জাতীয়

দেশে গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৩ জন মারা গেছেন। গতকালে চেয়ে আজ ১ জন বেশি মারা গেছেন।

গতকাল মারা গিয়েছিলেন ২ জন। এখন পর্যন্ত দেশে করোনায় মারা গেছে ২৭ হাজার ৯৫৮ জন। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ জানানো হয়েছে, আজ ঢাকা বিভাগে ১ জন এবং চট্টগ্রাম বিভাগে ২ জন মারা গেছেন। তবে, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে আজ করোনা আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যায়নি।

এদিকে, আজ ১৯ হাজার ৫৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ২৮৪ জন। গতকাল ১৮ হাজার ৬১৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিল ৬১৪ জন। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার বেড়েছে দশমিক ০৩ শতাংশ। গতকাল এই ভাইরাসে শনাক্তের হার ছিল ১ দশমিক ৪২ শতাংশ, যা আজ বেড়ে হয়েছে ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশে এ পর্যন্ত ১ কোটি ৭ লাখ ৬১ হাজার ৯৭৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় মোট শনাক্ত হয়েছে ১৫ লাখ ৭৪ হাজার ৬৩৬ জন। মোট শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ।

এদিকে ঢাকা জেলায় (মহানগরসহ) ২৪ ঘন্টায় ১৩ হাজার ৪৫৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছে ১৭৬ জন। শনাক্তের হার ১ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং গতকাল এ হার ছিল ১ দশমিক ৫০ শতাংশ। এই জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় ১ জন মারা গেছেন। তবে গতকাল কেউ মারা যায়নি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৩১৮ জন। সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ৭৩ শতাংশ। গতকালও সুস্থতার হার ছিল ৯৭ দশমিক ৭৩ শতাংশ।

দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৫ লাখ ৩৮ হাজার ৮৫৫ জন।

জাতীয়

গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের নামে রাজবাড়ীর ১ নম্বর আমলী আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আদালতের বিচারক সুমন হোসেন পিবিআই ফরিদপুরকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল কারার নির্দেশ দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে মামলাটি দায়ের করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার সোসাইটি রাজবাড়ীর পৌরসভা শাখার সভাপতি শশি আক্তার।

মামলায় গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের নামে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়ায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

এর আগে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে তাকে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয় জাহাঙ্গীর আলমকে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকেও তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) বিকেল ৪টায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।

মেয়র জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আওয়ামী লীগের বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।

জাতীয়

শিগগিরই দেশে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা শূন্যতে নেমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

রোববার (৭ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর লা মেরিডিয়ান  হোটেলে ‘লেটস টক মেন্টাল হেলথ’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

জাহিদ মালেক বলেন, করোনা ভাইরাস এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আছে। শনিবার করোনা ভাইরাসে মাত্র একজনের মৃত্যু হয়েছিল। আমরা চাই করোনায়  মৃত্যু শূন্য হোক। আল্লাহর রহমতে শীঘ্রই আমরা শূন্য মৃত্যুতে চলে আসবো। সকলেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন। বেঁচে থাকলে বিভিন্ন মানসিক সমস্যাও দূর হবে। বেঁচে না থাকলে কোন কিছুই কাজে লাগবে না। তাই বেঁচে থাকাটাই আমাদের সবচেয়ে বেশি এখন গুরুত্বপূর্ণ।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে আত্মহত্যার প্রবণতা খুব বেশি নেই। তারপরেও ১০ থেকে ১৫ হাজার লোক আত্মহত্যা করে, এই সংখ্যাও কম নয়। এই সংখ্যা করোনাভাইরাসে মৃত্যুর থেকেও কম। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে আত্মহত্যার সংখ্যা আরও অনেক বেশি। কোরিয়া ও জাপানে সুসাইড রেট প্রায় ৫ শতাংশ।

তিনি বলেন, আত্মহত্যার আরেকটি অন্যতম কারণ মাদক গ্রহণ। মাদক গ্রহণের ফলে মানুষ বিভিন্ন ধরনের হতাশায় ভোগে। আমাদের দেশে পুরুষের তুলনায় মেয়েরা বেশি আত্মহত্যা করে। অন্যান্য দেশে এর উল্টোটা হয়, ছেলেরা বেশি আত্মহত্যা করে, মেয়েরা কম।

মানসিক স্বাস্থ্যের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য পরিবারকে প্রথমেই এগিয়ে আসতে হবে। তাদের সন্তানদের সঙ্গে সমস্যা প্রসঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করতে হবে। সন্তানরা কোথায় কী করছে, কাদের সঙ্গে মেলামেশা করছে, এসব বিষয় জানতে হবে। এসব বিষয় পরিবার থেকে অবহেলা করলে চলবে না। মানুষ যেন মানসিক অশান্তিতে না ভোগে সেজন্য সমাজকেও এগিয়ে আসতে হবে। যেসব কারণে মানসিক অশান্তি বাড়ে, সেগুলো কমিয়ে আনতে হবে।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহতাব খানম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী শম্পা রেজা।

লেটস টক মেন্টাল হেলথ অনুষ্ঠানে গণমাধ্যম সহযোগী হিসেবে ছিল জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠ এবং ইংরেজি দৈনিক ডেইলি সান।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন লেটস টক মেন্টাল হেলথ সংগঠনের সভাপতি আনুসা চৌধুরী। বক্তব্য দেন কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ট্রাস্টি চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সারাফাত।

জাতীয়

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর কারণে বাসের পর লঞ্চের ভাড়াও বাড়ানো হয়েছে। আজ রাত থেকেই পুনঃনির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী লঞ্চ চলাচল শুরু হচ্ছে।

রোববার (৭ নভেম্বর) রাতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কার্যালয়ে সংস্থাটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে লঞ্চ মালিক সমিতির নেতাদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। মতিঝিলে বিআইডব্লিউটিএ ভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠক শেষে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

তিনি বলেন, আজ রাত থেকেই পুনঃনির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী লঞ্চ চলবে। প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে ৬০ পয়সা। বর্তমান ভাড়া এক টাকা ৭০ পয়সা থেকে বেড়ে দুই টাকা ৩০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। এটা ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে প্রযোজ্য হবে। ১০০ কিলোমিটারের পর প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া হবে দুই টাকা। বর্তমানে সর্বনিম্ন যাত্রী প্রতি ভাড়া ছিল ১৮ টাকা। সেটি বাড়িয়ে ২৫ টাকা করা হয়েছে। সে হিসাবে ভাড়া বেড়েছে শতকরা ৩৫ শতাংশ।

কমোডর গোলাম সাদেক বলেন, ২০১৩ সালের পর লঞ্চের ভাড়া বাড়ানো হয়নি। যেহেতু তেলের মূল্য বাড়ানো হয়েছে তাই লঞ্চ মালিকরা দাবি করে আসছিলেন ভাড়া বাড়ানোর। আমরা আলোচনা করে যাত্রীদের যাতে কষ্ট না হয়, মালিকরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে দিকগুলো বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আজ থেকে এ ভাড়া কার্যকর হবে এবং এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

এ সময় মালিকদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল যাত্রী পরিবহন সংস্থার সভাপতি মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম বলেন, আশা করি আজ রাত থেকেই মালিকরা লঞ্চ চালু করবেন। এখন থেকেই পরিবর্তিত ভাড়ায় লঞ্চ চলবে।

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় লঞ্চের ভাড়া পুনর্নির্ধারণের বিষয় নিয়ে মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ এ বৈঠক করে। বিকেলে পৌনে ৪টার দিকে এ বৈঠক শুরু হয়ে রাত পৌনে আটটা পর্যন্ত চলে।

জাতীয়

ডিজেল ও করোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৬৫ থেকে ৮০ টাকা করেছে সরকার। গত ৩ নভেম্বর দিবাগত রাত ১২টা থেকে এই দাম বৃদ্ধি কার্যকর করা হয়। এ নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারণ মানুষ। ডিজেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল থেকে পরিবহণ মালিক-শ্রমিকরা সারা দেশে ধর্মঘট শুরু করেছেন ভাড়া বৃদ্ধির দাবি নিয়ে।

এ অবস্থায় ডিজেল ও করোসিনের দাম কেন বাড়ানো হয়েছে- সেটির ব্যাখ্যা দিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।

শুক্রবার মন্ত্রণালয়ের উপপ্রধান তথ্য অফিসার মীর মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য ঊর্ধ্বগতির কারণে পার্শ্ববর্তী দেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ জ্বালানি তেলের মূল্য নিয়মিত সমন্বয় করছে। কল্যাণকর রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ সবসময় জনগণের ক্রয় ক্ষমতা বিবেচনায় রেখে সাশ্রয়ী মূল্যে জ্বালানি তেল ভোক্তা পর্যায়ে সরবরাহ করতে বদ্ধপরিকর। সরকার ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে দেশে ডিজেলের মূল্য লিটারপ্রতি ৬৮ টাকা নির্ধারণ করেছিল। পরবর্তীতে ২০১৬ সালের এপ্রিলে ডিজেলের মূল্য লিটারপ্রতি ৩ টাকা কমিয়ে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করেছিল।  বিগত সাড়ে পাঁচ বছরে দেশে ডিজেল/কেরোসিনের মূল্য অপরিবর্তিত ছিল এবং ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পেট্টোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ১০ হাজার কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেতে থাকায় সর্বাধিক ব্যবহৃত ডিজেলের ক্ষেত্রে বিপিসি লোকসানের সম্মুখীন হয়। ডিজেলে চলতি বছরের জুন মাসে লিটারপ্রতি ২.৯৭ টাকা, জুলাই মাসে ৩.৭০ টাকা, আগস্ট মাসে ১.৫৮ টাকা, সেপ্টেম্বর মাসে ৫.৬২ টাকা এবং অক্টোবর মাসে ১৩.০১ টাকা বিপিসির লোকসান হয়। সে হিসাবে গত সাড়ে পাঁচ মাসে সর্বাধিক ব্যবহৃত ডিজেলের ক্ষেত্রে বিপিসির মোট লোকসানের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১১৪৭.৬০ কোটি টাকা। যা সরকার কর্তৃক ভর্তুকি দিয়ে সমন্বয় করতে হবে। তাছাড়া জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে প্রায় ৩৩ হাজার ৭৩৪.৭৮ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাংলাদেশ পেট্টোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) গ্রহণ করেছে। এ অবস্থায় বিপিসি লোকসানে চলে গেলে এসব উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হবে, যা জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য হুমকির সম্মুখীন হতে পারে।

ব্যাখ্যায় বলা হয়, সার্বিক প্রেক্ষাপটে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে সরকার গত ৪ নভেম্বর থেকে দেশে ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য পুনঃনির্ধারণ করেছে।  যদিও আশেপাশের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ডিজেলের মূল্য এখনও কম। গত ৩ নভেম্বর ভারতের কলকাতায় ডিজেলের মূল্য ছিল ১০১.৫৩ রুপি/লিটার বা ১২৪.৩৭ টাকা। তেলের ভেজালরোধে কেরোসিনের মূল্য ডিজেলের সমান রাখা হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস পেলে সরকার পুনরায় ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য সমন্বয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

জাতীয়

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই ডিজেল আর কেরোসিনের দাম বাড়ানো হয়েছে। রোববারের বিআরটিএ’র ভাড়া পুনর্নির্ধারণ কমিটির বৈঠক থেকে পরিবহণ ধর্মঘটের বিষয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধান আসবে।

শুক্রবার বিকালে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ষড়যন্ত্র করে নয়, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েই বারবার ক্ষমতায় আসছে আওয়ামী লীগ। তাই এই দলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে কোনো লাভ হবে না। নেতাকর্মীরাই আওয়ামী লীগের শক্তি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, তৃণমূলের কারণেই আজ আওয়ামী লীগ শক্তিশালী দল। বাংলাদেশ সব ধর্মের মানুষের উলে­খ করে তিন বলেন, সব সাম্প্রদায়িক হামলার মুখোশ উন্মোচন করা হচ্ছে। দেশ থেকে সাম্প্রদায়িক সব অপশক্তি দূর করা হবে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

এদিকে কোনো আলোচনা ছাড়াই জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ পরিবহণ মালিক সমিতির নেতাকর্মীরা। বুধবার রাতে প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য ৬৫ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৮০ টাকা করা হয়। প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল থেকে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও লরিচালক-মালিকরা গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন। তাদের সঙ্গে যোগ দেন বাসচালক-মালিকরাও।

ডিজেল ও করোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বৃদ্ধি করায় দেশে তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারণ মানুষ। ডিজেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল থেকে পরিবহণ মালিক-শ্রমিকরা সারা দেশে ধর্মঘট শুরু করেছেন ভাড়া বৃদ্ধির দাবি নিয়ে।

এ অবস্থায় ডিজেল ও করোসিনের দাম কেন বাড়ানো হয়েছে- সেটির ব্যাখ্যা দিয়েছে সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। ব্যাখ্যায় বলা হয়, সার্বিক প্রেক্ষাপটে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে সরকার গত ৪ নভেম্বর থেকে দেশে ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য পুনঃনির্ধারণ করেছে।  যদিও আশেপাশের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ডিজেলের মূল্য এখনও কম। গত ৩ নভেম্বর ভারতের কলকাতায় ডিজেলের মূল্য ছিল ১০১.৫৩ রুপি/লিটার বা ১২৪.৩৭ টাকা। তেলের ভেজালরোধে কেরোসিনের মূল্য ডিজেলের সমান রাখা হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস পেলে সরকার পুনরায় ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য সমন্বয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

জাতীয়

কিশোর গ্যাংসহ বিভিন্ন অপরাধের বিরুদ্ধে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য দেশের যুবসমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, আজকাল প্রায়ই বিভিন্ন গণমাধ্যমে কিশোর গ্যাংসহ বিভিন্ন অপরাধের খবর প্রচারিত হয়। এতে অনেক যুবকের ভবিষ্যৎ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি সমাজে এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এ ব্যাপারেও যুব সমাজকে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে।

সোমবার (১ নভেম্বর) জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ওই অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

রাষ্ট্রপতি যুবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, শুধু নিজে ভালো থাকলে চলবে না- অন্যরাও যাতে ভালো থাকে সে চেষ্টাও করতে হবে। তিনি মাতা-পিতা এবং অভিভাবকদেরও তাদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার পাশাপাশি তারা যাতে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়াতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখার উপদেশ দেন।

করোনা মোকাবিলায় যুব সমাজের সম্পৃক্ততার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, আগামী দিনে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে তারা (যুব সমাজ) গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে সে বিষয়ে আমার গভীর আস্থা রয়েছে। যুবদের উৎসাহ-উদ্দীপনা ও সাহসিকতা আমাদের ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখায়। আমার বিশ্বাস, সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে তাদের ধ্যান-ধারণা ও আগ্রহ অন্যদেরও শক্তি জোগাবে এবং দেশকে উন্নতি ও অগ্রগতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের অভিযাত্রায় অপ্রতিরোধ্য। কোভিড-১৯-এর সর্বগ্রাসী ভয়াবহতা মোকাবিলা করে টেকসই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে অফুরন্ত প্রাণশক্তির আধার আমাদের বিপুল যুবসমাজের সম্পৃক্ততা অপরিহার্য।

রাষ্ট্রপতি বলেন, আমাদের অমিত সম্ভাবনাময় যুবসমাজকে অবশ্যই উন্নত মানসিকতাসম্পন্ন বিজ্ঞানমনস্ক নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। যাবতীয় কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ, কর্মসম্পাদনে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার এবং প্রাপ্ত সরকারি-বেসরকারি সুযোগকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে যুব উন্নয়ন কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

‘ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের’ সদ্ব্যবহারের ওপর জোর দিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, ‌‌মানব জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় যৌবনকাল এবং মানবসম্পদের শ্রেষ্ঠ অংশ যুবসমাজ। আমাদের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ যুবসমাজ, যা সংখ্যায় ৫ কোটিরও বেশি। তাই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আমাদের প্রথম ও প্রধান কাজ হচ্ছে আমাদের ‘ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের’ সদ্ব্যবহার করা। সে জন্য যুবদের উৎপাদনশীল কর্মকাণ্ডে ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত করতে হবে। সরকার যুব উন্নয়ন অধিদফতরের মাধ্যমে গ্রাম ও শহর নির্বিশেষে বেকার যুবকদের উদ্বুদ্ধকরণ, প্রশিক্ষণ প্রদান, ঋণ সহায়তা ও পরামর্শ দিয়ে তাদের মানবসম্পদে পরিণত করছে। ফলশ্রুতিতে তারা কর্মসংস্থান ও আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে।

অনুষ্ঠানে ২৭ জন সফল আত্মকর্মী ও সংগঠককে জাতীয় যুব পুরস্কার দেওয়া হয়। পুরস্কারপ্রাপ্তদের পদক ও বিভিন্ন অঙ্কের চেক দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতির পক্ষে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল পুরস্কার তুলে দেন।

আত্মকর্মী (সারা দেশে) ক্যাটাগরিতে তিন জন, বিভাগীয় কোটায় প্রতি বিভাগে দুজন করে আট বিভাগের মোট ১৬ জন, নারী কোটায় একজন, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন (অটিস্টিক) কোটায় একজন ও ক্ষুদ্র নৃ-জনগোষ্ঠী কোটায় একজন আত্মকর্মী এ পুরস্কার পাবেন। এছাড়া যুব সংগঠক কোটায় পাঁচ জনকে জাতীয় যুব পুরস্কার দেওয়া হয়।

যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, যুব ও ক্রীড়া সচিব আখতার হোসেন, যুব উন্নয়ন অধিদফতরের মহাসচিব আজহারুল ইসলাম খান।

জাতীয়

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকীতে তার নামে আন্তর্জাতিক পুরস্কার ঘোষণা করেছে ইউনেস্কো নির্বাহী সংসদ। আগামী ১১ নভেম্বর প্যারিসে ইউনেস্কোর সদর দপ্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিতে পারেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন।

শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ইউরোপ সফরের বিস্তারিত তুলে ধরতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমসহ মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ইউনেস্কো সদর দপ্তরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ফর দ্য ক্রিয়েটিভ ইকোনোমিকস নামের এ পুরস্কার প্রদান করা হবে। এই প্রথম বঙ্গবন্ধুর নামে কোনো আন্তর্জাতিক পুরস্কার ঘোষণা করা হলো। এটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গর্বের।’

তিনি বলেন, ১২ নভেম্বর ইউনেস্কোর ৭৫ তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে একটি উচ্চ পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে অংশগ্রহণের জন্য ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এই উচ্চ পর্যায়ের সভায় অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের বিশ্বজনীন আদর্শ তুলে ধরার পাশাপাশি জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সর্বজনীন, মানসম্মত ও বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা এবং সুস্থ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সংস্কৃতি চর্চার গুরুত্বের বিষয়ে তার নিজস্ব চিন্তা ও এ বিষয়ে বাংলাদেশের অর্জনসমূহ বিশ্বের সামনে তুলে ধরবেন।

জাতীয়

দেশে গত ২৪ ঘন্টায় করোনা ভাইরাসে শনাক্ত হার কমেছে দশমিক ৪৬ শতাংশ। একদিন আগে এই ভাইরাসে শনাক্তের হার ছিল ১ দশমিক ৭১ শতাংশ। আজ কমে হয়েছে ১ দশমিক ২৫ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আজ ১৩ হাজার ২৪০ জনের নমুনা পরীক্ষায় নতুন শনাক্ত হয়েছে ১৬৬ জন। গতকাল ১৭ হাজার ৮১১ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিল ৩০৫ জন। দেশে এ পর্যন্ত ১ কোটি ৩ লাখ ৩২ হাজার ৬৪৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় মোট শনাক্ত হয়েছে ১৫ লাখ ৬৯ হাজার ৩২৮ জন। মোট শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনা আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৮ জন মারা গেছে। আগের দিনের চেয়ে আজ ১ জন বেশি মারা গেছে। আগের দিনে মারা গিয়েছিল ৭ জন। আজ মৃতদের মধ্যে পুরুষ ৬ জন ও নারী ২ জন। এ নিয়ে সারা দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭ হাজার ৮৬২ জনে। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

এদিকে ঢাকা জেলায় (মহানগরসহ) ২৪ ঘন্টায় ৭ হাজার ৩১০ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছে ৮৮ জন। শনাক্তের হার ১ দশমিক ২০ শতাংশ এবং আগের দিনে এ হার ছিল ১ দশমিক ৮২ শতাংশ। এই জেলায় গত ২৪ ঘন্টা মারা গেছেন ৪ জন। আগের দিনে মারা গিয়েছিল ২ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরও জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ৪ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২ জন এবং খুলনা ও সিলেট বিভাগে ১ জন করে মারা গেছে। তবে, রাজশাহী, বরিশাল, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে করোনা আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘন্টায় কেউ মারা যায়নি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১৮০ জন। সুস্থ্যতার হার ৯৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ। আগের দিনে সুস্থতার হার ছিল ৯৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ। দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ১৫ লাখ ৩৩ হাজার ১৪৭ জন।

জাতীয়

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিরূপ প্রভাবে বাংলাদেশে প্রতি বছর বজ্রপাতে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত প্রাণহানি ঘটেছে ৩৫২ জনের। সর্বশেষ গত ২১ অক্টোবর রাতে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় দুই মৎস্যজীবীর মৃত্যু হয়। সরকারি হিসাবে গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের ১০ মাসে বজ্রপাতে ১০০-এর বেশি মারা গেছে। ২০২০ সালে বজ্রপাতে মারা যায় ২৫৫ জন। ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, দেশে গত ১১ বছরে বজ্রপাতে ২ হাজার ৮০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। যাদের বেশির ভাগই খোলা মাঠ বা হাওরে কৃষিকাজ করছিলেন। ফিনল্যান্ডের বজ্রপাত-বিষয়ক গবেষণা সংস্থা ‘ভাইসালা’র গবেষকরা বলছেন, বজ্রপাতের অন্যতম হটস্পট হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ।

পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি, বন-জঙ্গল উজাড়, বঙ্গোপসাগর থেকে সক্রিয় মৌসুমি বায়ু প্রবাহ, উত্তরের হিমালয়ের পাদদেশে পুঞ্জীভূত মেঘ, মেঘ সৃষ্টির প্রক্রিয়া কিউমোলোনিম্বাস (পুঞ্জমেঘ), মোবাইল ফোন টাওয়ার থেকে উৎপন্ন অতিমাত্রার ম্যাগনেটিক ফিল্ড ও ওয়েব বজ্রপাতের জন্য দায়ী। বাংলাদেশে ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর প্রায় ৫০ লাখ বা তার বেশি-সংখ্যক বজ্রপাত মেঘ থেকে ভূমিতে নেমে আসে। বজ্রপাত ঠেকাতে আধুনিক কোনো প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হয়নি পৃথিবীতে। তবে আগাম সতর্ক সংকেত প্রদানে স্যাটেলাইট ভিত্তিক বিভিন্ন সিস্টেম ও অ্যাপস রয়েছে। এমতাবস্থায় সরকার বিদেশ থেকে বজ্রপাতে মৃত্যুরোধে ‘আরলি ওয়ার্নিং সিস্টেম’ বা বজ্রপাত পূর্বাভাস যন্ত্র এনে তা বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। প্রাথমিকভাবে দেশের বজ্রপাত-প্রবণ এলাকাগুলোতে ৭২৩টি যন্ত্র বসানো হবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বজ্রপাতের ৪০-৪৫ মিনিট আগেই সংকেত পাওয়া যাবে। ফলে যারা খোলা আকাশের নিচে কাজ করেন তারা সহজেই নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে পারবেন। এতে অনেক প্রাণহানি রোধ করা সম্ভব হবে। এছাড়া বজ্রপাতে মৃত্যু ঠেকাতে ‘লাইটার অ্যারেস্টার’ সম্বলিত বজ্রপাত-নিরোধক কংক্রিটের ছাউনি (শেল্টার) নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রাথমিকভাবে হাওর এলাকায় প্রতি কিলোমিটার পরপর একটি করে মোট ১ হাজার ছাউনি নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। দেশের হাওরাঞ্চলসহ বজ্রপাতপ্রবণ ২৩ জেলায় ছাউনি নির্মাণে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ছাউনির সম্ভাব্য নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এক কিলোমিটার অন্তর-অন্তর নির্মাণ করা হবে একেকটি শেল্টার, যাতে বজ্রপাতের আওয়াজ পেলেই মাঠের কৃষকসহ মানুষজন সেখানে আশ্রয় নিতে পারেন।

প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান বলেন, বজ্রপাতের আগে মেঘের মধ্যে পজিটিভ-নেগেটিভ চার্জগুলো তৈরি হয়। চার্জ তৈরি হওয়ার চার মিনিট পরই বজ্রপাত হয়। এজন্য গুড়ুগুড়ু ডাক শুনলে যাতে মানুষ ঘরে থাকে বা মেঘ দেখে ঘরে যেতে পারে। বর্তমান বিশ্বে বজ্রপাতের ক্ষেত্রেও সাইক্লোনের মতো আগাম সতর্কবার্তা দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। কিছু মেশিন আছে যেগুলো ৪০ মিনিট আগেই শনাক্ত করতে পারে বজ্রপাত হবে এবং কোথায় হবে। তাই বজ্রপাতের ক্ষেত্রে আগাম সতর্কতা প্রদানকারী এ যন্ত্রগুলো আমদানি করা হবে। এ প্রকল্পের আওতায় বজ্রপাত থেকে বাঁচতে আশ্রয়কেন্দ্র করা হবে। প্রাথমিকভাবে বজ্রপাতপ্রবণ অঞ্চলগুলোতে, বিশেষ করে হাওর-বাঁওড় এলাকায় বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এই সিগন্যাল যাতে একটি অ্যাপের মাধ্যমে স্থানীয় মানুষের মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ যেতে পারে, সেই ব্যবস্থাও করা হবে।

দেশের কয়েকটি জেলা সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, দিনাজপুর, সিরাজগঞ্জ, হবিগঞ্জ, শেরপুর ও জামালপুরে বজ্রপাতে মৃত্যুর হার বেশি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, মৃত্যু বেশি হয় খোলা মাঠ ও হাওরের মধ্যে। তাই খোলা মাঠ ও হাওরে বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রের মতো বজ্রপাত আশ্রয়কেন্দ্র করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেখানে একটা পাকা ঘর থাকবে এবং প্রত্যেক ঘরে একটি করে লাইটনিং অ্যারেস্টার দেওয়া হবে। যাতে ২০ থেকে ২৫ মিনিটের মধ্যে সতর্কবার্তা শোনার পর মানুষ সেই আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারে। বজ্রপাত না হওয়া পর্যন্ত তারা সেখানে অপেক্ষা করবে। এই আশ্রয়কেন্দ্রগুলো হবে বহুমুখী। এখানে কৃষক ও মৎস্যজীবীরা সকালে নাস্তা করতে পারবেন, দুপুরে খেতে পারবেন। ঝড়-বৃষ্টিতে আশ্রয় নিতে পারবেন, কেউ চাইলে বিশ্রামও নিতে পারবেন। তিনি জানান, বজ্রপাতে মৃত্যু ঠেকাতে ৪৭৬ কোটি টাকার প্রকল্প প্রণয়ন করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এটার সম্ভাব্যতা যাচাই করছে, সেই রিপোর্ট আসলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর কাজ শুরু হবে। স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন ‘সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরামের (এসএসটিএএফ) সভাপতি ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, বজ্রপাতে মৃতদের বেশির ভাগই কৃষক। দেশের হাওর অঞ্চলগুলোতে বেশি বজ্রপাত হওয়ায় দ্রুত ঐ সব অঞ্চলে আগাম বার্তা ও বজ্র-নিরোধক টাওয়ার নির্মাণ গুরুত্বপূর্ণ।

এদিকে গেজেটস নাউয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের সর্বাধিক বজ্রপাতপ্রবণ কর্নাটকে ‘সিদিলু’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করে মৃত্যুর সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়েছে। এই অ্যাপ ব্যবহারকারীরা বজ্রপাতের ৪৫ মিনিট আগেই সংকেত পেয়ে থাকেন। ফলে সহজেই সবাই নিরাপদ স্থানে চলে যেতে পারেন। মূলত ব্যবহারকারীদের রিয়েল টাইম লোকেশন বা অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে সংকেত দিচ্ছে সিদিলু। ঝুঁকির মাত্রা বিবেচনায় তিনটি ভিন্ন ভিন্ন রঙে সতর্কসংকেত দেখায় সিদিলু অ্যাপ। রঙ তিনটি হলো-লাল, কমলা ও হলুদ। আর ব্যবহারকারী নিরাপদে থাকলে এটি দেখাবে সবুজ রঙ। সিদিলুতে লাল রঙের সংকেতের অর্থ ব্যবহারকারী যে জায়গায় অবস্থান করছেন তার এক বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে বজ্রপাতের আশঙ্কা রয়েছে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে ঝুঁকি অনেক বেশি। অন্যদিকে, কমলা রঙের সংকেতের অর্থ হলো-ব্যবহারকারীর অবস্থানের ৫ বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে বজ্রপাত হবে। আর হলুদ রঙের সংকেতের অর্থ হলো ১৫ বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে বজ্রপাতের আশঙ্কা আছে।