চলতি মাসের শুরুর দিকে খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ১০০ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এরপরই সরকার ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়।
তাতে বাজারে কিছুটা সুখবর আসতে শুরু করে। গত সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজের দাম কমে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি ছিল ৮০ টাকা। যা এ সপ্তাহেও অপরিবর্তীত রয়েছে। তবে পেঁয়াজের দাম পাইকারিতে বেশ নেমে এলেও খুচরায় এখনো সেভাবে তার প্রভাব পড়েনি। আর খুচরা পর্যায়ে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০ টাকায়।
শুক্রবার (১৬ জুন) খিলগাঁও, গোড়ান, বনশ্রী এবং মালিবাগ এলাকায় বিভিন্ন মুদিদোকান ঘুরে দেখা গেছে দোকানে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০ টাকায়। যা দোকানিরা পাইকারি বাজার থেকে কিনে আনছেন ৪৫ টাকা কেজি দরে। অন্যদিকে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৮০ টাকায়। যা পাইকারি বাজার থেকে কিনতে হচ্ছে ৬৫-৭৫ টাকায়, এমনটাই জানিয়েছেন বেশির ভাগ মুদিদোকানি।
মেরাদিয়া হাটের পেঁয়াজ বিক্রেতা শিকদার মিয়া বলেন, পাইকারি বাজার থেকে দেশি পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৭২ টাকায়। আর খুচরা বাজারে এই পেঁয়াজ বিক্রি করছি ৮০ টাকায়। ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারের ঢোকার পরও দাম কমছে না। যদিও এ পেঁয়াজ বাজারে আসার আগে দেশি পেঁয়াজ পাইকারি পর্যায়ে থেকে আমরা কিনতাম ৯০-১০০ টাকায়। এখন বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ আসায় দেশি পেঁয়াজের দাম কমে পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭২ টাকায়। আমি মনেকরি দেশি পেঁয়াজের দাম ৫০ টাকার কম হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, বর্তমানে আলু বিক্রি করছি প্রতি কেজি ৪০ টাকায়। এই দাম শুনলে অনেক ক্রেতা গরম হয়ে যান। কিন্তু আমরা কী করব? পাইকারি বাজার থেকে আজ (১৬ জুন) আলু কিনেছি প্রতি কেজি ৩৫ টাকায়। তো সেখানে ৫ টাকা মিনিমাম লাভ তো আমাদের করতে হয়।
গোড়ান এলাকার মুদি ব্যবসায়ী মাসুদ পারভেজ বলেন, আমার দোকানে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি করছি ৫০ টাকা কেজি, আর দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকায়। তবে ভারতের পেঁয়াজ বেশিরভাগই নষ্ট পড়ছে। সামনে পেঁয়াজের দাম আরও কমবে। কারণ বাজারে এখন যথেষ্ট পরিমাণ পেঁয়াজ আছে। আর ভারতীয় রসুন বিক্রি করছি ১৫০ টাকা কেজি এবং দেশি রসুন ১৪০ টাকায়। বাজারে এখন দেশি আদা পাওয়া যাচ্ছে যার দামও অনেক বেশি। প্রতি কেজি দেশি আদা ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তবে আমদানি হওয়ার পরেও বাজারে পেঁয়াজের দামে সন্তুষ্ট নয় ক্রেতারা। খিলগাঁও বাজারে পেয়াজ কিনতে এসেছিলেন সোলাইমান সবুজ নামের এক ক্রেতা। তিনি বলেন, বাজারে পেঁয়াজের দাম অনেক বেশি। যদিও পেঁয়াজ রান্নায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। তাই বাধ্য হয়েই বেশি দাম দিয়ে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে।
এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত থেকে সরকার যে পেঁয়াজ আমদানি করেছে তার বেশিরভাগই নিম্নমানের। ফলে ক্রেতারা দাম বেশি হলেও ভাল মানের দেশি পেঁয়াজ কিনছেন। যে কারণে বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ আসার পরও দেশি পেঁয়াজের দাম কমেনি। আর বাজারে ভাল মানের আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ আসলে কোরবানির ঈদের আগেই সব ধরনের পেঁয়াজের দাম আরও কমবে।