাবে প্রশিক্ষণ ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

ঝিনাইদহের চারটি আসন ছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকায় নৌকা প্রতীকের কর্মীদের হাতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন এ বিষয়ে ইসির পদক্ষেপ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সিইসি বলেন, আজ সকালেই ঝিনাইদহে চারজন আহত হওয়ার মেসেজ নিজেই পেয়েছি, আমরা বিষয়টি আলোচনা করেছি। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। পাশাপাশি এ ঘটনার পেছনে কে দায়ী তা নিরুপণ করে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে৷ আমরা দায়ী নিরুপণ করতে পারলে অবশ্যই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব এবং এ ধরণের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে তার জন্য মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের কঠোর হতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

উপস্থিত ছিলেন, নির্বাচন কমিশনের সচিব জাহাঙ্গীর আলম, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার হেলাল মাহমুদ শরীফ, খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মঈনুল হক, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনা মোজাম্মেল হক, যশোরের জেলা প্রশাসক আবরাউল হাছান মজুমদার, যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার।

বৈঠকে খুলনা বিভাগের ১০ জেলা ও ঢাকা বিভাগের ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ এবং রাজবাড়ী জেলার জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা, পুলিশ সুপার, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা, বিজিবি ও আনসার বাহিনীর ২৯০ জন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয়

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, অগ্নিসন্ত্রাস, নৈরাজ্য সৃষ্ঠিতে নেতৃত্ব দিয়ে আজকে তারেক রহমান বিএনপিকে একটি আন্ডারগ্রাউন্ড দলে, সন্ত্রাসী সংগঠনে রূপান্তরিত করেছে। আর সেটার সামাজিক ও রাজনৈতিক যন্ত্রণা ভোগ করছে বিএনপির নেতা-কর্মীরা।

মন্ত্রী আজ দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত ‘বিএনপি-জামায়াতের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অগ্নিসন্ত্রাসের প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে মানববন্ধন’ শীর্ষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত তাদের জনসমর্থন হারিয়ে এখন পলাতক দল। তারা গুপ্ত স্থান থেকে আন্দোলনের ডাক দেয় আর গাড়ি-ঘোড়াতে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে। প্রকৃত অর্থেই বিএনপি-জামায়াত এখন আন্ডারগ্রাউন্ড সংগঠনে রূপান্তরিত হয়েছে। পুলিশ কিম্বা আওয়ামী লীগ বিএনপির কার্যালয়ে তালা লাগায়নি, সরকার তালা লাগায় নাই, তারা নিজেরাই তালা লাগিয়েছে। তাদের অফিসে তালা খোলার জন্য যারা একটা মানুষ খুঁজে পায় না, তারা আবার সরকার পতন ঘটাবে!’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘অনেক বিএনপি নেতার সাথে বিমানবন্দরে, ট্রেন স্টেশনে, বিয়ে-শাদীতে আমাদের দেখা হয়, তখন তাদেরকে জিজ্ঞাস করি, ভাই আপনারা কি করছেন? তারা বলে- সব উনার ইচ্ছা, লন্ডনে যে আছেন উনার ইচ্ছা। অর্থাৎ বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্য এক তারেক রহমানই যথেষ্ট আর কারো দরকার নাই। পৃথিবীর কোথাও গত দুই-তিন দশকে রাজনীতির দাবি-দাওয়া আদায়ের জন্য গুপ্ত স্থান থেকে চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়নি, যেটি বিএনপি আজকে করছে। এই বিএনপির জন্য আবার কেউ কেউ মায়াকান্না করে।’

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী শ্লোগান দেয় ‘‘আল্লাহ’র আইন চাই, সৎ লোকের শাসন চাই”। আর আজকে ফিলিস্তিনে হাজার হাজার নারী-শিশুসহ মুসলমানদের যে হত্যা করা হচ্ছে তার কোনো প্রতিবাদ তারা করে নাই। বিএনপিও করে নাই। বিএনপি-জামায়াত আজ শুধু ইসলামের শত্রু নয়, মানবতার শত্রুতে রূপান্তরিত হয়েছে। কারণ ফিলিস্তিনে শুধু মুসলমানরাই নয়, বহু খ্রিস্টানও ইসরাইলি বাহিনীর হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে, ৭টি গির্জা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। আর এটির বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামী আর বিএনপি কোনো কথা বলে না। যারা নির্যাতন-হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করছে, বিএনপি-জামায়াত তাদের পক্ষ অবলম্বন করেছে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রও নরম সুরে বলেছে এইভাবে সাধারণ মানুষকে হত্যা করা ঠিক হচ্ছে না। কিন্তু বিএনপি এই কথা বলতেও ব্যর্থ হয়েছে। এরা আবার রাজনীতি করে।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি পীর সাহেবদের সম্মান করি, আমার বাপ-দাদাও সম্মান করতেন, আমিও করি, কারণ এই দেশে ইসলাম কায়েম হয়েছে পীর-আউলিয়াদের মাধ্যমে। দু’-একজন পীর সাহেব সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলে, কিন্তু ফিলিস্তিনে যে আজকে মানুষ হত্যা হচ্ছে সেটির বিরুদ্ধে মিছিল পর্যন্ত করতে পারে নাই। তারা একটি ঘুষির প্রতিবাদে সারাদেশে মিছিল করে, আর ঐদিকে যে হাজার হাজার মানুষকে, নারী ও শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে সেটির জন্য একটা মিছিল বের করতে পারে না। আমি প্রার্থনা করি এই পীর সাহেবদের যেন আল্লাহ হেদায়েত করেন।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত ভেবেছিলো নির্বাচন আমরা করতে পারবো কি পারবো না। এখন বুঝতে পেরেছে যে, উৎসবমুখর পরিবেশে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণে নির্বাচন হয়ে যাচ্ছে। যারা বাতাস দিচ্ছিল তারা বাতাসটা সরিয়ে নিচ্ছে। যারা তলে তলে তাল দিচ্ছিল তারাও বুঝতে পেরেছে এই অপদার্থ বিএনপিকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না। আমরা যদি আবার সরকার গঠন করতে পারি এই আগুন সন্ত্রাসীদের সমূলে উৎপাটন করা হবে। সন্ত্রাসীদের সাথে, আন্ডারগ্রাউন্ড দলের সাথে আলোচনা হতে পারে না, আলোচনা হয় যারা নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি করে তাদের সাথে। আমি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের রাজপথে থাকতে এবং কোনো আগুন সন্ত্রাসীকে বা সন্ত্রাসের পরিকল্পনাকারীকে দেখলে পুলিশে সোপর্দ করতে আহ্বান জানাবো।’

সবুজবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চিত্তরঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে ও স্বাধীনতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন টয়েলের সঞ্চালনায় সমাবেশে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য এড. বলরাম পোদ্দার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের সভাপতি গনি মিয়া বাবুল, আওয়ামী লীগ নেতা এম.এ করিম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি মানিক লাল ঘোষ, স্বাধীনতা পরিষদের সভাপতি জিন্নাত আলী খান, সহসভাপতি ফায়েকুজ্জামান ফরিদ প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

জাতীয়

এবার পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে অসহায় হয়ে পড়েছে সেই শক্তিশালী আড়তদার সিন্ডিকেট। তাদের কারসাজিতে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ২০০-২৪০ টাকা ঠেকানো হয়, যা ১১০-১৩০ টাকা ছিল। এবারই প্রথম নীরব প্রতিবাদ হিসাবে বাড়তি দাম দিয়ে পেঁয়াজ কেনা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন ভোক্তা। ফলে পণ্যটি না কেনায় আড়ত থেকে সরবরাহ কমে যায়। অনেক গুদামেই নষ্ট হচ্ছে পেঁয়াজ। বস্তাবন্দি থাকায় পচন ধরেছে পেঁয়াজে।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের পর থেকেই বাজারে নৈরাজ্য চলছে। তবে এবারই প্রথম ভোক্তারা এক হয়েছেন। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পেঁয়াজ কেনা থেকে বিরত থাকতে প্রচারণা চালানো হয়েছে। ফলে ক্রেতারা বাড়তি দরে পেঁয়াজ কেনা থেকে বিরত ছিলেন। অতিপ্রয়োজন না হলে কেউ পেঁয়াজ কেনেননি। পাশাপাশি দেশি নতুন পেঁয়াজ পুরোদমে বাজারে আসতে শুরু করেছে। ফলে দিশেহারা হয়ে সেই শক্তিশালী সিন্ডিকেট পেঁয়াজের দাম কমাতে শুরু করেছে।

মঙ্গলবার রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৮০-২০০ টাকা। একদিন আগে ২২০-২৪০ টাকা ছিল। তবে বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ১৩০ টাকা। পাশাপাশি আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ বাজার খুব কম। তবে যেসব দোকানে পাওয়া যাচ্ছে, সেখানে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৮০ টাকা, যা একদিন আগে ২০০ টাকা ছিল। আর বৃহস্পতিবার বিক্রি হয়েছিল ১১০ টাকা। এছাড়া রাজধানীর খুচরা বাজারে পাতাসহ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি। মুড়ি কাটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৩০-১৪০ টাকা।

রাজধানীর কাওরান বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা মো. হাবিবুল্লাহ যুগান্তরকে বলেন, ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করায় আমদানিকারকদের উসকানিতে আড়তদাররা এবার পেঁয়াজের দাম বাড়াতে শুরু করে। ফলে দেশের সব স্থানে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। এছাড়া খুচরা ব্যবসায়ীদেরও কিছুটা কারসাজি ছিল। তবে এবার আড়তদাররা আড়ত থেকে পেঁয়াজ সরিয়ে ফেলে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে সুবিধা করতে পারেননি। কারণ, বাজারে নতুন পেঁয়াজ উঠে গেছে। ক্রেতারা বাড়তি দামে পেঁয়াজ কেনা থেকে বিরত ছিলেন। যার দরকার হয়েছে, মুড়ি কাটা ও পাতাসহ পেঁয়াজ কিনছেন। সঙ্গে যে পেঁয়াজ আড়ত থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছিল, বাজারে তদারকির কারণে সেগুলো আসতে পারছে না। ফলে গুদামে নষ্ট হচ্ছে পেঁয়াজ। অনেক ক্ষেত্রে বস্তায় পেঁয়াজে পচন ধরেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজধানীর শ্যামবাজারের পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী যুগান্তরকে বলেন, বৃহস্পতিবারও শ্যামবাজারে আড়তে পেঁয়াজ ছিল। সেদিন আড়ত থেকে হঠাৎ দাম বাড়ানো হয়। অনেকেই শ্যামবাজারের আড়ত থেকে অন্যান্য গুদামে পেঁয়াজ সরিয়ে নেন, যা ইতোমধ্যে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানে প্রকাশ পায়। শ্যামবাজারে অভিযান পরিচালনা চলমান থাকায় যারা পেঁয়াজ সরিয়ে নিয়েছেন, তারা এখানকার আড়তে পেঁয়াজ আনতে পারছেন না। এছাড়া দেশি নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসায় আগের পুরোনো পেঁয়াজ ক্রেতার প্রয়োজন হচ্ছে না। ফলে সব মিলে লুকিয়ে রাখা পেঁয়াজ লুকিয়েই নষ্ট হচ্ছে।

খাতুনগঞ্জের সাধারণ পাইকারি ব্যবসায়ী হাসান বলেন, খাতুনগঞ্জে তিন থেকে চার দিন পেঁয়াজের দাম বাড়ালেও এখন কমানোর পাঁয়তারা চলছে। কারণ, বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ক্রেতা কমে গেছে। খুচরা ব্যবসায়ীদের আনাগোনা একেবারেই নেই। ফলে আড়তদাররা বিপাকে পড়েছেন। তিনি বলেন, এখানকার অনেক আড়তদার বাড়তি মুনাফা করার জন্য আড়ত থেকে পেঁয়াজ অন্য গুদামে সরিয়েছিলেন। বাজারে জেলা প্রশাসন ও ভোক্তা অধিদপ্তরের তদারকি চলমান থাকায় সেসব পেঁয়াজ আড়তে আনতে পারছেন না। ফলে বিক্রি না করতে পারায় পচে নষ্ট হচ্ছে।

এ বিষয়ে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ ব্যবসায়ী সমিতি সূত্র জানায়, ভারত পূর্বঘোষণা ছাড়াই বৃহস্পতিবার রাতে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেয়। এতে দেশে যে পেঁয়াজ পাইকারি কিংবা খুচরা ব্যবসায়ীদের হাতে ছিল, তা ভোক্তারা কিনে নিয়ে গেছেন। এখন অনেকের ঘরে বেশি করে পেঁয়াজ রয়েছে। অনেকের এক মাসও আর পেঁয়াজ লাগবে না। দাম বাড়ায় নতুন করে অনেকেই পেঁয়াজ কেনেনি। ফলে দুদিন পেঁয়াজের দাম বাড়তি থাকলেও এখন খাতুনগঞ্জে ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। দামেও ধস নেমেছে। অনেক আড়তে চায়না পেঁয়াজে পচন ধরেছে। পাশাপাশি এখন এ মৌসুমের দেশি পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করেছে। কয়েকদিনের মধ্যে পুরোদমে দেশি পেঁয়াজ বাজারে এলে দাম স্বাভাবিক হয়ে যাবে। এখানে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়, ব্যবসায়ীরা পণ্য কিনে এনে বিক্রি করেন। কে বিক্রি করবে, কে করবে না, সেখানে কারও চাপ সৃষ্টির কথা নয়। ব্যবসায়ীরাই পণ্যের সাপ্লাই চেইন ঠিক রেখেছেন। কারণ, বেসরকারি আমদানিকারকরাই ঝুঁকি নিয়ে পণ্য আমদানি করেন। ব্যবসায়ীরা তো অপরাধী নন। তাহলে ভোক্তা অধিকার কিংবা প্রশাসনের এখানে যে অভিযানের কথা বলা হচ্ছে, তা মানহানিকর।

কনজুমারস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন মালেক বলেন, যারা পেঁয়াজ অনৈতিকভাবে সরিয়েছে, তাদেরও সেসব পেঁয়াজ খুঁজে বের করা দরকার। এ পেঁয়াজের সব বিক্রি হয়নি। আড়তদার মজুতদারদের কাছে পেঁয়াজ আছে।

জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, এবার পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর পেছনে রাজধানীর শ্যামবাজার ও চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের আড়তদাররা জড়িত। আমরা তাদের কিছু চিহ্নিত করেছি। পাশাপাশি বাকিদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। সবাইকেই আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। তিনি বলেন, এফবিসিসিআই একটি বড় ব্যবসায়ী সংগঠন। এবার ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের পর যেসব আড়তদার মূল্য কারসাজি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে এফবিসিসিআই-এর পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আমি আশা করছি।

প্রসঙ্গত, দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২৭-২৮ লাখ টন। এর মধ্যে স্থানীয় উৎপাদন ২৫ লাখ টনের বেশি। বাকি জোগান আমদানির মাধ্যমে। সেক্ষেত্রে ভারত থেকে আসে সিংহভাগ পেঁয়াজ। চলতি বছর নভেম্বর পর্যন্ত দেশে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে ৫ লাখ ৮৫ হাজার টন। ফলে চাহিদার বেশি পেঁয়াজ থাকার পরও দেশে মূল্য নিয়ে কারসাজি করা হয়।

জাতীয়

পেঁয়াজের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে রাজধানীসহ সারা দেশে অভিযান চালিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এ সময় পেঁয়াজের মূল্য বেশি রাখাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১১৫ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো সংস্থাটির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা মহানগরসহ দেশের সব বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে পেঁয়াজের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃক বাজার অভিযান পরিচালনা করা হয়। ঢাকা মহানগরীতে অধিদপ্তরের তিনটি টিম বাজারে অভিযান পরিচালনা করে। এছাড়াও অন্যান্য বিভাগীয় শহরসহ দেশের সর্বমোট ৫৪টি জেলায় একযোগে এ অভিযান পরিচালিত হয়।

অভিযানে সারা দেশে ৫৭টি টিম কর্তৃক ১১৫টি প্রতিষ্ঠানকে সর্বমোট পাঁচ লাখ ৩৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

ভোক্তার অধিকার রক্ষায় অধিদপ্তরের এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।

জাতীয়

দেশের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীদের ব্যবহারিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যুগোপযোগী ও অভিজ্ঞ মানবসম্পদ সৃষ্টি, পাঠ্যপুস্তকের জ্ঞানের সঙ্গে কর্মক্ষেত্রের অভিজ্ঞতার সমন্বয় ঘটানোর সুযোগ রেখে ইন্টার্নশিপ নীতিমালা, ২০২৩ এর গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার।

ইন্টার্নদের নির্দিষ্ট হারে ভাতা ও ছুটির সুযোগ রেখে সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

নীতিমালা অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে তাতে উল্লেখ করা হয়েছে।

সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত কিংবা অন্য কোনো প্রকার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ইন্টার্নশিপ প্রদান করতে পারবে।

ইন্টার্নশিপ প্রদানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

ইন্টার্নশিপ প্রদানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হিসেবে নীতিমালায় বলা হয়েছে, ব্যবহারিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যুগোপযোগী ও অভিজ্ঞ মানবসম্পদ সৃষ্টি করা; পাঠ্যপুস্তকের জ্ঞানের সঙ্গে কর্মক্ষেত্রের অভিজ্ঞতার সমন্বয় ঘটানো এবং সরকারি দপ্তরের কাজের সঙ্গে পরিচিত হয়ে ভবিষ্যতে প্রজাতন্ত্রের সেবায় নিয়োজিত করতে উৎসাহ প্রদান করা।

নীতিমালার কার্যপরিধি

কার্যপরিধি হিসেবে বলা হয়েছে, এই নীতিমালা বাংলাদেশের সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য হবে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী বাংলাদেশের নাগরিক এই ইন্টার্নশিপের আওতায় থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় বা সমমানের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে পরিচালিত ইন্টার্নশিপ এই নীতিমালার আওতাভুক্ত হবে না।

সামরিক বা বেসামরিক বা আধাসামরিক সকল প্রকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, নিরাপত্তা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, সরকার কর্তৃক ঘোষিত কী পয়েন্ট ইন্সটলেশন (কেপিআই) স্থাপনা বা প্রতিষ্ঠানসমূহ এবং রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কোনো কর্মে ইন্টার্নশিপ প্রদান করা যাবে না।

আবেদনকারীর যোগ্যতা

নীতিমালা অনুসারে, ইন্টার্নশিপ প্রার্থীর আবেদন করার জন্য আগ্রহীকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে; প্রার্থীকে কমপক্ষে স্নাতক/সমমানের ডিগ্রিধারী হতে হবে (অবতীর্ণ প্রার্থীসহ); স্নাতক/স্নাতকোত্তর/সমমানের ডিগ্রি অর্জনের দুই বছরের মধ্যে আবেদন করতে হবে এবং একজন প্রার্থী একবার সরকারি অফিসে ইন্টার্নশিপ করতে পারবেন।

ইন্টার্ন বাছাইয়ের ভিত্তি ও প্রক্রিয়া

নীতিমালায় বলা হয়েছ, ইন্টার্ন বাছাই হবে মেধার ভিত্তিতে; বিষয় সংশ্লিষ্ট জ্ঞানের ভিত্তিতে (সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্ধারিত); এবং আবেদনকারীর ইন্টার্নশিপের ক্ষেত্র বাছাইয়ের প্রেক্ষাপট এবং এক্ষেত্রে তার সম্ভাব্য অবদানের বর্ণনার ভিত্তিতে।

সুষম প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ইন্টার্ন বাছাই করতে হবে। এজন্য নীতিমালার আলোকে প্রতিটি মন্ত্রণালয় তার ও তার অধীন দপ্তর, সংস্থা, প্রতিষ্ঠানের অধিক্ষেত্র বিবেচনায় প্রত্যেক অর্থ বছরের জন্য ইন্টার্নশিপের সুযোগের সংখ্যা নির্ধারণ করবে। দপ্তর, সংস্থা, বিদ্যমান সুযোগের বিপরীতে ইন্টার্নশিপ প্রদানের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বহুল প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান ইন্টার্ন বাছাই করে নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয় বরাবর মনোনয়নের অনুমতি গ্রহণ করবে।

বিজ্ঞপ্তিতে অন্যান্য তথ্যের সঙ্গে ইন্টার্নশিপের স্থান, সংখ্যা, মেয়াদকাল, বিশেষ দক্ষতা, ভাতা (যদি থাকে), বাছাই প্রক্রিয়া প্রকৃতি বিষয় উল্লেখ করতে হবে।

ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ ৩-৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি বাছাই কমিটি গঠন করবে। বাছাই কমিটি মন্ত্রণালয় বা বিভাগের প্রয়োজনের বিষয় বিবেচনা করে বাছাইয়ের প্রক্রিয়া নির্ধারণ করে ইন্টার্ন বাছাই করবে। নারী, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন জনগোষ্ঠীর আবেদনকারীদের এই প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণে উৎসাহিত করতে হবে।

ইন্টার্নশিপের মেয়াদকাল

নীতিমালায় বলা হয়েছে, ইন্টার্নশিপের মেয়াদকাল সর্বনিম্ন তিন থেকে ছয় মাস পর্যন্ত হতে পারবে, যা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবে।

ইন্টার্নশিপের ব্যয় নির্বাহ

ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ অর্থ বিভাগের পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে আলাদা অর্থনৈতিক কোড সৃজন করবে। ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ অর্থ বিভাগের অনুমোদন বা বাজেট বরাদ্দ থাকা সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট অর্থনৈতিক কোড থেকে ইন্টার্নশিপের যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ করবে।

ইন্টার্নশিপের ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা

নীতিমালা অনুসারে, ইন্টার্ন প্রতিমাসে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পরিমাণ ভাতা প্রাপ্য হবেন। ভাতা ছাড়া ইন্টার্ন অন্য কোনো ভাতা বা সুবিধা প্রাপ্য হবেন না। ভাতা প্রাপ্তির প্রাক্কালে প্রতিমাসে ইন্টার্নকে তার সন্তোষজনক কর্মকালের বিষয়ে সুপারভাইজারের নিকট থেকে প্রত্যয়ন সংগ্রহ করতে হবে।

ইন্টার্নশিপ চলাকালীন ইন্টার্ন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে কর্মে নিযুক্ত রয়েছে মর্মে কোনোরূপ প্রত্যয়ন প্রাপ্য হবেন না; সফলভাবে ইন্টার্নশিপ সম্পন্ন করার পর ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ প্রাপ্য হবেন।

ইন্টার্নশিপ সম্পন্ন করা কোনোভাবেই কোনো প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী, অস্থায়ী বা অন্য কোনো প্রকার চাকরির ক্ষেত্রে প্রাধিকার বা অগ্রাধিকার হিসাবে গণ্য হবে না।

ইন্টার্নশিপে যোগদানের শর্ত

ইন্টার্নশিপে যোগদানের সময় অন্যান্য কাগজপত্রের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সর্বশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে তার মৌলিক যোগ্যতা ও অন্যান্য গুণাবলির বর্ণনা সংবলিত প্রত্যয়ন; স্নাতক/স্নাতকোত্তর/সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণের সনদ, অথবা উক্তরূপ পরীক্ষাসমূহে অবতীর্ণ হওয়ার প্রত্যয়ন (যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক) পত্রের কপি; জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি এবং অন্য কোনো কর্মে নিয়োজিত থাকলে প্রয়োজনীয় অনাপত্তি সনদ দিতে হবে।

কর্মে যোগদানের পূর্বে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন মনে করলে ইন্টার্নের পুলিশ ভেরিফিকেশন করাতে পারবে।

ইন্টার্নশিপের অব্যাহতি বা অবসান

কাজের মান সন্তোষজনক না হলে; আচরণ সরকারি সেবা প্রদানের প্রচলিত রীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হলে; রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে; দেশে প্রচলিত আইনের দ্বারা নির্ধারিত কোনো অপরাধমূলক কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকলে; পূর্বানুমতি ছাড়া কাজে অনুপস্থিত থাকলে; কর্তৃপক্ষের কোনো আইনসংগত দাপ্তরিক আদেশ অমান্য করলে একজন ইন্টার্নের ইন্টার্নশিপ বাতিল বা অবসান হতে পারে।

একজন ইন্টার্ন নিজ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে সুপারভাইজারের মাধ্যমে ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ বরাবর ইন্টার্নশিপ থেকে অব্যাহতির জন্য আবেদন করতে পারবে।

ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ ইন্টার্নশিপ চলাকালীন যে-কোনো সময় ওপরে বর্ণিত কারণে অথবা অন্য যে-কোনো যথাযথ কারণ উল্লেখপূর্বক অথবা কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই ইন্টার্নশিপ বাতিলের অধিকার সংরক্ষণ করবে।

ইন্টার্নের দায়িত্ব, কার্যাবলি ও দায়বদ্ধতা

নীতিমালা অনুযায়ী, ইন্টার্নের দায়িত্ব, কার্যাবলি ও দায়বদ্ধতা হবে- সুপারভাইজার কর্তৃক অর্পিত সব দাপ্তরিক দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা; ইন্টার্ন প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান-সংশ্লিষ্ট সব আইন, বিধি, প্রবিধি, নীতিমালা ইত্যাদি মেনে চলা; সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের তথ্যের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তার স্বার্থে এবং প্রয়োজনীয় অফিস সরঞ্জামাদি সুরক্ষার লক্ষ্যে একটি নির্দিষ্ট ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করতে হবে।

সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব ও কার্যাবলি

ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় অনুমোদন প্রদান, সামগ্রিক ইন্টার্নশিপ কার্যক্রম তদারকি ও মূল্যায়ন করবে।

ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব ও কার্যাবলি

নীতিমালায় ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব ও কার্যাবলি হিসেবে বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষ ইন্টার্নশিপের চাহিদা বা যৌক্তিকতা নিরূপণ; ইন্টার্নের কর্মের সুনির্দিষ্ট শর্তাবলি নির্ধারণ; ইন্টার্নশিপের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ, বাজেট নির্ধারণ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন গ্রহণ ও বাছাই কমিটি গঠন; বাছাই কমিটির সুপারিশক্রমে ইন্টার্ন মনোনয়ন করবে।

সরকারি বেতনস্কেলের নবম গ্রেডের নিচে নয় এবং সরকারি কর্মে ন্যূনতম পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা আছে এমন একজন কর্মকর্তাকে সুপারভাইজার নিয়োগ করবে কর্তৃপক্ষ।

দাপ্তরিক ও প্রাসঙ্গিক পেশাভিত্তিক কাজে প্রয়োজনীয় সুযোগ সৃষ্টি করে ইন্টার্নদের নিয়োজিত করা, যাতে তারা সরকারি পেশাগত জ্ঞান, কাজের ধরন ও কর্মদক্ষতা অর্জন করতে পারে। ইন্টার্নদের কাজের প্রয়োজনীয় সাপোর্ট নির্ধারণ করা; যেমন: কাজের জায়গা, প্রয়োজনীয় আসবাব, যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম, বিভিন্ন উপকরণ ইত্যাদি।

ইন্টার্নদের যথোপযুক্ত কর্ম পরিবেশ ও নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করা। এসংক্রান্ত অভিযোগ নিষ্পত্তিকরণের লক্ষ্যে নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয়সমূহ ন্যূনতম যুগ্মসচিবের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট ‘অভিযোগ নিষ্পত্তিকরণ কমিটি’ গঠন করবে।

সফলভাবে ইন্টার্নশিপ সম্পন্ন করার পর ইন্টার্নকে সনদ প্রদান; ইন্টার্নশিপ শেষে ইন্টার্ন কর্তৃপক্ষ সনদ প্রদানে অস্বীকৃতি জানালে অথবা এই বিষয়ে অন্য কোনোরূপ জটিলতার উদ্ভব হলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় আপিল কর্তৃপক্ষ হিসাবে বিবেচিত হবে।

বিশেষ পরিস্থিতিতে (অসুস্থতা, ব্যক্তিগত সমস্যা ইত্যাদি) ইন্টার্নশিপ শেষ করতে না পারলে প্রমাণক সাপেক্ষে ইন্টার্নশিপ কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ দুই মাস পর্যন্ত ছুটি মঞ্জুর করবে। দুই মাসের অতিরিক্ত সময় অতিবাহিত হলে ইন্টার্নের ইন্টার্নশিপে যোগদানের সুযোগ থাকবে না। ছুটিকালীন ভাতা দাবি করা যাবে না।

সুপারভাইজারের দায়িত্ব ও কার্যাবলি

নীতিমালা অনুযায়ী, সুপারভাইজার দাপ্তরিক কার্যক্রমের সঙ্গে ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামকে সমন্বয় করে ইন্টার্নকে বিভিন্ন দায়িত্ব/কার্যাবলি দেবেন। পাশাপাশি ইন্টার্নদের সার্বিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ এবং কাজের মূল্যায়ন করা; আচরণ ও কাজের মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সময়ে সময়ে ইন্টার্নের সঙ্গে আলোচনা ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করবেন।

বেসরকারি শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসমূহের ক্ষেত্রে নীতিমালার প্রযোজ্যতা

এতে বলা হয়েছে, বেসরকারি শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসমূহ স্ব-স্ব মন্ত্রণালয় বা মন্ত্রণালয়সমূহের তত্ত্বাবধানে যথোপযুক্ত ইন্টার্নশিপ নীতিমালা প্রণয়ন করবে। সরকার এই নীতিমালার মাধ্যমে বেসরকারি শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানেও ইন্টার্নশিপ কার্যক্রমকে উৎসাহিত করবে এবং এ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবে।

বেসরকারি শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদের নিজস্ব নীতিমালা অনুযায়ী ইন্টার্নদের ভাতা, ইন্টার্নশিপের মেয়াদ ও অন্যান্য বিষয়াদি নির্ধারণ করতে পারবে।

এফবিসিসিআই ও সংশ্লিষ্ট শীর্ষ ব্যবসায়িক সংগঠন ইন্টার্নশিপের বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত পরিবীক্ষণ ও নির্দেশনা দেবে।

নীতিমালার ব্যবস্থাপনা

নীতিমালায় বলা হয়েছে, সব মন্ত্রণালয় এই নীতিমালার বাস্তবায়নে সার্বিক সহযোগিতা করবে। ‘ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ’ তার কার্যালয়ের ইন্টার্ন মনোনয়ন ও ব্যবস্থাপনার বিষয়ে একটি বার্ষিক প্রতিবেদন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে।

ইন্টার্নশিপ বাস্তবায়নের সুবিধার্থে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অধীনে একটি ব্যবস্থাপনা-পদ্ধতি সৃজন করা হবে।