রাজনীতি

চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের আলোকে সংবিধানে জন-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে : আলী রীয়াজ

সংবিধান সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, সংবিধানে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের ফলে মানুষের মনে তৈরি হওয়া সকল আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে।

আজ রোববার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন,‘এই সংস্কার কমিশন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার-এর সব পদক্ষেপ গত ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদকে বিলুপ্ত করতে দেশের হাজারো মানুষের আত্মদানের ফসল। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের, মানুষের আত্মত্যাগের প্রতিফলন না থাকলে কি হিসেবে আমরা সংবিধানের সংস্কার বা পরিমার্জন করবো? যেহেতু এই ইতিহাসকে পাশ কাটিয়ে কোনও সংস্কারই সম্ভব নয়, সেহেতু আমরা এও মনে করি যে চব্বিশের গণমানুষের বিপ্লবকে ডকুমেন্টেড (ইতিহাসে লিপিবদ্ধ) করা শুধু জরুরিই নয়, অনিবার্যও বটে।’

১৯৭৫ সালে বাকশাল গঠনের পর থেকে ক্ষমতা বাক্সবন্দী করে রাষ্ট্রপতির বা প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেয়ার প্রথাই ক্ষমতা এককেন্দ্রীকরণের পদ্ধতি এবং এ কারণেই বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র-ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিলো উল্লেখ করে সংস্কার কমিশন প্রধান বলেন, ‘আমাদের সুস্পষ্ট লক্ষ্যগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে ভবিষ্যতে যেকোনো ধরনের ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থা যেন না গড়ে উঠে। তার একটা সুবন্দোবস্ত করা।’

এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার পতন এবং পালিয়ে যাবার পর অনেক কথাই উন্মুক্তভাবে আলোচনা করা যাচ্ছে ও হচ্ছে। একজন কতবার প্রধানমন্ত্রী পদে আসতে পারবেন, ক্ষমতার ভারসাম্য, জবাবদিহিতার জায়গা -এসকল বিষয় আমাদের আলোচনায় উঠে আসছে। এ বিষয়ে আমরা সাধারণ মানুষ, সুশীলজন এবং আমাদের অংশীদারদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে এই আন্দোলনের অভিপ্রায় ও মানুষের আকাক্সক্ষা কমিশনের সুপারিশের মধ্য দিয়ে সরকারের কাছে তুলে ধরবো।’

তিনি জানান,‘সরকারের কাজ সুপারিশসমূহ বিবেচনায় এনে যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানুষের আকাক্সক্ষার বাস্তবায়ন করা। সরকার পরবর্তীতে এসব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলাপ আলোচনা করবেন। সেখানে রাজনৈতিক দলগুলোকেও তাদের জায়গা থেকে নিজ নিজ ভূমিকা পালন করতে হবে। কারণ এই আন্দোলন থেকে তাদেরও অনেক কিছু বুঝার বা শেখার রয়েছে।’

এসময় সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের ও মোহাম্মদ ইকরামুল হক, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট ড. শরীফ ভূঁইয়া, ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিকী, ব্যারিস্টার এম মঈন আলম ফিরোজী, লেখক ফিরোজ আহমেদ, লেখক ও মানবাধিকার কর্মী মো. মুস্তাইন বিল্লাহ এবং কমিশনের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র মো. মাহফুজ আলম উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *