আন্তর্জাতিক

গাজা ইস্যুতে ‘স্রোতের বিপরীতে’ কমলা

গাজা যুদ্ধে ইসরাইলের জোর সমর্থক যুক্তরাষ্ট্র। শুধু আর্থিক দিক থেকেই নয়, মৌখিকভাবেও তেল আবিবকে সাহায্য করে যাচ্ছে ওয়াশিংটন। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ইসরাইল সমর্থনে বেশ শক্ত অবস্থানেই দেখা গেছে। কিন্তু গাজা ইস্যুতে ‘স্রোতের বিপরীতে’ দেখা গেল যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ডেমোক্রেটিক পার্টির সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে। গাজা যুদ্ধের এবার সমাপ্তি চাচ্ছেন তিনি। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। আলজাজিরা, এএফপি।

কমলা হ্যারিস বলেন, ‘গাজায় ৯ মাসে যা কিছু ঘটেছে, তা ভয়াবহ। মৃত শিশুদের ছবি এবং নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে মরিয়া হয়ে পালাতে থাকা ক্ষুধার্ত মানুষ, যাদের কাউকে কাউকে দ্বিতীয়, তৃতীয় কিংবা চতুর্থবারের মতো বাস্তুচ্যুত হতে হয়েছে, তাদের ছবি দেখা যাচ্ছে। এমন অবস্থায় এসব হৃদয়বিদারক ঘটনা থেকে আমরা দৃষ্টি ফিরিয়ে নিতে পারি না। এমন দুর্ভোগ দেখার পর আমরা চুপ থাকতে পারি না এবং আমি নীরব থাকব না।’

গাজায় যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাবে রাজি হওয়ার জন্যও নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কমলা। তবে ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকারের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন তিনি। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসকে ‘নৃশংস সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসাবে উল্লেখ করেন সম্ভাব্য এ প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। কমলা বলেন, এ যুদ্ধ অবসানের সময় এসেছে। আর তা এমনভাবে এর শেষ করতে হবে যেন ইসরাইল নিরাপদ থাকে, সব জিম্মি মুক্তি পায়, গাজায় ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগ শেষ হয় এবং ফিলিস্তিনি জনগণ তাদের স্বাধীনতা, মর্যাদা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার চর্চা করতে পারে। অন্যদিকে গাজায় শিশুদের ইচ্ছাকৃতভাবেই গুলি করা হচ্ছে বলে দাবি করছেন মার্কিন চিকিৎসকরা। এ নিয়ে বাইডেন ও কমলাকে চিঠি দিয়েছেন তারা। সেখানে নিজের কাজের অভিজ্ঞতা হয়েছে- এমন ৪৫ জন মার্কিন চিকিৎসক এবং নার্সদের একটি গ্রুপ বিষয়টি তুলে ধরেন।

ওই চিঠিতে লেখা হয়েছে যে, সম্ভবত এ সংঘাতে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ৯২ হাজারের বেশি হয়েছে। এ সংখ্যা হতবাক করার মতোই। কারণ, এটা গাজার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪ দশমিক ২ শতাংশ। চিঠিতে স্বাক্ষরকারী প্রত্যেক চিকিৎসাকর্মী জানিয়েছেন, তারা ফিলিস্তিনের যেসব শিশুদের চিকিৎসা দিয়েছেন, তাদের ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। তারা লিখেছেন, আমাদের প্রত্যেকেই প্রতিদিন এমন সব শিশুকে চিকিৎসা দিয়েছি, যাদের মাথা এবং বুকে গুলি করা হয়েছে। অল্পসংখ্যক মানুষ বাদে গাজার প্রায় প্রত্যেকেই অসুস্থ, আহত বা দুই ধরনের সমস্যার সঙ্গেই লড়াই করে যাচ্ছে। তারা আরও লিখেছে, ‘আমরা নারী ও শিশুদের প্রতি অসহনীয় নিষ্ঠুরতার দৃশ্যগুলো ভুলতে পারি না, যা আমরা নিজেরাই দেখেছি।’

এদিকে ইসরাইলের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন ১১ জন। এর মধ্যে ১৭ বছর বয়সি এক কিশোরও রয়েছে। সে আলজাজিরাকে জানিয়েছে, হামাস এবং সেখানে জিম্মি করে রাখা লোকজনের বিষয়ে তথ্য দেওয়ার জন্য তার ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *