আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যই আওয়ামী লীগ সৃষ্টি হয়েছে এবং জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা ঘিরেই পরিচালিত হয়েছে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সংগ্রাম।
আজ শুক্রবার গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতেই এই বিবৃতি প্রদান করেন কাদের।
‘সরকার জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়!’ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন অভিযোগের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আওয়ামী লীগ জনগণের রাজনৈতিক দল, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যই আওয়ামী লীগ সৃষ্টি হয়েছে এবং জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা ঘিরেই পরিচালিত হয়েছে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সংগ্রাম।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সব সময় জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতায় এসেছে। বিএনপির মতো বন্দুকের নলের মুখে কিংবা পিছনের দরজা দিয়ে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে কখনো ক্ষমতা দখল করেনি এবং করবেও না।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের সাথে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবে
প্রমাণিত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এদেশের মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি বলেন, এদেশের মানুষের স্বাধিকার, স্বাধীনতা, মুক্তি, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগের লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মী প্রাণ দিয়েছে। অপরদিকে বিএনপির সৃষ্টি এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রকে হত্যার মধ্য দিয়ে স্বৈরশাসনের পটভূমিতে। তাদের নেতা সামরিক স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের আখরে রচিত পবিত্র সংবিধানকে ক্ষত-বিক্ষত করে এবং ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে জাতির পিতাসহ জাতীয় চারনেতার খুনিদের সুরক্ষা প্রদান করে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এদেশের স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি ও জাতির পিতার খুনিদের স্বার্থসংরক্ষণ এবং মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী রাজনৈতিক আদর্শ বাস্তবায়নের চক্রান্তে আবর্তিত হয়েছে বিএনপির রাজনীতি। বিএনপি শাসনামলে সংখ্যালঘু নির্যাতন এবং বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের উপর দমন-পীড়নের ভয়াবহ নজির স্থাপন হয়েছিল। উগ্র-সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে সঙ্গে নিয়ে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশকে বিএনপিই ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি যখনই ক্ষমতায় গিয়েছে তখনই মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করেছে এবং পাকিস্তানি ভাবধারায় দেশ চালিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ভূলুণ্ঠিত করার পাশাপাশি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে বার বার হুমকির মুখে ফেলেছে। তারা সব সময় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করে জাতিকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালিয়েছে এবং দেশপ্রেমের বহ্নিশিখায় ঐক্যবদ্ধ প্রজন্ম গঠনে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার আপসহীন নেতৃত্বেই দীর্ঘ স্বৈরশাসনের অবসান ঘটেছে এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র একমাত্র আওয়ামী লীগের হাতেই নিরাপদ।
তিনি বলেন, এদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগ সর্বদা বদ্ধপরিকর। আমরা স্বাধীনতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধী অপশক্তি, দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়ন জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষকদের হাতে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারকে তুলে দিতে পারি না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন, গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অভিযাত্রাকে কাক্সিক্ষত অভিষ্টে পৌঁছাতে শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটি উদার প্রগতিশীল-গণতান্ত্রিক উন্নত-আধুনিক ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত হবে, ইনশাল্লাহ্।