২০২২ সালের চেয়ে চলতি বছর জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগে মৃত্যু ২৫ গুণ বেড়েছে। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ১৯ গুণ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গু বিষয়ক তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গতবছর জানুয়ারি মাসের ১ তারিখ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল দুই হাজার ৬৬০ ব্যক্তি।
চলতি বছরের ৩১ জুলাই পর্যন্ত ৫১ হাজার ৮৩২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। অর্থাৎ গতবছরের তুলনায় চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ১৯ গুণেরও বেশি।
গত বছর জানুয়ারি মাসের ১ তারিখ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত দেশে মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন ১০ জন। চলতি বছরের ৩১ জুলাই পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৫১ জন। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ২৫ গুণ।
জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস ডেঙ্গু রোগের মৌসুম হলেও বর্তমানে প্রায় সারা বছরজুড়েই ডেঙ্গুরোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। বর্ষা মৌসুমের আগেই হানা দেওয়া ডেঙ্গুর প্রকোপ ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে। বর্তমান পরিস্থিতি সার্বিক বিচার বিশ্লেষণ করে আগামী আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও ভয়াবহ হবে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের। এতে চলতি বছরে ডেঙ্গু পরিস্থিতির অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকেই।
বর্তমান ডেঙ্গু প্রতিরোধ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশার বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের ডেঙ্গুর হট স্পট ম্যানেজমেন্ট করা দরকার। ডেঙ্গু রোগীদের ঠিকানা বের করে, ওই ব্যক্তির বাড়ির আশেপাশে ফগিং করে উড়ন্ত মশাগুলোকে মেরে ফেলতে হবে। কারণ, এই উড়ন্ত মশাগুলোই এই মুহূর্তে ইনফেক্টেড মশা, এই মশাগুলো যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন জ্যামিতিক হারে ডেঙ্গু ছড়াবে।
সোমবার (৩১ জুলাই) গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চারজন মারা গেছেন। একই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে আরও দুই হাজার ৬৯৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বর্তমানে সারা দেশে মোট নয় হাজার ৩৮৬ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ঢাকা সিটিতে পাঁচ হাজার ১১ জন এবং সারা দেশে (ঢাকা সিটি ব্যতীত) চার হাজার ৩৭৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
গত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল সর্বমোট ৬২ হাজার ৩৮২ জন এবং ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ২৮১ জন মারা যান।