জাতীয়

সাবেক সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর ফরিদপুর-২ আসনে উপনির্বাচনে ২৬ দশমিক ২৭ শতাংশ জনগণের ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তার ছেলে শাহদাব আকবার লাবু। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা সালথা উপজেলা ও সদরপুরের কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন) আসনে মোট ৩ লাখ ১৮ হাজার ৪৭২ জন ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৮৩ হাজার ৬৯০ জন ভোটার। শতাংশ হিসেবে ভোট দিয়েছেন ২৬ দশমিক ২৭ শতাংশ ভোটার।

এ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শাহদাব আকবার লাবু ৬৮ হাজার ৮১২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের প্রার্থী জয়নুল আবেদীন বকুল মিয়া পেয়েছেন ১৪ হাজার ৮৭৮ ভোট। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এ নির্বাচনী এলাকায় ১৮টি ইউনিয়নের ১২৩টি ভোটকেন্দ্রের ৮০৬টি ভোটকক্ষে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ইভিএমে ভোটগ্রহণ করা হয়। নির্বাচনে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

প্রসঙ্গত, গত ১১ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা, সালথা ও সদরপুর একাংশ) আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যু হলে তার আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। ২৬ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন আসনটিতে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। তফসিল অনুযায়ী ১০ অক্টোবর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। ভোটগ্রহণের তারিখ নির্ধারিত ছিল ৫ নভেম্বর।

জাতীয়

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, আওয়ামী লীগের লাঠি যদি উঠে তাহলে বিএনপিকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। লাঠির রাজনীতি আওয়ামী লীগ করে না, গ্রেনেড হামলার রাজনীতি আওয়ামী লীগ করে না, সিরিজ বোমার রাজনীতি করে না, বিদ্যুৎ চুরির রাজনীতি, হাওয়া ভবনের রাজনীতি, পেট্রলবোমার রাজনীতি আওয়ামী লীগ করে না। আওয়ামী লীগ করে উন্নয়নের রাজনীতি।

শনিবার দুপু‌রে মানিকগঞ্জের গড়পাড়ায় শুভ্র সেন্টারে মানিকগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগ আয়োজিত ৯টি ওয়ার্ডের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, এ সরকার কোনো কিছুর দাম বাড়ায়নি। বিশ্ব বাজারে দাম বেড়েছে বিধায় বাংলাদেশে দাম বেড়েছে। কারণ তিনগুণ দাম দিয়ে ক্রয় করতে হচ্ছে এবং সবকিছুর খরচও তিনগুণ বেড়েছে। কাজেই পণ্যের দাম বেড়েছে। শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বে দাম বেড়েছে; কিন্তু আজ বিএনপি জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, পৌরসভা হচ্ছে জেলার ড্রয়িং রুম। কাজেই ড্রয়িং রুমের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। অর্থাৎ পৌরসভার একটা দক্ষ ও শক্তিশালী সংগঠনই পারে পুরো জেলাকে নিয়ন্ত্রণ করতে। সুতরাং আমাদের পৌরসভার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। বঙ্গবন্ধু মন্ত্রিত্ব নেননি। তিনি দলকে সু-সংগঠিত করতে মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দলের জন্য কাজ করে দলকে শক্তিশালী করেছিলেন। আমাদের সেই ইতিহাস মনে রাখতে হবে।

পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাহিদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট গোলাম মহিউদ্দিন, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ ফটো, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম পিপি, যুগ্ম সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী কামরুল হুদা সেলিম, মোনায়েম খান প্রমুখ।

জাতীয়

এবার ডেঙ্গিতে মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হয়েছে। ২০১৯ সালে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছিল ডেঙ্গি। সেবার মৃত্যু হয়েছিল ১৬৪ জনের। দুই মাস বাকি থাকতে শনিবার মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হয়েছে।

চলতি বছর ডেঙ্গিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬৭। আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ৪২ হাজার। বর্তমানে দেশের হাসপাতালগুলোয় ভর্তি আছেন প্রায় ৪ হাজার রোগী। ডেঙ্গিবাহিত এডিস মশার আক্রমণে এর বিস্তার ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এই মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার দায় কার?

বিপুল অর্থ খরচের পরও কেনইবা কর্তৃপক্ষ এডিস মশার কাছে পরাজয় বরণ করছে; তা নিয়ে হাজারো প্রশ্ন নগরবাসীর। রাজধানী ঢাকার মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার ফল ভোগ করছে পুরো দেশবাসী। কেননা, ঢাকা থেকে ডেঙ্গি ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে। এ বছর ডেঙ্গিতে ১০১ জন ঢাকায় এবং ৬৬ জন ঢাকার বাইরে মারা গেছেন। এরপরও দুই সিটি করপোরেশনের একটিও ডেঙ্গি বিস্তারের দায় নিচ্ছে না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা এডিস মশার প্রজনন রুখতে ব্যর্থ, তারা ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাবের জন্য দায়ী। ঢাকা ও সারা দেশে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গি ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর জন্য তাদের দায় নিতে হবে। কেননা সবকিছু জানা ও বোঝার পরও তারা বিজ্ঞানভিত্তিক উপায়ে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন না। এজন্যই ডেঙ্গির প্রজনন নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। বর্তমানে ঢাকায় মশার প্রজনন বৃদ্ধি বা কমার সঙ্গে ঢাকার দুই সিটির খামখেয়ালিপনা এবং কর্তব্যে অবহেলা দায়ী। কোনোভাবেই তারা তাদের এই ব্যর্থতা এড়িয়ে যেতে পারেন না। মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম ঢেলে সাজানো না হলে বিদ্যমান পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণ ঘটানো সম্ভব হবে না।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২০১৮ সালে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৬ জন। এর আগে ২০০০ সালে মারা যান ৯৩ জন। এরপর ২০০৬ সাল পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ১৪০। ২০০৭ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ৯ জন এবং ২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ডেঙ্গিতে ২৮ জনের মৃত্যু হয়। এ বছরের অক্টোবরে সর্বোচ্চ ৮৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া জুনে ১, জুলাইয়ে ৯, আগস্টে ১১ এবং সেপ্টেম্বরে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গি ভাইরাসে।

জানতে চাইলে কীটতত্ত্ববিদ এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, চলতি বছর ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়বে-এ ব্যাপারে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। সেটা পুরোপুরি মিলে গেল। আগে থেকে জানানোর পরও নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের দুর্বলতার কারণে এখন নগরবাসী জীবন দিয়ে তার খেসারত দিচ্ছে।

তিনি বলেন, ২০১৯ সালে সমন্বিত মশক নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। প্রায় চার বছর অতিবাহিত হলেও তার কোনো বাস্তবায়ন লক্ষ করা যাচ্ছে না। কার্যকর সুফল পেতে বিজ্ঞানভিত্তিক উপায়ে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। যেনতেনভাবে কার্যক্রম পরিচালনায় এডিস মশার প্রাদুর্ভাব কমবে না। পাশাপাশি নগরবাসীকেও এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে আন্তরিক হতে হবে। নিজ নিজ অবস্থান থেকে সবাইকে কাজ করতে হবে।

এ প্রসঙ্গে কীটতত্ত্ববিদ ড. মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, এডিস মশা বা মশক নিয়ন্ত্রণব্যবস্থার উন্নয়ন সিটি করপোরেশন করতে চায় কি না, সেটা নিয়েই প্রশ্ন রয়েছে। সিটি করপোরেশন যেভাবে জোড়াতালি দিয়ে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে, এতে নগরবাসীর কোনো সুফল মিলছে না।

তিনি বলেন, সবকিছু জানা-বোঝার পরও সিটি করপোরেশন বিজ্ঞানভিত্তিক উপায়ে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে না। সিটি করপোরেশনকে এখান থেকে বেরিয়ে এসে যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নইলে বিদ্যমান অবস্থার উন্নতি হবে না। বর্তমান মশার উপদ্রব বৃদ্ধি বা কমার বিষয়টি প্রাকৃতিকভাবে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। আবহাওয়ার পরিবর্তনের সঙ্গে এডিসের প্রজনন কমছে বা বাড়ছে। অবৈজ্ঞানিক উপায়ে সিটি করপোরেশন বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করলেও তাতে কাঙ্ক্ষিত সুফল মিলবে না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ঋতু পরিবর্তনজনিত কারণে এই সময়টা ডেঙ্গির প্রজনন মৌসুম। আর এবার ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়বে, মৌসুমের শুরুতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে অবহিত করা হয়েছিল। এরপরও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন, স্থানীয় সরকার বিভাগের কার্যকর তৎপরতার অনুপস্থিতি রয়েছে। যে কারণে বর্তমান সময়ে ডেঙ্গি পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। এই সময়েও ঢাকার দুই সিটির তেমন তৎপরতা নেই। ঢাকার মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বিজ্ঞানভিত্তক উপায়ে পরিচালনা করা হচ্ছে না। এ কারণে কাঙ্ক্ষিত সফলতা মিলছে না।

বছরব্যাপী সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী যে ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করা দরকার, এখানে সেসব কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে না। নেই পর্যাপ্ত বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞ জনবলও। মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে না থাকলেও কর্তারা এসব নিয়ে কোনো চিন্তা করেন না। যখন ডেঙ্গির প্রকোপ বেড়ে যায়, তখন নড়েচড়ে বসেন। মানুষের মনভোলানোর জন্য দৃশ্যমান কিছু কাজ করছেন, যেটা ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে তেমন কোনো ভূমিকা রাখছে না।

জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. জোবায়দুর রহমান বলেন, এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গি পরিস্থিতি নাজুক অবস্থার দায় কোনোভাবেই সিটি করপোরেশনের নয়, এটা বর্তমান বাস্তবতা। কেননা সিটি করপোরেশন পর্যাপ্ত জনবল, ওষুধ ও নিরবচ্ছিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সিটি করপোরেশনের জোর তৎপরতা অব্যাহত না থাকলে ডেঙ্গি পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করত। কেউ যদি সিটি করপোরেশনকে ব্যর্থ বা সামগ্রিক দায় চাপানোর চেষ্টা করে, সেটা সঠিক হবে না।

এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির বলেন, ডিএসসিসি এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করছে। কীটতত্ত্ববিদ ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ দিয়ে সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ডিএসসিসির মশক নিয়ন্ত্রণ কাজের কোনো দুর্বলতা নেই। কেউ যদি ডিএসসিসিকে ব্যর্থ বলে, সেটা সঠিক হবে না। ডিএসসিসির সার্বিক তৎপরতা ঠিক না থাকলে ডেঙ্গি পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করত। তারপরও বর্তমান পরিস্থিতির জন্য আমরা খুবই ব্যথিত।

জাতীয়

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩০তম সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ৩ ডিসেম্বর এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

শুক্রবার আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৭ মে আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সহযোগী সংগঠনগুলোকে সম্মেলন করার নির্দেশনা দেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১০ মে সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ এবং দুই সহযোগী সংগঠন মহিলা আওয়ামী লীগ ও যুব মহিলা লীগকে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সম্মেলন করার নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

ছাত্রলীগের সবশেষ ২৯তম জাতীয় সম্মেলন হয় ২০১৮ সালের মে মাসে। ওই বছরের জুলাইয়ে সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানী।

পরে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয় আল নাহিয়ান খান জয় ও লেখক ভট্টাচার্যকে। ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জয় ও লেখককে ‘ভারমুক্ত’ করা হয়। এরপর থেকে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন জয়-লেখক।

জাতীয়

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) জানিয়েছে, যেকোনো সময় নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া নাশকতা-হামলা করতে পারে। এটি হতে পারে কোনো স্বার্থান্বেষী মহলের কারণে বা জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হওয়ার কারণে।  সংগঠনটির নেতৃত্ব পর্যায়ের নির্দেশে তারা নাশকতার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ আশঙ্কার কথা জানান বাহিনীর লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কুমিল্লার লাকসাম এলাকায় অভিযান চালিয়ে জঙ্গি সংগঠটির অর্থবিষয়ক সমন্বয়ক ও হিজরতবিষয়ক সমন্বয়কসহ ৪ জনকে আটক করে র‌্যাব।  আটকরা হলেন- আবদুল কাদের ওরফে সুজন ওরফে ফয়েজ ওরফে সোহেল (২৪), ইসমাইল হোসেন ওরফে হানজালা ওরফে মানসুর (২২), মুনতাছির আহমেদ ওরফে বাচ্চু (২৩) ও হেলাল আহমেদ জাকারিয়া (৩৩)।

তাদের আটকের পর আজ বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলনে আসে র‌্যাব।

র‌্যাব জানায়, নতুন জঙ্গি সংগঠনটির তথাকথিত হিজরতের ডাকে ঘরছাড়া অর্ধশতাধিক তরুণের এখনও সন্ধান মেলেনি।  এ অবস্থায় কোনো নাশকতার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, আটকদের মধ্যে বাচ্চু সংগঠনটির অর্থবিষয়ক প্রধান সমন্বয়ক।  সোহেল ও হানজালা হিযরতকৃত সদস্যদের সমন্বয়ক। জাকারিয়া সামরিক শাখার ৩য় সর্বোচ্চ ব্যক্তি।  তাদের কাছ থেকে দুটি উগ্রবাদী বই, একটি প্রশিক্ষণ সিলেবাস, ৯টি লিফলেট, একটি ডায়েরি এবং চারটি ব্যাগ জব্দ করা হয়েছে।

যেকোনো সময় নতুন জঙ্গি সংগঠনটি নাশকতা-হামলার আশঙ্কার বিষয়ে তিনি জানান, আমরা ধরেই নিয়েছি- যেহেতু অনেকেই নিরুদ্দেশ রয়েছে, যেকোনো সময় যেকোনো ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে।  তবে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।  জঙ্গিদের নাশকতার যে বিষয় রয়েছে, সে ব্যাপারে র‌্যাব ফোর্সের সব সময়ই প্রস্তুতি থাকে।

মঈন বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অব্যাহত অভিযানের কারণে জঙ্গিবাদ এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।  কিন্তু এটা নির্মূল হয়নি।  আমরা কখনোই আত্মতুষ্টিতে ভুগি না।  যেকোনো সময়ই যেকোনো স্বার্থান্বেষী মহলের কারণে বা জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে তারা নাশকতা করতে পারে।  এ ধরনের প্রস্তুতির কথা চিন্তা করেই আমরা অভিযান পরিচালনা করছি।  এখনো আমাদের অনেক সদস্য পার্বত্য অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করছে।

‘যারা স্বেচ্ছায় নিরুদ্দেশ রয়েছেন- এমন ৫৫ জনের তালিকা রয়েছে।  তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করে যাচ্ছি।  আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে, আমাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’

আটক বাচ্চুর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে র‌্যাব কর্মকর্তা মঈন বলেন, তিনি (বাচ্চু) বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কাছে মোবাইল ব্যাংকিং বা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়েছেন।  টাকা প্রাপ্তির পর যারা প্রশিক্ষণ নিচ্ছে, হয়তো বেশকিছু অস্ত্র প্রশিক্ষণ বা নাশকতার জন্য তাদেরকে দিয়ে থাকতে পারে। বিষয়টি যাচাই করার প্রয়োজন রয়েছে।  বাচ্চু দুই ধাপে (একবার ১১ লাখ ও একবার ৭ লাখ টাকা) পাঠিয়েছেন এমন তথ্য আমরা পেয়েছি।  একে-২২ ও একে-৩২ অস্ত্র সরবরাহের তথ্য পাওয়া গেছে।  তাদের কাছ থেকে অস্ত্র প্রাপ্তির বিষয়ে আমরা নিশ্চিত হতে পারব।

মঈন আটকদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে আরও বলেন, ‘তারা জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার দাওয়াতি, সশস্ত্র প্রশিক্ষণ, হিজরতকৃত সদস্যদের তত্ত্বাবধানসহ অন্যান্য সাংগঠনিক কার্যক্রমে জড়িত ছিল।  ২-৪ বছর আগে পরিচিতদের মাধ্যমে উগ্রবাদে অনুপ্রাণিত হয়ে জ্যেষ্ঠ সদস্যদের মাধ্যমে তাত্ত্বিক ও শারীরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।  সম্প্রতি র‌্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের কারণে তারা কুমিল্লার লাকসামে আত্মগোপনে ছিলেন। এ সময়টিতে তারা সদস্য ও সমমনাদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করতেন।  এরপর সাংগঠনিক প্রয়োজনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ পাঠাতেন।

‘এ ছাড়া তারা পাহাড়ে প্রশিক্ষণরত সদস্যদের পরিবারকেও আর্থিক সহযোগিতা দিতেন।  আটক বাচ্চু চট্টগ্রামে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাংকিং বিষয়ে অধ্যয়নরত ছিলেন।  তিনি সংগঠনটির অর্থ ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান রাকিবের অন্যতম সহযোগী এবং অর্থবিষয়ক প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন।  গত ৮-৯ মাসে বিভিন্ন ধরনের ভারি অস্ত্র কিনতে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের কাছে ১৭ লাখ টাকা, সংগঠনের বিভিন্ন কার্যক্রমের প্রায় ৩০ লাখসহ প্রায় ৫০ লাখ টাকা পাঠিয়েছেন বাচ্চু।’

আটকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান খন্দকার আল মঈন।

জাতীয়

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কারও মৃত্যু হয়নি। এ পর্যন্ত দেশে করোনায় মোট মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৪২৫ জনের।

এদিন নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৮৮ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৩৫ হাজার ৭৪৫ জনে।

শুক্রবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনা বিষয়ক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও বাড়িতে উপসর্গ বিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৪৪১ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১৯ লাখ ৮২ হাজার ১১৪ জন। সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮৮৩টি ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে দুই হাজার ৬৯৫টি এবং মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে দুই হাজার ৭০৬টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে এক কোটি ৫০ লাখ ১৮ হাজার ১০২টি।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার তিন দশমিক ২৫ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৫ শতাংশ।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে এসেছেন ছয়জন ও আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ১৫০ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে এসেছেন চার লাখ ৫১ হাজার ৮২৭ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন চার লাখ ২১ হাজার ৯০৩ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ২৯ হাজার ৯২৪ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।

জাতীয়

একের পর এক হেলিকপ্টারের আকাশসীমা লঙ্ঘন, মর্টারশেল নিক্ষেপসহ সীমান্তে সাম্প্রতিক ঘটনার জন্য মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) আনুষ্ঠানিক দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং ভবিষ্যতে সীমান্ত প্রটোকলের ব্যত্যয় না ঘটানোরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। রোববার টেকনাফে ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) সঙ্গে পতাকা বৈঠকে বিজিপি দুঃখ প্রকাশ করে।

শাহপরীর দ্বীপ বিওপির পাশে সাওদার্ন পয়েন্টে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকে বিজিবির পক্ষে আট সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে দেন টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার এবং বিজিপির সাত সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ১নং বিজিপির ব্রাঞ্চ অধিনায়ক লে. কর্নেল ইয়ে ওয়াই শো।

বিকালে টেকনাফে বিজিবি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লে. কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার জানান, দুই দেশের সীমান্ত এলাকায় উদ্ভূত পরিস্থিতি ছাড়াও অবৈধভাবে মিয়ানমার নাগরিকদের অনুপ্রবেশ ও মাদক পাচার রোধ সম্পর্কে পতাকা বৈঠকে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। দুটি বন্ধুপ্রতিম দেশের সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ, আস্থা এবং নির্ভরতার পরিবেশ তৈরির জন্য ভবিষ্যতে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য গুরুত্ব আরোপ করা হয়। এছাড়া সীমান্ত এলাকা দিয়ে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর হেলিকপ্টার উড্ডয়ন, সীমান্ত এলাকায় ক্ষুদ্রাস্ত্র এবং ভারী অস্ত্রের ফায়ারিং, জানমালের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। তিনি জানান, সীমান্তে শান্তিপূর্ণ অবস্থান বজায় রাখা, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের জের ধরে যাতে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কোনো গোলা ফেলা না হয় সে ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখার বিষয়ে বিজিপিকে জানানো হয়েছে। এছাড়া বিজিবি আশা করে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংকট শিগগিরই সমাধান হবে এবং পরিস্থিতি দ্রুত শান্ত হবে। তিনি আরও জানান, সম্প্রতি সীমান্তে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার জন্য বিজিপির ব্যাটালিয়ন কমান্ডার আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

জানা গেছে, সকালে দুই স্পিডবোটযোগে বিজিপি প্রতিনিধি দলের সদস্যরা টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাট পৌঁছলে টেকনাফ বিজিবি সদস্যরা তাদের স্বাগত জানান। এরপর গাড়িযোগে তারা সাইদার্ন পয়েন্টে পৌঁছান। বৈঠক শেষে বেলা ৩টার দিকে তারা মিয়ানমারের উদ্দেশে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন।

জাতীয়

প্রয়াত মার্কিন সিনেটর এডওয়ার্ড এম কেনেডির ছেলে টেড কেনেডি জুনিয়র এবং তার পরিবারের তিন সদস্য আজ সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নিক্সন প্রশাসন পাকিস্তানের পক্ষে থাকা সত্বেও মুক্তিযুদ্ধের সময় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমানে বাংলাদেশ) সমর্থনে প্রয়াত মার্কিন সিনেটর এডওয়ার্ড এম কেনেডির অসামান্য অবদানের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, শেখ হাসিনা টেড কেনেডি জুনিয়র, তার ছেলে, মেয়ে এবং স্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের সময় ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে কেনেডি সিনিয়রের বাংলাদেশ সফরের কথাও স্মরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী কেনেডি সিনিয়রকে “বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু” বলেও অভিহিত করেন।

কানেকটিকাট স্টেট সিনেটের সাবেক সদস্য টেড কেনেডি জুনিয়র এখন ইউএস-বাংলাদেশ সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপনে যোগ দিতে ২৯ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত সাত দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছেন।

জাতীয়

একাদশ জাতীয় সংসদের ২০তম অধিবেশন আজ রোববার শুরু হচ্ছে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিকাল ৪টায় অধিবেশন বসবে। এর আগে বিকাল ৩টায় কার্য-উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে এ অধিবেশনের সময়সীমা নির্ধারণ হবে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় এ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদনেতা শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন।

সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের শেষ অধিবেশনটি সংক্ষিপ্ত হবে। ১০ নভেম্বর পর্যন্ত এ অধিবেশন চলার সম্ভাবনা আছে। তবে সংক্ষিপ্ত হলেও নানা কারণে বেশ গুরুত্বপূর্ণ এবারের অধিবেশন। এই অধিবেশনেই চারটি গুরুত্বপূর্ণ পদ-সংসদ উপনেতা, সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা, বিরোধীদলীয় উপনেতা এবং বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ পদে নতুন মুখ আসার সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারি দল আওয়ামী লীগ এবং বিরোধী দল জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে এসব পদে কারা আসছেন, তা নির্ধারণ করে স্পিকারের কাছে পাঠানোর কথা রয়েছে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে স্পিকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা যায়, অধিবেশনের শুরুতেই সভাপতিমণ্ডলী মনোনয়ন দেওয়া হবে। তারা স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে সংসদের বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন। এরপর আনা হবে শোকপ্রস্তাব। গত দুই মাসে যেসব বিশিষ্ট ব্যক্তি মারা গেছেন, তাদের নামে শোকপ্রস্তাব আনার পর এক মিনিট নীরবতা পালন শেষে প্রয়াতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত হবে। তবে চলমান সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী মারা যাওয়ায় তার জীবনী নিয়ে আলোচনা শেষে সংসদের বৈঠক মুলতুবি করা হবে। এ কারণে মন্ত্রীদের জন্য নির্ধারিত প্রশ্ন-জিজ্ঞাসা এবং উত্তর টেবিলে উত্থাপন হবে। এদিন জননিরাপত্তা বিভাগ, সুরক্ষাসেবা বিভাগ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা বিভাগ, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ, বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ এবং পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওপর প্রশ্নোত্তর রয়েছে।

সংসদ উপনেতা হিসাবে আলোচনায় মতিয়া চৌধুরীর নাম : জাতীয় সংসদের উপনেতা, প্রবীণ রাজনীতিবিদ, আওয়ামী লীগনেত্রী সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে শূন্য এ পদে কে আসছেন-এমন আলোচনা চলছে সর্বত্র। সরকারদলীয় সদস্যদের মধ্যেও এ নিয়ে আলোচনা চলছে। এই অধিবেশন চলাকালেই নতুন সংসদ উপনেতা নির্বাচন হবেন-এমনটাই জানা গেছে। কে আসছেন এই পদে, তা নিয়ে নানা গুঞ্জন থাকলেও দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর নাম সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছে। এখন সবই নির্ভর করছে সংসদনেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের ওপর।

জানতে চাইলে এ বিষয়ে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরী জানান, সংসদের অধিবেশন ডাকা হয়েছে। এখনো সংসদীয় দলের বৈঠক ডাকা হয়নি। কে জাতীয় সংসদের উপনেতা হবেন, তা এখনো স্থির হয়নি। সংসদ চলাকালে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক ডাকা হলে পরে বলা যাবে।

বিরোধীদলীয় নেতাসহ তিন পদে আসবে নতুন মুখ : সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা, উপনেতা ও চিফ হুইপ পদেও আসছে নতুন মুখ। রওশন এরশাদকে সরিয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা করার জন্য স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে ১ সেপ্টেম্বর চিঠি দেয় দলটির পার্লামেন্টারি পার্টি। ওইদিন সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত জাপার পার্লামেন্টারি বোর্ডের বৈঠকে দলটির ২৬ জন এমপির মধ্যে ২৩ জন জিএম কাদেরকে বিরোধীদলীয় নেতা মনোনয়ন করে গৃহীত প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেন।

জানা যায়, ওই চিঠির বিষয়ে স্পিকারের সিদ্ধান্ত জানার জন্য সংসদে কথা বলতে পারেন জাতীয় পার্টির সদস্যরা। জিএম কাদেরকে বিরোধীদলীয় নেতা হিসাবে স্পিকারের অনুমোদন দাবি পূরণ না হলে এর প্রতিবাদে সংসদ থেকে ওয়াকআউট করতে পারেন দলীয় সংসদ-সদস্যরা। বিরোধীদলীয় নেতা নির্বাচনের বিষয়ে দেশের সংবিধানে কিছু বলা নেই। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার স্পিকারের। সংসদের কার্যপ্রণালি বিধির ২(১)(ট)-তে বলা হয়েছে, ‘বিরোধীদলীয় নেতা’ অর্থ স্পিকারের বিবেচনামতে যে সংসদ-সদস্য সংসদে সরকারি দলের বিরোধিতাকারী সর্বোচ্চসংখ্যক সদস্য লইয়া গঠিত ক্ষেত্রমতে দল বা অধিসঙ্গের নেতা।’

এদিকে স্পিকারকে দেওয়া জাপার ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছিলেন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গাও। কিন্তু আগের অবস্থান থেকে সরে রওশন এরশাদের পক্ষ নেওয়ায় এবং স্পিকারকে দেওয়া চিঠির প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাঙ্গাকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যসহ সব পদপদবি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরপর স্পিকারের সঙ্গে দেখা করে রাঙ্গা সেই চিঠি প্রত্যাহারের আবেদন করেন।

জানা যায়, জাতীয় পার্টি বিষয়টি সুরাহা করতে আজ রোববার দুপুর ১টায় সংসদীয় দলের বৈঠক ডেকেছে। বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ পদের জন্য দলটির দুই সিনিয়র সদস্য অ্যাডভোকেট কাজী ফিরোজ রশীদ এবং ফখরুল ইমামের নাম শোনা যাচ্ছে। আজকের বৈঠকে তাদের যে কোনো একজনকে এই পদের জন্য নির্বাচিত করা হবে। আর জিএম কাদেরের বিরোধীদলীয় নেতা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হলে বিরোধীদলীয় উপনেতা হিসাবে আসবে নতুন মুখ।

উত্থাপনের অপেক্ষায় ১৭ বিল : সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এবারের অধিবেশন সংক্ষিপ্ত হবে। এ কারণে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত চলতে পারে এ অধিবেশন। এতে গণমাধ্যমকর্মী (চাকরি শর্তাবলি) বিল-২০২২ ছাড়াও বেশ কয়েকটি বিল উত্থাপন হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে পেমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট সিস্টেমস বিল-২০২২, বৈষম্যবিরোধী বিল-২০২২, বাংলাদেশ গ্যাস, তেল ও খনিজসম্পদ করপোরেশন বিল-২০২২, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন (সংশোধন) বিল-২০২২, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের বিচারক (ছুটি, পেনশন ও বিশেষাধিকার) বিল-২০২২, আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ বিল-২০২২, সরকারি চাকরি (সংশোধন) বিল- ২০২২, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল-২০২২, এভিডেন্স (সংশোধন) বিল-২০২২, জাকাত তহবিল ব্যবস্থাপনা বিল-২০২২, চট্টগ্রাম শাহী জামে মসজিদ বিল-২০২২, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন বিল-২০২২, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক কল্যাণ ট্রাস্ট বিল-২০২২, উন্নয়ন বোর্ড আইনসমূহ (রহিতকরণ) বিল-২০২২, বাংলাদেশ শিল্প নকশা বিল-২০২২, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশন বিল-২০২২। এবারের অধিবেশনে ১৭টি বিল রয়েছে। এসব বিলের মধ্যে কমিটিতে পরীক্ষাধীন ৮টি, পাশের অপেক্ষায় রয়েছে ২টি এবং উত্থাপনের অপেক্ষায় ৭টি।

১ সেপ্টেম্বর সংসদের ১৯তম অধিবেশন শেষ হয়। ২৮ আগস্ট শুরু হওয়া এই অধিবেশন চলে ৫ কার্যদিবস। শুরুর দিন নতুন ডেপুটি স্পিকার হিসাবে অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকুকে নির্বাচিত করেন সংসদ-সদস্যরা। সংবিধান অনুযায়ী একটি অধিবেশন শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে আরেকটি অধিবেশন আহ্বানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

জাতীয়

প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সারা দেশের প্রায় ৮০ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

তিনি জানান, আজ বিকালের মধ্যে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নদের ৭০ শতাংশের বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হবে এবং আগামীকাল দুপুরের মধ্যে সম্পূর্ণ বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে।

মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

প্রসঙ্গত, সিত্রাংয়ের প্রভাবে বিভিন্ন স্থানে গাছপালা পড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দেশের কোথাও কোথাও বিদ্যুতের খুঁটিও উপড়ে পড়েছে। এ কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীরা।