নবগঠিত নির্বাচন কমিশন (ইসি) বিভিন্ন পেশার মানুষের সঙ্গে আলোচনার নামে ‘নতুন নাটক’ শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি বলেন, “ইলেকশন কমিশন একটা নতুন নাটক শুরু করেছে। এই নাটকটা হচ্ছে তারা এখন বিভিন্ন পেশার বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে কথা বলছেন।
“গত পরশু হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা। ৩০ জনকে জানিয়েছিল আমন্ত্রণ, এসেছেন মাত্র ১২ জন। সেখানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক, তিনি বলছেন যে, এই তামাশাগুলো কেন করছেন?”
গত ১৩ মার্চ প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিুবল আউয়ালের নেতৃত্বে নতুন ইসি অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার অংশ হিসেবে শিক্ষাবিদদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এটি কমিশনের প্রথম বৈঠক।
একজন শিক্ষাবিদের মত তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এই নির্বাচন কখনোই সুষ্ঠু-অবাধ হবে না, যদি সেখানে নিরপেক্ষ সরকার না থাকে নির্বাচনকালীন সময়ে। এটা আমার কথা নয়, এটা একজন শিক্ষকদের কথা, শিক্ষাবিদের কথা।
“তারা খুব ভাল করেই জানেন, যে কোনো চিন্তাশীল মানুষ যারা দেশকে ভালোবাসেন তারা জানেন যে, এখন যেটা প্রয়োজন সেটা হচ্ছে যে, একটা জনগণের সরকার।”
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব হবে না দাবি করে তিনি বলেন, “জনগণের সরকার করতে হলে আপনাকে অবশ্যই একটা নিরপেক্ষ সরকার করতে হবে।
“নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হলে নির্বাচনকালীন সময়ে একটা নিরপেক্ষ সরকার লাগবে। আওয়ামী লীগের অধীনে হবে না। ”
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে সোচ্চার হওয়ার পাশাপাশি ভোটের অধিকার ফেরাতে আন্দোলনের বিকল্প নেই বলে জানান তিনি।
“আমরা যেমন চাল-ডাল নিত্যপ্রয়োজনী দ্রব্যমূল্যের ঊধর্বগতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছি, হাটে-বাজারের সর্বত্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি ঠিক তেমনিভাবে আমাদের ভোটের অধিকারকে ফিরিয়ে আনার জন্য, আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবার জন্য, তার সুচিকিৎসার জন্য, আমাদের নেতা তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনবার জন্য, আমাদের ৩৫ লাখ নেতা-বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করার জন্য, আমাদের কারাগারে বন্দি নেতাদের মুক্ত করবার জন্য আমাদের আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এই সরকারের মন্ত্রী সাহেবরা বলছেন মানুষের আয় বেড়েছে…। সরকার জনগণের সঙ্গে রসিকতা করে, মস্করা করে বলছে জনগণের আয় বাড়ছে, জনগণ ভালো আছে… আর কতদিন চলবেন?”
গোটা দেশে একটা ‘নীরব দুর্ভিক্ষ’ শুরু হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের এই নেতা বলেন, “চাল-ডাল-তেল-লবণ-চিনি-এ জিনিসগুলোর দাম কোথাও একশ ভাগ, কোথাও তিনশ ভাগ বেড়ে গেছে।
“আমাদের শ্রমিক ভাইয়েরা, রিকশা চালকরা যে পরাটা-ভাজি খান তার দামও বেড়ে গেছে। আগে যে পরাটা ছিল ৫ টাকা, সেই পরাটার দাম ১০ টাকা, যে ভাজির দাম ছিল ৫ টাকা সেটা হয়েছে ১০ টাকা। আয় কিন্তু বাড়েনি।”
সংগঠনের আহবায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপির মীর সরফত আলী সপু, আবদুস সালাম আজাদ, ডিএলের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, উলামা দলের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম তালুকদার, কৃষক দলের শাহজাহান সম্রাট, মহিলা দলের পারভীন আখতার, তাঁতী দলের মজিবুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম বক্তব্য রাখেন।