জাতীয়

বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির ৫৮ মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চু হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেছেন।

বুধবার (৯ আগস্ট) রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।

১২ জুন সাংবাদিকদের ব্রিফ করে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন জানিয়েছেন, ৫৯ মামলায় ১৪৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) অনুমোদন দিয়েছে দুদক। একটি ছাড়া বাকি ৫৮ মামলায় ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুকে চার্জশিটভুক্ত আসামি করা হয়েছে।

ওই দিন রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে দুদক সচিব মাহবুব হোসেন আরও জানান, বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যানসহ ৪৬ কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারীসহ এজাহারনামীয় এবং তদন্তে নাম আসা আসামিরা অসৎ উদ্দেশে পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। তারা বিশ্বাস ভঙ্গ করে অন্যায়ভাবে নিজেরা লাভবান হয়ে এবং অন্যকে লাভবান করে ভুয়া মর্টগেজ, মর্টগেজের অতিমূল্যায়ন এবং মর্টগেজ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে বেসিক ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ২ হাজার ২৬৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও পাচার করেন।

এসব ঘটনায় দুদকের পাঁচ তদন্তকারী কর্মকর্তা মোট ৫৯টি মামলা করেন। এর মধ্যে দুদকের উপপরিচালক মোহাম্মদ মোরশেদ আলম ছয়টি, মোহাম্মদ ইব্রাহিম ১৫টি, মো. মোনায়েম হোসেন ১৭টি, মোহাম্মদ সিরাজুল হক তিনটি ও মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান ১৮টি মামলার তদন্ত করেছেন। তাদের প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই কমিশন আদালতে চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দিয়েছে।

জাতীয়

সকালে রোদ ঝলমলে আকাশ দেখে ঘর থেকে বেরিয়ে ছিলেন কর্মমুখী মানুষ। কিন্তু বিধিবাম। বিকালে মাত্র আধাবেলার বৃষ্টিতে ডুবে যায় ঢাকার অধিকাংশ রাস্তা। শ্রাবণের টানা বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে তৈরি হয় জলাবদ্ধতা। রাজধানীর বসুন্ধরা, পল্টন, খিলক্ষেত, মতিঝিল, কাকরাইল, রামপুরা, শান্তিনগর, শাহবাগ, ধানমন্ডি, পুরান ঢাকা ও মিরপুর, পীরেরবাগসহ বিভিন্ন স্থানে সড়কে পানি জমে যায়। ফলে যানজট এবং গণপরিবহণ কমে যাওয়ায় ঘরে ফেরা মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়ে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে দাঁড়িয়ে এবং বৃষ্টিতে ভিজে বাসায় ফিরতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। যারা নিজস্ব গাড়িতে চলাচল করেন তারাও দীর্ঘ যানজটে নাকাল হয়েছেন। দুর্ভোগের শিকার হন শিক্ষার্থীরাও।

বিকাল ৬টার দিকে মিরপুর শেওড়াপাড়া থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে থেকে মহাখালী, বনানী, সাহারা ও কুড়িল এলাকায় সরেজমিন ঘুরে মানুষের দুর্ভোগের চিত্র চোখে পড়ে। স্থানে স্থানে মানুষের জটলা চোখে পড়ে। বাসের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা করে কেউ কেউ হেঁটেই রওয়ানা হন বাসার পথে।

আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, বিকালে ঢাকায় ৩৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮ কিলোমিটার। সকালে ঢাকার বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৭৮ শতাংশ এবং বিকালে তা বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় ৯৭ শতাংশে।

সরেজমিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় একই চিত্র। জলাবদ্ধতার কারণে সড়কে পানি জমে থাকায় যানবাহনও কম ছিল। কোথাও অটোরিকশার স্টার্ট বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সেখানে থাকা যাত্রীরা পড়েন বিপাকে। বৃষ্টিতে বেশি জলাবদ্ধতা দেখা গেছে শান্তিনগর, মগবাজার, মৌচাক, নয়াপল্টন, আরামবাগ, মতিঝিলে। এসব এলাকার অলিগলিতে হাঁটুপানি জমে। এতে যানবাহন কমে যায়। বৃষ্টির ফলে প্রগতি সরণির কুড়িল-রামপুরা সড়কের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা গেছে। এ সড়কে যানবাহন চলাচলেও ধীরগতি ছিল। এছাড়া যানস্বল্পতায় বৃষ্টিতে ভিজেও অফিস ফেরত মানুষকে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

রাজধানীর জুরাইন, শ্যামপুর, যাত্রাবাড়ী, কদমতলী এলাকার মুরাদপুর মেডিকেল রোড, হাই স্কুল রোডেও পানি জমে যায়। স্থানীয় পথচারীরা জানান, দীর্ঘ বছর ধরে রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থার কোনো সংস্কার হয়নি। ফলে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। আর বেশি বৃষ্টি হলে পানি নেমে যেতে সময় লাগে আরও বেশি। মতিঝিলের বলাকা চত্বর, শাপলা চত্বর, বাংলামোটর, পল্টন মোড়ে বাড়ি ফেরা মানুষের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। কিছুক্ষণ পরপর একটি করে গাড়ি আসার সঙ্গে সঙ্গে হুড়োহুড়ি লেগে গিয়েছিল।

বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা হারুনুর রশীদ যুগান্তরকে জানান, অফিস থেকে বের হওয়ার পর থেকেই অঝোর ধারায় বৃষ্টি চলছে।

স্টাফ গাড়ি এখনো আসেনি। সড়কে গণপরিবহণ কম থাকায় বিকল্প ব্যবস্থায়ও যেতে পারছি না। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে অফিসের নিচে অপেক্ষা করছি। শুধু আমি নই, আমার অনেক সহকর্মীরই একই অবস্থা। এদিকে উত্তরা রাজউক কলেজের শিক্ষার্থী অর্থি বাবার গাড়িতে করে যাতায়াত করেন। দুপুরে ব্যাচে প্রাইভেট পড়তে যান কুর্মিটোলায়। পড়া শেষে বিকালে মিরপুর শেওড়াপাড়ার বাসায় ফেরার পথে যানজটে পড়ে যান। এ সময় যুগান্তরকে বলেন, প্রায় আধাঘণ্টা ধরে ধীরে ধীরে গাড়ি চলছে। বাসায় কখন ফিরব জানি না।

বিকালের বৃষ্টিতে বন্ধ হয়ে যায় মতিঝিল, পল্টন, গুলিস্তানের, ফার্মগেট, মিরপুর-১০ নম্বরসহ বিভিন্ন এলাকার ফুটপাতের সব দোকান। তারাও দুর্ভোগে পড়েন। সাধারণ ফুটপাতে ঘরে ফেরা মানুষের কাছেই তাদের পণ্য বেশি বিক্রি হয়। কিন্তু বিকালের বৃষ্টি তাদের আয়-রোজগারেও বাগড়া দিয়েছে।

সূত্র জানায়, রাজধানীর জলাবদ্ধতা কমাতে ওয়াসার দায়িত্বে থাকা ২৬টি খাল দুই সিটি করপোরেশনকে হস্তান্তর করা হয়েছিল। কিন্তু এতেও খুব বেশি কাজ হয়নি। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যাচ্ছে ঢাকার প্রধান সড়কসহ অলিগলি।

জাতীয়

জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নতুন নিয়ম করেছে সরকার। ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের পতাকা বিধিমালা, ১৯৭২’ সংশোধন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

বুধবার (৯ আগস্ট) পতাকা বিধিমালায় সংশোধন এনে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারির পরে এ বিষয়ে গেজেট জারি হয়।

নতুন নিয়মে পতাকা অর্ধনমিত রাখার ক্ষেত্রে পতাকা দণ্ডের ওপর থেকে চার ভাগের একভাগ দৈর্ঘ্যের সমান নিচে ওড়াতে হবে। বিধিমালায় আগে এটি নির্ধারণ করে দেওয়া ছিল না।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ জাতীয় সংগীত, পতাকা এবং প্রতীক অধ্যাদেশ, ১৯৭২’ এর আর্টিকেল-৫ এ দেওয়া ক্ষমতাবলে সরকার ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের পতাকা বিধিমালা, ১৯৭২’-তে সংশোধন আনা হয়েছে।

বিধিমালার বিধি-৭ এর ১২ অনুচ্ছেদের পরিবর্তে নতুন ১২ অনুচ্ছেদ প্রতিস্থাপিত হবে। নতুন ১২ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- অর্ধনমিত রাখার ক্ষেত্রে পতাকা প্রথমে পতাকাদণ্ডের সর্বোচ্চ চূড়া পর্যন্ত উত্তোলন করতে হবে। এরপর পতাকা দণ্ডের এক-চতুর্থাংশের দৈর্ঘ্যের সমান নিচে নামিয়ে পতাকাটি স্থাপন করতে হবে। ওই দিবসে পতাকা নামানোর সময় ফের পতাকা দণ্ডের সর্বোচ্চ চূড়া পর্যন্ত উত্তোলন করা হবে, এরপর নামাতে হবে।

আগের বিধিমালার ১২ অনুচ্ছেদে পতাকা দণ্ডের এক-চতুর্থাংশের দৈর্ঘ্যের সমান নিচে নামিয়ে পতাকা স্থাপন করার বিষয়টি ছিল না।

সাধারণত ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ও জাতীয় শোক পালনের দিন জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।

জাতীয়

একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি মোহাম্মদ রফিক আর নেই (ইন্না লিল্লাহি… রাজিউন)। উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল থেকে ঢাকা নেওয়ার পথে রোববার রাত ৯টার দিকে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তিনি দুই ছেলে এক স্ত্রীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

কবির গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের চিতলীতে রোববার সকালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে বাগেরহাট এবং পরে বরিশাল নেওয়া হয়। বরিশালের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে বিভিন্ন পরীক্ষার পর হার্টের সমস্যাসহ বেশ কিছু শারীরিক জটিলতা ধরা পড়ে। পরে চিকিৎসকেরা তাকে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন। সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যরা কবিকে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রওনা হওয়ার পর পথেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

বেলায়েত হোসেন ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক ও কবির চাচাতো ভাই মো. শিবলী হাওলাদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তার মরদেহ বাগেরহাটে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। সেখানে দাফনের ব্যবস্থা করা হবে। মোহাম্মদ রফিক দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগসহ শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন।

কবি মোহাম্মদ রফিক ১৯৪৩ সালের ২৩ অক্টোবর বাগেরহাট সদর উপজেলার বেমরতা ইউনিয়নের বৈটপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা সামছুদ্দীন আহমদ এবং মাতা রেশাতুন নাহারের আট সন্তানের মধ্যে মোহাম্মদ রফিক সবার বড়। মোহাম্মদ রফিকের শৈশব কাটে বাগেরহাটে। মেট্রিক পাশ করে ঢাকার নটরডেম কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হন। কিন্তু পরে ঢাকা কলেজে মানবিক বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৬১ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাসের পর রাজশাহী সরকারি কলেজে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন এবং স্নাতক শেষ করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তিনি পাকিস্তানের সামরিক শাসন বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত হন। পাকিস্তানের সামরিক আদালত তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়। কিন্তু এমএ পরীক্ষার জন্য তিনি ছাড়া পান। ১৯৭১ সালে তিনি প্রথমে মুক্তিযুদ্ধের ১ নম্বর সেক্টরে এবং পরে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে কাজ করেন।

মুক্তিযুদ্ধের পর বিভিন্ন কলেজে শিক্ষকতা করার পর তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে যোগ দেন। তিনি ২৯ জুন ২০০৯ পর্যন্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। ২০১০ সালে একুশে পদক লাভ করে।

একজন মননশীল আধুনিক কবি হিসেবে পরিচিতি পাওয়া মোহাম্মদ রফিক খুলনা জেলা স্কুল থেকে ১৯৫৮ সালে মাধ্যমিক পাস করেন। কবি হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ ১৯৬০-এর দশকে। ১৯৭০ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘বৈশাখী পূর্ণিমা’ প্রকাশিত হয়। ১৯৭৬ সালে প্রকাশ পায় তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘ধুলার সংসারে এই মাটি’।

কবির উল্লেখযোগ্য অন্য কাব্যগ্রন্থগুলো হলো- কীর্তিনাশা (১৯৭৯), খোলা কবিতা ও কপিলা (১৯৮৩), গাওদিয়ায় (১৯৮৬), স্বদেশী নিশ্বাস তুমিময় (১৯৮৮), মেঘে এবং কাদায় (১৯৯১), রূপকথা কিংবদন্তি (১৯৯৮), মৎস্য গন্ধ্যা (১৯৯৯), মাতি কিসকু (২০০০), বিষখালি সন্ধ্যা (২০০৩), নির্বাচিত কবিতা (২০০৩), কালাপানি (২০০৬), নির্বাচিত কবিতা (২০০৭), নোনাঝাউ (২০০৮), দোমাটির মুখ (২০০৯), ত্রয়ী (২০০৯), মোহাম্মদ রফিক রচনাবলী-১ (২০০৯), মোহাম্মদ রফিক রচনাবলী-২ (২০১০)।

কবিতার পাশাপাশি তার গদ্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ভালবাসার জীবনানন্দ (২০০৩), আত্মরক্ষার প্রতিবেদন (২০০১), স্মৃতি বিস্মৃতির অন্তরাল (২০০২)।

জাতীয়

চকবাজারের ডিসি রোডের বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘ ছয় বছর ধরে ডিসি রোডে বসবাস করছেন। কালাম কলোনির একটি ভবনের দ্বিতীয়তলায় পরিবার নিয়ে থাকেন। পেশায় চাকরিজীবী। তিনি তিন দিন ধরে বাসায় পানিবন্দি।

ছয় বছর ধরে এই এলাকায় বসবাস করছি কিন্তু এত পানি আর কখনো দেখিনি। শুক্রবার বিকাল থেকে জলাবদ্ধতা শুরু হয়। রাতে পানি কিছুটা কমেছিল। শনিবার সকালে আবার থৈ থৈ পানি আর পানি। রাত থেকে বিদ্যুৎ নেই। এ কারণে মোটরও চলছে না। জ্বলছে না চুলা। চারদিকে অথৈ পানি থাকলেও মিলছে না রান্না-বান্না কিংবা শৌচ-কর্ম করার মতো বিশুদ্ধ পানি। এ অবস্থায় চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে।

কেবল সাইফুল ইসলাম আহাদ নন, চকবাজার, কাপাসগোলা ও বাদুরতলাসহ নগরীর নিচু এলাকার লাখ লাখ মানুষ এভাবে পরিবার নিয়ে পানিবন্দি হয়ে গত তিন দিন ধরে এক প্রকার মানবেতর জীবনযাপন করছে।

বিভিন্ন এলাকার কোথাও হাঁটু পানি আবার কোথাও কোমর সমান পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ রাখা হয়েছে।

রোববার সকালে নগরীর চকবাজার মুরাদপুরসহ কয়েকটি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পানি আর পানি। পাহাড়ি ঢল ও আর বৃষ্টির পানিতে পুরো নগরী যেন পরিণত হয় নদীতে।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবহওয়াবিদ জহিরুল ইসলাম বলেন, রোববার বিকাল ৩টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ২৩১ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এছাড়া গত তিন দিনে যে বৃষ্টিপাত হয়েছে তা এ মৌসুমের সর্বোচ্চ রেকর্ড। সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এই ভারি বর্ষণ হচ্ছে। তা আরও দুই দিন অব্যাহত থাকতে পারে। চট্টগ্রামে ভারি বর্ষণের সঙ্গে যোগ হয়েছে কর্ণফুলীর জোয়ার ও পাহাড়ি ঢলের পানি।

চকবাজারের সৈয়দ শাহ রোডের বাসিন্দা গোলাম সারওয়ার জানান, বাসার নিচে তিন দিন ধরে পানি জমে আছে। কোথাও বের হতে পারছি না। দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। সকালে কোনো রকমে নাস্তা করেছি। দুপুরে কি করব জানি না। পানির কারণে বাইরে থেকেও খাবার আনা যাচ্ছে না।

নগরীর রাসূলবাগ আবাসিক এলাকার বাসিন্দা ফরিদুল আলম বলেন, শনিবার শেষরাতের দিকে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি বাসায় উঠে গেছে। ঘর থেকে বের হওয়াই যাচ্ছে না। এর মধ্যে গাছের একটি খুঁটি ভেঙ্গে বিদ্যুতের তারের ওপর পড়েছে। পুরো এলাকা বিদ্যুৎবিহীন। যেন নরক যন্ত্রণায় আছি।

শ্রাবণের প্রবল বর্ষণে এবার সবচেয়ে বেশি জলাবদ্ধতা হয়েছে বহদ্দারহাট, বাদুরতলা, শুলকবহর, মোহাম্মদপুর, কাপাসগোলা, চকবাজার, বাকলিয়ার বিভিন্ন এলাকা, ফিরিঙ্গিবাজারের একাংশ, কাতালগঞ্জ, শান্তিবাগ আবাসিক এলাকা, কে বি আমান আলী রোড, চান্দগাঁওয়ের শমসের পাড়া, ফরিদার পাড়া, পাঠাইন্যাগোদা, মুন্সী পুকুরপাড়, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকাসহ বিভিন্ন আবাসিক এলাকায়। অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকায় জমে থাকা পানির উচ্চতা অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় সড়ক দিয়ে মানুষ চলাচল করতে পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন দুর্ভোগ।

এর মধ্যে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে জোয়ারের পানি। জোয়ারের ফলে আগ্রাবাদ, বন্দর, ইপিজেডের বিভিন্ন এলাকায় পানির উচ্চতা বেড়ে গেছে। যেখানে আগে হাঁটু পানি উঠতো সেখানে এখন কোমর সমান পানি। বাসা-বাড়ি, দোকানপাটেও পানি ঢুকে পড়েছে। দুই নম্বর গেট মুরাদপুর ও চকবাজার ব্যস্ততম সড়কের ওপর দিয়ে  প্রবাহিত হচ্ছে পানির স্রোত।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হলেও এর সুফল মিলছে না। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন- (চসিক) এ জন্য জলাবদ্ধতা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (চউক) দায়ী করলেও চউক দায়ী করছে চসিককে।

এই সংস্থার দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, নালা-নর্দমা ঠিকমতো পরিষ্কার না করার কারণে বৃষ্টির পানি নামতে পারছে না। এতে করে জলাবদ্ধতা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। দুই সংস্থার পরস্পর দোষারোপের বলি হতে হচ্ছে নগরীর লাখ লাখ বাসিন্দাকে।

এবারের জলাবদ্ধতায় বাসা-বাড়ি, দোকান-পাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে কোটি কোটি টাকার আসবাবপত্র, পণ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। স্বয়ং বহদ্দারহাটে মেয়রের বাসভবন তিন ধরে পানির নিচে রয়েছে। গাড়ি ছেড়ে তাকে রিকশা কিংবা পায়ে হেঁটে পানি মাড়িয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে কর্মস্থলে।

চট্টগ্রাম ওয়াসা, পানি ভবন, নগরীর চান্দগাঁও থানার নিচতলা পানিতে তলিয়ে আছে। রোববারের জোয়ার-বৃষ্টি ও ঢলের পানিতে ডুবে ছিল কালুরঘাটে ফেরি চলাচলের জন্য স্থাপিত পন্টুন। দুই পাড়ের মানুষতে ফেরি পারাপারে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বৃদ্ধ ও শিশু এবং রোগীদের কোলে করে পারাপার করতে দেখা যাচ্ছে। এ সময় রিকশা কিংবা গাড়ি থেকে পানি ছিটকে পড়ে দুর্ঘটনার মুখোমুখি হতে হচ্ছে যাত্রীদের।

বাণিজ্যিক এলাকা চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে ভিজে গেছে লাখ লাখ টাকার পণ্য। একই অবস্থা রিয়াজউদ্দিন বাজার এলাকায়ও। রিয়াজউদ্দিন বাজারের শত শত দোকানে পানি ঢুকেছে। টানা তিন দিন পানিতে ডুবে আছে রিয়াজউদ্দিন। দোকানে পানি ঢুকে পড়ার কারণে একদিকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কোটি কোটি টাকা অন্যদিকে ব্যবসা বাণিজ্যেও স্থবিরতা নেমে এসেছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, রিয়াজউদ্দিন বাজারের গোলাম রসুল মার্কেট, আরএস রোড, বাহার লেইন, পশ্চিম বাজার, মশারি গলি, রহমতুন্নেচ্ছা রোড এবং জেবুন্নেচ্ছা রোডে হাঁটু পানি উঠে। এসব রোডে থাকা মার্কেট ও দোকানে পানি ঢুকে যায়। রিয়াজউদ্দিন বাজারের মোবাইল মার্কেটেও পানি ঢুকে যায়।

রিয়াজউদ্দিন বাজারে ব্যবসায়ী আবদুল হামিদ বলেন, টানা তিন দিনের ভারি বর্ষণে রিয়াজউদ্দিন বাজারের শত শত দোকানে পানি ঢুকেছে। আগে যেসব দোকানে পানি ঢোকেনি সেসব দোকানেও এবার পানি ঢুকেছে। শুক্রবার বন্ধ থাকলেও শনিবার ও বোরবার কোনো ব্যবসা বাণিজ্যই হয়নি। কাপড়ের দোকানে পানি ঢুকে কোটি টাকার কাপড় নষ্ট হয়ে গেছে।

রিয়াজউদ্দিন বাজার এলাকার বাসিন্দা হুমায়ুন কবির জানান, এ বছর রিয়াজউদ্দিন বাজারে স্মরণকালের রেকর্ড ভঙ্গ করে পানি উঠেছে। রিয়াজউদ্দিন বাজারের প্রবেশপথে প্রায় কোমর সমান পানি হয়েছে। এখানে ড্রেন বড় করে কালভার্ট বানানো হয়েছে। তারপরও অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি।

জাতীয়

উপনির্বাচনে নির্বাচিত নেত্রকোনা-৪ আসনের এমপি সাজ্জাদুল হাসান এবং চট্টগ্রাম-১০ আসনের এমপি মো. মহিউদ্দিন বাচ্চু শপথ নিয়েছেন।

রোববার স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদ ভবনের শপথ কক্ষে তাদের শপথবাক্য পাঠ করান।

সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব কেএম আব্দুস সালাম শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।

শপথ অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি উপস্থিত ছিলেন।

শপথ গ্রহণ শেষে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য সাজ্জাদুল হাসান ও নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য মো. মহিউদ্দিন বাচ্চু রীতি অনুযায়ী শপথ বইয়ে সই করেন।

এ সময় সংসদ সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় রাজনীতি
বিগত ০৩~০৮~২০২৩ ইং তারিখ রোজ বৃহস্পতিবার জেলর সর্বশেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান “বড়চাপা বহুমূখী ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা”-র হলরুমে আলিম পরিক্ষার্থীদের বিদায় ও দোয়ার অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন GGN24.COM  সম্পাদক ,  সোনার বাংলা।টিভি -র চেয়ারম্যান ও দৈনিক বাংলাদেশের আলো পত্রিকার সহঃ সম্পাদক মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান, তিনি উল্লেখিত মাদ্রাসার গর্ভনিং বডির সভাপতি।

তাছাড়াও উক্ত অনুষ্ঠানে বর্তমান ও বিদায়ী ছাত্র/ছাত্রীদের দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য করেন সভাপতি মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান,

প্রতিষ্ঠানটির স্বনামধন্য অধ্যক্ষ আলহাজ্ব মোঃ মোশারফ হোসেন, সিঃ প্রভাষক মোঃ নজরুল ইসলাম, সিঃ প্রভাষক ইকবাল হোসেন, সিঃ শিক্ষক আসাদুজ্জামান, সিঃ শিক্ষক কবির হোসেন, অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন তথ্য ও প্রযুক্তি শিক্ষক মোঃ মানিক সাহেব।
জাতীয়

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র স্থাপনের জন্য তালিকা প্রণয়নে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তালিকা চূড়ান্ত করে পাঠাতে বলেছে সংস্থাটি।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আর অনুলিপি দেওয়া হয়েছে সব জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও)। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে ভোটকেন্দ্র স্থাপন কমিটির আহ্বায়ক।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভোট ছিল ১০ কোটি ৪২ লাখ। সে সময় সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪০ হাজার ৬৫৭টি। এর মধ্যে যাচাই বাছাই শেষে ৪০ হাজার ১৯৯টি কেন্দ্র চূড়ান্ত করা হয়।

বর্তমানে দেশে ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯০ লাখ ৬১ হাজার ১৫৮। এক্ষেত্রে এবার কেন্দ্র আরও বাড়বে।

সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন সংসদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র স্থাপনের যে নীতিমালা করেছে সেখানে জেলা পর্যায়ে ডিসিকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। এতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন বিভাগীয় কমিশনারের প্রতিনিধি, পুলিশ সুপার, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের প্রতিনিধি, জেলা শিক্ষা অফিসার, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার। আর সদস্য সচিব করা হয়েছে সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা অথবা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে।

অন্যদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রধান করে উপজেলা পর্যায়ে করা হয়েছে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি। এতে সদস্য হিসেবে রয়েছে উপজেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও অফিসার ইনচার্জ। আর সদস্য সচিব করা হয়েছে উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তাকে।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের পাঠানো চিঠিতে সংশ্লিষ্ট কমিটিকে নিয়ে ভোটকেন্দ্রে তালিকা করতে একটি সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে ইসি। এতে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের জন্য ১৬ আগস্ট, সেই তালিকার ওপর দাবি-আপত্তি নেওয়ার শেষ সময় ৩১ আগস্ট, দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তির শেষ সময় ১১ সেপ্টেম্বর ও খসড়া ভোটকেন্দ্রের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের জন্য ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছ। আর খসড়া ভোটকেন্দ্রে চূড়ান্ত তালিকা ইসি সচিবালয়ে ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পাঠাতে বলেছে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি।

নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর এ বিষয়ে বলেছেন, মাঠ পর্যায় থেকে পাঠানো তালিকা যাচাই বাছাই করে চূড়ান্ত ভোটকেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন।

ইতোমধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আগামী অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ বা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের দিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। আর নির্বাচন হবে আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে।

ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, তফসিল ঘোষণার আগের ভোটকেন্দ্রের তালিকা চূড়ান্ত করতে হয়। হাতে সময় আছে তিন মাসের মতো। তাই এখন থেকেই ভোটকেন্দ্র স্থাপনের কার্যক্রম হাতে না নিলে সময় সংকুলান হবে না।

নীতিমালা অনুযায়ী- যাতায়াতের সুবিধা, ভবনের আয়ুষ্কাল, ভোটার বৃদ্ধি, সরকারি ভবনকে প্রাধান্য দেওয়া, প্রভাবাধীন বা উন্মুক্ত নয় এমন স্থানে ভোটকেন্দ্র না করা, রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গের নামে স্থাপিত প্রতিষ্ঠানে ভোটকেন্দ্র না করা, শারীরিকভাবে পিছিয়ে পড়াদের কথা বিবেচনায় নিয়ে ভোটগ্রহণ স্থাপন প্রভৃতি বিষয় আমলে নিতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো ব্যত্যয় হলে যেকোনো ভোটার দাবি-আপত্তি জানাতে পারবেন।

জাতীয়

২০২২ সালের চেয়ে চলতি বছর জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগে মৃত্যু ২৫ গুণ বেড়েছে। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ১৯ গুণ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গু বিষয়ক তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গতবছর জানুয়ারি মাসের ১ তারিখ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল দুই হাজার ৬৬০ ব্যক্তি।

চলতি বছরের ৩১ জুলাই পর্যন্ত ৫১ হাজার ৮৩২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। অর্থাৎ গতবছরের তুলনায় চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ১৯ গুণেরও বেশি।

গত বছর জানুয়ারি মাসের ১ তারিখ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত দেশে মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন ১০ জন। চলতি বছরের ৩১ জুলাই পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৫১ জন। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ২৫ গুণ।

জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস ডেঙ্গু রোগের মৌসুম হলেও বর্তমানে প্রায় সারা বছরজুড়েই ডেঙ্গুরোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। বর্ষা মৌসুমের আগেই হানা দেওয়া ডেঙ্গুর প্রকোপ ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে। বর্তমান পরিস্থিতি সার্বিক বিচার বিশ্লেষণ করে আগামী আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও ভয়াবহ হবে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের। এতে চলতি বছরে ডেঙ্গু পরিস্থিতির অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকেই।

বর্তমান ডেঙ্গু প্রতিরোধ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশার বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের ডেঙ্গুর হট স্পট ম্যানেজমেন্ট করা দরকার। ডেঙ্গু রোগীদের ঠিকানা বের করে, ওই ব্যক্তির বাড়ির আশেপাশে ফগিং করে উড়ন্ত মশাগুলোকে মেরে ফেলতে হবে। কারণ, এই উড়ন্ত মশাগুলোই এই মুহূর্তে ইনফেক্টেড মশা, এই মশাগুলো যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন জ্যামিতিক হারে ডেঙ্গু ছড়াবে।

সোমবার (৩১ জুলাই) গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চারজন মারা গেছেন। একই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে আরও দুই হাজার ৬৯৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

বর্তমানে সারা দেশে মোট নয় হাজার ৩৮৬ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ঢাকা সিটিতে পাঁচ হাজার ১১ জন এবং সারা দেশে (ঢাকা সিটি ব্যতীত) চার হাজার ৩৭৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

গত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল সর্বমোট ৬২ হাজার ৩৮২ জন এবং ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ২৮১ জন মারা যান।

জাতীয়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে ২০২৩ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে এক অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির কাছ থেকে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার সম্মিলিত ফলাফলের পরিসংখ্যান গ্রহণ করে এই ফলাফল প্রকাশ করেন।

নয়টি সাধারণ, একটি মাদ্রাসা ও একটি কারিগরি শিক্ষা বোর্ডসহ ১১টি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানগণ নিজ নিজ বোর্ডের ফলাফলের পরিসংখ্যান প্রধানমন্ত্রীর নিকট হস্তান্তর করেন।

শিক্ষার্থীরা www.educationboardresults.gov.bd এই ওয়েবসাইটে ঢুকে নিজেদের রোল নন্বর এবং রেজিস্ট্রেশন নন্বর দিয়ে পরীক্ষার ফল জানতে পারবে।

এছাড়ও, শিক্ষার্থীরা ১৬২২২ এ  এসএমএস পাঠিয়ে পরীক্ষার ফল জানতে পারবে।

এক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীদের মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে ssc <> দিয়ে শিক্ষা বোর্ডের প্রথম তিনটি অক্ষর লিখে তারপর রোল নন্বর<> তারপর পরীক্ষার বছর লিখে ১৬২২২ নন্বরে সেন্ড করলে পরীক্ষার ফল জানতে পারবে।

উদাহরণ স্বরুপ, একজন শিক্ষার্থীকে SSC<>DHA<>ROLL<>YEAR  লিখতে হবে। মোবাইলের মেসেজ অপশনে পরীক্ষার ফল পাওয়া যাবে।

২০২৩ সালে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১১টি শিক্ষা বোর্ডে ১০,২৪,৯৮০ জন বালক ও ১০,৫৩,২৪৬ জন বালিকাসহ প্রায় ২০,৭৮,২১৬ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। ২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিল থেকে ২৩ মে পর্যন্ত তত্ত্বীয় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সচিব সুলেমান খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।