নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের নামে সরকার ‘জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে’ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “আমরা পূর্বেই বলেছি যে, এই নির্বাচন কমিশন দিয়ে কোনো কাজ হবে না- যদি না নির্বাচনকালীন সময়ে সরকার পরিবর্তন না হয়, সেটা নির্দলীয়ভাবে।”
“আজকে শুধুমাত্র নির্বাচন কমিশন গঠন করে, তার জন্য সার্চ কমিটি গঠন করে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে পুরোপুরি জনগণকে বোকা বানিয়ে আবারো সেই ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো একটা নির্বাচন কমিশন বানিয়ে তাদের (আওয়ামী লীগের) ক্ষমতাকে তারা পাকাপোক্ত করতে চায়, একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে চায়।”
এবারই প্রথম আইনের আওতায় সার্চ কমিটি গঠন করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করার উদ্যোগ নিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। তবে বিএনপি ওই আইন প্রত্যাখ্যান করার কথা বলেছে, সার্চ কমিটিতে নাম প্রস্তাব করার আহ্বানেও তারা সাড়া দেয়নি।
আলোচনা সভায় দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিনের চাকরিচ্যুতির প্রসঙ্গেও কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, “পত্রিকা খুললে দেখবেন দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন কর্মকর্তাকে অপসারণ করা হয়েছে। কেন অপসারণ করা হয়েছে? তিনি যে ব্যাক্তিগুলোকে চিহ্নিত করেছিলেন যে এরা দুর্নীতি করছে ব্যাপকভাবে, বিশেষ করে কক্সবাজারের দুর্নীতি করার ক্ষেত্রে। সেই মানুষগুলোই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে যে, তিনি নাকি দুর্নীতি পরায়ণ।”
“কোনো রকমের সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়াই তাকে অপসারণ করা হয়েছে। এই দেশ দুর্নীতি ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এবং সেটার সম্পূর্ণভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছে সরকার।”
ফখরুলের ভাষায়, “এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দুর্নীতি করছেন উপাচার্যরা, এখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যারা কাজ করছেন তারা দুর্নীতি করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে, মেডিকেল কলেজগুলোতে দুর্নীতি করা হচ্ছে; স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়-শিক্ষাতে এমন একটা জায়গা নাই যেখানে দুর্নীতি করা হচ্ছে না।’’
জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের জীবন-কর্মের ওপর ‘স্মৃতির অ্যালবাম’ গ্রন্থের প্রকাশনা উপলক্ষে এই আলোচনা অনুষ্ঠান হয়। ২৭২ পৃষ্ঠার এ বইটি প্রকাশ করেছে দি ইউনিভার্সাল একাডেমি। বইটির দাম মূল্য ধরা হয়েছে দুই হাজার টাকা।
বিএনপির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের কথা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সবসময় সবকালে জন্মায় না। এরা ক্ষণজন্মা মানুষ। তাদের সারাটা জীবন… দেশের জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করেছেন। ড. মোশাররফ তার জীবনে যেখানে হাত দিয়েছেন, সফল হয়েছেন।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “এই গ্রন্থ কোনো প্রবন্ধ বা কোনো উপন্যাস বা সাহিত্য নয়। আমার জীবনে আমার কাছে যে সকল ছবিগুলো সংরক্ষিত ছিল, আমরা মনের ভেতরে পরিকল্পনা এল, যেহেতু এই ছবিগুলো আমার আছে, সেগুলো দিয়ে একটা বই হতে পারে। আমি বিশ্বাস করি যে, ছবি কথা বলে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সুপ্রিম কোর্টের নবীন আইনজীবী ব্যারিস্টার খন্দকার মারুফ হোসেনের পরিচালনায় অন্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এম আবদুল্লাহ, আলোকচিত্র সাংবাদিক নুর উদ্দিন আহমেদ নুরু, প্রকাশক শিহাব উদ্দিন ভুঁইয়া বক্তব্য দেন।