জাতীয়

নরসিংদী: দীর্ঘ ২৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন দুর্বৃত্তের গুলিতে আহত নরসিংদীর শিবপুরের উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ খাঁন। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার (২১ মার্চ) আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ইটাখোলা চত্বরে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়।

ওই সভায় হারুনুর রশিদ খাঁন বলেন, ‘শিবপুরের সব অপকর্মের হোতা হলো আসাদুজ্জামান আসাদ ও জুনায়েদ হক ভূইয়া জুনো। সব পেশাদার খুনি, সন্ত্রাসী তারা লালন-পালন করেন। তারা সব শিল্প প্রতিষ্ঠানের জুটের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন। ইয়াবা ব্যবসা, জমি দখলসহ সব অপরাধ তারা নিয়ন্ত্রণ করেন। আমার বিশ্বাস আমাকে হত্যার পরিকল্পনাকারীর ভূমিকায় তারা রয়েছেন। তাদের বিচার যেন আইনগতভাবে হয় আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে বিনীত অনুরোধ করছি। ’

জুনায়েদ হক ভূইয়া জুনো স্থানীয় সংসদ সদস্য জহিরুল হক ভূইয়া মোহনের ছোট ভাই এবং জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি। আসাদুজ্জামান আসাদ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং স্থানীয় রাজনীতিতে এমপি মোহনের ঘনিষ্ট হিসেবে পরিচিত।

হারুনুর রশিদ খাঁন বলেন, অত্যন্ত দুঃখের বিষয় আমার এ ঘটনার পর পুটিয়া বাজারের ইজারা কেন্দ্র করে নাকি আমার সঙ্গে দ্বন্দ্ব। বাজারের ইজারা নিয়ে আমার সঙ্গে কারো দ্বন্দ্ব নেই। এটা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার।

তিনি বলেন, শিবপুর থানার পাশে আমার বাসা। সেখানে আমাকে গুলি করে হত্যা করার দুঃসাহস যারা দেখিয়েছে তারা কার বলে বলিয়ান হয়ে এ কাজ করেছে, তারা কার সঙ্গে চলাফেরা করেছে সবাই জানেন। তারা আমার উপজেলা নির্বাচন করেনি, মোহন সাহেবের এমপি নির্বাচন করেছে। তারা আওয়ামী লীগের কোনো সদস্য না। তারপরও পুটিয়া ইউনিয়নে সর্বোচ্চ ক্ষমতার প্রদর্শন করেছেন তারা। কি কারণে কার মাধ্যমে করেছে তা সবাই জানেন।

হারুনুর রশিদ খাঁন স্থানীয় সংসদ সদস্য জহিরুল হক ভূইয়া মোহনের উদ্দেশে বলেন, এ হত্যা চেষ্টা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আমার পাশে দাঁড়ানো উচিত ছিল। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস আমাকে হত্যার চেষ্টায় যারা জড়িত তাদের নিয়ে সংসদ সদস্য ঘুরাফেরা করেন।

একই সঙ্গে ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য এমপি মোহনের ব্যক্তিগত কার্যালয় পুড়িয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। একই সঙ্গে এ ঘটনায় সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম মৃধাকে গ্রেফতারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানান তিনি।

সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম মোল্লা বলেন, মোহনের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার নেপথ্যে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছিলেন হারুনুর রশিদ খাঁন। পুরস্কার হিসেবে তিনি পেলেন গুলি। আর পেলেন উপজেলা নির্বাচনে বিরোধিতা।

তিনি বলেন, হারুনুর রশিদ খাঁনকে মারার জন্য যারা গুলি করেছে তাদের এমপি মোহনের ভাই জুনু দীর্ঘদিন ধরে লালন পালন করেছে। রাজনীতিতে প্রতিযোগিতা থাকবে, প্রতিহিংসা কেন থাকবে?

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম ভূইয়া রাখিল বলেন, আমার রাজনীতি জীবনে আমি স্বচ্ছ রাজনীতি করি, অস্বচ্ছ রাজনীতির সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমি পরিচ্ছন্ন বাবার সন্তান। বাবার মৃত্যুর পর উপজেলা চেয়ারম্যানকে বাবা হিসেবে জানি। কোনো অপশক্তির জায়গা আওয়ামী লীগে হবে না। ওনার হামলায় দলের কেউ যদি জড়িত থাকে তার বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. মুহসীন নাজির বলেন, হামলায় জড়িত ও মদদদাতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। আমরা উপজেলা আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ আছি। হামলায় দলের কেউ জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাকে আজীবনের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।

শিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মুহসীন নাজিরের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ.ফ.ম মাহবুবুল হাসান, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোন্তাজ উদ্দিন ভুইয়া, আমিরুল ইসলাম ভুইয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল কবির শাহিদ, কোষাধ্যক্ষ মাহফুজুল হক টিপু, শিবপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি খোকন ভুইয়াসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি নরসিংদী শিবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও শিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি হারুনুর রশিদ খানকে গুলি করে হত্যা চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ চেয়ারম্যানের ছেলে আমিনুর রশিদ খাঁন তাপস বাদী হয়ে ছয়জনকে আসামি করে থানায় হত্যা চেষ্টা মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ১০ থেকে ১২ জন।

জাতীয়

রাজধানীর মালিবাগে সোহাগ পরিবহনের একটি বাস রেললাইন অতিক্রম করার সময় পঞ্চগড়মুখী দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটেছে।

এরপর থেকে ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।

বর্তমানে ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ শুরু করেছেন পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
বাংলাদেশ রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছেন।

বুধবার (২২ মার্চ) রাত ৯টা ২ মিনিটে এ দুর্ঘটনার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস।

কমলাপুর রেলস্টেশনের ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার বলেন, ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ আপাতত বন্ধ রয়েছে। দুর্ঘটনাস্থলের লাইন ক্লিয়ার হয়ে গেলেই রেল চলাচল শুরু হবে।

ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাসেল ফারুক বলেন, রাত ৯টা দুই মিনিটে আমাদের কাছে খবর আসে মালিবাগে সোহাগ পরিবহনের একটি বাস ও একটি ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

তিনি বলেন, সোহাগ পরিবহনের বাসটি বেনাপোল থেকে ঢাকায় ফিরছিল। সংঘর্ষের আগে যাত্রীরা নেমে যাওয়ায় বাসটি খালি ছিল। ফলে সংঘর্ষের ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি বলে আমরা জানতে পেরেছি। অন্যদিকে ট্রেনটির নাম দ্রুতযান এক্সপ্রেস। ট্রেনটি পঞ্চগড় থেকে ঢাকায় ফিরছিল। ঘটনাস্থলে আমাদের দুই ইউনিট কাজ করছে।

স্থানীয় উদ্ধারকারীরা জানান, বাসে ৫-৬ জন যাত্রী ছিলেন, যারা ভারত থেকে বেনাপোল হয়ে ঢাকায় মালিবাগ কাউন্টার হয়ে মালিবাগ রেলগেট পেরিয়ে মালিবাগ বাজারে শেষ কাউন্টারে যাচ্ছিল। আহতদের ইবনে সিনা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

জাতীয়

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশের আট বিভাগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়োহাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়োহাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

এ ছাড়া আগামী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টির প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে। একই সঙ্গে আগামী পাঁচ দিনে আবহাওয়ার অবস্থার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।

আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। মঙ্গলবার দেশের সর্বনিম্ন তেঁতুলিয়ায় ১৬ দশমিক ৯ ডিগ্রি এবং সর্বোচ্চ টেকনাফে ৩২ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

জাতীয়

নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলার বড়চাপায় ১৮ মার্চ স্বাধীনতার মাস উপলক্ষে মরহুম করম আলী সাহেবের রক্তজলে গড়া “বড়চাপা বহুমূখী ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা (কলেজ) এবং এতিমখানা”- য় আয়োজিত ” বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও আলোচনা সভা “- অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে মনোহরদী-বেলাব – এর মাটি ও মানুষের নেতা, বংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাবেক সভাপতি, গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় শিল্প মন্ত্রী আলহাজ্ব এডভোকেট নূরুল মজিদ হুমায়ন এমপি সরকারের অতি জরুরী প্রয়োজনে উপস্হিত থাকতে পারেনি, অন্যন্ন মেহমান সবাই উপস্হিত ছিলেন ।

উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান, অত্র প্রতিষ্ঠানদ্বয়ের গর্ভনিং বডির সভাপতি, চেয়ারম‍্যান- সোনারবাংলা টিভি (https://shonarbangla.tv/ ) ও সম্পাদক- GGN24.COM।

অনুষ্ঠানকে উপস্হিত ছিলেন সভার উদ্বোধক এম সুলতান উদ্দিন, চেয়ারম‍্যান বড়চাপা ইউপি এবং গর্ভনিং বডির সদস‍্য অত্র প্রতিষ্ঠান, স্বগতিক বক্তা জনাব মোঃ নাজমুল হক সাঃ সম্পাদক বড়চাপ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও গর্ভনিং বডির সদস‍্য অত্র প্রতিষ্ঠান, মোঃ আঃ রাজ্জাক মনির সাঃ সম্পাদক কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, এ‍্যাডঃ হাবিবুর রহমান তৌহিদ এপিপি নরসিংদী জজ্কোর্ট, আরো উপস্হিত ছিলেন অত্র মাদ্রাসা ও এতিমখানা থেকে পাশ করা কৃতি শিক্ষার্থী যারা সচিবালয়, ব‍্যাংক-বীমা, পুলিশ ও অন‍্যান্ন পেশায় কর্মকর্তা হিসাবে নিয়জিত। আরো উপস্হিত ছিলেন ছাত্রলীগ নেতা সবল, শরীফ, সজিব সহ অন‍্যান্নরা।

দ্বিতীয় অধিবেশনেও সভাপতিত্ব করেন মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান।

প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্হিত ছিলেন বিশিষ্ট শিল্পপতি ও ধর্মানুরাগী জননী গ্রুপের এমডি আলহাজ্ব হাফেজ মোঃ আঃ কদির সাহেব।

বিশেষ অতিথী হিসাবে উপস্হিত ছিলেন অত্র মাদ্রাসার গর্ভনিং বডির সদস্য সারোয়ার হোসেন কানন পরিদর্শক খাদ‍্য অধিদপ্তর ও আরো অনেকে। ‍্য

প্রধান অতিথি তার বক্তিতায় অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম করম আলী সাহেবের কর্মময় জীবন তুলে ধরেন এবং তাঁর বিদেহী আত্তার মাগফেরাত কামনা করেন তাছাড়াও প্রতিষ্ঠান দুটিকে সার্বিক সহযোগিতা ও বর্তমান সভাপতি ও অধ‍্যক্ষকে সকল কাজে সমর্থনের আশাবাদ ব‍্যক্ত করেন।

অন‍্যান্ন শিক্ষক মন্ডলির সাথে আরো বক্তব‍্য প্রদান করেন অত্রমাদ্রাসার স্বনামধন‍্য অধ‍্যক্ষ আলহাজ্ব মৌলানা মোঃ মোশারফ হোসেন।

জাতীয়

রাষ্ট্রীয় গোপন নথি ‘চুরির চেষ্টার’ অভিযোগ এনে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে সচিবালয়ে আটকে রাখার ঘটনায় আলোচনায় আসা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছাকে চাকরি থেকে অবসরে পাঠিয়েছে সরকার।

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব শেখ শামছুল আরেফীন স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় গত ১৬ মার্চ।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (গ্রেড-১) কাজী জেবুন্নেছা বেগমকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ (২০১৮ সনের ৫৭ নং আইন) এর ধারা ৪৩(১)(ক) অনুযায়ী ১৮-০৩-২০২৩ তারিখ থেকে সরকারি চাকরি থেকে অবসর প্রদান করা হলো।’

এতে আরও বলা হয়, ‘তার অনুকূলে ১৮ (আঠারো) মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ লাম্পগ্রান্টসহ ১৯-০৩-২০২৩ থেকে ১৮-০৩-২০২৪ তারিখ পর্যন্ত ০১(এক) বছরের অবসর-উত্তর ছুটি (পিআরএল) মঞ্জুর করা হলো। ০৩। তিনি বিধি অনুযায়ী অবসর ও অবসর-উত্তর ছুটিকালীন সুবিধাদি প্রাপ্য হবেন।’

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ১৭ মে দুপুরের পর পেশাগত দায়িত্ব পালনে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান প্রথম আলোর অনুসন্ধানী প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাকে একটি কক্ষে ৫ ঘণ্টা আটকে রাখেন। রাত সাড়ে আটটার দিকে রোজিনাকে শাহবাগ থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তাকে রাত ৯টার দিকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

পরে রাত পৌনে ১২টার দিকে তার বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় রাষ্ট্রীয় গোপন নথি ‘চুরির চেষ্টার’ অভিযোগ এনে ‘অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট’ আইনে মামলা করা হয়। মামলার বাদী হন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব শিব্বির আহমেদ ওসমানী।

রোজিনাকে আটকে রাখার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব জেবুন্নেছা। ‘হেনস্তাকারী’ হিসেবে তার নাম উল্লেখের পাশাপাশি তাকেও ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়।

পরে তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হিসেবে সরিয়ে নেয় সরকার। এরপর থেকে তার বিষয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে তার ক্ষমতার অপব্যবহার ও অবৈধ সম্পদের নানা বিষয় বেরিয়ে আসতে শুরু করে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় জেবুন্নেছার নামে-বেনামে দেশে-বিদেশে বাড়ি-গাড়ি, ফ্ল্যাট, জমি ও ব্যাংকের অর্থ প্রভৃতি তথ্য বের হতে থাকে। দুদকের কাছেও নানা মাধ্যম থেকে অভিযোগ আসে। অভিযোগে বলা হয়, জেবুন্নেছার নামে রাজধানীতে চারটি বাড়ি, ফ্ল্যাট, গাজীপুরে ২১ বিঘা জমি, কানাডায় তিনটি বাড়ি, ও লন্ডনে একটি বাড়ি ছাড়াও শত কোটি টাকার এফডিআর রয়েছে।

২০ মে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার জহুরুল হক সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, দুদক মনে করছে এসব অভিযোগের সত্যতা যাছাই করা দরকার। প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেলে অনুসন্ধানে মাঠে নামবে দুদক টিম।

জাতীয়

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বহুতল ভবনের একটি ফ্ল্যাটে ‘রহস্যজনক’ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ফ্ল্যাটটির দরজা-জানালা উড়ে যায় এবং আগুন লেগে যায়। এতে ৩ বছর বয়সের শিশু পুত্রসহ কুলসুম আক্তার নামের এক গৃহবধূ দগ্ধ হয়েছেন। খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ৬টি ইউনিট এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে দগ্ধদের হাসপাতালে পাঠায়।

রোববার সন্ধ্যায় ফতুল্লার মাসদাইর এলাকায় এমএস টাওয়ারের ৬ষ্ঠ তলায় এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যায় মাগরিবের আজানের পরপরই এমএস টাওয়ারের ৬ষ্ঠ তলার একটি ফ্ল্যাটে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে আগুন ধরে যায়। এ সময় আশপাশের অনেকেই আগুন নেভাতে ব্যর্থ হয়ে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়। তখন ফায়ার সার্ভিস এসে ওই ফ্ল্যাট থেকে গৃহবধূ কুলসুম আক্তার ও তার শিশুপুত্র খালিদকে (৩) আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।বিস্ফোরণে ওই ভবনের লিফটের দরজা পর্যন্ত ভেঙে গেছে।

দগ্ধদের এক স্বজন জানান, ওই ফ্ল্যাটে কোনো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র (এসি) বা গ্যাস সিলিন্ডার নেই। তারা (দগ্ধ কুলসুম আক্তার) পাইপলাইনের গ্যাস ব্যবহার করেন।

নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক ফখর উদ্দিন বলেন, বিস্ফোরণের বিষয় তদন্ত করে বলতে হবে। তবে ওই ফ্ল্যাটে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিস্ফোরণের কারণ তদন্ত করে বলা যাবে।

জাতীয়

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমপিওভুক্ত শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির ফল প্রকাশ করা হয়েছে।এতে ৩২ হাজার ৪৩৮ প্রার্থীকে নির্বাচন করা হয়েছে।

রোববার রাতে শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) সদস্য এবিএম শওকত ইকবাল শাহীন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ ফল প্রকাশের তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমপিওভুক্ত শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ সুপারিশের লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে ৩২ হাজার ৪৩৮ জন প্রার্থীকে নির্বাচন করা হয়েছে। প্রাথমিক নির্বাচনের ফল এনটিআরসিএ’র ওয়েবসাইটে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি নামক সেবাবক্সে এবং http://ngi.teletalk.com.bd লিংকে পাওয়া যাবে। এ ছাড়া নির্বাচিত প্রার্থী এবং প্রতিষ্ঠান প্রধানদের এসএমএসের মাধ্যমে ফল জানানো হয়েছে। নির্বাচিত প্রার্থীরা স্ব স্ব আবেদন আইডি এবং মোবাইল নম্বর দিয়ে লগইন করে ফলাফল দেখতে পারবেন।

এতে আরও বলা হয়, প্রতিষ্ঠান প্রধানরা স্ব স্ব ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে তার প্রতিষ্ঠানে নির্বাচিত প্রার্থীদের তথ্য দেখতে পারবেন। কোনো নির্বাচিত প্রার্থী কিংবা প্রতিষ্ঠান প্রধান টেকনিক্যাল কারণে এসএমএস না পেলে এনটিআরসিএ’র ওয়েবসাইটের চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি-২০২২ সেবা বক্স থেকে প্রাথমিক নির্বাচনের ফলাফল দেখতে পারবেন।

নির্বাচিত প্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম অনলাইনে পূরণের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তি।তাতে বলা হয়, চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে নির্বাচিত প্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম অনলাইনে পূরণ করে জমা করতে হবে। ফরম জমা করা সংক্রান্ত নির্দেশনা পরবর্তী সময়ে এনটিআরসিএ’র ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি এবং নির্বাচিত প্রার্থীর মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হবে।

৬৮ হাজার ৩৯০ জন শিক্ষক নিয়োগের লক্ষ্যে ২০২২ সালের ২২ ডিসেম্বর চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ।তার মধ্যে স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে ৩১ হাজার ৫০৮ জন এবং মাদ্রাসা, ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা ও কারিগরি স্কুল-কলেজে ৩৬ হাজার ৮৮২ জন নিয়োগ দেওয়ার কথা জানানো হয়।

এরপর শিক্ষক হতে মোট ১ লাখের বেশি চাকরি প্রার্থী আবেদন করেন।যার মধ্যে ৩২ হাজার ৪৩৮ প্রার্থীকে নির্বাচন করল এনটিআরসিএ।

জাতীয়

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ আজ। বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা গৌরবের এক অনন্য দিন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের এই দিনে ১৯ মিনিটের এক জাদুকরি ভাষণে বাঙালি জাতিকে স্বপ্নে বিভোর করেছিলেন। সেদিন তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান গর্জে উঠেছিল। উত্তাল জনসমুদ্রের গগনবিদারী স্লোগানের উদ্দামতায় বসন্তের মাতাল হাওয়ায় পত পত করে উড়ে বাংলাদেশের মানচিত্রখচিত লাল-সবুজের পতাকা। অগ্নিঝরা সেই দিনে স্বাধীনতার মহতী কাব্যের কবি হয়ে আসেন বঙ্গবন্ধু। তার বজ কণ্ঠের নিনাদে বাংলার আকাশে-বাতাসে ধ্বনিত হলো- ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ বঙ্গবন্ধুর ভাষণে সেদিন শপথের বজ মুষ্টি উত্থিত হয়। সেদিন শুধু স্বাধীনতার চূড়ান্ত আহ্বানটি দিয়েই চুপ থাকেননি, স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের রূপরেখাও দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। মূলত সেই ভাষণই ছিল ৯ মাসব্যাপী বাংলার মুক্তি সংগ্রামের ঘোষণা ও মূল ভিত্তি।

কবি নির্মলেন্দু গুণ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ডাক দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণের মুহূর্তটি কবিতায় মূর্ত করেছেন। তিনি লিখেছেন- ‘একটি কবিতা লেখা হবে তার জন্য কি দারুণ অপেক্ষা আর উত্তেজনা নিয়ে/লক্ষ লক্ষ উন্মুক্ত অধীর ব্যাকুল বিদ্রোহী শ্রোতা বসে আছে/ভোর থেকে জনসমুদ্রের উদ্যান সৈকতে/কখন আসবেন কবি?’/ …‘শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে/রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে/অতঃপর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন/…. কে রোধে তাঁহার বজ কণ্ঠ বাণী?/ গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর-কবিতাখানি/এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম/এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।/সেই থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের।’

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং ১৪ দলের মুখপাত্র ও সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু বলেন, বঙ্গবন্ধু ৬ দফা দেওয়ার পরে বাঙালি জাতি তাকে মুক্তির দূত এবং ৬ দফাকে মুক্তির সনদ হিসাবে গ্রহণ করেছিল। আগরতলা মামলা দেওয়ার পরে এটা আরও শানিত হয়। বাঙালির ধারণা ছিল তাদের কণ্ঠরোধ করার জন্যই শেখ মুজিবকে ফাঁসি দেওয়া হচ্ছে। তাই কারফিউ ভঙ্গ করে মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। আইয়ুব খান বাধ্য হন বঙ্গবন্ধুকে নিঃশর্তে মুক্তি দিতে। তারই ধারাবাহিকতায় ৭ মার্চের ভাষণ এবং নির্বাচন এবং সেই নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়। তিনি আরও বলেন, ৭ মার্চে বাঙালি ভাবটা এমন ছিল যে তারা রণাঙ্গনে যাচ্ছেন। এভাবেই জনতা বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শোনার জন্য এসেছিল। বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে অত্যন্ত সংক্ষিপ্তভাবে তিনটি অংশ তুলে ধরেছিলেন। প্রথম অংশে ছিল-পাকিস্তানের ২৩ বছরের শাসন-শোষণের ইতিহাস। দ্বিতীয় অংশে ছিল-১ তারিখ থেকে ৭ তারিখ পর্যন্ত কিভাবে নির্বিচারে হত্যা ও নির্যাতন করা হয়েছে। তৃতীয় অংশে ছিল করণীয়। সেখানেই তিনি তার নির্দেশনাগুলো দিয়েছিলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণ দিয়ে সাড়ে সাত কোটি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করলেন। এটি শুধু একটি ভাষণই ছিল না, এর মাঝে কাব্যময়তা ছিল। মনে হচ্ছিল- কবিতার মতো তিনি বলে যাচ্ছেন, কিন্তু এই কবিতাটি তিনি নিজেই রচনা করছেন। এটার লিখিত কোনো কাগজ তার সামনে ছিল না। এমনকি ক্ষুদ্র নোটও ছিল না। ফলে বোঝা যায় তিনি অন্তর থেকে বলছেন। তিনি তার ভাষণে পাকিস্তানের শাসন-শোষণের কথা বললেন এবং বাঙালির করণীয় কী তাও বললেন। এজন্যই আন্তর্জাতিক নিউজউইকে পত্রিকা এর ১৯৭১ সালের ৫ এপ্রিল ইস্যুকৃত সংখ্যার কভার স্টোরিতে বঙ্গবন্ধুকে ‘পোয়েট অব পলিটিক্স’ (রাজনীতির কবি) হিসেবে অভিহিত করেছিল।

আরেফিন সিদ্দিক আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু বাঙালির মুক্তি ও স্বাধীনতার জন্যই ভাষণ দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর এই ছিল সেই সময়ের সাড়ে সাত কোটি মানুষের শপথ। ভাষণটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে গোটা জাতি শপথ নেয়। তিনি আরও বলেন, ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর বঙ্গবন্ধুর ভাষণকে জাতিসংঘের ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এটিকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেস হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে কারণ-বঙ্গবন্ধু বাঙালির মুক্তির আন্দোলন সামনে রেখে ভাষণটি দিলেও এটি সারা পৃথিবীর শোষিত, নিপীড়িত নির্যাতিত মানুষের মুক্তির মাইলফলক।

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ, বেলা ৩টা ২০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু মঞ্চে আরোহণ করেন। ফাগুনের সূর্য তখনও মাথার উপর। মঞ্চে আসার পর বঙ্গবন্ধু উপস্থিত জনতার উদ্দেশে হাত নাড়েন। তখন পুরো রেসকোর্স ময়দান লাখ লাখ বাঙালির ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা, তোমার আমার ঠিকানা’, ‘তোমার দেশ আমার দেশ, বাংলাদেশ বাংলাদেশ’, ‘তোমার নেতা আমার নেতা, শেখ মুজিব-শেখ মুজিব’ স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে। প্রায় ১৯ মিনিটের ভাষণে বঙ্গবন্ধু ইতিহাসের পুরো ক্যানভাস তুলে ধরেন। বজ কণ্ঠে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন, ‘সাত কোটি মানুষকে আর দাবায়ে রাখতে পারবা না। বাঙালি মরতে শিখেছে, তাদের কেউ দাবাতে পারবে না। রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দেব। এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

শহিদ জননী জাহানারা ইমামের লেখা একাত্তরের দিনলিপি গ্রন্থে ৭ মার্চের বর্ণনায় আছে, ‘রেসকোর্স মাঠের জনসভায় লোক হয়েছিল প্রায় তিরিশ লাখের মতো। কত দূরদূরান্ত থেকে যে লোক এসেছিল মিছিল করে, লাঠি আর রড ঘাড়ে করে- তার আর লেখাজোখা নেই। টঙ্গী, জয়দেবপুর, ডেমরা-এসব জায়গা থেকে তো বটেই, ২৪ ঘণ্টা হাঁটা পথ পেরিয়ে ঘোড়াশাল থেকেও বিরাট মিছিল এসেছিল গামছায় চিড়ে-গুড় বেঁধে। অন্ধ ছেলেদের মিছিল করে মিটিংয়ে যাওয়ার কথা শুনে হতবাক হয়ে গেলাম। বহু মহিলা, ছাত্রী মিছিল করে মাঠে গিয়েছিল শেখের বক্তৃতা শুনতে।’

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভিত্তিমূল, উজ্জ্বল প্রেরণাভূমি। কিন্তু ৭৫-পরবর্তী বাংলাদেশে বারবার ইতিহাসের বিকৃতি ঘটেছে। নতুন প্রজন্মের কাছে প্রকৃত ইতিহাস লুকিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধূলিসাৎ করার ঘৃণ্য অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন প্রজন্মকে বিকশিত করার উদ্যোগ নেয়। বঙ্গবন্ধু, ৭ মার্চ ও মহান স্বাধীনতার প্রকৃত সত্য তুলে ধরার উদ্যোগ নেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে ‘মেমরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ বা ‘বিশ্বের স্মৃতি’ হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো।

দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ কেবল আমাদের নয়, বিশ্বব্যাপী স্বাধীনতাকামী মানুষের জন্যও প্রেরণার চিরন্তন উৎস হয়ে থাকবে। ৭ মার্চ বাঙালি জাতির মুক্তিসংগ্রাম ও স্বাধীনতার ইতিহাসে অবিস্মরণীয় একটি দিন।

বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতা নামের এক অমরবাণী শুনান এবং সংগ্রামের মাধ্যমে শৃঙ্খলমুক্তির পথ দেখান। ‘জয় বাংলা’ স্লোগান এবং ৭ মার্চের ভাষণ আমাদের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে অনুপ্রেরণা জোগাবে।

কর্মসূচি : এবারও দিনটি জাতীয় দিবস হিসাবে উদযাপন করা হবে। এ উপলক্ষ্যে কেন্দ্রে জেলা-উপজেলায় ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে আওয়ামী লীগ। ভোর সাড়ে ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন ও দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় এবং দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল ৮টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করা হবে। বিকাল ৩টায় আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জি. মোশাররফ হোসেন এমপি। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকেও নানা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।

জাতীয়

চট্টগ্রামে রেলওয়ের একটি তেলবাহী ওয়াগনের সঙ্গে ধাক্কা লেগে যাত্রীবাহী বাস উল্টে গেলে রেলের এক কর্মী ও দুই বাসযাত্রীসহ ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার রাত ৯টার দিকে নগরীর ইপিজেড থানাধীন বিমানবন্দর সড়কের মেঘনা তেল ডিপোর সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পয়েন্টসম্যান আজিজুল হক (৩০) এবং বাসের দুই যাত্রী আসাদুজ্জামান (৩০) ও মিটন কান্তি দে (২৫)।

পুলিশ জানিয়েছে, সংকেত না মেনে বাসটি রেললাইনের ওপর তুলে দেয়ার কারণে ভয়াবহ এ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।

ইপিজেড থানার ওসি মো. আব্দুল করিম বলেন, রাত সাড়ে ৯টার দিকে তেলবাহী ওয়াগন বিমানবন্দর সড়কে মেঘনা পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের সামনের লেভেল ক্রসিং অতিক্রম করছিল। সংকেত অমান্য করে ক্রসিং পার হওয়ার চেষ্টা করলে বিমানবন্দর অভিমুখী বাসটি ওয়াগনের সঙ্গে ধাক্কা লেগে উল্টে যায়। এতে রেলের এক পয়েন্টসম্যান ও দুই বাসযাত্রী গুরুতর আহত হন।

তাদের তিন জনকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন। আহত তিনজনকে চমেক হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। তাদের লাশ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। প্রক্রিয়া শেষে এসব লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির কর্তব্যরত অফিসার জানিয়েছেন।

জাতীয়

মেডিকেল কলেজগুলোকে টাকা বানানোর যন্ত্রে পরিণত না করে মানুষ যাতে স্বল্প খরচে ও সহজে দ্রুত চিকিৎসা সেবা পায়- তা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

তিনি বুধবার কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে ‘রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজে’ এক অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপ্রধান চিকিৎসকদের আন্তরিকতার সঙ্গে সেবা প্রদান করতে আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করে শুধু ব্যবসা করলেই চলবে না, মানুষকে সেবাও দিতে হবে।’ রাষ্ট্রপতি হামিদ আশা করেন, এ মেডিকেল কলেজটির সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতে শিক্ষক কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সবাই নিরলস প্রচেষ্টা চালাবেন।

অনুষ্ঠানে মেডিকেল কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি রাষ্ট্রপতির সহধর্মিণী রাশিদা খানম এবং কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আনম নওশাদ খান বক্তব্য দেন।