জাতীয়

কুষ্টিয়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকার শতকোটি টাকার সম্পদের উৎসের সন্ধানে নেমে আরও হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের সন্ধান পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এতে দুদকের তদন্তের জালে আটকে গেলেন ওই স্কুল শিক্ষিকার স্বামী কুষ্টিয়া সদর উপজেলার চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা।

ফলে দুদকের সদর দপ্তর থেকে পাঠানো নির্দেশনায় এখন আর কেবল ০৪ নং পৌর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শাম্মী আরা পারভীনের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদই নয়, আতাউর রহমান আতার অবৈধ সম্পদের সন্ধানও করা হচ্ছে।

সে লক্ষ্যে সমন্বিত দুদক কুষ্টিয়া কার্যালয়ের উপ-পরিচালক জাকারিয়া স্বাক্ষরিত একটি ইনকোয়ারি পত্র সরকারের সবগুলো দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে ১৩ এপ্রিলের মধ্যে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো দিতে অনুরোধ করেন দুদকের ওই কর্মকর্তা।

দুদক কুষ্টিয়া কার্যালয়ের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, সবগুলো তথ্যই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সরকারি ওইসব দপ্তরগুলো পাঠিয়েছে। এখন সেগুলো যাচাই বাছাই শেষে সঠিক তথ্যের মানদণ্ড বা মেরিট ধরে মামলা চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। তবে অভিযোগ নাকচ করেছেন ওই শিক্ষিকা শাম্মী আরা পারভীন।

তিনি বলছেন, একটি প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক গ্রুপ হীন স্বার্থ চরিতার্থ করতেই পরিকল্পিতভাবে এসব অভিযোগ দাঁড় করিয়েছে। জ্ঞাত আয় বহির্ভূত বা অপ্রদর্শিত কোনো সম্পদ আমার নেই। দুদক মামলা করলে আমি তা মোকাবিলা করব।

দুদক সূত্রে জানা যায়, গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে দুদক সদর দপ্তরে পাওয়া একটি অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, কুষ্টিয়া শহরের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শাম্মী আরা পারভীনের বিভিন্ন ব্যাংকে চলমান নানা ধরনের সঞ্চয়ী স্কিম হিসাবে নগদ প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা রয়েছে। এছাড়া তার উচ্চমূল্যের জমি, ভবন, মার্কেট রয়েছে। তার স্থাবর অস্থাবর সব সম্পত্তির আনুমানিক মূল্যমান শতকোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। একজন স্কুলশিক্ষিকার ব্যাংক হিসাবে একসঙ্গে জমাকৃত এতো টাকার উৎসের সন্ধান শুরু করে দুদক। এ সময় শাম্মী আরা পারভীনের অধিকাংশ ব্যাংক হিসাবের ট্রানজেকশনের সূত্রে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতার নাম উঠে আসে। এ কারণেই এটি হয়ে ওঠে দুদক তদন্তের টার্নিং পয়েন্ট। যে কারণে গত বছরের মধ্যবর্তী সময়ে শাম্মী আরা পারভীনের মামলার সঙ্গে মুখ্য হয়ে ওঠে তার স্বামী আতাউর রহমান আতার সম্পদের অনুসন্ধানের বিষয়টি। তাই ট্যাগিং সিস্টেমে স্বামী-স্ত্রী দু’জনের মামলাই একসঙ্গে প্রক্রিয়াধীন।

কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শহিদুর রহমান জানান, ২০১৯ সালের এপ্রিলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত কুষ্টিয়া সদর উপজেলার চেয়ারম্যান মো. আতাউর রহমান আতা তার প্রার্থিতা পত্রের সঙ্গে সংযুক্ত অঙ্গীকারনামায় স্ত্রী ও নিজের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির বিবরণে যথাক্রমে ১৫ লাখ ও চার লাখ ৮৮ হাজার টাকার ব্যাংক হিসাব এবং সম্পদের উল্লেখসহ সরকারি কোনো লাভজনক উন্নয়ন প্রকল্পের ঠিকাদার নন বলে অঙ্গীকার করেন।

দুদকের নোটিশ সূত্রে আরও জানা যায়, চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা ও তার স্ত্রী শাম্মি আরা পারভীনকে ১৩ এপ্রিলের মধ্যে দুদকের নির্দিষ্ট ছকে সব সম্পত্তির হিসাব দাখিল করতে বলা হয়। 

সমন্বিত দুদক কুষ্টিয়া জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. জাকারিয়া জানান, আতাউর রহমান আতার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বালুমহাল ব্যবসা, হাট-বাজার ইজারা, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা খাত থেকে অর্জিত অবৈধ সম্পদের হিসাবে এক হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে স্বামীর রাজনৈতিক প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে অবৈধ পন্থায় অর্জন করা শত কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শাম্মী আরা পারভীনের।

কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী মুন্সি মো. মনিরুজ্জামান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহিদুর রহমান মণ্ডল, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিরুল ইসলাম, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম, শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌলী মো. ইসতিয়াক ইকবাল হিমেলসহ দুদকের চিঠিপ্রাপ্ত দপ্তরগুলো সূত্রে জানা যায়, দুদকের পাঠানো চিঠিতে কেবলমাত্র মেসার্স আতাউর রহমান নামক ফার্মের স্বত্ত্বাধিকারী আতাউর রহমানের সব তথ্য পাওয়া সম্ভব নয়। কারণ আতাউর রহমান আতার নিজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও অন্তত আরও অর্ধ ডজন অন্যান্য নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যেগুলোতে তিনি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যাদেশ পেয়েছেন।

কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের রাজস্ব বিভাগের একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে এক ভুয়া মামলাবাজকে দিয়ে জেলার ২১টি বালু মহাল থেকে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আয় করেছেন প্রায় ৬৫০ কোটি টাকা, যা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

স্থানীয় আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ভেড়ামারা উপজেলার ষোল দাগ গ্রামের বাড়ি থেকে ২০১২ সালে কুষ্টিয়া শহরের মজমপুরের একটি ভাড়া বাড়িতে ওঠেন তিনি। এরপর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান মোমিজ আপত্তিকর এক ভিডিওর জেরে দল থেকে বহিষ্কার হলে আতাউর রহমান ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হন। পরে কাউন্সিলের মাধ্যমে ভারমুক্ত হন তিনি। সর্বশেষ ২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হন। এরপর আর তাকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।

অভিযোগ আছে, স্কুল, কলেজ ও মাদরাসাসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ ছাড়াও সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বাণিজ্য করে শতকোটি টাকা হাতিয়েছেন তিনি। এছাড়া কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল নির্মাণে আর্থিক দুর্নীতির ঘটনা জেলার সবাই জানে।

জাতীয়

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদন প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, মার্কিন প্রতিবেদন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আমরা ব্যাখ্যা চাইবো। তাদের সঙ্গে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবো।

রোববার (১৭ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে এ কথা বলেন তিনি।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেদনে এমন অনেক উৎস থেকে তথ্য নেওয়া হয়েছে, যাদের পলিটিক্যাল এজেন্ডা রয়েছে। আমরা আশা করবো, যাদের কাছ থেকে তারা তথ্য নিচ্ছেন, তাদের নিকট অতীত তারা আরও বিস্তারিত জেনে নেবেন। নিকট অতীতে তারা কী করেছে, সেটা জানা প্রয়োজন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সালে আইন ও শালিস কেন্দ্রের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২৭৫টি বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। তবে মার্কিন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে ৬০৬টি। তাই মার্কিন প্রতিবেদনের কোয়ালিটি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

শাহরিয়ার আলম বলেন, বাংলাদেশ আইএলও’র ৮টি ধারা রেটিফাই করেছে। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মাত্র ২টি ধারা রেটিফাই করেছে। যারা নিজেরাই শ্রম আইনের রেটিফাই করেনি, তারাই আবার অন্যদের পরামর্শ দেয়।

তিনি বলেন, মার্কিন প্রতিবেদন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আমরা ব্যাখ্যা চাইবো। তাদের সঙ্গে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবো।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, র‍্যাব এখন একটি ব্র্যান্ড নেম। র‍্যাব আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও জঙ্গি-সন্ত্রাসী প্রতিরোধে ভূমিকা রেখেছে।

গত ১২ এপ্রিল প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সমালোচনা করা হয়।

জাতীয়

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, চলতি হজ্ব মৌসুমে বাংলাদেশ থেকে ৫৭ হাজার ৮৫৬ জন হজে যেতে পারবেন।

তিনি আজ জেলার ইসলামপুর উপজেলার ৭নং পাথর্শী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভা, ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।

ফরিদুল হক খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দেশের যে উন্নয়ন করেছে, অতীতের কোন সরকার তা করতে পারেনি।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে আবারও শেখ হাসিনা সরকার দেশ পরিচালনা করতে পারবে। এ লক্ষ্যে নিজেদের মধ্যকার ভুল বুঝাবুঝি দূর করে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, দলের নেতাকর্মীদেরকে সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রমের কথা জনগণের কাছে তুলে ধরতে হবে।

পাথর্শী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইফতেখার আলমের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল বারী লিচুর সঞ্চালনায়

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট এস এম জামাল আব্দুন নাছের ও ইসলামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আব্দুস ছালাম।

জাতীয়

পহেলা বৈশাখে রমনা বটমূলে বোমা হামলা মামলা ২১ বছর ধরে নিষ্পত্তির অপেক্ষায়। হত্যা মামলার রায় হলেও উচ্চ আদালতে তা প্রায় ৮ বছর ধরে বিচারাধীন। আর বিস্ফোরক আইনে দায়ের হওয়া মামলাটি বিচারিক আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।

বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি এএসএম আব্দুল মোবিনের হাইকোর্ট বেঞ্চে ১৯ জানুয়ারি ডেথ রেফারেন্সটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় ছিল। ১৪ মার্চ মামলাটির শুনানির কথা ছিল, কিন্তু বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ আপিল বিভাগে নিয়োগ পেলে ওই বেঞ্চটি ভেঙে যায়। মামলার নথি চলে যায় প্রধান বিচারপতির কাছে। এখন প্রধান বিচারপতি অন্য একটি বেঞ্চে পাঠালে সেখানে মামলাটির শুনানি হতে পারে।

ওই বেঞ্চে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহিন আহমেদ খান। তিনি বুধবার যুগান্তরকে বলেন, ডেথ রেফারেন্সটি এর আগেও কয়েকটি বেঞ্চের তালিকায় শুনানির জন্য ছিল। আদালত রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সময় দিয়েছিলেন। সর্বশেষ আমরা শুনানির জন্য প্রস্তুতি নিলেও বেঞ্চটি ভেঙে যায়।

আইনজীবীরা বলছেন, বিচারিক আদালতে কোনো আসামির মৃত্যুদণ্ড হলে তা কার্যকরে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে, যা ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) মামলা হিসাবে পরিচিত। নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্স অনুমোদনের জন্য বিচারিক আদালতের রায় ও নথিপত্র হাইকোর্টে পাঠানো হয়। আর সাজার রায়ের বিরুদ্ধে দণ্ডিত ব্যক্তিরা কারাগারে থেকে জেল আপিল করতে পারেন। এ ছাড়া দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে নিয়মিত আপিল ও বিবিধ আবেদনও করতে পারেন। ডেথ রেফারেন্স শুনানির পূর্বপ্রস্তুতি হিসাবে পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) তৈরি করতে হয়। প্রক্রিয়া শেষে ডেথ রেফারেন্স, আসামিদের আপিল, জেল আপিল ও আবেদনের ওপর একসঙ্গে শুনানি হয়ে থাকে।

জানা গেছে, এই মামলাটিতে ২০১৬ সালে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য ছিল। ওই বেঞ্চে শুনানি শুরু হলেও পরবর্তীতে এই আদালতের এখতিয়ার পরিবর্তন হওয়ায় মামলাটির শুনানি বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে মামলাটি হাইকোর্টের আরও কয়েকটি বেঞ্চের কার্যতালিকায় এলেও আদালতের এখতিয়ার পরিবর্তন ও বেঞ্চের বিচারকের পরিবর্তন এবং করোনাভাইরাসের সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে শুনানি বন্ধ হয়ে যায়। তবে দীর্ঘদিন পর মামলাটি শুনানির জন্য আবারও হাইকোর্টের কার্যতালিকায় আসে।

বাঙালির ঐতিহ্যের অন্যতম একটি উৎসব পহেলা বৈশাখ। সেই অনুষ্ঠানে ২০০১ সালে চালানো হয় নারকীয় বোমা হামলা। ছায়ানটের অনুষ্ঠানে সেই হামলায় নিহত হন ১০ জন, আহত হন শতাধিক। ঘটনার পরপরই হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে মামলা করা হয়। ঘটনার প্রায় ১৩ বছর পর হত্যা মামলার রায় দেন বিচারিক আদালত। ২০১৪ সালের ওই রায়ে মুফতি হান্নানসহ ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই বছরের ২৬ জুন ফাঁসির রায় অনুমোদনের জন্য ঢাকার আদালত থেকে হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স পাঠানো হয়। কারাবন্দি আসামিরাও আপিল করে। এরপর প্রধান বিচারপতির নির্দেশে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পেপারবুক প্রস্তুত করা হয়।

জানতে চাইলে ডেথ রেফারেন্স শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার আব্বাস আলী যুগান্তরকে বলেন, রমনা বটমূলে বোমা হামলা মামলার রায়ের নথি হাইকোর্টে আসার পর যথারীতি পেপারবুক প্রস্তুত করা হয়। মামলাটির ডেথ রেফারেন্স এখনো শুনানি হয়নি। এটা সম্পূর্ণ প্রধান বিচারপতির এখতিয়ার।

মামলার প্রধান আসামি মুফতি হান্নানের ফাঁসি সিলেটের একটি মামলায় (ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা মামলা) কার্যকর হওয়ায় এই মামলায় তার আর বিচার হচ্ছে না। ফলে এ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন-মাওলানা আকবর হোসেন, আরিফ হাসান সুমন, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুর ভাই মো. তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, আবদুল হাই ও শফিকুর রহমান।

এদের মধ্যে তাজউদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম বদর, আবু বকর, শফিকুর রহমান ও আবদুল হাই পলাতক। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-শাহাদাত উল্লাহ জুয়েল, সাব্বির, শেখ ফরিদ, আব্দুর রউফ, ইয়াহিয়া ও আবু তাহের। এরা সবাই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের নেতাকর্মী।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু জানান, বিস্ফোরক মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণের প্রায় শেষ পর্যায়ে। দুই বছর করোনার কারণে বিচার বিলম্বিত হয়েছে।

দীর্ঘদিনেও শুনানি না হওয়ায় সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, আলোচিত এই মামলাটির ডেথ রেফারেন্স ৮ বছর ধরে হাইকোর্টে পড়ে থাকা দুঃখজনক। দ্রুত মামলাটির শুনানি হওয়া দরকার। জাতি এটা প্রত্যাশা করে।

জাতীয়

মহামারীর ধাক্কা সামলে দুই বছর পর বাংলা নববর্ষ উদযাপনে মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানে মানুষের অংশগ্রহণ নির্বিঘ্ন করতে রাজধানীর ৩৭টি পয়েন্টে যান চলাচল বন্ধ রাখা হবে।

রমনা পার্ক এবং ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর কেন্দ্রিক সড়কগুলোতে রোডব্লক বসানো হবে এবং বেশ কিছু সড়কে ডাইভারশন থাকবে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

বৈশাখের ভোরে ঢাকার রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণের আয়োজনের পাশাপাশী চারুকলা থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হবে। বৈশাখী মেলাও বসবে বিভিন্ন স্থানে।

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে গত দুই বছর ঘরবন্দি অবস্থায় বৈশাখ এসেছিল বাঙালির জীবনে।নিষ্প্রাণ দুই বৈশাখ পেরিয়ে নতুন বছরের প্রথম প্রহরে আবারও প্রাণ ফিরবে রমনা ও শাহবাগে।

বটমূল-মঙ্গল শোভাযাত্রায় প্রাণ ফিরছে বৈশাখে

এসব এলাকার নিরাপত্তা প্রস্তুতি দেখতে মঙ্গলবার রমনা বটমূলে এসে ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, “রোডব্লক বসানো স্থান থেকে কোনো গাড়ি চলবে না। পায়ে হেঁটে চলাচল করতে হবে।”

সকাল পরিয়ে গেলে মানুষের দুর্ভোগ কমানোর জন্য বেলা ২টার পর সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল করতে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

পয়েন্টগুলো হল- সোনারগাঁও ক্রসিং, বাংলামটর ক্রসিং, পরিবাগ গ্যাপ, নৌবাহিনীর ভর্তি তথ্য কেন্দ্রের গলি, পুলিশ ভবন ক্রসিং, সাকুরার গলি, সবজি বাগান ক্রসিং, মিন্টুরোড পূর্বপ্রান্ত, মগবাজার ক্রসিং (বাংলামটরমুখি একপাশ), অফিসার্স ক্লাব ক্রসিং, সুগন্ধা ক্রসিং, কাকরাইল চার্চ ক্রসিং, শিল্পকলা একাডেমি গলি, দুদকের গলি, কার্পেট গলি, মৎসভবন ক্রসিং, সেগুন বাগিচা, ইউবিএল, জিরোপয়েন্ট, সরকারি কর্মচারি হাসপাতাল গলি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শহীদুল্লাহ হল ক্রসিং, রোমানা ক্রসিং, বকশিবাজার ক্রসিং, পলাশী ক্রসিং, নীলক্ষেত ক্রসিং, কাঁটাবন ক্রসিং, আজিজ সুপার মার্কেটের পশ্চিম পাশ, বিসিএস প্রশাসন একাডেমি গলি ও শাহবাগ ক্রসিং।

যেসব সড়কে ডাইভারশন:

বিকল্প পথে ঘুরে যাওয়ার জন্য কিছু সড়কের মাথায় ডাইভারশন থাকবে বলে জানিয়েছে ডিএমপি।

সেগুলো হল- সোনারগাঁও ক্রসিং, বাংলামোটর ক্রসিং, মিন্টোরোড পূর্ব প্রান্ত, কাকরাইল চার্চ, ইউবিএল ক্রসিং, জিরোপয়েন্ট, সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল, শহীদুল্লাহ হল ক্রসিং, বকশি বাজার ক্রসিং, পলাশী ক্রসিং, নীলক্ষেত ক্রসিং ও কাঁটাবন ক্রসিং।

ট্রাফিক বিভাগ জানিয়েছে, সোনারগাঁও উত্তর এবং পশ্চিম দিক থেকে আসা সব ধরনের যাত্রীবাহী গাড়ি ও অন্যান্য গাড়ি সোনগাঁও থেকে বামদিকে মোড় নিয়ে রেইনবো ক্রসিং হয়ে মগবাজার মালিবাগ দিয়ে যাবে।

প্রাইভেটকারসহ ব্যক্তিগত অন্য গাড়ি বাংলামোটর দিয়ে বামে মোড় নিয়ে মগবাজার দিয়ে চলে যাবে।

সায়েদাবাগ-মতিঝিল-ফুলবাড়িয়া থেকে আসা সকল প্রকার বাণিজ্যিক গাড়ি জিরোপয়েন্ট-ইউবিএল-নাইটিংগেল ক্রসিং-রাজমনি ক্রসিং-শান্তিনগর ক্রসিং-মালিবাগ মোড়-মগবাজার হয়ে যাবে।

মিরপুর রোডের উত্তর দিক থেকে আসা সকল প্রকার গাড়ি সায়েন্সল্যাব ক্রসিং থেকে সোজা দক্ষিণ দিকে নিউমার্কেট-আজিমপুর-শ্রী শ্রী ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের সামনে দিয়ে বকশিবাজার হয়ে গুলিস্তান যাবে।

ধানমন্ডি রবীন্দ্র সরোবর কেন্দ্রিক যেসব স্থানে রোডব্লক:

ধানমন্ডি কেন্দ্রিক ৮টি পয়েন্টে রোডব্লক থাকবে বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

সেগুলো হল- তাকওয়া মসজিদ, ধানমন্ডি ৬ নম্বর রোডের দক্ষিণ প্রান্ত, ৭ নম্বর সড়কের মধ্যবর্তী স্থান, ৮/এ সড়কের মধ্যবর্তী স্থান, ধানমন্ডি ৮ ব্রিজের পূর্ব প্রান্ত, ধানমন্ডি ৮ এর উল্টো প্রান্ত, জিগাতলা মোড় (কায়সার সুইটমিটের সামনে) ও ধানমন্ডি আবাহনী মাঠ সংলগ্ন রোড ১৩/এ।

ডিএমপির ট্রাফিক রমনা বিভাগ জানিয়েছে, বর্ষবরণ উৎসবে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে দুই পালায় মোট ৬৬৪ জন পুলিশ সদস্য ধানমন্ডি ও রমনাতে দায়িত্ব পালন করবে।

জাতীয়

মুন্সীগঞ্জে শ্রেণিকক্ষে বিজ্ঞান পড়ানোর সময় ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ওঠে বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের বিরুদ্ধে। তাকে গ্রেফতার করা। ১৯ দিন কারাভোগের পর রোববার বিকাল ৫টার দিকে মুন্সীগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল।

স্বামীর কারামুক্তির পর কথা বলেন বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের স্ত্রী ববিতা হালদার। তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তিনি গণমাধ্যমসহ দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

ববিতা হালদার স্বামীর জামিন মঞ্জুরে সরকারের কাছে তার পরিবারের নিরাপত্তা দাবি করে বলেন, ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে মানহানি এবং আইসিটি আইনে মামলা করা হবে। এছাড়া তিনি সরকারের কাছে নিরাপত্তা দাবি করেন এবং মামলা থেকে তার স্বামীর অব্যাহতি চান।

রোববার দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোতাহারাত আখতার ভূঁইয়া হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের জামিন মঞ্জুর করেন। এর আগে গত ২৩ ও ২৮ মার্চ তার জামিন চাওয়া হলেও আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।

এদিকে আসামিপক্ষের নিযুক্ত আইনজীবী শাহীন মোহাম্মদ আমান উল্লাহ এ মামলার শুনানি করেন। তিনি বলেন, ২৩ ও ২৮ মার্চ হৃদয়ের মণ্ডলের জামিন চাওয়া হলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করেন। পরে আমরা সিআর মিস করি। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আসামি হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের মামলার সব কিছু যাচাই-বাছাই করে ৫ হাজার টাকা বেল্ড মানি করে তার জামিন মঞ্জুর করেন।

আইনজীবী শাহীন মোহাম্মদ আমান উল্লাহ আরও বলেন, শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল শ্রেণিকক্ষে বলেছিলেন, ধর্ম বিশ্বাস আর বিজ্ঞান যৌক্তিক। এতে একটি কুচক্রী মহল তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, ২০ মার্চ দশম শ্রেণির মানবিক শাখার বিজ্ঞানের ক্লাস নিচ্ছিলেন হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল। সেখানে বিজ্ঞান ও ধর্ম বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কয়েকজনের পক্ষে-বিপক্ষে কথোপকথন হয়। কোনো এক শিক্ষার্থী ওই কথোপকথনের ভিডিও ধারণ করেন। পরবর্তী সময়ে প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দীনকে বিষয়টি জানানো হয়। প্রধান শিক্ষক সেদিনই হৃদয় চন্দ্রকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন এবং শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকতে বলেন।

শিক্ষার্থীরা স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের বিষয়টি জানায়। এর পরের দিন সকালে তারা বিদ্যালয়ে এসে ওই শিক্ষককে গ্রেফতারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

২২ মার্চ বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিশিয়ান মো. আসাদ বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে মামলা করেন। পরে তাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠালে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

জাতীয়

তিন দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন অভিমুখে শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা করেছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় নেতা তাজউদ্দীন আহমদের সন্তান সোহেল তাজ।

আওয়ামী লীগের সাবেক এ সংসদ সদস্য গণভবনের সামনে প্ল্যাকার্ডসহ কিছুক্ষণ অবস্থান করেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে স্মারকলিপি জমা দেন। এ কর্মসূচিতে সোহেল তাজের সঙ্গে স্বতঃস্ফূর্তভাবে যোগ দেন বিভিন্ন বয়সের কয়েকশ নারী ও পুরুষ।

রোববার পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বিকাল ৪টার পর জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ গেটের সামনে (মানিক মিয়া এভিনিউ প্রান্ত) অবস্থান নেন সোহেল তাজ।

এ সময় ব্যানার-ফেস্টুনসহ তার সঙ্গে যোগ দেন বিভিন্ন বয়সী মানুষ। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তিন দফা দাবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে হেঁটে গণভবন অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন সোহেল তাজ। তার সঙ্গে যোগ দেওয়া নারী-পুরুষ তিন দফা দাবি উল্লে­খ করে স্লোগান দেন।

১০ এপ্রিলকে ‘প্রজাতন্ত্র দিবস’, ৩ নভেম্বর জেলহত্যা দিবসকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন এবং জাতীয় চার নেতাসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের সব বেসামরিক ও সামরিক সংগঠক, শহিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম, অবদান ও জীবনীসহ মুক্তিযুদ্ধের সঠিক এবং পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস যথাযথ মর্যাদা ও গুরুত্বের সঙ্গে সর্বস্তরের পাঠ্যপুস্তকের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্তি এবং তা চর্চার দাবি জানান সোহেল তাজ।

দুই পৃষ্ঠার স্মারকলিপিতে সোহেল তাজ ১০ এপ্রিলকে প্রজাতন্ত্র দিবস ঘোষণার যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করেন। ৩ নভেম্বর জেল হত্যা দিবসকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করে তা রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন কেন প্রয়োজন তা-ও তুলে ধরেন তিনি।

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে নতুন প্রজন্মের অজ্ঞতা ও অনাগ্রহের বিষয়টি তুলে ধরেন তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ। এজন্য এ ইতিহাস সবস্তরের পাঠ্যপুস্তকের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করে নিয়মিত চর্চার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন তিনি। তার স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ূয়া। স্মারকলিপির শেষে তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ লিখে নিজেকে ‘প্রহরী ৭১’ দাবি করেন।

জাতীয়

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, মুন্সীগঞ্জের স্কুল শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান করেছিলেন। কেন ছাত্ররা তার ওপর অসন্তুষ্ট হলো, সে বিষয়ে তদন্ত করছি।

শনিবার (৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলিস্তানে ফায়ার সার্ভিসের সদরদপ্তরে সংস্থাটির ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওই শিক্ষকের প্রতি যেন কোনো অন্যায় না হয় এবং শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য যা যা করা প্রয়োজন আমরা সে ব্যবস্থা করেছি। তদন্তের পরেই আমরা বলতে পারব ঘটনাটা কী হয়েছিল। যে ঘটনা ঘটেছে, সে বিষয়ে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী ব্যবস্থা নিয়েছে। শিক্ষক হৃদয় মন্ডলের সুরক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি অহেতুক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।

আরেক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য অনেক কিছু করছি। চারলাইন রাস্তাগুলো এখন ছয় লাইন করছি। দুই লাইন রাস্তাগুলো চারলাইন করছি। এই কাজগুলো আমাদের আরও আগে করা দরকার ছিল। একটি শহরে ২৫ ভাগ রাস্তা থাকা প্রয়োজন। সেখানে আমাদের আছে ১০ ভাগ রাস্তা। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রোরেল ও পদ্মা সেতু হয়ে যাচ্ছে। এখন যতগুলো রাস্তা ও হাইওয়ে হচ্ছে সবগুলোর পাশ দিয়ে সার্ভিস লাইন তৈরি হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, প্রত্যেকটা উপজেলায় একটি করে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ করা হবে। বর্তমানে ৪৫৬টি ফায়ার স্টেশন আছে। খুব দ্রত সময়ে প্রধানমন্ত্রী আরও ৪০টি ফায়ার স্টেশন উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনায় ফায়ার সার্ভিসের আধুনিকায়ন ও যুগোপযোগী করে উন্নয়ন করা হচ্ছে। এই বাহিনীকে আগামী দিনে একটি সুদক্ষ, অভিজ্ঞ, প্রশিক্ষিত, আধুনিক ও বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন, ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইনসহ সংস্তাটির ঊর্ধতন কর্মকর্তারা।

গত ২০ মার্চ মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞান পড়ানোর সময় প্রসঙ্গক্রমে শিক্ষার্থীর প্রশ্নে ধর্ম নিয়ে কথা বলেন। তখন ক্লাসের কয়েকজন শিক্ষার্থী সেই কথা রেকর্ড করে। পরে ধর্ম নিয়ে ‘আপত্তিকর’ কথা বলার অভিযোগ তুলে এলাকায় হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। এরপর ওই শিক্ষককে মুন্সীগঞ্জ সদর থানা পুলিশ হেফাজতে নেয়।

ঘটনার দুদিন পর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী (ইলেক্ট্রশিয়ান) মো. আসাদ বাদী হয়ে হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। ২৩ মার্চ তাকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করলে জেল হাজতে পাঠানো হয়।

জাতীয়

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একটি আবাসিক এলাকায় তুলার গোডাউনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার রাত ১০টায় ফতুল্লার ইসদাইর আবাসিক এলাকায় শরিফুল আলমের তুলার গোডাউনে এঘটনা ঘটে।

এতে কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও মালিক পক্ষের দাবি আগুনে তার প্রায় ২০/২৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট আধাঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছে।

ক্ষতিগ্রস্থ শরিফুল আলম জানান, তার গোডাউনে তুলা দিয়ে বালিশ, লেপ-তোষক তৈরি করে তা বিক্রি করেন। তার এই গোডাউনের সামনে ছয়টি দোকান রয়েছে। কি থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে তা তিনি বলতে পারেন না। তবে আগুনে তার ২০/২৫ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। এ গোডাউনে অগ্নিনির্বাপক কোনো ব্যবস্থা নেই।

এলাকাবাসী জানান, গোডাউনের তিনপাশে বহুতল একাধীক আবাসিক বাসা বাড়ি রয়েছে। এর মাঝখানে একটি তুলার গোডাউন মানে কয়েক হাজার মানুষের জন্য ঝুকিপূর্ণ। এটি যাতে আর এখানে নির্মান করতে না পারে এজন্য জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।

নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফীন জানান, খবর পেয়ে আমাদের মণ্ডলপাড়ার তিনটি ও হাজিগঞ্জের দুইটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এখন ডাম্পিং চলছে। আগুনের সুত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত করে জানানো হবে।

জাতীয়

সিংড়ায় ৮০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করেও ঋণমুক্ত হতে না পেরে ভিটে ছাড়া করা সেই সংখ্যালঘু শ্রী মরু প্রামাণিকের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন স্থানীয় মানবাধিকার ও পরিবেশ কর্মীরা। এর আগে ওই পরিবারকে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নির্দেশে বাড়িতে তুলে দেয় পুলিশ।

শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন সিংড়া উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হাসান ইমামের নেতৃত্বে পাঁড়েরা গ্রামের ওই ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের খোঁজ-খবর নিতে যান মানবাধিকার ও পরিবেশ কর্মীরা। তাদের মাঝে চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, কাঁচা তরকারি, শুকনো খাবার বিতরণ এবং আইনগত সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেয়া হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটি ও মানবাধিকারের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী খান মো. শারফুল ইসলাম খোকন, পরিবেশ কর্মী হাসিবুল হাসান শিমুল প্রমুখ।

উল্লেখ্য, বুধবার দাদন ব্যবসায়ীর চাহিদা মতো সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় স্থানীয় দাদন ব্যবসায়ী শাহীন শাহ ও ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন ওই সংখ্যালঘু পরিবারের বাড়ি দখল নেয়। পরে সারারাত পরিবারের ১১ জন সদস্যকে খোলা আকাশের নিচে কাটাতে হয়।

এদিকে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছ থেকে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হওয়ার পর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ ও পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহার নির্দেশে বাড়ি দখলমুক্ত করে ওই ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়েছেন পুলিশ।