বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচারে কারা জড়িত, তাদের বিষয়ে কোনো তথ্য না থাকার কথা জানালেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
এই সংক্রান্ত তথ্য বিরোধী দলের কারও কাছে থাকলে তা দিতে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
সম্পূরক বাজেটের উপর আলোচনায় বিরোধীদলীয় সদস্যরা অর্থ পাচারের প্রসঙ্গ আনার পর পর মুস্তফা কামাল সোমবার সংসদে বলেন, “কারা টাকা নিয়ে যায়, লিস্ট আমার কাছে নেই।”
বিরোধী সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “নামগুলো আমাদের দেন। কাজটি করা আমাদের জন্য সহজ হবে।”
অর্থ পাচার ঠেকাতে সরকার সক্রিয় রয়েছে দাবি করে অর্থমন্ত্রী বলেন, “এখনও অনেকেই জেলে আছে। বিচার হচ্ছে। আগে যেমন ঢালাওভাবে চলে যেত, এখন তেমন নেই।”
এর আগে আলোচনায় বিএনপির রুমিন ফারহানা বলেন, “বিদেশে ১ লাখ কোটি টাকার ওপরে চলে যাচ্ছে। ওভার আর আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে যাচ্ছে। এর বাইরে হুন্ডির পরিমাণ ধরলে আল্লাহ মাবুদ জানেন কত টাকা বিদেশে গেছে!”
জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, “এক ব্যাংকের পরিচালক আরেক ব্যাংকের টাকা নিচ্ছে। টাকা নিয়ে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশ পাঠাচ্ছে।
“দুদকের একটি অফিস কানাডায়, মালয়েশিয়ায়, অস্ট্রেলিয়ায় করুন। তাহলে দেখা যাবে কে কত টাকা নিয়েছে। পিকে হালদার এত টাকা নিল! নয় মিনিটের জন্য পিকে হালদারকে ধরতে পারেনি। তাহলে নয় ঘণ্টা আগে ধরতে পারলেন না কেন?”
সমালোচনার জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, “দেশের মানুষের কষ্টে অর্জিত টাকা বিদেশে চলে যাবে, আপনাদের যেমন লাগে, আমারও লাগে। আমি অনিয়ম, বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে। আমরা সবাই চাই, এগুলো বন্ধ করতে হবে।
“আগে সিমেন্টের নাম করে বালি আসত। একটার নাম কবরে আরেকটা আসত। আন্ডারইনভয়েসিং, ওভারইনভয়েসিং আগের মতো হয় না। একদম বন্ধ হয়ে গেছে বলব না। পত্রপত্রিকায় দেখতে পাই না।”
গত বছরের ১৮ নভেম্বর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ থেকে কানাডায় টাকা পাচারের সত্যতা পাওয়ার কথা জানান।
প্রাথমিকভাবে অর্থপাচারে জড়িত যাদের তথ্য পাওয়া গেছে তার মধ্যে সরকারি কর্মচারীই বেশি বলে জানান তিনি। এছাড়া রাজনীতিক এবং ব্যবসায়ী থাকার কথাও জানান তিনি। তবে তিনি কারও নাম প্রকাশ করেননি।
সে বক্তব্যের বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বাঙালি অধ্যুষিত কানাডার ‘বেগমপাড়া’র প্রসঙ্গ উঠে আসে।
সেসব প্রতিবেদন নজরে আসার পর গত ২২ নভেম্বর হাই কোর্ট অর্থ পাচারকারী, দুর্বৃত্তদের নাম-ঠিকানার পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না, তা জানতে চায়।
তবে দুদকের দেওয়া জবাবে আদালত সন্তুষ্ট হতে পারেনি।