জাতীয়

অর্থবছর অনুযায়ী ভূমি কর দেওয়ার প্রস্তাবিত বিল সংসদে

বাংলা সনের পরিবর্তে অর্থবছর হিসাবে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের বিধানসহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে পরিবর্তন এনে জাতীয় সংসদে বিল উত্থাপন করা হয়েছে। এতে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের কথা বলা হয়েছে।

এ ছাড়া কৃষি কাজের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তি বা পরিবারভিত্তিক কৃষিভূমির মোট পরিমাণ ৮ দশমিক ২৫ একর বা ২৫ বিঘা পর্যন্ত হলে ভূমি উন্নয়ন কর দিতে হবে না। পাশাপাশি আঁখ এবং লবণ চাষের ভূমি ও কৃষকের পুকুরও (বাণিজ্যিক মৎস্য চাষ ব্যতীত) মওকুফের আওতায় থাকবে।

বৃহস্পতিবার ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ‘ভূমি উন্নয়ন কর বিল ২০২৩’ উত্থাপন করেন। পরে বিলটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য এই মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

১৯৭৬ সালের ‘ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ট্যাক্স অর্ডিন্যান্স’ বাতিল করে নতুন এই আইনটি করা হচ্ছে।

বিলটি আইনে পরিণত হলে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ে সর্বসাধারণ উপকৃত হবেন এবং স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহায়ক হবে বলে জানান ভূমিমন্ত্রী।

বিলে বলা হয়, ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করা যাবে। ইলেকট্রনিক পদ্ধতি সারা দেশে পূর্ণরূপে প্রবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত এই পদ্ধতির পাশাপাশি প্রচলিত পদ্ধতিতে যেকোনো ব্যাংকের মাধ্যমে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের ব্যবস্থা নিতে পারবে। এক নাগারে তিন বছর ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ না করা হলে প্রথম থেকে তৃতীয় বছর পর্যন্ত বার্ষিক ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ হারে জরিমানা হবে। তৃতীয় বছর শেষে বকেয়া ভূমি উন্নয়ন কর সার্টিফিকেট মামলা করে আদায় করা হবে।

বিলে বলা হয়েছে, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবান— এই তিন পার্বত্য জেলায় এই আইন কার্যকর হবে না। কৃষিভূমি পল্লী এলাকা বা পৌর এলাকা- যেকোনো স্থানে অবস্থিত হোক সবক্ষেত্রে অভিন্ন ভূমি উন্নয়ন কর হার ও শর্ত প্রযোজ্য হবে। অকৃষি ভূমির ভূমি উন্নয়ন করের হার নির্ধারণ করতে ভূমির মান ও ব্যবহার অনুযায়ী দেশের সব ভূমি একাধিক শ্রেণিতে শ্রেণিবিন্যাস করা যাবে।

বিদ্যমান ব্যবস্থায় বাংলা সন (বৈশাখ-চৈত্র) হিসাবে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করা হয়। নতুন বিলে বলা হয়েছে, ভূমি উন্নয়ন কর আদায় হবে জুলাই-জুন অর্থবছর হিসাবে। প্রতি বছর জুলাই মাসের ১ তারিখ থেকে পরবর্তী বছরের ৩০ জুনের মধ্যে ভূমি উন্নয়ন কর জরিমানা ছাড়া দেওয়া যাবে। সরকার যে কোনো ব্যক্তি বা যেকোনো শ্রেণির ব্যক্তি বা সংস্থাকে উন্নয়ন কর মওকুফ করতে পারবে।

বিলে বলা হয়েছে, ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা প্রতিবছর জুলাই মাসের মধ্যে এলাকা পরিদর্শন করে ভূমির ব্যবহারভিত্তিক অবস্থা বিবেচনা করে নির্ধারিত ফরমে সব মৌজার ভূমি উন্নয়ক কর নির্ধারণ করে তা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে পাঠাবেন। সহকারী কমিশনার (ভূমি) তা পরীক্ষা করে অনুমোদন করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *