রাজনীতি

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের বিকল্প নেই। আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে মাটিচাপা দিয়েছে। গোরস্তানে পাঠিয়েছে। এরা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে বিশ্বাসী নয় বলে উপহাস, তামাশা ও তাচ্ছিল্য করছে।

রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের অধীনে কখনো অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে পারে না। বাংলাদেশে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের গ্যারান্টি হচ্ছে এই অবৈধ সরকারের পদত্যাগ। সেখানে একজন দল-নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে প্রধান করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। তার (তত্ত্বাবধায়ক সরকার) অধীনেই কেবলমাত্র শান্তিপূর্ণ সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে।

মঙ্গলবার বিকালে ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা শুনলে বিচলিত হন, অস্থির হয়ে যান। এজন্য সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে চায় না। তারা রাষ্ট্রযন্ত্র, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রতিবেশী রাষ্ট্রের শক্তিকে ব্যবহার করছে, তা প্রতিদিন সুস্পষ্ট হয়ে উঠছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এখন পরাধীন। আমরা এখন একক উপনিবেশ শাসনের অধীনে রয়েছি। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার কোনো শক্তির প্রতিনিধি হিসেবে এ দেশে কাজ করছে। গ্যারান্টি হচ্ছে তারা সেই সমস্ত দেশের স্বার্থ রক্ষা করবে।

সরকারের উন্নয়নের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা বলে বাংলাদেশের উন্নয়ন করেছেন। কিসের উন্নয়ন করেছেন? আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বৃদ্ধি করেছেন, যাতে বিরোধী দল দমন করা যায়। কোথাও কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচির চিন্তা করলেই পুলিশ এসে ধরে নিয়ে যায়। দেশে এমন পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার দেশের সব জনগণকে পশুর ঘরের মধ্যে আটকে রেখেছে। গোটা দেশকে পশুর খোয়ারে পরিণত করতে চাচ্ছে। এই অন্যায় অবিচার জুলুম আর কতদিন চলবে? আমাদের সবাইকে বেরিয়ে আসতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী জানান, সোমবার দুপুর থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত সারা দেশে ২৫৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময়ে সাত মামলায় ৮৭০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানী ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকার সব খাল এবং বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদী যত দ্রুত সম্ভব পুনরুদ্ধার করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী সোমবার তার কার্যালয়ের মন্ত্রিসভা কক্ষে ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর নাব্যতা রক্ষা ও দূষণ রোধে প্রণীত মহাপরিকল্পনার আলোকে জরিপ প্রতিবেদন উপস্থাপন এবং সংশ্লিষ্ট প্রকল্প গ্রহণের নীতিগত সিদ্ধান্ত সম্পর্কিত এক বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন।

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ঢাকা ও আশপাশের নদী ও খাল পুনরুদ্ধারের জন্য সাতটি হটস্পট চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলো হলো: গাজীপুর, গড়ানচটবাড়ি, সাভার, পূর্বাচল, কল্যাণপুর, নারায়ণগঞ্জ ও কামরাঙ্গীরচর।

প্রধানমন্ত্রী এই সাতটি চিহ্নিত হটস্পটে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমন্বিত প্রকল্প গ্রহণের নির্দেশ দেন এবং পর্যায়ক্রমে সারা দেশে এই হটস্পট কৌশল বাস্তবায়নের পরামর্শ দেন। বৈঠকে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া।

এর আগে সভায় সূচনা বক্তব্যে শেখ হাসিনা নদী দূষণ বন্ধের নির্দেশ দিয়ে বলেন, দেশকে বাঁচাতে হলে নদী বাঁচাতে হবে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে, আমাদের নদীগুলোকে বাঁচাতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের বাংলাদেশের বেঁচে থাকাও এই নদীর ওপর নির্ভর করে।’

বিগত বছরগুলোতে নদী দূষণ, দখল বন্ধ ও নাব্যতা পুনরুদ্ধারে তার সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষমতায় আসার পর তারা সব সময় নদীগুলোকে রক্ষা ও নাব্যতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছেন। অপরিকল্পিত নিম্ন উচ্চতার সেতু নৌযান চলাচলে

প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই সেতুগুলো মানুষের জন্য উপকারী হলেও নির্মাণের সময় নৌযান চলাচলের বিষয়টি আমলে নেওয়া হয়নি এবং সে কারণেই নৌচলাচলে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে এবং এই সেতুগুলো বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে জাতীয় কাউন্সিল গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি কারিগরি ও সমন্বয় কমিটি গঠনের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ভিত্তিক একটি বাস্তবায়ন কমিটি গঠনের আরেকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

রাজনীতি

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটগতভাবেই নির্বাচন করবে ১৪ দলের শরিকরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে আবারও একমত হয়েছেন জোটের শীর্ষ নেতারা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আগেভাগে আসন সমঝোতাই ছিল শরিকদের প্রধান দাবি।

এ নিয়ে জোটনেত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসার তাগিদও ছিল তাদের। অবশেষে জোটনেত্রীর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে খোলামেলা আলোচনাও করেছেন ১৪ দলের নেতারা। এতে নিজেদের মধ্যে জমে থাকা ক্ষোভও অনেকটা প্রশমিত হয়েছে বলে জানা গেছে। বৈঠকে ১৪ দলের শীর্ষ নেতাদের আসন ছাড়ের বিষয়ে ইতিবাচক ক্ষমতাসীন দল। অতীতের মতো এবারও তারা নৌকা নিয়েই নির্বাচন করবেন। কোন দল কতটি আসনে নির্বাচন করবে, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আরেকটু সময় অপেক্ষা করতে হবে।

সোমবার সন্ধ্যায় গণভবনে শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র ও সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, জাতীয় পার্টি-জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়–য়া, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, জেপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, গণতন্ত্রী পার্টির ডা. শাহাদত হোসেন, ন্যাপের ইসমাইল হোসেনসহ জোটের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সন্ধ্যা ৬টার একটু পরে জোটের সভা শুরু হয়। সভার শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এশিয়া ক্লাইমেট মবিলিটি চ্যাম্পিয়ন লিডার অ্যাওয়ার্ড পাওয়ায় ১৪ দলের নেতারা ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এরপর সূচনা বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় আগামী নির্বাচন সামনে রেখে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র হচ্ছে জানিয়ে জোটনেতাদের এ বিষয়ে সতর্ক ও ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর সূচনা বক্তব্যের পর শুরু হয় মূল আলোচনা। জোটের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু শরিক দলের নেতাদের পক্ষ থেকে তাদের চাওয়া আসন ও প্রার্থীদের তালিকা জোটনেত্রী শেখ হাসিনার কাছে উপস্থাপন করেন। পরে বিভিন্ন আসন ধরে ধরে আলোচনা হয়। আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিভিন্ন বিষয়েও কথা হয় জোটের এ সভায়। এ সময় জোটনেতারা অতীতের মতো ঐক্যবদ্ধ থেকে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করা এবং নির্বাচন বানচালে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যে কোনো ষড়যন্ত্র প্রতিহতের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

সভায় জোটনেতাদের কয়েকজন বক্তব্য দেন। তারা প্রস্তাবিত আসনে আওয়ামী লীগের কাছে ছাড় চান। এর বাইরে আরও দুটি দাবি জানান তারা। ছাড় দেওয়া আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী না দেওয়া এবং দলটির পদ-পদবিওয়ালা স্থানীয় নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া বন্ধ করা। এছাড়া জোট ও শরিকদের নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য বন্ধ করারও অনুরোধ জানান তারা। সভায় জোটগত সমঝোতার বাইরের অন্য আসনগুলোয় শরিক দলের নেতাদের নিজ নিজ দলের প্রতীক নিয়েও নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত হয়। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন করতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদে আটটি আসনে ১৪ দলের শরিকদের সংসদ-সদস্য রয়েছেন। মহাজোট শরিক বিকল্পধারা বাংলাদেশের দখলে রয়েছে দুটি আসন। এর বাইরে সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির আসন রয়েছে ২৩টি। তবে দ্বাদশ নির্বাচনে ১৪ দলের সঙ্গে সমঝোতা হলেও জাতীয় পার্টির সঙ্গে সমঝোতা আদৌ হবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে আসন ছাড় দেওয়ার ব্যাপারে কোনো প্রস্তাব আসেনি, এলে পরে দেখা যাবে।

১৪ দলের অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ঢাকা-৮ আসনের সংসদ-সদস্য। তবে এবার এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে দলের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমকে। ঢাকা-৮ আসনের পরিবর্তে বরিশাল-২ ও বরিশাল-৩ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন রাশেদ খান মেনন। এখানে একটি আসনে তিনি ছাড় পেতে যাচ্ছেন বলে আভাস পাওয়া গেছে। ৩০০ আসনের মধ্যে মাত্র দুটি ফাঁকা রেখে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। এর একটি হলো কুষ্টিয়া-২ আসন। এটি ১৪ দলের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর আসন। এ আসনে এবারও তার জন্য ছাড় দিতে পারে আওয়ামী লীগ।

শরিক দল জাতীয় পার্টি-জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু পিরোজপুর-২ থেকে গত তিনটি নির্বাচনে বাইসাইকেল নিয়ে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নৌকা নিয়ে করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তিনি। কিন্তু এ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কানাই লাল বিশ্বাসকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের আরেক শীর্ষ নেতা বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা পরপর তিনবার নৌকা নিয়ে রাজশাহী-২ থেকে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। এবার তার আসনে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে মোহাম্মদ আলীকে। বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী চট্টগ্রাম-২ থেকে নৌকা নিয়ে পরপর দুবার নির্বাচিত হন। এবার তার আসনে খাদিজাতুল আনোয়ারকে প্রার্থী দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার ফেনী-১ থেকে পরপর দুবার নৌকা নিয়ে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। এবার তার আসনে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে আলাউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরীকে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, শিরিন আখতারকে এ আসনে আর ছাড় দিতে নারাজ আওয়ামী লীগ। আলাউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী শেষ পর্যন্ত নৌকা নিয়ে ভোট করবেন। শিরিন আখতারকে সংরক্ষিত আসনের সদস্য করা হতে পারে পরবর্তী সময়ে।

জাসদের সহসভাপতি রেজাউল করিম তানসেন বগুড়া-৪ আসনের বর্তমান সংসদ-সদস্য। এ আসনে আওয়ামী লীগ মো. হেলাল উদ্দিন কবিরাজকে মনোনয়ন দিয়েছে। আসন সমঝোতা হলে রেজাউল করিম তানসেনের ভাগ্য খুলে যেতে পারে। জাতীয় পার্টি-জেপি মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম এবার ঢাকা-১৪ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলকে।

রাজনীতি

দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের দায়ে ঝালকাঠি বিএনপির দুই নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিস্কৃতরা হলেন-কাঁঠালিয়া উপজেলার বিএনপি কর্মী আব্দুল জলির মিয়াজী ও জাকির হোসেন কবির।

সোমবার সন্ধ্যায় বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপুর সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলা বিএনপি কর্মী আব্দুল জলিল মিয়াজী ও জাকির হোসেন কবিরকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো।

এর আগে সোমবার বেলা ১১টার দিকে ঝালকাঠিতে অনুষ্ঠিত শাহজাহান ওমরের নির্বাচনী সভায় আব্দুল জলিল মিয়াজীকে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে দেখা যায়।

রাজনীতি

বিএনপির ১৫ জন কেন্দ্রীয় নেতাসহ সাবেক ৩০ সংসদ সদস্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আজ শুক্রবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ত্রিশ দলের নির্বাচনে অংশ নেয়া বড় সাফল্য। বিএনপিরও তো ১৫ কেন্দ্রীয় নেতা, ৩০ সাবেক সংসদ সদস্য এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। ইউরোপ-আফ্রিকা-ল্যাটিন আমেরিকায় অনেক দেশেই নির্বাচনে বিরোধী দল অংশ নেয় না। তাতে কি নির্বাচন অবৈধ ধরা হয়? কিছু দল না এলেই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না, অবৈধ হবে, এমনতো কথা নেই।’

তিনি বলেন, ৩০টি নিবন্ধিত রাজনীতির দল নির্বাচন অংশ নিচ্ছে। এটা একটা বড় সাফল্য। বিএনপিরও অনেকে অংশ নিচ্ছেন।

তাদের মধ্যে সৈয়দ একে একরামুজ্জামান, মনজুর আলম, শওকত মাহমুদ, তৈমুর আলম খন্দকার, শমসের মবিন চৌধুরী, শাহজাহান ওমর, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আহসান হাবীব, একে এম ফখরুল ইসলামসহ ১৫ জন কেন্দ্রীয় নেতা এবং শাহ মোহাম্মদ জাফর ও মেজর আখতারুজ্জামানসহ সাবেক ৩০ জন এমপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনকে ঘিরে বহুদিন পর উৎসবমুখর পরিবেশ দেখা যাচ্ছে সারাদেশে। চোখে পড়ার মতো উৎসব। জনগণের অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশই হচ্ছে নির্বাচন, কোন দল এলো, না এলো সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়।’

ঝালকাঠি-১ আসনে বিএনপি নেতা শাহজাহান ওমরকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপিনেতা শাহজাহান ওমর আওয়ামী লীগ করতে ভালো লাগা থেকেই এসেছেন। এটা দলের কৌশলগত সিদ্ধান্ত।

শরিকদের সঙ্গে আসন সমঝোতাসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রেখে সমন্বয় হবে এসব বিষয়ে। ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করে তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও ঢালাওভাবে নির্বাচন করতে পারবে না।

কারও কথায় বা বাধায় নির্বাচনের ট্রেন থামবে না বলে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, জনগণের অংশগ্রহণ ও উৎসবমুখর নির্বাচন মূল বিষয়।কোন রাজনৈতিক দল অংশ নেবে বা না নেবে সেটা নিয়ে ভাবনা নেই। সুন্দর অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ বিরাজমান। সেজন্য আপসহীন লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। সময়মতোই দেয়া হবে ইশতেহার; প্রায় চূড়ান্ত। সুবিধাজনক সময়ে ঘোষণা করা হবে।

তিনি বলেন, বিএনপি আন্দোলনের নামে দেশে যে সহিংসতা ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করছে সেই বিষয়ে টিআইবি কিংবা সুজনের ( সুশাসনের জন্য নাগরিক) মুখে কোনো কথা নেই। অথচ তারা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের কথা বলে।

কাদের বলেন, বিএনপি নামে একটি দল আন্দোলনের যে চক্রান্ত করছে, আমি চ্যালেঞ্জ করছি, তাদের একটা হরতাল-অবরোধ, কোনো আন্দোলন সফল হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না। তবে সন্ত্রাস তারা করতে পেরেছে।

এসময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান এবং কার্যনির্বাহী সদস্য শফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

রাজনীতি

‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ নিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্থপতি সজীব ওয়াজেদের কাছ থেকে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) সিগনেচার অনুষ্ঠান ‘লেটস টক’। শুক্রবার (১ নভেম্বর) রাত ১০টায় কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেলের পর্দায় শুরু হয় ‘লেটস টক’র ৫১তম আয়োজন।

রাজনীতি

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো আরেকটি ভোট ডাকাতির উৎসব চলছে। এ নির্বাচন জনগণের জন্য নয়। এটা হতে চলেছে সরকারের আরেকটি কদর্য রাজ্যাভিষেকের উৎসব।

রাজনীতি

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন মুফতি ফয়জুল হক জালালাবাদী ও মাওলানা আনওয়ারুল হকের নেতৃত্বে দুইটি  ইসলামি রাজনৈতিক দলের নেতারা।

বৃহস্পতিবার (নভেম্বর ৩০) সকালে গণভবনে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব কে এম শাখাওয়াত মুন গণমাধ্যমকে জানান, সাক্ষাৎকালে জাতীয় নির্বাচনের সার্বিক বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেন খেলাফতে রাব্বানী বাংলাদেশ এবং নেজামে ইসলাম পার্টি বাংলাদেশ এর নেতারা।

একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং নির্বাচনে সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ প্রত্যাশা করেন।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করতে শেখ হাসিনার গৃহীত পদক্ষেপের প্রশংসা করেন নেতারা।

বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসাও করেন তারা।

রাজনীতি

স্বতন্ত্র ও ডামি প্রার্থীদের তোপের মুখে বেশ কিছু আসনে অস্বস্তিতে রয়েছেন আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের হেভিওয়েট প্রার্থীরা। ওই আসনগুলোতে স্বতন্ত্র ও ডামি প্রার্থীদের দাপটে কোণঠাসা ক্ষমতাসীন জোটের বাঘা বাঘা নেতারা। কেন্দ্র থেকে ডামি প্রার্থীদের লাগাম টেনে না ধরলে ৭ জানুয়ারি তাদেরকে সত্যিকারের জনপ্রিয়তার পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে।

স্বতন্ত্র বা ডামি প্রার্থীর বিষয়ে কেন্দ্রের নমনীয় মনোভাবের কারণে অনড় অবস্থানে তারা। ইতোমধ্যে মনোনয়নপত্র তুলেছেন এবং জমাও দিয়েছেন অনেকে। একইভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে নৌকার ওপর ভর করে সংসদ-সদস্য হওয়া ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলের শীর্ষ নেতাদের। এবার তাদের আসনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী ঘোষণা করায় বেশ বিপাকে আছেন। শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা মাঠে থাকবেন নাকি কেন্দ্রের নির্দেশে তারা সড়ে দাঁড়াবেন, নাকি আওয়ামী লীগেরই কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে ভোটে লড়বেন-এমন শঙ্কার মধ্যে সময় পার করছেন শরিক দলের নেতারা। ভোটের মাঠে এর যে কোনো একটি থাকলেই শরিক দলের অনেক নেতার জন্য পাশ করে আসা খুব সহজ হবে না বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

ডামি প্রার্থীদের বিষয়ে কেন্দ্রের ইতিবাচক মনোভাব থাকায় বেশ কিছু আসনে স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধিরা এবার নির্বাচনি দৌড়ে সামিল হয়েছেন। তাদের অনেকে উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ ছেড়ে সংসদ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এটিও বহু হেভিওয়েট নেতার কপালে ভাঁজ ফেলেছে।

আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রধান শরিক দল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু কুষ্টিয়া-২ আসন থেকে গত তিনটি সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে জয়ী হন। এবার এই আসনে আওয়ামী লীগ তাদের দল মনোনীত কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। এরপরও স্বস্তিতে নেই ১৪ দলীয় জোটের এই শীর্ষ নেতা। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী মিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামারুল আরেফিন। নির্বাচনে প্রার্থী হতে উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করে হাসানুল হক ইনুকে কোনো অবস্থাতেই ছাড় না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে হাসানুল হক ইনু বুধবার বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমাদের আসন সমঝোতা হবে। আমরা জোটবদ্ধভাবেই নির্বাচনে অংশ নেব। সেভাবেই আমরা এগোচ্ছি।

স্বস্তিতে নেই আওয়ামী লীগের আরেক প্রধান শরিক দল বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পর্টির সভাপতি, বর্ষীয়ান রাজনীতিক রাশেদ খান মেননও। ঢাকা-৮ আসন থেকে গত তিনটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা নিয়ে সংসদ-সদস্য হন তিনি। এবার তার এই আসনে আওয়ামী লীগ দলের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমকে প্রার্থী দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, রাশেদ খান মেননকে এবার আর ঢাকার এই আসনে ছাড় দেবে না ক্ষমতাসীনরা। তাকে ঢাকার পরিবর্তে বরিশাল-২ ও বরিশাল-৩ আসনে মনোনয়ন ফরম জমা দিতে বলা হয়েছে। শেষ মুহূর্তে আওয়ামী লীগ বরিশালের যে কোনো একটি আসন তাকে ছেড়ে দিতে পারে।

যদিও বরিশাল-২ আসনের বর্তমান সংসদ-সদস্য আওয়ামী লীগের শাহ আলমকে এবার মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। তার পরিবর্তে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মোহাম্মদ ইউনুসকে এবার এ আসনে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। একইভাবে বরিশাল-৩ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে সরদার মো. খালেদ হোসেনকে। এ আসনের বর্তমান সংসদ-সদস্য জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু। শরিক দলের সঙ্গে আসন সমঝোতার অংশ হিসাবে রাশেদ খান মেননকে আওয়ামী লীগ নৌকা দিলে তাদের এ দুই প্রার্থীর যে কোনো একজনকে বাদ দিতে হবে। তবে বরিশাল-৩ আসনে যদি রাশেদ খান মেননকে ছাড় দেয় আওয়ামী লীগ, সেক্ষেত্রে লাঙ্গলের প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া টিপুর সঙ্গে তাকে কঠিন লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে বেশ বেকায়দায় আছেন প্রবীণ এই বামপন্থি রাজনীতিক।

আওয়ামী লীগের আরেক শরিকদল জাতীয় পার্টি-জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর অবস্থা তেমন সুবিধার নয়। ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে পিরোজপুর-২ আসন থেকে গত তিনটি নির্বাচনে বাইসাইকেল নিয়ে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এবার নৌকা নিয়ে নির্বাচন করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। কিন্তু এই আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কানাই লাল বিশ্বাসকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। শেষ মুহূর্তে আসন সমঝোতার অংশ হিসাবে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হলেও স্থানীয় পর্যায়ে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে তাকে। এই আসনে পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মহারাজ স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন বলে ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী নির্বাচনে কোনো অবস্থায়ই আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে ছাড় দেওয়া হবে না।

ফরিদপুর-৪ আসনে আবারও নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাকে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যন করা হয়েছে। এ প্রভাবশালী নেতার আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনি মাঠে আছেন বর্তমান সংসদ-সদস্য এবং যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরীর (নিক্সন)। এর আগে দলের মনোনয়ন পেয়েও নিক্সন চৌধুরীর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন কাজী জাফরউল্লাহ। এবারও সেই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট এই কেন্দ্রীয় নেতা।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সিমিন হোসেন রিমি দলের মনোনয়ন পেয়েছেন গাজীপুর-৪ আসন থেকে। তার আসনেও দলের দুই নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে মাঠে আছেন। তারা হলেন কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আলম আহম্মেদ ও কাপাসিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান আরিফ। চাঁদপুর-৩ আসনে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তার আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে মাঠে রয়েছেন আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা মো. রেদওয়ান খান (বোরহান)। আরেক যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এবারও কুষ্টিয়া-৩ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। তার আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনি মাঠে রয়েছেন পারভেজ আনোয়ার তনু। তনুর বাবা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমান পৌর মেয়র।

আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল দলের মনোনয়ন পেয়েছেন নেত্রকোনা-৩ আসন থেকে। তার আসনে ভোটের মাঠে রয়েছেন সাবেক দুই সংসদ-সদস্য ইফতেখার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু ও মঞ্জুর কাদের কোরাইশী। এছাড়া আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মতিনও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন এবার দলের মনোনয়ন পেয়েছেন নেত্রকোনা-৫ আসন থেকে। প্রথমবার মনোনয়ন পাওয়া এই কেন্দ্রীয় নেতার আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, যুবলীগ নেতা মাজহারুল ইসলাম সোহেল ও পূর্বধলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম সুজন।

রংপুর-৬ আসনে আবারও নৌকা পেয়েছেন বর্তমান সংসদ-সদস্য ও জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। নৌকা না পেয়ে এখান থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সিরাজুল ইসলাম। তিনি ইতোমধ্যে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। গাজীপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তার আসনে স্বতস্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনি মাঠে রয়েছেন মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল আহসান সরকার রাসেল। একই আসনে আছেন কালিয়াকৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাসেল এবং আওয়ামী লীগ নেতা নুরে আলম সিদ্দিকী।

পিরোজপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ফরম কিনেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পিরোজপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ-সদস্য একেএমএ আউয়াল। গাজীপুর-২ আসনে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। এ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। ইতোমধ্যে তিনি মনোনয়নপত্র কিনেছেন বলেও জানা গেছে।

যশোর-৫ (মনিরামপুর) আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য। তাকে চ্যালেঞ্জ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন জেলা কৃষক লীগের সহসভাপতি ইয়াকুব আলী, সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন লাভলু ও সাবেক সংসদ-সদস্য খান টিপু সুলতানের ছেলে হুমায়ন সুলতান। ঢাকা-১৯ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। তার আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে মাঠে রয়েছেন দুজন-সাবেক সংসদ-সদস্য তৌহিদ জং মুরাদ এবং আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম।

রাজশাহী-৬ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ-সদস্য রায়হানুল হক। হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী। ওই আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। সুমন যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আইনবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। পরে তাকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

বরিশাল-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনি মাঠে রয়েছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেরনিয়াত সাদেক আবদুল্লাহ। ফলে এ আসনে বড় চ্যালেঞ্জে পড়েছেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী। জামালপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ভোটের মাঠে রয়েছেন আওয়ামী লীগের আরও দুই নেতা-জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও সাবেক পৌর মেয়র জিয়াউল হক জিয়া এবং ঢাকার বিমানবন্দর থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শাহজাহান আলী মন্ডল। নেত্রকোনা-২ আসনে থেকে আবারও নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু। তার বিরুদ্ধে ভোটের মাঠে আছেন আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ-সদস্য ও উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান লিটন।

এছাড়া সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের আসনেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনি মাঠে রয়েছেন আওয়ামী লীগের অনেক নেতা। কুমিল্লা-১১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক। তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ভোটের মাঠে রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা তমিজ উদ্দিন ভুঁইয়া সেলিম। রাজশাহী-১ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন টানা পঞ্চমবার নৌকার প্রার্থী হওয়া বর্তমান সংসদ-সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ওমর ফারুক চৌধুরী। সেই আসনে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান আখতার।

ক্ষমতাসীনদের দুই শরিক দলের শীর্ষ নেতা বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান এবং একই দলের যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি. চৌধুরীর অবস্থাও বেগতিক। শরিক দলের শীর্ষ নেতাদের মতো কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাদেরও। অন্য দুই শরিদক দল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার, একই দলের সহসভাপতি রেজাউল করিম তানসেন এবং বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক, প্রবীণ রাজনীতিক ফজলে হোসেন বাদশাও বেশ বিব্রতকর অবস্থায় আছেন।

বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী চট্টগ্রাম-২ আসন থেকে নৌকা নিয়ে পরপর দুবার নির্বাচিত হন। এবার তার আসনে খাদিজাতুল আনোয়ারকে প্রার্থী দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এছাড়াও বিকল্প ধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান লক্ষ্মীপুর-৪ আসন থেকে এবং একই দলের যুগ্মমহাসচিব, সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ছেলে মাহী বি চৌধুরী মুন্সিগঞ্জ-১ আসন থেকে পরপর দুবার সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগ এবার লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে দলের কেন্দ্রীয় নেত্রী ফরিদুন্নাহার লাইলী এবং মুন্সিগঞ্জ-১ আসনে মহিউদ্দিন আহমেদকে মনোনয়ন দিয়েছে। আসন সমঝোতা না হলে অনিশ্চিত হবে তাদের ভাগ্যও।

আওয়ামী লীগের অন্য দুই শরিক দলের শীর্ষ নেতা জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার ফেনী-১ আসন থেকে পরপর দুবার নৌকা নিয়ে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। এবার তার আসনে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে আলাউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরীকে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, শিরিন আখতারকে এই আসনে আর ছাড় দিতে নারাজ আওয়ামী লীগ। আলাউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী শেষ পর্যন্ত নৌকা নিয়ে ভোট করবেন। শিরিন আখতারকে সংরক্ষিত আসনের সদস্য করা হতে পারে পরবর্তী সময়ে। জাসদের সহসভাপতি রেজাউল করিম তানসেন বগুড়া-৪ আসনের বর্তমান সংসদ-সদস্য। এ আসনে আওয়ামী লীগ মো. হেলাল উদ্দিন কবিরাজকে এবার মনোনয়ন দিয়েছে। আসন সমঝোতা হলে রেজাউল করিম তানসেনের ভাগ্য খুলে যেতে পারে।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের আরেক শীর্ষ নেতা বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা পরপর তিনবার নৌকা নিয়ে রাজশাহী-২ আসন থেকে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। এবার তার আসনে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে মোহাম্মদ আলীকে। আসন সমঝোতা না হলে কঠিন চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়তে হবে ফজলে হোসেন বাদশাকে। তবে একাধিক সূত্র জানিয়েছে, শেষ পর্যন্ত ফজলে হোসেন বাদশাই হবেন রাজশাহী-২ আসনে নৌকার কান্ডারি।

রাজনীতি

জামিনে কারাগার থেকে বেরোনোর পরদিন আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর। আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ঝালকাঠি-১ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নও পেয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর কাওরানবাজারের ইউটিসি ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে শাহজাহান ওমর সাংবাদিকদের বলেন, তিনি বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেছেন এবং আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগ তাকে ঝালকাঠি-১ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া নৌকা প্রতীকে শাহজাহান ওমরের মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।


গত ৪ নভেম্বর রাতে বিএনপির নেতা শাহজাহান ওমরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গতকাল বুধবার ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে জামিন পান শাহজাহান ওমর।  সন্ধ্যার পরই কেরানীগঞ্জে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান বিএনপির এই নেতা।

এরপর বৃহস্পতিবার বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন শাহজাহান ওমর।

আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা হয়েছে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে শাহজাহান ওমর সাংবাদিকদের বলেন, দেখা হতেই পারে।

পরিবারের সদস্যদের বাধা উপেক্ষা করে গণভবনে যান শাহজাহান ওমর!

ঝালকাঠি-১ আসনে (রাজাপুর-কাঁঠালিয়া) আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মুহাম্মদ শাহজাহান ওমর (বীরউত্তম)।

ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর নিজেই ঢাকার কারওয়ানবাজারে তার আইনজীবী চেম্বারে সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের বিষয়টি জানিয়েছেন। এ সময় তিনি বিএনপির সব পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শাহজাহান ওমরের চেম্বারের এক আইনজীবী জানান, বুধবার জামিন লাভের পর বৃহস্পতিবার দুপুরে পরিবারের সদস্যদের বাধা উপেক্ষা করে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ব্যারিস্টার মুহাম্মদ শাহজাহান ওমর।

এক ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে তিনি নৌকার মনোনয়ন চূড়ান্ত করে চিঠি নিয়ে অনলাইনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে তা পূরণ করে রিটার্নিং কর্মকর্তার ওয়েবসাইটে দাখিল করেন।

রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ফারহানা ইয়াসমিন অনলাইনে মনোনয়নপত্র প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

২৮ অক্টোবর ঢাকায় বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় রাজধানীর নিউমার্কেট থানার মামলায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মুহাম্মদ শাহজাহান ওমরের জামিন হয়।

বুধবার শাহজাহান ওমরের জামিন দেন ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ফয়সাল আতিক বিন কাদের। পরে সন্ধ্যায় কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। কারাগার থেকে বের হয়ে ঢাকার বাসায় যান শাহজাহান ওমর।

হঠাৎ করে বুধবার শাহজাহান ওমরের জামিন হওয়ায় ঝালকাঠিতে চায়ের টেবিলে আলোচনার ঝড় ওঠে যে, তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছেন। শাহজাহান ওমর বিএনপির টিকিটে ১৯৭৯, ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে ৫ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

জোট সরকারের আমলে তিনি আইন প্রতিমন্ত্রী ও ভূমি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। সম্প্রতি স্থায়ী কমিটির সদস্যপদ না পাওয়ায় এবং ঝালকাঠি জেলা বিএনপির নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণে তারেক রহমানের সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হয়।