ভাষা আন্দোলনের চেতনা বাস্তবায়নে দেশে ‘গণঅভ্যুত্থান’ গড়ে তোলার কথা বললেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার শহীদ দিবসের সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের সামনে তিনি এ কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, “ভয়াবহ একটা ফ্যাসিজম এই দেশের উপরে চলছে। এটাকে সরানো জন্য, আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবার জন্যে, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে সঙ্গে নিয়ে আমরা এখানে একটি গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করব।
“তার মধ্য দিয়ে সত্যিকার অর্থে আমরা একুশের চেতনাকে বাস্তবায়িত করব।”
বিএনপি মহাসচিব সকাল সাড়ে ৮টায় দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
বিএনপি নেতা-কর্মীদের বুকে ছিল কালো ব্যাজ। কালো পতাকা হাতে নিয়ে তারা শহীদ মিনারের সামনে জড়ো হন। পরে জ্যেষ্ঠ নেতারা শহীদ বেদীতে ফুল দেন।
আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, শামা ওবায়েদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন এ সময়।
এর আগে ভোর ৬টায় বলাকা সিনেমা হলের কাছে বিএনপির নেতা-কর্মীরা সমবেত হয়ে প্রভাতফেরী করে আজীমপুরে কবরাস্থানে যান। সেখানে তারা ভাষা শহীদদের কবর জিয়ারত করেন এবং তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাতে অংশ নেন। পরে তারা যান কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে।
মির্জা ফখরুল বলেন, “শহীদ জব্বার, সালাম, বরকতসহ অনেকে সেদিন রাজপথে তাদের রক্ত দিয়ে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবার জন্যে আত্মত্যাগ করেছিলেন। তারই ফলশ্রুতিতে সেই সময় পাকিস্তান সরকার বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়েছিল।
“৭০ বছর আগে এই ভাষা আন্দোলনের যে মূল চেতনা ছিল আমাদের স্বাধীকারের চেতনা, সেই চেতনা ছিল আমাদের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার চেতনা, সেই চেতনা ছিল আমাদের একটি মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার চেতনা… আমরা সবাই কথা বলতে পারব, আমরা আমাদের স্বাধীন চিন্তাগুলো প্রকাশ করতে পারব, আমাদের বাক স্বাধীনতা থাকবে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা থাকবে। সবচেয়ে বড় ইচ্ছাটি ছিল আমাদের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।”
সেই পথ ধরেই যে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন হয়েছিল, সে কথা তুলে ধরে ফখরুল বলেন, “দুর্ভগ্য আমাদের, এমন একটি সরকার আমাদের এ দেশের জনগণের ওপরে চেপে বসে আছে, যারা জনগণের সমস্ত আশা-আকাঙ্ক্ষাগুলো দমন করছে এবং একুশের যে চেতনা, সেই চেতনাকে তারা ভুলণ্ঠিত করে দিয়েছে।
“আজকে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, বাক স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে এবং এই দেশের অর্থনীতিকে পুরোপুরিভাবে ভেঙে ফেলা হয়েছে এবং বাংলা ভাষা এখনো সর্বস্তরে প্রচলিত হয়নি।”
এ থেকে ‘পরিত্রাণ পেতে’ গণঅভ্যুত্থান গড়ে তোলার কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।