স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আশ্বস্ত করে বলেছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে এলে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা নিয়ে কোনো ধরনের জটিলতা তৈরি হবে না । বরং এনআইডি সেবা এখন যথাস্থানে আসছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বুধবার ( ২৩ জুন) দুপুরে রাজধানীর পুরাতন কারাগার (নাজিমউদ্দিন রোডে) কনভেনশন হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মনে করেন, এনআইডি নিয়ে যেসব কথা হচ্ছে তা অবান্তর। আমরা জেনে বুঝেই এনআইডি সেবাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে আনছি। এখানে সবার মতামত রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শও নেয়া হয়েছে।
টিক টক বন্ধের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকারি পর্যায়ে টিকটক বন্ধের আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে পরিবারের কর্তাব্যক্তিদের এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ছেলেমেয়েরা কোথায় কী করছে তা দেখবেন না? টিক টক করছে, লাইকি করছে, ভিডিও করছে, মাদক গ্রহণ করছে, নষ্ট হয়ে যাচ্ছে; এগুলো অভিভাবকদেরও দেখতে হবে। না পারলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে খবর দেবেন।
এদিকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এ সিদ্ধান্তের বিপক্ষে খোদ নির্বাচন কমিশনও (ইসি)। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যখন এক অনুষ্ঠানে এমন বক্তব্য দিচ্ছেন প্রায় একই সময় অন্যদিকে রাজধানীর নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট (ইটিআই) ভবনে আরেক অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে গেলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অসুবিধা হবে।
এনআইডি সেবা সরকারের হাতে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে এমন নয় উল্লেখ করে সিইসি বলেন, এটি টেবিল-চেয়ার নয় যে উঠিয়ে নিয়ে গেলাম, এটা নিয়ে আলোচনায় বসতে হবে।
এনআইডি সেবা টেবিল-চেয়ার নয় যে উঠিয়ে নিয়ে গেল: সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিবন্ধন কার্যক্রম নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে স্থানান্তর করলে ইসির অসুবিধা হবে। এটা টেবিল-চেয়ার নয় যে উঠিয়ে নিয়ে গেল। এটা নিয়ে আলোচনায় বসতে হবে।
বুধবার (২৩ জুন) নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ভবনে মেডিকেল ক্যাম্প উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি এসব কথা বলেন।
সিইসি বলেন, এনআইডি উইং অনেক বড় প্রতিষ্ঠান। কীভাবে নেবে না নেবে, এ বিষয়ে নিশ্চয়ই সচিব পর্যায়ে কথাবার্তা হবে। ইসির সুবিধা-অসুবিধাগুলো তাদের জানানো হবে।
নূরুল হুদা বলেন, সরকারের কাছে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত হয়েছে-এ রকম বলা যায় না। তারা নিতে চায়। ইসি দেবে না-এ রকমও বলা যায় না। ইসি সে রকম অবস্থানে নেই। আলোচনায় বসতে হবে, এটা হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ কথা।
দুই পক্ষেরই যুক্তি আছে উল্লেখ করে নূরুল হুদা বলেন, সরকারের অবশ্যই কিছু যুক্তি আছে। ইসিরও কিছু যুক্তি আছে। এগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। তাদের বক্তব্য হলো এই সেবা নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকে না। সেই যুক্তিটা ঠিক। আসলেই অন্য কোনো দেশে এটা থাকার বিষয় না। আর ইসির যুক্তি হলো এ কাজ অনেক পরিশ্রমের ফসল। এ কাজ করার জন্য ইসির কয়েক হাজার নিবেদিত কর্মী তৈরি হয়েছে এবং তারা অত্যন্ত প্রফেশনাল। এত দিনের ভুলভ্রান্তি শেষে সব পেরিয়ে অত্যন্ত উচ্চ পর্যায়ের প্রযুক্তিসম্পন্ন কাজ তারা তৈরি করতে পেরেছে। এটার জন্য নির্বাচন কমিশন গর্ববোধ করে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ইসি বলেছিল যে, এতগুলো লোক আবার তৈরি করা, আবার ১২ বছর ঘুরে অন্য কোনো ডিপার্টমেন্টের পক্ষে সম্ভব না।