জাতীয়

করোনার চেয়ে ৪ গুণ বেশি মৃত্যু যক্ষ্মায়: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনা ভাইরাস গত এক বছরে মৃত্যু হয়েছে সাড়ে আট হাজার। অন্যদিকে গত বছরে যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৩৬ হাজারের বেশি মানুষের।

সেই হিসাবে গত বছরে করোনায় মৃত্যুর চেয়ে যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়ে চার গুণ বেশি রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তাই কোনো রোগকে অবহেলা করা যাবে না, বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

বুধবার (৯ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে বছরব্যাপী যক্ষ্মা সচেতনতা কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনার কারণে বিশ্ব বিপর্যস্ত। গত নয় বছরে যেটুকু এগিয়ে ছিল, এক বছরেই ১০ বছর বিশ্বকে পিছিয়ে দিয়েছে। স্বাস্থ্যখাতকে অবেহলা করে কোনোমতে এগোনো সম্ভব নয়। এই খাতে আরও বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে হবে।

( যক্ষ্মা সচেতনতা কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠান )

তিনি বলেন, স্বাস্থ্যখাত ঠিক না থাকলে অর্থনীতি ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বে ১২ ট্রিলিয়ন ডলার, বাংলাদেশে ১২ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে।

জাহিদ মালেক বলেন, যক্ষ্মা এমন একটি রোগ, যা সারা বিশ্বে আছে। বাংলাদেশে এখনও অনেক রোগী শনাক্তের বাইরে আছে। এদের পরীক্ষার আওতায় এনে চিকিৎসা দিলে দেশকে যক্ষ্মামুক্ত করা যাবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য উল্লেখ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির পরিচালক অধ্যাপক ডা. সামিউল ইসলাম বলেন, বিশ্বের ৩০টি দেশে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা সর্বাধিক। এর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। ২০২০ সালে বাংলাদেশে নতুন রোগীর সংখ্যা দুই লাখ ৯২ হাজার ৯৪০ জন। ২০১০ সালে বাংলাদেশে যক্ষ্মা রোগে আনুমানিক মৃত্যু ছিল প্রতি লাখে ৫৪ জন, যা ২০২০ সালে ২৪ জনে এসে দাঁড়িয়েছে। চিকিৎসায় ভালো হয়েছে ৯৬ শতাংশ রোগী। এমনকি চিকিৎসার মাধ্যমে গত ১০ বছরে প্রায় ১০ লাখ মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, যক্ষ্মা শরীরের একটি মাত্র অঙ্গের রোগ নয়। শরীরের যেকোনো জায়গায় যক্ষ্মা হয়তো হতে পারে। সে ব্যাপারে দেশের জনগণকে সচেতন করার দায়িত্ব আমাদের। যক্ষ্মার ওষুধ খেলে যক্ষ্মা ভালো হয়ে যায়। ২০৩৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে যক্ষ্মা নির্মূল করতে বছরব্যাপী এই কর্মসূচি চলবে।

‘যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য অ্যারোমা দত্ত, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ, বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি তৌফিক মারুফ, অভিনেত্রী ত্রপা মজুমদার, মীরা দত্ত প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *