স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩ হাজার ৭৩৭ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে; মৃত্যু হয়েছে আরও ৩৩ জনের।
দেশে দৈনিক শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা আরও বেড়ে ৩৭ শ পেরিয়ে গেছে, যা প্রায় নয় মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
এর আগে গতবছরের ২ জুলাই এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্তের খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেদিন মোট ৪ হাজার ১৯ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল। মহামারী শুরুর পর থেকে সেটাই এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।
গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার বেড়ে ১৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ হয়েছে, যা ৫ ডিসেম্বরের পর সবচেয়ে বেশি।
নতুন শনাক্ত ৩ হাজার ৭৩৭ জনকে নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৫ লাখ ৮৮ হাজার ১৩২ জনে। আর গত এক দিনে মারা যাওয়া ৩৩ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট ৮ হাজার ৮৩০ জনের মৃত্যু হল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ২ হাজার ৫৭ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ৩১ হাজার ৯৫১ জন হয়েছে।
বাংলাদেশে গত বছর ৮ মার্চ করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার এক বছর পর গত ৭ মার্চ শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে ৫ লাখ ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ১১ মার্চ তা সাড়ে আট হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১২ কোটি ৫৫ লাখ পেরিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৭ লাখ ৫৬ হাজার।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩৪তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৪১তম অবস্থানে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ২২৪টি ল্যাবে ২৭ হাজার ২৯৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৪৫ লাখ ৪২ হাজার ৩০টি নমুনা।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৯৫ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯০ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫০ শতাংশ।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৪ লাখ ৫৩ হাজার ২২১টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ১০ লাখ ৮৮ হাজার ৮০৯টি।
গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ২১ জন পুরুষ আর নারী ১২ জন। তাদের ১ জন বাড়িতে বাকী সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন।
তাদের মধ্যে ১৫ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ১৪ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর,৪ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ছিল।
দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৮ হাজার ৮৩০ জনের মধ্যে ৬ হাজার ৬৭১ জনই পুরুষ এবং ২ হাজার ১৫৯ জন নারী।
যারা মারা গেছে তাদের ৪ হাজার ৮৩২ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়াও ২ হাজার ১৯৬ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৯৯৩ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৪৩১ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৭৪ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৬৭ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৭ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।
মৃতদের মধ্যে ২৬ জন ঢাকা বিভাগের, ৬ জন চট্টগ্রাম বিভাগের এবং ১ জন রাজশাহী বিভাগের বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
এর মধ্যে ৫ হাজার জন ঢাকা বিভাগের, ১ হাজার ৬১৫ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৪৯০ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫৭১ জন খুলনা বিভাগের, ২৬৭ জন বরিশাল বিভাগের, ৩১৬ জন সিলেট বিভাগের, ৩৭১ জন রংপুর বিভাগের এবং ২০০ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।