ব্রিটেনের রাণী এলিজাবেথের সম্মানসূচক‘হেড অব স্টেট’উপাধি বাতিল করার পর প্রথম রাষ্ট্রপতিসহ প্রজাতন্ত্রে রূপ নিল ক্যারিবীয় দ্বীপ দেশ বারবেডোজ।
এর মাধ্যমে একসময়কার ব্রিটিশ উপনিবেশটি অবশিষ্ট শেষ ঔপনিবেশিক বন্ধনটুকু ছিন্ন করে নতুন পথচলা শুরু করল। প্রায় ৪০০ বছর আগে দ্বীপটিতে ইংরেজদের প্রথম জাহাজ যাওয়ার পর থেকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সঙ্গে তাদের যে সম্পর্কের সূচনা হয়েছিল মঙ্গলবার তার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটল।
মধ্যরাত পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন এই প্রজাতন্ত্রের জন্ম হয়। রাজধানী ব্রিজটাউনের চেম্বারলেইন ব্রিজে সারিবদ্ধ শত শত মানুষের হর্ষধ্বনি দিয়ে এ জন্মকে স্বাগত জানায়। হিরোজ স্কয়ারে জড়ো হওয়া জনতার সামনে জাতীয় সংগীত বাজানো হয়, এরপর ২১ বার তোপধ্বনি করা হয়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ রানির রাজকীয় পদবি বাতিল করে নতুন বারবেডোজের ঘোষণা দেওয়ার সময় ব্রিটিশ সিংহাসনের পরবর্তী উত্তরাধিকারী প্রিন্স চার্লস সেখানে নিস্তব্ধভাবে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
বারবেডোজের প্রজাতন্ত্রের ধারাকে সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়ে দেশটির দায়িত্ব নেওয়া প্রথম প্রেসিডেন্ট সান্দ্রা ম্যাসন বলেন, “আমাদের দেশের ভবিষ্যত আমাদেরই গঠন করতে হবে। আমরা বারবেডোজের জনগণই আমাদের জাতির রক্ষক।”
বারবেডোজ রাষ্ট্রপ্রধানের পদ থেকে অপসারণ করলেও রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ এখনও যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও জ্যামাইকাসহ আরও ১৫টি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ মর্যাদায় বহাল রয়েছেন।
এই প্রজাতন্ত্র একটি নতুন দিগন্তের সূচনা জানিয়ে প্রিন্স চার্লস বলেন, তার মা (রানি এলিজাবেথ) বারবেডোজ জনগণকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
চার্লস বলেন, “এই প্রজাতন্ত্রের সৃষ্টি একটি নতুন শুরুর প্রতিশ্রুতি। আমাদের অতীতের অন্ধকারচ্ছন্ন দিনগুলি ও দাসত্বের নৃশংসতা যা আমাদের ইতিহাসে চিরকাল দাগ রেখে গেছে সেসবকে পেছনে ফেলে এই দ্বীপের জনগণ অসাধারণ মনোবলের সঙ্গে তাদের পথ তৈরি করেছেন।”
বারবেডোজের নাচ ও সংগীতের এক মনোজ্ঞ প্রদর্শনীর পর বক্তৃতার মাধ্যমে উপনিবেশবাদ অবসানের উদযাপন সম্পূর্ণ হয়। বারবেডোজের প্রজাতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা প্রধানমন্ত্রী মিয়া মটলি বারবাডীয় সংগীত শিল্পী রিয়ানাকে জাতীয় বীর হিসেবে ঘোষণা করেন।
নিজেদের স্বাধীন ঘোষণার প্রায় ৫৫ বছর পর বারবেডোজ তার ঔপনিবেশিক বন্ধন পুরোপুরিভাবে ছিন্ন করে প্রজাতন্ত্র হিসেবে যাত্রা শুরু করল।