জাতীয়

আর মাত্র দুই দিন পর ঈদুল আজহা। এ উপলক্ষে গতকাল শনিবার প্রথম দিনেই জমে উঠেছে রাজধানীর মোহাম্মদপুর-বসিলা কোরবানির পশুর হাট। গতকাল পর্যন্ত এই হাটে কোরবানির পশু এসেছে সাত হাজারের বেশি। এর মধ্যে গরু প্রায় ছয় হাজার আর ছাগল এক হাজার। এর বাইরে ওই হাটে উট, মহিষ ও ভেড়াও দেখা গেছে। প্রথম দিনে কোরবানির পশুর হাটে ক্রেতাসমাগম ছিল দেখার মতো। তবে গতকাল কোথাও জাল নোট, ছিনতাই কিংবা চুরির মতো কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। হাটে স্বাস্থ্যবিধি চরমভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে।

গতকাল ছিল কোরবানির পশুর হাটের প্রথম দিন। শুরুর দিনেই বিপুল ক্রেতাসমাগমে জমে উঠেছে মোহাম্মদপুর-বসিলা পশুর হাট। গতকাল সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের এই হাট ঘুরে দেখা গেছে, বেলা যত গড়াচ্ছিল, তাল মিলিয়ে হাটে বাড়তে থাকে ক্রেতার ভিড়। শিশু ও বয়স্কদের হাটে নিয়ে আসা নিষেধ থাকলেও বেশির ভাগ ক্রেতা এসেছে সপরিবারে। আর কিছুক্ষণ পরপরই হাটে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে নিয়ে আসা গরু ট্রাক থেকে নামানো হচ্ছিল। গরু ব্যবসায়ীদের হাটে প্রবেশ করার কথা জীবাণুনাশক টানেল দিয়ে। অথচ হাটের প্রবেশপথে দেখা যায়নি টানেল। তবে মাইকে বিরতিহীন ঘোষণা করা হচ্ছিল স্বাস্থ্য সচেতনতার বিভিন্ন দিক। এসবে কাউকে কর্ণপাত করতে দেখা যায়নি।

মোহাম্মদপুর-বসিলা পশুর হাটের ইজারাদার আমজাদ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি দুটি জীবাণুনাশক টানেল এনে রেখেছি। এখন তো সবাই হাটে গরু নিয়ে ঢুকতেছে, তাই সেগুলো বসাইনি। একটু পরেই প্রবেশপথে জীবাণুনাশক টানেল বসানো হবে।’

গতকাল এই হাটে দেশি জাতের ছোট আকারের গরু বিক্রি হতে দেখা গেছে ৫০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত। তবে বিদেশি জাতের এবং দেশি-বিদেশি সংকর জাতের গরুর দাম আকারভেদে এক লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত চাইতে দেখা গেছে বিক্রেতাদের। বিক্রেতারা বলছেন, হাটে দেশি ছোট আকারের গরুর চাহিদা বেশি। আর গত বছরের চেয়ে এবার গরুর দামও বেশি।

এ বছর হাটে ছাগলের চাহিদাও তুলনামূলকভাবে বেশি। গতকাল প্রতিটি ছাগল বিক্রি হতে দেখা গেছে ১০ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত। পাবনা থেকে ৫০০ ছাগল নিয়ে বসিলা হাটে এসেছেন ব্যবসায়ী মনির। এরই মধ্যে তাঁর ১০০ ছাগল বিক্রি হয়ে গেছে।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর তিনটি বুথ রয়েছে এই হাটে। বিচ্ছিন্নভাবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের টহল দিতেও দেখা গেছে। তবে হাটে গতকাল কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন র‌্যাব ২-এর কর্মকর্তা তপন চন্দ্র রায়।

উত্তরা-১৭ নম্বর সেক্টরে কোরবানির পশুর হাট : হাটে কোরবানির পর্যাপ্ত পশু থাকলেও প্রথম দিনে তেমন জমেনি উত্তরা-১৭ নম্বর সেক্টরের পশুর হাট। প্রথম দিনে উল্লেখযোগ্য বিক্রিও হয়নি বলে জানান বিক্রেতারা। ক্রেতাও ছিল কম। গতকাল এই হাটে যেসব কোরবানির পশু বিক্রি হয়েছে সেগুলোর বেশির ভাগ ছিল আকারে ছোট ও মাঝারি। দিনভর ওই হাট ঘুরে অন্তত ২৫টি গরু বিক্রি হতে দেখা গেছে ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকার মধ্যে। দু-একটি বিক্রি হয়েছে এক লাখ টাকার বেশি দামে।

কোরবানির পশু বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রত্যাশিত বিক্রি এখনো শুরু হয়নি। যেগুলো বিক্রি হচ্ছে তার বেশির ভাগই ছোট আকারের। ব্যবসায়ীরা এবার পশুর দাম নিয়ে কিছুটা শঙ্কায় থাকলেও আশা করছেন আজ রবিবার থেকে সব ধরনের গরু বিক্রি বেড়ে যাবে।

হাট ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতা-বিক্রেতার বেশির ভাগের মুখে মাস্ক নেই। হাট কর্তৃপক্ষের ভলান্টিয়ার মাস্ক দিলেও প্রায় সবাই মুখে না লাগিয়ে থুতনিতে ঝুলিয়ে রাখছে।

জানতে চাইলে আজমল নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘কত আর মাস্ক পরন যায়! এই গরম এই বৃষ্টি! মাস্ক ময়লা হইয়া গেছে, তাই ফালাই দিছি। ভলান্টিয়ার আইলে দিবো, তখন আবার পরুম।’

জামালপুরের মেলান্দহ থেকে ১৬টি গরু নিয়ে এই হাটে এসেছেন ব্যবসায়ী হযরত আলী। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘দুই দিন হলো হাটে এসেছি। এই সময়ে তিনটি গরু বিক্রি হয়েছে। এগুলো মাঝারি সাইজের। আশা করছি, বড়গুলা রবিবার বা সোমবার থেকে বিক্রি করতে পারব। এখন যাঁরা আসছেন তাঁদের বেশির ভাগ দরদাম দেখতে আসছেন।’ কোরবানির পশু কিনতে হাটে এসেছেন খিলক্ষেতের জুবায়ের আলী। কী ধরনের গরু কিনবেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এক লাখ টাকার কাছাকাছি দামে একটা গরু কিনব। ঠিকঠাকমতো পেলে আজই (গতকাল) কিনব, না হলে পরে আবার আসতে হবে।’

তুরাগ এলাকা থেকে আসা ক্রেতা মহসিন মিয়া বলেন, ‘৬৫ হাজার টাকা দিয়া একটা ছোট ষাঁড় কিনছি। প্রথম দিনেই কিনলাম। পরে ভিড় বাড়বে। ঝামেলা কমাতে আগেভাগেই কিনে রাখলাম।’ হাটের ইজারাদার নূর হোসেন বলেন, প্রথম দিন ক্রেতারা তেমন আসেনি। ফলে বিক্রি কম। তবে কাল থেকে হাট জমে যাবে।

এ বছর ঢাকার দুই সিটিতে মোট ২০টি কোরবানির পশুর হাট বসেছে।

জাতীয়

টানা পঞ্চম দিনের মত ২৪ ঘণ্টায় ১২ হাজারের বেশি কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছে বাংলাদেশে, তবে পাঁচ দিন পর মৃত্যু নেমে এসেছে দুইশর নিচে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে প্রায় ৪২ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে ১২ হাজার ১৪৮ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে আরও ১৮৭ জনের।

নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে ১০ লাখ ৮৩ হাজার ৯২২ জনে। তাদের মধ্যে ১৭ হাজার ৪৬৫ জনের প্রাণ গেছে করোনাভাইরাসে।

ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে কঠোর লকডাউনের মধ্যে গত ১২ জুলাই দেশে প্রথমবারের মত এক দিনে ১৩ হাজারের বেশি নতুন রোগী ধরা পড়ে। সেদিন থেকে টানা পাঁচদিন হল শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১২ হাজারের বেশি থাকছে।

আর ১১ জুলাই এক দিনে রেকর্ড ২৩০ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেদিন থেকে টানা পাঁচদিন দৈনিক মৃত্যু ছিল দুইশর বেশি। শুক্রবার তা কমার খবর এল।

আগের দিন বৃহ্স্পতিবার ১২ হাজার ২৩৬ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল; মৃত্যু হয়েছিল ২২৬ জনের। সেই হিসাবে শুক্রবার শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এবং মৃত্যু দুটোই কমেছে।

সরকারি হিসাবে গত এক দিনে আরও ৮ হাজার ৫৩৬ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৯ লাখ ১৪ হাজার ৩৪৩ জন।

গত এক দিনে কেবল ঢাকা বিভাগেই ৪৯৪৯ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে, যা দিনের মোট শনাক্তের ৪০ শতাংশের বেশি। চট্টগ্রাম বিভাগে রোগী শনাক্ত ২৩৩০ জন।

যে ১৮৭ জন গত এক দিনে মারা গেছেন, তাদের ৬৮ জনই ছিলেন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। খুলনা বিভাগে ৩৯ এবং চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গতবছর ৮ মার্চ; প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত ৯ জুলাই দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১০ লাখ পেরিয়ে যায়, আর ১৪ জুলাই মোট মৃত্যু ছাড়ায় ১৭ হাজার।

বিশ্বে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১৮ কোটি ৯০ লাখ ছাড়িয়েছে। আর ৪০ লাখ ৬৮ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে এ মহামারীতে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬২৭টি ল্যাবে ৪১ হাজার ৯৪৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৭১ লাখ ৮৬ হাজার ৩৬৭টি নমুনা।

২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ, যা আগের দিন ২৭ দশমিক ২৩ শতাংশ ছিল।

দেশে এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৮ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৪ দশমিক ৩৬শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৬১ শতাংশ।

ঢাকা বিভাগের মধ্যে ঢাকা জেলায় ৩ হাজার ৩৩৭ জন, ফরিদপুরে ১৪৭ জন, গাজীপুরে ২৪৫ জন, মুন্সিগঞ্জে ১০৯ জন, নারায়ণগঞ্জে ২৪৭ জন, নরসিংদীতে ১৪১ জন, রাজবাড়ীতে ১৫৮ জন, শরীয়তপুরে ১০৯ জন এবং টাঙ্গাইল জেলায় ১৮৭ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় ৮০২ জন, কক্সবাজারে ২১৮, ফেনীতে ১৫৬ জন, নোয়াখালীতে ১৬৩ জন, চাঁদপুরে ১১৯ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৪৪ জন এবং কুমিল্লায় ৫২২ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে।

রাজশাহী বিভাগের মধ্যে রাজশাহী জেলায় ২৭০ জন, পাবনায় ২৩০ জন, সিরাজগঞ্জে ১৪৫ জন এবং বগুড়ায় ১৮০ জন নতুন রোগী মিলেছে।

খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গায় ১১০ জন, যশোরে ২৩৪ জন, ঝিনাইদহে ২৩৬ জন, খুলনায় ৩৪৮ জন এবং কুষ্টিয়ায় ২০৩ জনের মধ্যে ধরা পড়েছে সংক্রমণ।

এছাড়া অন্য বিভাগের জেলাগুলোর মধ্যে বরিশালে ১৮৬ জন, ঝালকাঠিতে ১০৪ জন, ময়মনসিংহে ২৩২ জন, নেত্রকোনায় ১১০ জন, সিলেটে ২৮৩ জন, হবিগঞ্জে ১২০ জন এবং মৌলভীবাজারে ১১৩ নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে গত এক দিনে।

গত এক দিনে ঢাকা বিভাগে যে ৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে ৪২ জন ঢাকা জেলার। আর খুলনা বিভাগে মারা যাওয়া ৫২ জনের মধ্যে ১২ জন খুলনা এবং ১১ জন কুষ্টিয়া জেলার বাসিন্দা ছিলেন। চট্টগ্রাম বিভাগে মারা যাওয়া ৪২ জনের মধ্যে ১৭ জন কুমিল্লা জেলার।

এছাড়া রাজশাহী বিভাগে ২৪ জন, বরিশাল বিভাগে ৬ জন, রংপুর বিভাগে ১৩ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১০ জন এবং সিলেট বিভাগে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়।

মৃত ২২৬ জনের মধ্যে ২ জনের বয়স ছিল ১০০ বছরের বেশি। আর ১১৯ জনেরই বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। ৪৯ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৩৬ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ১২ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ৬ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ১ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ১ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।

তাদের ১৪০ জন ছিলেন পুরুষ, ৮৬ জন ছিলেন নারী। ১৬৮ জন সরকারি হাসপাতালে, ৩৮ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং ২০ জন বাসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

জাতীয়

গণতন্ত্র অবরুদ্ধ দিবস আজ। ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই ভোরে সেনাসমর্থিত বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার ধানমন্ডিস্থ সুধা সদনের বাসভবন থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের আগে শেখ হাসিনার নামে একাধিক মামলা দেওয়া হয়। গ্রেফতারের পর তাকে পুলিশের একটি জিপে করে ঢাকার সিএমএম আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়লে তৎকালীন ভীতসন্ত্রস্ত পরিস্থিতির মুখেও দলের নিবেদিত কর্মীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। আদালত প্রাঙ্গণে প্রিয় নেত্রীকে একনজর দেখতে সমবেত হন হাজারো কর্মী-সমর্থক।

আওয়ামী লীগের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সেদিন ভোরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় দুই সহস্রাধিক সদস্য সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার ধানমন্ডিস্থ বাসভবন সুধা সদন ঘেরাও করে। এমতাবস্থায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ফজরের নামাজ আদায় করেন। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করে সুধা সদন থেকে বের করে নিয়ে আসে এবং যৌথ বাহিনীর সদস্যরা বন্দি অবস্থায় ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে।

তৎকালীন অবৈধ ও অসাংবিধানিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নীলনকশা অনুযায়ী আদালতের কার্যক্রম শুরু হওয়ার নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুই ঘণ্টা আগেই আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার জামিন আবেদন আইনবহির্ভূতভাবে নামঞ্জুর করে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে বাংলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারকে অবরুদ্ধ করার অপপ্রয়াস চালায় তত্কালীন অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার। শেখ হাসিনা আদালতের গেটে দাঁড়িয়ে প্রায় ৩৬ মিনিটের অগ্নিঝরা বক্তৃতার মাধ্যমে তত্কালীন অবৈধ সরকারের হীন-রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন। গ্রেফতার পূর্ব মুহূর্তে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীর উদ্দেশে একটি চিঠির মাধ্যমে দেশের জনগণ এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গণতন্ত্র রক্ষায় মনোবল না হারিয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনার সেই কারাবরণ

শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশবাসী ও দলীয় নেতাকর্মীরা জেগে উঠলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ষড়যন্ত্র মারাত্মক প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়। আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠন ও গণতন্ত্রপ্রত্যাশী দেশবাসীর ক্রমাগত প্রতিরোধ আন্দোলন, বঙ্গবন্ধুকন্যার আপসহীন ও দৃঢ় মনোভাব এবং দেশবাসীর অনড় দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৮ সালের ১১ জুন দীর্ঘ ১১ মাস কারাভোগ ও নানামুখী ষড়যন্ত্রের পর তৎকালীন অবৈধ তত্ত্বাবধায়ক সরকার আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার মুক্তির মধ্য দিয়ে এদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরায় ফিরে আসে। যুগপৎভাবে বিকাশ ঘটে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের। আজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হারানো স্বপ্ন ও সোনার বাংলা বাস্তবায়িত হচ্ছে তারই সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বে। সব বাধা-বিপত্তি জয় করে আজ শুধু বাংলাদেশেই নয় বিশ্ব দরবারেও স্বমহিমায় উজ্জ্বল জনগণের নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি এক বিবৃতিতে যথাযথভাবে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে যার যার অবস্থান থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে পরম করুণাময়ের কাছে দেশবাসীকে প্রার্থনা করার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকারকে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

জাতীয়

এক দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আগের দিনের চেয়ে সামান্য কমলেও টানা পঞ্চম দিনের মত দুইশর বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে করোনাভাইরাস।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে প্রায় ৪৫ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে ১২ হাজার ২৩৬ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে আরও ২২৬ জনের।

নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে ১০ লাখ ৭১ হাজার ৭৭৪ জনে। তাদের মধ্যে ১৭ হাজার ২৭৮ জনের প্রাণ গেছে করোনাভাইরাসে।

ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে কঠোর লকডাউনের মধ্যে গত ১২ জুলাই দেশে প্রথমবারের মত এক দিনে ১৩ হাজারের বেশি নতুন রোগী ধরা পড়ে। সেদিন থেকে টানা চারদিন ধরে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১২ হাজারের বেশি থাকছে।

আর ১১ জুলাই এক দিনে রেকর্ড ২৩০ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেদিন থেকে টানা পাঁচদিন ধরে দৈনিক মৃত্যু থাকছে দুইশর উপরে।

আগের দিন বুধবার ১২ হাজার ৩৮৩ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল; মৃত্যু হয়েছিল ২১০ জনের। সেই হিসাবে বৃহস্পতিবার শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমলেও বেড়ে গেছে মৃত্যু।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গতবছর ৮ মার্চ; প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত ৯ জুলাই দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১০ লাখ পেরিয়ে যায়, আর ১৪ জুলাই মোট মৃত্যু ছাড়ায় ১৭ হাজার।

গত এক দিনে কেবল ঢাকা বিভাগেই ৫২৩৪ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে, যা দিনের মোট শনাক্তের ৪২ শতাংশের বেশি। চট্টগ্রাম বিভাগে রোগী শনাক্ত ২০৪৭ জন।

আর যে ২২৬ জন গত এক দিনে মারা গেছেন, তাদের ৭৪ জনই ছিলেন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। খুলনা বিভাগে ৫২ এবং চট্টগ্রাম বিভাগে ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

সরকারি হিসাবে গত এক দিনে আরও ৮ হাজার ৩৯৫ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৯ লাখ ৫ হাজার ৮০৭ জন।

বিশ্বে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১৮ কোটি ৮৫ লাখ ছাড়িয়েছে। আর ৪০ লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে এ মহামারীতে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬২৭টি ল্যাবে ৪৪ হাজার ৯৪১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৭১ লাখ ৪৪ হাজার ৪২০টি নমুনা।

২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৭ দশমিক ২৩ শতাংশ, আগেরদিন যা ২৯ দশমিক ১৪ শতাংশ ছিল।

দেশে এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৫ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৪ দশমিক ৫১ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৬১ শতাংশ।

ঢাকা বিভাগের মধ্যে ঢাকা জেলায় ৩ হাজার ৭৩২ জন, ফরিদপুরে ১৬৬ জন, গাজীপুরে ২৫২ জন, নারায়ণগঞ্জে ২৯০ জন, টাঙ্গাইল জেলায় ২৭৫ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় ৭৬৮ জন, ফেনীতে ১৫৭ জন, নোয়াখালীতে ১৯৭ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৮২ জন এবং কুমিল্লায় ৫৪৩ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে।

রাজশাহী বিভাগের মধ্যে রাজশাহী জেলায় ২৮০ জন, নাটোরে ১৭৬ জন, পাবনায় ৩৩৫ জন, সিরাজগঞ্জে ১৭৯ জন এবং বগুড়ায় ১৭৬ জন নতুন রোগী মিলেছে।

খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গায় ১৩১ জন, যশোরে ২৯৮ জন, খুলনায় ৪৫৯ জন এবং কুষ্টিয়ায় ২৭৩ জন জনের মধ্যে ধরা পড়েছে সংক্রমণ।

এছাড়া অন্য বিভাগের জেলাগুলোর মধ্যে বরিশালে ১৯২ জন, ময়মনসিংহে ২৬৩ জন, নেত্রকোনায় ১০১ জন এবং সিলেটে ২৮৩ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে গত এক দিনে।

গত এক দিনে ঢাকা বিভাগে যে ৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে ৪২ জন ঢাকা জেলার। আর খুলনা বিভাগে মারা যাওয়া ৫২ জনের মধ্যে ১২ জন খুলনা এবং ১১ জন কুষ্টিয়া জেলার বাসিন্দা ছিলেন। চট্টগ্রাম বিভাগে মারা যাওয়া ৪২ জনের মধ্যে ১৭ জন কুমিল্লা জেলার।

এছাড়া রাজশাহী বিভাগে ২৪ জন, বরিশাল বিভাগে ৬ জন, রংপুর বিভাগে ১৩ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১০ জন এবং সিলেট বিভাগে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়।

মৃত ২২৬ জনের মধ্যে ২ জনের বয়স ছিল ১০০ বছরের বেশি। আর ১১৯ জনেরই বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। ৪৯ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৩৬ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ১২ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ৬ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ১ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ১ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।

তাদের ১৪০ জন ছিলেন পুরুষ, ৮৬ জন ছিলেন নারী। ১৬৮ জন সরকারি হাসপাতালে, ৩৮ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং ২০ জন বাসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

জাতীয়

নেত্রকোনায় উদীচী কার্যালয়ে বোমা হামলার আসামি নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য আসাদুজ্জামান পনিরের (৩৭) ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) রাত ১১টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসি কার্যকর করা হয়। তিনি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার কানাইকরস্থানের ফজলুল হক চৌধুরীর ছেলে।

কাশিমপুর কারাগারের জেলার দেব দুলাল কর্মকার বলেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষে আসাদুজ্জামানের মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশ পাহারায় স্বজনরা তার মরদেহ নিয়ে রওনা হয়েছেন।

জেএমবি সদস্য পনিরের ফাঁসি কার্যকর

আসাদুজ্জামান পনিরের ফাঁসি কার্যকর হয় জল্লাদ শাহজাহানের হাতে। মৃত্যু নিশ্চিত করেন সিভিল সার্জন অফিসের প্রতিনিধি ডাক্তার আশিফ রহমান ইভান। এ সময় ঢাকা বিভাগীয় কারা উপ-মহাপরিদর্শক তৌহিদুল ইসলাম, জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নাসরীন সুলতানা, সিভিল সার্জন ডা. মো. খাইরুজ্জামান এবং পুলিশ কমিশনারের পক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার জাকির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

কারাগার সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালে ৮ ডিসেম্বর নেত্রকোনায় জেএমবির সক্রিয় সদস্য হিসেবে বোমা বিস্ফোরণে সহযোগিতা করে আসাদুজ্জামান পনির। ওই বোমা হামলায় ৮ জন নিহত এবং অনেক লোক আহত হন। এ ঘটনায় জেএমবি সদস্য আসাদুজ্জামান পনির ওরফে আসাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে একাধিক মামলা হয়। এর মধ্যে নেত্রকোনা থানায় মামলা নং- ০৮(১২)২০০৫ ধারা-১২০ বি/৩০২/৩৪/১০৯, আদালত ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। আদালতের আদেশে আইনি প্রক্রিয়া শেষে জেএমবি সদস্য আসাদুজ্জামান পনিরকে বৃহস্পতিবার ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যদণ্ড কার্যকর করা হলো।

কারাগার সূত্রে আরও জানা গেছে, নেত্রকোনা থানায় করা একটি মামলায় আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। তার বিরুদ্ধে আরও একাধিক মামলা ছিল। নেত্রকোনা থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে আরেকটি মামলায় তার ২০ বছরের কারাদণ্ড হয়। এছাড়া বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের দুটি মামলায় তাকে আরও মোট ৩০ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।

জাতীয়

দেশের আকাশে পবিত্র জিলহজ্জ মাসের চাঁদ দেখা গেছে। আগামীকাল থেকে পবিত্র জিলহজ্জ শুরু এবং আগামী ২১ জুলাই (১০ জিলহজ্জ) সারাদেশে মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে।

রোববার (১১ জুলাই) সন্ধ্যায় দেশের বিভিন্ন স্থানে চাঁদ দেখা গেছে। তবে

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি।

রোববার (১১ জুলাই) সন্ধ্যায় দেশের বিভিন্ন স্থানে চাঁদ দেখা গেছে। এছাড়া জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটিও এ ঘোষণা দিয়েছেন।

জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সভাপতি হিসেবে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেন, পবিত্র জিলহজ্জ মাসের চাঁদ দেখা সম্পর্কে সব জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আজ ২৯ জিলকদ ১৪৪২ হিজরি, ২৭ আষাঢ় ১৪২৮ বঙ্গাব্দ, ১১ জুলাই ২০২১ খ্রি. রোববার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আকাশে জিলহজ্জ মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে।

এমতাবস্থায়, আগামীকাল ২৮ আষাঢ় ১৪২৮ বঙ্গাব্দ, ১২ জুলাই ২০২১ খ্রি. সোমবার থেকে পবিত্র জিলহজ্জ মাস মাস গণনা শুরু হবে। এই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১০ জিলহজ্জ ১৪৪২ হিজরী, ৬ শ্রাবণ ১৪২৮ বঙ্গাব্দ, ২১ জুলাই ২০২১ বুধবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে।

সভায় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নূরুল ইসলাম, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ড. মো. মুশফিকুর রহমানসহ অন্য বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয়

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ১১ হাজার ৮৭৪ জনের করোনা শনাক্ত। এ নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ২১ হাজার ১৮৯ জনে। আজ রবিবার (১১ জুলাই) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ২৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৬ হাজার ৪১৯ জনে।

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ছয় হাজার ৩৬২ জন। তাদের নিয়ে দেশে করোনা থেকে সুস্থ হলেন আট লাখ ৭৪ হাজার ৫০১ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাতে রোগী শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ আর এখন পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ আর শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুহার এক দশমিক ৬১ শতাংশ।

জাতীয়

দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। তবে শহরের তুলনায় সংক্রমণ এখন গ্রামাঞ্চলেই বেশি ছড়িয়ে পড়ছে।

আর গ্রামের মানুষ করোনা ভাইরাসকে স্বাভাবিক ভাবছে জ্বর-সর্দি।

রোববার (১১ জুলাই) দুপুরে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষে পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের আয়োজনে এক ভার্চ্যুয়াল সভায় একথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

তিনি বলেন, রোগীর পরিস্থিতি জটিল হলেই হাসপাতালে আসছেন, কিন্তু ততক্ষণে আর চিকিৎসকদের কিছুই করার থাকছে না।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, গ্রামের লোকজনের এক পর্যায়ে যখন শ্বাসকষ্ট একদম বেড়ে যায়, তখন তারা হাসপাতালে ছুটে আসে। কিন্তু তখন তাদের ফুসফুসের প্রায় ৭০ শতাংশের মতো আক্রান্ত হয়ে গেছে। তাদের অক্সিজেন নেমে গেছে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশে, কিন্তু তখন আর চিকিৎসা দিয়ে তাকে বাঁচানো সম্ভব হয় না। আমাদের চিকিৎসক-নার্সরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও তখন আর তাদের ফিরিয়ে আনতে পারে না।

‘করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যে পারিবারিক কলহ ও বাল্যবিয়ে বেড়েছে। এ সময়ে প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারি একটু কমেছে। মানুষ ক্লিনিক ও হাসপাতালে আসতে ভয় পায়। অভিভাবকরা কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগেছে। হোম ডেলিভারি বা ঘরে প্রসবটাই বেড়েছে। মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহার যাতে বেড়ে না যায় আমাদের সেই চেষ্টা ছিল। ’

তিনি বলেন, করোনার সময় ঘরে ডেলিভারি বেড়েছে এটা একটা বিষয়, আর দরিদ্র পরিবারে বাল্যবিয়ে বেড়েছে। পারিবারিক কলহও এই কারোনার সময়ে বেড়েছে। পৃথিবীর সর্বত্রই এটি দেখা গেছে। নারী নির্যাতন বলেন, আর শিশুদের প্রতি অবহেলা, করোনার সময় বিশ্বজুড়েই এটা বেড়েছে।

দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমেছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আগে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ২ দশমিক ৬ শতাংশ ছিল, এখন সেটা এক দশমিক ৩ শতাংশ। অনেক কমেছে। জন্ম নিয়ন্ত্রণের উপকরণ ব্যবহারের হার আগে ছিল ৮ শতাংশ। এটা এখন প্রায় ৬৪ শতাংশে পৌঁছেছে। এটা আমরা আরও বেশি আশা করি। এই করোনার মধ্যেও আমাদের কর্মীরা বিতরণের কাজটি অব্যাহত রেখেছে।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া সেরা প্রতিষ্ঠান ও কর্মীদের পুরস্কার দেওয়া হয়। একই সঙ্গে পরিবার পরিকল্পনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডও ঘোষণা করা হয়।

স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী নূরের সভাপতিত্বে সভায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, পরিবার কল্যাণ অধিদফতরের ডিজি শাহান আরা বানুসহ অন্য কর্মকর্তারা সভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত থেকে বক্তব্য দেন।

জাতীয়

দেশের সব সরকারি অফিসের দাপ্তরিক কাজ ই-নথি, ই-টেন্ডারিং, ই-মেইল, এসএমএস, হোয়াটসঅ্যাপের মতো মাধ্যমসহ ভার্চ্যুয়ালি সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

রোববার (১১ জুলাই) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সরকারি অফিসের দাপ্তরিক কাজ ভার্চ্যুয়ালি করার নির্দেশনা দিয়ে সব সিনিয়র সচিব/সচিবদের চিঠি দিয়েছে

এতে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাস জনিত রোগ কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ বিস্তার রোধে আরোপিত বিধি-নিষেধ সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিসগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

দেশের বর্তমান এ পরিস্থিতিতে ব্যতিক্রম হিসেবে সব জরুরি অফিস ও বেসা কার্যক্রম চালু রয়েছে। এক্ষণে সব সরকারি অফিসের দাপ্তরিক কাজ ভার্চ্যুয়ালি (ই-নথি, ই-টেন্ডারিং, ই-মেইল, এসএমএস, হোয়াটসঅ্যাপসহ অন্যান্য মাধ্যম) সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

করোনা মহামারির কারণে গত ১ জুলাই থেকে সরকারি বিধি-নিষেধে সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে গণপরিবহনসহ শপিংমল। মানুষের চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

জাতীয়

রুপগঞ্জে অগ্নিকান্ডে হাসেম ফুড এন্ড বেভারেজে ৫২ জনের প্রাণহানির ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় গ্রেফতার সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তার চার  ছেলেসহ ৮ শীর্ষ কর্মকর্তাকে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।

কোর্ট ইন্সপেক্টর আসাদুজ্জামান জানান, শনিবার বিকেল  সোয়া পাঁচটায় তাদের নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ফাহমিদা খাতুনের আদালতে দশ দিনের রিমান্ড চেয়ে হাজির করে রুপগঞ্জ থানা পুলিশ। শুনানী শেষে আদালত আসামি পক্ষের জামিনের আবেদন না-মঞ্জুর করে আসামিদের চারদিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এ মামলার আসামিরা হচ্ছে – সজীব গ্রুপের  চেয়ারম্যান ও এমডি আবুল হাসেম, আবুল হাসেমের চার ছেলে  ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর হাসিব বিন হাসেম (সজিব), ডিরেক্টর তারেক ইব্রাহীম (সতেজ), ডিরেক্টর তাওসিফ ইব্রাহীম (শীতল), ডিরেক্টর তানজিম ইব্রাহীম, কোম্পানীর সি ও শাহান শাহ আজাদ, ডিজিএম মামুনুর রশিদ ও এডমিন প্রধান সালাউদ্দিন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টায় রুপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত সেজান জুস ফ্যাক্টরিতে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এই অগ্নিকান্ডে ৫২ জন নিহত ও আহত হয় অর্ধশতাধিক।