আগামী জুলাই মাসের ২৯ অথবা ৩১ জুলাই আরো ৭শ ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) ভোট গ্রহণের পরিকল্পনা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসি সচিবালয় থেকে নির্বাচন উপযোগী ইউপির তালিকা প্রস্তুত করে কমিশন সভায় প্রস্তাবনা পাঠানো হচ্ছে। আগামী সপ্তাহে কমিশন সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে।
যদিও একাধিক নির্বাচন কমিশনার কোভিড উধ্বমুর্খীর কারণে আপাতত ভোট করার পক্ষে না। তারপরও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে আগামী ২৮ জুলাই শূন্য হওয়া তিনটি সংসদীয় আসনে ভোটের জন্য ইতিমধ্যে তফসিল ঘোষণা করেছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। তবে ঢাকা-১৪ ও কুমিল্লা-৫ আসনে ভোটের আগেই আওয়ামী লীগের মনোনীত দুই প্রার্থী নির্বাচিত হচ্ছেন।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, শোকের মাস আগস্টে সাধারণত কোন নির্বাচন আয়োজন করে না কমিশন। সেপ্টেম্বর থেকে পুরোদমে নির্বাচন কার্যক্রম শুরু করতে হবে কমিশনের। তার আগে জুলাইয়ে দ্বিতীয় ধাপের ইউপির তফসিল ঘোষণার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রথমধাপে স্থগিত ১৬৭টি ইউপির নির্বাচনের সাথে নতুন করে আরো দ্বিতীয় ধাপের ৫শ ইউপির তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে কমিশনের যে সভা অনুষ্ঠিত হবে সেখানে জুলাই মাসে ইউপির ভোট করার জন্য প্রস্তাবনা দেয়া হবে।
ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেন, আমাদের দায়িত্ব নির্বাচন ব্যাপারের সময়মতো কমিশনকে অবগত করা। সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন। আগামী সপ্তাহে ভোটের তফসিল ঘোষণা হলে ২৯ অথবা ৩০ জুলাই ভোট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে যে ১৬৭টি স্থগিত ইউপি রয়েছে তার মধ্যে ৪টি ইউপিতে চেয়ারম্যান প্রার্থীরা মারা গেছেন। ওই ৪টি ইউপিতে শুধু চেয়ারম্যান পদে নতুন করে শিডিউল হবে। আর বাকী ১৬৩টি ইউপির ভোট যেখান থেকে স্থগিত করা হয়েছিলো সেখান থেকে শুরু হবে।
স্থগিত থাকা নির্বাচন ঈদের আগে অনুষ্ঠিত হবে কিনা জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেন, কমিশন এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। পরবর্তী সভায় এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে। ইউপির পরবর্তী ধাপের নির্বাচনের বিষয়েও কমিশন সভায় আলোচনার মাধ্যমে জানানো হবে।
গত ৩রা মার্চ প্রথমধাপের ৩৭১টি ইউপির তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ভোট হওয়ার কথা ছিলো ১১ এপ্রিল। কোভিড পরিস্থিতির কারণে ভোট স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে গত ৩রা জুন স্থগিত ইউপির ভোটের তারিখ গত ২১জুন পুন:নির্ধারণ করা হয়। তবে সীমান্তবর্তী এলাকায় কোভিড পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার কারণে ১৬৭টি ইউপির ভোট স্থগিত করা হয়। গত ২১জুন ২০৪টি ইউপির ভোট অনুষ্ঠিত হয়।
ভোটের আগেই এমপি হচ্ছেন তারা: ভোটের আগেই ঢাকা-১৪ ও কুমিল্লা-৫ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত দুই প্রার্থী এমপি হচ্ছেন। আজ বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে দুই প্রার্থীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করবে কমিশন। ঢাকা-১৪ আসনের উপনির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আগা খান মিন্টু। এ নির্বাচনে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহজালাল জানান, চার প্রার্থীর মধ্যে বৈধ তিন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। তাই আগা খান মিন্টু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন। করোনা সংক্রমণের কারণ দেখিয়ে জাতীয় পার্টি-জাপার মোস্তাকুর রহমান, বিএনএফের কেওয়াইএম কামরুল ইসলাম ও জাসদের আবু হানিফ মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন।
কুমিল্লা-৫ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ে আওয়ামী লীগের আবুল হাশেম খান ও জাপার জসিম উদ্দিন বৈধ প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু গত রবিবার বিকালেই জাপার প্রার্থী জসিম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে হাজির হয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আবেদন জমা দেন। জসিম প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আবেদন করায় হাশেম খান একাই প্রার্থী থাকলেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, তারা জাপার প্রার্থীর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন পেয়েছেন। যাচাই করে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিন (২৪ জুন) এবিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।