জাতীয়

স্বাধনীতার পর এই প্রথম কোনো গণতান্ত্রিক সরকারের সময় নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুরোপুরি ফাঁকা হয়ে পড়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্য নির্বাচন কমিশনার (ইসি) পদে কেউ নেই।

আগেও এই পদগুলো একবার পুরোপুরি ফাঁকা হয়েছিল। তবে সেটি সেনা সমর্থিত ১/১১ সময়কার জরুরি অবস্থার সময়।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অতীতেও সিইসির পদ ফাঁকা থাকার নজির আছে। এক্ষেত্রে সিইসির পদটি ফাঁকা ছিল মোট চারবার। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি দিনের জন্য ফাঁকা ছিল ২০০০ সালে ও ২০০৭ সালে। তবে নির্বাচন কমিশনারদের (ইসি) পদ ১/১১ সরকারের সময় ছাড়া কখনো ফাঁকা ছিল না।

দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে সিইসি পদে নিয়োগ পান বিচারপতি মো. ইদ্রিস। তিনি ১৯৭২ সালের ৭ জুলাই থেকে ১৯৭৭ সালের ৭ জুলাই পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।

এরপর জিয়াউর রহমান নিয়োগ দেন বিচারপতি একেএম নুরুল ইসলামকে। তিনি ১৯৭৭ সালের ৮ জুলাই থেকে ১৯৮৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতা বসে নিয়োগ দেন বিচারপতি চৌধুরী এটিএম মাসুদকে। তিনি ১৯৮৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯৯০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ১৯৯০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ পান বিচারপতি সুলতান হোসেন খান। সবচেয়ে কম সময় অর্থাৎ ১০ মাস ৬ দিন দায়িত্ব পালন করে একই বছর ২৪ ডিসেম্বর বিদায় নেন তিনি। ২৫ ডিসেম্বর নিয়োগ পান বিচারপতি মো. আব্দুর রউফ।

এই কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মধ্য দিয়েই ক্ষমতায় আসেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। সিইসি রউফ ১৯৯৫ সালের ১৮ এপ্রিল বিদায় নেওয়ার পর ৮ দিন ফাঁকা ছিল পদটি। ওই প্রথম সিইসির পদটি ফাঁকা থাকে। সে বছরের ২৭ এপ্রিল এই পদে বিচারপতি একেএম সাদেককে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি দ্বিতীয় সর্বনিম্ন সময় অর্থাৎ ১১ মাস ১০ দিন দায়িত্ব পালনের পর চলে যান ১৯৯৬ সালের ৬ এপ্রিল। দুই দিন ফাঁকা থাকার পর ৯ এপ্রিল সিইসির পদে আসেন মোহাম্মদ আবু হেনা।

ওই বছর জুনে এই কমিশনের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ক্ষমতায় আসেন শেখ হাসিনা। তিনি ২০০০ সালের ৮ মে চলে যাওয়ার পর ১৪ দিন ফাঁকা ছিল সিইসির পদটি। একই বছরের ২৩ মে আসেন এমএ সাইদ। ২০০৫ সালের ২২ জানুয়ারি তিনি চলে গেলে ২৩ মে আসেন বিচারপতি এমএ আজিজ। বিএনপির আমলে নিয়োগ পাওয়া তিনিই শেষ সিইসি।

এরপর ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি জরুরি অবস্থা জারি হয়। ওই বছরের ২১ জানুয়ারি এমএ আজিজ চলে গেলে ১৪ দিন ফাঁকা থাকার পর একই বছর পাঁচ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব নেন ড. এটিএম শামসুল হুদা। ২০১২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তার দায়িত্ব শেষ হলে তিনদিন ফাঁকা থাকার পর ৯ ফেব্রুয়ারি পদটিতে আসেন কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। পাঁচ বছর পর ২০১৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি তার দায়িত্ব শেষ হলে পাঁচদিন ফাঁকা থাকার পর ১৫ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব নেন কেএম নূরুল হুদা।

নির্বাচন কমিশনের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পুরো কমিশন ফাঁকা ছিল ২০০৭ সালে আজিজ কমিশন চলে যাওয়া পর। তিনি ২১ জানুয়ারি চলে যাওয়ার পর অন্য দুই কমিশনারের অধীনে চলে ৩১ জানুয়ারি। এরপর শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশনের নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন দায়িত্ব নেন ওই বছর ৫ ফেব্রুয়ারি। সে সময় চারদিনের জন্য নির্বাচন কমিশন পুরোপুরি ফাঁকা ছিল। অন্যান্য সময় সিইসির পদ ফাঁকা থাকলেও কমিশনাররা ছিলেন।

কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব নিয়েছিলেন কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের কমিশন পুরোপুরিভাবে ওই বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি চলে যাওয়ার পর। সেই হিসেবে পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্তি করে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পুরো কমিশন বিদায় নিয়েছে। বর্তমানে ফাঁকা রয়েছে সবগুলো পদ।

রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ নতুন কমিশন নিয়োগের জন্য এরই মধ্যে একটি সার্চ কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। সেই কমিটিতে আইনে নির্ধারিত পন্থায় ৩২২ ব্যক্তির নাম জমা পড়েছে। তাদের মধ্য থেকে যোগ্য ১০ জনের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে সার্চ কমিটি। যার ভিত্তিতে নতুন কমিটি পাবে নির্বাচন কমিশন। ফলে এই মধ্যবর্তী সময়ে নতুন করে কোনো সিদ্ধান্ত আসবে না।

এদিকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এরই মধ্যে জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশন ফাঁকা থাকলেও সাংবিধানিক কোনো শূন্যতা সৃষ্টি হবে না। ইসি চিব তার কাজ পরিচালনা করবেন।

ইসির যুগ্ম সচিব এসএম আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা ছিল। সংবিধান কার্যকর ছিল না। তাই সে সময় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। তার আগে কখনও পদগুলো একসঙ্গে ফাঁকা ছিল না।

এদিকে নতুন কমিশনকে বরণের প্রস্তুতিও শুরু করেছে ইসি সচিবালয়। এরই মধ্যে সদ্য বিদায়ী কমিশনারদের দফতরগুলো ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু হয়েছে, সরিয়ে ফেলা হয়েছে নামফলকও।

জাতীয়

ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হল গ্রাফিক নভেল ‘মুজিব’ এর নবম ও দশম খণ্ড, যার মাধ্যমে শেষ হল এ ধারাবাহিক প্রকাশনার।

নবম খণ্ডে আওয়ামী লীগ গঠনের বিভিন্ন ধাপ, পাকিস্তানের পাঞ্জাবে গিয়ে নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠনে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সাক্ষাৎ এবং সেখানকার বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে তার পরিচয়ের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। এই খণ্ডের নাম রাখা হয়েছে ‘মিশন পাঞ্জাব’।

আর দশম খণ্ডের শিরোনাম ‘মুক্তির পাথে’। এই খণ্ডে কারাগারে থাকা শেখ মুজিবের অসুস্থ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়া, সেখানে গোপনে ভাষা আন্দোলনের জন্য সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠন, জেলে অনশন, শরীর ভেঙে পড়া, ঢাকার বাইরে স্থানান্তর, জেল থেকে মুক্তি, প্রাদেশিক নির্বাচনে বিজয় এবং ছয় দফাসহ বিভিন্ন ঘটনা স্থান পেয়েছে।

পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে বঙ্গবন্ধুর লাহোরে পৌঁছানো, ফেরার সময় দিল্লি, কলকাতা হয়ে বেনাপোল দিয়ে খুলনা, ছদ্মবেশে থেকে জাহাজ চড়ে টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছানোর ঘটনা এই খণ্ডে এসেছে।

বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী প্রকাশের পর শিশু-কিশোর ও তরুণদের কাছে তার ঘটনাবহুল জীবন নতুন রূপে তুলে ধরার জন্য বইটিকে গ্রাফিক নভেলের রূপ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

শুরু থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে প্রতিটি খসড়া দেখে দেওয়ায় অনেক কাজ সহজ হয়েছে এবং অনেক ভুলও এড়ানো গেছে বলেন জানিয়েছেন গ্রাফিক নভেল মুজিবের সম্পাদক শিবু কুমার শীল।

মঙ্গলবার শুরু হওয়া একুশে বইমেলোয় শেষ দুটি খণ্ড পাওয়া যাচ্ছে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন তিনি।

শিবু বলেন, “আগামী ১৯ তারিখ শেষ দুই খণ্ডের আনুষ্ঠানিক প্রকাশনা উৎসব হবে। সিআরআইয়ের স্টলের পাশে হবে সেই অনুষ্ঠান।”
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিখ্যাত ব্যক্তিদের নিয়ে গ্রাফিক নভেল হলেও বাংলাদেশে এটাই ছিল এ ধরনের প্রথম উদ্যোগ। ২০১৫ সালের ১৭ মার্চ গ্রাফিক নভেল মুজিবের প্রথম পর্ব প্রকাশিত হয়। এরপর থেকে আওয়ামী লীগের গবেষণা উইং সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) উদ্যোগে এর বিভিন্ন পর্ব প্রকাশিত হয়েছে।

প্রকাশক হিসেবে রয়েছেন সিআরআইয়ের ট্রাস্টি ও বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক এবং আরেক ট্রাস্টি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে তার বংশ পরিচয়, জন্ম, শৈশব, স্কুল ও কলেজের শিক্ষাজীবনের পাশাপাশি সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, দুর্ভিক্ষ, কলকাতার দাঙ্গা, দেশভাগ, কলকাতাকেন্দ্রিক প্রাদেশিক মুসলিম ছাত্রলীগ ও মুসলিম লীগের রাজনীতি, দেশ বিভাগের পরবর্তী সময় থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত পূর্ব বাংলার রাজনীতি, কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মুসলিম লীগ সরকারের অপশাসন, ভাষা আন্দোলন, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা, যুক্তফ্রন্ট গঠন ও নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন, আদমজীর দাঙ্গা, পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের বৈষম্যমূলক শাসন ও প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের বিস্তৃত বিবরণসহ বিভিন্ন বিষয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার বর্ণনা রয়েছে।

এছাড়া আছে বঙ্গবন্ধুর কারাজীবন, পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি ও সর্বংসহা সহধর্মিনীর কথা, যিনি তার রাজনৈতিক জীবনে সহায়ক শক্তি হিসেবে সকল দুঃসময়ে পাশে ছিলেন অবিচল।

বইমেলায় এই প্রকাশনার ওপর বিভিন্ন ছাড় থাকবে বলেও জানান শিবু। শিক্ষার্থীরা তাদের পরিচয়পত্র দেখিয়ে সবকটি খণ্ড কিনলে ৪০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে।

এই গ্রাফিক নভেল নিয়ে ভবিষ্যতে আরও পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এখন পর্যন্ত তিনটা খণ্ড ইংরেজিতে এবং জাপানি ভাষায় দুটি খণ্ড অনূদিত হয়েছে। ভবিষ্যতে ফরাসি ও চায়নিজ ভাষায় অনুবাদ করার পরিকল্পনা রয়েছে।”

জাতীয়

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনার (ইসি) নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটিতে আসা ৩২২ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিশিষ্ট ব্যক্তি, পেশাজীবী সংগঠন ও ব্যক্তিবর্গ এসব নাম প্রস্তাব করেছে।

সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে তাদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব শফিউল আজিম বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

উল্লেখযোগ্য নামগুলো হলো- সাংবাদিক অজয় দাস গুপ্ত, অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির উপাচার্য (ভিসি) আব্দুল মান্নান চৌধুরী, সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. হারুন অর রশিদ, সাবেক উপদেষ্টা ডা. মুফিয়া রহমান, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।

ঢাবির সাবেক ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান, সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, সাবেক সচিব কামরুন নাহার ও মো. নুরুল ইসলাম।

অ্যাডকমের গীতি আরা সাফিয়া চৌধুরী, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন ও সাখাওয়াত হোসেন, সাবেক সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল (অব.) ইকবাল করিম ভূঁইয়া।

চিত্রনায়ক ও নিরাপদ সড়ক চাই-এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন, সাবেক আইজিপি একেএম শহীদুল হক, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ, সাবেক সচিব মিকাইল শিপার।

সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ ও মোহাম্মদ আব্দুল করিম, সাবেক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ জে আর মোদাচ্ছিন হোসেন, সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।

সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন ও ড. আতিউর রহমান, আইনজীবী শাহদীন মালিক, রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক।

সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন ভূঁইঞা, সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী।

নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটির কাছে নাম জমা দেওয়ার সময় ছিল সোমবার বিকেল ৫টা।

গত ১২ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি সার্চ কমিটি বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে বসে মতামত নিয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) আট বিশিষ্ট সাংবাদিকের মতামত নেওয়ার কথা রয়েছে।

সার্চ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেওয়ার কাজে যুক্ত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনে স্থান পেতে নির্ধারিত সময়ে ৩২৯ জনের নাম পেয়েছে তারা।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগদানের জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে সভাপতি করে গত ৫ ফেব্রুয়ারি ছয় সদস্যের অনুসন্ধান (সার্চ) কমিটি গঠন করেছে সরকার।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন এবং কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক।

এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ এর ধারা ৩ মোতাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগদানের জন্য আইনে বর্ণিত যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নাম সুপারিশ করার লক্ষ্যে অনুসন্ধান (সার্চ) কমিটি গঠন করা হলো।

সোমবারই কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মেয়াদ শেষ হচ্ছে। আইন অনুযায়ী, নতুন ইসি গঠনের জন্য সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের মনোনীত করার পর রাষ্ট্রপতি তা চূড়ান্ত করেন। তবে এবার নতুন আইন অনুযায়ী সার্চ কমিটি গঠন করা হলো।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গত ১৭ জানুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ অনুমোদন দেওয়া হয়। গত ২৭ জানুয়ারি বিলটি জাতীয় সংসদে পাসের পর ২৯ জানুয়ারি) রাষ্ট্রপতি আইনটিতে সম্মতি দেন। ৩০ জানুয়ারি ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল, ২০২২’ এর গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।

‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ অনুযায়ী সার্চ কমিটি (অনুসন্ধান কমিটি) গঠন করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

আইন অনুযায়ী, আপিল বিভাগের একজন বিচারকের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠিত হবে। আইনে বর্ণিত যোগ্যতা-অযোগ্যতা বিবেচনা করে তারা ১০ জনের নাম প্রস্তাব করবেন। ১০ জনের মধ্য থেকেই ৫ জনকে নিয়ে রাষ্ট্রপতি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন।

জাতীয়

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা বলেছেন, আল্লাহ-মাবুদের ক্ষমতা থাকে, আমরা তো মানুষ। ওই উচ্চতায় আমরা নই।

নির্বাচন ভবনের লেকভিউ চত্বরে সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) আয়োজিত বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

পাঁচ বছরের দায়িত্বকালে নূরুল হুদা কমিশনের সফলতা-ব্যর্থতা সম্পর্কে জানতে জানতে চাওয়া হলে সিইসি বলেন, শতভাগ সাফল্য কেউ কোনোদিন অর্জন করতে পারে না। আমরাও পারি নাই।

তিনি বলেন, আইনের আলোকে পরিপূর্ণ নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আমরা নির্বাচন পরিচালনা করেছি। কোনো কোনো ব্যত্যয় হয়েছে। কোথাও কোথাও আমরা অনিয়ম হয়েছে, অনেক ভোটার নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন। এখন নির্বাচন বন্ধ আছে। টাইম ছিল না বলে করতে পারি নাই। সেগুলো অবশ্যই ব্যর্থতা। সুতরাং সেন্ট পার্সেন্ট সফল হওয়া, এটাতো মাননীয় কমিশনার রফিক সাহেব বলেছেন, আমরা তো ওই উচ্চতায় যাই নাই। উনি বলেছেন যে একমাত্র আল্লাহ-মাবুদের ক্ষমতা থাকে, আমরা তো মানুষ।

এর আগে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেছিলেন, একটা ভুল পারসেপশন আছে সমাজ ও গণমাধ্যমে। অনেকে বলতে থাকেন, ইসির অসীম ক্ষমতা। আকাশের দিকে তাকিয়ে বলি, এদের কী আল্লাহ-ভগবান নেই। তাদেরই তো কেবল অসীম ক্ষমতা।

সংবিধান ও আইনের দ্বারা পরিচালিত হবো এইটুকুই ছিল আমাদের শপথ। তাহলে আল্লাহর আসনে বসিয়ে দেওয়া কী অন্যায় নয়? অসীম ক্ষমতা কারো নাই।

কেএম নূরুল হুদা আরও বলেন, আমাদের ভুল হবে, আমাদের ভুল থেকে আমরা শিক্ষা নেবো। তবে একটা জিনিস আপানারা হয়তো বিশ্বাস করবেন, গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অতন্ত গুরুত্বসহকারে দেখেছি। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছি। সেগুলো নিয়ে কাজ হচ্ছে। বিশেষ করে ইভিএম নিয়ে যে রিপোর্ট এসেছে, কেন দেরি হলো (ভোটগ্রহণ ধীরগতি), কেন আঙুলের ছাপ মেলে না। এসব নিয়ে টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করেছি। তারা কাজ করছে। গণমাধ্যমের রিপোর্টের ভিত্তিতে নির্বাচন বন্ধ করেছি। পেপার কার্টিংয়ের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলোকে আস্থায় আনার চেষ্টা করেছি। তাদের সঙ্গে সংলাপ করেছি। যারাই দেখা করতে চেয়েছেন, রাজনৈতিক দলের নেতারা, সবার সঙ্গেই দেখা করেছি। এখন তারা টিভিতে কথা বলেন, তাতে তো মনে হয় আস্থা অর্জন করতে পারিনি।

সাংবাদিকদের অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভোটের দিন গণমাধ্যম প্রচার করে বেলা বাড়ার সাথে সাথে ভোটার বাড়ছে। শীত উপেক্ষা করে ভোটারের দীর্ঘ লাইন। আবার টিভিতে, মঞ্চে গিয়ে উল্টোটা বলেন। নির্বাচনে ৭০ শতাংশের মতো ভোট পড়েছে। প্রায় ৭ কোটি ভোটার ভোট দিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে।

সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম উপস্থিত ছিলেন। জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার নিজ দফতরে বসে থাকলেও বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেননি। দুপুরে তিনি পৃথকভাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। আর নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদাত হোসেন করোনায় আক্রান্ত থাকায় যোগ দিতে পারেননি।

২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সাবেক বেসামরিক আমলা কেএম নূরুল হুদাকে সিইসি; মাহবুব তালকুদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও সামরিক আমলা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরীকে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ। সংবিধান অনুযায়ী, পাঁচ বছর দায়িত্ব শেষে তাদের মেয়াদ শেষ হলো ২০২২ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারি (সোমবার)।

জাতীয়

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে।

রোববার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট থেকে এ ফল ঘোষণা করা হয়।

গণভবন থেকে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে ফলের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সার্বিকভাবে পাশের হার ৯৫.২৬। এর মধ্যে রাজশাহী বোর্ডে পাশের হার ৯৭.২৯ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩২ হাজার ৮০০ শিক্ষার্থী; বরিশাল বোর্ডে পাশের হার ৯৫.৭৬ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯ হাজার ৯৭১ শিক্ষার্থী; কুমিল্লা বোর্ডে পাশের হার ৯৭.৪৯ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪ হাজার ১৫৩ শিক্ষার্থী; দিনাজপুর বোর্ডে পাশের হার ৯২.৪৩ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৫ হাজার ৩৪৯ শিক্ষার্থী।

এ ছাড়া চট্টগ্রাম বোর্ডে পাশের হার ৮৯.৩৯ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৩ হাজার ৭২০ শিক্ষার্থী; সিলেট বোর্ডে পাশের হার ৯৪.৮০ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪ হাজার ৭৩১ শিক্ষার্থী; যশোর বোর্ডে পাশের হার ৯৮.১১ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০ হাজার ৮৭৮ শিক্ষার্থী।

ফল প্রকাশের পর থেকে শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে (www.educationboardresults.gov.bd) এবং এসএমএসের মাধ্যমে ফল জানা যাবে। এ ছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্র ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেও ফল সংগ্রহ করা যাবে।

মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে ফল জানতে HSC লিখে স্পেস দিয়ে শিক্ষা বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২১ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসেই ফল পাওয়া যাবে।

আলিমের ফল পেতে ALIM লিখে স্পেস দিয়ে Mad লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২১ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে।

কারিগরি বোর্ডের ক্ষেত্রে HSC লিখে স্পেস দিয়ে Tec লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২১ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠালে ফিরতি এসএমএসে ফল জানানো হবে।

এ পরীক্ষায় এবার ১৪ লাখ ১৪৫ পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। পরীক্ষা শুরু হয় ২ ডিসেম্বর। শেষ হয় ৩০ ডিসেম্বর।

এবার সব বিষয়ের পরীক্ষা হয়নি। শুধু বিভাগভিত্তিক তিনটি করে নৈর্বাচনিক বিষয়ে এ পরীক্ষা নেওয়া হয়। তবে অন্যান্য বিষয়ে এসএসসি ও জেএসসিতে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে ‘সাবজেক্ট ম্যাপিং’ করে শিক্ষার্থীদের গ্রেডিং দেওয়া হবে।

জাতীয়

রাজধানীর পুরান ঢাকার বংশাল মাহুতটুলীর একটি ভবনের নিচতলায় পলিথিনের গোডাউনে আগুন লেগেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১২ ইউনিট ।

শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাতে ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের ডিউটি অফিসার দেওয়ান আজাদ বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, রাত সাড়ে ১১টার দিকে আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে প্রথমে কয়েকটি ইউনিট পাঠানো হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১২ ইউনিট। প্রাথমিকভাবে আগুনের সূত্রপাত ও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

জাতীয়

দেশে নভেল করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ২৮ হাজার ৭৯১ জনে। এ সময়ে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৫ হাজার ২৩ জন। মোট শনাক্ত ১৯ লাখ ৪ হাজার ৮২৬ জন।

আজ শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে করোনাবিষয়ক নিয়মিত পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ সময়ে সুস্থ হয়েছেন ৮ হাজার ৮২১ জন। এ নিয়ে দেশে মোট ১৬ লাখ ৬৪ হাজার ৮০২ জন করোনা থেকে সুস্থ হলো। দৈনিক শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৫০ শতাংশ। আজ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৭১টি ল্যাবে ৩০ হাজার ৪৪৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নমুনা সংগ্রহ করা হয় ২৯ হাজার ৯০৪টি।

মৃতদের মধ্যে পুরুষ ১২ ও নারী ৮ জন। এদের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে একজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে দুইজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে একজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে তিনজন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে চারজন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ছয়জন ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে দুইজন ও ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে একজন।

একদিনে ঢাকা বিভাগে বেশি মৃত্যু হয়েছে। এ বিভাগে করোনায় মারা গেছে ১৩ জন। রাজশাহী বিভাগে দুইজন, খুলনা বিভাগে দুইজন, বরিশাল একজন ও সিলেট বিভাগে একজন, রংপুর বিভাগে একজন। এদের মধ্যে ১২ জন সরকারি হাসপাতালে ও আটজন বেসরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন।

উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার করোনায় দেশে মারা গিয়েছিল ২৭ জন আর শনাক্ত হয়েছিল ৫ হাজার ২৬৮ জন। দেশে ২০২০ সালের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। তার ঠিক ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

জাতীয়

দলীয় সরকারের সুবিধাভোগীদের বিবেচনার বাইরে রেখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, সৎ, যোগ্য ও সাহসী ব্যক্তিদের নিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটির কাছে প্রস্তাব এসেছে বিশিষ্টজনদের সঙ্গে আলোচনায়।

তারা নতুন ইসিতে নারী, সংখ্যালঘু ও গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের রাখার পরামর্শও দিয়েছেন।

শনিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার বাছাইয়ে আমন্ত্রিত শিক্ষক, আইনজীবী, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, ব্যবসায়ী, অধিকার কর্মীদের নিয়ে দুই দফা বৈঠক করে সার্চ কমিটি।

সকাল সোয়া ১১টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টা এবং ১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

রাষ্ট্রপতি গঠিত অনুসন্ধান কমিটির সভাপতি বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের সভাপতিত্বে বৈঠকে ছিলেন কমিটির সদস্য বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহা হিসাব নিয়ন্ত্রক ও নিরীক্ষক (সিএজি) মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন ও কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক।

বৈঠক শেষে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, “অনুসন্ধান কমিটি জানতে চেয়েছেন কী প্রক্রিয়ায় নাম বাছাই করা হবে। আমি একটি বিশেষ বিষয় উপস্থাপন করেছি। সেটি হল-কোনো দলীয় সরকারের সময় এটা বর্তমান সরকার হোক বা আগের দলীয় সরকার হোক বিশেষভাবে সুবিধাবোগী কোনো ব্যক্তি যাতে নির্বাচন কমিশনে স্থান না পায়।

“এ দাবি আমরা জানিয়েছি এবং অনেকেই তা সমর্থন করেছেন।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, “আমরা প্রত্যেকে আলাদাভাবে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি। তার মধ্যে বেশির ভাগ আমরা বলেছি, যারা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পাবে তারা যেন আগের কোনো সরকারের আমলে বিশেষ সুবিধাভোগী না হন।”

তিনি বলেন, কোনো দলীয় সরকারের অধীনে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মাধ্যমে, চাকরির মেয়াদ বাড়িয়ে নেওয়ার মাধ্যমে, জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘনের মাধ্যমে কোনো কোনো সরকার তার বিশ্বস্ত লোকদের সুবিধা দিয়ে থাকে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ ধরনের ব্যক্তিরা যাতে সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনে স্থান না পান।

“এই ধরনের লোক যেন নির্বাচন কমিশনে না আসেন। অনেকে অবসরে যাওয়ার পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন সরাসরিভাবে, তারা যেন না আসেন। যাদের সাথে সরকারের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সম্পর্ক আছে, তারা যেন না আসেন।”

নির্বাচন কমিশনে যারা আসবেন তাদের যেন একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করার মত একটি মানসিকতা থাকে এবং সাহসিকতা ও ব্যক্তিত্ব থাকে এ বিষয়ে বিবেচনা করতে সার্চ কমিটিকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে জানান আইনের এ অধ্যাপক।

এছাড়া নতুন কমিশনের জন্য যাদের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে তা সার্চ কমিটিকে আগেই প্রকাশ করতে অনুরোধ জানিয়েছেন বলে জানান আসিফ নজরুল।

“কমিটি যদি ৩০ জনের নাম প্রস্তাব করে, সেখানে যদি দেখা যায় কোনো একজন কোনো একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষে বক্তব্য দিয়েছে বা সরকারি চাকরিতে থাকা অবস্থায় কোনো একটি টক শোতে অংশ নিয়ে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের পক্ষে-বিপক্ষে কথা বলেছেন তাদের যেন বাদ দেওয়া হয়।”

নির্বাচন ব্যবস্থা ‘খুবই সঙ্কটের মধ্যে আছে’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “যে কারণে এই অনুসন্ধান কমিটির একটি বিরাট দায়িত্ব রয়েছে এই নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে আস্থা ফিরিয়ে আনা। জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা। সুষ্ঠু এবং অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে সত্যিকারের জনপ্রতিনিধিত্বের সরকার যাতে আগামীতে কায়েম হয়।”

প্রবীণ আইনজীবী আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী বলেন, “অনুসন্ধান কমিটি যাদের মনোনয়ন করবেন তারা যেন স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি হয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে।

“বৈঠকে যারা ছিলেন তারা সবাই আমার এই বক্তব্যকে সমর্থন করে অনুসন্ধান কমিটিকে অনুরোধ করেছেন, যাদের নাম প্রস্তাব করা হবে তারা যেন, সৎ, নিষ্ঠাবান এবং যোগ্য হন। আর্থিক মোহ বা যেকোনো মোহের বাইরে থেকে যেন নির্বাচন কমিশন পরিচালনা করতে পারেন।”

ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, “নতুন যে নির্বাচন কমিশন হবে এই কমিশনের ওপর গুরু দায়িত্ব, এর কারণ হচ্ছে বিগত নির্বাচন কমিশনকে নিয়ে নানা বিতর্ক ছিল। আগামী ‍নির্বাচনটি বাংলাদেশের জন্য অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন করতে হলে একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন দরকার। আর এটি করার দায়িত্ব পড়েছে এই সার্চ কমিটির ওপর।”

তিনি বলেন, “যে কোনো নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভিকটিম হয় সংখ্যালঘুরা। এই নির্বাচন কমিশনে সংখ্যালঘু, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব ছিল না। তাদের যাতে প্রতিনিধিত্ব থাকে।

“আমরা বলেছি- গণমাধ্যম থেকে প্রতিনিধিত্ব নিতে। যারা সিভিল সোসাইটিতে ভাল অধিকার আছে তাদের থেকে প্রতিনিধিত্ব নিতে।”

একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু বলেন, “যাদেরকে নিয়ে কমিশন গঠন করা হবে তাদের একজনকে নিয়েও যেন কোনো বিতর্ক না থাকে। আমরা বলেছি, যাদেরকে নির্বাচন করবেন তাদের নাম যেন ক’দিন আগেই মিডিয়ায় দেওয়া হয়। নামগুলো যদি জানতে পারে, তাহলে মানুষের কোনো অভিযোগ থাকলে তা জানাতে পারবেন।”

তিনি বলেন, “যারা ধর্মীয় ও জাতিগত দিক থেকে সংখ্যায় কম, আমরা সংখ্যালঘু বলতে চাই না, এবং নারী তারা নির্বাচনে বেশি সহিংসতার সম্মুখীন হয়, সেখানে যেন তাদের প্রতিনিধিত্ব থাকে। এতে করে তারা ভোট দিতে সাহস পাবে।”

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, “আমরা বলেছি- সব নাম যেন প্রকাশ করা হয়। যত নাম এসেছে তা যেন প্রকাশ করা হয়। জনগণ যাতে দেখতে পারেন।”

সার্চ কমিটিতে কয়েকজনের নাম প্রস্তাব করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা বলেছি- যদিও বিএনপি ও আরও কিছু রাজনৈতিক দল আসছে না, তারা তাদের সরকার পরিবর্তনের আন্দোলন করতে থাকুক, তাহলেও তো একটা নির্বাচন লাগবে। নির্বাচন কমিশনে যদি ভাল ও সাহসী লোক না যায়.. কেবল সরকার পরিবর্তন হলেই হবে না।”

নতুন কমিশনের জন্য সংখ্যালঘুদের থেকে একজন প্রতিনিধিত্ব রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন বলে জানান জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ.কে. আজাদ বলেন, “রাষ্ট্রপতির কাছে যে ১০ জনের নাম প্রস্তাব করা হবে, রাষ্ট্রপতির সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে, উনি ১০ জনের বাইরে যেতে পারবেন না। কিন্তু সার্চ কমিটির দায়িত্ব সারা বাংলাদেশের মধ্যে, যে যোগ্য ব্যক্তিত্ব রয়েছেন তাদের খুঁজে বের করা। তারা অবশ্যই যোগ্য, সাহসী ব্যত্বিত্বদের নাম পাঠাবেন।”

এখন পর্যন্ত যাদের নাম এসেছে তাদের সবার নাম যেন গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয় সেই অনুরোধ সার্চ কমিটির কাছে রেখেছেন বলে জানান তিনি।

সার্চ কমিটির প্রথম দফা বৈঠকে ছিলেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এ এফ এম হাসান আরিফ, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ফিদা এম কামাল, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, প্রবীণ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রোকনউদ্দিন মাহমুদ, সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহদীন মালিক, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার।

এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য অধ্যাপক মাকসুদ কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন খান ও অধ্যাপক আসিফ নজরুল, এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক মাহফুজা খানম, বেসরকারি সংস্থা ব্রতীর প্রধান নির্বাহী শারমিন মুর্শিদ ও ফেয়ার ইলেকশন মনটরিং অ্যালায়েন্স (ফেমা) সভাপতি মুনিরা খান বৈঠকে অংশ নেন।

দ্বিতীয় বৈঠকে ছিলেন দৈনিক আজকের পত্রিকার সম্পাদক অধ্যাপক গোলাম রহমান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান জাফরুল্লাহ চৌধুরী, দৈনিক জাগরণের সম্পাদক আবেদ খান, দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল হক বাবু, দৈনিক ইত্তেফাকের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, এনটিভির বার্তা সম্পাদক জহিরুল আলম ও সাংবাদিক স্বদেশ রায়।

গত শনিবার রাষ্ট্রপতি আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করে দেন। কমিটি দুটি বৈঠক করে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের কাছে থেকে প্রস্তাব নেওয়া, বিশিষ্টজনদের সঙ্গে বৈঠকসহ বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেয়।

শুক্রবার প্রস্তাবিত নাম জমা দেওয়ার নির্ধারিত সময়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার হিসেবে অন্তত পাঁচশ ব্যক্তির নাম জমা পড়ে সার্চ কমিটিতে।

এরমধ্যে নিবন্ধিত দুই ডজন রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি ছয় পেশাজীবি সংগঠন প্রস্তাব করেছে নাম। এর বাইরে ব্যক্তিগত জীবন বৃত্তান্তও জমা পড়েছে কয়েকশ’।

জাতীয়

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) চলমান আন্দোলন স্থগিত করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) থেকে ক্লাসে ফিরতে চান।

শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, গতকাল শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা উপমন্ত্রী আমাদের আমন্ত্রণে শাবিপ্রবিতে এসেছিলেন। মন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে আমাদের দাবি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। তিনি আমাদের সব দাবি আন্তরিকতার সঙ্গে শুনেছেন এবং আমাদের আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। এজন্য আমরা মন্ত্রীকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

তারা বলেন, শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা উপমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের ৬টি দাবি এবং দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নের বিষয়ে কিছু প্রস্তাবনা নিয়ে আলোচনা হয়। আমাদের প্রথম দাবি ছিল উপাচার্যের পদত্যাগ, শিক্ষামন্ত্রী এই বিষয়ে বলেছেন, উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ আচার্যের কাছে উপস্থাপন করা হবে। আচার্য এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। তাই আমরা আশা করছি, আচার্য আমাদের শিক্ষার মান ও পরিবেশ নিশ্চিত করতে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে আমাদের কথা বিবেচনায় রাখবেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর মামলার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীকে জানানো হলে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের নামে যে দুটি মামলা হয়েছে, সেটা অতিদ্রুত প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করা হবে। বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মোবাইল সিম ও মোবাইল ব্যাংকিং বন্ধ থাকার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আগামী ৩-৪ দিনের মধ্যে সব নম্বর ও মোবাইল ব্যাংকিং সচল করা হবে। পুলিশের স্প্রিন্টারে আহত সজল কুন্ডুসহ অনশনকারী সব শিক্ষার্থীর সুচিকিৎসা চলমান আছে ও থাকবে। এছাড়া শিক্ষামন্ত্রী সজল কুন্ডুর শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় তার চাকরির ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন।

তারা জানান, শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা উপমন্ত্রী আমাদের সব দাবি মেনে নিয়ে বাস্তবায়নের আশ্বাস দেওয়ায় তাদের প্রতি পূর্নআস্থা রেখে আমরা আমাদের আন্দোলন আপাতত প্রত্যাহার করে নিলাম এবং আমাদের দাবি পূরণের অপেক্ষায় থাকলাম। আমরা আগামীকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ ও ক্লাস-পরীক্ষা শুরু করার আহ্বান জানাচ্ছি।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, দেশ ও বিদেশের যেসব মানুষ আমাদের পাশে ছিলেন, যারা আমাদের জন্য দোয়া করেছেন, রাস্তায় নেমেছেন, আন্দোলন করেছেন, হয়রানিমূলক মামলার শিকার হয়েছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ দিতে চাই এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই। গণমাধ্যমের সবাইকে আবারও আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই পুরোটা সময়জুড়ে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করার জন্য।

জাতীয়

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নের প্রবাসী শিক্ষার্থী পরিবারকে সমাজচ্যুত করার বিষয়টি ভাটেরা ইউনিয়ন অফিসে মঙ্গলবার রাতে নিষ্পত্তি হয়েছে।

ভাটেরা ইউনিয়ন পরিষদের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ইউএনও এটিএম ফরহাদ চৌধুরী, কুলাউড়া থানার ওসি বিনয় ভূষণ দেব, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সমাজচ্যুতির অভিযোগ তোলা ঝর্ণা চৌধুরীর বাবা আব্দুল হাই চৌধুরী এবং কৃষ্ণপুর গ্রামের মসজিদের সভাপতি মাখন মিয়া ও সম্পাদক আমিন মিয়া।

বৈঠক শেষে ইউএনও এটিএম ফরহাদ চৌধুরী জানান, দুই পক্ষকে নিয়ে বসেছিলাম। সেখানে মসজিদ কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন। তারা জানান, তারা বয়স্ক মানুষ, তাই ইন্টারনেট চালাতে পারেন না।

তাছাড়া এলাকায় রটে যায়, ঝর্ণা একটি হিন্দু ছেলেকে বিয়ে করেছে। তাই তার বাবাকে তারা (মসজিদের সভাপতি ও সম্পাদক) ডাকেন। কিন্তু উনি না আসায় তারা ‘উনি উনার মতো চলুক, আমরা আমাদের মতো চলবো।’ এখানে কোনো সামাজচ্যুতির ঘটনা ঘটেনি।

ইউএনও আরও জানান, আজ তারা ভুল বুঝতে পেরে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ঝর্ণার বাবার কাছে। সেই সঙ্গে মুচলেকা দিয়েছেন যে ভবিষ্যতে আর এমন কিছু করবেন না। ঝর্ণার পরিবারও খুশি হয়েছেন, তারাও লিখিত দিয়েছেন যে তারা এখন খুশি।

উল্লেখ্য, কৃষ্ণপুর গ্রামের ঝর্ণা চৌধুরী উচ্চ শিক্ষার জন্য আমেরিকায় পাড়ি জমান গত ২৬ ডিসেম্বর। ঝর্ণা অভিযোগ করেন, তাকে বিদেশ পাঠানোয় দেশে তার পরিবারকে সমাজচ্যুত করেছে স্থানীয় মসজিদ কমিটি। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ দেন ঝর্ণার বাবা আব্দুল হাই চৌধুরী।