রাজনীতি

আগামী ২৮ জুন ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পীর সাহেব চরমোনাই মহাসমাবেশ জনতার মহাসমুদ্রে রূপ নেবে বলে জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মহিলা ও পরিবার কল্যাণ সম্পাদক মাওলানা এবিএম জাকারিয়া। তিনি বলেন, জুলাই ঘোষণাসহ প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করেই নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।

শনিবার গাজীপুরের কাপাসিয়ায় উপজেলা দায়িত্বশীল তারবিয়াত ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।

মাওলানা জাকারিয়া বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে যে পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়েছে তাদের জনগণের শতভাগ জনমত প্রতিফলিত হয়নি। বরং কালো টাকা ও পেশি শক্তি ও অবৈধ অস্ত্রের প্রভাবে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। তাই ২৪ পরবর্তী নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে পদ্ধতি পরিবর্তন করা সময়ের দাবি। পিআর সিস্টেম বা সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব। যাতে জনগণের মতামতের শতভাগ প্রতিফলন হবে। তাই বিশ্বের প্রায় ৯১টি রাষ্ট্রে এ পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।

উপজেলা সভাপতি মাওলানা কাজীম উদ্দিন এর সভাপতিত্বে এবং উপজেলা সেক্রেটারি মো. সাইফুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর জেলার সিনিয়র সহ সভাপতি আল আমিন, হাজী আজহারউদ্দিন, আব্দুল মতিন ইঞ্জিনিয়ার এহতেশামুল হক পাঠান প্রমূখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাকারিয়া আরও বলেন, ‘জীবনের বিনিময়ে অর্জিত নতুন বাংলাদেশে বিগত ১৬ বছরে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরত এনে অভ্যুত্থানে শহীদের পরিবার ও আহত-পঙ্গুদের পুনর্বাসন এবং সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে এবং জুলাই ঘোষণা সহ প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করেই নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।’

বিশেষ অতিথি মুহম্মদ আল আমিন বলেন, দায়িত্বশীলদেরকে গাজীপুর কাপাসিয়ার প্রতিটি ঘরে ঘরে ইসলামের দাওয়াত ও সৌন্দর্য পৌঁছে দিতে হবে। আগামী বাংলাদেশকে ইসলামের বাংলাদেশ হিসাবে গড়ে তোলার জন্য নেতা কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। ইসলামী আন্দোলন ২৮ তারিখ মহাসমাবেশ সফল করার জন্য ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।

রাজনীতি

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতে গিয়েছেন তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।

হাসিনাপুত্র জয় বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন বলে তথ্য নিশ্চিত করেছেন দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষনেতা ।

এছাড়া ভারতের নিরাপত্তা এজেন্সিগুলোর একাধিক সূত্র আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে তথ্যটি নিশ্চিত করেছে।

সূত্রগুলো জানিয়েছে যে, গত ৬ জুন (শুক্রবার) সজীব ওয়াজেদ জয় ভারতের মাটিতে পা রাখেন। তার পরেরদিনই ছিল কোরবানির ঈদ। মায়ের সঙ্গেই ঈদ কাটিয়েছেন তিনি।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এই প্রথম শেখ হাসিনার সঙ্গে তার ছেলের দেখা হলো। মায়ের সঙ্গে ঈদ করলেও দিল্লিতে অবস্থানরত বোন সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের সঙ্গে জয়ের দেখা হয়েছে কি না তা নিশ্চিত করা যায়নি।

মূলত মায়ের সঙ্গে ঈদ পালন করার উদ্দেশ্যেই ভারতে গিয়েছেন জয়। তার এই সফর যতটা না রাজনৈতিক, তার থেকেও বেশি পারিবারিক – এমনটিই দাবি সূত্রগুলোর।

ভারতীয় নিরাপত্তা এজেন্সির সূত্রগুলো জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে মাস কয়েক পরে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে ভারতে যাওয়ার কথা ছিল জয়ের। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও সবুজ সংকেত দিয়েছিল। তবে সেই সফর এগিয়ে এনে শুক্রবারই দিল্লিতে নামেন সজীব ওয়াজেদ জয়।

সূত্রগুলো আরও জানায়, সজীব ওয়াজেদ জয়কে দিল্লি বিমানবন্দর থেকে কড়া নিরাপত্তা দিয়ে পৌঁছিয়ে দেওয়া হয় শেখ হাসিনা যেখানে অবস্থান করছেন সেই গোপন ঠিকানায়। ভিভিআইপিদের যেভাবে পাইলটকারসহ সামরিক পোশাক পরিহিত নিরাপত্তারক্ষীদের ঘেরাটোপে নিয়ে যাওয়া হয় জয়কে সেভাবে নিয়ে যাওয়া হয়নি। অত্যন্ত গোপনে কাজটি করা হয়, যেন কাকপক্ষীও টের না পায়।

পারিবারিক সফর

পালিয়ে ভারতে যাওয়া আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে একাধিক জন বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, সজীব ওয়াজেদ জয়ের এই ভারত সফর মূলত পারিবারিক।

এক শীর্ষ নেতা বলেন, ‘মায়ের সঙ্গে এত মাস পরে ছেলের দেখা হয়েছে। তারা ঈদ কাটিয়েছেন একসঙ্গে, গত কয়েকদিন একসঙ্গেই আছেন। নিশ্চই রাজনৈতিক আলোচনাও হয়েছে কিছু। তবে জয়ের এই সফর বেশিটাই পারিবারিক সফর। ’

তিনি আরও বলেন, ‘এই কদিনের মধ্যে নেত্রীর সঙ্গে কথা হয়নি। কিন্তু যখন কথা হবে, নিশ্চয়ই আমরা জানতে পারব যে তাদের দুজনের মধ্যে কী কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু এখন তারা পারিবারিক সময় কাটাচ্ছেন। ’

অন্য নেতাদের সঙ্গে কী দেখা হয়েছে জয়ের?

মা-ছেলের দেখা হয়েছে নিশ্চিত করা গেলেও পালিয়ে ভারতে অবস্থান নেওয়া আওয়ামী লীগের কোনো নেতার সঙ্গে জয়ের দেখা হয়নি  বলেই জানা যাচ্ছে।

গত বছরের ৫ আগস্ট ঢাকা থেকে ভারতে পালিয়ে আসার পর থেকে দিল্লিতেই শেখ হাসিনার থাকার ব্যবস্থা করেছিল ভারত সরকার। প্রথম দু-চারদিন শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানাকে রাখা হয়েছিল দিল্লির উপকণ্ঠে গাজিয়াবাদের হিন্ডন বিমানঘাঁটির টার্মিনাল বিল্ডিংয়ে, যেটির নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার ভার দেশের বিমান বাহিনীর।

পরে ভারত সরকার হাসিনাকে হিণ্ডন থেকে সরিয়ে আনে দিল্লির কোনো গোপন ঠিকানায় নিয়ে যায়। হাসিনার অবস্থানের ব্যাপারে ভারত সরকার কোনো তথ্যই প্রকাশ করেনি।

ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বিবিসি বাংলার সংবাদদাতা শুভজ্যোতি ঘোষকে জানিয়েছিলেন. ‘শেখ হাসিনাকে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় নিয়ে যাওয়া, কিংবা তার সঙ্গে অন্যদের দেখা করানোর ব্যবস্থা– এটাও যতটা সম্ভব এড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ’

তবে শেখ হাসিনার মুভমেন্টস বা ভিজিটস যে পুরোপুরি বন্ধ নয়, তার কথায় সে ইঙ্গিতও ছিল!

ভারতে অবস্থানরত এক শীর্ষ আওয়ামী লীগ নেতা বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, তাদের সঙ্গে শেখ হাসিনার নিয়মিত কথা হলেও সশরীরে কারও সঙ্গে দেখা করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী – এরকমটা তার জানা নেই।

কতদিন ভারতে থাকবেন জয়?

আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো জানাচ্ছে, ভারতেই থেকে গিয়ে দলের কাজকর্মে সশরীরে যোগ দেওয়ার অভিপ্রায় নেই সজীব ওয়াজেদ জয়ের। তিনি শুধু তার মায়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। দীর্ঘ সময় ভারতে থাকার পরিকল্পনা নেই তার। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই তিনি হয়তো ফিরে যাবেন।

ভারত সফরে এসে জয় কলকাতাতেও আসতে পারেন বলে জানা গিয়েছিল। কারণ, কলকাতা এবং তার আশপাশের অঞ্চলেই আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা, সাবেক মন্ত্রী ও এমপিরা থাকছেন এবং এই অঞ্চলেই রয়েছেন বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে আসা আওয়ামী ঘনিষ্ঠ অনেক ব্যবসায়ী, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা, আইনজীবীরা। তাই কলকাতায় এসে তাদের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন জয় – এরকমটা জানা যাচ্ছিল।

এখন ভারতের নিরাপত্তা এজেন্সির সূত্রগুলো বলছে, অন্তত এবার জয়ের কলকাতায় আসার কোনো পরিকল্পনা নেই।

উল্লেখ্য, সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন, কিন্তু তার বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছিল। অন্তর্বর্তী সরকার ওই পাসপোর্ট বাতিল করে দেয়। এরপর সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্ট পান জয়। পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার কয়েক দিন আগেই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন কার্ড পান। গ্রিন কার্ড পাওয়ার পর থেকেই জয়ের ভারত ভ্রমণ নিয়ে আলোচনা চলছিল।

রাজনীতি

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছানোর মাধ্যমে ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তিনি বলেছেন, আমরা সবাই আজ এখানে দেশ ও জাতির কল্যাণে একত্রিত হয়েছি। আশা করি, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছে আমরা একটি অত্যন্ত সুন্দর জুলাই সনদ প্রস্তুত করতে পারবো।

সোমবার (২ জুন) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় দফা সংলাপের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ড. ইউনূস নিজে ঐকমত্য কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকার আশা করে যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে এনে জুলাই সনদ ঘোষণা করা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, আমি খুব খুশি যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তুলতে এই সংলাপে অংশগ্রহণ করেছেন।

কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ বলেন, কমিশনের মেয়াদ ২০২৫ সালের আগস্টে শেষ হচ্ছে এবং এর আগেই জুলাই মাসে জুলাই সনদ ঘোষণা করতে কমিশন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আমাদের ওপর অর্পিত এই পবিত্র দায়িত্ব পালনে অবশ্যই সফল হতে হবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফা সংলাপ সোমবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অধ্যাপক ইউনূসের সভাপতিত্বে শুরু হয়েছে। সংলাপে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংস্কার প্রক্রিয়ায় জড়িত অংশীজনেরা অংশ নেন।

সংবিধান, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচন ব্যবস্থা, সরকারি প্রশাসন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংক্রান্ত পাঁচটি মূল সংস্কার কমিশনের সুপারিশ পর্যালোচনা ও চূড়ান্তকরণের জন্য এ ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়। প্রথম দফার সংলাপ ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯ মে পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময়ে ৩৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক হয়।

রাজনীতি

২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট আগের মতোই গতানুগতিক বলে মনে করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটি বলছে, প্রস্তাবিত বাজেটের সঙ্গে এর আগের অর্থবছরের বাজেটের খুব একটা তফাত দেখা যায়নি। কোনো নতুনত্বের ছোঁয়াও পরিলক্ষিত হয়নি।

বাজেটের ওপর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আজ সোমবার রাতে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠান জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মা’ছুম। এতে বলা হয়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী প্রথম বাজেটে নতুন বাংলাদেশ পুনর্গঠনের প্রত্যয় আশানুরূপভাবে প্রতিফলিত হয়নি।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিদেশে পাচারকৃত অর্থ এবং অন্যান্য অবৈধ অর্থ উদ্ধার করে ফিরিয়ে আনার স্পষ্ট কোনো পরিকল্পনা প্রস্তাবিত বাজেটে লক্ষ করা যায়নি, যা জাতিকে হতাশ করবে। এ ছাড়া কালোটাকা সাদা করার সুযোগ বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। এই অপচেষ্টা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।

বিবৃতিতে বলা হয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। গত অর্থবছরে এর কাছাকাছিও অর্জন করা সম্ভব হয়নি। এবারও রাজস্ব আদায় বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হতে পারে।

বাজেটে বিদেশনির্ভরতা কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না উল্লেখ করে বিবৃতিতে জামায়াত বলেছে, রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি বাজেট বাড়িয়ে ২ লাখ ৬৬ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যার একটি বড় অংশ আসবে বৈদেশিক উৎস থেকে।

বিবৃতিতে বলা হয়, বিভিন্ন ধরনের পরোক্ষ কর বৃদ্ধির মাধ্যমে রাজস্ব বৃদ্ধির উদ্যোগ দেখা গেলেও প্রত্যক্ষ কর বৃদ্ধির তেমন উদ্যোগ বাজেটে দেখা যাচ্ছে না। সুতার আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি করায় আরএমজি সেক্টরে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে তৈরি পোশাকশিল্পের রপ্তানির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

বাজেটে জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা প্রদান, সামাজিক সুরক্ষা বৃদ্ধি এবং আর্থিক সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য বরাদ্দ রাখায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশংসা করেন জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মা’ছুম। তবে এ বরাদ্দ আরও বাড়ানোর দাবি জানান তিনি।

রাজনীতি

এবারের বাজেটে মানুষকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আমরা বিগত বাজেটের চেয়ে ছোট আকারের বাজেট আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাব করছি। প্রবৃদ্ধিকেন্দ্রিক ধারণা থেকে সরে এসে আমরা চেষ্টা করেছি সামগ্রিক উন্নয়নের ধারণায় জোর দিতে। তাই প্রথাগত ভৌত অবকাঠামো তৈরির খতিয়ান তুলে ধরার পরিবর্তে আমরা এবারের বাজেটে প্রাধান্য দিয়েছি মানুষকে।

সোমবার (২ জুন) বিকেল ৩টায় জাতির সামনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে এনে একটি উন্নত সমাজ বিনির্মাণের উদ্দেশ্যে আমরা যেসব কার্যক্রম গ্রহণ করেছি তার মূল লক্ষ্য হচ্ছে শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য কার্বনভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণ। যার মাধ্যমে আমূল পরিবর্তন হবে এ দেশের মানুষের জীবনমানের। মুক্তি মিলবে বৈষম্যের দুষ্টচক্র থেকে।

তিনি বলেন, এবারের বাজেটে তাই শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সুশাসন, নাগরিক সুবিধা, কর্মসংস্থান ইত্যাদি বিষয়ের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্রমাগত যেসব সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে তার সুবিধা ভোগ এবং যেসব চ্যালেঞ্জ তৈরি হচ্ছে তা মোকাবিলা করে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার দিকেও মনোযোগ দেওয়া হয়েছে।

বাজেট প্রস্তাবের বক্তব্যে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, জুলাই বিপ্লবে আত্মোৎসর্গকারীরা আমাদের সামনে একটি বিরল সুযোগ তৈরি করে দিয়ে গেছেন দেশকে সঠিক পথে পরিচালিত করে ভবিষ্যতের জন্য শক্ত ভিত গড়ার। আপনাদের সকলের সর্বাত্মক সহযোগিতায় সে লক্ষ্য পূরণের প্রত্যয়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের অঙ্গীকার পূরণ করাই হবে আগামী দিনে আমাদের প্রধান লক্ষ্য।

এসময় তিনি বলেন, গত দেড় দশকে দুর্নীতি ও সুশাসনের অভাবে দেশের প্রায় সকল প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছিল। তাই দেশকে পুনরায় সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। সে লক্ষ্যে আমাদের অন্তর্বর্তী সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কারের রূপরেখা তৈরি এবং বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। ইতোমধ্যে সবগুলো কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি নির্মূলের লক্ষ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর সংশোধন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বিদেশে পাচার অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে দুর্নীতি দমন সংক্রান্ত জাতিসংঘ কনভেনশন অনুসরণে দুর্নীতি দমন কমিশন যথাযথভাবে কাজ করে যাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক গঠিত ‘দুদক সংস্কার কমিশন’ সম্প্রতি তাদের সুপারিশ প্রদান করেছে যা যাচাইপূর্বক দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।

রাজনীতি

ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চেয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এমন কোনো সংস্কার নেই যেগুলো একমাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না।

তিনি বলেছেন, ‘আমরা মনে করি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান করা খুবই সম্ভব। এর আগে যে সব সংস্কার করা প্রয়োজন, বিশেষ করে নির্বাচনমুখি, সেই সংস্কারগুলো চিহ্নিত করে ঐকমত্যের মাধ্যমে সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন করা যায়’।

সোমবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ।

বৈঠকে বিএনপি ছাড়াও জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সংবিধান সংশোধন ছাড়া কিছু কিছু সংস্কার অফিস আদেশের মাধ্যমে, অর্ডিন্যান্স কিংবা নির্বাহী আদেশের মাধ্যমেও বাস্তবায়ন করা সম্ভব’।

সংবিধান সংস্কার প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা বলেন, ‘সংবিধান সংক্রান্ত যে সমস্ত প্রস্তাব বিভিন্ন দল দিয়েছে, তাতে ওনারা যেভাবে আন্তরিকতা দেখাচ্ছেন তাতে একটা সনদে আসা সম্ভব। কিছু কিছু বিষয়ে অবশ্যই দ্বিমত থাকবে। সবগুলো দল সব বিষয়ে একমত হবে- এমনটা আমরাও আশা করি না। তবে যেগুলো ঐকমত্যে আমরা আসতে পারবো, সেই বিষয়গুলো অবশ্যই আগামী জাতীয় সংসদে সেগুলো সংশোধন হবে’।

সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘কিছু কিছু বিষয়ে অবশ্যই দ্বিমত থাকবে। সব দলতো সব বিষয়ে একমত হবে এমন আশাও আমরা করি না। তবে যেগুলো ঐকমত্যে আমরা আসতে পারবো সেই বিষয়গুলো অবশ্যই আগামী জাতীয় সংসদে সেগুলো সংশোধনী হবে’।

‘কিন্তু তার আগে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সনদ স্বাক্ষরিত হলেই যথেষ্ট। সেটা আমাদের নির্বাচনি ইশতেহারেও আসবে। জাতির কাছে অঙ্গীকার হিসেবেও থাকবে’, যোগ করেন তিনি।

রাজনীতি

সরকারি বিভিন্ন সেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে অনলাইনে ‘এক ঠিকানায় সব নাগরিক সেবা’ স্লোগানে যাত্রা শুরু করেছে নাগরিক সেবা বাংলাদেশ।

২৬ মে (সোমবার) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ কার্যক্রমের পাইলট প্রকল্প উদ্বোধন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রশিক্ষিত নাগরিক সেবা উদ্যোক্তরা এ সেবাগুলো নাগরিক সেবা কেন্দ্র থেকে সাধারণ নাগরিকদের প্রদান করবেন।

পাইলট প্রকল্পের আওতায় রাজধানীর গুলশান, উত্তরা ও নীলক্ষেত এলাকায় নাগরিক সেবা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।

তন্মধ্যে গুলশান ও উত্তরার কেন্দ্র কার্যক্রম শুরু করেছে এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে নীলক্ষেত কেন্দ্রও কার্যক্রম শুরু করবে।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের উদ্যোগে এবং সরকারের আইসিটি বিভাগের তত্ত্বাবধানে তৈরি এ সেবার উদ্বোধন করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য কমাতে, নানাবিধ হয়রানি রোধে ও ভোগান্তিমুক্ত নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে এ উদ্যোগটি যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করবে।

একইভাবে সেবার সহজ প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে এক ঠিকানায় প্রয়োজনীয় সব সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রবাসী সেবা কেন্দ্র তৈরির বিষয়ে উদ্যোগ নিতেও আইসিটি বিভাগকে নির্দেশনা দেন তিনি।

এ সেবার আওতায় সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারের সবগুলো মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিযোগিতা সৃষ্টির জন্য নিয়মিতভাবে সেবার আপডেট ও সমন্বয়ের বিষয়ে জোর দেন তিনি।

তিনি বলেন, সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে ইতিবাচক প্রতিযোগিতা তৈরি করা আমাদের লক্ষ্য। আমাদের চেষ্টা হচ্ছে প্রতিটি মন্ত্রণালয় থেকে যতগুলো সেবা এর আওতায় আনা যায় সবগুলোকে দ্রুত নিয়ে আসা।

এ সময় বিভিন্ন নাগরিক সেবার প্রসঙ্গ টেনে প্রফেসর ইউনূস বলেন, এমন ব্যবস্থা আমাদেরকে অবশ্যই দাঁড় করাতে হবে যাতে জন্ম গ্রহণ করা মাত্রই শিশুরা জন্ম নিবন্ধন সনদ পেয়ে যায়। এটাই যেন হয় তার নাগরিক স্বীকৃতি।

নাগরিক সেবা কেন্দ্রের পরিচালনা ও মালিকানা সম্পর্কে তিনি বলেন, উদ্যোক্তারা জায়গার মালিকদের সাথে চুক্তি করে ভাড়া পরিশোধ করবেন। প্রাথমিক পর্যায়ে ভাড়া হ্রাসকৃত হারে নির্ধারিত হবে। উদ্যোক্তারা নিরাপত্তা, রক্ষণাবেক্ষণ ও ইউটিলিটির দায়িত্ব নেবেন। সেবা মান বজায় না রাখলে লাইসেন্স বাতিল হতে পারে।

নাগরিক সেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য প্রথম ধাপে আবেদনকারীদের মধ্য থেকে ২০০ জন নারী ও পুরুষ নির্বাচন করা হয়। তাদের ডিজিটাল লিটারেসি, গ্রাহক সেবা ও ডিজিটাল সেবা প্রদানে নিবিড় প্রশিক্ষণ শেষে ১০০ জন উদ্যোক্তাকে (৫০ জন নারী ও ৫০ জন পুরুষ) সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনের সচিব আখতার আহমেদ, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ, তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী, পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. নূরুল আনোয়ার এবং জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর।

রাজনীতি

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে সব ধরনের প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়েছে। শনিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, এমন একটি নির্বাচন হবে যেখানে একটি ইতিহাস তৈরি হবে। প্রত্যেকটি মানুষ হাসিমুখে ভোট দিয়ে বের হবে। কেউ গিয়ে দেখবে না যে, একজনের ভোট আরেকজন দিয়ে এসেছে। ভোট হবে স্বচ্ছ, কোনো ধরনের কারচুপি হবে না।
রোববার (২৫ মে) দুপুরে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় দখিনা দাওয়া সেন্টারে আয়োজিত চা শ্রমিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে জামায়াতের পক্ষ থেকে নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে নানা প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলেও জানান ডা. শফিকুর রহমান।

তিনি বলেন, মানবিক করিডোর না দেওয়ার বিষয়ে আমাদের অবস্থান সরকারকে জানানো হয়েছে। চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন এবং তাদের নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে তিনি বলেন, এই দেশে সকল নাগরিক সমান অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকবে। চা শ্রমিকদের দায়িত্বও সরকারকে অন্যান্য নাগরিকদের মতো সমানভাবে নিতে হবে। তারা এখনও মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। আমরা যদি জনগণের ভোটে দায়িত্ব পাই, তাহলে তাদের সম্মানের সঙ্গে বসবাস নিশ্চিত করব। তাদের সন্তানদের প্রতিভার বিকাশে পাশে থাকব।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, চা শ্রমিকদের শিক্ষিত করে আধুনিক বাগান ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত করার চিন্তা আমাদের রয়েছে। ধর্মের ভিত্তিতে আমরা কাউকে বিবেচনা করি না। আমরা একটি বন্ধুপ্রতিম সমাজ গড়তে চাই। চা শ্রমিকদের উদ্দেশে বলতে চাই—আপনার ডাক দিতে সময় লাগবে, কিন্তু আমাদের পৌঁছাতে সময় লাগবে না। আমরা সবাই এই দেশের মালিক। ধর্মের ভিত্তিতে এ দেশে আর কাউকে বিভক্ত করা যাবে না।

উপজেলা জামায়াতের আমীর আব্দুল মুন্তাজিমের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সিলেট মহানগরীর আমীর মো. ফখরুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের আমীর প্রকৌশলী এম. সায়েদ আলী, জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুর রহমান, জেলা সেক্রেটারি অধ্যক্ষ ইয়ামীর আলী প্রমুখ।

চা শ্রমিকদের সঙ্গে মতবিনিময় ছাড়াও ডা. শফিকুর রহমান সকাল ১০টায় ১০০০ নারীর উপস্থিতিতে মহিলা সমাবেশ, মৌলভীবাজার জেলার ৬৭টি ইউনিয়নের ১৩০০ জন প্রতিনিধিদের নিয়ে আয়োজিত ওয়ার্ড দায়িত্বশীল সম্মেলন, শমশেরনগর ইউনিয়ন, শরীফপুর ইউনিয়ন ও হাজীপুর ইউনিয়নে সর্বস্তরের জনগণকে নিয়ে মতবিনিময় ও পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।

জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে জামায়াত

 দেশের চলমান পরিস্থিতিতে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এতে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দেবেন দলটির আমির শফিকুর রহমান।
মঙ্গলবার (২৭ মে) বেলা ১২টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জরুরি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের সোমবার (২৬ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে শনিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশ জামায়াত আমির। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাকিদের বলেন, আমাদের সবার দাবি ছিল অর্থবহ একটি সংস্কার হবে। এই সংস্কার ও বিচারের মধ্য দিয়েই একটা অর্থবহ নির্বাচন হবে।

তিনি সেদিন বলেন, আমরা বলেছি দুটি বিষয় স্পষ্ট করা দরকার। গ্রহণযোগ্য সংস্কার হতে হবে এবং সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে। আমরা মনে করি সংস্কার ও নির্বাচনী রোডম্যাপের ঘোষণা হলে অনেকটাই সংশয় কেটে যাবে।

রাজনীতি

মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে গুমের সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে, এমনটি বলেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গুম হওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক সপ্তাহ পালন উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, প্রতি বছরের মতো এ বছরও মে মাসের শেষ সপ্তাহে গুম সপ্তাহ পালিত হচ্ছে। গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে এই আন্তর্জাতিক সপ্তাহ। ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে প্রায় ৬৬৬ জন ব্যক্তি গুম হয়েছেন।

তিনি বলেন, আমাদের হিসাবে উল্লিখিত গুমের সংখ্যা আরও কয়েকগুণ বেশি হবে। এদের মধ্যে অধিকাংশ এখনো নিখোঁজ, অনেকেরই মরদেহ পাওয়া গেছে আবার অনেকদিন পর কাউকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এটি বিগত আওয়ামী শাসনামলের একটি বর্বর দুঃশাসনের নমুনা।

তিনি আরও বলেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেওয়া ব্যক্তিদের ১০-১৫ বছরেও কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশের গুমের ঘটনাগুলোর সবচেয়ে বেশি শিকার হয়েছেন বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। এছাড়াও গুমের শিকার হয়েছেন দেশের ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবী এবং সাধারণ মানুষও।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে গুমের সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক সপ্তাহে আমি এই গুম হওয়া মানুষদের অসহায় পরিবারের সাথে সংহতি প্রকাশ করছি। আর কোন ব্যক্তি যাতে গুমের শিকার না হয় সেজন্য রাষ্ট্রকে জোরালো ভূমিকা রাখার জন্য আমি আহবান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, আর যেন রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গুমের মতো অমানবিক ঘটনা না ঘটে সেজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে সোচ্চার থাকতে হবে। রাজনৈতিক দর্শন বা রাষ্ট্রীয় সীমানাকে অতিক্রম করে বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী গুমের শিকার সব ব্যক্তি ও পরিবারকে আমরা সমবেদনা জানাচ্ছি।

রাজনীতি

আজ শনিবার বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীকে বৈঠকের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার দল দুটির পক্ষ থেকে পৃথকভাবে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিএনপি এবং রাত ৮টায় জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা।

তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য শুক্রবার রাতে জানিয়েছেন, বিএনপির বৈঠকে যোগদানের বিষয়টি পরে জানানো হবে।

এর আগে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়েছিল জামায়াতে ইসলামী। মৌখিকভাবে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে শনিবার রাতে বৈঠকের বিষয়টি জানানো হয়। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।

তিনি জানান, চলমান বিষয় নিয়ে আলাপচারিতার জন্য তারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করবেন।

সূত্র জানায়, জামায়াত মনে করে প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ কোনো সমাধান নয়। তারা চায় ড. ইউনূসের নেতৃত্বেই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক।

এর আগে, উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে একটি সর্বদলীয় বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছিলেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান।

সূত্র মতে, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ নানা ইস্যুতে আলোচনা হবে। এর মধ্যে নির্বাচন, বিচার, সংস্কার, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐক্য ফিরিয়ে আনার বিষয় বিশেষভাবে গুরুত্ব পাবে।