দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত এক দিনে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা গত চল্লিশ সপ্তাহের মধ্যে সবচেয়ে কম।
সবশেষ গতবছরের ৬ মে এর চেয়ে কম মৃত্যুর খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর; সেদিন ৩ জনের মৃত্যুর খবর এসেছিল।
শুক্রবার বিকালে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে মারা যাওয়া ৫ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট ৮ হাজার ২৫৩ জনের মৃত্যু হল।
আর গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪০৪ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ায় দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ৩৯ হাজার ৯৭৫ জন হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৪২২ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৩৯৩ জন হয়েছে।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গতবছর ৮ মার্চ; তা সোয়া ৫ লাখ পেরিয়ে যায় গত ১৪ জানুয়ারি। এর মধ্যে গতবছরের ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গতবছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ২৩ জানুয়ারি তা আট হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১০ কোটি ৭৮ লাখ পেরিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৩ লাখ ৬৯ হাজার।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩২তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩৮তম অবস্থানে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১১৬টি আরটি-পিসিআর ল্যাব, ২৯টি জিন-এক্সপার্ট ল্যাব ও ৬৫টি র্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাবে অর্থাৎ সর্বমোট ২১০টি ল্যাবে ১৪ হাজার ৩২৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৩৮ লাখ ২২ হাজার ৩৪৫টি নমুনা।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২ দশমিক ৮২ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ১৩ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯০ দশমিক ০৮ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৯ লাখ ৬৮ হাজার ৭৬৬টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ৮ লাখ ৫৩ হাজার ৫৭৯টি।
গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৪ জন পুরুষ আর নারী ১ জন। তাদের সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন।
তাদের মধ্যে ৩ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি এবং ২ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ছিল।
মৃতদের মধ্যে ৪ জন ঢাকা বিভাগের এবং ১ জন চট্টগ্রাম বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৮ হাজার ২৫৩ জনের মধ্যে ৬ হাজার ২৫২ জনই পুরুষ এবং ২ হাজার ১ জন নারী।
তাদের মধ্যে ৪ হাজার ৫৮৩ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়াও ২ হাজার ৫৫ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৯৩৯ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৪১২ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৬৬ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৬২ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৬ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।
এর মধ্যে ৪ হাজার ৬০৩ জন ঢাকা বিভাগের, ১ হাজার ৫১৫ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৪৭০ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫৫৬ জন খুলনা বিভাগের, ২৪৯ জন বরিশাল বিভাগের, ৩০৮ জন সিলেট বিভাগের, ৩৫৯ জন রংপুর বিভাগের এবং ১৯৩ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।