মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাসার বাইরে যাচ্ছেন না। ঈদের দিন সালামিতে সব সময়ের মতো নতুন টাকার চাহিদা এখন আর নেই।
তবে ভোক্তার চাহিদা বাড়বে এই আশায় গুলিস্তানের মোড় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে বসেছে নতুন নোটের বাজার।
রাজধানীর নতুন নোটের বাজার গুলিস্তান মোড় ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তার পাশে ফুটপথে টুলের ওপর নতুন নতুন নোট সাজিয়ে রাখা হয়েছে কয়েকটি দোকানে। কিন্তু ক্রেতার সংখ্যা হাতেগোনা।
রাশেদুল হক নতুন টাকা কিনতে এসেছেন গুলিস্তানের মোড়ে। তিনি বলেন, আমি ১০ টাকার ১০০টি নোটের একটি বান্ডিল কিনেছি ১ হাজার ২০০ টাকা দিয়ে। তার অল্প কিছুক্ষণ আগে আরেক ক্রেতা ১০ টাকার ১০০টি নোটের একটি বান্ডিল কিনেছেন ১ হাজার ১৮০ টাকা দিয়ে। ১০ টাকার নতুন নোটের ১০০টির দাম একটু বেশি। কারণ অন্যান্য নোটের তুলনায় ১০ টাকার নোটের চাহিদাও বেশি।
এ বিষয়ে নতুন নোট বিক্রেতা রাজিব হোসেন বলেন, আমরা নতুন নোট যে দরে কিনে আনি তার সঙ্গে ২০ থেকে ৩০ টাকা করে বেশি পেলেই বিক্রি করে দিচ্ছি। আবার ১০০ টাকার নোটের বান্ডিলে বেশি নেওয়া হয় সর্বোচ্ছ ৮০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত।
তিনি আরও বলেন, করোনার কারণে নতুন নোট বিনিময় কমে গেছে গত বছর থেকেই। প্রয়োজন ছাড়া কেউ আসে না নতুন নোট কিনতে। দুই বছর আগে যে পরিমান নতুন নোট বিক্রি হতো করোনার পর থেকে তা অর্ধেকে নেমে এসেছে।
আরিফুল ইসলাম নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ৫০ টাকার নোটের ১০০ টির একটি বান্ডিল ৫ হাজার ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিনিময় হচ্ছে। ২০ টাকার নোটের ১০০ টির একটি বান্ডিল ২ হাজার ১০০ টাকা থেকে ২০১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, ৫০০ ও ১০০০ টাকার একশটির এক বান্ডিলের বিনিময়ের জন্য দিতে হচ্ছে বাড়তি ২০০ টাকা। ২ ও ৫ টাকার নতুন নোট সরবরাহ কম থাকায় দাম একটু বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকসহ কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের শাখা থেকে ঈদের আগে নতুন নোট বিনিময় করা হলেও কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে নতুন টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বের করে বিক্রি করা হচ্ছে গুলিস্তানের মোড় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে বট তলায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে বটতলায় নতুন টাকার বিনিময়কারী আবদুল আলীম বলেন, করোনার কারণে ব্যবসা খুব খারাপ। গেলো বছর করোনার সময় থেকে শুরু হয়েছে এই অবস্থা। সাধারণ সময়ে যে পরিমান নতুন নোট বিনিময় হতো এখন তার চেয়ে অল্প কিছু বেড়েছে। বিগত সময়ে ঈদের আগে পরিমান নোট আমরা বিনিময় করেছি তা অর্ধেকে নেমে এসেছে করোনাকালীন ঈদে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে পুলিশ বক্সের সামনে নতুন নোট বিক্রিতে বাধা দিচ্ছে পুলিশ। মাঝে মধ্যে এসে উঠিয়ে দিলেও কিছুক্ষণ পরে আবারও পসরা সাজিয়ে বসে যাচ্ছেন বিক্রেতারা। চলছে বেচাকেনা।
এদিকে ঈদের আগে ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে নতুন টাকা দেওয়া হলেও সেখানে ৫শ ও ১ হাজার টাকার নোট দেওয়া হয়। আর ক্রেতাদের অধিকাংশেরই চাহিদা রয়েছে ১০, ২০, ৫০ ও ১০০ টাকার নতুন নোটের। যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে বটতলা ও গুলিস্তানের মোড়ই একমাত্র ভরসা ঈদের আগে নতুন নোট প্রত্যাশীদের।