জাতীয়

৬ উপজেলা, ৫ পৌরসভা ও ৫৬ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগ। বুধবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভায় এই প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং দলের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমতলী উপজেলায় এমএ কাদের, নাজিরপুরে মোশারেফ হোসেন, টঙ্গিবাড়ীতে কাজী আবদুল ওয়াহিদ, রায়পুরায় লায়লা কানিজ, লালমাইয়ে মোহাম্মদ কামরুল হাসান এবং বোয়ালখালীতে রেজাউল করিম আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। পৌরসভা নির্বাচনে দর্শনা পৌরসভায় আতিয়ার রহমান, এলেঙ্গায় মোহাম্মদ নুর-এ আলম সিদ্দিকী, কোটালীপাড়ায় মতিয়ার রহমান হাজরা, হালুয়াঘাটে খায়রুল আলম ভূঞা এবং নাজিরহাটে এ কে জাহেদ দলের মনোনয়ন পেয়েছেন।

ইউনিয়ন পরিষদ : গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার জলুপুর ইউপিতে আফছার উদ্দিন, নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ডিমলায় এএইচএম ফিরোজ, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার ফতেপুরে ইসমাইল হক, মেহেরপুরের মেহেরপুর সদর উপজেলার আমদহে রওশন আলী, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার উথলীতে আব্দুল হান্নান, কে ডি কে ইউপিতে খায়রুল বাসার, মনোহরপুরে সোহরাব হোসেন খাঁন, বাঁকায় আব্দুল কাদের প্রধান, হাসাদহে রবিউল ইসলাম ও রায়পুরে তাহাজ্জত হোসেন; আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদাহে হায়াত আলী এবং আইলহাঁসে জাহিদুল ইসলাম আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন।

টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সাগরদিঘী ইউপিতে হেকমত সিকদার, নাগরপুর উপজেলার ভারড়ায় রিয়াজ উদ্দিন তালুকদার, গাজীপুরের সদর উপজেলার মির্জাপুরে মোশারফ হোসেন দুলাল, ভাওয়ালগড়ে হাজি সালাহউদ্দিন সরকার ও পিরুজালীতে জালাল উদ্দিন। মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার পাঁচগাঁও ইউপিতে এইচএম সুমন, নরসিংদীর সদর উপজেলার মহিষাশুড়ায় এনামুল হক ও নুরালাপুরে মো. জাকারিয়া, রায়পুরা উপজেলার মির্জারচরে মাহফুজা আক্তার।

ফরিদপুর সদর উপজেলার ঈশানগোপালপুরে সহীদুল ইসলাম ও চর মাধবদিয়ায় মোহাম্মদ তুহিনুর রহমান, নর্থ চ্যানেলে মোহাম্মদ মোফাজ্জেল হোসেন, আলিয়াবাদে ওমর ফারুক, ডিক্রিরচরে আনোয়ার হোসেন (আবু), মাচ্চরে রিজন মোল্যা, অম্বিকাপুরে আবু সাইদ চৌধুরী (বারী), কৃষ্ণনগরে একেএম বাদশা মিয়া, কানাইপুরে ফকির বেলায়েত হোসেন, কৈজুরীতে ফকির ছিদ্দিকুর রহমান ও গেরদায় শাহ এমার হক আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন।

বরগুনার তালতলী উপজেলার শারিকখালী ইউপিতে আবুল বাসার তালুকদার, পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালীতে টিনু মৃধা, চম্পাপুরে রিন্টু তালুকদার, বালিয়াতলীতে এবিএম হুমায়ুন কবির, মিঠাগঞ্জে কাজী হেমায়েত উদ্দিন হিরন ও ডালবুগঞ্জে দেলওয়ার হোসেন।

ময়মনসিংহের সদর উপজেলার খাগডহর ইউপিতে মাহমুদুল হক কামরুল, নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বাকলজোড়ায় সফিকুল ইসলাম, সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ফেঞ্চুগঞ্জে তৈয়ফুর রহমান, মাইজগাঁওয়ে জুবেদ আহমদ চৌধুরী, ঘিলাছড়ায় সাইফুল ইসলাম, উত্তর কুশিয়ারায় লুদু মিয়া ও উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জে জুনেদ আহমদ, সিলেট সদর উপজেলার খাদিমনগরে ইকলাল আহমদ, খাদিমপাড়ায় নজরুল ইসলাম ও টুকেরবাজারে রাজু গোয়ালা।

কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার শিলমুড়ি (দক্ষিণ) ইউপিতে ফারুক হোসেন ভূইয়া ও শিলমুড়ি (উত্তর) ইউপিতে আবু ইসহাক, দাউদকান্দি উপজেলার বারপাড়ায় মনির হোসেন তালুকদার, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার দ্বাদশ গ্রাম ইউপিতে খোরশেদ আলম বকাউল, মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুরে কাজী মিজানুর রহমান, নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার চর কিং ইউপিতে নাইম উদ্দিন আহমেদ, লক্ষ্মীপুরের সদর উপজেলার পার্বতীনগরে সালাউদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া এবং রামগতি উপজেলার চর আলগী ইউপিতে জাকির হোসেন চৌধুরী আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন।

জাতীয়

বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় দেশের ১৯ জন বিশিষ্ট নাগরিক ও ২টি প্রতিষ্ঠানকে একুশে পদক প্রদান করা হচ্ছে।

আজ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব বাবুল মিয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, একুশে পদক পাচ্ছেন ভাষা আন্দোলনে খালেদা মনযুর-ই-খুদা, বীর মুক্তিযোদ্ধা এ.কে.এম শামসুল হক (মরণোত্তর) ও হাজী মো: মজিবর রহমান।

শিল্পকলায় (অভিনয়) মাসুদ আলী খান ও শিমুল ইউসুফ। শিল্পকলায় (সংগীত) মনোরঞ্জন ঘোষাল, গাজী আব্দুল হাকিম ও ফজল-এ- খোদা (মরণোত্তর)।

শিল্পকলায় নওয়াজীশ আলী খান, শিল্পকলায় (আবৃত্তি) জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় ও শিল্পকলায় (চিত্রকলা) কনক চাঁপা চাকমা ।

মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখায় মমতাজ উদ্দীন (মরণোত্তর), সাংবাদিকতায় মো: শাহ আলমগীর (মরণোত্তর),গবেষণায় ড. মো: আবদুল মজিদ, শিক্ষায় প্রফেসর ড. মযহারুল ইসলাম (মরণোত্তর) ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর।

রাজনীতিতে অবদান রাখায় একুশে পদক পাচ্ছেন অ্যাডভোকেট মঞ্জুরুল ইমাম (মরণোত্তর) ও আকতার উদ্দিন মিয়া (মরণোত্তর) এবং ভাষা ও সাহিত্যে ড. মনিরুজ্জামান।

অন্যদিকে, সমাজসেবায় একুশে পদক পাচ্ছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন এবং মো: সাইদুল হক।

জাতীয়

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত রাষ্ট্রপতি প্রার্থী মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু।

প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কায়েস গণমাধ্যমকে বলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত রাষ্ট্রপতি প্রার্থী মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু গণভবনে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে ও প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা ফুলের তোড়া দিয়ে তাকে স্বাগত জানান।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সকালে আওয়ামী লীগ ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে সাবেক বিচারপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে মনোনয়ন দেয়।

আওয়ামী লীগ সংসদীয় দলের (এএলপিপি) গত ৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্রপতির জন্য মনোনীত প্রার্থী চূড়ান্ত করার দায়িত্ব দেয় এবং তিনি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে বাছাই করেন।

বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৪ এপ্রিল।

জাতীয়

২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন পাবনার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। রাষ্ট্রপতি পদে এই প্রথম পাবনা জেলার কেউ দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন।

রোববার (১২ ফেব্রয়ারি) সকালে খবর প্রকাশ হওয়ার পর পরই পাবনার মানুষের বাঁধভাঙ্গা আনান্দ উল্লাসে মাতেন। পাবনার এই কৃতিসন্তানের এমন অর্জনে গর্বিত জেলার বাসিন্দারা। তারা আনন্দ মিছিল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মাঝে মিষ্টি বিতরণও করেছেন।

জানা গেছে, সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর প্রথম পেশা ছিল সাংবাদিকতা। বাংলার বাণী পত্রিকার পাবনা জেলা প্রতিনিধি ছিলেন তিনি। এর আগে ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী হিসাবে রাজনীতি করেছেন। ১৯৭০ সালে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। ১৯৭২ সালে পাবনা জেলা যুবলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

এ তথ্য দিয়ে পাবনা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আলী মুর্তজা বিশ্বাস সনি বলেন, ১৯৭৪ সালে শেখ মনির অনুরোধে বঙ্গবন্ধু সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে পাবনা জেলা যুবলীগের সভাপতি করেন। তিনি বরাবরই পাবনার মানুষের জন্য উন্নয়নমূলক চিন্তা ও কাজ করেছেন। তার মতো ব্যক্তির মনোনয়ন পাওয়া পাবনার যুবলীগ গর্বিত ও আনন্দিত।

পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম লাল বলেন, একজন তৃণমূল পর্যায়ের নেতা থেকে রাষ্ট্রপতি হওয়া যায় সেটি সাহাবুদ্দিন চুপ্পু দেখিয়ে দিয়েছেন। উনি আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক। তিনি জীবন্ত ডায়েরি। জীবনে অনেক কিছু শেখার আছে তার কাছ থেকে। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা রাষ্টের সর্বোচ্চ সম্মান পেতে যাচ্ছেন।

পাবনা ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বেবী ইসলাম বলেন, সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ছোট-বড় সবার সঙ্গে বন্ধুসূলভ আচরণ করতেন। তিনি নিজের চিন্তা না করে এলাকার সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের কথা চিন্তা করতেন। সব সময় পাবনাসহ দেশের উন্নয়ন নিয়ে ভাবতেন। সর্বোপরি দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে যোগ্য এবং প্রাপ্ত ব্যক্তিকে দেওয়া হয়েছে।

পাবনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.স.ম আব্দুর রহিম পাকন বলেন, একজন সাদাসিধে মানুষ সাহাবউদ্দিন চুপ্পু। সর্বস্তরের মানুষের কাছে একজন প্রিয় ব্যক্তিত্ব। মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানাচ্ছি তাকে।

পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান বলেন, আমাদের প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহবুদ্দিন চুপ্পু। রাষ্ট্রপতি পদে তিনি মনোনয়ন পাওয়ায় পাবনার সাংবাদিকরা গর্বিত। সাহবুদ্দিন চুপ্পু এক সময়ে সাংবাদিকতা করতেন। সাংবাদিক থেকে রাষ্ট্রপতি হওয়ায় খুবই আনন্দের ব্যাপার।

সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর মনোনয়ন পাওয়ায় বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন তার সহপাঠী ও বন্ধুরা। তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু পাবনার বিশিষ্ট সমাজসেবক মোক্তার হোসেন বলেন, একসঙ্গে পড়াশোনা করেছি আমরা। মুক্তিযুদ্ধেও অংশ নিয়েছি একসঙ্গে। আমি জানি চুপ্পু কতটা উদার ও ভালো মনের মানুষ। তিনি সব সময়ই দেশ ও মানুষকে নিয়ে ভাবতেন। তাকে রাষ্ট্রপতিতে মনোনয়ন দিয়ে প্রধানমন্ত্রী সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

জানা গেছে, মো.সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ১৯৪৯ সালে পাবনা শহরের শিবরামপুর মহল্লার জুবিলি ট্যাঙ্কপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শরফুদ্দিন আনছারী ও মাতা খায়রুন্নেসা। তিনি পাবনা শহরের পূর্বের গান্ধি বালিকা বিদ্যালয় ও রাধানগর মজুমদার একাডেমিতে প্রাথমিকের পাঠ চুকান। পাবনার সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ থেকে ১৯৬৬ সালে এসএসসি ও ১৯৬৮ সালে এইচএসসি এবং ১৯৭১ সালে (অনুষ্ঠিত ১৯৭২সালে) বিএসসি পাস করেন।

পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৪ সালে মনোবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর এবং পাবনা শহীদ অ্যাডভোকেট আমিনুদ্দিন আইন কলেজ থেকে ১৯৭৫ সালে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন।

তিনি পাবনা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য হিসেবে আইন-পেশায় যোগ দেন এবং ১৯৮২ সাল পর্যন্ত এই পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। পরে ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) ক্যাডার হিসেবে যোগ দেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। বিচারকের বিভিন্ন পদে চাকরি শেষে ২৫ বছর পর ২০০৬ সালে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অবসর নেন।

২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর পরই আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা হয়। যাতে হত্যা,ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের ঘটনা ঘটে। পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ওসব ঘটনার তদন্তে কমিশন গঠন করেন, যার প্রধান ছিলেন তিনি।

২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মো.সাহাবুদ্দিন চুপ্পু দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের অন্যতম কাণ্ডার হিসেবে পরিচিত সাহাবুদ্দিন চুপ্পু পাবনা ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনেরও সভাপতি।

সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ১৯৯৫ ও ১৯৯৬ সালে পরপর দুবার বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব নির্বাচিত হন।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হলে সাহাবুদ্দিন চ্প্পুকে সামরিক আইন বলে গ্রেফতার করে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। তিন বছর কারাভোগের পরমু ক্ত হলে তিনি পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তিনি দুদকের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বিশ্বব্যাংকের কথিতপদ্মা সেতু সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে অন্যতম মুখ্যভূমিকা পালন করেন।

১৯৭২ সালের ১৬ নভেম্বর পাবনা শহরের দিলালপুরের আলী আকতারের জ্যেষ্ঠ কন্যা ড. রেবেকা সুলতানার সঙ্গে সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হন। রেবেকা সুলতানা বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দিয়ে যুগ্ম-সচিব হিসেবে ২০০৯ সালে অবসরে যান।

চুপ্পু-রেবেকা দম্পতির একমাত্র সন্তান মো.আরশাদ আদনান (রনি) দেশে ও বিদেশে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে বর্তমানে দেশের একটি বেসরকারি ব্যাংকের উচ্চপদে কর্মরত আছেন।

জাতীয়

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করতে হচ্ছে আওয়ামী লীগকে। বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ ২৩ এপ্রিল শেষ হচ্ছে। এর আগেই ক্ষমতাসীনদের বেছে নিতে হবে তার পরবর্তী উত্তরাধিকারীকে। কে হচ্ছেন নতুন রাষ্ট্রপতি-এ নিয়ে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে নানারকম আলাপ-আলোচনা ও গুঞ্জন শুরু হয়েছে। আসছে নানা মত।

আর দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি কে হচ্ছেন তা জানা যাবে আগামী কাল। এজন্য সংসদীয় দলের বৈঠক ডেকেছে আওয়ামী লীগ। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতীয় সংসদ ভবনে সরকারি দলের সভা কক্ষে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে বলে জাতীয় সংসদ সচিবালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, সংসদীয় দলের সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সেক্রেটারি ও জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী দলীয় এমপিদের যথাসময়ে সভায় উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন।

সংবিধান অনুযায়ী তৃতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ প্রসঙ্গে সংবিধানের ৫০ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, একজন রাষ্ট্রপতি কার্যভার গ্রহণের তারিখ থেকে পাঁচ বছর মেয়াদে দায়িত্ব পালন করবেন। সংবিধানের ৫০(৩) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘একাধিক্রমে হোক বা না হোক, দুই মেয়াদের অধিক রাষ্ট্রপতি পদে কোনো ব্যক্তি অধিষ্ঠিত থাকতে পারবেন না।’

ফলে মো. আবদুল হামিদের রাষ্ট্রপতি হিসাবে চলতি মেয়াদই শেষ,আর রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সম্পর্কে সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ অবসানের কারণে উক্ত পদ শূন্য হইলে অথবা মেয়াদ শেষ হইলে মেয়াদ সমাপ্তির তারিখের পূর্ববর্তী ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে শূন্যপদ পূরণের জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে।’

সংবিধানের এই নির্দেশনা অনুযায়ী বর্তমান রাষ্ট্রপতির মেয়াদ ২৩ এপ্রিল শেষ হচ্ছে। এর আগেই ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করতে হবে। অর্থাৎ ২৩ জানুয়ারি থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন একজন রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করতে হবে। আর এ কারণে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রাক-প্রস্তুতি শুরু করেছে সরকারি দল।

জাতীয়

ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে হাতে-নাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) তিন শিক্ষার্থীকে আটক করেছে শাহবাগ থানা পুলিশের একটি টহল টিম।

সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

ওসি নূর মোহাম্মদ বলেন, আটককৃত ছাত্ররা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের ফজলে নাবিদ সাকিল, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মো. রাহাত রহমান এবং সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাদিক আহাম্মদ।

শাহবাগ থানা সূত্র জানায়, শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ৩টার দিকে বুয়েট মসজিদের সামনে ট্রাকচালক জুয়েলকে থামিয়ে মারধর ও টাকা ছিনতাইকালে অভিযুক্ত তিন শিক্ষার্থীকে আটক করেন দায়িত্বরত শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওমর ছানী। ছিনতাইয়ের ১৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের নামে ভুক্তভোগী মামলা করলে রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) তাদের আদালতে পাঠানো হয়।

জাতীয়

রানওয়ের লাইটিং ব্যবস্থা সংস্কার কাজের জন্য আগামী দুই মাস রাতে পাঁচ ঘণ্টা করে ঢাকায় ফ্লাইট চলাচল বন্ধ থাকবে। আজ (বুধবার) দিবাগত রাত ২টা থেকে এ নির্দেশনা কার্যকর হবে। চলবে আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত।

বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।

কামরুল ইসলাম জানান, বিমানবন্দরে ফ্লাইট ব্যবস্থাপনায় সক্ষমতা বাড়ানো এবং যাত্রীসেবার মানোন্নয়নে রানওয়ের সেন্ট্রাল লাইনে লাইট স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ এপ্রিল বিমানবন্দরের রানওয়েটি প্রতিদিন রাত ২টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

লাইট প্রতিস্থাপনকালীন আগে ও পরে অর্থাৎ সকাল ৭টা থেকে বেলা ১১টা ৩০ মিনিট এবং রাত ১০টা থেকে ২টা পর্যন্ত ফ্লাইটের আধিক্যতা থাকতে পারে বলেও জানান তিনি।

কামরুল ইসলাম আরও বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের যাত্রা সুগম ও নিরবচ্ছিন্ন করতে বিমানবন্দর ট্রাফিক বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট অন্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে ফ্লাইট ব্যবস্থাপনাসহ অন্যান্য বিষয়ে পূর্বপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। পাশাপাশি তা বাস্তবায়নের জন্য গঠন করা হয়েছে মনিটরিং টিম।

বিমানবন্দর সূত্র জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে এই পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে আবহাওয়া কুয়াশাচ্ছন্ন থাকে। ফ্লাইট চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। এ কারণে লাইটিং ব্যবস্থা সংস্কার কাজের জন্য এ সময়কেই বেছে নেওয়া হয়েছে। এ সময়ে প্রতিদিন ৭-৮টি ফ্লাইট চলাচল করত, সেগুলো রিশিডিউল করা হয়েছে। যাত্রীদের সাময়িক অসুবিধার জন্য ক্ষমা চেয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

জাতীয়

বাহান্নর ভাষা আন্দোলনে প্রাণোৎসর্গকারী শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে ফেব্রুয়ারির প্রথম দিনে বাংলা ভাষায় একটি রায় দিয়েছে হাই কোর্ট।

বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাই কোর্ট বেঞ্চ বুধবার একটি রিট মামলায় এই রায় দেন।

রায়ে অর্পিত সম্পত্তি সংক্রান্ত ‘মো. আক্কাস আলী ওরফে আলিমুদ্দিন বনাম বাংলাদেশ এবং অন্যান্য’ মামলাটিতে আগে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়েছে।

বাংলায় রায় ঘোষণার সময় বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক নাইমা হায়দার বলেন, “আজ ১ ফেব্রুয়ারি। ভাষার মাস আজ থেকে শুরু। ভাষা শহীদদের আত্মার প্রতি সম্মান জানিয়ে, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রতি সম্মান জানিয়ে আজকের প্রথম রায়টি বাংলায় ঘোষণা করছি। বিশ্বের সব বাংলা ভাষাভাষিদের প্রতি সম্মান জানিয়ে বাংলায় এ রায় ঘোষণা করছি।”

পরে বাংলায় দেওয়া রায়ে তিনি বলেন, “আলোচনা ও আইনজীবীর যুক্তিতর্ক পর্যালোচনান্তে আমরা অত্র মোকদ্দমার গুণাগুণ পর্যালোচনায় প্রবেশ না করে অত্র রুলটি নিম্নলিখিত নির্দেশনাসহ নিষ্পত্তি করতে সম্মত হই।”

নির্দেশনাগুলো হল- (ক) দরখাস্তকারী অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পণ আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল দায়ের করতে পারবেন। (খ) দরখাস্তকারী অর্পিত সম্পত্তি আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল দায়ের করতে চাইলে অত্র আদেশ হাতে পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে আপিল দায়ের করতে হবে। (গ) অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পণ আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল দায়েরের ক্ষেত্রে তামাদি মার্জনীয় হবে। (ঘ) নিম্ন অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পণ ট্রাইব্যুনালে আদেশ আপিল দায়ের পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। পক্ষগণ আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দখলের বিষয়ে স্থিতাবস্থা বজায় থাকবে। রিট মামলা নিষ্পত্তি করা হল।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত এবং রিট আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী মো. শরিফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

গত শতকের নব্বইয়ের দশক থেকে উচ্চ আদালতে বাংলায় রায় ও আদেশ দেওয়া শুরু হয়। প্রয়াত বিচারপতি এ আর এম আমিরুল ইসলাম চৌধুরী বাংলায় আদেশ দেওয়া শুরু করেন।

ভাষা শহীদদের সম্মানে হাই কোর্টে বাংলায় রায়
এরপর সাবেক বিচারপতিদের মধ্যে বিচারপতি কাজী এবাদুল হক, বিচারপতি হামিদুল হক, বিচারপতি আবদুল কুদ্দুছ, সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক, আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বাংলায় বেশ কয়েকটি রায় দেন।

বর্তমানে আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম হাই কোর্টে থাকাকালীন বেশ কয়েকটি মামলার রায় বাংলায় দিয়েছেন।

আর নিয়োগ পাওয়ার পর ২০১০ সালের এপ্রিল থেকে বাংলায় রায় দিয়ে যাচ্ছেন হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন।

বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালও বাংলায় রায় লেখেন। চার বছর আগে দেশের সব নদীকে আইনি অধিকার দিয়ে ‘জীবন্ত সত্তা’ ঘোষণার রায়টি লিখেছেন বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল। সর্বশেষ গতবছরের অক্টোবর একটি ‘চেক প্রত্যাখ্যান’ মামলার রায় বাংলায় দেন এ বিচারপতি।

জাতীয়

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অসামাজিক, কুরুচিপূর্ণ বা রাষ্ট্রবিরোধী ‘কনটেন্ট’ (অডিও, ভিডিও, লেখা ও ছবি) প্রচার নিয়ন্ত্রণে নেওয়া পদক্ষেপগুলো জানাতে চেয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। এ বিষয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়, বিটিআরসি ও কপিরাইট অফিসকে তাগিদপত্র দিতে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার সংসদ সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ তথ্য জানতে চাওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি সিমিন হোসেন রিমি। বৈঠকে কমিটির সদস্য সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ, কাজী কেরামত আলী, অসীম কুমার উকিল ও সুবর্ণা মুস্তফা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত ২৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিশেষ করে লাইকি অ্যাপে কুরুচিপূর্ণ প্রচার নিয়ে আলোচনা হয়। এটি নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দেওয়া জবাব সংসদীয় কমিটির মনোপূত ছিল না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর পক্ষ থেকে নজরদারি জোরদার ও আইনি ক্ষমতা প্রয়োগ এবং পরবর্তী বৈঠকে তথ্য মন্ত্রণালয়, বিটিআরসি এবং কপিরাইট অফিসের যৌক্তিক মতামত উপস্থাপন করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

বৈঠকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় জানায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অসামাজিক, কুরুচিপূর্ণ বা রাষ্ট্রবিরোধী ‘কনটেন্ট’ প্রচার নিয়ন্ত্রণে নেওয়া পদক্ষেপগুলো জানাতে তথ্য মন্ত্রণালয়, বিটিআরসি এবং কপিরাইট অফিসকে গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর চিঠি দেওয়া হয়েছে। এখনো তার জবাব পাওয়া যায়নি। পরে কমিটি এ বিষয়ে তাগাদা দিয়ে আবারো চিঠি দেওয়ার সুপারিশ করে।

দেশে অবৈধ ইটভাটা সাড়ে চার হাজার : পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন বলেছেন, সারা দেশে (জুন ২০২২) মোট ইটভাটার সংখ্যা সাত হাজার ৮৮১টি। এর মধ্যে তিন হাজার ২৪৮টি বৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়া চার হাজার ৬৩৩টি ইটভাটা পরিবেশগত ছাড়পত্রবিহীন অবৈধভাবে পরিচালিত। ইটভাটাগুলোর মধ্যে বৈধ ৪১ দশমিক ২ শতাংশ এবং অবৈধ ৫৮.৮ শতাংশ। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে মামুনুর রহমান কিরণের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ইটভাটায় অভিযান : পরিবেশমন্ত্রী বলেন, ২০১৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত এক হাজার ৭৭২টি অভিযান পরিচালনা করে তিন হাজার ৩৭টি ইটভাটার থেকে ৭৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। ৯০৭টি ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ৮০ ব্যক্তিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বর্জ্য : এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের শহরগুলোতে দৈনিক প্রায় ৩০ হাজার কঠিন বর্জ্য উৎপন্ন হয়। আগামী ২০২৫ সালে দৈনিক বর্জ্য ৪৭ হাজারে উন্নীত হবে। কঠিন বর্জ্যরে প্রায় ১০ শতাংশ (বর্তমানে তিন হাজার টন) প্লাস্টিকজাত।

কৃষিজমি : শহীদুজ্জামান সরকারের প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, কৃষি নমুনা শুমারি (শস্য) ২০২০ অনুসারে বর্তমানে দেশে মোট কৃষিজমির পরিমাণ ২ কোটি ১৭ লাখ ৫৬ হাজার ৫৮৭ হেক্টর। এর মধ্যে চাষযোগ্য ১ কোটি ৯৪ লাখ ৭৬ হাজার ৪২ একর। দিন দিন কৃষিজমির পরিমাণ শূন্য দশমিক শূন্য (০.০২%) শতাংশ হারে কমছে।

জাতীয়

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

এরা হলেন- নকিব হোসেন আদিল সরকার ও মোখলেসুর রহমান মুকুল। সোমবার রাজধানীর দক্ষিণখান ও আশুলিয়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

মঙ্গলবার দুপুরে কাওরান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ময়মনসিংহের ত্রিশালের কাকচর গ্রামের ইউনুছ আলী নদী পারাপারে সহযোগী মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করতেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী হিসেবে রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা জুন-জুলাইয়ের দিকে ময়মনসিংহের ত্রিশালের আহমেদাবাদে একটি ক্যাম্প স্থাপন করে। মুক্তিযোদ্ধাদের নদী পারাপারে সহযোগিতার কারণে রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুছ আলীকে রাজাকারদের ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যায়। সেখানে টর্চার সেলে নির্যাতনের পর ১৫ আগস্ট সকালে তাকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়।

খন্দকার আল মঈন বলেন, শহিদ ইউনুছ আলীর ছেলে ২০১৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর ময়মনসিংহের বিচারিক আদালতে নকিব হোসেন আদিল সরকার ও মোখলেছুর রহমান মুকুলসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। পরবর্তীতে আদালত বিচারিক কার্যক্রমের জন্য মামলাটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠান। ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলা হয়।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় উভয়ের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও লুটপাটসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। পরে ২০১৭ সালে অভিযোগের তদন্ত শেষে তদন্ত সংস্থা নকিব হোসেন ও মোখলেছুরসহ ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। ওই মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। মামলার অভিযুক্ত দুই আসামি রায়ের আগেই স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেন। এ ছাড়া গত ২৩ জানুয়ারি নকিব হোসেন ও মোখলেছুরসহ সাতজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।

র‌্যাব জানায়, গ্রেফতার নকিব ও মোখলেছুর ২০১৫ সালে মামলার তদন্ত কাজ শুরুর পর থেকেই পলাতক ছিলেন। পরে ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে তারা আত্মগোপনে চলে যান। গ্রেফতার এড়াতে নকিব রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এবং মোখলেছুর আশুলিয়া ইপিজেড এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন। তারা দুইজনেই একাধিকবার বাসা পরিবর্তন করেছেন। এ সময় পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে তারা মোবাইল ফোনে অন্যের নামে রেজিস্ট্রেশন করা সিমকার্ড ব্যবহার করতেন। তাদের দুইজনের পরিবারই আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হওয়ায় প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণে তাদের নিয়মিত টাকা পাঠাত। আত্মগোপনে থাকাকালে তারা সাধারণত জনসমাগম স্থান, বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান ছাড়াও ব্যক্তিগত পরিচয় প্রকাশ পায় এমন স্থান এড়িয়ে চলতেন।