রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত চক্র তাদের নিজেদের একটি সহিংস আন্দোলন চালাতে মূলত একটি অরাজনৈতিক ও অহিংস আন্দোলনকে ব্যবহার করেছে।

তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে সাম্প্রতিক এক পোস্টে লিখেছেন, এরকম শান্তিপূর্ণ একটি আন্দোলন কীভাবে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, সহিংসতা এবং লুটপাটের আন্দোলনে পরিণত হল? কারণ যথারীতি বিএনপি ও জামায়াত জোট তাদের নিজস্ব একটি সহিংস আন্দোলন চালানোর জন্য মূলত একটি অরাজনৈতিক ও অহিংস আন্দোলনকে ব্যবহার করেছে।

জয় লিখেছেন, স্বার্থান্বেশী মহলের সম্পৃক্ততা উপলব্ধি করে, প্রতিবাদকারীরা নিজেরাই সহিংসতায় লিপ্ত থাকার কথা অস্বীকার করে বেশ কয়েকটি বিবৃতি দিয়েছে এবং নিশ্চিত করেছে যে, এসব কর্মকাণ্ডের পিছনে একটি তৃতীয় পক্ষ জড়িত রয়েছে, যার সাথে প্রতিবাদকারীদের কোনো সম্পর্ক নেই।

তিনি বলেন, গত কয়েকদিনে, এই কাপুরুষরা বিক্ষোভকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে জনগণকে আতংকের মধ্যে ঠেলে দিয়ে ব্যাপক সহিংসতা চালিয়েছে। তারা আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা, সাংবাদিক, সরকারি ও বেসরকারি পরিবহন এবং সম্পত্তি, গুরুত্বপূর্ণ সরকারী প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনাসমূহকে টার্গেট করেছে।

জয় বলেন, তারা যেখানেই সুযোগ পেয়েছে সেখানেই সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তিতেও ব্যাপক লুটপাট করেছে। তারা একটি কারাগারে হামলা করে সকল বন্দীকে মুক্ত ও অস্ত্র লুট করে।

তিনি বলেন, এই ধরণের নজিরবিহীন মাত্রার সহিংসতার কারণেই সরকার সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন এবং অস্থায়ীভাবে কারফিউ জারির মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর কারণ হল, আরও কোনো সহিংসতা প্রতিরোধ, সরকারি ও ব্যক্তিগত সম্পত্তি রক্ষা এবং দেশের জাতীয় নিরাপত্তা বজায় রাখা সরকারের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে।

দেশের শিক্ষার্থীরা মোটেও সন্ত্রাসী নয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা বলেন, বিএনপি-জামায়াত চক্র তাদের বাংলাদেশ ভাঙার দলীয় এজেন্ডার আড়ালে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করেছে।

তিনি মঙ্গলবারের এই পোস্টে লিখেছেন, বিএনপি-জামায়াত কিভাবে সাধারণ ছাত্রদেরকে বাংলাদেশ ভাঙার দলীয় এজেন্ডার জন্য ব্যবহার করেছে, বাংলাদেশের জনগণ রাষ্ট্রের এই শত্রুদের ক্ষমা করবে না।

অন্য এক পোস্টে, জয় একটি ভিডিও ফুটেজ শেয়ার করে উল্লেখ করেছেন, যখন আওয়ামী লীগ সরকার এবং ছাত্র আন্দোলনকারীরা সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার বা বিলুপ্তি নিয়ে একই আন্দোলনে ছিল, তখন কীভাবে শান্তিপূর্ণ ও অরাজনৈতিক কোটা আন্দোলন সহিংস হয়ে উঠল?

১৮ জুলাইয়ের এক পোস্টে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা আরেকটি ভিডিও শেয়ার করে বলেছেন, এই ভিডিও থেকে তিনটি বিষয় পরিষ্কার হয়ে যায়। তিনি বলেন, কোন ছাত্র সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তির প্রতি এতটা অবজ্ঞা প্রদর্শন করতে পারে না, এসব ঘটনার জন্যই কারফিউ আরোপ করতে হয়েছে এবং সরকারের এসব পদক্ষেপ তাদের একটি ইতিবাচক দায়িত্ব।

রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় নিহতদের পরিবারের সদস্যদের দায়িত্ব নেবেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আয়োজিত সমন্বয় সভায় তিনি একথা জানান।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের কয়েকটি থানা ও ওয়ার্ডের নেতাদের এই সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার শুরুতে ওবায়দুল কাদের সহিংসতার ঘটনায় নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন ও আহতদের প্রতি সহানুভূতি জানান।

কাদের বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগও হতাহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াবে। জনগণের মুক্তির জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করাই সরকারের লক্ষ্য। কোটা আন্দোলনে ভর করে বিরোধীরা যে ধ্বংসস্তূপ করেছে- তা পরিদর্শন করে বিদেশিরা কম্পিত হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করে বিচার করতে কমিটি গঠন করা হয়েছে। সবাইকে বিচারের আওতায় আনা হবে।

এদিন দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত নিম্ন আয়ের মানুষদের মাঝে খাদ্যবিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন ওবায়দুল কাদের।

এ সময় তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের টার্গেট শেখ হাসিনার সরকারের পতন। আজকে যে পরিস্থিতি সময় আরও খারাপ হতে পারে। শত্রুরা আড়ালে-আবডালে আরও প্রস্তুতি নিয়ে আক্রমণ করতে পারে। সাহস করে এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফির সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, সদস্য আনোয়ার হোসেন, সাহাবুদ্দিন ফরাজী, আনিসুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নুরুল আমি রুহুল, ডা. দিলীয় কুমার রায়, শরফুদ্দিন আহমেদ সেন্টু, হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ কামাল, মিরাজ হোসেন মহিউদ্দিন মহি, সাংগঠনিক সম্পাদক আখতার হোসেন, গোলাম সারোয়ার কবির, দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ প্রমুখ।

এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর নয়াবাজারে কোটা আন্দোলন ঘিরে বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতায় আহত আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং অসহায় কর্মহীন মানুষদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির।

এ সময় নগর, থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে হুমায়ুন কবির ঢাকা মেডিকেলে আন্দোলনে আহত নেতাকর্মীদের দেখতে যান।

রাজনীতি

শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলন ঘিরে রাজধানীসহ সারা দেশে যে নৈরাজ্য ও সহিংস তাণ্ডব চলেছে, সেটির সঙ্গে ‘বিএনপি বা বিরোধীদলের কেউই জড়িত না’ বলে দাবি করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আন্দোলনে ভূমিকা রাখার মিথ্যা অভিযোগে ঢালাওভাবে বিএনপি ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্য দোষারোপ করছে।’

বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

বিবৃতিতে শত শত নিরীহ শিক্ষার্থীদের হতাহতের পর বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি শুধুমাত্র ছয়জনের হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করবে, এটি সুকৌশলে পুরো হত্যাকাণ্ডকে ধামাচাপা দেওয়ার নামান্তর বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব। পুরো ঘটনা ও হত্যাকাণ্ডের আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানান তিনি।

‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস আড়াল করতে এবং উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর অপকৌশল হিসেবে বিএনপির নির্দোষ নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালানো হচ্ছে’- এমন অভিযোগ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সেই ধারাবাহিকতায় বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল ইসলাম তেনজিং ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলুর ছেলে সানিয়াতকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থকে গত রাত ১টায় বাসা থেকে তুলে নিয়ে গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যদি তাই হয়, তাহলে তাদের ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করা হয়নি কেন? এটাই জনগণের প্রশ্ন। এতে প্রমাণিত হয় যে, বিএনপি কিংবা বিরোধী দলের কেউই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত নয়।’

রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরের মধ্য দিয়ে দুদেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন দুয়ার খুলতে চলেছে, বলা যায়। সুযোগ তৈরি হয়েছে বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও। এ সফরকালে প্রধানমন্ত্রী চীনা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে বিশ্বের সবচেয়ে উদার বিনিয়োগ ব্যবস্থার দেশ হিসাবে বাংলাদেশকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। সফরের দ্বিতীয় দিন বেইজিংয়ে ‘বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য, ব্যবসা এবং বিনিয়োগের সুযোগ’ শীর্ষক শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শুধু অবকাঠামো, জ্বালানি ও লজিস্টিক খাতেই নয়; সেই সঙ্গে আইসিটি, পর্যটন, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প এবং উন্নয়ন খাতেও বড় পরিসরে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রীর এ সফরকালে চীনের সঙ্গে ২১টি সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি এবং ৭টি ঘোষণাপত্রে সই করেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে ২টি সমঝোতা স্মারক নবায়নও হয়েছে।

চুক্তি-সমঝোতা স্মারক ও দলিলগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-ডিজিটাল অর্থনীতিতে বিনিয়োগ সহায়তা শক্তিশালী করা, অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন নীতি সহায়তা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহায়তা এবং ডিজিটাল অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার, মেডিকেল সেবা ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ে সহযোগিতা শক্তিশালী করা, বন্যার মৌসুমে ব্রহ্মপুত্র নদীর হাইড্রোলজিক্যাল তথ্য দেওয়ার বিধিবিষয়ক সমঝোতা স্মারক নবায়ন, চীনের মিডিয়া গ্রুপ ও দেশটির জাতীয় রেডিও ও টেলিভিশনের সঙ্গে আমাদের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের মধ্যে কয়েকটি সহযোগিতা ও সমঝোতা স্মারক সই, শিক্ষাবিষয়ক সমঝোতা স্মারক নবায়ন, টেকসই অবকাঠামো উন্নয়নে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ বিষয়ক সমঝোতা স্মারক সই। এছাড়া ডিজিটাল কানেক্টিভিটি, সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিংয়ের ট্রায়াল, দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি, রাজশাহী ওয়াসা সারফেইস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট ও বাংলাদেশে লুবান ওয়ার্কশপ নির্মাণবিষয়ক সাতটি ঘোষণাপত্রও স্বাক্ষর হয়েছে।

সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে চীনের বহু পণ্য এদেশে আমদানি হয়ে থাকে। তবে পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, সে তুলনায় আমাদের দেশের পণ্য সেদেশে রপ্তানি হয় কম। বাণিজ্য ভারসাম্য কমাতে তাই চীনে রপ্তানি বৃদ্ধির দিকে অধিক মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন আমাদের। কোন কোন পণ্যের চাহিদা রয়েছে চীনের বাজারে, সে বিষয়ে আগাম জরিপ চালাতে হবে। শুধু তাই নয়, বাণিজ্যিক স্বার্থে রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্ক সুবিধার বিষয়টিও গুরুত্বের দাবি রাখে। এছাড়া দীর্ঘদিনের গলার কাঁটা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রশ্নেও চীনের সমর্থন ও সহযোগিতা আমাদের প্রয়োজন। মনে রাখা দরকার, জনবল তো বটেই, বাণিজ্যিক দিক থেকে এদেশ দক্ষিণ এশীয়, দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় এবং পূর্ব এশীয় প্রবৃদ্ধি সার্কিটের সংযোগস্থলে রয়েছে। আমাদের সমুদ্রবন্দর, বিমানবন্দর ও স্থলপথগুলো আন্তর্জাতিক মান পূরণে ক্রমাগত উন্নত, দক্ষ ও নির্বিঘ্ন হচ্ছে। এছাড়া দেশের বিশাল অভ্যন্তরীণ বাজার এবং এর সংলগ্ন বাজারগুলোয় সমগ্র অঞ্চলের জন্য অফুরন্ত সুযোগ রয়েছে। চীন যদি সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারে, তাহলে শুধু তারাই নয়, আমরাও লাভবান হব। গেল এক দশকে দুদেশের সম্পর্কের গুণগত উত্তরণ ঘটেছে। চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগে বাংলাদেশ যুক্ত হয়েছে। চীন অর্থায়ন করেছে পদ্মা রেলসেতু ও বঙ্গবন্ধু টানেলের মতো বড় প্রকল্পেও। কাজেই এ ধারাবাহিকতা শুধু ধরে রাখাই নয়, ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দুদেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হলে আখেরে তা বাংলাদেশের জন্যই সুফল বয়ে আনবে।

রাজনীতি

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কোটাবিরোধী আন্দোলনকে বিএনপি সরকারবিরোধী আন্দোলনে রুপ দিতে চায়। তাদের (বিএনপি) সে খায়েশ পূরণ হতে দেবে না আওয়ামী লীগ। কোটাবিরোধী অরাজনৈতিক এই আন্দোলনকে কেউ যদি রাজনৈতিক ফাঁদে ফেলতে চায় তাহলে আমরা রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করব। এ নিয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেন তিনি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানী ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কোটা নিয়ে সরকারের অবস্থান তুলে ধরে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

কোটা নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী সব প্রকার কর্মসূচি বন্ধ করে আদালতের নির্দেশনা মেনে অবিলম্বে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের আবেগকে পুঁজি করে কোনো মহল যদি দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায় তাহলে সরকারকে অবশ্যই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।

তিনি বলেন, কোনো কোনো অশুভ মহল দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে ব্যাহত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, গত পাঁচ বছরে কোটা না থাকায় নারীরা পিছিয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী। বৈচিত্র্যময়, সমতাভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গঠনে কোটার গুরুত্ব রয়েছে। কোটা কোনো বৈষম্য নয়, বরং বৈষম্য নিরসনে কোটা প্রয়োজন কোনো কোনো ক্ষেত্রে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, কোটা নিয়ে দেশের উচ্চ আদালত চার সপ্তাহের স্থিতাদেশ দিয়েছেন। আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি উচ্চ আদালতে বিচার প্রক্রিয়া চলমান এবং আদালতের নির্দেশনার প্রতি কোনো প্রকার সম্মান প্রদর্শন না করে তথাকথিত ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির নামে মানুষের স্বাভাবিক জীবন-যাপন আহত করার চেষ্টা চলছে। অন্যদিকে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল তাদের রাজনৈতিক চরিতার্থের জন্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্ররোচনা দিচ্ছে।বিএনপিসহ কয়েকটি দল প্রকাশ্যেই কোটা আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছে। কোটাবিরোধী আন্দোলনকে সরকারবিরোধী আন্দোলনের রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম প্রকাশ্যে বলেছেন- মুক্তিযোদ্ধা কোটার দরকার নেই। এ থেকে বোঝা যায় বিএনপির মুক্তিযুদ্ধের প্রতি কোনো সম্মানবোধ নেই। বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী এটা মনে করার আর কোনো কারণ নেই।

তিনি বলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালত সংবিধানের রক্ষক, আদালতের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে। আন্দোলনের নামে জনগণের চলাফেরা, যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা বেআইনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।

রাজনীতি

রাজধানী গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৃহস্পতিবার বাসায় ফিরেছেন। বেলা সোয়া ১১টার দিকে তিনি গুলশানের বাসায় ফেরেন।

মঙ্গলবার রাতে বিএনপি মহাসচিব হঠাৎ শারীরিকভাবে অসুস্থবোধ করেন। এ কারণে বুধবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে রাজধানীর গুলশানের হাসপাতালে ভর্তি হন।

বিএনপিপন্থি চিকিৎসদের সংগঠন ড্যাবের একজন নেতা জানান, হাসপাতালে ভর্তির পর বিএনপি মহাসচিবের হার্টের এনজিওগ্রাম করা হয়। রিপোর্ট ভালো এসেছে। তিনি সুস্থ ও স্বাভাবিক আছেন। চিকিৎসকদের পরামর্শে মহাসচিব বাসায় ফেরেন।

গত ৪ মার্চ  স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যান মির্জা ফখরুল। ১৯ দিন পর ২৩ মার্চ দেশে ফেরেন তিনি। এর আগে প্রায় সাড়ে তিন মাস কারাবাসের পর গত ১৫ ফেব্র“য়ারি মির্জা ফখরুল জামিনে মুক্তি পান। কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় তার প্রায় ৬ কেজি ওজন কমে যায় বলে তার চিকিৎসকরা জানান। কারামুক্তির পর মির্জা ফখরুল ঢাকায় বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে এক চিকিৎসককে দেখান এবং বাসায় থেকে তার তত্ত¡াবধানে চিকিৎসা নেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আগেও সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিয়েছেন। ২০১৫ সালে কারাবন্দি অবস্থায় তার ঘাড়ের ইন্টারনাল ক্যারোটিড আর্টারিতে ব্লক ধরা পড়ে। তাকে ফলোআপ চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যেতে হয়।

হাসপাতালে ভর্তি মির্জা ফখরুল

হৃদরোগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার রাতে হঠাৎ অসুস্থবোধ করেন। বুধবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে রাজধানীর গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।

বিএনপিপন্থি চিকিৎসদের সংগঠন ড্যাবের একজন নেতা বুধবার জানান, হাসপাতালে ভর্তির পর বিএনপি মহাসচিবের হার্টের এনজিওগ্রাম করা হয়। রিপোর্ট ভালো এসেছে। তিনি সুস্থ ও স্বাভাবিক আছেন। দু-একদিনের মধ্যে তাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়া হতে পারে।

গত ৪ মার্চ স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যান মির্জা ফখরুল। ১৯ দিন পর ২৩ মার্চ দেশে ফেরেন তিনি।

এর আগে প্রায় সাড়ে তিন মাস কারাবাসের পর গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মির্জা ফখরুল জামিনে মুক্তি পান। কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় ৬ কেজি ওজন কমে যায় বলে তার চিকিৎসকরা জানান। কারামুক্তির পর মির্জা ফখরুল ঢাকায় বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে এক চিকিৎসককে দেখান এবং বাসায় থেকে তার তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নেন।

৭৭ বছর বয়সি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আগেও সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিয়েছেন। ২০১৫ সালে কারাবন্দি অবস্থায় তার ঘাড়ের ইন্টারনাল ক্যারোটিড আর্টারিতে ব্লক ধরা পড়ে। তাকে ফলোআপ চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যেতে হয়।

রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

চীনে প্রথম দিনের সফরের ওপর আয়োজিত এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তাঁকে উদ্ধৃত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন ‘রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে সহায়তা করুন।’

চীনা কমিউনিস্ট পার্টির চেয়ারম্যান ওয়াং হুনিংয়ের নেতৃত্বে চীনা পার্টির একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শাখা চীনা পিপলস পলিটিক্যাল কনসালটেটিভ কনফারেন্স (সিপিপিসিসি)-এর উচ্চ-পর্যায়ের একটি কমিটির আজ সকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর অবস্থানস্থলে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এই সহায়তা কামনা করেন।

বৈঠকে দুদেশের বিভিন্ন আঞ্চলিক ও দ্বিপাক্ষিক বিষয়-যার মধ্যে রয়েছে রোহিঙ্গা, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য ব্যবধান কমানো, অর্থপূর্ণভাবে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বাড়ানোর ব্যবস্থা এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও চীনা কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি করার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাড়ে ছয় বছর ধরে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে এবং তাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের কোনো উদ্যোগ এখনো নেওয়া হয়নি।

ড. হাছান বলেন, বৈঠকে এই ইস্যুটি সবচেয়ে গুরুত্ব সহকারে আলোচনা করা হয়।

সিপিপিসিসি চেয়ারম্যান বলেন, তারা বিষয়টি নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে এই ব্যাপারে সহায়ক ভূমিকা পালন করবেন।

তিনি বলেন, আমরা মিয়ানমারদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা নেব।
ব্রিফিংয়ে অর্থমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন।

শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর ওপর জোর দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চীন থেকে বাংলাদেশ বিপুল পরিমাণ পণ্য আমদানী করেছে অথচ রপ্তানি পণ্যের সংখ্যা খুবই কম।
তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন, বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে চীনকে বাংলাদেশ থেকে আমদানী বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, চীন বাংলাদেশ থেকে ওষুধ, চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, শাকসবজি ও আম আমদানী করতে পারে।

অন্যদিকে সিপিপিসিসি নেতারা বলেছেন, তারা বাংলাদেশ থেকে মানসম্পন্ন পণ্য আমদানীর ব্যবস্থা নেবেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তারা দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্কের বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা করেছেন এবং সম্পর্ক আরও বাড়ানোর আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রচেষ্টাতেই এটি গভীরে প্রোথিত হয়েছে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৫২ ও ১৯৫৭ সালে চীন সফর করেন এবং তিনি নিজে ষষ্ঠবারের মত চীন সফর করছেন।

পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু টানেল এবং বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র (বিআইসিসি) সহ বেশকিছু আইকনিক প্রকল্প নির্মাণে সহায়তা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী চীন সরকারকে ধন্যবাদ জানান।

বৈঠকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও চীনা কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন তিনি তাঁর দল থেকে চীনে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল পাঠাবেন।

তিনি চীনা কমিউনিস্ট পার্টিকেও বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।

রাজনীতি

কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ঘটনা ঘটেছে আদালতে। রাজপথে আন্দোলন করে এটার নিরসন হবে না। এভাবে আন্দোলন করলে একপর্যায়ে হয়তো আদালত অবমাননাও হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে কোটা সমস্যা নিরসনের সঠিক জায়গা হচ্ছে আদালত। সচিবালয়ে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি একথা বলেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, আমি গতকালও (সোমবার) বলেছি, ‘তারা (কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা) যদি এ মামলার পক্ষভুক্ত হয়ে আদালতে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন, তাহলে আপিল বিভাগ সব পক্ষের কথা শুনবেন ও ন্যায়বিচার করবেন। এটাই আমাদের আশা ও আমার মনে হয় সেটাই হবে।

আনিসুল হক বলেন, আমি যতদূর জেনেছি, হাইকোর্ট বিভাগে এই মামলা চলাকালীন কোটাবিরোধীরা তাদের বক্তব্য আদালতের কাছে পেশ করার জন্য কোনো আইনজীবী নিয়োগ করেননি। তাদের বক্তব্য সেখানে দেননি। তারপর মামলার রায় হয়ে গেছে। মামলাটা এখন আপিল বিভাগে। গতকাল (সোমবার) পর্যন্ত তাদের পক্ষে বক্তব্য উপস্থাপন করার জন্য তাদের নিয়োগ করা কোনো আইনজীবী ছিলেন না।

তিনি বলেন, আমি এখন শুনলাম যে তারা (কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী) আপিল বিভাগের মামলায় পক্ষভুক্ত হওয়ার জন্য দরখাস্ত করেছেন। আমি যতটা শুনেছি, আগামীকাল (বুধবার) বোধহয় তার শুনানি হবে। সেক্ষেত্রে আমি তো মনে করছি তারা সঠিক পথে হাঁটছেন। আমি এটাকে সাধুবাদ জানাই। এখন তারা তাদের বক্তব্য আদালতে দেবেন। আশা করব যেহেতু তারা আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তারা আন্দোলন প্রত্যাহার করবেন।

কোটা আন্দোলন নিয়ে সরকারের অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, সরকারের অবস্থানের বিষয়ে আমার মনে হয় প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত স্পষ্ট করেই বলেছেন। সরকারের সিদ্ধান্তের ব্যাপার নেই-কোটার ইস্যুটা এখন সর্বোচ্চ আদালতের কাছে আছে। সর্বোচ্চ আদালত সব পক্ষকে শুনে সঠিক সিদ্ধান্ত দেবেন।

সরকারের কেউ কেউ বলেছেন কোটাবিরোধী আন্দোলন অযৌক্তিক। সেক্ষেত্রে আদালত প্রভাবিত হতে পারে কিনা-জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, এ মামলায় কী হতে পারে সে বিষয়ে আমি কিন্তু কিছু বলব না। কারণ হচ্ছে এটা সাব-জুডিস (বিচারাধীন)। বাইরে থেকে আইনমন্ত্রী হিসাবে বা আইনের দিক থেকে যতটুকু বলার দরকার আমি কিন্তু সেটাই বলছি।

রাজনীতি

সরকার দেশকে রসাতলে নিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে বাংলাদেশ ততই আরও দ্রুত রসাতলে যাবে। জনগণের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব থাকবে না। অর্থনীতি ও শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাবে। এমন কোনো বিষয় নেই যে, ধ্বংস হয়ে যায়নি। মঙ্গলবার নয়াপল্টনে মহানগর বিএনপি কার্যালয়ে দোয়া মাহফিলে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার পর ক্ষমতায় থাকাকালে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে। আজকে ভিন্ন চেহারাতে একটু ‘ছদ্মবেশ’ ধারণ করে গণতন্ত্রের কথা বলে, তারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে গিয়ে তারা নির্বাচনকে ধ্বংস করেছে। দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। প্রশাসনকে পুরো দলীয়করণ করেছে।

তিনি বলেন, আমাদের এখন সবার মধ্যে একটা ঐক্য গড়ে তোলা দরকার। সেই ঐক্যের মধ্য দিয়ে আন্দোলনকে বেগবান, শক্তিশালী করে রাজপথে এদেরকে পরাজিত করতে হবে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, দেশনেত্রীর মুক্তি এটাকে আলাদা করে দেখার কোনো কারণ নেই। দেশনেত্রীর মুক্তি, এই দেশের মুক্তি, গণতন্ত্রের মুক্তি। আওয়ামী লীগকে যদি আমরা সরাতে পারি, তাহলে সব বিষয়গুলো আমরা ফিরিয়ে আনতে পারব। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে কেউ আমাদের পরাজিত করতে পারবে না।

এ সময় নবগঠিত ঢাক মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এবং যুবদলের নেতাদের অভিনন্দন জানান বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করব ঢাকা মহানগরের নতুন কমিটির নেতৃত্বে সংগঠন আরও শক্তিশালী হবে এবং এই সরকারকে পরাজিত করতে ভূমিকা রাখবে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, দেশনেত্রীর মুক্তি ছাড়া এদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক মুক্তি হবে না। দেশের যে অবস্থা, এই অবস্থায় মানুষের কোনো কথাই এই সরকার কর্ণপাত করছে না। তারা তাদের মতো করে চলছে। তাদের মতো করে কথা বলছে। জনগণের কথা তারা বুঝে না। আমরা তাদের ভাষা বুঝতে পারি না।

নয়াপল্টনে মহানগর বিএনপি কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তরের উদ্যোগে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনায় এ দোয়া মাহফিল হয়। পরে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আশু আরোগ্য কামনায় বিশেষ মোনাজত হয়।

মিলাদ মাহফিলে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আবদুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরাফত আলী সপু, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রফিকুল আলম মজনু, সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন, উত্তরের আহ্বায়ক সাইফুল আলম নিরব, সদস্য সচিব আমিনুল হক, যুব দলের নবনির্বাচিত সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না, সিনিয়র সহসভাপতি রেজাউল করীম পল, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চারদিনের দ্বিপক্ষীয় সফরে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে পৌঁছেছেন। সোমবার চীনের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে বেইজিং ক্যাপিটাল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে অবতরণ করে। এর আগে ফ্লাইটটি বেলা ১১টা ৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যায়।

প্রধানমন্ত্রী ৮-১১ জুলাই বেইজিংয়ে অবস্থানকালে ১০ জুলাই চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক এবং চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গে একটি প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠক করবেন।

বেইজিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর এ দ্বিপাক্ষিক সফরে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ২০টি থেকে ২২টি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এই সফরকালে অর্থনৈতিক ও ব্যাংকিং খাতে সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, ডিজিটাল অর্থনীতি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সহায়তা, ষষ্ঠ ও নবম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণ, বাংলাদেশ থেকে কৃষিপণ্য রপ্তানি এবং দুদেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগের সমঝোতা স্মারকগুলো সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ ২০১৯ সালের জুলাইয়ে বেইজিং সফর করেছিলেন। এর আগেও তিনি বিভিন্ন সময়ে চীন সফর করেছেন। দুই দেশ আগামী বছর কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন করবে।

শেখ হাসিনার চীন সফরের দ্বিতীয় দিনে ৯ জুলাই এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) প্রেসিডেন্ট জিন লিকুন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী চীনের বেইজিংয়ের সাংগ্রি-লা সার্কেলে চীনের ওয়ার্ল্ড সামিট উইংয়ে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য, ব্যবসা ও বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধাবিষয়ক বিশ্ব সম্মেলনে যোগ দেবেন।

বিকালে বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলে প্রধানমন্ত্রী ও কনসাল্টেটিভ পার্টির প্রেসিডেন্টের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী পরে তিয়েনানমেন স্কোয়ারে পিপলস হিরোদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

সন্ধ্যায় তিনি বেইজিংয়ে বাংলাদেশ হাউজে প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আয়োজিত নৈশভোজে যোগ দেবেন।

১০ জুলাই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও চীনের স্টেট কাউন্সিলের প্রিমিয়ার লি কিয়াংয়ের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক গ্রেট হল অব দ্য পিপলে অনুষ্ঠিত হবে। এ সময় তাদের উপস্থিতিতে সমঝোতা স্মারকসহ (এমওইউ) বেশকিছু নথিতে সই করা হবে।

পরে তিনি একই স্থানে চীনের স্টেট কাউন্সিলের প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজ সভায় যোগ দেবেন। ওইদিন বিকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

চীন সফর শেষে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বেইজিং ক্যাপিটাল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে (বিজি১৭০৪) বেইজিং সময় ১১ জুলাই বেলা ১১টায় দেশের উদ্দেশে রওয়ানা হবেন।

ফ্লাইটটি একই দিন বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।